যত লোকের কাছে সম্ভব পৌঁছানো
১ যিশুর প্রাথমিক অনুসারীরা রাজ্যের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করেছিল। তারা যত লোকের কাছে সম্ভব সুসমাচার পৌঁছে দেওয়ার জন্য ব্যবহারিক পদক্ষেপগুলো নিয়েছিল। খ্রিস্টান বাইবেল লেখকরা তাদের অনুপ্রাণিত লেখাগুলোকে সাধারণ গ্রিক ভাষায় লিখেছিল, যেটা রোমীয় সাম্রাজের আন্তর্জাতিক ভাষা ছিল। এ ছাড়া, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতাব্দী থেকে সম্ভবত উদ্যোগী প্রচারকরাই প্রথম কোডেক্স ব্যবহার করা শুরু করে, যেটার সাহায্যে বিভিন্ন রেফারেন্স দেখা, গোটানো পুস্তকের চেয়ে সহজ ছিল।
২ প্রযুক্তিবিদ্যাকে কাজে লাগানো: ভাববাদী যিশাইয়ের মাধ্যমে যিহোবা এই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন: “তুমি জাতিগণের দুগ্ধ পান করিবে।” (যিশা. ৬০:১৬) এই ভবিষ্যদ্বাণীর আধুনিক দিনের পরিপূর্ণতায়, যিহোবার দাসেরা প্রচার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জাতিগণের মূল্যবান বিভিন্ন সম্পদকে কাজে লাগাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, চলচ্চিত্র বাণিজ্যিক দিক দিয়ে সাফল্য পাওয়ার বহু বছর আগে, ১৯১৪ সালে বাইবেল ছাত্ররা “ফটো-ড্রামা অফ ক্রিয়েশন” দেখাতে শুরু করেছিল। কথাবার্তাসহ আট ঘন্টার এই রঙিন চলচ্চিত্র এবং স্লাইডের সাহায্যে দেখানো উপস্থাপনা লক্ষ লক্ষ লোকের কাছে এক জোরালো সাক্ষ্য দিয়েছিল।
৩ আজকে, ঈশ্বরের লোকেরা শত শত ভাষায় বাইবেল ও বাইবেল সাহিত্যাদি ছাপানোর জন্য দ্রুতগতি সম্পন্ন ছাপার যন্ত্রগুলো এবং কম্পিউটার চালিত অন্যান্য যন্ত্র কাজে লাগাচ্ছে। দ্রুতগতির পরিবহণ ব্যবস্থা বাইবেল সাহিত্যাদি পৃথিবীর দূরদূরান্ত পর্যন্ত, দ্বীপ ও দেশ মিলিয়ে ২৩৫টা জায়গায় লোকেদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। যিহোবা তাঁর আত্মার মাধ্যমে এই ধরনের প্রযুক্তিবিদ্যাকে ব্যবহারিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য তাঁর দাসদের অনুপ্রাণিত করেছেন, ফলে বাইবেলের সত্য অনেক লোকের কাছে প্রাপ্তিসাধ্য হচ্ছে, যা ইতিহাসে আগে কখনো ঘটেনি।
৪ ব্যক্তিগত রদবদল: এ ছাড়া, সত্য উপাসকরা অনেক লোকের কাছে সুসমাচার নিয়ে পৌঁছাতে ব্যক্তিগত রদবদলগুলো করার জন্যও পরিচালিত হয়েছে। অনেকে প্রচার কাজে আরও বেশি করে অংশ নেওয়ার জন্য নিজেদের জীবনযাত্রার মানকে সাধাসিধে রেখেছে। কেউ কেউ সেবা করার জন্য এমন জায়গায় চলে গিয়েছে, যেখানে রাজ্যের ঘোষণাকারীদের বেশি প্রয়োজন রয়েছে। অন্যেরা একটা নতুন ভাষা শেখার দ্বারা তাদের পরিচর্যাকে সম্প্রসারিত করেছে।
৫ এ ছাড়া, লোকেরা যখন ঘরে থাকে, তখন এবং যেখানে লোকেদের পাওয়া যেতে পারে, সেখানে প্রচার করে আমরা আরও অনেক লোকের কাছে সুসমাচার পৌঁছে দিতে পারি। আপনার এলাকায় যদি লোকেরা প্রায়ই দিনের বেলা বাড়িতে না থাকে, তা হলে বিকেলে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আপনার তালিকায় কি আপনি একটু রদবদল করতে পারেন? জনসাধারণের এমন জায়গাগুলো কি রয়েছে, যেখানে সাক্ষ্য দেওয়া যেতে পারে? আপনি কি টেলিফোনে সাক্ষ্যদান এবং ব্যবসায়িক এলাকাগুলোতে কাজ করার চেষ্টা করেছেন? আপনি কি রীতিবহির্ভূতভাবে সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগগুলো খুঁজে থাকেন?
৬ যিহোবার নাম ও রাজ্য সম্বন্ধে যে-ব্যাপক সাক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে তাতে অংশ নেওয়া আমাদের জন্য কি এক বিশেষ সুযোগ! তাই আমরা যত লোকের কাছে সম্ভব ঈশ্বরের বাক্য থেকে জীবনদায়ী সত্য যেন ক্রমাগত জানিয়ে যাই।—মথি ২৮:১৯, ২০.
[অধ্যয়ন প্রশ্নাবলি]
১. প্রাথমিক খ্রিস্টানরা সুসমাচার নিয়ে যত লোকের কাছে সম্ভব পৌঁছাতে কী করেছিল?
২, ৩. (ক) আধুনিক দিনে যিশাইয় ৬০:১৬ পদ কীভাবে পরিপূর্ণতা লাভ করছে? (খ) সত্য উপাসনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কীভাবে প্রযুক্তিবিদ্যাকে কাজে লাগানো হচ্ছে?
৪. সুসমাচার নিয়ে অনেক লোকের কাছে পৌঁছানোর জন্য কেউ কেউ তাদের জীবনে কোন রদবদলগুলো করেছে?
৫, ৬. স্থানীয় এলাকায় যত লোকের কাছে সম্ভব পৌঁছানোর জন্য কী করা যেতে পারে?