ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w09 ৪/১৫ পৃষ্ঠা ৭-১১
  • আপনার নীতিনিষ্ঠা যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করে

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আপনার নীতিনিষ্ঠা যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করে
  • ২০০৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • সবসময় আসল শত্রুর কথা মাথায় রাখুন
  • যিহোবার সঙ্গে এক নিকট সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করুন
  • যিহোবা তাঁর বিশ্বস্ত দাসদের সমর্থন করেন
  • ইয়োব যিহোবার নামকে উচ্চীকৃত করেছিলেন
    ২০০৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “তোমরা সদাপ্রভুর উপর আশা রাখ”
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২২
  • আপনার বিশ্বস্ততা বজায় রাখুন!
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৯
  • ইয়োব সহ্য করেছিলেন—আমরাও তা করতে পারি!
    ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w09 ৪/১৫ পৃষ্ঠা ৭-১১

আপনার নীতিনিষ্ঠা যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করে

“বৎস, জ্ঞানবান হও; আমার চিত্তকে আনন্দিত কর; তাহাতে যে আমাকে টিট্‌কারি দেয়, তাহাকে উত্তর দিতে পারিব।”—হিতো. ২৭:১১.

১, ২. (ক) ইয়োব বইটি শয়তানের কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা সম্বন্ধে বর্ণনা করে? (খ) কী ইঙ্গিত দেয় যে, ইয়োবের দিনের পরও শয়তান ক্রমাগত যিহোবাকে টিটকারি দিচ্ছে?

ঈশ্বরের অনুগত দাস ইয়োবের নীতিনিষ্ঠা পরীক্ষা করার জন্য যিহোবা শয়তানকে অনুমতি দিয়েছিলেন। এর ফলে, ইয়োব তার পশুপাল, তার সন্তান এবং স্বাস্থ্য হারিয়েছিলেন। কিন্তু, শয়তান যখন ইয়োবের নীতিনিষ্ঠা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, তখন তার মনে ব্যক্তি ইয়োবের চেয়ে আরও বেশি কিছু ছিল। “চর্ম্মের জন্য চর্ম্ম, আর প্রাণের জন্য লোক সর্ব্বস্ব দিবে,” শয়তান দাবি করেছিল। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা এমন একটা বিচার্য বিষয় উত্থাপিত করেছিল, যেটা ইয়োবের পাশাপাশি অন্যদেরও জড়িত করেছিল আর তা ইয়োব মারা যাওয়ার দীর্ঘ সময় পরেও রয়েছে।—ইয়োব ২:৪.

২ ইয়োবের পরীক্ষার প্রায় ৬০০ বছর পরে, শলোমন লিখতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন: “বৎস, জ্ঞানবান হও; আমার চিত্তকে আনন্দিত কর; তাহাতে যে আমাকে টিট্‌কারি দেয়, তাহাকে উত্তর দিতে পারিব।” (হিতো. ২৭:১১) স্পষ্টতই, সেই সময়ও শয়তান যিহোবাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চলছিল। অধিকন্তু, প্রেরিত যোহনকে দেওয়া একটা দর্শনে, ১৯১৪ সালে ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠা হওয়ার কিছুসময় পর, স্বর্গ থেকে শয়তানকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল আর এরপর তাকে ঈশ্বরের দাসদের দোষারোপ করতে দেখা গিয়েছিল। হ্যাঁ, এমনকী আজকে এই দুষ্ট বিধিব্যবস্থার শেষকালের একেবারে শেষ সময়ে, শয়তান এখনও ঈশ্বরের দাসদের নীতিনিষ্ঠা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে!—প্রকা. ১২:১০.

৩. ইয়োবের বই থেকে আমরা কোন মূল্যবান শিক্ষাগুলো শিখতে পারি?

৩ তাহলে, ইয়োবের বই থেকে আমরা যে-তিনটে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা শিখে থাকি, সেগুলো বিবেচনা করুন। প্রথমটা হল, ইয়োবের পরীক্ষাগুলো মানবজাতির আসল শত্রু এবং ঈশ্বরের লোকেদের বিরুদ্ধে বিরোধিতা করার উৎস সম্বন্ধে প্রকাশ করে। সেই শত্রু হল শয়তান দিয়াবল। দ্বিতীয়টা হল, আমরা যে-পরীক্ষাই ভোগ করি না কেন, ঈশ্বরের সঙ্গে এক নিকট সম্পর্ক রাখা আমাদেরকে নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখতে সমর্থ করবে। তৃতীয়টা হল, যখন পরীক্ষা আসে এবং আমরা কোনোভাবে পরীক্ষিত হই, তখন ঈশ্বর আমাদেরকে সাহায্য করেন, যেমনটা তিনি ইয়োবকে করেছিলেন। আজকে, যিহোবা তাঁর বাক্য, তাঁর সংগঠন এবং তাঁর পবিত্র আত্মার মাধ্যমে তা করে থাকেন।

সবসময় আসল শত্রুর কথা মাথায় রাখুন

৪. বর্তমান জগতের পরিস্থিতির জন্য কাকে দায়ী করা যায়?

৪ অনেকে বিশ্বাস করে না যে, শয়তান অস্তিত্বে রয়েছে। তাই, যদিও তারা হয়তো জগতের অবস্থা সম্বন্ধে শঙ্কিত কিন্তু তারা এর প্রকৃত উৎসকে—শয়তান দিয়াবলকে—নির্ণয় করতে পারে না। এটা ঠিক যে, মানবজাতির বেশির ভাগ দুর্দশার জন্য মানুষ নিজেই দায়ী। আমাদের প্রথম পিতামাতা আদম ও হবা তাদের সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে স্বাধীন হওয়া বেছে নিয়েছিল। আর সেই সময় থেকে, পরবর্তী বংশ একেবারে মূর্খতার সঙ্গে কাজ করেছে। তা সত্ত্বেও, দিয়াবলই হল সেই ব্যক্তি যে হবাকে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে প্ররোচিত করেছিল। সে-ই অসিদ্ধ, মৃতপ্রায় মানবজাতির মধ্যে এমন এক জগৎব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যা তার নিয়ন্ত্রণাধীন। যেহেতু শয়তান “এই যুগের দেব,” তাই মানবসমাজ তার মতো সেই একই মৌলিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে থাকে: গর্ব, প্রতিযোগিতা, ঈর্ষা, লোভ, প্রতারণা এবং বিদ্রোহ। (২ করি. ৪:৪; ১ তীম. ২:১৪; ৩:৬; পড়ুন, যাকোব ৩:১৪, ১৫.) এই ধরনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যই রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দ্বন্দ্ব, ঘৃণা, কলুষতা এবং বিশৃঙ্খলার দিকে পরিচালিত করেছে, যেগুলো মানবজাতির দুর্দশাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

৫. আমাদের যে-মূল্যবান জ্ঞান রয়েছে, তা দিয়ে আমরা কী করতে চাই?

৫ যিহোবার দাস হিসেবে আমাদের কতই না মূল্যবান জ্ঞান রয়েছে! হ্যাঁ, আমরা জানি যে, জগতের অধঃপতিত অবস্থার জন্য কে দায়ী। তাই, আমরা কি ক্ষেত্রের পরিচর্যায় অংশগ্রহণ করার জন্য তাগিদ অনুভব করি না, যাতে লোকেদেরকে প্রধান সমস্যাকারীর পরিচয় সম্বন্ধে জানাতে পারি? আর আমরা কি সত্য ঈশ্বর যিহোবার পক্ষে থাকার এবং কীভাবে তিনি শয়তান ও মানবজাতির দুর্দশার শেষ নিয়ে আসবেন, তা অন্যদের কাছে ব্যাখ্যা করার জন্য আনন্দিত নই?

৬, ৭. (ক) সত্য উপাসকদের তাড়নার জন্য কে দায়ী? (খ) কীভাবে আমরা প্রাচীনকালের ইলীহূর উদাহরণ অনুকরণ করতে পারি?

৬ শয়তান কেবল জগতের অনেক দুঃখের জন্যই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে ঈশ্বরের লোকেরা যে-বিরোধিতা ভোগ করে থাকে, সেটার জন্যও দায়ী। সে আমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলার জন্য সংকল্পবদ্ধ। যিশু খ্রিস্ট প্রেরিত পিতরকে বলেছিলেন: “শিমোন, শিমোন, দেখ, গোমের ন্যায় চালিবার জন্য শয়তান তোমাদিগকে আপনার বলিয়া চাহিয়াছে।” (লূক ২২:৩১) একইভাবে, যারা যিশুর পদচিহ্নের অনুগমন করে, তারা প্রত্যেকেই কোনো না কোনোভাবে পরীক্ষা ভোগ করে থাকে। পিতর দিয়াবলকে “গর্জ্জনকারী সিংহের” সঙ্গে তুলনা করেছেন, যে “কাহাকে গ্রাস করিবে, তাহার অন্বেষণ করিয়া বেড়াইতেছে।” আর পৌল বলেছিলেন: “যত লোক ভক্তিভাবে খ্রীষ্ট যীশুতে জীবন ধারণ করিতে ইচ্ছা করে, সেই সকলের প্রতি তাড়না ঘটিবে।”—১ পিতর ৫:৮; ২ তীম. ৩:১২.

৭ যখন কোনো সহবিশ্বাসীর প্রতি কোনো দুঃখজনক ঘটনা ঘটে, তখন কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে, আমরা আসল শত্রুকে মনে রাখি? ক্ষতিগ্রস্ত ভাই বা বোনের কাছ থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখার পরিবর্তে, আমরা প্রাচীনকালের ইলীহূর মতো আচরণ করি, যিনি ইয়োবের সঙ্গে প্রকৃত বন্ধুর মতো কথা বলেছিলেন। আমরা আমাদের ভাইদের সঙ্গে আমাদের সাধারণ শত্রু শয়তানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগ দিই। (হিতো. ৩:২৭; ১ থিষল. ৫:২৫) আমাদের লক্ষ্য হল, যা-ই আসুক না কেন, আমাদের সহদাসকে তার নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখার জন্য সাহায্য করা এবং এভাবে যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করা।

৮. কেন শয়তান যিহোবাকে সম্মান করার ক্ষেত্রে ইয়োবকে নিবৃত্ত করতে সফল হয়নি?

৮ শয়তানের কারণে ইয়োব প্রথম যে-সম্পদ হারিয়েছিলেন, তা ছিল তার পশুপাল। সেই পশুপাল খুবই মূল্যবান ছিল, হয়তো তার জীবিকানির্বাহের উপায় ছিল। কিন্তু, ইয়োব সেগুলো উপাসনার জন্যও ব্যবহার করতেন। ইয়োব তার সন্তানদেরকে পবিত্র করানোর পর, তিনি “প্রত্যূষে উঠিয়া তাহাদের সকলের সংখ্যানুসারে হোম করিতেন; কারণ ইয়োব বলিতেন, কি জানি, আমার পুত্ত্রগণ পাপ করিয়া মনে মনে ঈশ্বরকে জলাঞ্জলি দিয়াছে। ইয়োব সতত এইরূপ করিতেন।” (ইয়োব ১:৪, ৫) এভাবে, ইয়োব নিয়মিতভাবে যিহোবার কাছে পশু উৎসর্গ করতেন। পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ার পর, তা আর সম্ভবপর ছিল না। ইয়োবের তখন আর কোনো ‘ধন’ বা মূল্যবান বিষয় ছিল না, যা দিয়ে তিনি যিহোবার সম্মান করতে পারতেন। (হিতো. ৩:৯) কিন্তু, তিনি তার ওষ্ঠাধরে যিহোবার সম্মান করতে পারতেন—এবং করেছিলেন!

যিহোবার সঙ্গে এক নিকট সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করুন

৯. আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ কী?

৯ আমরা ধনী বা দরিদ্র, যুবক বা বৃদ্ধ যা-ই হই না কেন এবং আমাদের সুস্বাস্থ্য বা ভগ্ন স্বাস্থ্য যা-ই থাকুক না কেন, আমরা যিহোবার সঙ্গে এক নিকট সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করতে পারি। আমরা যে-পরীক্ষার সম্মুখীনই হই না কেন, ঈশ্বরের সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠ বন্ধন রাখা আমাদের নিজেদের নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখতে ও যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করতে সমর্থ করবে। এমনকী কিছু ব্যক্তি, যাদের সত্য সম্বন্ধে সামান্য জ্ঞান রয়েছে, তারাও সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তাদের নীতিনিষ্ঠা বজায় রেখেছে।

১০, ১১. (ক) আমাদের একজন বোন নীতিনিষ্ঠার পরীক্ষার প্রতি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন? (খ) এই বোন শয়তানকে কোন জোরালো উত্তর দিয়েছেন?

১০ রাশিয়ার এমন অনেক সাক্ষি, যারা চরম পরীক্ষা সত্ত্বেও বিশ্বস্ত ব্যক্তি ইয়োবের মতো তাদের নীতিনিষ্ঠা বজায় রেখেছে, তাদের মধ্যে একজন, বোন ভ্যালেন্টিনা গারনফ্‌স্কায়ার উদাহরণ বিবেচনা করুন। ১৯৪৫ সালে, যখন তার বয়স প্রায় ২০ বছর ছিল, তখন একজন ভাই তার কাছে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। বাইবেল সম্বন্ধে কথা বলার জন্য তিনি আরও দুবার ফিরে এসেছিলেন কিন্তু এরপর বোন আর কখনো তাকে দেখেননি। তা সত্ত্বেও, ভ্যালেন্টিনা তার প্রতিবেশীদের কাছে প্রচার করতে শুরু করেন। ফল স্বরূপ, তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং একটা ক্যাম্পে আট বছরের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়। ১৯৫৩ সালে তিনি ছাড়া পান এবং সঙ্গে সঙ্গে তিনি আবার তার প্রচার কাজ শুরু করেন। আবারও তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং জেলে ভরা হয়—আর এই বার দশ বছরের জন্য। একটা ক্যাম্পে বেশ কয়েক বছর কাটানোর পর, তাকে আরেকটা ক্যাম্পে পাঠানো হয়। সেই ক্যাম্পে কিছু বোন ছিল, যাদের কাছে বাইবেলের একটি কপি ছিল। একদিন একজন বোন ভ্যালেন্টিনাকে সেই বাইবেলটি দেখান। কী এক রোমাঞ্চকর মুহূর্ত! কল্পনা করুন, একমাত্র অন্য যে-বাইবেল ভ্যালেন্টিনা দেখেছিলেন তা ছিল সেই ভাইয়ের হাতে, যিনি ১৯৪৫ সালে তার কাছে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন!

১১ ভ্যালেন্টিনা ১৯৬৭ সালে ছাড়া পান এবং অবশেষে তার উৎসর্গীকরণের প্রতীক হিসেবে জলে বাপ্তিস্ম নেন। ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি পরিচর্যায় অংশগ্রহণ করার জন্য তার স্বাধীনতাকে উদ্যোগের সঙ্গে ব্যবহার করেন। কিন্তু, সেই বছর আবারও তাকে গ্রেপ্তার করা হয় আর সেই সময় তাকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও, ভ্যালেন্টিনা প্রচার চালিয়ে যান। ২০০১ সালে মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি ৪৪ জন ব্যক্তিকে সত্য শিখতে সাহায্য করেছেন। তিনি জেলে ও ক্যাম্পে ২১ বছর কাটিয়েছেন। তার নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখার জন্য তিনি তার স্বাধীনতাসহ সমস্তকিছু ত্যাগ করতে ইচ্ছুক ছিলেন। তার জীবনের শেষ সময়ে ভ্যালেন্টিনা বলেছিলেন: “থাকার জন্য আমার নিজের কখনো জায়গা ছিল না। আমার সমস্ত সম্পত্তি একটা সুটকেসের মধ্যে ছিল কিন্তু যিহোবাকে সেবা করতে পেরে আমি সুখী ও সন্তুষ্ট ছিলাম।” ভ্যালেন্টিনা শয়তানকে কতই না জোরালো এক উত্তর দিয়েছেন, যে-ব্যক্তি দাবি করেছিল যে, পরীক্ষায় পড়লে মানুষরা ঈশ্বরের প্রতি অনুগত থাকবে না! (ইয়োব ১:৯-১১) আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, তিনি যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করেছিলেন আর যিহোবা সেই সময়ের জন্য উৎসুকভাবে অপেক্ষা করে আছেন, যখন তিনি ভ্যালেন্টিনা ও যারা বিশ্বস্তভাবে মারা গিয়েছে, তাদেরকে পুনরুত্থানের মাধ্যমে জীবনে ফিরিয়ে আনবেন।—ইয়োব ১৪:১৫.

১২. যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রেম কোন ভূমিকা পালন করে?

১২ যিহোবার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব তাঁর প্রতি আমাদের প্রেমের ওপর ভিত্তি করে। আমরা ঈশ্বরের গুণাবলির উচ্চপ্রশংসা করি এবং তাঁর উদ্দেশ্যের সঙ্গে মিল রেখে জীবনযাপন করার জন্য আমাদের যথাসাধ্য করি। দিয়াবল যা দাবি করেছিল, সেটার বিপরীতে আমরা স্বেচ্ছায় ও নিঃশর্তে যিহোবাকে আমাদের ভালোবাসা দিই। এই আন্তরিক ভালোবাসা আমাদেরকে পরীক্ষার মধ্যেও নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখতে শক্তিশালী করে। আর তাঁর দিক দিয়ে যিহোবা “আপন সাধুদের [“অনুগত ব্যক্তিদের,” NW] পথ সংরক্ষণ [করিবেন]।”—হিতো. ২:৮; গীত. ৯৭:১০.

১৩. যিহোবার জন্য আমরা যা করি, সেটাকে তিনি কীভাবে দেখেন?

১৩ প্রেম আমাদেরকে যিহোবার নামকে সম্মান করতে অনুপ্রাণিত করে, এমনকী আমরা যদি এইরকমও মনে করি যে, আমরা যথেষ্ট করতে পারছি না। তিনি আমাদের উত্তম উদ্দেশ্যগুলো দেখেন এবং আমরা যা করতে চাই, সেগুলোর সমস্তই করতে না পারলেও আমাদের বিচার করেন না। আমরা কী করছি কেবল সেটাই নয় কিন্তু কেন আমরা তা করছি, সেটাই গণ্য করার মতো বিষয়। যদিও ইয়োব দুঃখে জর্জরিত হয়েছিলেন এবং অনেক ধৈর্য ধরেছিলেন, কিন্তু তিনি তার দোষারোপকারীদের কাছে যিহোবার পথগুলোর প্রতি তার প্রেম সম্বন্ধে কথা বলেছিলেন। (পড়ুন, ইয়োব ১০:১২; ২৮:২৮.) ইয়োব বইয়ের শেষ অধ্যায়ে ঈশ্বর ইলীফস, বিল্‌দদ ও সোফরের প্রতি তার ক্রোধ প্রকাশ করেছিলেন কারণ তারা সত্য কথা বলেনি। একইসঙ্গে, যিহোবা ইয়োবকে চার বার “আমার দাস” বলে উল্লেখ করার এবং অন্যায়কারীদের হয়ে মধ্যস্থতা করার নির্দেশনা দেওয়ার মাধ্যমে তার প্রতি তাঁর অনুমোদনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। (ইয়োব ৪২:৭-৯) আমরাও যেন এমন উপায়ে কাজ করি যাতে যিহোবা আমাদের অনুগ্রহের দৃষ্টিতে দেখেন।

যিহোবা তাঁর বিশ্বস্ত দাসদের সমর্থন করেন

১৪. কীভাবে যিহোবা ইয়োবকে তার চিন্তাভাবনা সংশোধন করতে সাহায্য করেছিলেন?

১৪ ইয়োব এমনকী অসিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও তার নীতিনিষ্ঠা বজায় রেখেছিলেন। মাঝে মাঝে চরম চাপের মুখে তিনি ভুল দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, তিনি যিহোবাকে বলেছিলেন: “আমি তোমার কাছে আর্ত্তনাদ করি, তুমি উত্তর দেও না; . . . তুমি . . . আপন ভুজবলে আমাকে তাড়না করিতেছ।” অধিকন্তু, ইয়োব নিজেকে সঠিক প্রমাণ করার ওপর অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়েছিলেন, যখন তিনি বলেছিলেন: “আমি দুষ্ট নহি” এবং “আমার হস্তে অত্যাচার নাই। আর আমার প্রার্থনা বিশুদ্ধ।” (ইয়োব ১০:৭; ১৬:১৭; ৩০:২০, ২১) তা সত্ত্বেও, যিহোবা ধারাবাহিকভাবে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে সদয়ভাবে ইয়োবকে সাহায্য করেছিলেন, যেগুলো ইয়োবের মনোযোগকে তার নিজের কাছ থেকে সরিয়ে নিতে পরিচালিত করেছিল। এ ছাড়া, এই প্রশ্নগুলো ইয়োবকে আরও স্পষ্টভাবে ঈশ্বরের শ্রেষ্ঠত্ব ও মানুষের নগণ্যতা দেখতে সাহয্য করেছিল। ইয়োব সেই নির্দেশনা মেনে নিয়েছিলেন এবং নিজেকে সংশোধন করেছিলেন।—পড়ুন, ইয়োব ৪০:৮; ৪২:২, ৬.

১৫, ১৬. কোন কোন উপায়ে যিহোবা আজকে তাঁর দাসদের সাহায্য জোগান?

১৫ যিহোবা আজকেও তাঁর দাসদের সদয় ও দৃঢ় নির্দেশনা প্রদান করেন। তা ছাড়া, আমরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপকার উপভোগ করে থাকি। উদাহরণস্বরূপ, যিশু খ্রিস্ট মুক্তির মূল্য জুগিয়েছেন আর এভাবে পাপের ক্ষমার জন্য ভিত্তি স্থাপন করেছেন। সেই বলিদানের ভিত্তিতে, আমাদের অসিদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা ঈশ্বরের সঙ্গে এক নিকট সম্পর্ক রাখতে পারি। (যাকোব ৪:৮; ১ যোহন ২:১) পরীক্ষার মুখোমুখি হলে, আমরাও ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার সমর্থন ও শক্তির জন্য প্রার্থনা করি। অধিকন্তু, আমাদের কাছে সম্পূর্ণ বাইবেল রয়েছে আর আমরা যদি সেটি পড়ি ও এর বিষয়বস্তু নিয়ে ধ্যান করি, তাহলে বিশ্বাসের পরীক্ষার জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করছি। অধ্যয়ন আমাদেরকে সর্বজনীন সার্বভৌমত্ব এবং ব্যক্তিগত নীতিনিষ্ঠা সম্বন্ধে বিচার্য বিষয়গুলো বুঝতে সাহায্য করে।

১৬ এ ছাড়া, পৃথিবীব্যাপী ভ্রাতৃসমাজের অংশ হওয়ায় আমরা প্রচুররূপে উপকৃত হই, যাদেরকে যিহোবা ‘বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাসের’ মাধ্যমে আধ্যাত্মিক খাদ্য জোগান। (মথি ২৪:৪৫-৪৭) যিহোবার সাক্ষিদের প্রায় ১,০০,০০০ মণ্ডলীর প্রত্যেকটাতে সভাগুলো হয়ে থাকে, যেগুলো আমাদেরকে সম্ভাব্য বিশ্বাসের পরীক্ষা মোকাবিলা করার নির্দেশনা দেয় ও আমাদেরকে শক্তিশালী করে। এই বিষয়টা জার্মানিতে বসবাসরত এক কিশোরী সাক্ষি শিলার অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যেতে পারে।

১৭. আজকে যিহোবার সংগঠনের নির্দেশনার প্রতি দৃঢ়ভাবে লেগে থাকার প্রজ্ঞা উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করুন।

১৭ একদিন স্কুলে শিলার ক্লাস কিছুক্ষণের জন্য তত্ত্বাবধান করার মতো কেউ ছিল না। তার সহপাঠীরা ওয়াইজা বোর্ড পরীক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। শিলা সঙ্গে সঙ্গে ক্লাসরুম ত্যাগ করেছিল আর পরে সে যা শুনেছিল, তা তাকে আনন্দিত করেছিল যে, সে সেখানে ছিল না। ওয়াইজা বোর্ড ব্যবহার করার সময় কিছু ছাত্র-ছাত্রী মন্দ আত্মার উপস্থিতি টের পেয়েছিল এবং ভয় পেয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কী শিলাকে সঙ্গে সঙ্গে ক্লাসরুম ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছিল? “এই ঘটনার অল্প কিছুদিন আগে, কিংডম হলের সভাতে ওয়াইজা বোর্ডের বিপদ সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছিল। তাই, আমি জানতাম যে, আমাকে কী করতে হবে,” শিলা ব্যাখ্যা করে। “আমি যিহোবাকে আনন্দিত করতে চেয়েছিলাম, ঠিক যেমনটা হিতোপদেশ ২৭:১১ পদে বাইবেল বলে।” এটা কতই না উত্তম বিষয় যে, শিলা সেই সভাতে উপস্থিত ছিল এবং মনোযোগ দিয়ে কার্যক্রম শুনেছিল!

১৮. ব্যক্তিগতভাবে আপনি কী করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ?

১৮ আসুন আমরা প্রত্যেকে ঈশ্বরের সংগঠনের কাছ থেকে পাওয়া নির্দেশনার প্রতি দৃঢ়ভাবে লেগে থাকার জন্য সংকল্পবদ্ধ হই। নিয়মিত সভায় উপস্থিতি, বাইবেল পাঠ, বাইবেলভিত্তিক প্রকাশনা অধ্যয়ন, প্রার্থনা এবং পরিপক্ব খ্রিস্টানদের সঙ্গে সাহচর্যের মাধ্যমে আমরা প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও সমর্থন লাভ করি। যিহোবা চান যেন আমরা জয়ী হই আর তাঁর এই আস্থা রয়েছে যে, আমরা ক্রমাগত অনুগত থাকব। যিহোবার নামকে উচ্চীকৃত করার, নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখার এবং যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করার কী এক বিশেষ সুযোগই না আমাদের রয়েছে!

আপনি কি মনে করতে পারেন?

• কোন অবস্থা ও পরীক্ষাগুলোর জন্য শয়তান দায়ী?

• আমাদের রয়েছে এমন সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ কী?

• যিহোবার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের ভিত্তি কী?

• কিছু উপায় কী, যেগুলোর মাধ্যমে যিহোবা আজকে আমাদের সমর্থন করেন?

[৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

আপনার যে-মূল্যবান জ্ঞান রয়েছে, তা ভাগ করে নেওয়ার জন্য আপনি কি তাগিদ অনুভব করেন?

[৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

আমরা সহউপাসকদেরকে তাদের নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখার জন্য সাহায্য করতে পারি

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

ভ্যালেন্টিনা তার নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখার জন্য সমস্তকিছু ত্যাগ করতে ইচ্ছুক ছিলেন

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার