ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w17 অক্টোবর পৃষ্ঠা ৩-৬
  • যিহোবার ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করার ফলে আশীর্বাদ আসে

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যিহোবার ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করার ফলে আশীর্বাদ আসে
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • এক নতুন সঙ্গী
  • “আমরা এই কাজ করব!”
  • পুনরায় ইংল্যান্ডে ও তারপর স্কটল্যান্ডে
  • আয়ার্ল্যান্ডে এক নতুন কার্যভার
  • আয়ার্ল্যান্ডের যিহোবার সাক্ষিদের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা
  • একেবারে ভিন্ন এক কার্যভার
  • ১৯২১—এক-শো বছর আগে
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২১
  • যে-বাছাইগুলো সুখের দিকে পরিচালিত করে
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের যিহোবা প্রচুর আশীর্বাদ করেন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৩
  • ‘সদাপ্রভুর দূত চারিদিকে শিবির স্থাপন করেন’
    ২০০৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
w17 অক্টোবর পৃষ্ঠা ৩-৬
আলিভ ম্যাথিয়ুস

জীবনকাহিনি

যিহোবার ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করার ফলে আশীর্বাদ আসে

বলেছেন আলিভ ম্যাথিয়ুস

“আমরা এই কাজ করব!” আমার স্বামী ও আমি আর সেইসঙ্গে আমার দাদা ও বৌদি যখন একটা কার্যভার গ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলাম, তখন আমরা সবাই এভাবে উত্তর দিয়েছিলাম। কেন আমরা সেই কার্যভার গ্রহণ করেছিলাম এবং কীভাবে যিহোবা আমাদের আশীর্বাদ করেছিলেন? প্রথমে আসুন, আমি আপনাদের আমার পটভূমি সম্বন্ধে বলি।

উনিশ-শো তেইশ সালে ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের হেমজওয়ার্থ নামে একটা শহরে আমার জন্ম হয়েছিল। আমার দাদার নাম হল বব। আমার বয়স যখন প্রায় নয় বছর, তখন আমার বাবা, যিনি ধর্মীয় কপটতাকে অপছন্দ করতেন, এমন কিছু বই পেয়েছিলেন যেখানে মিথ্যা ধর্মকে প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছিল। তিনি যা পড়েছিলেন, সেটা তার খুব ভালো লেগেছিল। কয়েক বছর পর, বব আ্যটকানসান নামে একজন ব্যক্তি আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন এবং ফোনোগ্রাফের সাহায্যে ভাই রাদারফোর্ডের একটা বক্তৃতার রেকর্ড চালিয়ে শুনিয়েছিলেন। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, এই তথ্য সেই একই দলের কাছ থেকে এসেছে, যে-দল ওই বইগুলো প্রকাশ করেছিল! আমার বাবা-মা ভাই আ্যটকানসানকে অনুরোধ করেছিলেন যেন তিনি প্রতি রাতে আমাদের বাড়িতে খাবার খান এবং বাইবেল সম্বন্ধে আমাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। আমাদের বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে একজন ভাইয়ের বাড়িতে সভা অনুষ্ঠিত হতো আর আমাদের সেখানে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমরা নিয়মিতভাবে সভায় যোগ দিতে শুরু করেছিলাম আর হেমজওয়ার্থে একটা ছোট্ট মণ্ডলী গঠিত হয়েছিল। শীঘ্রই, আমরা আঞ্চলিক দাসদের (বর্তমানে সীমা অধ্যক্ষ নামে পরিচিত) আমাদের বাড়িতে থাকার জন্য ব্যবস্থা করতে শুরু করেছিলাম। এ ছাড়া, আমরা স্থানীয় অগ্রগামীদের খাবারের জন্য আমন্ত্রণ জানাতেও শুরু করেছিলাম। তাদের সঙ্গে মেলামেশা করা আমার উপর সত্যিই এক গভীর ছাপ ফেলেছিল।

আমরা একটা ব্যাবসা শুরু করেছিলাম কিন্তু বাবা আমার দাদাকে বলেছিলেন, “তুমি যদি অগ্রগামীর কাজ করতে চাও, তা হলে আমরা এটা বন্ধ করে দিতে পারি।” বব এতে রাজি হয়েছিল আর সে ২১ বছর বয়সে অগ্রগামীর কাজ করার জন্য বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে গিয়েছিল। দু-বছর পর আমার বয়স যখন ১৬ বছর, তখন আমাকে অগ্রগামী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। সপ্তাহের ছুটির দিনগুলো ছাড়া বেশিরভাগ সময়ে আমি টেস্টিমনি কার্ড ও একটা ফোনোগ্রাফ ব্যবহার করে একা একাই প্রচার করতাম। কিন্তু, যিহোবার আশীর্বাদে আমি এমন একজন ব্যক্তির সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করতে পেরেছিলাম, যিনি দারুণ উন্নতি করেছিলেন। সেই ছাত্রীর পরিবারের অনেকে পরবর্তী সময়ে সত্য গ্রহণ করেছিল। পরের বছর আমাকে বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল এবং আমার অগ্রগামী সঙ্গী ছিলেন বোন মেরি হেনশাল। আমাদের চেশাইয়ার নামে এক জেলার এমন এলাকায় পাঠানো হয়েছিল, যেখানে আগে প্রচার করা হয়নি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, যুদ্ধকে সমর্থন করার জন্য মহিলাদের কিছু কাজ করতে হতো। যেহেতু আমরা বিশেষ অগ্রগামী ছিলাম, তাই আমরা আশা করেছিলাম যে, পূর্ণসময়ের পরিচারক হিসেবে আমরাও অন্যান্য ধর্মীয় পরিচারকদের মতো সেই কাজ থেকে ছাড় পাব। কিন্তু, আদালত এতে রাজি হয়নি আর আমাকে শাস্তি হিসেবে ৩১ দিনের জন্য জেলে পাঠানো হয়েছিল। পরের বছর আমার বয়স যখন ১৯ বছর হয়েছিল, তখন আমাকে আরও দু-বার আদালতে যেতে হয়েছিল কারণ আমার বিবেকের কারণে আমি যুদ্ধকে সমর্থন করার মতো কাজ করিনি। কিন্তু, দু-বারই তারা আমাকে ছেড়ে দিয়েছিল। এই পুরো অভিজ্ঞতার সময় আমি জানতাম যে, পবিত্র আত্মা আমাকে সাহায্য করছিল এবং যিহোবা আমার হাত ধরে রাখার মাধ্যমে আমাকে সুস্থির ও শক্তিশালী করছিলেন।—যিশা. ৪১:১০, ১৩.

এক নতুন সঙ্গী

১৯৪৬ সালে আর্থার ম্যাথিয়ুসের সঙ্গে প্রথম বার আমার দেখা হয়। তিনি বিবেকের কারণে যুদ্ধে অংশ নেননি বলে তাকে তিন মাসের জন্য জেলে থাকতে হয়েছিল। জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পর পরই, তিনি তার ছোটো ভাই ডেনাসের সঙ্গে অগ্রগামীর কাজ করতে শুরু করেছিলেন, যিনি হেমজওয়ার্থে একজন বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে সেবা করতেন। তাদের বাবা একেবারে শিশুকাল থেকেই তাদের যিহোবা সম্বন্ধে শিখিয়েছিলেন এবং তারা কিশোর বয়সে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন। অল্প কিছুসময় পরই, ডেনাসকে আয়ার্ল্যান্ডে পাঠানো হয়েছিল আর এর ফলে, আর্থারের কোনো সঙ্গী না থাকায় তিনি প্রচার কাজে একা হয়ে গিয়েছিলেন। আমার বাবা-মা এই তরুণ ও কঠোর পরিশ্রমী অগ্রগামীর আচরণ দেখে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলেন আর তাই, তারা আর্থারকে তাদের বাড়িতে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আমি যখন মাঝে মাঝে বাবা-মায়ের বাড়িতে যেতাম, তখন আমি ও আর্থার খাবারের পর একসঙ্গে বাসন ধুতাম। একসময় আমরা একে অন্যকে চিঠি লিখতে শুরু করেছিলাম। ১৯৪৮ সালে আর্থারকে আরেক বার তিন মাসের জন্য জেলে যেতে হয়েছিল। আমরা ১৯৪৯ সালের জানুয়ারি মাসে বিয়ে করেছিলাম আর আমাদের এই লক্ষ্য ছিল যে, আমরা যত দিন সম্ভব, পূর্ণসময়ের সেবায় রত থাকব। টাকাপয়সা খরচ করার ব্যাপারে আমরা খুবই সতর্ক ছিলাম আর আমরা ছুটির সময়গুলোতে গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করার কাজে সাহায্য করার মাধ্যমে কিছু টাকা উপার্জন করতাম। যিহোবার আশীর্বাদে আমরা অগ্রগামীর কাজ চালিয়ে যেতে পেরেছিলাম।

১৯৪৯ সালে আর্থার ও আলিভ ম্যাথিয়ুস

১৯৪৯ সালে আমাদের বিয়ের কিছুসময় পরেই হেমজওয়ার্থে

এক বছরের অল্প কিছুসময় পর, আমাদের প্রথমে আরমা ও পরে নুরি নামে উত্তর আয়ার্ল্যান্ডের দুটো শহরে যেতে বলা হয়েছিল, যেগুলোর বেশিরভাগ এলাকায় ক্যাথলিক লোকেরা বাস করত। সেই এলাকাগুলোতে ধর্মীয় বিদ্বেষ খুবই প্রবল ছিল আর তাই, লোকেদের কাছে প্রচার করার সময় আমাদের খুবই সতর্ক থাকতে হতো এবং উত্তম বিচারবুদ্ধি ব্যবহার করতে হতো। আমরা যেখানে বাস করতাম, সেখান থেকে ১৬ কিলোমিটার (১০ মাইল) দূরে অবস্থিত এক সাক্ষি দম্পতির বাড়িতে সভা অনুষ্ঠিত হতো। সেখানে প্রায় আট জন উপস্থিত হতো। মাঝে মাঝে, আমাদের যখন রাতে সেখানে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হতো, তখন আমরা মেঝেতে ঘুমাতাম এবং পরের দিন সকালে তারা আমাদের প্রচুর খাবার দিতেন আর আমরা সেটা উপভোগ করতাম। এটা জানা খুবই আনন্দের এক বিষয় যে, সেই এলাকায় বর্তমানে অনেক সাক্ষি রয়েছে।

“আমরা এই কাজ করব!”

আমার দাদা ও তার স্ত্রী লাটি ইতিমধ্যেই উত্তর আয়ার্ল্যান্ডে বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে সেবা করছিল এবং ১৯৫২ সালে, আমরা চার জন বেলফাস্টে অনুষ্ঠিত একটা জেলা সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলাম। একজন ভাই সদয়ভাবে আমাদের সকলের ও সেইসঙ্গে ব্রিটেনের শাখা দাস ভাই প্রাইস হিউজের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন। এক রাতে, আমরা ঈশ্বরের পথ প্রেম (ইংরেজি) শিরোনামের একটা নতুন পুস্তিকার বিষয়ে কথা বলছিলাম, যেটা বিশেষভাবে আয়ার্ল্যান্ডের লোকেদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছিল। ভাই হিউজ এই বিষয়ে কথা বলছিলেন যে, আইরিশ রিপাবলিকে ক্যাথলিক লোকেদের কাছে সাক্ষ্য দেওয়া কতটা কঠিন। ভাইদের তাদের ঘর থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছিল এবং তারা পাদরিদের দ্বারা প্ররোচিত জনতার কাছ থেকে আসা দৌরাত্ম্যের মুখোমুখি হচ্ছিল। ভাই হিউজ বলেছিলেন, “আমাদের এমন কয়েকটা দম্পতির প্রয়োজন, যাদের কাছে গাড়ি আছে, যাতে তারা সারা দেশে সেই পুস্তিকা বিতরণ করার বিশেষ অভিযানে অংশ নিতে পারে।”a সেইসময়ই আমরা এই উত্তর দিয়েছিলাম, “আমরা এই কাজ করব!”

একটা মোটরসাইকেল ও সেটার সগ সংযুক্ত আরেকটা বসার জায়গায় কয়েক জন সহঅগগামীর সগ আর্থার ও আলিভ ম্যাথিয়ুস

একটা মোটরসাইকেল ও সেটার সঙ্গে সংযুক্ত আরেকটা বসার জায়গায় কয়েক জন সহঅগ্রগামীর সঙ্গে

ডাবলিনে একটা জায়গা ছিল, যেখানে অগ্রগামীরা সবসময় থাকতে পারত আর সেটা হল মা রাটলান্ড-এরb বাড়িতে, যিনি দীর্ঘ দিন ধরে বিশ্বস্ততার সঙ্গে যিহোবার সেবা করেছিলেন। সেখানে কিছু দিন থাকার ও সেইসঙ্গে আমাদের কিছু জিনিসপত্র বিক্রি করার পর, আমরা চার জন ববের মোটরসাইকেল ও সেটার সঙ্গে সংযুক্ত আরেকটা বসার জায়গায় চড়ে একটা গাড়ি কেনার জন্য বেরিয়ে পড়েছিলাম। আমরা একটা পুরোনো গাড়ি খুঁজে পেয়েছিলাম, যেটা ভালো অবস্থায় ছিল। আমরা বিক্রেতাকে আমাদের কাছে সেটা পৌঁছে দিতে বলেছিলাম কারণ আমাদের মধ্যে কেউই গাড়ি চালাতে পারত না। আর্থার সারা সন্ধ্যা বিছানায় বসে গাড়ির গিয়ার পরিবর্তন করার প্র্যাকটিস করেছিল। পরের দিন সকালে, সে যখন গ্যারেজ থেকে গাড়ি চালিয়ে বের করার চেষ্টা করছিল, তখন মিলড্রাড উইলাট নামে একজন মিশনারি বোন (যিনি পরে ভাই জন বারকে বিয়ে করেছিলেন) সেখানে এসেছিলেন। আনন্দের বিষয় হল, তিনি গাড়ি চালাতে পারতেন! তিনি আমাদের গাড়ি চালাতে শিখিয়েছিলেন এবং এরপর আমরা কার্যভারের এলাকায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলাম।

আর্থার ও আলিভ ম্যাথিয়ুস তাদের গাড়ি ও ট্লারের পাশে

আমাদের গাড়ি ও ট্রেলার

এরপর আমাদের যেটার প্রয়োজন ছিল, সেটা হল একটা থাকার জায়গা। আমাদের সাবধান করা হয়েছিল যেন আমরা ট্রেলারে (ভ্রাম্যমাণ বাড়ি) না থাকি কারণ বিরোধীরা সেটাতে আগুন লাগিয়ে দিতে পারত। তাই, আমরা থাকার জন্য বাড়ি খোঁজার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু কিছুই খুঁজে পাইনি। সেই রাতে আমরা চার জন গাড়িতেই ঘুমিয়েছিলাম। পরের দিন, আমরা অনেক খোঁজার পর কেবল ঘরে বানানো একটা ছোটো ট্রেলার খুঁজে পেয়েছিলাম, যেটার মধ্যে একটার উপরে আরেকটা লাগানো দুটো ছোটো ছোটো বিছানা ছিল। সেই ট্রেলারটাই আমাদের বাড়ি হয়ে উঠেছিল। আশ্চর্যের বিষয় হল, আমরা খুব সহজেই বন্ধুত্বপরায়ণ কৃষকদের জমিতে সেই ট্রেলার পার্ক করে রাখতে পেরেছিলাম। আমরা যে-এলাকায় ট্রেলার রাখতাম, সেখান থেকে প্রায় ১৬ থেকে ২৪ কিলোমিটার (১০ থেকে ১৫ মাইল) দূরে গিয়ে প্রচার করতাম। পরে, নতুন একটা এলাকায় ট্রেলার নিয়ে চলে যাওয়ার পর, আমরা ফিরে এসে সেই এলাকায় প্রচার করতাম, যেখানে আমরা আগে ট্রেলারটা রেখেছিলাম।

আমরা খুব-একটা সমস্যা ছাড়াই আইরিশ রিপাবলিকের দক্ষিণ-পূর্ব এলাকার সমস্ত বাড়িতে সাক্ষ্য দিতে পেরেছিলাম এবং ২০,০০০-রেরও বেশি পুস্তিকা বিতরণ করেছিলাম আর এরপর আমরা আগ্রহী ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা ব্রিটেনের শাখা অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। এটা খুবই আশীর্বাদের এক বিষয় যে, সেই এলাকায় বর্তমানে শত শত সাক্ষি রয়েছে!

পুনরায় ইংল্যান্ডে ও তারপর স্কটল্যান্ডে

কিছুসময় পর, আমাদের পুনরায় দক্ষিণ লন্ডনে কার্যভার দেওয়া হয়েছিল। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই, ব্রিটেনের শাখা অফিস থেকে আর্থারকে ফোন করা হয়েছিল এবং তাকে পরের দিন থেকেই সীমার কাজ শুরু করার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল! এক সপ্তাহের প্রশিক্ষণ লাভ করার পর, আমরা স্কটল্যান্ডে আমাদের নির্ধারিত সীমার এলাকায় গিয়েছিলাম। আর্থারের কাছে তার বক্তৃতা তৈরি করার জন্য কোনো অতিরিক্ত সময় ছিল না কিন্তু তিনি যে যিহোবার সেবায় বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বিতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে ইচ্ছুক, এই বিষয়টা দেখে আমি প্রচুর উৎসাহ লাভ করেছিলাম। আমরা সীমার কাজে আমাদের কার্যভারকে সত্যিই উপভোগ করেছিলাম। যেহেতু আমরা কয়েক বছরের জন্য এমন এলাকায় ছিলাম, যেখানে আগে প্রচার করা হয়নি, তাই অনেক ভাই-বোনদের মাঝে থাকতে পারাটা সত্যিই এক চমৎকার আশীর্বাদ ছিল।

১৯৬২ সালে আর্থারকে যখন গিলিয়েড স্কুল-এ যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তখন আমাদের একটা বড়ো সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। সেই কার্যক্রম দশ মাসের ছিল কিন্তু আমাকে যেহেতু আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, তাই আমি সেখানে যেতে পারতাম না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, আর্থারের সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করা সঠিক হবে। যেহেতু এই সময়টাতে আমার অগ্রগামীর কাজে কোনো সঙ্গী থাকবে না, তাই আমাকে হেমজওয়ার্থে একজন বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে সেবা করার জন্য ফিরে যেতে বলা হয়েছিল। এক বছর পর আর্থার যখন ফিরে এসেছিল, তখন আমাদের জেলার কাজে নিযুক্ত করা হয়েছিল আর আমাদের এলাকার অন্তর্ভুক্ত ছিল স্কটল্যান্ড, উত্তর ইংল্যান্ড ও উত্তর আয়ার্ল্যান্ড।

আয়ার্ল্যান্ডে এক নতুন কার্যভার

১৯৬৪ সালে আর্থারকে আইরিশ রিপাবলিকে শাখা দাস হিসেবে সেবা করার নতুন কার্যভার দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু আমরা ভ্রমণের কাজ অনেক উপভোগ করেছিলাম, তাই বেথেলে কার্যভার পেয়ে প্রথমে আমরা একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। আমি যখন পিছনে ফিরে তাকাই, তখন আমি এই বিষয়ে খুবই কৃতজ্ঞ হই যে, আমাদের বেথেলে সেবা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। আমি মনে করি, এমনকী অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আপনি যদি কোনো কার্যভার গ্রহণ করেন, তা হলে যিহোবা আপনাকে সবসময় আশীর্বাদ করবেন। বেথেলে আমার কাজের অন্তর্ভুক্ত ছিল অফিসে কাজ করা, সাহিত্যাদি বাক্সে ভরা, রান্না করা ও পরিষ্কারের কাজ করা। বেথেলে থাকাকালীন, কিছু সময়ের জন্য আমরা জেলার কাজও করেছিলাম আর সারা দেশের অনেক ভাই-বোনের সঙ্গে মিলিত হতে পেরেছিলাম। এভাবে ভাই-বোনদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার ও সেইসঙ্গে আমাদের বাইবেল ছাত্র-ছাত্রীদের উন্নতি করতে দেখার ফলে আয়ার্ল্যান্ডের ভাই-বোনদের সঙ্গে আমাদের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধন গড়ে উঠেছিল। এটা আমাদের জন্য কতই-না আশীর্বাদের এক বিষয় ছিল!

আয়ার্ল্যান্ডের যিহোবার সাক্ষিদের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা

১৯৬৫ সালে ডাবলিনে, আয়ার্ল্যান্ডের প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।c সমস্ত দিক থেকে তীব্র বিরোধিতা আসা সত্ত্বেও সেই সম্মেলন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সম্মেলনে মোট ৩,৯৪৮ জন উপস্থিত হয়েছিল এবং ৬৫ জন বাপ্তিস্ম নিয়েছিল। সেখানে আসা ৩,৫০০ জন আন্তর্জাতিক অভ্যাগতদের ডাবলিনে বিভিন্ন লোকের বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যেক গৃহকর্তাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। আর গৃহকর্তারা অভ্যাগতদের উত্তম আচরণের প্রশংসা করেছিল। এটা সত্যিই আয়ার্ল্যান্ডের যিহোবার সাক্ষিদের জন্য এক ইতিবাচক পরিবর্তন ছিল।

১৯৬৫ সালে ভাই নেথেন নরের সগ আর্থার ম্যাথিয়ুস

১৯৬৫ সালের সম্মেলনের জন্য আসার পর ভাই নেথেন নরকে আর্থার স্বাগত জানাচ্ছে

১৯৮৩ সালে আর্থার ম্যাথিয়ুস একটা সমলনে গেলিক ভাষায় আমার বাইবেলের গপর বই পকাশ করছন

১৯৮৩ সালে আর্থার একটা সম্মেলনে গেলিক ভাষায় আমার বাইবেলের গল্পের বই প্রকাশ করছে

১৯৬৬ সালে ডাবলিনের শাখা অফিসের অধীনে উত্তর ও দক্ষিণ আয়ার্ল্যান্ডকে মিলিত করা হয়েছিল, যেটা ছিল সেই দ্বীপের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বৈষম্যের চেয়ে একেবারে আলাদা। আমরা ক্যাথলিক লোকেদের সত্যে আসতে দেখে ও পূর্বে প্রোটেস্টান্ট ছিল, এমন ভাইদের সঙ্গে তাদের সেবা করতে দেখে খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম।

একেবারে ভিন্ন এক কার্যভার

২০১১ সালে ব্রিটেন ও আয়ার্ল্যান্ডের শাখা অফিসকে যখন মিলিত করে একটা শাখা অফিস প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল এবং আমাদের লন্ডন বেথেলে কার্যভার দেওয়া হয়েছিল, তখন আমাদের জীবন একেবারে পালটে গিয়েছিল। আমরা এই খবর সেইসময় পেয়েছিলাম, যখন আমি আর্থারের স্বাস্থ্য নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা করতে শুরু করছিলাম। আর্থারের পারকিনসন্স রোগ (এক ধরনের নার্ভের রোগ) দেখা দিয়েছিল। আমাদের বিয়ের ৬৬ বছর পর ২০১৫ সালের মে মাসের ২০ তারিখে আমি আমার সঙ্গীকে মৃত্যুতে হারাই।

বিগত কয়েক বছর ধরে, আমি দুঃখ, অবসাদ ও শোকের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। অতীতে, আর্থার সবসময় আমার পাশে থাকত। তার কথা আমার খুব মনে পড়ে! কিন্তু, এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় আমরা যিহোবার আরও নিকটবর্তী হই। সবাই যে আর্থারকে কতটা ভালোবাসত, এটা জেনে আমি প্রচুর আনন্দিত হই। আমি আয়ার্ল্যান্ড, ব্রিটেন ও এমনকী যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বন্ধুদের কাছ থেকে চিঠি পেয়েছি। এই চিঠিগুলো আর সেইসঙ্গে আর্থারের ভাই ডেনাস ও তার স্ত্রী মেভাসের এবং আমার দাদার দুই মেয়ে রুথ ও জুডির কাছ থেকে উৎসাহ লাভ করা আমাকে এত সাহায্য করেছে যে, সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না!

একটা যে-শাস্ত্রপদ থেকে আমি প্রচুর উৎসাহ লাভ করেছি, তা হল যিশাইয় ৩০:১৮ পদ। এই পদ বলে: “সদাপ্রভু তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করিবার আকাঙ্ক্ষায় অপেক্ষা করিবেন, আর সেই জন্য তোমাদের প্রতি করুণা করিবার আকাঙ্ক্ষায় ঊর্দ্ধ্বে থাকিবেন; কেননা সদাপ্রভু ন্যায়বিচারের ঈশ্বর; ধন্য তাহারা সকলে, যাহারা তাঁহার অপেক্ষা করে।” আমি এটা জেনে সত্যিই সান্ত্বনা লাভ করি যে, যিহোবা আমাদের সমস্ত সমস্যা সমাধান করার এবং তাঁর নতুন জগতে আগ্রহজনক কার্যভার দেওয়ার জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে আছেন।

আমি যখন পিছনে ফিরে তাকাই, তখন আমি বুঝতে পারি যে, কীভাবে যিহোবা আয়ার্ল্যান্ডে প্রচার কাজে নির্দেশনা দিয়েছিলেন এবং সেটার উপর আশীর্বাদ বর্ষণ করেছিলেন! আমি খুবই আনন্দিত যে, আমি সেই আধ্যাত্মিক বৃদ্ধির কাজে কিছুটা অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, যিহোবার ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করার ফলে আশীর্বাদ আসে।

a যিহোবার সাক্ষিদের বর্ষপুস্তক ১৯৮৮ (ইংরেজি) বইয়ের ১০১-১০২ পৃষ্ঠা দেখুন।

b অনেক ভাই-বোন এই বোনকে প্রেমের সঙ্গে মা রাটলান্ড বলে ডাকত কারণ তিনি তাদের কাছে একজন মায়ের মতো ছিলেন।

c যিহোবার সাক্ষিদের বর্ষপুস্তক ১৯৮৮ বইয়ের ১০৯-১১২ পৃষ্ঠা দেখুন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার