ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w13 ৮/১৫ পৃষ্ঠা ১০-১৪
  • কখনো “সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট” হবেন না

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • কখনো “সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট” হবেন না
  • ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • কী আমাদেরকে “সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট” হতে পরিচালিত করতে পারে?
  • “সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট” হওয়া যেভাবে এড়ানো যায়
  • যিহোবার সঙ্গে আপনার মূল্যবান সম্পর্ককে রক্ষা করুন
  • যিহোবাকে দোষ দেওয়া যায় না
    ১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবাকে কখনোই ভুলে যাবেন না
    ২০০৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • একজন ঈশ্বর কি আছেন যিনি যত্ন নেন?
    একজন ঈশ্বর কি আছেন যিনি যত্ন নেন?
  • ‘কে ঈশ্বরের মন জানিয়াছে?’
    ২০১০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w13 ৮/১৫ পৃষ্ঠা ১০-১৪

কখনো “সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট” হবেন না

“মানুষের অজ্ঞানতা তাহার পথ বিপরীত করে, আর তাহার চিত্ত সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট হয়।”—হিতো. ১৯:৩.

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

কী আমাদেরকে “সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট” হতে পরিচালিত করতে পারে?

কোন পাঁচটা বিষয় ঈশ্বরের ওপরে রুষ্ট হওয়া এড়িয়ে চলতে আমাদের সাহায্য করতে পারে?

কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হলে আমাদের কী মনে রাখা উচিত?

১, ২. মানবজাতির সমস্যাগুলোর জন্য কেন আমাদের যিহোবাকে দোষ দেওয়া উচিত নয়? ব্যাখ্যা করুন।

ধরুন, আপনি অনেক বছর ধরে সুখী বিবাহিত এক ব্যক্তি। কিন্তু একদিন, আপনি যখন ঘরে ফিরে আসেন, তখন দেখতে পান যে, আপনার ঘর একেবারে ওলটপালট হয়ে আছে। আসবাবপত্র তছনছ হয়ে আছে, থালাবাসন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আর কার্পেট এমনভাবে নষ্ট হয়েছে, যেটা আর সারানোর উপায় নেই। আপনার অতি যত্নের ঘরটা এক ধ্বংসস্তূপ হয়ে গিয়েছে। আপনি কি উত্তেজনার বশে বলে উঠবেন, “আমার স্ত্রী কেন এ-রকম করেছে?” নাকি আপনি সম্ভবত জিজ্ঞেস করবেন, “কে এটা করেছে?” কোনো সন্দেহ নেই যে, সঙ্গেসঙ্গে আপনার মাথায় দ্বিতীয় প্রশ্নটাই আসবে। কেন? কারণ আপনি জানেন, আপনার প্রিয় সাথি খেয়ালের বশে এমন উচ্ছৃঙ্খল কাজ করতে পারেন না।

২ বর্তমানে, আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, দূষণ, দৌরাত্ম্য ও অনৈতিকতার কারণে মানবজাতির গৃহ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বাইবেলের ছাত্র হিসেবে আমরা জানি, যিহোবা এসব সমস্যার কারণ হতে পারেন না। তিনি এই গ্রহ সৃষ্টি করেছেন, যেন এটা এক অপূর্ব পরমদেশ হয়ে ওঠে। (আদি. ২:৮, ১৫) যিহোবা হলেন একজন প্রেমময় ঈশ্বর। (১ যোহন ৪:৮) শাস্ত্র নিয়ে অধ্যয়ন করা আমাদেরকে জগতের অনেক সমস্যার প্রকৃত কারণ শনাক্ত করতে সাহায্য করেছে। সেই কারণটা হল “জগতের অধিপতি” শয়তান দিয়াবল।—যোহন ১৪:৩০; ২ করি. ৪:৪.

৩. কীভাবে আমাদের চিন্তাভাবনা বিকৃত হয়ে যেতে পারে?

৩ কিন্তু, আমাদের সমস্ত দুর্দশার জন্য আমরা শয়তানকে দোষ দিতে পারি না। কেন? কারণ আমাদের নিজেদের ভুলত্রুটির জন্যই আমাদের কিছু কিছু সমস্যা দেখা দেয়। (পড়ুন, দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:৪-৬.) এই সত্যকে যদিও আমরা হয়তো স্বীকার করি, কিন্তু আমাদের অসিদ্ধ স্বভাব আমাদের চিন্তাভাবনাকে বিকৃত করে দিতে পারে আর এভাবে আমাদের এমন এক পথে নিয়ে যেতে পারে, যা শেষপর্যন্ত ধ্বংসের দিকে পরিচালিত করে। (হিতো. ১৪:১২) কীভাবে? আমরা কোনো সমস্যার জন্য নিজেদের অথবা শয়তানকে দোষ দেওয়ার পরিবর্তে, যিহোবাকে দোষ দেওয়া শুরু করতে পারি। এমনকী আমরা হয়তো “সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট” হতে পারি।—হিতো. ১৯:৩.

৪, ৫. কীভাবে একজন খ্রিস্টান “সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট” হতে পারেন?

৪ আমরা কি আসলেই “সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট” হতে পারি? রুষ্ট হওয়া নিশ্চিতভাবেই নিষ্ফল হবে। (যিশা. ৪১:১১) তারপরও যদি আমরা রুষ্ট হই, তাহলে সেটার ফল কী হবে বলে আমরা আশা করতে পারি? একজন কবি একবার বলেছিলেন: “আপনার হাত এত লম্বা হয়ে যায়নি যে, আপনি ঈশ্বরের সঙ্গে লড়াই করবেন।” আমরা হয়তো কখনোই যিহোবার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উচ্চারণ করার মতো পর্যায়ে যাই না। কিন্তু, হিতোপদেশ ১৯:৩ পদ বলে যে, মানুষের অজ্ঞানতা বা মূর্খতা “তাহার পথ বিপরীত করে, আর তাহার চিত্ত সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট হয়।” হ্যাঁ, একজন ব্যক্তি তার চিত্তে বা হৃদয়ে ঈশ্বরের ওপর রুষ্ট হতে পারেন। এই মনোভাব সূক্ষ্ম উপায়ে প্রকাশ পেতে পারে। একজন ব্যক্তি হয়তো-বা যিহোবার বিরুদ্ধে অসন্তোষ পুষে রাখতে পারেন। ফল স্বরূপ, সেই ব্যক্তি হয়তো মণ্ডলীর কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন অথবা যিহোবার উপাসনার জন্য যে-ব্যবস্থাগুলো রয়েছে, সেগুলোকে পূর্ণরূপে সমর্থন করেন না।

৫ কী আমাদেরকে “সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট” হতে প্ররোচিত করতে পারে? কীভাবে আমরা সেই ফাঁদ এড়িয়ে চলতে পারি? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা আমাদের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর সঙ্গে যিহোবা ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক জড়িত!

কী আমাদেরকে “সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট” হতে পরিচালিত করতে পারে?

৬, ৭. মোশির সময়ের ইস্রায়েলীয়রা কেন যিহোবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে শুরু করেছিল?

৬ কী যিহোবার একজন বিশ্বস্ত দাসের হৃদয়ে তার ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার জন্য প্ররোচনা দিতে পারে? আসুন আমরা পাঁচটা বিষয় বিবেচনা করি এবং বাইবেলের এমন কয়েকটা উদাহরণ পরীক্ষা করি, যেগুলো তুলে ধরে যে, অতীতে কিছু ব্যক্তি কীভাবে এই ফাঁদে পা দিয়েছিল।—১ করি. ১০:১১, ১২.

৭ অন্যদের নেতিবাচক কথাবার্তা আমাদের প্রভাবিত করতে পারে। (পড়ুন, দ্বিতীয় বিবরণ ১:২৬-২৮.) ইস্রায়েলীয়দের সবেমাত্র মিশরের দাসত্ব থেকে মুক্ত করা হয়েছে। যিহোবা সেই উৎপীড়ক জাতির ওপর অলৌকিকভাবে দশটা আঘাত নিয়ে এসেছিলেন আর এর পরে ফরৌণ ও তার সেনাবাহিনীকে সূফসাগরে ধ্বংস করেছিলেন। (যাত্রা. ১২:২৯-৩২, ৫১; ১৪:২৯-৩১; গীত. ১৩৬:১৫) ঈশ্বরের লোকেরা প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছিল। কিন্তু, সেই চূড়ান্ত মুহূর্তে ইস্রায়েলীয়রা যিহোবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে শুরু করেছিল। কী তাদেরকে এই ধরনের বিশ্বাসের অভাব দেখাতে প্ররোচনা দিয়েছিল? সেই দেশ নিরীক্ষণ করতে যাওয়া কিছু ব্যক্তির নেতিবাচক খবরের কারণে তারা অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিল। (গণনা. ১৪:১-৪) ফলাফল কী হয়েছিল? পুরো একটা বংশ বা প্রজন্মকে সেই ‘উত্তম দেশে’ প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। (দ্বিতীয়. ১:৩৪, ৩৫) আমরা কি কখনো কখনো অন্যদের নেতিবাচক কথাবার্তার কারণে আমাদের বিশ্বাসকে দুর্বল হয়ে পড়তে দিই এবং আমাদের সঙ্গে যিহোবার আচরণ নিয়ে বচসা করি?

৮. কী কারণে যিশাইয়ের দিনে ঈশ্বরের লোকেরা তাদের পরিস্থিতির জন্য যিহোবাকে দোষ দিতে শুরু করেছিল?

৮ দুঃখকষ্ট এবং সমস্যা আমাদের নিরুৎসাহিত করতে পারে। (পড়ুন, যিশাইয় ৮:২১, ২২.) যিশাইয়ের দিনে, যিহুদি জাতি নিজেদের চরম সংকটের মধ্যে দেখতে পেয়েছিল। তাদের চারপাশে শত্রুরা ছিল। খাদ্যের অভাব ছিল। অনেকে ক্ষুধার্ত থাকত। তবে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা হল, সেখানে আধ্যাত্মিক দুর্ভিক্ষ ছিল। (আমোষ ৮:১১) কিন্তু, এইরকম দুঃখকষ্টের সঙ্গে মোকাবিলা করার সময় সাহায্য লাভের জন্য যিহোবার ওপর নির্ভর করার পরিবর্তে, তারা তাদের রাজাকে এবং ঈশ্বরকে ‘শাপ দিতে’ শুরু করেছিল। হ্যাঁ, তারা তাদের সমস্যার জন্য যিহোবাকে দোষ দিয়েছিল। আমরা যদি দুঃখজনক ঘটনা অথবা ব্যক্তিগত সমস্যার দ্বারা জর্জরিত হই, তাহলে আমরাও একইভাবে হৃদয়ে বা মনে মনে বলতে পারি, ‘আমার যখন প্রয়োজন ছিল, তখন যিহোবা কোথায় ছিলেন?’

৯. কেন যিহিষ্কেলের দিনে ইস্রায়েলীয়রা এক ভুল দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলেছিল?

৯ আমরা সমস্ত ঘটনা জানি না। সমস্ত ঘটনা না জানায়, যিহিষ্কেলের দিনের ইস্রায়েলীয়রা মনে করেছিল যে, যিহোবার পথ “সরল নয়।” (যিহি. ১৮:২৯) বিষয়টা এমন ছিল, যেন তারা নিজেদেরকে ঈশ্বরের বিচারক বলে মনে করছে, ন্যায়বিচারের নিজস্ব মানকে যিহোবার মানের ঊর্ধ্বে রেখে এবং বিভিন্ন ঘটনা সম্বন্ধে নিজেদের সীমিত বোধগম্যতার ওপর ভিত্তি করে তাঁর বিচার করছে। কখনো কখনো আমরা যখন বাইবেলের কোনো বিবরণ অথবা আমাদের জীবনে যেভাবে ঘটনাগুলো ঘটে, সেই সম্বন্ধে পুরোপুরি না বুঝি, তখন আমরা কি হৃদয়ে এইরকম চিন্তা করি যে, যিহোবার পথ অন্যায্য অর্থাৎ “সরল নয়”?—ইয়োব ৩৫:২.

১০. কীভাবে একজন ব্যক্তি আদমের মন্দ উদাহরণ অনুসরণ করতে পারেন?

১০ আমরা নিজেদের পাপ এবং ভুলের দায় অন্যের ওপর চাপিয়ে দিই। মানবইতিহাসের একেবারে শুরুতে আদম তার নিজের পাপের জন্য ঈশ্বরকে দোষ দিয়েছিল। (আদি. ৩:১২) যদিও আদম ইচ্ছাকৃতভাবে এবং নিজের কাজের পরিণতি সম্বন্ধে পুরোপুরি জেনে ঈশ্বরের আইন লঙ্ঘন করেছিল, কিন্তু সে যিহোবাকে দোষ দিয়েছিল। আসলে, সে বলেছিল যে, যিহোবা তাকে একজন মন্দ স্ত্রী দিয়েছেন। তখন থেকে, অন্যেরাও নিজেদের ভুলের জন্য ঈশ্বরকে দোষ দেওয়ার ব্যাপারে আদমের উদাহরণ অনুসরণ করে এসেছে। আমাদের নিজেদের জিজ্ঞেস করা উচিত, ‘নিজের ভুলের জন্য হতাশা ও বিরক্তি বোধ করার কারণে আমি কি যিহোবার মানগুলোর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে পড়ি?’

১১. যোনার কাছ থেকে আমরা কী শিক্ষা লাভ করতে পারি?

১১ আমরা অতিরিক্ত আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ি। ভাববাদী যোনা নীনবীর বিষয়ে যিহোবার করুণাপূর্ণ সিদ্ধান্তের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। (যোনা ৪:১-৩) কেন? ধ্বংসের বিষয়ে তার ঘোষণা যখন সত্য হয়নি, তখন তিনি স্পষ্টতই নিজের সম্মান হারানোর ব্যাপারে অতিরিক্ত উদ্‌বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। অনুতপ্ত নীনবীয়দের প্রতি তার যে সমবেদনা দেখানো উচিত, সেই বিষয়ের চেয়ে যোনা নিজের সুনাম রক্ষা করার ব্যাপারে তার উদ্‌বিগ্নতাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। একইভাবে, আমরাও কি এতটাই আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়তে পারি যে, যিহোবা আরও আগে ধ্বংস নিয়ে আসেননি বলে তাঁর ওপরে রুষ্ট হই? আমরা হয়তো দশকের পর দশক ধরে যিহোবার দিন নিকটবর্তী বলে প্রচার করে এসেছি, কিন্তু অন্যেরা যখন বাইবেলের কথা ঘোষণা করার জন্য আমাদের সমালোচনা করে, তখন আমরা কি যিহোবার প্রতি অধৈর্য হয়ে পড়তে শুরু করি?—২ পিতর ৩:৩, ৪, ৯.

“সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট” হওয়া যেভাবে এড়ানো যায়

১২, ১৩. আমরা যদি হৃদয়ে যিহোবার কিছু কাজ সম্বন্ধে প্রশ্ন করতে শুরু করি, তাহলে আমাদের কোন বিষয়টা উপেক্ষা করা উচিত নয়?

১২ আমাদের পাপপূর্ণ হৃদয় যদি যিহোবার কিছু কাজ সম্বন্ধে প্রশ্ন করতে শুরু করে, তাহলে আমরা কী করতে পারি? মনে রাখবেন, তা করা বিজ্ঞতার কাজ নয়। হিতোপদেশ ১৯:৩ পদের আরেকটি অনুবাদ এভাবে বলে: “একজন ব্যক্তির নির্বুদ্ধিতা তার ধ্বংসের কারণ। কিন্তু সে তার দুরবস্থার জন্য প্রভুকে দোষী করে।” (ইজি-টু-রিড ভারসন) এই বিষয়টা মনে রেখে আসুন আমরা এমন পাঁচটা বিষয় বিবেচনা করি, যেগুলো আমাদেরকে জীবনের হতাশাগুলোর জন্য কখনোই যিহোবাকে দোষ না দিতে সাহায্য করবে।

১৩ যিহোবার সঙ্গে আপনার সম্পর্ককে উপেক্ষা করবেন না। আমরা ঈশ্বরের ওপরে রুষ্ট হওয়ার অসিদ্ধ প্রবণতা এড়াতে পারি, যদি আমরা তাঁর সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখি। (পড়ুন, হিতোপদেশ ৩:৫, ৬.) আমাদের যিহোবার ওপর বিশ্বাস বা নির্ভর করতে হবে। এ ছাড়া, আমাদের নিজেদের চোখে জ্ঞানবান হওয়া অথবা আত্মকেন্দ্রিক হওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। (হিতো. ৩:৭; উপ. ৭:১৬) তাহলে, যখন মন্দ বিষয়গুলো ঘটবে, তখন আমরা সম্ভবত যিহোবাকে দোষ দেব না।

১৪, ১৫. কী আমাদেরকে অন্যদের নেতিবাচক কথাবার্তা দ্বারা প্রভাবিত না হতে সাহায্য করবে?

১৪ নেতিবাচক কথাবার্তা দ্বারা নিজেকে প্রভাবিত হতে দেবেন না। মোশির দিনে ইস্রায়েলীয়দের এটা বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ ছিল যে, যিহোবা তাদেরকে সফলভাবে প্রতিজ্ঞাত দেশে নিয়ে যাবেন। (গীত. ৭৮:৪৩-৫৩) কিন্তু, তারা যখন দশ জন অবিশ্বস্ত গুপ্তচরের কাছ থেকে নেতিবাচক খবর শুনেছিল, তখন তারা “তাঁহার হস্ত স্মরণ” করেনি। (গীত. ৭৮:৪২) আমরা যদি যিহোবার কাজ নিয়ে ধ্যান করি, তিনি আমাদের জন্য যে-উত্তম বিষয়গুলো করেছেন, সেগুলো সম্বন্ধে স্মরণ করি, তাহলে আমরা তাঁর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে শক্তিশালী করব। ফল স্বরূপ, আমরা অন্যদের নেতিবাচক ধারণাকে আমাদের এবং যিহোবার মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার সুযোগ দেব না।—গীত. ৭৭:১১, ১২.

১৫ সহবিশ্বাসীদের প্রতি আমাদের যদি নেতিবাচক মনোভাব থাকে, তাহলে? এই ধরনের পরিস্থিতিতে যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক প্রভাবিত হতে পারে। (১ যোহন ৪:২০) ইস্রায়েলীয়রা যখন হারোণের নিযুক্তিকরণ ও পদমর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, তখন যিহোবা সেটাকে তাঁর বিরুদ্ধে বচসা হিসেবে দেখেছিলেন। (গণনা. ১৭:১০) একইভাবে, আমরা যদি সেই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বচসা করতে শুরু করি, যাদেরকে যিহোবা তাঁর সংগঠনের পার্থিব অংশকে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ব্যবহার করছেন, তাহলে আমরাও আসলে যিহোবা সম্বন্ধে অভিযোগ করছি।—ইব্রীয় ১৩:৭, ১৭.

১৬, ১৭. আমরা যখন সমস্যা ভোগ করি, তখন আমাদের কী মনে রাখতে হবে?

১৬ মনে রাখবেন, যিহোবা আমাদের সমস্যাগুলোর কারণ নন। যিশাইয়ের দিনের ইস্রায়েলীয়রা যদিও যিহোবার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিল, কিন্তু তিনি তাদের সাহায্য করতে চেয়েছিলেন। (যিশা. ১:১৬-১৯) আমরা যে-সমস্যারই মুখোমুখি হই না কেন, আমরা এটা জেনে সান্ত্বনা লাভ করতে পারি যে, যিহোবা আমাদের জন্য চিন্তা করেন এবং তিনি আমাদের সাহায্য করতে চান। (১ পিতর ৫:৭) আসলে, তিনি আমাদেরকে সহ্য করে চলার বা ধৈর্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি জুগিয়ে দেবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেন।—১ করি. ১০:১৩.

১৭ আমরা যদি কোনো ধরনের অবিচার ভোগ করে থাকি—যেমনটা বিশ্বস্ত ব্যক্তি ইয়োবও ভোগ করেছিলেন—তাহলে আমাদের নিজেদেরকে মনে করিয়ে দিতে হবে যে, যিহোবা এই অন্যায়ের কারণ নন। যিহোবা অবিচার ঘৃণা করেন; তিনি ধার্মিকতা ভালোবাসেন। (গীত. ৩৩:৫) আমরাও যেন ইয়োবের বন্ধু ইলীহূর মতো স্বীকার করি: “ইহা দূরে থাকুক যে, ঈশ্বর দুষ্কার্য্য করিবেন, সর্ব্বশক্তিমান্‌ অন্যায় করিবেন।” (ইয়োব ৩৪:১০) যিহোবা আমাদের সমস্যাগুলোর কারণ নন, বরং তিনি আমাদের “সমস্ত উত্তম দান এবং সমস্ত সিদ্ধ বর” দেন।—যাকোব ১:১৩, ১৭.

১৮, ১৯. কেন আমাদের যিহোবাকে কখনোই সন্দেহ করা উচিত নয়? ব্যাখ্যা করুন।

১৮ যিহোবাকে কখনো সন্দেহ করবেন না। ঈশ্বর হলেন সিদ্ধ এবং তাঁর সংকল্প বা চিন্তাভাবনা আমাদের চেয়ে উচ্চ। (যিশা. ৫৫:৮, ৯) তাই, নম্রতা ও বিনয় যেন আমাদের এটা স্বীকার করতে সাহায্য করে যে, আমাদের বোধগম্যতা সীমিত। (রোমীয় ৯:২০) খুব কম ক্ষেত্রেই আমরা কোনো নির্দিষ্ট পরিস্থিতি সম্বন্ধে সমস্ত ঘটনা জানি। কোনো সন্দেহ নেই যে, আপনিও এই প্রবাদের সত্যতা দেখতে পেয়েছেন: “মকদ্দমার সময়ে যে প্রথমে নিজের পক্ষে কথা বলে তার কথা সত্যি মনে হয়, যতক্ষণ না আর একজন এসে তাকে জেরা করে।”—হিতো. ১৮:১৭, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন।

১৯ আমাদের কোনো নির্ভরযোগ্য বন্ধু যদি এমন কিছু করে, যা হয়তো প্রথমে আমরা বুঝতে পারি না অথবা যেটাকে আমাদের কাছে অস্বাভাবিক বলে মনে হয়, তাহলে আমরা কি সঙ্গেসঙ্গে তাকে কোনো ভুল কাজ করার জন্য অভিযুক্ত করব? নাকি, দোষের যথেষ্ট প্রমাণ না থাকায় আমরা আমাদের বন্ধুকে নির্দোষ বলে গণ্য করতে চাইব, বিশেষ করে যদি আমরা সেই ব্যক্তিকে অনেক বছর ধরে জানি? আমরা যদি আমাদের অসিদ্ধ বন্ধুর সঙ্গে এইরকম প্রেমময় আচরণ করি, তাহলে আমাদের সেই স্বর্গীয় পিতার ওপর আমাদের আরও কত বেশিই না নির্ভর করা উচিত, যাঁর পথ ও চিন্তাভাবনা আমাদের চেয়ে অনেক উচ্চ!

২০, ২১. যে-দায়ী, তাকেই দোষারোপ করা কেন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?

২০ যে-দায়ী, তাকেই দোষারোপ করুন। কেন আমাদের তা মনে রাখা উচিত? আমরা হয়তো আমাদের কিছু সমস্যার জন্য নিজেরাই দায়ী হতে পারি। যদি তা-ই হয়, তাহলে আমাদের সেই বিষয়টা স্বীকার করতে হবে। (গালা. ৬:৭) সমস্যাগুলোর জন্য যিহোবাকে দোষ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। কেন তা করা অযৌক্তিক? এই উদাহরণ বিবেচনা করুন: একটা গাড়ি হয়তো অনেক উচ্চ গতিতে চলতে পারে। মনে করুন, কোনো চালক একটা সুস্পষ্ট বাঁক নেওয়ার সময় নির্দিষ্ট গতিসীমা ছাড়িয়ে আরও অনেক বেশি গতিতে গাড়ি চালাতে থাকেন আর এর ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। তাহলে, সেই দুর্ঘটনার জন্য কি গাড়ি প্রস্তুতকারককে দোষ দেওয়া উচিত হবে? অবশ্যই না! একইভাবে, যিহোবা আমাদের স্বাধীন ইচ্ছা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু একইসঙ্গে, যেভাবে বিজ্ঞ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া যায়, সেই বিষয়ে তিনি আমাদের জন্য নির্দেশনাও জুগিয়েছেন। তাহলে কেন আমরা নিজেদের ভুলগুলোর জন্য আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে দোষ দেব?

২১ অবশ্য, আমাদের ব্যক্তিগত ভুলত্রুটি ও ভুল পদক্ষেপের কারণেই যে আমাদের সমস্ত সমস্যা ঘটে, তা নয়। কিছু ঘটনা ‘কাল ও দৈবের’ কারণে ঘটে থাকে। (উপ. ৯:১১) কিন্তু সর্বোপরি, আমরা যেন কখনো এই সত্য থেকে দৃষ্টি হারিয়ে না ফেলি যে, শয়তান দিয়াবল হল দুষ্টতার প্রধান কারণ। (১ যোহন ৫:১৯; প্রকা. ১২:৯) সে-ই হল শত্রু—যিহোবা নন!—১ পিতর ৫:৮.

যিহোবার সঙ্গে আপনার মূল্যবান সম্পর্ককে রক্ষা করুন

২২, ২৩. আমরা যদি আমাদের সমস্যার কারণে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ি, তাহলে আমাদের কী মনে রাখা উচিত?

২২ আপনি যখন দুঃখকষ্ট ও সমস্যার মধ্যে থাকেন, তখন যিহোশূয় ও কালেবের উদাহরণ মনে রাখুন। অন্য দশ জন গুপ্তচরের বিপরীতে, এই দুই বিশ্বস্ত পুরুষ এক ইতিবাচক খবর নিয়ে এসেছিল। (গণনা. ১৪:৬-৯) তারা যিহোবার ওপর বিশ্বাস দেখিয়েছিল। তা সত্ত্বেও, তাদেরকে বাকি ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে ৪০ বছর ধরে প্রান্তরে ঘুরে বেড়াতে হয়েছিল। এই বিষয়টাকে অন্যায্য মনে করে যিহোশূয় ও কালেব কি অভিযোগ করেছিল অথবা তিক্তবিরক্ত হয়ে উঠেছিল? না। তারা যিহোবার ওপর নির্ভর করেছিল। এর ফলে তারা কি আশীর্বাদ লাভ করেছিল? অবশ্যই! যদিও পুরো একটা প্রজন্ম প্রান্তরে মারা গিয়েছিল, কিন্তু এই দু-জন পুরুষ শেষপর্যন্ত প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করেছিল। (গণনা. ১৪:৩০) একইভাবে, আমরাও যিহোবার আশীর্বাদ লাভ করব, যদি আমরা তাঁর ইচ্ছা পালন করার ক্ষেত্রে “ক্লান্ত” না হই।—গালা. ৬:৯; ইব্রীয় ৬:১০.

২৩ আপনি যদি সমস্যা, অন্যদের অসিদ্ধতা অথবা নিজের অসিদ্ধতার কারণে নিরুৎসাহিত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার কী করা উচিত? যিহোবার অপূর্ব গুণাবলির ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন। যিহোবা আপনাকে যে-আশা প্রদান করেছেন, তা মনের চোখে কল্পনা করুন। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘যিহোবা সঙ্গে না থাকলে আমার কী হতো?’ সবসময় তাঁর নিকটবর্তী থাকুন এবং কখনো আপনার হৃদয়কে তাঁর ওপরে রুষ্ট হতে দেবেন না!

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

[১২ পৃষ্ঠার চিত্র]

নেতিবাচক কথাবার্তা শোনা আপনার ওপর মন্দ প্রভাব ফেলতে পারে (৭ অনুচ্ছেদ দেখুন)

[১৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিহোবার ওপর নির্ভর করার কারণে যিহোশূয় ও কালেব আশীর্বাদ লাভ করেছিল (২২ অনুচ্ছেদ দেখুন)

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার