ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w14 ৩/১৫ পৃষ্ঠা ১২-১৬
  • যেভাবে এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা যায়

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যেভাবে এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা যায়
  • ২০১৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার জন্য বাইবেল ব্যবহার করুন
  • দরিদ্র বিধবা
  • “আমার প্রাণ লও”
  • “দুঃখীর প্রার্থনা”
  • তিনি তার ঈশ্বরের কাছ থেকে সান্ত্বনা লাভ করেছিলেন
    তাদের বিশ্বাস অনুকরণ করুন
  • সারিফতের বিধবা তার বিশ্বাসের জন্য পুরস্কৃত হয়েছিলেন
    ২০১৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • তিনি তার ঈশ্বরের কাছ থেকে সান্ত্বনা লাভ করেছিলেন
    ২০১২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনি কি এলিয়ের মত বিশ্বস্ত হবেন?
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০১৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w14 ৩/১৫ পৃষ্ঠা ১২-১৬
একজন সুখী মহিলা জানালা দিয়ে বাইরে দেখছন

যেভাবে এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা যায়

“কোন মনুষ্য যদি অনেক বৎসর জীবিত থাকে, তবে সেই সকলে আনন্দ করুক।”—উপ. ১১:৮.

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

  • কোন কারণে এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা হয়তো কঠিন হতে পারে?

  • এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখার জন্য কীভাবে আমরা বাইবেল ব্যবহার করতে পারি?

  • কীভাবে দরিদ্র বিধবা, এলিয় এবং ১০২ গীতের লেখকের উদাহরণ আমাদেরকে এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার জন্য সাহায্য করতে পারে?

১. যিহোবার কাছ থেকে প্রাপ্ত কোন আশীর্বাদগুলো আমাদেরকে সুখী হওয়ার জন্য সাহায্য করতে পারে?

যিহোবা চান যেন আমরা ধন্য বা সুখী হই এবং তিনি আমাদের ওপর অনেক আশীর্বাদ বর্ষণ করেন, যেগুলো আমাদের সুখী হতে সাহায্য করে। এর মধ্যে একটা হল আমাদের জীবন। তাই, ঈশ্বরের প্রশংসা করার জন্য আমরা আমাদের জীবনকে ব্যবহার করতে পারি কারণ তিনি আমাদেরকে সত্য উপাসনার প্রতি আকর্ষণ করেছেন। (গীত. ১৪৪:১৫; যোহন ৬:৪৪) যিহোবা আমাদেরকে তাঁর প্রেম সম্বন্ধে নিশ্চয়তা দেন এবং তাঁর প্রতি আমাদের সেবা চালিয়ে যেতে সাহায্য করেন। (যির. ৩১:৩; ২ করি. ৪:১৬) আমরা এক আধ্যাত্মিক পরমদেশ উপভোগ করি, যেখানে আমরা প্রচুর আধ্যাত্মিক খাদ্য লাভ করি এবং এক প্রেমময় ভ্রাতৃসমাজ খুঁজে পাই। এ ছাড়াও, আমাদের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে এক অপূর্ব আশা রয়েছে।

২. ঈশ্বরের কিছু বিশ্বস্ত দাস কীসের সঙ্গে লড়াই করে?

২ সুখী হওয়ার এই কারণগুলো সত্ত্বেও, ঈশ্বরের কিছু বিশ্বস্ত দাস নিজেদের সম্বন্ধে নেতিবাচক চিন্তাভাবনার সঙ্গে লড়াই করে। তারা হয়তো এইরকম মনে করে যে, যিহোবার কাছে তাদের অথবা তাদের সেবার বেশি মূল্য নেই। যারা এইরকম নেতিবাচক অনুভূতির সঙ্গে লড়াই করে, তাদের পক্ষে “অনেক বৎসর” আনন্দ করার ধারণাকে অবাস্তব বলে মনে হতে পারে। তাদের কাছে জীবনের প্রতিটা দিনকে হয়তো অন্ধকারময় বলে মনে হয়।—উপ. ১১:৮.

৩. কোন কারণে হয়তো নেতিবাচক অনুভূতি দেখা দিতে পারে?

৩ এইরকম ভাই অথবা বোনদের মধ্যে হয়তো হতাশা, অসুস্থতা কিংবা বার্ধক্যের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে নেতিবাচক অনুভূতি দেখা দিতে পারে। (গীত. ৭১:৯; হিতো. ১৩:১২; উপ. ৭:৭) এ ছাড়া, খ্রিস্টান হিসেবে আমরা প্রত্যেকে এই বাস্তবতা সম্বন্ধেও অবগত আছি যে, আমাদের হৃদয় বঞ্চক আর তাই এটা হয়তো আমাদেরকে এমনকী ঈশ্বর আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা সত্ত্বেও, নিজেদেরকে দোষী বলে মনে করতে পরিচালিত করে। (যির. ১৭:৯; ১ যোহন ৩:২০) ঈশ্বরের দাসদের বিরুদ্ধে দিয়াবল মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে থাকে। আর যাদের চিন্তাভাবনা শয়তানের মতো, তারা হয়তো আমাদেরকে অবিশ্বাসী ইলীফসের মতো এই দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা কলুষিত করার চেষ্টা করে যে, ঈশ্বরের কাছে আমাদের কোনো মূল্য নেই। ইয়োবের দিনের মতো বর্তমানেও এটা মিথ্যা।—ইয়োব ৪:১৮, ১৯.

৪. এই প্রবন্ধে আমরা কী বিবেচনা করব?

৪ যিহোবা শাস্ত্রে এই বিষয়টা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তিনি সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন, যারা ‘মৃত্যুচ্ছায়ার উপত্যকা দিয়া গমন করে।’ (গীত. ২৩:৪) একটা যে-উপায়ে তিনি আমাদের সঙ্গে থাকেন, সেটা হল তাঁর বাক্যের মাধ্যমে। বাইবেল হল দৃঢ়ভাবে গেঁথে থাকা বিষয়গুলো বা “দুর্গসমূহ ভাঙ্গিয়া ফেলিবার জন্য ঈশ্বরের সাক্ষাতে পরাক্রমী,” যেগুলোর মধ্যে ভুল এবং নেতিবাচক ধারণাও রয়েছে। (২ করি. ১০:৪, ৫) তাই, আসুন আমরা বিবেচনা করি যে, এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার এবং তা বজায় রাখার ব্যাপারে কীভাবে আমরা বাইবেল ব্যবহার করতে পারি। এটা থেকে আপনি নিজে উপকার লাভ করতে ও সেইসঙ্গে অন্যদেরকেও উৎসাহিত করার বিভিন্ন উপায় খুঁজে পেতে পারেন।

এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার জন্য বাইবেল ব্যবহার করুন

৫. কোন পরীক্ষা আমাদেরকে এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখার জন্য সাহায্য করতে পারে?

৫ প্রেরিত পৌল এমন কিছু বিষয় সম্বন্ধে বর্ণনা করেছিলেন, যেগুলো হয়তো আমাদের এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার জন্য সাহায্য করতে পারে। তিনি করিন্থ মণ্ডলীকে এই জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন: “আপনাদের পরীক্ষা করিয়া দেখ, তোমরা বিশ্বাসে আছ কি না।” (২ করি. ১৩:৫) “বিশ্বাস” হল, বাইবেলে প্রকাশিত খ্রিস্টীয় বিশ্বাসের প্রধান অংশ। সেই বিশ্বাসের সঙ্গে যদি আমাদের কথা এবং কাজের মিল থাকে, তাহলে আমরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই এবং দেখাই যে, আমরা “বিশ্বাসে” আছি। তবে, আমাদের অবশ্যই খ্রিস্টীয় শিক্ষার সমস্ত দিকের সঙ্গে আমাদের জীবনকে তুলনা করে দেখতে হবে। কোন অংশটুকু আমরা অনুসরণ করব, সেটা আমরা নিজের ইচ্ছেমতো বেছে নিতে পারি না।—যাকোব ২:১০, ১১.

৬. ‘আমরা বিশ্বাসে আছি কি না,’ তা কেন আমাদের পরীক্ষা করে দেখা উচিত? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

৬ আপনি হয়তো এই পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে ইতস্তত বোধ করতে পারেন, বিশেষভাবে যদি এইরকমটা মনে করেন যে, এতে আপনি হয়তো ব্যর্থ হবেন। কিন্তু, আমাদের সম্বন্ধে আমাদের নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গির চেয়ে বরং যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গি আরও গুরুত্বপূর্ণ আর তাঁর চিন্তাভাবনা আমাদের চেয়ে অনেক উচ্চ। (যিশা. ৫৫:৮, ৯) তিনি তাঁর উপাসকদের নিন্দা করার জন্য নয় বরং তাদের মধ্যে উত্তম গুণাবলি খোঁজার এবং তাদের সাহায্য করার জন্য পরীক্ষা করে থাকেন। ‘আপনি বিশ্বাসে আছেন কি না,’ তা পরীক্ষা করে দেখার সময় যখন ঈশ্বরের বাক্য ব্যবহার করেন, তখন আপনি হয়তো আরও বেশি করে ঈশ্বর আপনাকে যেভাবে দেখেন, সেভাবে দেখতে পারবেন। এর ফলে এটা আপনাকে ঈশ্বরের কাছে আপনি মূল্যহীন এমন যেকোনো ধারণার পরিবর্তে বরং বাইবেলভিত্তিক এই আশ্বাস লাভ করতে সাহায্য করবে: আপনি যিহোবার চোখে মূল্যবান। এর ফলাফল এমন হতে পারে, যেন পর্দা খুলে আপনি একটা অন্ধকারময় ঘরে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে দিয়েছেন।

৭. কীভাবে আমরা বাইবেলের বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের উদাহরণ থেকে উপকার লাভ করতে পারি?

৭ আত্মপরীক্ষা করার একটা কার্যকরী উপায় হল, বাইবেলে উল্লেখিত বিশ্বস্ত লোকেদের উদাহরণ নিয়ে ধ্যান করা। তাদের পরিস্থিতি অথবা অনুভূতির সঙ্গে আপনার নিজের পরিস্থিতি বা অনুভূতির তুলনা করে দেখুন আর তাদের পরিস্থিতিতে থাকলে আপনি হয়তো কী করতেন, তা খুঁজে বের করুন। আসুন আমরা তিনটে উদাহরণ বিবেচনা করে দেখি, যেগুলো আপনাকে আপনি “বিশ্বাসে” আছেন কি না, তা পরীক্ষা করার এবং এরপর নিজের সম্বন্ধে এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার জন্য কীভাবে আপনি বাইবেল ব্যবহার করতে পারেন, তা দেখতে সাহায্য করবে।

দরিদ্র বিধবা

৮, ৯. (ক) দরিদ্র বিধবার পরিস্থিতি কেমন ছিল? (খ) সেই বিধবার হয়তো কোন ধরনের নেতিবাচক অনুভূতি ছিল?

৮ যিরূশালেমের মন্দিরে, যিশু একজন দরিদ্র বিধবাকে লক্ষ করেছিলেন। তার উদাহরণ আমাদেরকে নিজেদের সীমাবদ্ধতাগুলো সত্ত্বেও এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। (পড়ুন, লূক ২১:১-৪.) সেই বিধবার পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেখুন: তাকে স্বামী হারানোর দুঃখ সহ্য করতে হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, সেই সময়কার ধর্মীয় পরিস্থিতিও অনুকূলে ছিল না কারণ তখনকার দিনের ধর্মীয় নেতারা এইরকম দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করার পরিবর্তে বরং ‘বিধবাদের গৃহ গ্রাস করিত।’ (লূক ২০:৪৭) তাই, তিনি এতটাই দরিদ্র ছিলেন যে, একজন শ্রমিক মাত্র কয়েক মিনিটে যা আয় করতেন, তিনি কেবল সেটাই দান করতে পারতেন।

৯ সেই বিধবা যখন তার দুটো ক্ষুদ্র মুদ্রা নিয়ে মন্দিরের প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেছিলেন, তখন তার কেমন লেগেছিল, তা কল্পনা করার চেষ্টা করুন। তিনি কি এইরকম চিন্তা করেছিলেন যে, তার স্বামী বেঁচে থাকতে তিনি হয়তো যতটুকু দান করতে পারতেন, সেটার তুলনায় কত কমই-না দান করছেন? তার আগে অন্যদেরকে বিরাট অঙ্কের দান করতে দেখে তিনি কি অস্বস্তি বোধ করেছিলেন, হয়তো এইরকমটা ভেবেছিলেন যে, তার দান একেবারেই মূল্যহীন? সেই সময় তার যদি এইরকম অনুভূতি থেকেও থাকে, তবুও সত্য উপাসনার জন্য তিনি তার যথাসাধ্য করেছিলেন।

১০. কীভাবে যিশু দেখিয়েছিলেন যে, সেই বিধবা ঈশ্বরের কাছে মূল্যবান ছিলেন?

১০ যিশু দেখিয়েছিলেন যে, বিধবা এবং তার দান উভয়ই যিহোবার কাছে মূল্যবান ছিল। তিনি বলেছিলেন, সেই বিধবা “[ধনী ব্যক্তিদের] অপেক্ষা অধিক রাখিল।” তার দান অন্যদের দানের সঙ্গে মিলে গিয়েছিল কিন্তু এরপরও যিশু তাকে আলাদাভাবে প্রশংসা করেছিলেন। পরে যে-কোষাধ্যক্ষরা আসে, তারা জানতেই পারে না যে, সেই ক্ষুদ্র মুদ্রা দুটো এবং এর দাতা যিহোবার চোখে কতটা মূল্যবান ছিল। যাই হোক, যে-বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেটা হল ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গি, অন্য লোকেরা কী মনে করে অথবা এমনকী সেই বিধবা নিজেকে কীভাবে দেখেন, সেটা নয়। আপনি বিশ্বাসে আছেন কি না, তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য আপনি কি এই বিবরণ ব্যবহার করতে পারেন?

দরিদ বিধবা দান দেওয়ার জন্য মন্দিরে লাইনের মধ্যে অপেক্ষা করছন

দরিদ্র বিধবার উদাহরণ থেকে আপনি কোন শিক্ষা লাভ করতে পারেন?(৮-১০ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১১. বিধবার বিবরণ থেকে আপনি কি শিখতে পারেন?

১১ আপনার পরিস্থিতি হয়তো যিহোবাকে আপনি যা দিতে পারেন, সেটার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। বার্ধক্য অথবা শারীরিক দুর্বলতার কারণে কেউ কেউ হয়তো প্রচার কাজে অন্যদের চেয়ে কম সময় দিয়ে থাকে। তাদের কাজ রিপোর্ট করার মতো উপযুক্ত কি না, সেটা নিয়ে সন্দেহ করা কি তাদের পক্ষে যুক্তিযুক্ত? এমনকী আপনার যদি অনেক সীমাবদ্ধতা না-ও থাকে, তবুও আপনি হয়তো মনে করতে পারেন যে, ঈশ্বরের লোকেরা তাঁকে উপাসনা করার জন্য প্রতি বছর যে-ঘন্টা ব্যয় করে থাকে, সেটাতে আপনার অবদান খুবই সামান্য। কিন্তু, দরিদ্র বিধবার বিবরণ থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে, যিহোবা তাঁর জন্য করা সমস্ত কাজ লক্ষ করেন এবং সেগুলোকে মূল্যবান বলে মনে করেন, বিশেষভাবে তা যখন বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে থেকেও করা হয়। যিহোবার প্রতি আপনার গত বছরের উপাসনা নিয়ে চিন্তা করুন। আপনি তাঁকে যে-ঘন্টাগুলো প্রদান করেছেন, সেগুলোর মধ্যে এমনকী একটা ঘন্টা ব্যয় করার জন্যও কি আপনাকে বিশেষ ত্যাগস্বীকার করতে হয়েছিল? যদি তা-ই হয়, তাহলে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, সেই এক ঘন্টায় আপনি তাঁর জন্য যা করেছিলেন, সেটাকে তিনি মূল্যবান বলে মনে করেন। সেই দরিদ্র বিধবার মতো আপনি যখন যিহোবার সেবায় আপনার যথাসাধ্য করেন, তখন এটা বিশ্বাস করার জোরালো কারণ আপনার রয়েছে যে, আপনি “বিশ্বাসে” আছেন।

“আমার প্রাণ লও”

১২-১৪. (ক) নেতিবাচক অনুভূতি এলিয়ের ওপর কেমন প্রভাব ফেলেছিল? (খ) কেন হয়তো এলিয় এইরকম অনুভব করেছিলেন?

১২ ভাববাদী এলিয় যিহোবার প্রতি অনুগত ছিলেন এবং তার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। একবার তিনি এতটাই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন যে, তিনি এই বলে যিহোবার কাছে মৃত্যু যাচ্ঞা করেছিলেন: “এই যথেষ্ট; হে সদাপ্রভু, এখন আমার প্রাণ লও।” (১ রাজা. ১৯:৪) যাদের এইরকম হতাশা নেই, তারা হয়তো এলিয়ের প্রার্থনাকে নিছক ‘অসংলগ্ন বাক্য’ বলে উড়িয়ে দিতে পারে। (ইয়োব ৬:৩) কিন্তু, তার অনুভূতি বাস্তব ছিল। তবে, লক্ষ করুন যে, মৃত্যু যাচ্ঞা করার কারণে এলিয়কে অনুযোগ করার পরিবর্তে যিহোবা তাকে সাহায্য করেছিলেন।

১৩ কেন এলিয় এইরকম অনুভব করেছিলেন? এর কিছু সময় আগেই, তিনি ইস্রায়েলের মধ্যে এক চূড়ান্ত পরীক্ষায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যা প্রমাণ করেছিল যে, যিহোবাই সত্য ঈশ্বর। আর এই কারণে বালের ৪৫০ জন ভাববাদীকে হত্যা করা হয়েছিল। (১ রাজা. ১৮:৩৭-৪০) এলিয় মনে করেছিলেন, ঈশ্বরের লোকেরা বুঝি এবার বিশুদ্ধ উপাসনায় ফিরে আসবে কিন্তু এমনটা হয়নি। দুষ্ট রানি ঈষেবল এলিয়ের কাছে এই বার্তা পাঠান যে, তিনি তাকে হত্যা করার ব্যবস্থা করছেন। ভয় পেয়ে এলিয় কাছেই যিহূদার দক্ষিণে এক প্রান্তরে, এক অনুর্বর এবং জনশূন্য এলাকায় পালিয়ে গিয়েছিলেন।—১ রাজা. ১৯:২-৪.

১৪ একজন ভাববাদী হিসেবে এলিয় তার কাজকে আপাতদৃষ্টিতে ব্যর্থ বলে মনে করেছিলেন আর তিনি এটা নিয়েই গভীরভাবে চিন্তা করছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “আপন পিতৃপুরুষদের হইতে আমি উত্তম নহি।” তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, তিনি নিজেকে তার মৃত পূর্বপুরুষদের মতোই নিষ্ফল বলে মনে করছেন। আসলে, তিনি নিজের মান অনুযায়ী নিজেকে পরীক্ষা করেছিলেন এবং এই সিদ্ধান্তে এসেছিলেন যে, তিনি ব্যর্থ হয়েছেন আর তাই যিহোবা অথবা অন্য কারো কাছে তার কোনো মূল্য নেই।

১৫. কীভাবে ঈশ্বর এলিয়কে এই আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, তিনি তাকে মূল্যবান বলে মনে করেন?

১৫ কিন্তু, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এলিয়কে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখেছিলেন। এলিয় তখনও ঈশ্বরের চোখে মূল্যবান ছিলেন আর এই বিষয়ে তাকে আশ্বাস দেওয়ার জন্য যিহোবা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এলিয়কে শক্তিশালী করার জন্য ঈশ্বর একজন দূত পাঠিয়েছিলেন। এ ছাড়া, যিহোবা এলিয়কে দক্ষিণ দিক থেকে হোরেব পর্বতে যাওয়ার ৪০ দিন ভ্রমণ পথে টিকে থাকার জন্য খাদ্য ও জল দিয়েছিলেন। অধিকন্তু, কোনো ইস্রায়েলীয়ই যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত নয়, এলিয়ের এই ভুল ধারণাকে ঈশ্বর সদয়ভাবে সংশোধন করে দিয়েছিলেন। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ঈশ্বর এলিয়কে নতুন কার্যভার দিয়েছিলেন আর এলিয় তা গ্রহণ করেছিলেন। এলিয় যিহোবার সাহায্য থেকে উপকার লাভ করেছিলেন এবং নবশক্তি নিয়ে একজন ভাববাদী হিসেবে তার কাজে ফিরে গিয়েছিলেন।—১ রাজা. ১৯:৫-৮, ১৫-১৯.

১৬. কিছু উপায় কি, যেগুলোর মাধ্যমে হয়তো যিহোবা আপনাকে সাহায্য করেছেন?

১৬ এলিয়ের অভিজ্ঞতা আপনি বিশ্বাসে আছেন কি না, তা যাচাই করে দেখতে সাহায্য করবে এবং আপনাকে এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির দিকে পরিচালিত করবে। প্রথমত, যিহোবা যে-সমস্ত উপায়ে আপনাকে সাহায্য করেছেন, সেই সম্বন্ধে চিন্তা করে দেখুন। হতে পারে তাঁর একজন দাস, হয়তো কোনো প্রাচীন অথবা অন্যান্য পরিপক্ব খ্রিস্টান কি আপনাকে কোনো প্রয়োজনের সময় সাহায্য করেছে? (গালা. ৬:২) বাইবেল, আমাদের খ্রিস্টীয় প্রকাশনা এবং মণ্ডলীর সভাগুলোর দ্বারা আপনি কি আধ্যাত্মিকভাবে পুষ্টি লাভ করেছেন? পরবর্তী সময়ে আপনি যখন এইরকম কোনো একটা উপায়ে উপকার লাভ করেন, তখন আপনার সাহায্যের প্রকৃত উৎস সম্বন্ধে বিবেচনা করুন এবং তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রার্থনা করুন।—গীত. ১২১:১, ২.

১৭. যিহোবা তাঁর দাসদের কোন বিষয়টাকে মূল্যবান বলে মনে করেন?

১৭ দ্বিতীয়ত, মনে রাখবেন যে, এক নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতারণামূলক হতে পারে। ঈশ্বর আমাদের যেভাবে মূল্যায়ন করেন, সেটা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। (পড়ুন, রোমীয় ১৪:৪.) যিহোবা তাঁর প্রতি আমাদের বিশ্বস্ততাকে মূল্যবান বলে মনে করেন; তিনি আমাদেরকে আমাদের কাজের দ্বারা মূল্যায়ন করেন না। আর এলিয়ের মতো আপনিও যিহোবার জন্য অনেক কিছু সম্পাদন করেছেন, যা হয়তো আপনি নিজে উপলব্ধি করতে পারেন না। মণ্ডলীতে হয়তো এমন ব্যক্তিরা রয়েছে, যাদের ওপর আপনি ভালো প্রভাব ফেলেছেন ও সেইসঙ্গে আপনার প্রচেষ্টার কারণেই ক্ষেত্রের অনেক লোক সত্য জানতে পেরেছে।

১৮. যিহোবার কাছ থেকে প্রাপ্ত আপনার কার্যভার কীসের প্রমাণ দেয়?

১৮ সর্বোপরি, যিহোবার কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রতিটা কার্যভারকে এই প্রমাণ হিসেবে দেখুন যে, তিনি আপনার সঙ্গে রয়েছেন। (যির. ২০:১১) আপনার সেবাকে নিজের দৃষ্টিতে নিষ্ফল বলে মনে হওয়ায় অথবা কিছু আধ্যাত্মিক লক্ষ্যে পৌঁছানো অসম্ভব বলে মনে হওয়ায় আপনি হয়তো এলিয়ের মতো নিরুৎসাহিত হয়ে পড়তে পারেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও, আমাদের সকলের মতো আপনিও এখন এক বিরাট সুযোগে অংশ নিতে পারছেন আর তা হল, সুসমাচার প্রচার এবং ঈশ্বরের নাম বহন করা। বিশ্বস্ততা বজায় রাখুন। তাহলে এক অর্থে, যিশুর একটা নীতি গল্পের কথাগুলো আপনাকে বলা যেতে পারে: “তুমি আপন প্রভুর আনন্দের সহভাগী হও।”—মথি ২৫:২৩.

“দুঃখীর প্রার্থনা”

১৯. গীতসংহিতার ১০২ গীতের লেখক কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন?

১৯ গীতসংহিতা ১০২ গীতের লেখক হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তিনি শারীরিক অথবা আবেগগত কষ্টভোগ করার কারণে ‘দুঃখী’ ছিলেন এবং তার সমস্যাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করার মতো শক্তি তার ছিল না। (গীত. ১০২, শীর্ষলিখন) তার কথাগুলোর মাধ্যমে আমরা এই ইঙ্গিত পাই যে, তিনি কষ্ট, একাকিত্ব এবং ব্যক্তিগত অনুভূতির দ্বারা জর্জরিত ছিলেন। (গীত. ১০২:৩, ৪, ৬, ১১) তার মনে হয়েছিল যেন যিহোবা তাকে ছুড়ে ফেলে দিতে চেয়েছেন।—গীত. ১০২:১০.

২০. কীভাবে প্রার্থনা এমন একজন ব্যক্তিকে সাহায্য করতে পারে, যিনি নেতিবাচক চিন্তাভাবনার সঙ্গে লড়াই করছেন?

২০ তা সত্ত্বেও, গীতরচক তখনও যিহোবার প্রশংসা করার জন্য তার জীবনকে ব্যবহার করতে পারতেন। (পড়ুন, গীতসংহিতা ১০২:১৯-২১.) গীতসংহিতার ১০২ গীতে আমরা যেমন দেখি যে, এমনকী বিশ্বাসে রয়েছে এমন ব্যক্তিরাও কষ্ট ভোগ করতে এবং কোনো কিছুর ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হতে পারে। গীতরচক এমন অনুভব করেছিলেন “যেন চটক ছাদের উপরে একাকী রহিয়াছে,” এমন যেন তার চারপাশে শুধু সমস্যাই রয়েছে। (গীত. ১০২:৭) আপনি যদি কখনো এইরকমটা বোধ করে থাকেন, তাহলে গীতরচকের মতো হৃদয় উজাড় করে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করুন। দুঃখীর প্রার্থনা অর্থাৎ আপনার প্রার্থনা আপনাকে নেতিবাচক চিন্তাভাবনার সঙ্গে লড়াই করার জন্য সাহায্য করতে পারে। যিহোবা প্রতিজ্ঞা করেন যে, “তিনি দীনহীনদের প্রার্থনার দিকে ফিরিয়াছেন, তাহাদের প্রার্থনা তুচ্ছ করেন নাই।” (গীত. ১০২:১৭) এই প্রতিজ্ঞার ওপর আস্থা রাখুন।

২১. নেতিবাচক অনুভূতির সঙ্গে লড়াই করছেন এমন একজন ব্যক্তি হয়তো কীভাবে আরও ইতিবাচক এক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে পারেন?

২১ গীতসংহিতার ১০২ গীত এও দেখায় যে, কীভাবে আপনি আরও ইতিবাচক এক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে পারেন। নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিয়ে যিহোবার সঙ্গে তার সম্পর্কের ওপর মনোযোগ দেওয়ার মাধ্যমে গীতরচক তা করতে পেরেছিলেন। (গীত. ১০২:১২, ২৭) এটা জেনে তিনি সান্ত্বনা লাভ করেছিলেন যে, পরীক্ষার সময় তাঁর লোকেদের টিকিয়ে রাখার জন্য যিহোবা সবসময়ই তাদের সঙ্গে থাকবেন। তাই, নেতিবাচক অনুভূতির কারণে আপনি যদি সাময়িকভাবে ঈশ্বরের সেবায় যতটুকু করতে চান, তা করতে না পারেন, তাহলে সেটা নিয়ে প্রার্থনা করুন। কেবল আপনার দুর্দশা থেকে স্বস্তি পাওয়ার জন্যই নয় বরং ‘সদাপ্রভুর নাম প্রচারিত হইবার’ জন্যও ঈশ্বরের কাছে যাচ্ঞা করুন।—গীত. ১০২:২০, ২১.

২২.  কীভাবে আমরা প্রত্যেকে যিহোবাকে সন্তুষ্ট করতে পারি?

২২ হ্যাঁ, এই বিষয়টা প্রমাণ করার জন্য আমরা বাইবেল ব্যবহার করতে পারি যে, আমরা বিশ্বাসে রয়েছি ও সেইসঙ্গে আমরা যিহোবার কাছে মূল্যবান। নিশ্চিতভাবেই, বর্তমান বিধিব্যবস্থায় আমরা হয়তো সমস্ত নেতিবাচক অনুভূতি এবং নিরুৎসাহিতাকে দূর করতে পারব না। তার পরও, আমরা প্রত্যেকে যিহোবাকে সন্তুষ্ট করতে এবং বিশ্বস্তভাবে তাঁর সেবা চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে পরিত্রাণ লাভ করতে পারি।—মথি ২৪:১৩.

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার