ভাববাণীমূলক বাক্যের প্রতি মনোযোগ দিন
১ “ভাববাণীর বাক্য দৃঢ়তর হইয়া আমাদের নিকটে রহিয়াছে।” (২ পিতর ১:১৯) পিতর কেন এটি বলেছিলেন? ইব্রীয় শাস্ত্রে এবং স্বয়ং যীশু খ্রীষ্টের কাছ থেকে রাজ্য সম্বন্ধে ভাববাণীগুলি, যা পিতর এবং অন্য দুই জন শিষ্য প্রায় ৩২ বছর আগে রূপান্তরের দৃশ্যে দেখেছিলেন ও শুনেছিলেন তার দ্বারা তা নিশ্চিত হয়েছিল অথবা “দৃঢ়তর” করেছিল। এই চমকপ্রদ দৃশ্য তাদের নিশ্চিত করেছিল যে বাস্তবিকই যীশু খ্রীষ্ট দীপ্তিময় গৌরবে এবং তাঁর পিতার পূর্ণ সমর্থনে রাজ্য ক্ষমতায় আসবেন। প্রথম শতাব্দীর খ্রীষ্টানেরা ‘ভাববাণীর প্রতি মনোযোগ করে ভাল করেছিলেন যা এমন প্রদীপের তুল্য,’ এই অর্থে যে নইলে তাদের হৃদয় অন্ধকারে থাকত। দীপ্তিমান ভাববাণীমূলক বাক্যের প্রতি মনোযোগ দেওয়া তাদের সতর্ক এবং জাগিয়ে রেখেছিল যতক্ষণ পর্যন্ত না একটি নতুন দিনের আরম্ভ হয়, যখন “প্রভাতীয় তারা” যীশু রাজ্যের গৌরবে উদিত হবেন।—২ পিতর ১:১৬-১৯; মথি ১৭:১-৯.
২ আমরা পিতরের সাথে গৌরবময় রূপান্তরের দৃশ্য দেখতে উপস্থিত ছিলাম না। তবুও, এই বংশের খ্রীষ্টানেরা যারা ভাববাণীমূলক বাক্যে মনোযোগ দেয়, তাদের বিশেষ সুযোগ আছে, খ্রীষ্টের রাজ্যের পূর্বদর্শন নয় কিন্তু বাস্তবে গৌরবময় রাজার শাসনের প্রচুর প্রমাণ দেখার! ১৯১৪ সালের পর থেকে অতিক্রান্ত প্রতিটি বছর, ভাববাণীমূলক বাক্যকে নিশ্চিত করেছে কারণ আমরা যীশুর দেওয়া তাঁর রাজকীয় “উপস্থিতির” মুগ্ধকর “চিহ্নের” বিভিন্ন অংশের পরিপূর্ণতার সাক্ষ্য দিই। এই চিহ্নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল যে রাজা এই বিধিব্যবস্থার শেষ আনার পূর্বে তাঁর সরকার অথবা রাজ্য সমস্ত জাতির কাছে ঘোষণা করা হবে। খ্রীষ্টের নির্দেশনায়, রাজ্যের প্রচার কাজ এখন ২৩১টি দেশে করা হচ্ছে যা পূর্বে কখনও এতটা পরিমাণে কল্পনা করা হয়নি। (মথি ২৪:৩-১৪) এছাড়াও, যেহেতু “মহাক্লেশ” এর সময় নিকটবর্তী, তাই সিংহাসনে অধিষ্ঠিত রাজা “প্রত্যেক জাতি” থেকে “বিস্তর লোককে” একত্রিত করছেন যারা প্রায়শ্চিতরূপ “মেষশাবকের রক্তে” বিশ্বাস প্রদর্শন করে।—প্রকা. ৭:৯, ১০, ১৪.
৩ যেহেতু “প্রভাতীয় তারা” উদিত হয়েছেন, অর্থাৎ খ্রীষ্ট রাজ্য ক্ষমতায় এসেছেন, তাহলে এখনও কি ভাববাণীমূলক বাক্যে মনোযোগ দেওয়ার কারণ আছে? হ্যাঁ আছে! গৌরবান্বিত যীশু খ্রীষ্ট প্রেরিত যোহনকে এক ধারাবাহিক দর্শন দিয়েছিলেন যা প্রকাশিত বাক্য বইটি প্রস্তুত করে। যদিও প্রাথমিক খ্রীষ্টানদের কাছে এগুলি উৎসাহের ও উপদেশের বিষয় ছিল, কিন্তু যারা “প্রভুর দিনে” বাস করছে, তাদের জন্য সেগুলি বিশেষ মূল্য রাখে, যেখানে আমরা আজকে নিজেদের খুঁজে পাই। (প্রকা. ১:১০) সেই কারণে যিহোবার লোকেদের মণ্ডলীগুলি এখন প্রকাশিত বাক্য পরিপূর্ণতা বইটিকে আর একবার অধ্যয়ন করছে।
৪ “ধন্য, যে এই ভাববাণীর বাক্য সকল পাঠ করে, ও যাহারা শ্রবণ করে, এবং ইহাতে লিখিত কথা সকল পালন করে; কেননা কাল সন্নিকট।” (প্রকা. ১:৩) আমরা যদি সুখী হতে চাই, আমাদের অবশ্যই অর্থ বুঝতে হবে, হ্যাঁ, এই ভাববাণীমূলক দর্শনগুলির প্রকৃত অর্থ বুঝতে হবে। এর জন্য কী প্রয়োজন? প্রকাশিত বাক্যের বর্ণনার গুরুত্বকে পূর্ণরূপে হৃদয়াঙ্গম করতে পুনরাবৃত্তির প্রয়োজন। প্রথম শতাব্দীর পরিচারক গোষ্ঠীর একজন সদস্য, প্রেরিত পিতর, তার ভাইদের আধ্যাত্মিকভাবে ‘জাগ্রত রাখতে’ মৌলিক সত্যগুলিকে পুনরাবৃত্তি করার মূল্যকে উপলব্ধি করেছিলেন। (২ পিতর ১:১২, ১৩) একইভাবে আধুনিক-দিনের “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্ দাস” বারবার ভাববাণীমূলক বাক্যের প্রতি আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করানোর দ্বারা আমাদের উপলব্ধিকে জাগিয়ে রাখতে সাহায্য করে।—মথি ২৪:৪৫-৪৭.
৫ কিভাবে মনোযোগ দেবেন: প্রকাশিত বাক্যে ভাববাণীমূলক বাক্যের জন্য কি ধরনের মনোযোগ উপযুক্ত? প্রেরিত পৌল আমাদের মনে করিয়ে দেন যে তিনি যেভাবে প্রাক-খ্রীষ্টীয় দাসেদের সাথে ভাববিনিময় করেছিলেন, সেইভাবে ঈশ্বর দূতেদের অথবা ভাববাদীদের মাধ্যমে খ্রীষ্টানদের সাথে কথা বলেন না। বরং, যিহোবা তাঁর সবচেয়ে স্নেহধন্য পুত্র, যাকে তিনি “সর্ব্বাধিকারী দায়াদ করিয়াছেন” তাঁর মাধ্যমে আমাদের সাথে ভাববিনিময় করেছেন। (ইব্রীয় ১:১, ২) “এই জন্য যাহা যাহা শুনিয়াছি, তাহাতে অধিক আগ্রহের সহিত মনোযোগ করা আমাদের উচিত, পাছে কোন ক্রমে ভাসিয়া চলিয়া যাই।” (ইব্রীয় ২:১) হ্যাঁ, আমরা অবশ্যই ঈশ্বরের বাক্যের এবং বিশেষভাবে সেই ভাববাণীমূলক বাক্যের প্রতি যা যীশুর মাধ্যমে আসে মনোযোগ দেব। আমাদের প্রকাশিত বাক্য অধ্যয়নের প্রতি আমরা কিভাবে বিশেষ মনোযোগ দিতে পারি?
৬ প্রথমত, প্রতি সপ্তাহে মণ্ডলীর বুকস্টাডিতে উপস্থিত হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সত্য, আমাদের অনেকের কাছেই, এটি হবে তৃতীয় বার যে আমরা প্রকাশিত বাক্য পরিপূর্ণতা বইটি অধ্যয়ন করছি। তাই, কেউ কেউ হয়ত বুকস্টাডিতে উপস্থিত হওয়াকে কিছুটা হাল্কাভাবে নিতে পারেন এই মনে করে যে এমনকি যদি তারা একটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন, তাহলেও ইতিমধ্যেই তারা বিষয়বস্তুটির সাথে পরিচিত আছেন। কিন্তু, ১৯৮৯ সালে যখন আমরা মণ্ডলীর বুকস্টাডিতে আমাদের প্রকাশিত বাক্য পরিপূর্ণতা বইটির প্রথম বিবেচনা শুরু করেছিলাম, প্রতিটি বছর অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে এই ভাববাণীমূলক তথ্য তার থেকে আরও প্রসঙ্গোচিত এবং সময়োপযোগী হয়েছে। বর্তমান-দিনের ঘটনাগুলি যা দ্রুতগতিতে প্রকাশিত বাক্যের ভাববাণীগুলির পরিপূর্ণতার দিকে এগিয়ে চলেছে তার প্রতি আমাদের সকলের সজাগ থাকা প্রয়োজন। তাহলে আমরা যিহোবার ইচ্ছার সাথে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করতে প্রস্তুত হতে পারব। প্রকাশিত বাক্যের এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সময়ে যদি সম্ভব একেবারেই একটি বুকস্টাডিতে অনুপস্থিত না থাকাকে আপনার ব্যক্তিগত লক্ষ্য করুন।
৭ দ্বিতীয়ত, আপনার পাঠ ভালোভাবে প্রস্তুত করুন। উদ্ধৃত শাস্ত্রপদগুলি দেখুন এবং কিভাবে সেগুলি আলোচিত হওয়া প্রকাশিত বাক্যের পদগুলির ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে তা বিবেচনা করুন। এইভাবে প্রশ্নগুলির সাধারণ উত্তরের চেয়ে আপনি আরও কিছু পাবেন। কেবলমাত্র জ্ঞান অর্জন নয় কিন্তু প্রজ্ঞা এবং সুবিবেচনা অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা করুন। (হিতো. ৪:৭) তৃতীয়ত, মন্তব্য ও শাস্ত্রপদগুলি পড়ার দ্বারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করুন। প্রত্যেক স্টাডিতে অন্ততপক্ষে একবার এবং অধিকতর বাঞ্ছনীয় অনেকবার উত্তর দেওয়াকে একটি লক্ষ্য করুন। এইভাবে তা করা আপনাকে আপনার পাঠের উপর মন কেন্দ্রীভূত করতে সাহায্য করবে।
৮ ভাবাবাণীমূলক বাক্যের প্রতি অধিক আগ্রহের সাথে মনোযোগ দেওয়ার অন্তর্ভুক্ত প্রস্তুতি, উপস্থিতি এবং অংশগ্রহণের থেকে আরও কিছু। এর অর্থ হল যে এমনকি অধ্যয়নের পরেও ‘এ সকল বিষয়ে চিন্তা করতে, এ সকলে স্থিতি করব।’ (১ তীম. ৪:১৫) ভাববাণীমূলক বাক্য যদি আমাদের হৃদয়ে একটি প্রদীপের মত প্রজ্বলিত করতে চাই, আমরা অবশ্যই এটিকে আমাদের অন্তরতর ব্যক্তিকে—আমাদের চিন্তাধারাগুলিকে, ইচ্ছাগুলিকে, অনুভূতিগুলিকে, অভিপ্রায়গুলিকে এবং লক্ষ্যগুলিকে গভীরভাবে প্রভাবিত হতে দেব। (২ পিতর ১:১৯) তাহলে, আমরা নিজেদের এইধরনের প্রশ্নগুলি জিজ্ঞাসা করা উচিত যেমন: আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে এই তথ্যের অর্থ কী? যিহোবা এবং তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্ট সম্বন্ধে আমি কী শিখেছি? বিষয়বস্তুটির মধ্যে অন্তর্নিহিত কোন্ নীতিগুলি আছে? আমি কি আমার হৃদয়ে অধ্যয়নের অর্থ বুঝছি? কিভাবে আমি এই সত্যগুলিকে আমার জীবনে প্রয়োগ করতে পারি? আমার পরিবারে? মণ্ডলীতে? আমরা যা শিখি তার ব্যবহারিক প্রয়োগের দ্বারা আমরা গীতরচকের মত বলতে পারি: “তোমার বাক্য আমার চরণের প্রদীপ, আমার পথের আলোক।”—গীত. ১১৯:১০৫; ইয়োব ২৯:৩, ৪.
৯ কষ্টকর সময়ে সচেতন থাকুন: সা.শ. ৩৩ সালে, যীশু তাঁর শিষ্যদের যিরূশালেমের আগত ধ্বংস সম্বন্ধে এবং সেই পরিস্থিতি যা তাদের জন্য নিরাপদ স্থানে পালাবার চিহ্ন হবে সেই সম্বন্ধে সাবধান করে দিয়েছিলেন। (লূক ১৯:৪১-৪৪; ২১:৭-২১) তারপর ৩০ বছর কেটে যায়। কিছু যিহূদী খ্রীষ্টানদের কাছে মনে হয়েছিল যে নিকট ভবিষ্যতে খুব সামান্য পরিবর্তন হবে। ‘ভাববাণীর প্রতি মনোযোগ’ দিতে সা.শ. ৬৪ সালে প্রিয় প্রেরিত পিতরের কাছ থেকে তার দ্বিতীয় পত্রে লেখা উপদেশটি কতই সময়োপযোগী ছিল! (২ পিতর ১:১৯) কিছুদিন পরে শীঘ্রই, সা.শ. ৬৬ সালে, রোমীয় সৈন্যদের দ্বারা যিরূশালেম পরিবেষ্টিত হয়। যখন রোমীয় সেনাবাহিনী বাহ্যতঃ কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ ফিরে যায়, যিহূদার খ্রীষ্টানেরা যারা সচেতন ছিলেন তারা যীশুর নির্দেশ পালন করেন এবং পালিয়ে যান। তারপর, সা.শ. ৭০ সালে, রোমীয় সৈন্যবাহিনী পুনরায় ফিরে আসে এবং সম্পূর্ণরূপে যিরূশালেমকে ধ্বংস করে। সেই খ্রীষ্টানদের জন্য যারা যীশুর ভাববাণীর প্রতি গভীর মনোযোগ দিয়েছিলেন তা কতই আনন্দের ছিল!
১০ আমরা আধুনিক-দিনের খ্রীষ্টানেরা কিসের জন্য সতর্ক থাকব? প্রকাশিত বাক্যের দর্শনগুলিতে, যীশু বর্তমানে যে খ্রীষ্টানেরা জীবিত আছেন তাদের, অনেক ঘটনা যা প্রভুর দিনে ঘটবে বলে সতর্ক করেন। বিগত ৮০ বছরের মধ্যে বহু সংখ্যক ঘটনা ইতিমধ্যে ঘটে গেছে: রাজ্যের জন্ম; স্বর্গে যুদ্ধ এবং তারপর শয়তান ও তার মন্দ দূতেদের পরাজয়, তারপর পৃথিবীর সান্নিধ্যে তাদের আবদ্ধ করা; মহতী বাবিলের পতন; অষ্টম বিশ্বশক্তি, সিন্দুর-বর্ণের পশুর উত্থান। প্রকাশিত বাক্যের ভাববাণীর এই বিষয়গুলির পরিপূর্ণতা আরও নিশ্চিত করে এই বাকি চমকপ্রদ ঘটনাগুলি যা আমরা শীঘ্রই দেখব: ১,৪৪,০০০ জন সদস্যের শেষ জনের মুদ্রাঙ্কিকরণ, বিস্তর লোকের সম্পূর্ণ একত্রীকরণ, মহতী বাবিলের ধ্বংস, হর্মাগিদোনের যুদ্ধ, শয়তানের অগাধলোকে বদ্ধ এবং খ্রীষ্টের হাজার বছরের রাজত্ব। যীশুর সাবধানবাণীতে আমাদের মনোযোগ দেওয়া কতই না গুরুত্বপূর্ণ: “দেখ, আমি চোরের ন্যায় আসিতেছি; ধন্য সেই ব্যক্তি, যে জাগিয়া থাকে, এবং আপন বস্ত্র রক্ষা করে, যেন সে উলঙ্গ হইয়া না বেড়ায়, এবং লোকে তাহার অপমান না দেখে।”—প্রকা. ১৬:১৫.
১১ আমরা কি জেগে আছি? ভাববাণীমূলক বাক্যটিকে আমরা কতটা গুরুত্বপূর্ণভাবে নিই? ৫ বছর আগে অথবা ৫০ বছর আগে যখনই আমাদের জীবন আমরা যিহোবার কাছে উৎসর্গ করে থাকি না কেন রোমীয় খ্রীষ্টানদের প্রতি পৌলের বাক্যগুলি আমাদের প্রতি যথার্থভাবে প্রযোজ্য: “তোমরা এই কাল জ্ঞাত আছ; ফলতঃ এখন তোমাদের নিদ্রা হইতে জাগিবার সময় হইল; কেননা যখন আমরা বিশ্বাস করিয়াছিলাম, তখন অপেক্ষা এখন পরিত্রাণ আমাদের আরও সন্নিকট। রাত্রি প্রায় গেল, দিবস আগতপ্রায়।” তারপর পৌল খ্রীষ্টানদের “অন্ধকারের ক্রিয়া সকল ত্যাগ” করতে এবং “শিষ্ট ভাবে” চলতে উপদেশ দেন। (রোমীয় ১৩:১১-১৩) আমরা এমন একটি জগতে বাস করি যা নৈতিক দিক দিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকার। মাত্র ৩০ বা ৪০ বছর আগে যেটি ছিল জঘন্য আচরণ তা এই বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকে অনেকের কাছে সাধারণ বিষয়। ভাইয়েরা সাবধান, আপনারা নিজেদেরকে কখনও যেন জগতের অন্ধকারের মধ্যে ভাসিয়ে দেবেন না এবং নৈতিকভাবে অমনোযোগী হতে দেবেন না। এই জগতের নিম্নমানের চিন্তাধারায় এবং জীবনের পথে যদি আপনি নিজেকে অনুমোদনকারী অথবা সহনশীল হতে দেন, তাহলে আপনি সেই মহান বিষয়গুলির অন্তর্দৃষ্টি হারাবেন যা বর্তমানে আমাদের সামনে আছে এবং শীঘ্রই যার চিরকালীন সমাধান হবে: যিহোবার সার্বভৌমত্বের প্রতিষ্ঠা এবং তাঁর নামের পবিত্রকরণ। আধ্যাত্মিক অমনোযোগীতা একজনের পরিত্রাণ যা এখন খুব কাছেই রয়েছে ঝুঁকিতে ফেলবে।
১২ ভাববাণীমূলক বাক্যের জন্য হৃদয়ে উপলব্ধি বাড়ান: প্রাচীন ইব্রীয় ভাববাদীরা মশীহ সম্বন্ধে তাদের আত্মায়-অনুপ্রাণিত বাক্যগুলির পরিপূর্ণতায় গভীরভাবে আগ্রহী ছিলেন। তারা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যের পরিপূর্ণতা সম্বন্ধে “সযত্নে আলোচনা ও অনুসন্ধান” করেছিলেন। (১ পিতর ১:১০, ১১) একইভাবে, যদি আপনি প্রকাশিত বাক্যের ভাববাণীমূলক বাক্যের প্রতি মনোযোগ দেন, তাহলে আধ্যাত্মিক বিষয়গুলির প্রতি আপনার উপলব্ধি বৃদ্ধি পাবে। আপনার আধ্যাত্মিক ক্ষুধা প্রগাঢ় হবে, যাতে করে আপনি “ঈশ্বরের গভীর বিষয় সকলও” অনুসন্ধান করতে পারবেন। (১ করি. ২:১০) যদি আপনি আপনার হৃদয় উপলব্ধিতে এবং ভাববাণীমূলক বাক্যের প্রতি ভালোবাসায় ভরিয়ে তোলেন, তাহলে সভাগুলিতে যোগদান করতে আপনাকে উৎসাহ দিতে কারও প্রয়োজন হবে না; আপনি নিজেই যোগদান করতে ও নিয়মিতভাবে অংশগ্রহণ করতে প্ররোচিত হবেন। (লূক ৬:৪৫) আর যদি ‘সেই বার্ত্তা আপনার হৃদয়ে’ থাকে, তাহলে ‘পরিত্রাণের জন্য মুখে স্বীকার করতে’ আপনি প্ররোচিত হবেন।—রোমীয় ১০:৮-১০.
১৩ আমরা সময়ের শেষের যত গভীরে প্রবেশ করছি, ঈশ্বরের ভাববাণীমূলক ঘোষণায় আমাদের অটল বিশ্বাসের জন্য আরও বেশি উপহাসকেরা আমাদের বিদ্রূপ করবে। (২ পিতর ৩:৩, ৪) তবুও, ভাববাণীমূলক বাক্যের প্রতি আমরা সচেতন থাকব। ঈশ্বরের বাক্যের প্রদীপ আমাদের দেখায় সময়ের প্রবাহে আমরা কোথায় আছি। এটি স্পষ্টভাবে বিষয়টি আলোকিত করে যে আমরা এই অন্ধকার জগতের শেষ সময়ে আছি। প্রভাতীয় তারা উদিত হয়েছে! খ্রীষ্ট রাজ্যের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত! একটি নতুন দিনের আরম্ভ আমরা ইতিমধ্যেই প্রতীয়মান হতে দেখছি। ঈশ্বরের নতুন জগতের প্রতিজ্ঞা আমাদের কাছে বাস্তব হোক যেমন সেই রাজ্য বাস্তব ছিল তিনজন প্রেরিতদের কাছে, যারা যীশুর রূপান্তরের অলৌকিক দর্শনে তার এক পূর্বাভাষ দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন!