ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w15 ৭/১৫ পৃষ্ঠা ৩-৬
  • তারা নিজেদেরকে স্বেচ্ছায় বিলিয়ে দিয়েছিলেন​—রাশিয়ায়

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • তারা নিজেদেরকে স্বেচ্ছায় বিলিয়ে দিয়েছিলেন​—রাশিয়ায়
  • ২০১৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • ইচ্ছুক ভাইয়েরা মণ্ডলীকে শক্তিশালী করার জন্য সাহায্য করেন
  • উদ্যোগী বোনেরা শস্যচ্ছেদনের কাজে সাহায্য করেন
  • পরিবারগুলো সাহায্য করে এবং আশীর্বাদ লাভ করে
  • “আমার একমাত্র আপশোস”
  • ‘শিশুদের মুখ হইতে’ উৎসাহ
    ২০১২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
২০১৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w15 ৭/১৫ পৃষ্ঠা ৩-৬

তারা নিজেদেরকে স্বেচ্ছায় বিলিয়ে দিয়েছিলেন​—রাশিয়ায়

উনিশ-শো একানব্বই সালে রাশিয়ায় যিহোবার সাক্ষিদের কাজের উপর বহুবছর ধরে চলতে থাকা নিষেধাজ্ঞা যখন তুলে নেওয়া হয়েছিল এবং সরকারের কাছ থেকে তাদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল, তখন সাক্ষিরা অনেক আনন্দিত হয়েছিল। সেই সময়ের সাক্ষিদের সংখ্যা যে দশ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে এখন প্রায় ১,৭০,০০০ হয়ে যাবে, তা অল্প লোকই কল্পনা করতে পেরেছিল! এদের মধ্যে ছিলেন সেই কঠোর পরিশ্রমী রাজ্য প্রচারকরা, যারা রাশিয়ায় আধ্যাত্মিক শস্যচ্ছেদনের কাজে সাহায্য করার জন্য অন্য দেশ থেকে সেখানে চলে এসেছিলেন। (মথি ৯:৩৭, ৩৮) আসুন আমরা তাদের কয়েক জনের সঙ্গে পরিচিত হই।

ইচ্ছুক ভাইয়েরা মণ্ডলীকে শক্তিশালী করার জন্য সাহায্য করেন

একটা গ্লোবে রাশিয়ার মানচিত্র তুলে ধরা হয়েছ

যে-সময়ে রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল, সেইসময়ে গ্রেট ব্রিটেনের ম্যাথিউয়ের বয়স ছিল ২৮ বছর। সেই বছর সম্মেলনের একটা বক্তৃতায় তুলে ধরা হয়েছিল, পূর্ব ইউরোপের মণ্ডলীগুলোতে সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে। বক্তা উদাহরণ হিসেবে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের একটা মণ্ডলীর কথা উল্লেখ করেছিলেন। সেই মণ্ডলীতে কেবল একজন পরিচারক দাস রয়েছেন এবং কোনো প্রাচীন নেই। অথচ প্রকাশকরা কয়েক-শো বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করছিল! ম্যাথিউ বলেন, “সেই বক্তৃতার পর, আমার মনে ঘুরে-ফিরে শুধু রাশিয়ার চিন্তাই আসতে থাকে আর তাই সেখানে যাওয়ার বিষয়ে আমার আকাঙ্ক্ষা জানিয়ে আমি যিহোবার কাছে সুনির্দিষ্টভাবে প্রার্থনা করি।” তিনি কিছু টাকাপয়সা জমিয়েছিলেন, তার বেশিরভাগ জিনিসপত্র বিক্রি করে দিয়েছিলেন এবং ১৯৯২ সালে রাশিয়ায় চলে এসেছিলেন। তারপর কী হয়েছিল?

ম্যাথিউ শাখা অফিসে কাজ করছন

ম্যাথিউ

ম্যাথিউ বলেন, “ভাষা শেখা ছিল একটা বড়ো প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর এই কারণে আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা আমার জন্য সহজ ছিল না।” ঘর খুঁজে পাওয়া ছিল আরেকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা। “স্বল্প সময়ের নোটিশে আমাকে যে কত বার ঘর পালটাতে হয়েছে, তা আমার মনে নেই।” এই প্রাথমিক বাধাগুলো সত্ত্বেও, ম্যাথিউ বলেন: “রাশিয়ায় চলে আসার সিদ্ধান্ত ছিল আমার জীবনের সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত।” তিনি ব্যাখ্যা করেন: “এখানে সেবা করার মাধ্যমে আমি যিহোবার উপর আরও বেশি নির্ভর করতে শিখেছি এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর নির্দেশনা উপলব্ধি করতে পেরেছি।” পরবর্তী সময়ে ম্যাথিউকে একজন প্রাচীন ও বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল আর এখন তিনি সেন্ট পিটার্সবার্গের কাছাকাছি শাখা অফিসে সেবা করছেন।

হিরোও ১৯৯৯ সালে ২৫ বছর বয়সে, জাপানে মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েট হন। সেই স্কুলের একজন নির্দেশক তাকে বিদেশি এলাকায় সেবা করার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। হিরোও জানতে পেরেছিলেন, রাশিয়ায় রাজ্য প্রকাশকদের বেশি প্রয়োজন আর তাই তিনি রাশিয়ান ভাষা শিখতে শুরু করেছিলেন। এ ছাড়া, তিনি আরও একটা ব্যাবহারিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। “আমি ৬ মাসের জন্য রাশিয়ায় গিয়েছিলাম” তিনি বলেন। “যেহেতু সেখানে প্রচণ্ড শীত পড়ে, তাই এই শীত আমি সহ্য করতে পারব কি না, তা দেখার জন্য আমি নভেম্বর মাসে সেখানে গিয়েছিলাম।” সেই শীতের সঙ্গে মোকাবিলা করার পর, তিনি জাপানে ফিরে যান এবং খুব সাধারণ জীবনযাপন করেন, যেন যথেষ্ট টাকাপয়সা জমাতে পারেন এবং রাশিয়ায় ফিরে গিয়ে আরও দীর্ঘসময় থাকতে পারেন।

হিরোও এবং ভয়েতলানা একজন ব্যক্তির কাছ পচার করছন

হিরোও এবং স্ভিয়েতলানা

হিরোও ১২ বছর ধরে রাশিয়ায় বাস করছেন এবং এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন মণ্ডলীতে সেবা করেছেন। কখনো কখনো, ১০০-রও বেশি প্রকাশকের যত্ন নেওয়ার জন্য তিনি একাই প্রাচীন হিসেবে সেবা করেছেন। একটা মণ্ডলীতে, তিনি প্রতি সপ্তাহে পরিচর্যা সভার বেশিরভাগ অংশ ও সেইসঙ্গে ঐশিক পরিচর্যা বিদ্যালয়, প্রহরীদুর্গ অধ্যয়ন পরিচালনা করতেন। এ ছাড়া, সেই সময়ে তিনি পাঁচটা দলে মণ্ডলীর বই অধ্যয়নও পরিচালনা করতেন। আর সেইসঙ্গে তাকে অনেক পালকীয় সাক্ষাৎ করতে হতো। অতীতের দিনগুলোর কথা মনে করে হিরোও বলেন: “ভাই-বোনদের আধ্যাত্মিকভাবে শক্তিশালী হতে সাহায্য করার মাধ্যমে আমি অনেক আনন্দ লাভ করেছি।” যেখানে বেশি প্রয়োজন, সেখানে সেবা করার ফলে তার মধ্যে কেমন পরিবর্তন এসেছে? তিনি বলেন: “রাশিয়ায় আসার আগে থেকে আমি একজন প্রাচীন ও অগ্রগামী হিসেবে কাজ করতাম, কিন্তু এখানে আসার পর আমার মনে হয়েছে আমি যিহোবার সঙ্গে পুরোপুরি নতুন এক সম্পর্ক গড়ে তুলেছি। আর আমার জীবনের সমস্ত দিকে আমি যিহোবার উপর আরও বেশি নির্ভর করতে শিখেছি।” ২০০৫ সালে হিরোও স্ভিয়েতলানাকে বিয়ে করেন আর এখন তারা একসঙ্গে অগ্রগামী হিসেবে সেবা করছেন।

মেরিনা ও ম্যাথিউর সগ মাইকেল এবং অল্‌গা

মাইকেল এবং অল্‌গার সঙ্গে মেরিনা ও ম্যাথিউ

ম্যাথিউ এবং তার ভাই মাইকেল, কানাডা থেকে এসেছেন। তাদের বয়স যথাক্রমে ৩৪ এবং ২৮ বছর। তারা দু-জনই রাশিয়ায় বেড়াতে এসেছিলেন আর এটা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন যে, অনেক আগ্রহী ব্যক্তি সভাগুলোতে যোগ দিচ্ছে অথচ তাদের অধ্যয়ন পরিচালনা করার জন্য বেশি ভাই নেই। ম্যাথিউ বলেন: “আমি যে-মণ্ডলীতে গিয়েছিলাম, সেখানে উপস্থিতির সংখ্যা ছিল ২০০ জন, কিন্তু সভার সমস্ত বিষয় একজন বয়স্ক প্রাচীন এবং একজন অল্পবয়সি পরিচারক দাস পরিচালনা করছিলেন। এইরকম পরিস্থিতি দেখে আমি সেই ভাইদের সাহায্য করার জন্য এখানে আসতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম।” তিনি ২০০২ সালে রাশিয়ায় চলে আসেন।

এর চার বছর পর, মাইকেল রাশিয়ায় চলে আসেন আর দেখতে পান, তখনও এখানে অনেক ভাইয়ের প্রয়োজন। তিনি যেহেতু একজন পরিচারক দাস ছিলেন, তাই তাকে মণ্ডলীর হিসাব, সাহিত্য বিভাগ ও ক্ষেত্রের এলাকা দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া, তাকে সেইসমস্ত কাজও করতে বলা হয়েছিল, যেগুলো সাধারণত মণ্ডলীর সচিব করে থাকেন। আর সেইসঙ্গে তাকে জনসাধারণের উদ্দেশে বক্তৃতা দিতে এবং সম্মেলনের বিভিন্ন বিষয় দেখাশোনা করতে ও কিংডম হল নির্মাণকাজে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছিল। আসলে, বিভিন্ন মণ্ডলীতে এখনও অনেক সাহায্য প্রয়োজন। একসঙ্গে অনেক দায়িত্ব পালন করা কঠিন। তবে মাইকেল, যিনি এখন প্রাচীন হিসেবে সেবা করছেন, তিনি বলেন: “ভাইদের সাহায্য করতে পেরে আমি অনেক পরিতৃপ্তি লাভ করছি। এটাই আমার জীবন উপভোগ করার সর্বোত্তম উপায়!”

ইতিমধ্যে, ম্যাথিউ মেরিনাকে এবং মাইকেল অল্‌গাকে বিয়ে করেন। এই দুই দম্পতি ও সেইসঙ্গে আরও অনেক ইচ্ছুক সাক্ষি বৃদ্ধিরত মণ্ডলীগুলোকে সাহায্য করছে।

উদ্যোগী বোনেরা শস্যচ্ছেদনের কাজে সাহায্য করেন

তাতিয়ানা

তাতিয়ানা

১৯৯৪ সালে চেক প্রজাতন্ত্র, পোল্যান্ড ও স্লোভাকিয়া থেকে ছয় জন বিশেষ অগ্রগামী ভাই-বোন ইউক্রেনে এসে তাতিয়ানার মণ্ডলীতে সেবা করতে শুরু করেন। তাতিয়ানার বয়স তখন ১৬ বছর। তিনি সেই ভাই-বোনদের কথা মনে করে বলেন: “এই উদ্যোগী অগ্রগামীদের কাছে সহজেই যাওয়া যেত। তারা দয়ালু ছিলেন এবং বাইবেল শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে দক্ষ ছিলেন।” তাদের আত্মত্যাগমূলক মনোভাবের জন্য যিহোবা যেভাবে তাদের আশীর্বাদ করেছিলেন, তা দেখে তিনি চিন্তা করেছিলেন, ‘আমিও তাদের মতো হতে চাই।’

অগ্রগামীদের উদাহরণ দেখে উৎসাহিত হয়ে, তাতিয়ানা তার স্কুলের ছুটির সময়ে অন্যদের সঙ্গে ইউক্রেন ও বিলারাসের প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে প্রচার করতেন, যেখানে আগে সাক্ষিরা প্রচার করেনি। প্রচার করার উদ্দেশে সেইসমস্ত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তার অনেক ভালো লেগেছিল আর তাই তিনি তার পরিচর্যা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করে রাশিয়ায় চলে এসেছিলেন। প্রথমে, তিনি অল্পসময়ের জন্য একজন বোনের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন, যে-বোন অন্য দেশ থেকে এখানে এসেছেন। তিনি এটাও দেখতে চেয়েছিলেন, অগ্রগামী কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি কোনো কাজ খুঁজে পাবেন কি না। পরে, ২০০০ সালে তিনি রাশিয়ায় চলে আসেন। এই পরিবর্তন করা কি সহজ ছিল?

তাতিয়ানা বলেন: “আমার পক্ষে পুরো আ্যপার্টমেন্ট ভাড়া নেওয়া সম্ভব ছিল না, তাই আমাকে অন্যদের আ্যপার্টমেন্টে একটা রুম ভাড়া নিতে হয়েছিল। থাকার এই ব্যবস্থা অনেক সহজ ছিল না। আমার মাঝে মাঝে দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছা হতো। কিন্তু যিহোবা আমাকে সবসময় এটা বুঝতে সাহায্য করেছেন যে, আমার সেবা চালিয়ে গেলে আমি উপকৃত হব।” তাতিয়ানা এখন একজন মিশনারি হিসেবে রাশিয়ায় সেবা করছেন। তিনি শেষে বলেন: “এত বছর ধরে নিজের দেশ থেকে দূরে এসে সেবা করার মাধ্যমে আমি চমৎকার অভিজ্ঞতা ও অনেক বন্ধু লাভ করেছি। সবচেয়ে বড়ো বিষয় হল, এই সময়ের মধ্যে আমি আমার বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করতে পেরেছি।”

মাসাকো এবং অন্য একজন বোন একজন মহিলাকে বাইবেলের পদ দেখাচ্ছন

মাসাকো

জাপান থেকে আসা মাসাকোর বয়স এখন ৫০-এর কোঠায়। তিনি সবসময় একজন মিশনারি হিসেবে সেবা করতে চেয়েছেন। তবে স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে তা করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তা সত্ত্বেও, তার স্বাস্থ্য যখন কিছুটা ভালো হয়েছিল, তখন তিনি শস্যচ্ছেদনের কাজে সাহায্য করার জন্য রাশিয়ায় চলে এসেছিলেন। উপযুক্ত থাকার জায়গা ও স্থায়ী চাকরি পাওয়া যদিও কঠিন ছিল কিন্তু তারপরও তিনি জাপানি ভাষা শিক্ষা দেওয়ার এবং একটা আ্যপার্টমেন্টে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করার মাধ্যমে অগ্রগামী সেবা চালিয়ে গিয়েছিলেন। কী তাকে প্রচার কাজ চালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল?

রাশিয়ায় তার ১৪ বছরের সেবা স্মরণ করে মাসাকো বলেন: “প্রচার কাজে আমি যে-আনন্দ লাভ করি, তা যেকোনো কষ্টের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়। রাজ্য প্রকাশকদের বেশি প্রয়োজন এমন এলাকায় গিয়ে প্রচার করা, প্রাণবন্ত ও রোমাঞ্চকর এক জীবনের দিকে পরিচালিত করে।” তিনি আরও বলেন: “যিহোবা বছরের পর বছর ধরে যেভাবে আমাকে খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান জুগিয়ে এসেছেন, তা সরাসরি দেখা, আমার কাছে আধুনিক দিনের এক অলৌকিক কাজ বলে মনে হয়।” রাশিয়ায় যেখানে বেশি প্রয়োজন সেখানে সেবা করার পাশাপাশি বোন মাসাকো কিরগিজস্তানেও শস্যচ্ছেদনের কাজ করেছেন। এ ছাড়া, তিনি ইংরেজি, চাইনিজ ও উয়িগুর ভাষার দলে সাহায্য করেছেন। এখন তিনি সেন্ট পিটার্সবার্গে একজন অগ্রগামী হিসেবে সেবা করছেন।

পরিবারগুলো সাহায্য করে এবং আশীর্বাদ লাভ করে

ইংগা এবং মিখাইল একজন মহিলার কাছ পচার করছন

ইংগা এবং মিখাইল

অনেক পরিবার, অর্থনৈতিক মন্দার কারণে প্রায়ই অন্য দেশে চলে যায়, যাতে তারা তাদের বস্তুগত চাহিদা আরও ভালোভাবে পূরণ করতে পারে। কিন্তু কিছু পরিবার, প্রাচীন কালের অব্রাহাম ও সারাকে অনুকরণ করে অন্য দেশে চলে যায়, যাতে তারা আধ্যাত্মিক লক্ষ্য অনুধাবন করতে পারে। (আদি. ১২:১-৯) মিখাইল ও ইংগার কথা বিবেচনা করুন। এই দম্পতি ২০০৩ সালে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় চলে এসেছিলেন। খুব শীঘ্রই তারা এমন লোকেদের খুঁজে পেয়েছিলেন, যারা বাইবেলের সত্য অন্বেষণ করছিল।

মিখাইল বলেন: “একবার আমরা এমন একটা এলাকায় প্রচার করেছিলাম, যেখানে আগে কখনো প্রচার করা হয়নি। একজন বয়স্ক ব্যক্তি দরজা খুলে আমাদের এই কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘আপনারা কি প্রচারক?’ উত্তরে আমরা হ্যাঁ বলার পর, তিনি বলেছিলেন: ‘আমি জানতাম আপনারা কোনো একদিন এখানে আসবেন। যিশুর কথা কখনো ব্যর্থ হতে পারে না।’ এরপর সেই ব্যক্তি মথি ২৪:১৪ পদ উদ্ধৃতি করেছিলেন।” মিখাইল আরও বলেন: “আর সেই এলাকায় আমরা ১০ জন ব্যাপটিস্ট মহিলার একটা দল খুঁজে পেয়েছিলাম। এই আন্তরিক মহিলারা সত্য জানার জন্য তৃষ্ণার্ত ছিলেন। তাদের কাছে অনন্তকাল বেঁচে থাকুন বইটা ছিল আর তারা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই বইটা ব্যবহার করে বাইবেল অধ্যয়ন করতেন। আমরা কয়েক ঘন্টা ধরে তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলাম ও তাদের সঙ্গে রাজ্যের গান গেয়েছিলাম আর শেষে একসঙ্গে রাতের খাবার উপভোগ করেছিলাম। সেই সাক্ষাৎ ছিল আমার জীবনের সুন্দর স্মৃতিগুলোর মধ্যে একটা।” মিখাইল ও ইংগা এই বিষয়ে একমত হন যে, রাজ্যের প্রকাশকদের বেশি প্রয়োজন এমন এলাকায় সেবা করা তাদেরকে যিহোবার আরও নিকটবর্তী করেছে, লোকেদের প্রতি তাদের ভালোবাসা আরও গভীর করেছে এবং তাদেরকে অত্যন্ত পরিতৃপ্তিদায়ক এক জীবন এনে দিয়েছে। এখন তারা সীমার কাজ করছেন।

অক্‌সানা, আলিকসিয়ে এবং ইউরিই

অক্‌সানা, আলিকসিয়ে ও ইউরিই

ইউক্রেন থেকে আসা ইউরিই ও অক্‌সানার কথা বিবেচনা করুন, যাদের বয়স এখন ৩০-এর কোঠার মাঝামাঝি। এই দম্পতি ২০০৭ সালে তাদের সন্তান আলিকসিয়েকে নিয়ে রাশিয়ার শাখা অফিস দেখতে এসেছিলেন, যার বয়স এখন ১৩ বছর। তারা সেখানে রাশিয়ার একটা মানচিত্র দেখতে পান এবং লক্ষ করেন, রাশিয়ায় এখনও এমন অনেক এলাকা রয়েছে, যেখানে প্রচার করা হয়নি। অক্‌সানা বলেন: “এই মানচিত্র দেখার পর, আমরা আরও ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিলাম, এখানে রাজ্য প্রকাশকদের অনেক বেশি প্রয়োজন। এই বিষয়টা আমাদেরকে রাশিয়ায় চলে আসার জন্য সংকল্পবদ্ধ হতে সাহায্য করেছিল।” সেইসঙ্গে আর কোন বিষয় তাদেরকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে? ইউরিই বলেন: “আমাদের প্রকাশনা থেকে বিভিন্ন প্রবন্ধ পড়ে যেমন ‘আপনি কি বিদেশে গিয়ে কাজ করতে পারেন?’ শিরোনামের প্রবন্ধ পড়ে আমরা অনেক সাহায্য পেয়েছি।a রাশিয়ার শাখা অফিস আমাদের যে-এলাকায় যেতে বলেছিল, আমরা সেই এলাকা দেখার জন্য এবং সেখানে ঘর ও চাকরি খোঁজার জন্য গিয়েছিলাম।” ২০০৮ সালে তারা রাশিয়ায় চলে আসেন।

প্রথমদিকে, কাজ পাওয়া অনেক কঠিন ছিল এবং অনেক বার তাদেরকে আ্যপার্টমেন্ট পরিবর্তন করতে হয়েছিল। ইউরিই বলেন: “আমরা সবসময় প্রার্থনা করতাম যেন আমরা নিরুৎসাহিত না হই। তারপর, যিহোবার সাহায্যের উপর নির্ভর করে আমরা প্রচার কাজ চালিয়ে গিয়েছিলাম। আমরা যখন রাজ্যের বিষয়কে প্রথমে রাখি, তখন যিহোবা কীভাবে আমাদের যত্ন নেন, তা আমরা বুঝতে পেরেছিলাম। এই সেবা আমাদের পরিবারকে আধ্যাত্মিকভাবে শক্তিশালী করেছে এবং পরস্পরের প্রতি আরও ঘনিষ্ঠ হতে সাহায্য করেছে।” (মথি ৬:২২, ৩৩) যেখানে বেশি প্রয়োজন, সেখানে সেবা করা অল্পবয়সি আলিকসিয়েকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে? অক্‌সানা বলেন, “এই সেবা তার জন্য অনেক উত্তম ফল নিয়ে এসেছে। সে নিজেকে যিহোবার কাছে উৎসর্গ করেছে এবং নয় বছর বয়সে বাপ্তিস্ম নিয়েছে। রাজ্যের প্রকাশকদের অনেক প্রয়োজন, তা দেখে সে স্কুলের ছুটির সময় সহায়ক অগ্রগামীর কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত হয়েছে। পরিচর্যার জন্য তার ভালোবাসা ও উদ্যোগ দেখে আমরা অনেক আনন্দিত।” এখন, ইউরিই ও অক্‌সানা বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে সেবা করছেন।

“আমার একমাত্র আপশোস”

শস্যচ্ছেদনের কর্মীদের মন্তব্য আমাদের স্পষ্টভাবে বুঝতে সাহায্য করে, পরিচর্যা বৃদ্ধি করার উদ্দেশে অন্য জায়গায় যাওয়ার জন্য আপনাকে যিহোবার উপর পূর্ণ নির্ভরতা দেখাতে হবে। আসলে, যেখানে বেশি প্রয়োজন, সেখানে গিয়ে যারা সেবা করেন, তারা তাদের নতুন জায়গায় বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হন। কিন্তু তারপরও, রাজ্যের বার্তার প্রতি সাড়া দেয় এমন লোকেদের কাছে সুসমাচার জানিয়ে তারা অনেক আনন্দ লাভ করেন। আপনি কি রাজ্যের প্রকাশকদের বেশি প্রয়োজন এমন এলাকায় গিয়ে শস্য সংগ্রহ করার কাজে সাহায্য করতে পারেন? আপনি যদি তা করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে খুব শীঘ্র আপনিও ইউরিইর মতো অনুভব করবেন। যেখানে বেশি প্রয়োজন, সেখানে সেবা করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে ইউরিই এভাবে বলেছিলেন: “আমার একমাত্র আপশোস হল, কেন আমি এই কাজ আরও আগে শুরু করিনি।”

a ১৯৯৯ সালের ১৫ অক্টোবর প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ২৩-২৭ পৃষ্ঠা দেখুন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার