ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৩ ১১/১ পৃষ্ঠা ১৯-২৫
  • আমার বাল্যকাল থেকে যিহোবার কাছ থেকে শিক্ষা পাওয়া

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আমার বাল্যকাল থেকে যিহোবার কাছ থেকে শিক্ষা পাওয়া
  • ২০০৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • বাইবেলের সত্যে প্রাথমিক বৃদ্ধি
  • পূর্ণ-সময়ের পরিচর্যার শুরু
  • ব্রুকলিন বেথেলে সেবা করা
  • আমার জীবনে বিরাট পরিবর্তনগুলো
  • অন্য দেশে গিয়ে সেবা করা
  • আবারও ব্রুকলিনে
  • আমার বাল্যকাল থেকে সেবা করা
  • পূর্ণসময়ের পরিচর্যা এটা আমাকে যেখানে নিয়ে এসেছে
    ২০১৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবার সেবায় এক সমৃদ্ধ জীবন
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • বেথেল পরিচর্যা—আরও স্বেচ্ছাসেবকের প্রয়োজন
    ১৯৯৫ আমাদের রাজ্যের পরিচর্যা
  • আমি পরিপক্ব ভাইদের সঙ্গে কাজ করার আশীর্বাদ লাভ করেছি
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
আরও দেখুন
২০০৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৩ ১১/১ পৃষ্ঠা ১৯-২৫

জীবন কাহিনী

আমার বাল্যকাল থেকে যিহোবার কাছ থেকে শিক্ষা পাওয়া

বলেছেন রিচার্ড অ্যাব্রাহামসন

“হে ঈশ্বর, তুমি বাল্যকালাবধি আমাকে শিক্ষা দিয়া আসিতেছ; আর এ পর্য্যন্ত আমি তোমার আশ্চর্য্য ক্রিয়া সকল প্রচার করিতেছি।” আমাকে বলতে দিন যে, গীতসংহিতা ৭১:১৭ পদের কথাগুলো কেন আমার কাছে বিশেষ অর্থ রাখে।

আমার মা ফেনি অ্যাব্রাহামসনের সঙ্গে ১৯২৪ সালে বাইবেল ছাত্রদের সাক্ষাৎ হয়, সেই সময় যিহোবার সাক্ষিরা এই নামে পরিচিত ছিল। আমার বয়স ছিল মাত্র এক বছর। মাকে যখন বাইবেলের সত্যগুলো শেখানো হয়েছিল, তখন তিনি শীঘ্রই তার প্রতিবেশীদের কাছে যেতেন এবং যে-বিষয়গুলো তিনি শিখছিলেন, সেগুলো তাদের বলতেন আর সেইসঙ্গে তিনি আমাকে এবং আমার দাদা ও দিদিকেও শিক্ষা দিতেন। আমি পড়তে শেখার আগেই তিনি আমাকে ঈশ্বরের রাজ্যের আশীর্বাদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অনেক শাস্ত্রপদ স্মরণে রাখতে সাহায্য করেছিলেন।

১৯২০ এর দশকের শেষের দিকে, যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন রাজ্যের লি গ্র্যান্ড—যেখানে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং বড় হয়েছি—সেখানে আমাদের বাইবেল ছাত্রদের দল মাত্র কয়েক জন মহিলা এবং ছেলেমেয়ে নিয়ে গঠিত ছিল। যদিও আমরা বিচ্ছিন্ন ছিলাম, তবুও বছরে এক বা দুবার ভ্রমণকারী হিসেবে পরিচিত ভ্রমণ পরিচারকরা আমাদের পরিদর্শন করত। তারা উৎসাহমূলক বিভিন্ন বক্তৃতা দিত, আমাদের সঙ্গে ঘরে ঘরে পরিচর্যায় যেত এবং ছেলেমেয়েদের প্রতি সদয় আগ্রহ দেখাত। সেই প্রিয় ব্যক্তিদের মধ্যে ছিল, শিলড্‌ টুটজিয়ান, জিন অরেল এবং জন বুথ।

১৯৩১ সালে আমাদের দল থেকে কেউই ওহাইওর কলম্বাসের সম্মেলনে যোগ দিতে সমর্থ হয়নি, যেখানে বাইবেল ছাত্ররা যিহোবার সাক্ষি নাম ধারণ করেছিল। কিন্তু কোম্পানিগুলো, সেই সময় মণ্ডলীগুলোকে যেমনটা বলা হতো এবং বিচ্ছিন্ন দলগুলো সম্মেলনে উপস্থিত ছিল না বলে তারা সেই আগস্ট মাসেই নাম ধারণ করার জন্য সংকল্প গ্রহণ করতে স্থানীয়ভাবে মিলিত হয়েছিল। লি গ্র্যান্ডে আমাদের ছোট্ট দল সেই সংকল্প নিয়েছিল। এরপর ১৯৩৩ সালে সংকট (ইংরেজি) নামক একটা পুস্তিকা বিতরণ করার অভিযানে, আমি বাইবেলের একটা উপস্থাপনা মুখস্থ করেছিলাম এবং প্রথম বারের মতো একা একা ঘরে ঘরে সাক্ষ্য দিয়েছিলাম।

১৯৩০ এর দশকে আমাদের কাজের ওপর বিরোধিতা বাড়তে থাকে। এর সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য কোম্পানিগুলোকে, সেই সময়ে কথিত বিভাগগুলোতে দলে দলে ভাগ করা হয়েছিল, যেগুলো ছোট ছোট অধিবেশন করত এবং বছরে একবার বা দুবার বিভাগীয় অভিযান হিসেবে পরিচিত প্রচারের কাজগুলোতে রত থেকেছিল। এই অধিবেশনগুলোতে আমাদের প্রচারের পদ্ধতিগুলোর বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল এবং যে-পুলিশরা বাধা দেয়, তাদের সঙ্গে কীভাবে সম্মানের সঙ্গে ব্যবহার করা যায় তা দেখানো হয়েছিল। যেহেতু সাক্ষিদের প্রায়ই পুলিশ বিচারকের কাছে বা সাধারণ আদালতে নিয়ে যাওয়া হতো, তাই আমরা বিচারের ধারা নামক নির্দেশিকা নথি থেকে নেওয়া বিষয়বস্তুর মহড়া দিতাম। এটা আমাদের বিরোধিতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে সুসজ্জীভূত করেছিল।

বাইবেলের সত্যে প্রাথমিক বৃদ্ধি

বাইবেলের সত্যগুলো এবং ঈশ্বরের স্বর্গীয় রাজ্যের অধীনে পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকার বিষয়ে বাইবেল ভিত্তিক আশার ওপর আমার উপলব্ধি দিন দিন বেড়ে চলেছিল। সেই সময় সেই সমস্ত ব্যক্তির জন্য বাপ্তিস্মের বিষয়ে ততটা জোর দেওয়া হতো না, যাদের খ্রিস্টের সঙ্গে স্বর্গে শাসন করার আশা ছিল না। (প্রকাশিত বাক্য ৫:১০; ১৪:১, ৩) তা সত্ত্বেও, আমাকে বলা হয়েছিল যে আমি যদি যিহোবার ইচ্ছা পালন করার জন্য হৃদয়ে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হয়ে থাকি, তা হলে বাপ্তিস্ম নেওয়া উপযুক্ত হবে। তাই, ১৯৩৩ সালের আগস্ট মাসে আমি বাপ্তিস্ম নিয়েছিলাম।

আমার বয়স যখন ১২ বছর, তখন আমার শিক্ষিকা মনে করেছিলেন যে আমি জনসাধারণের সামনে কথা বলার ক্ষেত্রে ভালই করছি, তাই তিনি মাকে আমার জন্য আরও অতিরিক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার বিষয়ে সুপারিশ করেন। মা মনে করেছিলেন যে, এটা হয়তো আরও ভালভাবে যিহোবার সেবা করার জন্য আমাকে সাহায্য করবে। তাই তিনি এক বছরের জন্য আমার নির্দেশকের কাপড়চোপড় ধোয়া ও ইস্ত্রি করে দেওয়ার দ্বারা আমার শিক্ষার বেতন জুগিয়েছিলেন। সেই প্রশিক্ষণ আমার পরিচর্যার ক্ষেত্রে সাহায্যকারী প্রমাণিত হয়েছিল। আমার বয়স যখন ১৪ বছর তখন আমি বাতজ্বরে আক্রান্ত হই, যা আমাকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অচল করে রেখেছিল।

১৯৩৯ সালে ওয়ারেন হেনশেল নামে একজন পূর্ণ-সময়ের পরিচারক আমাদের এলাকায় আসেন।a আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে তিনি আমার কাছে বড় ভাইয়ের মতো ছিলেন, দীর্ঘ সময়ের জন্য আমাকে ক্ষেত্রের পরিচর্যায় নিতে যেতেন। শীঘ্রই, তিনি আমাকে ছুটির সময়ে অগ্রগামীর পরিচর্যা শুরু করতে সাহায্য করেন, যেটা হল সাময়িকভাবে পূর্ণ-সময়ের পরিচর্যা করার একটা ধরন। সেই গরমে, আমাদের দল একটা কোম্পানি হিসেবে সংগঠিত হয়। ওয়ারেনকে কোম্পানি দাস এবং আমাকে প্রহরীদুর্গ অধ্যয়ন পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ওয়ারেন যখন নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে যিহোবার সাক্ষিদের আন্তর্জাতিক প্রধান কার্যালয়, বেথেলে সেবা করার জন্য চলে যান, তখন আমি কোম্পানি দাস হই।

পূর্ণ-সময়ের পরিচর্যার শুরু

কোম্পানি দাস হিসেবে কাজ করার কারণে দায়িত্ব বেড়ে চলায় পূর্ণ-সময়ের পরিচর্যা শুরু করার বিষয়ে আমার আকাঙ্ক্ষা আরও শক্তিশালী হয়েছিল, যা আমি উচ্চবিদ্যালয়ের তৃতীয় বছর শেষ করার পর ১৭ বছর বয়সে শুরু করেছিলাম। বাবা আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসে বিশ্বাসী ছিলেন না কিন্তু তিনি অনেক উত্তম অন্নসংস্থানকারী ছিলেন এবং একজন নীতিবান ব্যক্তি ছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন যেন আমি কলেজে যাই। কিন্তু, তিনি বলেছিলেন যে, যত দিন পর্যন্ত আমি আমার থাকা খাওয়ার জন্য তার ওপর নির্ভর না করি, ততদিন পর্যন্ত আমি আমার পছন্দমতো কাজ করতে পারি। তাই, ১৯৪০ সালের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে আমি অগ্রগামীর কাজ শুরু করি।

আমি যখন বাড়ি ছেড়ে চলে আসি, তখন মা আমাকে হিতোপদেশ ৩:৫, ৬ পদ পড়ে শোনান: “তুমি সমস্ত চিত্তে সদাপ্রভুতে বিশ্বাস কর; তোমার নিজ বিবেচনায় নির্ভর করিও না; তোমার সমস্ত পথে তাঁহাকে স্বীকার কর; তাহাতে তিনি তোমার পথ সকল সরল করিবেন।” আর সত্যিই, সবসময় যিহোবার হাতে আমার জীবন ছেড়ে দেওয়া আমার জন্য এক বিরাট সাহায্য হয়েছে।

শীঘ্রই আমি উত্তর-মধ্য ওয়াশিংটন রাজ্যে জো এবং মার্গারেট হার্টের সঙ্গে পরিচর্যায় যোগ দিই। এলাকা বিভিন্ন ধরনের ছিল—গবাদি পশুর বিরাট খামার, মেষের বিরাট খামার, আদিবাসীদের সংরক্ষিত এলাকা ও সেইসঙ্গে অনেক ছোট ছোট শহর ও গ্রাম। ১৯৪১ সালের বসন্তকালে আমাকে ওয়াশিংটনের ওয়েনাচি মণ্ডলীতে কোম্পানি দাস হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

ওয়াশিংটনের ওয়ালা ওয়ালা অধিবেশনগুলোর একটাতে আমি একজন পরিচারক হিসেবে কাজ করছিলাম, মিলনায়তনে যারা প্রবেশ করছিল, তাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলাম। আমি লক্ষ করেছিলাম যে, একজন যুবক ভাই লাউড-স্পিকারের ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য ব্যর্থভাবে প্রচেষ্ট করে চলছে। তাই, তাকে আমি আমার কার্যভার নেওয়ার এবং তারটা আমি করব বলে প্রস্তাব দিই। যখন আঞ্চলিক দাস অ্যালবার্ট হোফমেন ফিরে আসেন এবং দেখেন যে, আমি আমার কার্যভার ছেড়ে এসেছি, তখন তিনি বন্ধুসুলভ হাসি দিয়ে অন্য নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত একজনের নিজের কার্যভারে লেগে থাকার গুরুত্ব সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করেছিলেন। সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত আমি তার পরামর্শ মনে রেখেছি।

১৯৪১ সালের আগস্ট মাসে, যিহোবার সাক্ষিরা মিশৌরীর সেন্ট লুইসে এক বিরাট সম্মেলন করার পরিকল্পনা করে। জো এবং মার্গারেট হার্ট তাদের পিকাপ ট্রাকের পিছনটা ঢেকে ফেলে এবং সেখানে বেঞ্চ বসায়। আমরা নয় জন অগ্রগামী সেই ট্রাকে করে সেন্ট লুইসে যেতে ২,৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিই। আসতে এবং যেতে এক সপ্তাহ করে লেগেছিল। সম্মেলনে, একজন পুলিশ অনুমান করে বলেছিলেন যে, সর্বোচ্চ উপস্থিতি হল ১,১৫,০০০ জন। যদিও সেই সংখ্যা হয়তো এর চেয়ে কম ছিল কিন্তু নিশ্চিতভাবে সেটা সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৬৫,০০০ সাক্ষির চেয়ে বেশি ছিল। সম্মেলন আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে প্রকৃতই সমৃদ্ধজনক ছিল।

ব্রুকলিন বেথেলে সেবা করা

ওয়েনাচিতে ফিরে আসার পর আমি একটা চিঠি পাই, যেখানে আমাকে ব্রুকলিন বেথেলে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। ১৯৪১ সালের ২৭শে অক্টোবর সেখানে পৌঁছানোর পর, আমাকে ফ্যাক্টরি অধ্যক্ষ নেথেন এইচ. নরের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি সদয়ভাবে আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, বেথেলের জীবন কেমন এবং জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, সেখানে জীবনকে সফল করে তোলার জন্য যিহোবার নিকটবর্তী থাকা অপরিহার্য। এরপর আমাকে শিপিং ডিপার্টমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয় এবং জাহাজে করে পাঠানোর জন্য সাহিত্যাদির বাক্সগুলো বাঁধার কাজ দেওয়া হয়।

জোসেফ রাদারফোর্ড, যিনি বিশ্বব্যাপী যিহোবার সাক্ষিদের মধ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, তিনি ১৯৪২ সালের ৪ঠা জানুয়ারি মারা যান। পাঁচ দিন পর, সোসাইটির পরিচালকবর্গ তার জায়গায় ভাই নরকে নির্বাচিত করে। সোসাইটির দীর্ঘদিনের সচিব-কোষাধ্যক্ষ ডব্লু. ই. ভ্যান অ্যামবার্গ যখন বেথেল পরিবারের কাছে এটা ঘোষণা করেন, তখন তিনি বলেন: “আমার সেই সময়ের কথা মনে আছে, যখন [১৯১৬ সালে] সি. টি. রাসেল মারা যান এবং তার জায়গায় ভাই জে. এফ রাদারফোর্ড দায়িত্বে আসেন। প্রভু তাঁর কাজে ক্রমাগত পরিচালনা এবং বৃদ্ধি দিয়ে চলেছেন। এখন, আমি পুরোপুরি প্রত্যাশা করি যে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে নেথেন এইচ. নরের মাধ্যমে কাজ এগিয়ে যাবে কারণ এটা প্রভুর কাজ, মানুষের নয়।”

১৯৪২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঘোষণা করা হয় যে, “ঐশিক পরিচর্যার ক্ষেত্রে অগ্রগতিমূলক ধারা” শুরু হতে যাচ্ছে। এটা যারা বেথেলে রয়েছে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছিল, যাতে তারা বাইবেলের বিষয়গুলোর ওপর গবেষণা করার ক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতাকে উন্নত করতে, তাদের বিষয়বস্তু সঠিকভাবে সংগঠিত করতে এবং সেটাকে কার্যকরীভাবে উপস্থাপন করতে পারে। জনসাধারণের সামনে বলার বিষয়ে পূর্ব প্রশিক্ষণের কারণে আমি সেই কার্যক্রমে দ্রুত উন্নতি করতে পেরেছিলাম।

শীঘ্রই আমাকে সার্ভিস ডিপার্টমেন্টে নিযুক্ত করা হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের সাক্ষিদের পরিচর্যার কাজ দেখাশোনা করছিল। সেই বছরই পরে, পরিচারকদের জন্য পুনরায় একটা কার্যক্রম প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যাতে তারা সাক্ষিদের কোম্পানিগুলোতে পরিদর্শন করতে পারে। পরবর্তী সময়ে, ভ্রমণ অধ্যক্ষদের, যাদেরকে ভাইদের দাস বলা হতো, সীমা অধ্যক্ষ বলা হয়। ১৯৪২ সালের গরমের সময়, এই ধরনের পরিচর্যার জন্য ভাইদের প্রশিক্ষণ দিতে বেথেলে কার্যক্রমের ব্যবস্থা করা হয় এবং প্রশিক্ষণ গ্রহণকারীদের মধ্যে একজন হওয়ার বিশেষ সুযোগ আমি পাই। আমার বিশেষভাবে মনে আছে যে ভাই নর, যিনি নির্দেশকদের মধ্যে একজন ছিলেন, তিনি আমাদের কাছে এই বিষয়টার ওপর জোর দিয়েছিলেন: “মানুষকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করবেন না। তা হলে আপনারা কাউকেই খুশি করতে পারবেন না। যিহোবাকে সন্তুষ্ট করুন আর তা হলেই যারা যিহোবাকে ভালবাসে তাদের সকলকে আপনারা খুশি করবেন।”

১৯৪২ সালের অক্টোবর মাসে ভ্রমণের কাজ বাস্তবায়িত হয়েছিল। বেথেলে আমাদের মধ্যে কেউ কেউ নির্দিষ্ট কিছু সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এতে অংশগ্রহণ করত, নিউ ইয়র্ক সিটির ৪০০ কিলোমিটারের মধ্যবর্তী মণ্ডলীগুলো পরিদর্শন করত। আমরা মণ্ডলীর প্রচার কাজ এবং সভার উপস্থিতি পুনর্বিবেচনা করতাম, মণ্ডলীর দায়িত্বপূর্ণ ভাইদের সঙ্গে সভা করতাম, একটা বা দুটো বক্তৃতা দিতাম এবং স্থানীয় সাক্ষিদের সঙ্গে পরিচর্যায় যেতাম।

১৯৪৪ সালে, সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট থেকে যাদেরকে ছয় মাসের জন্য ডেলেওয়ার, মেরিল্যান্ড, পেনসিলভানিয়া এবং ভার্জিনিয়ায় সেবা করার জন্য ভ্রমণ কাজে পাঠানো হয়েছিল, তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। পরে কয়েক মাসের জন্য আমি কানেটিকাট, ম্যাসাচুসিটস্‌ এবং রোড আইল্যান্ডের মণ্ডলীগুলোতে পরিদর্শন করি। বেথেলে ফিরে আসার পর আমি ভাই নর এবং তার সচিব মিলটন হেনশেলের সঙ্গে অফিসে খণ্ডকালীন কাজ করি, যেখানে আমি আমাদের বিশ্বব্যাপী কাজের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম। আমি ডব্লু. ই. ভ্যান অ্যামবার্গ এবং তার সহকারী গ্র্যান্ট সুটারের অধীনে কোষাধ্যক্ষের অফিসেও খণ্ডকালীন কাজ করেছিলাম। এরপর ১৯৪৬ সালে, আমাকে বেথেলের বেশ কয়েকটা অফিসের অধ্যক্ষ করা হয়।

আমার জীবনে বিরাট পরিবর্তনগুলো

১৯৪৫ সালে মণ্ডলীগুলোতে সেবা করার সময়, রোড আইল্যান্ডের প্রভিডেন্সের জুলিয়া চারনসকাসের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। ১৯৪৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে আমরা বিয়ে করার চিন্তা করি। বেথেল সেবাকে আমি অত্যন্ত ভালবাসতাম কিন্তু সেই সময় সেখানে সেবা করার জন্য বিবাহিত সাথিকে নিয়ে আসার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তাই, ১৯৪৮ সালের জানুয়ারি মাসে আমি বেথেল ত্যাগ করি এবং জুলিয়া (জুলি) এবং আমি বিয়ে করি। প্রভিডেন্সের একটা সুপারমার্কেটে আমি খণ্ডকালীন কাজ পাই এবং আমরা একসঙ্গে অগ্রগামীর পরিচর্যা শুরু করি।

১৯৪৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমাকে উত্তরপশ্চিম উইসকনসিনে সীমার কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। বেশির ভাগই ছোট ছোট শহর এবং দূরবর্তী ডেইরিবহুল এলাকাগুলোতে প্রচার করা জুলি এবং আমার জন্য এক বিরাট পরিবর্তন ছিল। শীতের সময়গুলো বেশ দীর্ঘ এবং প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ছিল ও সেইসঙ্গে অনেক সপ্তাহ তাপামাত্রা হিমাংকের নিচে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম ছিল এবং অনেক তুষারপাত হতো। আমাদের কোনো গাড়ি ছিল না। কিন্তু, পরবর্তী মণ্ডলীতে যাওয়ার জন্য সবসময় কেউ না কেউ আমাদের গাড়িতে করে দিয়ে আসত।

আমি সীমার কাজ শুরু করার কিছুদিন পরই আমাদের সীমা অধিবেশন হয়েছিল। আমার মনে আছে যে, আমি গভীর মনোযোগের সঙ্গে পরীক্ষা করে দেখছিলাম সমস্তকিছু ঠিকঠাক মতো করা হয়েছে কি না, যা আমাকে কিছুটা ঘাবড়ে দিয়েছিল। তাই, জেলা অধ্যক্ষ নিকোলাস কোভালাক সদয়ভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, স্থানীয় ভাইদের তাদের নিজেদের উপায়ে দেখাশোনার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে আর তা হলে আমাকে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে এত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরিচালনা দেওয়ার চেষ্টা করার দরকার নেই। তখন থেকে অনেক কার্যভার পরিচালনা করার সময় সেই পরামর্শ আমার কাছে সাহায্যকারী বলে মনে হয়ে আসছে।

১৯৫০ সালে আমি এক সাময়িক দায়িত্ব পাই আর সেটা হল সেই সমস্ত অভ্যাগতের জন্য রুমিংয়ের ব্যবস্থার দেখাশোনা করা, যারা নিউ ইয়র্ক সিটির ইয়াংকি স্টেডিয়ামে আমাদের বড় বড় সম্মেলনগুলোর প্রথমটাতে এসেছিল। ৬৭টি দেশ থেকে আসা অভ্যাগত এবং সর্বোচ্চ উপস্থিতি ১,২৩,৭০৭ জন সহ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্মেলন এক রোমাঞ্চকর বিষয় ছিল! সম্মেলনের পরে জুলি এবং আমি পুনরায় আমাদের ভ্রমণের পরিচর্যা শুরু করি। সীমার কাজে আমরা যথেষ্ট খুশি ছিলাম। কিন্তু, আমরা মনে করেছিলাম যে আমাদের সবসময় নিজেদের বিলিয়ে দেওয়া উচিত। তাই, প্রতি বছর আমরা বেথেল এবং মিশনারি সেবা দুটোর জন্যই আবেদনপত্র পূরণ করতাম। ১৯৫২ সালে ওয়াচটাওয়ার স্কুল অফ গিলিয়েডের ২০তম ক্লাসে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়ে অনেক আনন্দিত হয়েছিলাম, যেখানে আমরা মিশনারি কাজের প্রশিক্ষণ পেয়েছিলাম।

অন্য দেশে গিয়ে সেবা করা

১৯৫৩ সালে আমাদের গ্র্যাজুয়েশনের পর, আমাদেরকে ব্রিটেনে কার্যভার দেওয়া হয়, যেখানে আমি দক্ষিণ ইংল্যান্ডে জেলার কাজ করি। এই কাজ, যা জুলি ও আমি অত্যন্ত উপভোগ করছিলাম, সেটার এক বছরের কম সময়ের মধ্যেই ডেনমার্কে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের কার্যভার পেয়ে আমরা অনেক অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। ডেনমার্কে শাখা অফিস নতুনভাবে দেখাশোনা করার প্রয়োজন ছিল। যেহেতু আমি সবচেয়ে কাছাকাছি ছিলাম এবং ব্রুকলিন বেথেলে এইরকম কাজের জন্য প্রশিক্ষণ পেয়েছিলাম, তাই সাহায্য করার জন্য আমাকে পাঠানো হয়েছিল। নেদারল্যান্ডস থেকে আমরা ফেরিতে চড়ি এবং সেখান থেকে আমরা ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে যাওয়ার জন্য ট্রেন ধরি। আমরা ১৯৫৪ সালের ৯ই আগস্ট সেখানে গিয়ে পৌঁছাই।

যে-সমস্যাগুলো মোকাবিলা করতে হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে একটা ছিল, দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েক জন ভাই ব্রুকলিনের প্রধান কার্যলয় থেকে আসা পরিচালনাকে মেনে নিতে ব্যর্থ হয়েছিল। এ ছাড়া, আমাদের প্রকাশনাদি ড্যানিশ ভাষায় অনুবাদ করত, এমন চার জনের মধ্যে তিন জন ব্যক্তি বেথেল ছেড়ে চলে গিয়েছিল এবং ধীরে ধীরে যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে মেলামেশা করা বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু, যিহোবা আমাদের প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন। ইয়র্ন এবং অ্যানা লারসেন নামে দুজন অগ্রগামী, যারা খণ্ডকালীন অনুবাদের কাজ করত, তারা পূর্ণ-সময়ের জন্য নিজেদের প্রাপ্তিসাধ্য করেছিল। এভাবে ড্যানিশ ভাষায় আমাদের পত্রিকা অনুবাদ চলতে থাকে, কোনো সংখ্যাই বাদ পড়েনি। তারা এখনও ডেনমার্কের বেথেলে আছেন এবং ইয়র্ন শাখা অফিসের কোঅর্ডিনেটর।

প্রথম দিকের সেই বছরগুলোতে উৎসাহের প্রকৃত উৎস ছিল ভাই নরের নিয়মিত পরিদর্শন। তিনি প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলার জন্য সময় করে নিতেন, সেই সমস্ত অভিজ্ঞতা বলতেন, যেগুলো সমস্যাগুলোর সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, সেই বিষয়ে অন্তর্দৃষ্টি দিত। ১৯৫৫ সালে এক পরিদর্শনের সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ছাপানোর সুযোগ-সুবিধা সহ আমাদের একটা নতুন শাখা অফিস নির্মাণ করা দরকার, যাতে আমরা ডেনমার্কের জন্য পত্রিকা উৎপাদন করতে পারি। কোপেনহেগেনের উত্তরাঞ্চলের শহরতলিতে একটা জমি পাওয়া গিয়েছিল এবং ১৯৫৭ সালের গরমের মধ্যে আমরা নতুন নির্মিত বিল্ডিংয়ে চলে যাই। হ্যারি জনসন ও তার স্ত্রী কারিন ২৬তম গিলিয়েড ক্লাস থেকে গ্র্যাজুয়েশনের পর সম্প্রতি ডেনমার্কে এসেছিল এবং আমাদের ছাপাখানা স্থাপন ও তা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্য করে।

ডেনমার্কে বড় বড় সম্মেলন করার জন্য আমরা আমাদের সংগঠিত করার কাজে উন্নতি করি এবং যুক্তরাষ্ট্রে সম্মেলনগুলোতে কাজ করার সময় আমি যে-অভিজ্ঞতাগুলো অর্জন করেছিলাম, সেগুলো সাহায্যকারী প্রমাণিত হয়। ১৯৬১ সালে কোপেনহেগেনে আমাদের বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন ৩০টারও বেশি দেশ থেকে আসা অভ্যাগতদের থাকার ব্যবস্থা করেছিল। সর্বোচ্চ সংখ্যা ছিল ৩৩,৫১৩ জন। ১৯৬৯ সালে স্ক্যানডিনেভিয়ায় অনুষ্ঠিত সমস্ত সম্মেলনের মধ্যে সবচেয়ে বড়টার আয়োজন করেছিলাম, যেখানে সর্বোচ্চ উপস্থিতি ছিল ৪২,০৭৩ জন!

১৯৬৩ সালে আমাকে ৩৮তম গিলিয়েড ক্লাসে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। এটা ছিল সমন্বয় সাধিত দশ মাসের এক কোর্স, যা নির্দিষ্টভাবে শাখার কর্মীবৃন্দের প্রশিক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। ব্রুকলিন বেথেল পরিবারের সঙ্গে আবার মিলিত হওয়া এবং অনেক বছর ধরে প্রধান কার্যালয়ের কাজগুলোর দেখাশোনা করছে, এমন ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা থেকে উপকার লাভ করা অনেক আনন্দদায়ক বিষয় ছিল।

এই কোর্সের পর আমি ডেনমার্কে ফিরে আসি এবং সেখানকার দায়িত্বগুলো দেখাশোনা করতে থাকি। এ ছাড়া, জোন অধ্যক্ষ হিসেবে সেবার করার এবং পশ্চিম ও উত্তর ইউরোপের কর্মীবৃন্দকে উৎসাহ দেওয়ার ও সেইসঙ্গে তাদের দায়িত্বগুলো পরিপূর্ণ করতে তাদের সাহায্য করার জন্য, সেখানে পরিদর্শন করার বিশেষ সুযোগ আমার হয়েছিল। অতি সম্প্রতি আমি পশ্চিম আফ্রিকা এবং ক্যারিবিয়ানে তা করেছি।

১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে ডেনমার্কের ভাইয়েরা এমন একটা জায়গার খোঁজ করতে শুরু করে, যেখানে অনুবাদ ও ছাপানোর কার্যক্রমকে বাড়ানোর জন্য বিরাট বিল্ডিং গড়ে তোলা যেতে পারে। পশ্চিম কোপেনহেগেনের প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে এক উত্তম জমি ছিল। অন্যদের সঙ্গে আমিও এই নতুন বিল্ডিংয়ের পরিকল্পনা এবং নকশার জন্য কাজ করি আর জুলি ও আমি এই বেথেল পরিবারের সঙ্গে অপূর্ব নতুন বাড়িতে থাকার জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। কিন্তু, বাস্তবে তেমনটা হয়নি।

আবারও ব্রুকলিনে

১৯৮০ সালের নভেম্বর মাসে জুলি এবং আমাকে ব্রুকলিন বেথেলে সেবা করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়, যেখানে আমরা ১৯৮১ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথমদিকে গিয়ে পৌঁছাই। সেই সময় আমাদের বয়স ছিল ৫০ এর কোঠার শেষের দিকে এবং ডেনমার্কে আমাদের প্রিয় ভাইবোনদের সঙ্গে আমাদের জীবনের প্রায় অর্ধেক সময় কাটানোর পর, যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাওয়া আমাদের পক্ষে সহজ ছিল না। কিন্তু, আমরা যেখানে থাকতে চেয়েছিলাম, সেখানে থাকিনি বরং আমাদের সাম্প্রতিক কার্যভারগুলোর ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখার চেষ্টা করি আর সেগুলো যে-প্রতিদ্বন্দ্বিতাই নিয়ে আসুক না কেন।

আমরা ব্রুকলিনে ফিরে আসি এবং সেখানে স্থায়ীভাবে থাকি। জুলিকে হিসাবরক্ষণের অফিসে কার্যভার দেওয়া হয়, ডেনমার্কেও সে এই কাজই করত। আমাকে রাইটিং ডিপার্টমেন্টে আমাদের প্রকাশনাদির ধারাবাহিক প্রক্রিয়াগুলোর তালিকা করায় সাহায্য করার কার্যভার দেওয়া হয়। ১৯৮০-র দশকের প্রথম দিক ছিল ব্রুকলিনে আমাদের কার্যপ্রণালীতে পরিবর্তন করার সময়, যখন আমরা উত্তপ্ত সীসার পাত দিয়ে টাইপরাইটার এবং টাইপসেটিং ব্যবহার করা থেকে পরিবর্তিত হয়ে কমপিউটার প্রক্রিয়া এবং অফসেট মুদ্রণ প্রক্রিয়া ব্যবহার করতে শুরু করি। আমি কমপিউটার সম্বন্ধে কিছুই জানতাম না কিন্তু সংগঠনের প্রক্রিয়া সম্বন্ধে কিছু বোধগম্যতা এবং লোকেদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার ছিল।

এর কিছুদিন পরই আর্ট ডিপার্টমেন্টের সংগঠিত করার কাজকে উন্নত করার দরকার ছিল, যখন আমরা আগের প্রণালী পরিবর্তন করে পূর্ণ রঙিন অফসেট মুদ্রণ প্রণালী এবং রঙিন আঁকা চিত্র ও আলোকচিত্র ব্যবহার করতে শুরু করি। যদিও একজন শিল্পী হিসেবে আমার কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না কিন্তু আমি সংগঠিত করার কাজে সাহায্য করতে পারতাম। তাই, নয় বছর ধরে সেই ডিপার্টমেন্ট দেখাশোনা করার বিশেষ সুযোগ আমার হয়েছিল।

১৯৯২ সালে আমাকে পরিচালক গোষ্ঠীর পাবলিশিং ডিপার্টমেন্টে সাহায্য করার কার্যভার দেওয়া হয় এবং এরপর কোষাধ্যক্ষের অফিসে স্থানান্তর করা হয়। এখানে আমি যিহোবার সাক্ষিদের অর্থসংক্রান্ত বিষয়গুলোর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কাজকর্ম করি।

আমার বাল্যকাল থেকে সেবা করা

আমার একেবারে বাল্যকাল থেকে এবং ৭০ বছরের উৎসর্গীকৃত সেবায় যিহোবা ধৈর্যের সঙ্গে আমাকে তাঁর বাক্য বাইবেল এবং তাঁর অপূর্ব সংগঠনের সাহায্যকারী ভাইদের মাধ্যমে শিক্ষা দিয়েছেন। আমি ৬৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে পূর্ণ-সময়ের পরিচর্যা উপভোগ করেছি এবং এর মধ্যে ৫৫ বছরের বেশি সময় ধরে আমার অনুগত স্ত্রী জুলির সঙ্গে তা উপভোগ করেছি। সত্যিই, আমি অনুভব করি যে, আমি যিহোবার দ্বারা প্রচুররূপে আশীর্বাদ পেয়েছি।

সেই ১৯৪০ সালে যখন আমি অগ্রগামী কাজের জন্য বাড়ি ছেড়ে এসেছিলাম, তখন আমার বাবা আমার সিদ্ধান্তের জন্য উপহাস করে বলেছিলেন: “এই কাজ করার জন্য তুমি ঘর ছেড়ে যাচ্ছ, তাই মনে করো না যে, যেকোনো সাহায্যের জন্য তুমি আবার আমার কাছে ফিরে আসতে পারবে।” বিগত বছরগুলোতে আমাকে কখনও তা করতে হয়নি। যিহোবা উদারভাবে আমার প্রয়োজনগুলো জুগিয়েছেন এবং প্রায়ই তা সাহায্যকারী সহখ্রিস্টানদের মাধ্যমে। পরবর্তী সময়ে, আমার বাবা আমাদের কাজের প্রতি সম্মান দেখান এবং এমনকি ১৯৭২ সালে মারা যাওয়ার আগে বাইবেলের সত্য শেখার জন্য কিছু উন্নতি করেছিলেন। মা, যার স্বর্গীয় আশা ছিল, তিনি ১৯৮৫ সালে ১০২ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত বিশ্বস্তভাবে যিহোবার সেবা করে গিয়েছিলেন।

যদিও পূর্ণ-সময়ের পরিচর্যায় সমস্যা আসে কিন্তু জুলি এবং আমি কখনও আমাদের কার্যভার পরিত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিইনি। যিহোবা সবসময় আমাদের মধ্যে এই সংকল্প বজায় রেখেছেন। এমনকি আমার বাবামা যখন বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং সাহায্যের প্রয়োজন হয়েছিল, তখন আমার দিদি ভিক্টোরিয়া মার্লিন সাহায্য করেছিল এবং সদয়ভাবে তাদের যত্ন নিয়েছিল। তার প্রেমময় সাহায্যের জন্য আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ, যা আমাদের পূর্ণ-সময়ের পরিচর্যা চালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।

জুলি অনুগতভাবে আমাদের সমস্ত কার্যভারে আমাকে সাহয্য করেছে, এটাকে যিহোবার কাছে নিজের উৎসর্গীকরণের অংশ হিসেবে দেখেছে। আর যদিও আমার বয়স এখন ৮০ বছর এবং কিছু স্বাস্থগত সমস্যা ভোগ করছি কিন্তু আমি যিহোবার দ্বারা প্রচুর আশীর্বাদ উপভোগ করছি। আমি গীতরচকের কাছ থেকে অনেক উৎসাহ পেয়েছি, যিনি যিহোবা যে তাকে বাল্যকাল থেকে শিক্ষা দিয়ে এসেছেন সেটা ঘোষণা করার পর মিনতি করেছিলেন, ‘হে ঈশ্বর, বৃদ্ধ বয়স পর্য্যন্তও আমাকে পরিত্যাগ করিও না, যাবৎ আমি ভাবী লোক সকলকে তোমার পরাক্রম, জ্ঞাত না করি।’—গীতসংহিতা ৭১:১৭, ১৮.

[পাদটীকা]

a ওয়ারেন ছিলেন মিলটন হেনশেলের বড় ভাই আর মিলটন হেনশেল বহু বছর ধরে যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালক গোষ্ঠীর একজন সদস্য হিসেবে সেবা করেছিলেন।

[২০ পৃষ্ঠার চিত্র]

১৯৪০ সালে মার সঙ্গে যখন আমি অগ্রগামীর কাজ শুরু করি

[২১ পৃষ্ঠার চিত্র]

সহঅগ্রগামী জো এবং মার্গারেট হার্টের সঙ্গে

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

১৯৪৮ সালের জানুয়ারি মাসে আমাদের বিয়ের দিনে

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

১৯৫৩ সালে গিলিয়েডের সহপাঠীদের সঙ্গে। বাঁদিক থেকে ডানদিকে: ডন এবং ভার্জিনিয়া ওয়ার্ড, হেট্রুডা স্টেংগা, জুলি এবং আমি

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

১৯৬১ সালে ডেনমার্কের কোপনহেগেনে ফ্রেডরিক ডব্লু. ফ্রাঞ্জ এবং নেথেন এইচ. নরের সঙ্গে

[২৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

বর্তমানে জুলির সঙ্গে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার