ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w16 নভেম্বর পৃষ্ঠা ২৬-৩০
  • তারা মিথ্যা ধর্ম থেকে স্বাধীন হয়েছিল

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • তারা মিথ্যা ধর্ম থেকে স্বাধীন হয়েছিল
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • “বাবিলের পতন”
  • প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ঈশ্বরের লোকেদের উদ্যোগ
  • কিছু বিষয় সংশোধন করা প্রয়োজন ছিল
  • অবশেষে ঈশ্বরের লোকেরা স্বাধীন হয়েছিল!
  • তাদের অন্ধকার থেকে আহ্বান করা হয়েছিল
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
  • ১৯১৮​—⁠এক-শো বছর আগে
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৮
  • ১৯১৯—এক-শো বছর আগে
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৯
  • পাঠকদের কাছ থেকে প্রশ্ন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
w16 নভেম্বর পৃষ্ঠা ২৬-৩০
একজন বাইবেল ছাত্র জনসাধারণের সামনে গির্জা থেকে নিজের নাম পত্যাহারের চিঠি পড়ে শোনাচ্ছন

তারা মিথ্যা ধর্ম থেকে স্বাধীন হয়েছিল

“হে আমার প্রজাগণ, উহা হইতে বাহিরে আইস।”—প্রকা. ১৮:৪.

গান সংখ্যা: ১০, ৪৫

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

  • প্রাথমিক বাইবেল ছাত্ররা মহতী বাবিলের বিষয়ে কী করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিল?

  • কেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ঈশ্বরের লোকেদের কিছু বিষয় সংশোধন করা প্রয়োজন ছিল আর এক্ষেত্রে কোন বিষয়টা ধরে নেওয়া ভুল হবে?

  • কখন অভিষিক্ত ব্যক্তিরা বাবিলের বন্দিত্ব থেকে স্বাধীন হয়েছিলেন?

১. ঈশ্বরের লোকেরা যে মহতী বাবিলের বন্দিত্ব থেকে স্বাধীন হবে, তা আমরা কীভাবে জানতে পারি আর আমরা কোন প্রশ্নগুলোর উত্তর আলোচনা করব?

আগের প্রবন্ধে আমরা জানতে পেরেছি, বিশ্বস্ত খ্রিস্টানরা মহতী বাবিলের বন্দিত্বে চলে গিয়েছিল। তবে সুসমাচার হল, তারা চিরকাল বন্দি অবস্থায় থাকবে না। আমরা তা জানি কারণ বাইবেলে যিহোবা তাঁর লোকেদেরকে মিথ্যা ধর্মের বিশ্ব সাম্রাজ্য থেকে ‘বাহিরে আসিতে’ আদেশ দেন। (পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ১৮:৪.) এটা প্রমাণ দেয়, খ্রিস্টানরা মহতী বাবিলের কাছ থেকে স্বাধীন হবে। তারা কখন স্বাধীন হয়েছে, তা জানার ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত আগ্রহী! কিন্তু প্রথমে, আমাদের এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে হবে: ১৯১৪ সালের আগেই বাইবেল ছাত্ররা মহতী বাবিলের বিষয়ে কী করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিল? প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে আমাদের ভাই-বোনেরা প্রচার কাজে কতটা উদ্যোগী ছিল? ঈশ্বরের লোকেদের সংশোধনের প্রয়োজন ছিল বলেই কি তারা সেই সময়ে বাবিলের বন্দিত্বে চলে গিয়েছিল?

“বাবিলের পতন”

২. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগেই প্রাথমিক বাইবেল ছাত্ররা কী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল?

২ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) অনেক বছর আগেই, চার্লস্‌ টেজ রাসেল ও সেইসঙ্গে অন্যান্য বাইবেল ছাত্ররা বুঝতে পেরেছিলেন, খ্রিস্টীয়জগৎ বাইবেল থেকে সত্য শিক্ষা দিচ্ছিল না। তাই তারা মিথ্যা ধর্মের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখতে চাননি। এমনকী ১৮৭৯ সালে জায়ন্স ওয়াচ টাওয়ার বলেছিল, যে-সমস্ত গির্জা নিজেদেরকে খ্রিস্টের অনুগত কনে বলে দাবি করে অথচ সরকারকে সমর্থন করে, তারা আসলে মহতী বাবিলের অংশ, যেটাকে বাইবেলে বেশ্যা বলা হয়েছে।—পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ১৭:১, ২.

৩. বাইবেল ছাত্ররা যে আর মিথ্যা ধর্মের অংশ হিসেবে থাকতে চায়নি, তা দেখানোর জন্য তারা কী করেছিল? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

৩ বিশ্বস্ত পুরুষ ও নারীরা জানত, তারা যদি মিথ্যা ধর্মকে সমর্থন করে চলে, তা হলে ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করবেন না। তাই, তাদের মধ্যে অনেকে নিজ নিজ গির্জায় চিঠি পাঠিয়ে বলেছিল, তারা আর সেখানকার সদস্য হিসেবে থাকতে চায় না। এমনকী কেউ কেউ পুরো গির্জার সামনে জোরে জোরে তাদের চিঠি পড়েছিল। যেখানে চিঠি পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি, সেখানে তারা গির্জার প্রত্যেক সদস্যকে একটা করে চিঠি পাঠিয়েছিল। বাইবেল ছাত্ররা এটা স্পষ্ট করে দিয়েছিল, তারা মিথ্যা ধর্মের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্ক রাখতে চায় না! এই ঘটনা যদি আরও আগে ঘটত, তা হলে এই পদক্ষেপের জন্য তাদের হয়তো মৃত্যুবরণ করতে হতো। কিন্তু ১৮৭০ সালের দিকে, অনেক দেশের সরকার গির্জাগুলোকে আর আগের মতো সমর্থন করত না। তখন লোকেরা বাইবেল সম্বন্ধে স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারত আর এমনকী গির্জার সঙ্গে দ্বিমতও পোষণ করতে পারত।

৪. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে বাইবেল ছাত্ররা মহতী বাবিলকে কীভাবে দেখেছিল? ব্যাখ্যা করুন।

৪ বাইবেল ছাত্ররা বুঝতে পেরেছিল, তারা যে মিথ্যা ধর্মকে সমর্থন করছে না, তা শুধু তাদের পরিবারের সদস্য, ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব ও গির্জার সদস্যদের কাছে বলা যথেষ্ট নয়। তারা পুরো বিশ্বকে জানাতে চেয়েছিল, মহতী বাবিল হল এক ধর্মীয় বেশ্যা! তাই, ১৯১৭ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ১৯১৮ সালের প্রথম দিকে, হাজার হাজার বাইবেল ছাত্র উদ্যোগের সঙ্গে একটা ইংরেজি ট্র্যাক্টের ১,০০,০০,০০০ কপি বিতরণ করেছিল, যে-ট্র্যাক্টে “বাবিলের পতন” শিরোনামের একটা প্রবন্ধ ছিল। সেই ট্র্যাক্ট নির্ভীকভাবে খ্রিস্টীয়জগৎ সম্বন্ধে সত্য প্রকাশ করে দিয়েছিল। আপনারা বুঝতেই পারছেন, গির্জার নেতারা তখন রাগে উন্মত্ত হয়ে পড়েছিলেন! কিন্তু বাইবেল ছাত্ররা থেমে যায়নি। তারা প্রচার করে চলার এবং “মনুষ্যদের অপেক্ষা বরং ঈশ্বরের আজ্ঞা” পালন করার ব্যাপারে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিল। (প্রেরিত ৫:২৯) এটা আমাদের কাছে কী প্রকাশ করে? এটা প্রকাশ করে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে এই খ্রিস্টান পুরুষ ও নারীরা বন্দিত্বে যাচ্ছিল না; এর পরিবর্তে, তারা আসলে মিথ্যা ধর্ম থেকে স্বাধীন হচ্ছিল ও অন্যদেরও স্বাধীন হতে সাহায্য করছিল।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ঈশ্বরের লোকেদের উদ্যোগ

৫. কেন আমরা বলতে পারি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে আমাদের ভাই-বোনেরা অনেক উদ্যোগী ছিল?

৫ অতীতে আমরা বলেছিলাম, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ঈশ্বরের লোকেদের উপর তাঁর অনুগ্রহ ছিল না কারণ তারা উদ্যোগের সঙ্গে প্রচার করেনি। আমরা মনে করেছিলাম, সেই কারণে যিহোবা তাদেরকে কিছু সময়ের জন্য মহতী বাবিলের বন্দিত্বে যেতে দিয়েছেন। কিন্তু, ১৯১৪ থেকে ১৯১৮ সালের মধ্যে যে-বিশ্বস্ত ভাই ও বোনেরা ঈশ্বরের সেবা করেছিল, তারা পরে বলেছিল, একটা দল হিসেবে তারা প্রচার করে চলার জন্য যথাসাধ্য করেছে। সেই সময়ে বাইবেল ছাত্রদের প্রতি যা ঘটেছিল তা আরও ভালোভাবে বোঝার মাধ্যমে, আমরা বাইবেলে বর্ণিত কিছু ঘটনা বুঝতে পারব।

৬, ৭. (ক) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে বাইবেল ছাত্ররা কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর মুখোমুখি হয়েছিল? (খ) কোন বিষয়গুলো দেখায় যে, বাইবেল ছাত্ররা উদ্যোগী ছিল?

৬ আসলে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে বাইবেল ছাত্ররা প্রচার কাজে অনেক ব্যস্ত ছিল। তবে, তাদের বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বিতাও ছিল। আসুন আমরা সেগুলোর মধ্য থেকে দুটো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আলোচনা করি। প্রথমত, বাইবেল ছাত্ররা শুধুমাত্র বাইবেল ব্যবহার করে প্রচার করতে শেখেনি। তারা মূলত বই ও সাহিত্যাদি বিতরণ করায় অভ্যস্ত ছিল আর লোকেরা সেগুলো থেকেই সত্য বুঝতে পারত। তাই, ১৯১৮ সালের শুরুর দিকে সরকার যখন উন্মোচিত রহস্য (ইংরেজি) বইটা নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল, তখন অনেক ভাই-বোনের পক্ষে প্রচার করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। দ্বিতীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হল, সেই একই বছরে স্প্যানিশ ফ্লু নামে একটা রোগ দেখা গিয়েছিল। এই মারাত্মক রোগটা অত্যন্ত সংক্রামক ছিল আর এর ফলে ভাই-বোনেরা বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ ও প্রচার করতে পারেনি। এসব প্রতিদ্বন্দ্বিতা সত্ত্বেও, বাইবেল ছাত্ররা প্রচার কাজ করে চলার জন্য যথাসাধ্য করেছিল।

পথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে, বাইবেলভিত্তিক সাহিত্যাদি এবং ফটা-মা অভ্‌ ক্রিয়েশন ব্যবহার করে বাইবেল ছাত্ররা সাক্ষ্য দিচ্ছ

এই বাইবেল ছাত্ররা সত্যিই উদ্যোগী ছিলেন! (৬, ৭ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৭ বাইবেল ছাত্রদের ছোটো দল ১৯১৪ সালে “ফটো-ড্রামা অভ্‌ ক্রিয়েশন” প্রদর্শন করেছিল। স্লাইড ও সবাক চলচ্চিত্র-সহ এই প্রদর্শনী তখনকার সময়ে এক নতুন বিষয় ছিল। এটাকে তখন ড্রামা বলা হতো আর সেখানে আদমের সৃষ্টি থেকে শুরু করে খ্রিস্টের শাসনের শেষ পর্যন্ত মানবজাতির গল্প দেখানো হতো। ১৯১৪ সালে অর্থাৎ এই প্রদর্শনীর প্রথম বছরে ৯০,০০,০০০-রও বেশি লোক এটা দেখেছিল। একটু চিন্তা করুন। এই সংখ্যা বর্তমানে পুরো পৃথিবীতে যিহোবার সাক্ষিদের সংখ্যার চেয়েও বেশি! অন্যান্য রিপোর্ট দেখায়, ১৯১৬ সালে ৮০৯,০০০-রেরও বেশি লোক যুক্তরাষ্ট্রে জনসাধারণের সভাগুলোতে যোগ দিয়েছিল আর ১৯১৮ সালে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৯,৫০,০০০ হয়েছিল। সেই বাইবেল ছাত্ররা সত্যিই উদ্যোগী ছিল!

৮. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে যে-ভাইয়েরা নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, তারা কীভাবে বাইবেল ছাত্রদের শক্তিশালী করেছিলেন?

৮ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে যে-ভাইয়েরা নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, তারা বাইবেল সাহিত্যাদি প্রস্তুত করার জন্য এবং সমস্ত বাইবেল ছাত্রকে উৎসাহিত করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। এই প্রেমপূর্ণ সমর্থনের ফলে বাইবেল ছাত্ররা প্রচার কাজ করে যেতে পেরেছিল। রিচার্ড এইচ. বারবার, যিনি সেই সময়ে একজন উদ্যোগী প্রচারক ছিলেন, তিনি বলেছিলেন: “আমরা কয়েক জন ভ্রমণ অধ্যক্ষের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় প্রহরীদুর্গ পত্রিকা পাঠাতে পেরেছিলাম আর কানাডাতেও সেই পত্রিকা পাঠাতে পেরেছিলাম, যেখানে এটা নিষিদ্ধ ছিল।” তিনি আরও বলেছিলেন: “বেশ কয়েক জন বন্ধুর কাছ থেকে উন্মোচিত রহস্য বইয়ের কপি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল আর আমি তাদের কাছে পকেট সাইজের সেই বই পাঠানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। ভাই রাসেল আমাদের অনুরোধ করেছিলেন, যেন আমরা যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলের কয়েকটা শহরে সম্মেলনের ব্যবস্থা করি এবং যত বেশি সম্ভব বন্ধুবান্ধবকে উৎসাহিত করার চেষ্টায় বক্তাদের সেখানে পাঠাই।”

কিছু বিষয় সংশোধন করা প্রয়োজন ছিল

৯. (ক) কেন ১৯১৪ থেকে ১৯১৯ সালের মধ্যে ঈশ্বরের লোকেদের কিছু বিষয় সংশোধন করা প্রয়োজন ছিল? (খ) যদিও তাদের কিছু বিষয় সংশোধন করা প্রয়োজন ছিল, তবে কোন বিষয়টা ধরে নেওয়া ভুল হবে?

৯ বাইবেল ছাত্রদের তখনও কিছু বিষয় সংশোধন করা প্রয়োজন ছিল। যিহোবা যখন সরকারের বাধ্য হতে বলেছিলেন, তখন এর অর্থ কী, তারা সেটা পুরোপুরিভাবে বুঝতে পারেনি। (রোমীয় ১৩:১) তাই, যুদ্ধের সময়ে একটা দল হিসেবে তারা সবসময় নিরপেক্ষ ছিল না। উদাহরণ স্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি যখন ১৯১৮ সালের ৩০ মে লোকেদেরকে শান্তির জন্য প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন, তখন প্রহরীদুর্গ পত্রিকাও বাইবেল ছাত্রদের প্রার্থনা করতে উৎসাহিত করেছিল। কোনো কোনো ভাই যুদ্ধকে সমর্থন করার জন্য আর্থিক সাহায্য প্রদান করেছিল আর কয়েক জন এমনকী সৈনিক হিসেবেও কাজ করেছিল ও যুদ্ধে গিয়েছিল। যদিও তাদের কিছু বিষয় সংশোধন করা প্রয়োজন ছিল, তবে এইরকমটা ধরে নেওয়া ভুল হবে যে, এগুলোর কারণেই তাদের মহতী বাবিলের বন্দিত্বে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। প্রকৃত বিষয়টা হল, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তারা মিথ্যা ধর্মের বিশ্ব সাম্রাজ্য থেকে নিজেদের প্রায় পুরোপুরি পৃথক করে ফেলেছিল।—পড়ুন, লূক ১২:৪৭, ৪৮.

১০. কীভাবে বাইবেল ছাত্ররা জীবনের প্রতি সম্মান দেখিয়েছিল?

১০ এটা ঠিক, খ্রিস্টানদের জন্য নিরপেক্ষ হওয়ার অর্থ কী, তা বাইবেল ছাত্ররা পুরোপুরিভাবে বুঝতে পারেনি। তবে তারা জানত, কাউকে হত্যা করা অন্যায়। তাই, কোনো কোনো ভাই যদিও সৈনিক হয়েছিল এবং অস্ত্র বহন করেছিল, কিন্তু তারা কাউকে হত্যা করার জন্য সেগুলো ব্যবহার করেনি। যারা অন্যদের হত্যা করতে প্রত্যাখ্যান করেছিল, তাদের মধ্যে কোনো কোনো ভাইকে যুদ্ধক্ষেত্রে সামনে রাখা হয়েছিল, যেন তারা নিহত হয়।

১১. বাইবেল ছাত্ররা যখন যুদ্ধে গিয়ে লড়াই করতে প্রত্যাখ্যান করেছিল, তখন সরকার কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল?

১১ ঈশ্বরের প্রতি ভাইদের আনুগত্য দেখে দিয়াবল রেগে গিয়েছিল। তাই, সে “বিধান দ্বারা উপদ্রব” নিয়ে এসেছিল। (গীত. ৯৪:২০) যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী প্রধান জেমস্‌ ফ্র্যাঙ্কলিন বেল, ভাই রাদারফোর্ড ও ভাই ভ্যান অ্যামবার্গকে বলেছিলেন, সরকার একটা নতুন আইন তৈরি করার চেষ্টা করছে, যে-আইন অনুযায়ী, যুদ্ধে গিয়ে লড়াই করতে প্রত্যাখ্যান করে এমন যেকোনো ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। তিনি বিশেষভাবে বাইবেল ছাত্রদের কথাই বোঝাতে চেয়েছিলেন। সেই কর্মকর্তা প্রচণ্ড রেগে গিয়ে ভাই রাদারফোর্ডকে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি বাধা দেওয়ায় এই আইনটা পাশ করানো যায়নি। তারপর তিনি বলেছিলেন: “তবে, আপনাদের কীভাবে ধরতে হবে, তা আমরা জানি আর আমরা সেটাই করতে যাচ্ছি!”

১২, ১৩. (ক) কেন আট জন ভাইকে দীর্ঘ সময়ের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল? (খ) কারাদণ্ড ভোগ করার কারণে সেই ভাইদের দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ মনোভাব কি শিথিল হয়ে পড়েছিল? ব্যাখ্যা করুন।

১২ অবশেষে, সরকার বাইবেল ছাত্রদের শাস্তি দেওয়ার একটা উপায় খুঁজে পেয়েছিল। ভাই রাদারফোর্ড, ভাই ভ্যান অ্যামবার্গ ও সেইসঙ্গে ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটি-র আরও ছয় জন প্রতিনিধিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। যে-বিচারক সেই মামলার দায়িত্বে ছিলেন, তিনি বলেছিলেন, এই ভাইয়েরা জার্মানির একটা সৈন্যদলের চেয়েও বেশি বিপদজনক। তিনি আরও বলেছিলেন, তারা সরকার, সেনাবাহিনী ও সমস্ত গির্জাকে অসন্তুষ্ট করেছে আর তাদের চরম শাস্তি দেওয়া উচিত। তাই, সেই আট জন বাইবেল ছাত্রকে দীর্ঘ সময়ের জন্য জর্জিয়ার আটলান্টায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তারা মুক্তি পেয়েছিলেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ খারিজ করা হয়েছিল।

১৩ এই আট জন ব্যক্তি কারাগারে থাকার সময়ও ঈশ্বরের ব্যবস্থার বাধ্য হওয়ার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিলেন। কীভাবে আমরা তা জানি? তারা যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির কাছে কারাগার থেকে মুক্তি চেয়ে চিঠি লিখেছিলেন। সেই চিঠিতে তারা লিখেছিলেন, বাইবেল আমাদের বলে যেন আমরা কাউকে হত্যা না করি। তাই যে-ব্যক্তি ঈশ্বরের প্রতি উৎসর্গীকৃত আর একইসময়ে স্বেচ্ছায় তাঁর অবাধ্য হয়, সেই ব্যক্তি তাঁর অনুগ্রহ হারিয়ে ফেলবে ও ধ্বংস হয়ে যাবে। তারা ব্যাখ্যা করেছিলেন, এই কারণে তারা কোনো মানুষকে হত্যা করতে পারেন না আর তারা সেটা করবেনও না। রাষ্ট্রপতির কাছে লেখা এই চিঠি তাদের সাহসী মনোভাবের পরিচয় দেয়! এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে, যিহোবার প্রতি বাধ্য হওয়ার জন্য ভাইদের দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ মনোভাব কখনো শিথিল হয়ে পড়েনি।

অবশেষে ঈশ্বরের লোকেরা স্বাধীন হয়েছিল!

১৪. শাস্ত্র থেকে ব্যাখ্যা করুন, ১৯১৪ থেকে ১৯১৯ সালের মধ্যে কী ঘটেছিল।

১৪ বাইবেল ছাত্রদের প্রতি ১৯১৪ থেকে ১৯১৯ সালের প্রথম দিকে কী ঘটেছিল, তা মালাখি ৩:১-৩ পদে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। (পড়ুন।) ‘প্রভু’ অর্থাৎ যিহোবা ঈশ্বর এবং “নিয়মের সেই দূত” অর্থাৎ যিশু খ্রিস্ট “লেবির সন্তানদিগকে” পরীক্ষা করতে এসেছিলেন, যারা অভিষিক্ত ব্যক্তিদের চিত্রিত করে। যিহোবা তাদের সংশোধন ও শুচি করার পর, তারা এক নতুন কার্যভার লাভ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। ১৯১৯ সালে যিশু ‘বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাসকে’ নিযুক্ত করেছিলেন আর এই দাস ঈশ্বরের সমস্ত দাসকে পরিচালনা করার ও নির্দেশনা দেওয়ার জন্য দায়িত্ব লাভ করেছিলেন। (মথি ২৪:৪৫) অবশেষে ঈশ্বরের লোকেরা মহতী বাবিলের কাছ থেকে স্বাধীন হয়েছিল। তখন থেকে তারা ঈশ্বরের ইচ্ছা সম্বন্ধে আরও বেশি শিখতে পারছে এবং তাঁর প্রতি তাদের প্রেম আগের চেয়ে গভীর হয়েছে। তাঁর আশীর্বাদের জন্য তারা কতই-না কৃতজ্ঞ![১]

১৫. মহতী বাবিলের কাছ থেকে স্বাধীন হতে পেরে আমরা যে কৃতজ্ঞ, তা আমরা কীভাবে দেখাতে পারি?

১৫ মহতী বাবিলের কাছ থেকে স্বাধীন হতে পেরে আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। শয়তান সত্য উপাসনা ধ্বংস করতে সক্ষম হয়নি। সে ব্যর্থ হয়েছে! কিন্তু, যিহোবা কেন আমাদের স্বাধীন করেছেন, সেই বিষয়টা আমাদের মনে রাখতে হবে। তাঁর উদ্দেশ্য হল, যেন সমস্ত মানুষ রক্ষা পায়। (২ করি. ৬:১) তবে, মিথ্যা ধর্ম এখনও লক্ষ লক্ষ আন্তরিক ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করছে আর এই আন্তরিক ব্যক্তিদের আমাদের সাহায্য করা প্রয়োজন! লোকেদের স্বাধীন হতে সাহায্য করার জন্য, আসুন আমরা আমাদের বিশ্বস্ত ভাই-বোনদের অনুকরণ করতে যথাসাধ্য করি।

^ [১] (১৪ অনুচ্ছেদ) বাবিলে যিহুদিদের বন্দিত্ব এবং ধর্মভ্রষ্টতা শুরু হওয়ার পর খ্রিস্টানদের প্রতি যা ঘটেছিল, এই দুটো ঘটনার মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। তবে আমরা এমনটা বলতে পারি না, যিহুদিদের বন্দিত্ব, খ্রিস্টানদের প্রতি যা ঘটেছিল, সেটাকে চিত্রিত করে। তাই, আমাদের এই ঘটনার প্রতিটা বিষয়ের ভবিষ্যদ্‌বাণীমূলক অর্থ খোঁজার চেষ্টা করা উচিত নয়। আর এই দুটো ঘটনার মধ্যে কিছু পার্থক্যও রয়েছে। একটা উদাহরণ হল, যিহুদিরা ৭০ বছর বন্দিত্বে ছিল, কিন্তু খ্রিস্টানরা তার চেয়ে অনেক বেশি সময় বন্দিত্বে ছিল।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার