ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৬ ২/১৫ পৃষ্ঠা ৪-৭
  • “আমরা মশীহের দেখা পাইয়াছি”

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • “আমরা মশীহের দেখা পাইয়াছি”
  • ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • মশীহ হিসেবে প্রমাণের তথ্যগুলো
  • এক যৌগিক চিত্র
  • বংশতালিকা এবং মশীহের শনাক্তিকরণ
  • যিশুর ওপর পরিপূর্ণতাগুলো কি ঘটনাচক্রে হয়েছে?
  • মশীহের ‘আসা’
  • মশীহ! পরিত্রাণের জন্য ঈশ্বরের মাধ্যম
    ২০০৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “আমরা মশীহের দেখা পাইয়াছি”!
    ১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • তারা মশীহের অপেক্ষায় ছিল
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যীশু খ্রীষ্ট—ঈশ্বরবিষয়ক জ্ঞানের চাবি
    জ্ঞান যা অনন্ত জীবনে পরিচালিত করে
আরও দেখুন
২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৬ ২/১৫ পৃষ্ঠা ৪-৭

“আমরা মশীহের দেখা পাইয়াছি”

“আমরা মশীহের দেখা পাইয়াছি।” “মোশি ব্যবস্থায় ও ভাববাদিগণ যাঁহার কথা লিখিয়াছেন, আমরা তাঁহার দেখা পাইয়াছি।” প্রথম শতাব্দীর দুজন একনিষ্ঠ যিহুদি জনসমক্ষে এই চমকপ্রদ কথাগুলো বলেছিল। পরিশেষে, সেই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত মশীহ এসেছিলেন। তারা এই ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল!—যোহন ১:৩৫-৪৫.

আপনি যদি সেই সময়ের ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় পটভূমি বিবেচনা করেন, তা হলে দেখতে পাবেন যে, তাদের নিশ্চিত হওয়াটা এমনকি আরও তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। বহু নামধারী মুক্তিদাতা জাঁকজমকের সঙ্গে, নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আবির্ভূত হয়েছিল কিন্তু শীঘ্রই সমস্ত আশা ম্লান হয়ে গিয়েছিল যখন এই লোকেরা রোমের জোয়ালি থেকে যিহুদিদের উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছিল।—প্রেরিত ৫:৩৪-৩৭.

কিন্তু, সেই দুজন যিহুদি—আন্দ্রিয় ও ফিলিপ—যে প্রকৃত মশীহের দেখা পেয়েছিল, সেই নিশ্চয়তার ব্যাপারে তারা কখনো সন্দেহ প্রকাশ করেনি। বরং, পরবর্তী বছরগুলোতে তাদের আস্থা আরও বৃদ্ধি পেয়েছিল, যখন তারা ব্যক্তিগতভাবে এই ব্যক্তিকে সেই পরাক্রম কাজগুলো সম্পাদন করতে দেখেছিল, যা তিনি মশীহের ভূমিকার পরিপূর্ণতাস্বরূপ সম্পাদন করেছিলেন।

কেন এই দুজনসহ আরও অনেকে তাঁর ওপর বিশ্বাস রেখেছিল আর এই বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছিল যে, তিনি কেবল একজন ভাক্ত মশীহ অথবা হতাশাব্যঞ্জক প্রতারক নন? কোন তথ্যগুলো প্রমাণ করেছিল যে, নিশ্চিতভাবে তিনিই ছিলেন সেই অকৃত্রিম মশীহ?

ঐতিহাসিক বিবরণ অনুযায়ী, প্রাক্তন ছুতোর মিস্ত্রি নাসরতের যিশুকে, আন্দ্রিয় এবং ফিলিপ সেই প্রতিজ্ঞাত ও দীর্ঘ প্রতীক্ষিত মশীহ হিসেবে শনাক্ত করেছিল। (যোহন ১:৪৫) সেই যুগের একজন অধ্যবসায়ী ইতিহাসবেত্তা, লূক বলেছিলেন যে, “তিবিরিয় কৈসরের রাজত্বের পঞ্চদশ বৎসরে” মশীহ আসেন। (লূক ৩:১-৩) তিবিরিয়ের রাজত্বের সেই পঞ্চদশ বছর সা.কা. ২৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হয়েছিল এবং সা.কা. ২৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শেষ হয়েছিল। লূক আরও বলেছিলেন যে, সেই সময়ে যিহুদিরা মশীহের আসার “অপেক্ষায় ছিল।” (লূক ৩:১৫) কেন সেই নির্দিষ্ট সময়েই তিনি আসবেন বলে আশা করা হচ্ছিল? আমরা সেটাই দেখব।

মশীহ হিসেবে প্রমাণের তথ্যগুলো

মশীহের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে বিবেচনা করে আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন যে, সতর্ক ও বিশ্বস্ত ব্যক্তিরা যাতে প্রতিজ্ঞাত মশীহকে শনাক্ত করতে পারে, সেইজন্য সৃষ্টিকর্তা যিহোবা নির্দিষ্ট প্রামাণিক তথ্য জোগাবেন আর সেটাই আশা করা যুক্তিসংগত। কেন? কারণ এর ফলে সতর্ক ব্যক্তিরা প্রতারকদের দ্বারা প্রবঞ্চিত হবে না, যেমনটা অনেকে হয়েছিল।

অন্য দেশের সরকারের কাছে নিজের পরিচয় দেওয়ার সময় একজন রাষ্ট্রদূতের কাছে আশা করা হয় যে, তিনি তার নিযুক্তির প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র দেখাবেন। একইভাবে, যিহোবা অনেক আগেই সেই আবশ্যকতাগুলো লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন, যেগুলো মশীহ পূর্ণ করবেন। তাই, সেই “আদিকর্ত্তা” যখন আবির্ভূত হয়েছিলেন, তখন তিনি যেন তাঁর শনাক্তিকরণকে প্রমাণ করার তথ্যগুলো নিয়েই এসেছিলেন।—ইব্রীয় ১২:২.

যে-আবশ্যকতাগুলোর মশীহের প্রমাণের তথ্যগুলোর সঙ্গে মিল হওয়ার কথা ছিল, সেগুলো বহু শতাব্দী আগে লেখা বাইবেলের বিভিন্ন ভবিষ্যদ্বাণীতে লিপিবদ্ধ ছিল। সেগুলো মশীহ কীভাবে আসবেন, তাঁর পরিচর্যার বৈশিষ্ট্য, অন্যদের কাছ থেকে তাঁর কষ্ট পাওয়া এবং তাঁকে যেধরনের মৃত্যুবরণ করতে হবে, সেই বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল। আপনি হয়তো এটা জেনে উদ্দীপ্ত হবেন যে, সেই নির্ভরযোগ্য ভবিষ্যদ্বাণীগুলো তাঁর পুনরুত্থান, ঈশ্বরের ডান দিকে তাঁর উচ্চ স্থান পাওয়া এবং পরিশেষে তাঁর ভাবী রাজ্য শাসন যে-আশীর্বাদগুলো নিয়ে আসবে, সেই সম্বন্ধেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল। এভাবে বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীগুলো এক অদ্বিতীয় নমুনা প্রদান করে যেটাকে এক আঙুলের ছাপের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে, যা শুধু নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তিকেই শনাক্ত করতে পারে।

অবশ্য, সা.কা. ২৯ সালে যখন যিশু আবির্ভূত হয়েছিলেন, সেই সময়ে মশীহ সম্বন্ধীয় সব ভবিষ্যদ্বাণী পরিপূর্ণ হয়নি। উদাহরণস্বরূপ, তাঁকে তখনও হত্যা করা হয়নি এবং তাঁর পুনরুত্থানও হয়নি। তা সত্ত্বেও, আন্দ্রিয়, ফিলিপ ও আরও অনেকে যিশু যা শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং যা করেছিলেন, সেই কারণে তাঁর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছিল। বস্তুতপক্ষে, তারা প্রচুর প্রমাণ পেয়েছিল যে, তিনিই হলেন মশীহ। আপনি যদি সেই সময়ে বেঁচে থাকতেন এবং স্বচক্ষে দেখা প্রমাণগুলোকে খোলা মনে পরীক্ষা করে দেখতেন, তা হলে সম্ভবত আপনিও এই বিষয়ে নিশ্চিত হতেন যে, যিশুই ছিলেন মশীহ।

এক যৌগিক চিত্র

কী আপনাকে এই উপসংহারে আসতে সাহায্য করত? বহু শতাব্দী ধরে বাইবেলের ভাববাদীরা নির্দিষ্ট আবশ্যকতাগুলো সম্বন্ধে জানিয়েছিল, যেগুলো মশীহের পূর্ণ করার কথা ছিল আর নিঃসন্দেহে, সেগুলোই তাঁকে শনাক্ত করত। ভাববাদীরা যখন বহু শতাব্দী ধরে এই পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণগুলো সম্বন্ধে জানিয়েছিল, তখন ধীরে ধীরে মশীহের এক চিত্র পরিষ্কার হয়ে উঠেছিল। হেনরি এইচ. হ্যালি মন্তব্য করেছিলেন: “ধরুন, বিভিন্ন দেশ থেকে আসা কয়েক জন ব্যক্তি যারা একে অন্যকে কখনো দেখেনি বা তাদের একে অন্যের সঙ্গে কখনোই যোগাযোগ হয়নি, তারা একটা রুমে আসে এবং প্রত্যেকে খোদাই করা মার্বেল পাথরের একটা করে টুকরো মাটিতে বিছিয়ে দেয়, যেগুলোকে একসঙ্গে জোড়া দিলে এক সুন্দর মূর্তি তৈরি হয়—একজন ব্যক্তি কীভাবে এই উপসংহার না করে থাকতে পারবেন না যে, কেউ একজন নিশ্চয়ই ছকটা এঁকেছেন এবং প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে তা পাঠিয়ে দিয়েছেন?” এরপর তিনি জিজ্ঞেস করেন: “যিশুর জীবনী ও কাজের এই বিস্ময়কর অংশগুলোকে, যিশুরও বহু যুগ আগের বিভিন্ন শতাব্দীর লেখকরা যে একসঙ্গে যুক্ত করেছিল, তার পিছনে এক অতিমানবীয় মেধা রয়েছে, এই বিষয়টা স্বীকার না করে আর কীভাবেই বা তা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে?” হ্যালি উপসংহারে বলেছিলেন যে, এটা ছিল “এক সর্বোত্তম অলৌকিক কাজ!”

বাইবেলের প্রথম বই থেকেই এই ‘অলৌকিক কাজের’ বর্ণনা শুরু হয়েছিল। বাইবেলের প্রথম ভবিষ্যদ্বাণী যা মশীহের ভূমিকা সম্বন্ধে ইঙ্গিত করে সেটা ছাড়াও আদিপুস্তকের লেখক লিপিবদ্ধ করেছিলেন যে, মশীহ অব্রাহামের বংশে আসবেন। (আদিপুস্তক ৩:১৫; ২২:১৫-১৮) আরেকটা প্রামাণিক তথ্য প্রকাশ করেছিল যে, মশীহ যিহূদা বংশে আসবেন। (আদিপুস্তক ৪৯:১০) ঈশ্বর মোশির মাধ্যমে ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন যে, মশীহ মোশির চাইতেও মহান এক মুখপাত্র এবং উদ্ধারকর্তা হবেন।—দ্বিতীয় বিবরণ ১৮:১৮.

রাজা দায়ূদের সময়কালে, ভবিষ্যদ্বাণী প্রকাশ করেছিল যে, মশীহ দায়ূদের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হবেন এবং তাঁর রাজ্য “চিরস্থায়ী” হবে। (২ শমূয়েল ৭:১৩-১৬) মীখা পুস্তক প্রকাশ করেছিল যে, মশীহ দায়ূদের শহর, বৈৎলেহমে জন্মগ্রহণ করবেন। (মীখা ৫:২) যিশাইয় ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, তিনি একজন কুমারীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করবেন। (যিশাইয় ৭:১৪) ভাববাদী মালাখি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, এলিয়ের মতো কেউ একজন তাঁর আসার বিষয়ে ঘোষণা করবেন।—মালাখি ৪:৫, ৬.

মশীহ সম্বন্ধে আরও কিছু নির্দিষ্ট বিবরণ দানিয়েলের পুস্তকে রয়েছে। মশীহ যে-বছর আবির্ভূত হবেন, সেটা ইঙ্গিত করে ভবিষ্যদ্বাণী উল্লেখ করে: “তুমি জ্ঞাত হও, বুঝিয়া লও, যিরূশালেমকে পুনঃস্থাপন ও নির্ম্মাণ করিবার আজ্ঞা বাহির হওয়া অবধি অভিষিক্ত ব্যক্তি, [‘মশীহ,’ বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন] নায়ক, পর্য্যন্ত সাত সপ্তাহ আর বাষট্টি সপ্তাহ হইবে, উহা চক ও পরিখাসহ পুনরায় নির্ম্মিত হইবে, সঙ্কটকালেই হইবে।”—দানিয়েল ৯:২৫.

পারস্যরাজ অর্তক্ষস্ত তার শাসনের বিংশতি বছরে যিরূশালেম পুনর্স্থাপন ও নির্মাণ করার “আজ্ঞা” দিয়েছিলেন। তার শাসন সা.কা.পূ. ৪৭৪ সালে শুরু হয়েছিল আর তাই তার বিংশতি বছর হবে সা.কা.পূ. ৪৫৫ সালে। (নহিমিয় ২:১-৮) তা হলে, যিরূশালেম পুনর্স্থাপন ও নির্মাণ করার আদেশ দেওয়ার এবং মশীহের আবির্ভূত হওয়ার সময়ের মধ্যে ভবিষ্যদ্বাণীমূলক ৬৯ (৭ যোগ ৬২) সপ্তাহের ব্যবধান ছিল। অবশ্য, আক্ষরিক উনসত্তর সপ্তাহের সমতুল্য কেবল ৪৮৩ দিন বা দুবছরেরও কম সময়। কিন্তু, “এক এক বৎসরের নিমিত্ত এক এক দিন” উল্লেখিত এই ভবিষ্যদ্বাণীমূলক নীতিকে যখন প্রয়োগ করা হয়, তখন তা প্রকাশ করে যে, মশীহ ৪৮৩ বছর পর অর্থাৎ সা.কা. ২৯ সালে আবির্ভূত হবেন।—যিহিষ্কেল ৪:৬.a

যদিও মশীহ বলে দাবি করে এমন অনেক ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে আবির্ভূত হয়েছিল কিন্তু সা.কা. ২৯ সালে কেবল নাসরতের যিশুই জগতের দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয়েছিলেন। (লূক ৩:১, ২) সেই বছরই যিশু যোহন বাপ্তাইজকের কাছে এসেছিলেন এবং জলে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন। তখন যিশু পবিত্র আত্মার দ্বারা মশীহ হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে, ভবিষ্যদ্বাণীকৃত এলিয়স্বরূপ অগ্রদূত যোহন, যিশুকে “ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান” এই নামে আন্দ্রিয় ও আরেকজন শিষ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।—যোহন ১:২৯; লূক ১:১৩-১৭; ৩:২১-২৩.

বংশতালিকা এবং মশীহের শনাক্তিকরণ

অনুপ্রাণিত ভবিষ্যদ্বাণীগুলো মশীহকে নির্দিষ্ট কয়েকটা যিহুদি পরিবারের সঙ্গে যুক্ত করেছিল। তাই, এটাই যুক্তিযুক্ত যে, সর্বজ্ঞ সৃষ্টিকর্তা মশীহের আসার ব্যবস্থা এমন এক সময়ই করবেন, যখন তাঁর বংশধারার সত্যতা পরীক্ষা করার জন্য বংশতালিকার নথি প্রাপ্তিসাধ্য থাকবে।

ম্যাকক্লিনটক এবং স্ট্রংয়ের সাইক্লোপিডিয়া বলে: “এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, বিভিন্ন যিহুদি বংশ ও পরিবারের তালিকাগুলো [সা.কা. ৭০ সালে] যিরূশালেম ধ্বংসের সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল কিন্তু তার আগে নয়।” স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে যে, মথি ও লূক তাদের সুসমাচারের বই সা.কা. ৭০ সালের আগে লিখেছিল। তাই, তারা যিশুর বংশের বিবরণ লেখার সময় এই তালিকাগুলো থেকে তথ্য পরীক্ষা করেছিল। (মথি ১:১-১৬; লূক ৩:২৩-৩৮) আর এই ধরনের এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে, তাদের সমসাময়িক অনেকে নিশ্চয়ই ব্যক্তিগতভাবে যিশুর বংশধারার সত্যতা পরীক্ষা করে দেখতে চেয়েছিল।

যিশুর ওপর পরিপূর্ণতাগুলো কি ঘটনাচক্রে হয়েছে?

তবে, এমনটা কি হতে পারে যে, যিশুতে পরিপূর্ণ মশীহ সম্বন্ধীয় ভবিষ্যদ্বাণীগুলো ছিল কেবল এক ঘটনাচক্র? এক সাক্ষাৎকারে একজন পণ্ডিত ব্যক্তি উত্তর দিয়েছিলেন: “এটা কোনো ঘটনাচক্র ছিল না। সম্ভাব্যতার মাত্রা এত বেশি ছিল যে, সেগুলো ঘটনাচক্র বলে বাতিল করে দেওয়া যায় না। কেউ একজন অঙ্ক কষে বের করেছিলেন যে, মাত্র আটটা ভবিষ্যদ্বাণী পরিপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে সেগুলো ১,০০০ কোটি কোটির মধ্যে একটা ঘটনাচক্র হতে পারে।” সেই সম্ভাব্যতার মাত্রাকে উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করার জন্য তিনি বলেছিলেন: “আপনার যদি ঐ সংখ্যক রুপোর ডলার থাকত, তা হলে সেগুলো ২ ফুট গভীর পর্যন্ত টেক্সাস রাজ্যকে [৬,৯০,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা] ঢেকে ফেলতো। আর আপনি যদি সেগুলোর মধ্যে একটা রুপোর ডলারে কোনো চিহ্ন লাগান এবং চোখ বেঁধে একজন ব্যক্তিকে গোটা রাজ্য ঘুরে একটা মুদ্রা তুলতে দেন, তা হলে তিনি যে সেই চিহ্নিত ডলারটাই তুলবেন, তার কতটুকু সম্ভাবনা থাকবে?” এরপর তিনি বলেছিলেন যে, একইভাবে “ইতিহাসের কোনো ব্যক্তি [মশীহ সম্বন্ধীয়] ভবিষ্যদ্বাণীগুলোর মাত্র আটটা পরিপূর্ণ করতে পারতেন তার কোনো সম্ভাবনাই ছিল না।”

তবে, যিশু তাঁর সাড়ে তিন বছর পরিচর্যার সময়কালে কেবল আটটা নয় কিন্তু বাইবেলের বহু ভবিষ্যদ্বাণী পরিপূর্ণ করেছিলেন। এতগুলো প্রমাণের পরিপ্রেক্ষিতে, সেই পণ্ডিত ব্যক্তি উপসংহার করেছিলেন: “যিশু—সমগ্র ইতিহাসের একমাত্র যিশু—সেগুলো পূর্ণ করেছিলেন।”

মশীহের ‘আসা’

স্পষ্টতই, সা.কা. ২৯ সালে মশীহ নাসরতের যিশু হিসেবে এসেছিলেন। সেটাই ছিল তাঁর একজন নম্র, কষ্টভোগী মুক্তিদাতা হিসেবে আসা। তিনি রোমীয়দের দাসত্বের পীড়নকর জোয়াল ভেঙে ফেলার সর্বজয়ী রাজা হিসেবে আসেননি, যেমন অধিকাংশ যিহুদি ও এমনকি তাঁর শিষ্যরাও আশা করেছিল বলে মনে হয়। (যিশাইয়, ৫৩ অধ্যায়; সখরিয় ৯:৯; প্রেরিত ১:৬-৮) তবে, ভবিষ্যতে তিনি ক্ষমতা ও মহৎ কর্তৃত্বসহ আসবেন বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল।—দানিয়েল ২:৪৪; ৭:১৩, ১৪.

বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীগুলোকে মনোযোগের সঙ্গে অধ্যয়ন করা, সারা পৃথিবীর যুক্তিবাদী লোকেদেরকে নিশ্চিত করেছে যে, মশীহ প্রথম শতাব্দীতে এসেছিলেন এবং তাঁর পুনরায় আসার আছে। প্রমাণ দেখায় যে, তাঁর পুনরায় ফিরে আসা অর্থাৎ তাঁর “আগমন” বা উপস্থিতির শুরু সম্বন্ধে যে-ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, তা ১৯১৪ সালে ঘটেছিল।b (মথি ২৪:৩-১৪) সেই বছর, যিশু অদৃশ্যভাবে ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা হিসেবে স্বর্গে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। খুব শীঘ্রই, তিনি এদনে ঘটিত বিদ্রোহের প্রভাবগুলো থেকে পৃথিবীকে মুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ নেবেন। এরপর তাঁর হাজার বছরের রাজত্ব সেই সমস্ত ব্যক্তিকে আশীর্বাদ করবে, যারা সেই প্রতিজ্ঞাত বংশ, মশীহ যিনি “জগতের পাপভার লইয়া যান,” তাঁর ওপর বিশ্বাস প্রদর্শন করে।—যোহন ১:২৯; প্রকাশিত বাক্য ২১:৩, ৪.

যিহোবার সাক্ষিরা আপনার সঙ্গে সেই প্রমাণগুলো নিয়ে আলোচনা করতে এবং বাইবেল থেকে এটা দেখাতে পেরে খুশি হবে যে, মশীহের শাসন আপনার ও আপনার প্রিয়জনদের জন্য কী অর্থ রাখতে পারে।

[পাদটীকাগুলো]

a দানিয়েল ৯:২৫ পদ সম্বন্ধে আরও তথ্যের জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত শাস্ত্রের প্রতি অন্তর্দৃষ্টি (ইংরেজি) বইয়ের ২য় খণ্ডের ৮৯৯-৯০৪ পৃষ্ঠা দেখুন।

b আরও তথ্যের জন্য, যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত জ্ঞান যা অনন্ত জীবনে পরিচালিত করে বইয়ের ১০ ও ১১ অধ্যায় দেখুন।

[৬, ৭ পৃষ্ঠার ডায়াগ্রাম/চিত্রগুলো]

সাধারণ কাল পূর্ব ৪৫৫ সাল, “যিরূশালেমকে সাধারণ কাল ২৯ সাল, ১৯১৪, মশীহ স্বর্গে খুব শীঘ্রই মশীহ দুষ্টতাকে দূর করবেন

পুনঃস্থাপন . . . করিবার আজ্ঞা” মশীহ আসেন সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন এবং পৃথিবীকে এক পরমদেশে

পরিণত করবেন

৪৮৩ বছর

(৬৯ ভবিষ্যদ্বাণীমূলক সপ্তাহ)

—দানিয়েল ৯:২৫ ▸

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার