ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৫ ৭/১৫ পৃষ্ঠা ১০-১৩
  • রাশিয়ার সবচেয়ে পুরোনো লাইব্রেরি থেকে বাইবেলের ওপর “স্পষ্ট বোধগম্যতা”

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • রাশিয়ার সবচেয়ে পুরোনো লাইব্রেরি থেকে বাইবেলের ওপর “স্পষ্ট বোধগম্যতা”
  • ২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • প্রাচীন পাণ্ডুলিপিগুলো —ঈশ্বরের বাক্যের রক্ষক
  • জার আগ্রহ দেখান
  • ক্রাইমিয়া থেকে বাইবেলের সম্পদগুলো
  • আধুনিক সময়ে আধ্যাত্মিক জ্ঞানালোক
  • বাইবেল যেভাবে আমাদের কাছে এসেছে—ভাগ তৃতীয়
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৫ ৭/১৫ পৃষ্ঠা ১০-১৩

রাশিয়ার সবচেয়ে পুরোনো লাইব্রেরি থেকে বাইবেলের ওপর “স্পষ্ট বোধগম্যতা”

দুজন পণ্ডিত ব্যক্তি বাইবেলের প্রাচীন পাণ্ডুলিপিগুলো সন্ধান করছেন। তারা আলাদা আলাদাভাবে বিভিন্ন মরুভূমির মধ্যে দিয়ে ভ্রমণ করে এবং অনেক গুহা, মঠ ও প্রাচীন খাড়া পাহাড়ের গা-ঘেঁষে অবস্থিত চূড়ার আবাসগুলোতে খোঁজ করে। কয়েক বছর পর, তাদের যাত্রাপথ রাশিয়ার সবচেয়ে পুরোনো পাবলিক লাইব্রেরিতে এসে থেমে যায়, যেখানে এমন কিছু রোমাঞ্চকর বাইবেল পাণ্ডুলিপি আবিষ্কার করা হয়, যে-সম্বন্ধে এর আগে কখনো জানা যায়নি। এই ব্যক্তিরা কারা ছিল? তারা যে-সম্পদগুলো আবিষ্কার করেছিল, সেগুলো কীভাবে রাশিয়ায় পৌঁছেছিল?

প্রাচীন পাণ্ডুলিপিগুলো —ঈশ্বরের বাক্যের রক্ষক

এই দুজন পণ্ডিত ব্যক্তির মধ্যে একজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য আমাদের উনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ফিরে যেতে হবে, যখন ইউরোপের সর্বত্র বুদ্ধিজীবীদের বিপ্লবের হাওয়া বইছিল। এটা ছিল বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি এবং সাংস্কৃতিক সাফল্যের এক সময়, যা পরম্পরাগত বিশ্বাসগুলো সম্বন্ধে এক সন্দেহবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ছড়িয়ে দিয়েছিল। বাইবেল সমালোচকরা বাইবেলের নির্ভরযোগ্যতাকে নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল। বাস্তবিকপক্ষে, কিছু পণ্ডিত ব্যক্তি বাইবেল পাঠ্যাংশের সত্যতার প্রমাণ সম্বন্ধে খোলাখুলিভাবে সন্দেহ প্রকাশ করছিল।

বাইবেলের নির্দিষ্ট কিছু আন্তরিক সমর্থক উপলব্ধি করেছিল যে, নতুন রক্ষকেরা—তখনও পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত বাইবেলের প্রাচীন পাণ্ডুলিপিগুলো—নিঃসন্দেহে ঈশ্বরের বাক্যের নীতিনিষ্ঠাকে তুলে ধরবে। সেই সময়ে বিদ্যমান পাণ্ডুলিপিগুলোর চেয়ে যদি আরও পুরোনো পাণ্ডুলিপি পাওয়া যেত, তা হলে সেগুলো বাইবেলের পাঠ্যাংশের বিশুদ্ধতা সম্বন্ধে নীরব সাক্ষ্য দিত, যদিও বার বার এর বার্তাকে নষ্ট বা বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ ছাড়া, এই ধরনের পাণ্ডুলিপিগুলো পাঠ্যাংশের যে-কয়েকটা জায়গায় ভুল অনুবাদ ঢোকানো হয়েছিল, সেগুলো প্রকাশ করতে পারত।

জার্মানিতে বাইবেলের সত্যতা সম্বন্ধে কিছু উত্তপ্ত তর্কবিতর্ক হয়েছিল। সেখানে একজন তরুণ অধ্যাপক এমন এক ভ্রমণের জন্য তার আরামদায়ক শিক্ষাজীবন ছেড়ে দিয়েছিলেন, যা তাকে বাইবেলের সর্বকালের সবচেয়ে বড় আবিষ্কারগুলোর মধ্যে একটাতে নিয়ে যাবে। তিনি ছিলেন কনস্ট্যানটিন ভন টিশেনডর্ফ নামে একজন বাইবেল পণ্ডিত, যিনি বাইবেলের সমালোচনাকে প্রত্যাখ্যান করায় তা তাকে বাইবেল পাঠ্যাংশের সত্যতার প্রমাণকে রক্ষা করতে লক্ষণীয় সাফল্য এনে দিয়েছিল। ১৮৪৪ সালে সীনয় প্রান্তরে তার প্রথম ভ্রমণ অবিশ্বাস্য সাফল্য এনে দিয়েছিল। একটা মঠের ময়লার বাক্সে এক ঝলক দৃষ্টি দিয়েই তিনি প্রাচীন সেপ্টুয়াজিন্ট বা ইব্রীয় শাস্ত্রের গ্রিক অনুবাদের একটি প্রতিলিপি উদ্‌ঘাটন করেছিলেন, যেটি ছিল তখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে পুরোনো একটি প্রতিলিপি!

অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে টিশেনডর্ফ ৪৩টি পার্চমেন্ট নিয়ে আসতে পেরেছিলেন। যদিও তিনি দৃঢ়প্রত্যয়ী ছিলেন যে সেখানে আরও কিছু ছিল কিন্তু ১৮৫৩ সালের পুনরায় ভ্রমণ করে তিনি কেবল একটা অংশ পেয়েছিলেন। বাকি অংশগুলো কোথায় ছিল? তার টাকাপয়সা শেষ হয়ে গিয়েছিল, তাই টিশেনডর্ফ একজন ধনী ব্যক্তির আর্থিক সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন এবং তিনি প্রাচীন পাণ্ডুলিপির সন্ধানে আবারও তার মাতৃভূমি ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু, এই অভিযানে যাওয়ার আগে তিনি রাশিয়ার জারের (সম্রাট) কাছে আবেদন করেছিলেন।

জার আগ্রহ দেখান

একজন প্রটেস্টান্ট পণ্ডিত হিসেবে রাশিয়ায় তিনি কী ধরনের অভ্যর্থনা পাবেন, সেই বিষয়টা নিয়ে টিশেনডর্ফ হয়তো অত্যন্ত চিন্তিত ছিলেন কারণ সেটা ছিল এমন এক বিশাল দেশ, যেখানে রাশিয়ান অর্থোডক্স ধর্মকে সমর্থন করা হতো। আনন্দের বিষয় যে, রাশিয়া পরিবর্তন ও সংস্কারের এক অনুকূল যুগে প্রবেশ করেছিল। শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করায় সম্রাজ্ঞী ক্যাথরিন ২য় (মহান ক্যাথরিন নামেও পরিচিত) ১৭৯৫ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গস ইমপিরিয়াল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করতে পরিচালিত হয়েছিলেন। রাশিয়ার প্রথম পাবলিক লাইব্রেরি হিসেবে এতে প্রচুর ছাপানো তথ্য ছিল, যা লক্ষ লক্ষ লোক সহজেই পড়তে পারত।

ইউরোপের চমৎকার লাইব্রেরিগুলোর মধ্যে একটি সুপরিচিত লাইব্রেরি হওয়া সত্ত্বেও, দি ইমপিরিয়াল লাইব্রেরির একটা অপূর্ণতা ছিল। এটা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পঞ্চাশ বছর পরেও এখানে মাত্র ছয়টি ইব্রীয় পাণ্ডুলিপি ছিল। এটা বাইবেলের ভাষা ও অনুবাদ সম্বন্ধে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান আগ্রহ ধরে রাখতে পারেনি। ক্যাথরিন ২য়, পণ্ডিত ব্যক্তিদেরকে ইব্রীয় ভাষা অধ্যয়ন করার জন্য ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলেন। পণ্ডিত ব্যক্তিরা ফিরে আসার পর, হঠাৎ করে রাশিয়ার বড় বড় অর্থোডক্স সেমিনারিগুলোতে ইব্রীয় শিক্ষার ব্যাপক প্রচলন দেখা যায় এবং প্রথমবারের মতো রাশিয়ার পণ্ডিত ব্যক্তিরা প্রাচীন ইব্রীয় ভাষা থেকে রুশ ভাষায় বাইবেলের যথার্থ অনুবাদ করতে শুরু করে। কিন্তু তারা টাকাপয়সার অভাব, এমনকি গির্জার রক্ষণশীল নেতাদের বিরোধিতার মুখোমুখি হয়। যারা বাইবেলের জ্ঞানের সন্ধান করছিল, তাদের জন্য প্রকৃত জ্ঞানালোক তখনও শুরু হয়নি।

জার আলেকজান্ডার ২য়, টিশেনডর্ফের অভিযানের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন এবং আর্থিক সমর্থন জুগিয়েছিলেন। কিছু ব্যক্তির “ঈর্ষাপরায়ণতা ও গোঁড়া বিরোধিতা” সত্ত্বেও, টিশেনডর্ফ তার সীনয় অভিযান থেকে সেপ্টুয়াজিন্ট এর বাকি প্রতিলিপিগুলো নিয়ে ফিরে এসেছিলেন।a পরবর্তী সময়ে এর নাম দেওয়া হয় কোডেক্স সাইনাইটিকাস, যেটা এখনও পর্যন্ত বিদ্যমান সবচেয়ে পুরোনো বাইবেল পাণ্ডুলিপিগুলোর মধ্যে একটা। সেন্ট পিটার্সবার্গে ফিরে, টিশেনডর্ফ অতি সত্বর জারের বাসভবন দি ইমপিরিয়াল উইন্টার প্যালেসে চলে গিয়েছিলেন। তিনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে, জার যেন “বৈশ্লেষিক ও বাইবেল গবেষণায় সর্বমহৎ উদ্যোগগুলোর মধ্যে একটাকে”—নবপ্রাপ্ত পাণ্ডুলিপির একটা ছাপানো সংস্করণকে, যা পরবর্তী সময়ে দি ইমপিরিয়াল লাইব্রেরিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল—সমর্থন করেন। জার সঙ্গে সঙ্গে তাতে রাজি হয়েছিলেন এবং অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে টিশেনডর্ফ পরে লিখেছিলেন: “আমাদের প্রজন্মকে এক দূরদর্শিতা প্রদান করা হয়েছে . . . সাইনাইটিক বাইবেল আমাদেরকে ঈশ্বরের বাক্যের মূল পাঠ্যাংশে যেভাবে লেখা হয়েছিল, সেই সম্বন্ধে সম্পূর্ণ ও স্পষ্ট বোধগম্যতা প্রদান করবে এবং এর সত্যতা প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে সত্যকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।”

ক্রাইমিয়া থেকে বাইবেলের সম্পদগুলো

শুরুতে আরেকজন পণ্ডিত ব্যক্তি সম্বন্ধে বলা হয়েছিল, যিনি বাইবেলের সম্পদগুলো খুঁজছিলেন। তিনি কে ছিলেন? টিশেনডর্ফ রাশিয়াতে ফিরে আসার কয়েক বছর আগে, দি ইমপিরিয়াল লাইব্রেরি এত অবিশ্বাস্য এক প্রস্তাব পেয়েছিল যে এটা জারের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল এবং ইউরোপের সকল জায়গা থেকে পণ্ডিত ব্যক্তিদের নিয়ে এসেছিল। তারা তাদের চোখকে বিশ্বাস করতে পারেনি। তাদের সামনে পাণ্ডুলিপি এবং অন্যান্য বিষয়বস্তুর এক বিশাল সংগ্রহ ছিল। এতে ৯৭৫টি পাণ্ডুলিপি ও গুটানো পুস্তকসহ তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো ২,৪১২টি সামগ্রী ছিল। এর মধ্যে ৪৫টি বাইবেল পাণ্ডুলিপি দশম শতাব্দীরও আগের ছিল। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, এই সমস্ত পাণ্ডুলিপি আ্যভ্রায়েম ফিরকভিচ নামের একজন ব্যক্তি প্রায় একাই সংগ্রহ করেছিলেন, যিনি ছিলেন একজন ক্যারাইট পণ্ডিত এবং সেই সময় যার বয়স ছিল ৭০ বছরেরও বেশি! কিন্তু ক্যারাইটরা কারা ছিল?b

এই প্রশ্নটির প্রতি জার অনেক আগ্রহী ছিলেন। রাশিয়া এর সীমানা বিস্তৃত করে সেই এলাকাগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল, যেগুলো আগে অন্যান্য দেশের অধিকারে ছিল। এর ফলে সাম্রাজ্যে নতুন নতুন সাম্প্রদায়িক দল উৎপন্ন হয়েছিল। কৃষ্ণ সাগরের উপকূলে অবস্থিত চমৎকার ক্রাইমিয়া অঞ্চলে কিছু লোক বাস করত, যাদের দেখতে যিহুদি বলে মনে হয়েছিল কিন্তু তাদের প্রথাগুলো ছিল তুর্কিদের মতো এবং ভাষা টাটার ভাষার সঙ্গে মিল ছিল। এই ক্যারাইটরা নিজেদের যিহুদিদের বংশধর বলে শনাক্ত করেছিল, যাদেরকে সা.কা.পূ. ৬০৭ সালে যিরূশালেম ধ্বংসের পর বাবিলে নির্বাসিত করা হয়েছিল। কিন্তু, যিহুদি রব্বিদের বিপরীতে তারা তালমুডকে প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং শাস্ত্র পড়ার ওপর জোর দিয়েছিল। ক্রাইমিয়ার ক্যারাইটরা জারের কাছে এই প্রমাণ তুলে ধরতে অত্যন্ত উৎসুক ছিল যে, যিহুদি রব্বিদের থেকে তারা আলাদা, যাতে তাদের এক আলাদা পদমর্যাদা দেওয়া হয়। যে-প্রাচীন পাণ্ডুলিপিগুলো ক্যারাইটদের অধিকারে ছিল, সেগুলো উপস্থাপন করার মাধ্যমে তারা প্রমাণ করার আশা করেছিল যে তারা সেই যিহুদিদের বংশোদ্ভূত ছিল, যারা বাবিলে নির্বাসিত হওয়ার পর ক্রাইমিয়ার অভিবাসী হয়েছিল।

ফিরকভিচ যখন প্রাচীন নথি ও পাণ্ডুলিপিগুলো খোঁজার কাজে হাত দিয়েছিলেন, তখন তিনি চুফুট-কালেতে অবস্থিত ক্রাইমীয় খাড়া পাহাড়ের গা-ঘেঁষে অবস্থিত আবাসগুলো থেকে শুরু করেছিলেন। খাড়া পাহাড় থেকে কাটা পাথর দিয়ে তৈরি এই ছোট ঘরগুলোতে ক্যারাইট বংশধররা থাকত এবং উপাসনা করত। ক্যারাইটরা কখনো শাস্ত্রের সেই জীর্ণ প্রতিলিপিগুলো নষ্ট করেনি, যেখানে ঐশিক নাম যিহোবা ছিল কারণ তারা এই ধরনের কাজকে অধর্মাচরণ বলে বিবেচনা করত। এই পাণ্ডুলিপিগুলো সতর্কতার সঙ্গে জেনিজা নামের একটা ছোট ঘরে রাখা হয়েছিল, ইব্রীয় ভাষায় যেটার অর্থ “গুপ্ত স্থান।” ঐশিক নামের প্রতি ক্যারাইটদের গভীর শ্রদ্ধা ছিল বলে, এই ধরনের পার্চমেন্টগুলো খুব কমই নষ্ট করা হয়েছিল।

শত শত বছর ধরে জমে থাকা ধুলোবালি দেখে দমে না গিয়ে ফিরকভিচ জেনিজার চারপাশ সতর্কতার সঙ্গে খুঁজেছিলেন। তার এক জায়গায় তিনি সা.কা. ৯১৬ সালের বিখ্যাত পাণ্ডুলিপি খুঁজে পেয়েছিলেন, যেটাকে পিটার্সবার্গ কোডেক্স অফ দ্যা লেটার প্রফেটস্‌ বলা হতো আর এটা বর্তমানে বিদ্যমান ইব্রীয় শাস্ত্রের সবচেয়ে পুরোনো প্রতিলিপিগুলোর মধ্যে একটি।

ফিরকভিচ প্রচুর পরিমাণ পাণ্ডুলিপি জড়ো করতে পেরেছিলেন এবং ১৮৫৯ সালে তিনি এই বিশাল সংগ্রহ দি ইমপিরিয়াল লাইব্রেরিকে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আলেকজান্ডার ২য়, ১৮৬২ সালে ১,২৫,০০০ রুবল দিয়ে লাইব্রেরির জন্য সেই সংগ্রহ কিনতে সাহায্য করেছিলেন, যা তখনকার সময়ে প্রচুর অর্থ ছিল। সেই সময়ে এক বছরে সম্পূর্ণ লাইব্রেরির খরচ ১০,০০০ রুবলের চেয়ে বেশি ছিল না! এই অর্জনের অন্তর্ভুক্ত ছিল বিখ্যাত লেনিনগ্রেড কোডেক্স (B ১৯A)। এটা শুরু হয়েছিল ১০০৮ সাল থেকে আর এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো ইব্রীয় শাস্ত্রের সম্পূর্ণ প্রতিলিপি। একজন পণ্ডিত ব্যক্তি মন্তব্য করেছিলেন যে, এটি “সম্ভবত বাইবেলের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ পাণ্ডুলিপি কারণ এটি ইব্রীয় বাইবেলের সবচেয়ে আধুনিক সমালোচনামূলক সংস্করণগুলো প্রতিষ্ঠা করেছিল।” (সঙ্গে দেওয়া বাক্সটা দেখুন।) সেই একই বছরে অর্থাৎ ১৮৬২ সালে টিশেনডর্ফের কোডেক্স সাইনাইটিকাস প্রকাশিত হয়েছিল, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছিল।

আধুনিক সময়ে আধ্যাত্মিক জ্ঞানালোক

এখন লাইব্রেরিটি দ্যা ন্যাশনাল লাইব্রেরি অভ রাশিয়া নামে পরিচিত, যা পৃথিবীর প্রাচীন পাণ্ডুলিপির সর্ববৃহৎ সংগ্রহশালাগুলোর মধ্যে একটা।c রাশিয়ার ইতিহাসের মতো, দুশো বছরের সময়ের প্রবাহে এই লাইব্রেরির নাম সাত বার পরিবর্তিত হয়েছে। একটি সুপরিচিত নাম হল দ্যা স্টেট সালটিকফ্‌ শেড্রিন পাবলিক লাইব্রেরি। বিংশ শতাব্দীর বিশৃঙ্খলা যদিও লাইব্রেরিকে অক্ষত রাখেনি কিন্তু এর পাণ্ডুলিপিগুলো দুটো বিশ্বযুদ্ধ এবং লেনিনগ্রেড অবরোধের মধ্যে দিয়েও অক্ষুণ্ণ ছিল। আমরা কীভাবে এই ধরনের পাণ্ডুলিপিগুলো থেকে উপকৃত হতে পারি?

প্রাচীন পাণ্ডুলিপিগুলো আধুনিক অনেক বাইবেল অনুবাদের নির্ভরযোগ্য ভিত্তি। এগুলো আন্তরিক সত্য অনুসন্ধানকারীদের পবিত্র শাস্ত্রের আরও সঠিক অনুবাদ প্রদান করে। সাইনাইটিকাস ও লেনিনগ্রেড কোডেক্সগুলো, পবিত্র শাস্ত্রের নতুন জগৎ অনুবাদ (ইংরেজি) এর ক্ষেত্রে মুল্যবান অবদান রেখেছিল, যা যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা ১৯৬১ সালে সম্পুর্ণ আকারে প্রকাশিত হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, নতুন জগৎ বাইবেল অনুবাদ কমিটি ব্যবহৃত বিবলিয়া হিবরাইকা স্টুটগারটেনসিয়া এবং কিটলের বিবলিয়া হিবরাইকা লেনিনগ্রেড কোডেক্সের ওপর ভিত্তি করে করা হয় এবং এর মূল পাঠ্যাংশে ৬,৮২৮ বার টেট্রাগ্র্যামাটোন বা ঐশিক নাম ব্যবহার করে।

তুলনামূলকভাবে বাইবেলের অল্প কিছু পাঠক-পাঠিকা, সেন্ট পিটার্সবার্গের এই নীরব লাইব্রেরি এবং এর পাণ্ডুলিপিগুলোর প্রতি তাদের ঋণ সম্বন্ধে সচেতন, যেগুলোর কয়েকটিতে শহরের প্রাক্তন নাম লেনিনগ্রেডের উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু, আমরা সবচেয়ে বেশি ঋণী বাইবেলের লেখক যিহোবার কাছে, যিনি আধ্যাত্মিক আলো প্রদান করেন। তাই গীতরচক তাঁর কাছে বিনতি করেছিলেন: “তোমার দীপ্তি ও তোমার সত্য প্রেরণ কর; তাহারাই আমার পথপ্রদর্শক হউক।”—গীতসংহিতা ৪৩:৩.

[পাদটীকাগুলো]

a এ ছাড়াও, তিনি সা.কা. চতুর্থ শতাব্দীর খ্রিস্টান গ্রিক শাস্ত্রের একটি সম্পূর্ণ প্রতিলিপি নিয়ে এসেছিলেন।

b ক্যারাইটদের সম্বন্ধে আরও তথ্যের জন্য ১৯৯৫ সালের ১৫ই জুলাই সংখ্যার প্রহরীদুর্গ পত্রিকার “ক্যারাইটরা—এবং সত্যের জন্য তাদের অন্বেষণ” প্রবন্ধটি দেখুন।

c বেশির ভাগ কোডেক্স সাইনাইটিকাস ব্রিটিশ মিউজিয়ামের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। কেবল কিছু অংশ দ্যা ন্যাশনাল লাইব্রেরি অভ রাশিয়ায় রয়েছে।

[১৩ পৃষ্ঠার বাক্স]

ঐশিক নাম পরিচিতি লাভ করেছিল এবং ব্যবহৃত হয়েছিল

যিহোবা বিজ্ঞতার সঙ্গে লক্ষ রেখেছেন যেন তাঁর বাক্য বাইবেল আধুনিক সময় পর্যন্ত সংরক্ষিত হয়। ইতিহাস জুড়ে অধ্যাপকদের অধ্যবসায়ী কাজও এর সংরক্ষণে অবদান রেখেছে। এদের মধ্যে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন পেশাদার ইব্রীয় প্রতিলিপিকারী ম্যাসোরিটরা, যারা সা.কা. ষষ্ঠ থেকে দশম শতাব্দী পর্যন্ত কাজ করেছিল। প্রাচীন ইব্রীয় ভাষা স্বর বর্ণ ছাড়াই লেখা হতো। সময়ের প্রবাহে এটা সঠিক উচ্চারণ হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিকে বৃদ্ধি করেছিল কারণ ইব্রীয় ভাষার পরিবর্তে অরামীয় ভাষা জায়গা করে নিয়েছিল। ইব্রীয় শব্দগুলোর সঠিক উচ্চারণ বোঝানোর জন্য ম্যাসোরিটরা এক স্বর বর্ণ পদ্ধতির উদ্ভব করেছিল, যা বাইবেল পাঠ্যাংশের সঙ্গে যোগ করা হয়েছিল।

লক্ষণীয় বিষয় যে, লেনিনগ্রেড কোডেক্সে স্পষ্টভাবে বর্ণিত ম্যাসোরিটিক স্বর বর্ণগুলো টেট্রাগ্র্যামাটোনের—চারটে ইব্রীয় ব্যঞ্জন বর্ণ, যেগুলো দিয়ে ঐশিক নাম গঠিত—উচ্চারণের সুযোগ দেয় যেমন ইয়েওয়াহ্‌, ইয়েউই এবং ইয়োওয়াহ্‌। “যিহোবা” হচ্ছে বর্তমানে এই নামটির সবচেয়ে সুপরিচিত উচ্চারণ। ঐশিক নামটি বাইবেল লেখকদের কাছে এবং প্রাচীনকালের অন্যান্যদের কাছে জীবন্ত ও সুপরিচিত শব্দ ছিল। আজকে, লক্ষ লক্ষ লোক ঈশ্বরের নাম জানে এবং ব্যবহার করে যারা স্বীকার করে যে, ‘যিহোবা [সদাপ্রভু] তাঁহার নাম।’—যাত্রাপুস্তক ৩:১৫.

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

দ্যা ন্যাশনাল লাইব্রেরির পাণ্ডুলিপি কক্ষ

[১১ পৃষ্ঠার চিত্র]

সম্রাজ্ঞী ক্যাথরিন ২য়

[১১ পৃষ্ঠার চিত্র]

কনস্ট্যানটিন ভন টিশেনডর্ফ (মাঝে) এবং রাশিয়ার জার আলেকজান্ডার ২য়

[১২ পৃষ্ঠার চিত্র]

আ্যভ্রায়েম ফিরকভিচ

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

দুটো চিত্রই: National Library of Russia, St. Petersburg

[১১ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

ক্যাথরিন ২য়: National Library of Russia, St. Petersburg; আলেকজান্ডার ২য়: From the book Spamers Illustrierte Weltgeschichte, Leipzig, ১৮৯৮

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার