”জাগিয়া থাক”
১ মথি ২৬:৩৮-৪১ পদে লিপিবদ্ধ করা কথাগুলি যখন যীশু বলেছিলেন, তখন তিনি তাঁর মানব অস্তিত্বের সবচেয়ে চরম সময়ে এসে পৌঁছেছিলেন। সমগ্র মানব ইতিহাসে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় বলে প্রমাণিত হবে। সমগ্র মানবজাতির পরিত্রাণ বিপন্ন ছিল। যীশুর শিষ্যদের ‘জাগিয়া থাকার’ প্রয়োজন ছিল।
২ আজকে আমরা যীশুর পরিত্রাতা এবং বিনাশকারী হিসাবে দ্বৈত ভূমিকায় উপস্থিত হওয়ার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছি। জাগ্রত খ্রীষ্টান হিসাবে সেই সময়ের গুরুত্বতা উপলব্ধি করে পরিত্রাণের জন্য হাত গুটিয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে আরামে বসে থাকি না। আমরা জানি যে আমাদের সব সময়ে অবশ্যই তৎপর থাকতে হবে। তাই আমাদের জন্য প্রয়োজন হল আমরা যেন যিহোবার পরিচর্যায় “পরিশ্রম ও প্রাণপণ” করি। (১ তীম. ৪:১০) ব্যক্তিগতভাবে আমাদের প্রত্যেকের সম্বন্ধে কী বলা যেতে পারে? আমরা কি জাগ্রত আছি?
৩ আমাদের নিজেদের পরীক্ষা করা: যীশু আরও সাবধান করে দিয়েছিলেন: “আপনাদের বিষয়ে সাবধান থাকিও।” (লুক ২১:৩৪, ৩৫) আমরা অবশ্যই নিজেদের প্রতি মনোযোগী হব নিশ্চিত করে যে, আমরা “অনিন্দনীয় ও অমায়িক . . . এই কালের সেই কুটিল ও বিপথগামী লোকেদের মধ্যে।” (ফিলি. ২:১৫) খ্রীষ্টান হিসাবে আমরা কি প্রতিদিন জীবনযাপন, যীশুকে অনুকরণ করছি এবং ঈশ্বরের বাক্যে উল্লেখিত নীতিগুলির সাথে সামঞ্জস্য রেখে চলছি? আমাদের অবশ্যই অখ্রীষ্টীয় আচরণ যা জগতের বৈশিষ্ট্য আর যেটি “সেই পাপাত্মার মধ্যে শুইয়া রহিয়াছে” তা এড়িয়ে চলতে হবে। (১ যোহন ৫:১৯; রোমীয় ১৩:১১-১৪) যখন আমরা শাস্ত্রের আলোতে নিজেদের পরীক্ষা করি, তখন কি আমরা সত্যই জেগে আছি যেমন যীশু নির্দেশ দিয়েছিলেন?
৪ মণ্ডলীতে তাদের বহনের ক্ষেত্রে প্রাচীনেরা অবশ্যই সতর্ক থাকবেন এই জেনে যে তারা কিভাবে তাদের পালের যত্ন নিচ্ছেন সেই বিষয়ে তাদের নিকাশ দিতে হবে। (ইব্রীয় ১৩:১৭) তাদের পরিবারকে যিহোবার পথ অনুযায়ী পরিচালনা করার ক্ষেত্রে পরিবারের মস্তকের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। (আদি. ১৮:১৯; যিহো. ২৪:১৫; তুলনা করুন ১ তীমথিয় ৩:৪, ৫.) এছাড়াও, একে অপরকে প্রেম করা সম্বন্ধে শাস্ত্রীয় আদেশটি পরিপূর্ণ করা আমাদের সকলের জন্য কতই না গুরুত্বপূর্ণ! এটি হল সত্য খ্রীষ্টতত্বের চিহ্ন।—যোহন ১৩:৩৫.
৫ অন্যদের সাবধান করার জন্য সতর্ক থাকুন: জেগে থাকার অর্থ নিজেদের প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার থেকে আরও বেশি কিছু বুঝায়। অন্যদের শিষ্য করতে আমাদের আদেশ দেওয়া হয়েছে। (মথি ২৮:১৯, ২০) প্রতিবেশীর প্রতি প্রেম আমাদের প্ররোচিত করা উচিত অন্যদের সাবধান করতে যাতে করে তারা হয়ত এই জগতের উপর আসন্ন ধ্বংস থেকে রক্ষা পেতে পারে। সকল খ্রীষ্টানদের উপর এটি হল একটি দায়িত্ব। এটি হল আমাদের উপাসনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। (রোমীয় ১০:৯, ১০; ১ করি. ৯:১৬) এই জীবনরক্ষাকারী কাজ করার সময়ে আমরা প্রায়ই অনীহা অথবা সরাসরি বিরোধিতার সম্মুখীন হই। আমাদের লেগে থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে, এমনকি যদিও বেশির ভাগ, আমাদের এই সাবধানবাণী অবজ্ঞা করে থাকে। (যিহি. ৩৩:৮, ৯) ঈশ্বর ও প্রতিবেশীর প্রতি প্রকৃত প্রেম আমাদের অধ্যবসায়ের সাথে তা করতে প্ররোচিত করবে।
৬ এটি আত্মতুষ্টির সময় নয়। হয় আমরা জীবনের দৈনন্দিন উদ্বিগ্নতাগুলিকে আমাদের বিক্ষেপ করতে দেব না কিংবা এই জগতের বিলাসিতার এত বেশি জড়িত হব না যাতে তা এক ফাঁদস্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়। (লূক ২১:৩৪, ৩৫) যদি কোন তৎপরতার প্রয়োজন হয়, তাহলে তা হল এখনই। এই দুষ্ট ব্যবস্থার উপর যীশু খ্রীষ্টের বিচারাজ্ঞার সময় দ্রুতভাবে এগিয়ে আসছে। কেবলমাত্র যারা সচেতন, সতর্ক এবং জাগ্রত তারাই রক্ষা পাবে। যদি আমরা যীশুর নির্দেশ মেনে চলি এবং “এই যে সকল ঘটনা . . ., তাহা এড়াইতে” পারি, তাহলে আমরা কতই না কৃতজ্ঞ হব!—লূক ২১:৩৬.