ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w11 ৯/১৫ পৃষ্ঠা ২০-২৪
  • “তোমরা . . . দৌড়, যেন পুরস্কার পাও”

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • “তোমরা . . . দৌড়, যেন পুরস্কার পাও”
  • ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • ‘সমস্ত বোঝা ফেলিয়া দাও’
  • “সহজ বাধাজনক পাপ”
  • “তোমরা . . . যেন পুরস্কার পাও”—কীভাবে?
  • ধৈর্যপূর্বক ধাবনক্ষেত্রে দৌড়ান
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ‘নিরুপিত পথের শেষ পর্যন্ত দৌড়ান’
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২০
  • আপনি শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধরতে পারেন
    ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • জীবনের জন্য দৌড়ে আপনি কিরূপে দৌড়াচ্ছেন?
    ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w11 ৯/১৫ পৃষ্ঠা ২০-২৪

“তোমরা . . . দৌড়, যেন পুরস্কার পাও”

“তোমরা এরূপে দৌড়, যেন পুরস্কার পাও।”—১ করি. ৯:২৪.

১, ২. (ক) ইব্রীয় খ্রিস্টানদেরকে উৎসাহিত করার জন্য পৌল কী ব্যবহার করেছিলেন? (খ) ঈশ্বরের দাসদেরকে কী করার উপদেশ দেওয়া হয়েছে?

ইব্রীয়দের কাছে চিঠি লেখার সময়, প্রেরিত পৌল তার সহখ্রিস্টানদেরকে উৎসাহিত করার জন্য এক জোরালো শব্দচিত্র ব্যবহার করেছিলেন। তিনি তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে, জীবনের ধাবনক্ষেত্রে কেবল তারা একাই দৌড়াচ্ছে না। তাদেরকে এমন ‘বৃহৎ সাক্ষিমেঘ’ বেষ্টন করে রয়েছে, যারা সফলভাবে দৌড় শেষ করেছে। এই প্রাক্তন দৌড়বিদদের বিশ্বস্ত কাজ এবং সর্বাত্মক প্রচেষ্টা স্পষ্টভাবে মনে রাখা ইব্রীয় খ্রিস্টানদেরকে এগিয়ে চলার এবং ধাবনক্ষেত্রে হাল ছেড়ে না দেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করবে।

২ আগের প্রবন্ধে আমরা ‘বৃহৎ সাক্ষিমেঘের’ মধ্যে কয়েক জনের জীবনধারা বিবেচনা করে দেখেছি। তাদের সকলের জীবনধারা দেখিয়েছে যে, অটল বিশ্বাস তাদেরকে ঈশ্বরের প্রতি অনুগত থাকতে, যেন তাদেরকে একটা ধাবনক্ষেত্রে দৌড় সমাপ্ত করার জন্য এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। তাদের সাফল্য থেকে আমরা একটা শিক্ষা লাভ করতে পারি। সেই প্রবন্ধে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, পৌল তার সহদাসদেরকে, যাদের মধ্যে আমরাও রয়েছি, এই উপদেশ দিয়েছিলেন: “আইস, আমরাও সমস্ত বোঝা ও সহজ বাধাজনক পাপ ফেলিয়া দিয়া ধৈর্য্যপূর্ব্বক আমাদের সম্মুখস্থ ধাবনক্ষেত্রে দৌড়ি।”—ইব্রীয় ১২:১.

৩. গ্রিকদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দৌড়বিদদের সম্বন্ধে উল্লেখিত পরামর্শে পৌল আসলে কী বলতে চেয়েছিলেন?

৩ দৌড় প্রতিযোগিতা, যা সেই সময়কার একটা জনপ্রিয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিল, সেই সম্বন্ধে প্রাথমিক খ্রিস্ট ধর্মের পটভূমি (ইংরেজি) নামক বইটি আমাদের বলে যে, “গ্রিকরা উলঙ্গ হয়ে অনুশীলন করত এবং প্রতিযোগিতায় অংশ নিত।”a এই ক্ষেত্রগুলোতে, দৌড়বিদরা এমন যেকোনো অপ্রয়োজনীয় বোঝা অথবা ভার খুলে ফেলত, যা কিনা তাদেরকে ধীর করে দিতে পারে। যদিও আমরা তাদের শালীনতা ও ভদ্রতার অভাব নিয়ে আপত্তি করব, কিন্তু সেভাবে দৌড়ানোর পিছনে তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হল পুরস্কার জেতা। পৌল আসলে বলতে চেয়েছিলেন যে, জীবনের ধাবনক্ষেত্রে পুরস্কার লাভ করার জন্য দৌড়বিদদেরকে অপরিহার্যভাবেই যেকোনো ধরনের বাধা সরিয়ে রাখতে হবে। এটা সেই সময়কার খ্রিস্টানদের জন্য এক উপযুক্ত পরামর্শ ছিল আর তা বর্তমানে আমাদের জন্যও উপযুক্ত। কোন ধরনের বোঝা অথবা ভার হয়তো জীবনের ধাবনক্ষেত্রে পুরস্কার লাভ করার ক্ষেত্রে আমাদেরকে বাধা দিতে পারে?

‘সমস্ত বোঝা ফেলিয়া দাও’

৪. নোহের দিনের লোকেরা কী নিয়ে ব্যস্ত ছিল?

৪ পৌল পরামর্শ দিয়েছিলেন যেন ‘সমস্ত বোঝা ফেলিয়া দেওয়া’ হয়। এর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে সেই সমস্তকিছু, যেগুলো হয়তো আমাদেরকে ধাবনক্ষেত্রে দৌড়ানোর সময় পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার এবং সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করার ক্ষেত্রে বাধা দিতে পারে। এইরকম বোঝার মধ্যে কোন কোন বিষয় থাকতে পারে? নোহের—পৌলের উল্লেখিত উদাহরণগুলোর মধ্যে একজনের—প্রতি দৃষ্টি রেখে, আমরা যিশুর বলা এই কথাগুলো স্মরণ করি: “নোহের সময়ে যেরূপ হইয়াছিল, মনুষ্যপুত্ত্রের সময়েও তদ্রূপ হইবে।” (লূক ১৭:২৬) যিশু মূলত আসন্ন কোনো নজিরবিহীন ধ্বংস সম্বন্ধে বলছিলেন না; বরং, তিনি লোকেদের জীবনধারার বিষয়ে উল্লেখ করছিলেন। (পড়ুন, মথি ২৪:৩৭-৩৯.) নোহের দিনের অধিকাংশ লোক ঈশ্বর সম্বন্ধে কোনো আগ্রহই দেখায়নি আর তাকে খুশি করা তো দূরের কথা। কী তাদেরকে বিক্ষিপ্ত করেছিল? তেমন বিশেষ কিছু নয়। ভোজন, পান এবং বিয়ে—জীবনের স্বাভাবিক বিষয়গুলো। আসল সমস্যাটা ছিল, তারা “বুঝিতে পারিল না,” যেমনটা যিশু বলেছিলেন।

৫. কোন বিষয়টা আমাদেরকে সফলভাবে ধাবনক্ষেত্রের দৌড় শেষ করায় সাহায্য করতে পারে?

৫ নোহ ও তার পরিবারের মতো, আমাদেরও প্রতিদিন করার মতো অনেক কাজ রয়েছে। আমাদের জীবিকানির্বাহ করতে এবং নিজেদের ও আমাদের পরিবারের যত্ন নিতে হয়। এটা আমাদের অনেক সময়, শক্তি এবং সম্পদ কেড়ে নিতে পারে। বিশেষভাবে অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে, জীবনের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে উদ্‌বিগ্ন হয়ে পড়া খুবই স্বাভাবিক। উৎসর্গীকৃত খ্রিস্টান হিসেবে, আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ঈশতান্ত্রিক দায়িত্বও রয়েছে। আমরা প্রচারে অংশগ্রহণ করি, খ্রিস্টীয় সভাগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিই ও তাতে যোগ দিই এবং ব্যক্তিগত অধ্যয়ন ও পারিবারিক উপাসনার মাধ্যমে আধ্যাত্মিকভাবে দৃঢ় থাকি। নোহকে ঈশ্বরের সেবায় আরও অনেক কিছু করতে হয়েছিল কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি ‘সেইরূপ করিয়াছিলেন।’ (আদি. ৬:২২) নিশ্চিতভাবেই, আমরা যদি খ্রিস্টীয় ধাবনক্ষেত্রে দৌড় সমাপ্ত করতে চাই, তাহলে আমাদের বহনীয় বোঝাকে যথাসম্ভব কম রাখা—এবং সেইসঙ্গে অপ্রয়োজনীয় ভার গ্রহণ করার বিষয়টা এড়িয়ে চলা—অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

৬, ৭. যিশুর কোন পরামর্শ আমাদের মনে রাখা উচিত?

৬ পৌল যখন “সমস্ত বোঝা” ফেলিয়া দেওয়ার কথা বলেছিলেন, তখন তিনি আসলে কী বুঝিয়েছিলেন? অবশ্য, আমরা নিজেদেরকে আমাদের সমস্ত দায়দায়িত্ব থেকে মুক্ত করতে পারি না। এই ক্ষেত্রে, যিশুর এই কথাগুলো মনে রাখুন: “ইহা বলিয়া ভাবিত হইও না যে, ‘কি ভোজন করিব?’ বা ‘কি পান করিব?’ বা ‘কি পরিব?’ কেননা পরজাতীয়েরাই এই সকল বিষয় চেষ্টা করিয়া থাকে; তোমাদের স্বর্গীয় পিতা ত জানেন যে এই সকল দ্রব্যে তোমাদের প্রয়োজন আছে।” (মথি ৬:৩১, ৩২) যিশুর কথা ইঙ্গিত দেয় যে, এমনকী তথাকথিত স্বাভাবিক বিষয়গুলোও—যেমন খাদ্য, বস্ত্র—একটা ভার অথবা বিঘ্ন সৃষ্টিকারী বিষয় হয়ে উঠতে পারে, যদি সেগুলোকে আমরা যথাস্থানে না রাখি।

৭ যিশুর এই কথাগুলোর ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন: “তোমাদের স্বর্গীয় পিতা ত জানেন যে এই সকল দ্রব্যে তোমাদের প্রয়োজন আছে।” এটা দেখায় যে, আমাদের স্বর্গীয় পিতা যিহোবা, আমাদের প্রয়োজনগুলোর যত্ন নেবেন। এটা ঠিক যে, ‘এই সকল দ্রব্য’ ব্যক্তিগতভাবে আমরা সাধারণত যেগুলো পছন্দ করি বা চাই, সেগুলো থেকে ভিন্ন হতে পারে। তা সত্ত্বেও, আমাদেরকে বলা হয়েছে যেন আমরা ‘পরজাতীয়েরা যে-সকল বিষয় চেষ্টা করিয়া থাকে,’ সেগুলো নিয়ে না ভাবি। কেন? পরবর্তী সময়ে, যিশু তাঁর শ্রোতাদের উপদেশ দিয়েছিলেন: “আপনাদের বিষয়ে সাবধান থাকিও, পাছে ভোগপীড়ায় ও মত্ততায় এবং জীবিকার চিন্তায় তোমাদের হৃদয় ভারগ্রস্ত হয়, আর সেই দিন হঠাৎ ফাঁদের ন্যায় তোমাদের উপরে আসিয়া পড়ে।”—লূক ২১:৩৪.

৮. কেন বিশেষভাবে এখনই ‘সমস্ত বোঝা ফেলিয়া দিবার’ সময়?

৮ শেষ সীমা একেবারে কাছেই। আমরা যদি নিজেদেরকে এমন অযথা বোঝা দিয়ে ভারগ্রস্ত করে ফেলি, যেগুলো কিনা আমাদেরকে শেষের একেবারে দ্বারপ্রান্তে গিয়ে বাধা দিতে পারে, তাহলে তা কত করুণই না হবে! তাই, প্রেরিত পৌলের এই পরামর্শ খুবই বিজ্ঞতাপূর্ণ: “ভক্তি, সন্তোষযুক্ত হইলে, মহালাভের উপায়।” (১ তীম. ৬:৬) পৌলের কথায় মনোযোগ দেওয়া, পুরস্কার লাভ করার ব্যাপারে আমাদের প্রত্যাশাকে আরও বৃদ্ধি করবে।

“সহজ বাধাজনক পাপ”

৯, ১০. (ক) “সহজ বাধাজনক পাপ” অভিব্যক্তিটি কোন বিষয়কে নির্দেশ করে? (খ) কীভাবে আমরা বাধাগ্রস্ত হতে পারি?

৯ “সমস্ত বোঝা” ছাড়াও, পৌল “সহজ বাধাজনক পাপ” ফেলে দেওয়ার বিষয়েও উল্লেখ করেছিলেন। সেগুলো কী হতে পারে? যে-গ্রিক শব্দটিকে “সহজ বাধাজনক” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটি বাইবেলে মাত্র এক বার, শুধু এই পদেই এসেছে। পণ্ডিত অ্যালবার্ট বার্নজ্‌ মন্তব্য করেন: “ঠিক যেমন একজন দৌড়বিদকে সতর্ক থাকতে হতো যেন তিনি এমন একটা বস্ত্র দ্বারা ভারগ্রস্ত না হয়ে পড়েন, যা দৌড়ানোর সময় বাতাসের কারণে তার পায়ে জড়িয়ে যেতে পারে এবং তাকে বাধা দিতে পারে, তেমনই সেই খ্রিস্টানের বেলায়ও হওয়া উচিত, বিশেষভাবে যিনি এইরকম বিষয়ের সমতুল্য সমস্তকিছু সরিয়ে রাখতে চান।” কীভাবে একজন খ্রিস্টান বাধাগ্রস্ত হতে পারেন আর কীভাবে এটা তার বিশ্বাসকে দুর্বল করে দিতে পারে?

১০ একজন খ্রিস্টান রাতারাতি তার বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন না। এটা হয়তো ধীরে ধীরে, এমনকী সূক্ষ্মভাবে হতে পারে। তার চিঠির শুরুর দিকে, পৌল ‘ভাসিয়া চলিয়া যাইবার’ এবং ‘অবিশ্বাসের এক মন্দ হৃদয় থাকিবার’ বিপদ সম্বন্ধে সাবধান করেছিলেন। (ইব্রীয় ২:১; ৩:১২) একজন দৌড়বিদের পা যখন তার কাপড়ে জড়িয়ে যায়, তখন তার পতন অনিবার্য। বাধাগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বিশেষভাবে সেই সময় আরও বেশি দেখা দেয়, যদি দৌড়বিদ দৌড়ানোর সময় এই ধরনের কাপড় পরার বিপদকে উপেক্ষা করেন। কী তাকে এই ধরনের বিপদকে উপেক্ষা করার জন্য প্ররোচিত করতে পারে? হতে পারে, সতর্কতার অভাব অথবা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস কিংবা কোনো বিক্ষেপ। পৌলের পরামর্শ থেকে আমরা কোন শিক্ষা লাভ করতে পারি?

১১. কোন কারণে আমাদের বিশ্বাস হারিয়ে যেতে পারে?

১১ আমাদের এই বিষয়টা মনে রাখা উচিত যে, একজন খ্রিস্টানের বিশ্বাস হারিয়ে ফেলার পিছনে কারণটা হল, তার বাছাইকৃত কাজগুলো। “সহজ বাধাজনক পাপ” সম্বন্ধে আরেকজন পণ্ডিত বলেন যে, এটা হচ্ছে এমন এক “পাপ, যেটা আমাদের পরিস্থিতি, আমাদের প্রবণতা এবং আমাদের সঙ্গীসাথিদের দ্বারা আমাদের বিরুদ্ধে অনেক সুবিধা গ্রহণ করে থাকে।” এর অর্থ হল আমাদের পরিবেশ, আমাদের ব্যক্তিগত দুর্বলতা এবং আমাদের মেলামেশা আমাদের ওপর এক জোরালো প্রভাব ফেলতে পারে। এগুলোর ফলে আমাদের বিশ্বাস দুর্বল হয়ে পড়তে অথবা এমনকী আমাদের বিশ্বাস হারিয়ে যেতে পারে।—মথি ১৩:৩-৯.

১২. আমাদের বিশ্বাস যাতে হারিয়ে না যায়, সেইজন্য আমাদের কোন অনুস্মারকগুলোতে মনোযোগ দেওয়া উচিত?

১২ বছরের পর বছর ধরে, বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস শ্রেণী, আমরা যা দেখি ও শুনি অর্থাৎ আমাদের হৃদয়ে ও মনে যা কিছু গ্রহণ করি, সেই সম্বন্ধে সতর্ক থাকার বিষয়ে আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। আমাদেরকে টাকাপয়সা এবং ধনসম্পদের পিছনে ছোটার দ্বারা বাধাগ্রস্ত হওয়ার বিপদ সম্বন্ধে সাবধান করে দেওয়া হয়েছে। আমরা হয়তো বিনোদনজগতের চাকচিক্য ও জৌলুসের দ্বারা অথবা নতুন নতুন যন্ত্রপাতির অফুরন্ত সমারোহের দ্বারা বিপথগামী হয়ে পড়তে পারি। এইরকম মনে করা গুরুতর ভুল হবে যে, এই ধরনের পরামর্শ অতিরিক্ত কড়া কিংবা এটা শুধু অন্যদের বেলায় প্রযোজ্য আর অন্যদিকে ব্যক্তিগতভাবে আমরা এই বিপদগুলো থেকে কিছুটা প্রভাবমুক্ত। শয়তানের জগৎ আমাদের সামনে যে-বাধাগুলো রাখে, সেগুলো সূক্ষ্ম এবং প্রতারণামূলক। মনোযোগের অভাব, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস এবং বিক্ষেপগুলো কারো কারো জন্য সর্বনাশের কারণ হয়ে এসেছে আর এই ধরনের বিষয়গুলো জীবনের পুরস্কার লাভ করার বিষয়ে আমাদের আশাকে প্রভাবিত করতে পারে।—১ যোহন ২:১৫-১৭.

১৩. কীভাবে আমরা ক্ষতিকর প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারি?

১৩ প্রতিনিয়ত আমাদের এমন লোকেদের মুখোমুখি হতে হয়, যারা আমাদের চারপাশের জগৎকে ঘিরে আবর্তিত বিভিন্ন লক্ষ্য, মূল্যবোধ এবং চিন্তাভাবনা সম্বন্ধে তুলে ধরে। (পড়ুন, ইফিষীয় ২:১, ২.) তবে, আমরা কতটা প্রভাবিত হই, সেটা অনেকাংশে আমাদের ওপর অর্থাৎ এই প্রভাবগুলোর প্রতি আমরা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাই, সেটার ওপর নির্ভর করে। পৌল যে-“আকাশের [“বাতাসের,” NW]” কথা বলেছিলেন, তা মারাত্মক। আমাদের সদাসতর্ক থাকতে হবে, যেন আমরা চাপগ্রস্ত অথবা শ্বাসরুদ্ধ হয়ে না পড়ি আর এভাবে ধাবনক্ষেত্রের দৌড় সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হই। এই পথে থাকার জন্য আমাদের কোন সাহায্য রয়েছে? যিশু হলেন সবচেয়ে আদর্শ দৌড়বিদ, আপনি হয়তো বলতে পারেন। (ইব্রীয় ১২:২) এ ছাড়া, আমাদের কাছে পৌলের উদাহরণও রয়েছে, কারণ তিনি নিজেকে খ্রিস্টীয় ধাবনক্ষেত্রের দৌড়বিদদের মধ্যে একজন বলে গণ্য করেছেন এবং সহবিশ্বাসীদেরকে তাকে অনুকরণ করার জন্য জোরালো পরামর্শ দিয়েছেন।—১ করি. ১০:৩৪; ফিলি. ৩:১৪.

“তোমরা . . . যেন পুরস্কার পাও”—কীভাবে?

১৪. ধাবনক্ষেত্রের সেই দৌড়ে পৌল নিজের দৌড় সম্বন্ধে কেমন বোধ করেছিলেন?

১৪ ধাবনক্ষেত্রের সেই দৌড়ে, পৌল নিজের দৌড় সম্বন্ধে কেমন বোধ করেছিলেন? ইফিষের প্রাচীনদের উদ্দেশে তার শেষ কথায় তিনি বলেছিলেন: “আমি নিজ প্রাণকেও কিছুর মধ্যে গণ্য করি না, আমার পক্ষে মহামূল্য গণ্য করি না, যেন নিরূপিত পথের শেষ পর্য্যন্ত দৌড়িতে পারি, এবং . . . যে পরিচর্য্যাপদ প্রভু যীশু হইতে পাইয়াছি, তাহা সমাপ্ত করিতে পারি।” (প্রেরিত ২০:২৪) তিনি নিজের জীবনসহ সমস্তকিছু ত্যাগ করতে ইচ্ছুক ছিলেন, যাতে তিনি ধাবনক্ষেত্রের দৌড় শেষ করতে পারেন। পৌলের কাছে, সুসমাচারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত তার সমস্ত প্রচেষ্টা ও কঠোর পরিশ্রম সবই বৃথা হয়ে যাবে, যদি কিনা তিনি কোনো না কোনোভাবে সেই পথ শেষ করতে ব্যর্থ হন। তবে, তিনি এইরকম মনে করে আত্মবিশ্বাসী মনোভাব দেখাননি যে, প্রতিযোগিতায় তিনি জয়ী হবেনই। (পড়ুন, ফিলিপীয় ৩:১২, ১৩.) একমাত্র তার জীবনের শেষের দিকে তিনি পূর্ণ আস্থা সহকারে বলেছিলেন: “আমি উত্তম যুদ্ধে প্রাণপণ করিয়াছি, নিরূপিত পথের শেষ পর্য্যন্ত দৌড়িয়াছি, বিশ্বাস রক্ষা করিয়াছি।”—২ তীম. ৪:৭.

১৫. ধাবনক্ষেত্রের দৌড়ে সহদৌড়বিদদেরকে পৌল কোন উৎসাহ দিয়েছিলেন?

১৫ এ ছাড়া, পৌল এই বিষয়টা দেখার জন্য ঐকান্তিকভাবে আকাঙ্ক্ষী ছিলেন, যেন তার সহবিশ্বাসীরা সেই পথ শেষ করতে পারে এবং তা থেকে ছিটকে সরে না পড়ে। উদাহরণস্বরূপ, ফিলিপীর খ্রিস্টানদেরকে তিনি জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন যেন তারা নিজেদের পরিত্রাণের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে। তাদের “জীবনের বাক্য ধরিয়া” রাখার প্রয়োজন ছিল। তিনি আরও বলেছিলেন: “ইহাতে খ্রীষ্টের দিনে আমি এই শ্লাঘা করিবার হেতু পাইব যে, আমি বৃথা দৌড়ি নাই, বৃথা পরিশ্রমও করি নাই।” (ফিলি. ২:১৫, ১৬) একইভাবে, তিনি করিন্থের খ্রিস্টানদের এই জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন: “তোমরা এরূপে দৌড়, যেন পুরস্কার পাও।”—১ করি. ৯:২৪.

১৬. কেন আমাদের লক্ষ্য বা পুরস্কারের বিষয়টা স্পষ্ট মনে রাখা উচিত?

১৬ দূরপাল্লার দৌড়ে, যেমন ম্যারাথন দৌড়ে শেষ সীমা প্রথমে দেখা যায় না। তা সত্ত্বেও, পুরো ধাবনক্ষেত্রজুড়ে একজন দৌড়বিদ শেষের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখেন। সেই মনোযোগ আরও স্পষ্ট হয়, যখন তিনি বুঝতে পারেন যে, লক্ষ্য খুবই নিকটে। আমাদের ধাবনক্ষেত্রের বেলায়ও একই বিষয় হওয়া উচিত। লক্ষ্য বা পুরস্কারটা আমাদের কাছে বাস্তব হওয়া প্রয়োজন। এটা আমাদেরকে সেই পুরস্কার লাভ করতে সাহায্য করবে।

১৭. কীভাবে বিশ্বাস পুরস্কারের প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখার সঙ্গে যুক্ত?

১৭ “বিশ্বাস প্রত্যাশিত বিষয়ের নিশ্চয়জ্ঞান, অদৃশ্য বিষয়ের প্রমাণপ্রাপ্তি,” পৌল লিখেছিলেন। (ইব্রীয় ১১:১) অব্রাহাম ও সারা এক আরামদায়ক জীবনধারা পরিত্যাগ করতে এবং “পৃথিবীতে বিদেশী ও প্রবাসী” হিসেবে বাস করতে ইচ্ছুক ছিল। কী তাদেরকে সাহায্য করেছিল? ‘ইহাঁরা দূর হইতে [ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলোর পরিপূর্ণতা] দেখিতে পাইয়াছিলেন।’ মোশি “পাপজাত ক্ষণিক সুখভোগ” এবং “মিশরের সমস্ত ধন” প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কীভাবে তিনি এইরকমটা করার বিশ্বাস ও শক্তি লাভ করেছিলেন? তিনি “পুরস্কারদানের প্রতি দৃষ্টি রাখিতেন।” (ইব্রীয় ১১:৮-১৩, ২৪-২৬) তাই, এটা বোধগম্য যে, পৌল এইসমস্ত ব্যক্তির বিষয়ে বর্ণনা দিতে গিয়ে শুরুতে “বিশ্বাসে” অভিব্যক্তিটি ব্যবহার করেছিলেন। বিশ্বাস তাদেরকে তখনকার বিভিন্ন পরীক্ষা ও কষ্টকে ছাড়িয়ে আরও বেশি কিছু দেখতে এবং ঈশ্বর তাদের পক্ষে যা করছিলেন ও সেইসঙ্গে যা করবেন, তা দেখতে সমর্থ করেছিল।

১৮. “সহজ বাধাজনক পাপ” ফেলে দেওয়ার জন্য আমরা কোন কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারি?

১৮ ইব্রীয় ১১ অধ্যায়ে উল্লেখিত বিশ্বাসী নারী ও পুরুষের বিষয়ে ধ্যান করার এবং তাদের উদাহরণ অনুকরণ করার দ্বারা আমরা বিশ্বাস গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করতে এবং “সহজ বাধাজনক পাপ” ফেলে দিতে পারব। (ইব্রীয় ১২:১) এ ছাড়া, একইরকম বিশ্বাস গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করে এমন লোকেদের সঙ্গে একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে আমরা “পরস্পর মনোযোগ করি, যেন প্রেম ও সৎক্রিয়ার সম্বন্ধে পরস্পরকে উদ্দীপিত করিয়া তুলিতে পারি।”—ইব্রীয় ১০:২৪.

১৯. পুরস্কারের প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখা সম্বন্ধে আপনি কেমন বোধ করেন?

১৯ আমরা আমাদের ধাবনক্ষেত্রের একেবারে শেষের দিকে আছি। শেষ সীমা একেবারে দৃষ্টিগোচরে এসে গিয়েছে। বিশ্বাস ও যিহোবার সাহায্যে আমরাও “সমস্ত বোঝা ও সহজ বাধাজনক পাপ ফেলিয়া” দিতে পারি। হ্যাঁ, আমরা এমনভাবে দৌড়াতে পারি, যার ফলে আমরা পুরস্কার—আমাদের ঈশ্বর ও পিতার দ্বারা প্রতিজ্ঞাত আশীর্বাদগুলো—লাভ করতে পারি।

[পাদটীকা]

a প্রাচীনকালের যিহুদিদের কাছে এটা ছিল এক বিব্রতকর বিষয়। অপ্রামাণিক বই ২য় মাকাবীয় অনুসারে, ধর্মভ্রষ্ট মহাযাজক যাসোন যখন যিরূশালেমে একটা ব্যায়ামাগার নির্মাণ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তখন সেটাকে প্রাচীন গ্রিক কৃষ্টিতে রূপান্তর করার এক প্রচেষ্টা বলে তুমুল তর্কবিতর্ক হয়েছিল।—২ মাকা. ৪:৭-১৭.

আপনার কি মনে আছে?

• “সমস্ত বোঝা” ফেলে দেওয়ার সঙ্গে কী জড়িত?

• কোন কারণে একজন খ্রিস্টানের বিশ্বাস হারিয়ে যেতে পারে?

• কেন আমাদের পুরস্কারের প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখতে হবে?

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

“সহজ বাধাজনক পাপ কী” আর কীভাবে তা আমাদেরকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে?

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার