অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৭
আমরা আমাদের পিতা যিহোবাকে খুব ভালোবাসি
“আমরা প্রেম করি, কারণ তিনিই প্রথমে আমাদিগকে প্রেম করিয়াছেন।”—১ যোহন ৪:১৯.
গান সংখ্যা ২৩ যিহোবা, মোদের বল
সারাংশa
১-২. কেন ও কীভাবে যিহোবা আমাদের জন্য তাঁর পরিবারের সদস্য হওয়ার পথ খুলে দিয়েছেন?
যিহোবা আমাদের তাঁর উপাসকদের নিয়ে গঠিত পরিবারের সদস্য হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এটা কতই-না চমৎকার এক আমন্ত্রণ! আমাদের পরিবার এমন ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত, যারা ঈশ্বরের কাছে নিজেকে উৎসর্গ করেছে এবং তাঁর পুত্রের দ্বারা জোগানো মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানের উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে। আমাদের পরিবার হল এক সুখী পরিবার। আমরা এখনই এক উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবন উপভোগ করি এবং এক অন্তহীন জীবন লাভ করার আশায় আনন্দ করি, হোক তা স্বর্গে অথবা পরমদেশ পৃথিবীতে।
২ যিহোবা প্রেমের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এবং এক উচ্চমূল্য দিয়ে আমাদের জন্য তাঁর পরিবারের সদস্য হওয়ার পথ খুলে দিয়েছেন। (যোহন ৩:১৬) আমরা ‘মূল্য দ্বারা ক্রীত হইয়াছি।’ (১ করি. ৬:২০) মুক্তির মূল্যের মাধ্যমে যিহোবা আমাদের জন্য তাঁর সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলাকে সম্ভবপর করে তুলেছেন। আমরা নিখিল বিশ্বের সবচেয়ে মহান ব্যক্তিকে পিতা বলে ডাকার সম্মান পেয়েছি। আর আগের প্রবন্ধে আমরা যেমন বিবেচনা করেছি, যিহোবা হলেন একজন আদর্শ পিতা।
৩. আমরা হয়তো কোন প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করতে পারি? (এ ছাড়া, “যিহোবা কি আমাকে লক্ষ করেন?” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।)
৩ একজন বাইবেল লেখকের মতো আমরা হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারি: “আমি সদাপ্রভু হইতে যে সকল মঙ্গল পাইয়াছি, তাহার পরিবর্ত্তে তাঁহাকে কি ফিরাইয়া দিব?” (গীত. ১১৬:১২) উত্তরটা হল আমরা কখনোই আমাদের স্বর্গীয় পিতার ঋণ শোধ করতে পারব না। তারপরও, আমরা তাঁকে ভালোবাসতে অনুপ্রাণিত হই। প্রেরিত যোহন লিখেছিলেন: “আমরা প্রেম করি, কারণ তিনিই প্রথমে আমাদিগকে প্রেম করিয়াছেন।” (১ যোহন ৪:১৯) কোন কোন উপায়ে আমরা আমাদের স্বর্গীয় পিতাকে দেখাতে পারি যে, আমরা তাঁকে ভালোবাসি?
যিহোবার নিকটে থাকুন
আমরা প্রার্থনায় যিহোবার নিকটবর্তী থাকার, বাধ্য হওয়ার এবং অন্যদের তাঁকে ভালোবাসতে সাহায্য করার মাধ্যমে দেখাই যে, আমরা আমাদের স্বর্গীয় পিতাকে খুবই ভালোবাসি (৪-১৪ অনুচ্ছেদ দেখুন)
৪. যাকোব ৪:৮ পদ অনুযায়ী কেন আমাদের যিহোবার নিকটে থাকার জন্য প্রচেষ্টা করা উচিত?
৪ যিহোবা চান যেন আমরা তাঁর নিকটবর্তী হই এবং তাঁর সঙ্গে ভাববিনিময় করি। (পড়ুন, যাকোব ৪:৮.) তিনি আমাদের ‘প্রার্থনায় নিবিষ্ট থাকিবার’ বিষয়ে জোরালো পরামর্শ দেন এবং তিনি আমাদের কথা শোনার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকেন। (রোমীয় ১২:১২) তিনি কখনো এতটা ব্যস্ত হয়ে যান না অথবা ক্লান্ত হয়ে পড়েন না যে, আমাদের কথা শোনার মতো তাঁর কাছে সময় থাকে না। আর আমরা কীভাবে যিহোবার কথা শুনি? আমরা তাঁর বাক্য বাইবেল পড়ার ও সেইসঙ্গে এটি বোঝার জন্য প্রকাশনাদি পড়ার মাধ্যমে তাঁর কথা শুনি। এ ছাড়া, আমরা খ্রিস্টীয় সভাগুলোতে পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার মাধ্যমে তাঁর কথা শুনি। ঠিক যেমন উত্তম ভাববিনিময় সন্তানদের বাবা-মায়ের নিকটে থাকতে সাহায্য করে, একইভাবে যিহোবার সঙ্গে নিয়মিতভাবে ভাববিনিময় করা আমাদেরকে তাঁর নিকটে থাকতে সাহায্য করে।
৫ অনুচ্ছেদ দেখুন
৫. কীভাবে আমরা প্রার্থনার গুণগত মানকে আরও ভালো করতে পারি?
৫ ঈশ্বরের সঙ্গে আপনার ভাববিনিময়ের গুণগত মানের বিষয়ে একটু চিন্তা করুন। যিহোবা চান যেন আমরা হৃদয় উজাড় করে তাঁর কাছে প্রার্থনা করি। (গীত. ৬২:৮) আমাদের নিজেদের এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা উচিত: ‘আমি কি আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করি, না কি সবসময় একই কথা পুনরাবৃত্তি করি অথবা তা গতানুগতিক হয়ে গিয়েছে?’ কোনো সন্দেহ নেই, আপনি যিহোবাকে মনে-প্রাণে ভালোবাসেন এবং আপনি তাঁর সঙ্গে এক দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখতে চান। এমনটা করার জন্য আপনাকে অবশ্যই নিয়মিতভাবে তাঁর সঙ্গে ভাববিনিময় করতে হবে। তাঁর কাছে আপনার ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ করুন। আপনার সুখ-দুঃখ তাঁর সঙ্গে ভাগ করে নিন। আপনি যে তাঁর কাছে সাহায্য চাইতে পারেন, সেই বিষয়ে আস্থা রাখুন।
৬. আমাদের স্বর্গীয় পিতার নিকটে থাকার জন্য আমাদের অবশ্যই কী করতে হবে?
৬ আমাদের স্বর্গীয় পিতার নিকটে থাকার জন্য আমাদের অবশ্যই এক কৃতজ্ঞতার মনোভাব বজায় রাখতে হবে। আমরা গীতরচকের সঙ্গে একমত, যিনি লিখেছিলেন: “সদাপ্রভু আমার ঈশ্বর, তুমিই বাহুল্যরূপে সাধন করিয়াছ আমাদের পক্ষে তোমার আশ্চর্য্য কার্য্য সকল ও তোমার সঙ্কল্প সকল; তোমার তুল্য কেহ নাই; আমি সে সকল বলিতাম ও বর্ণনা করিতাম, কিন্তু সে সকল গণনা করা যায় না।” (গীত. ৪০:৫) আমরা কেবল উপলব্ধি বোধ করার চেয়ে আরও বেশি কিছু করি, আমরা কথা ও কাজের মাধ্যমে যিহোবার প্রতি আমাদের উপলব্ধিবোধ প্রকাশ করি। এটা দেখায় যে, আমরা আজকের দিনের অনেক লোকের চেয়ে আলাদা। আমরা এমন এক জগতে বাস করি, যেখানে লোকেরা সেইসমস্ত কাজের প্রতি উপলব্ধি দেখায় না, যেগুলো ঈশ্বর তাদের জন্য করেছেন। সত্যি বলতে কী, আমরা যে “শেষ কালে” বাস করছি, সেটার একটা চিহ্ন হল লোকেরা অকৃতজ্ঞ। (২ তীম. ৩:১, ২) আমরা এইরকম ব্যক্তি হতে চাই না!
৭. যিহোবা আমাদের কাছ থেকে কী চান এবং কেন?
৭ বাবা-মায়েরা চান যেন সন্তানরা একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া না করে বন্ধুর মতো থাকে। একইভাবে, যিহোবাও চান যেন তাঁর সমস্ত উপাসক একে অপরের সঙ্গে বন্ধুর মতো আচরণ করে। সত্যি বলতে কী, আমাদের মধ্যে থাকা প্রেমই আমাদের সত্য খ্রিস্টান হিসেবে শনাক্ত করে। (যোহন ১৩:৩৫) আমরা গীতরচকের সঙ্গে একমত, যিনি লিখেছিলেন: “ইহা কেমন উত্তম ও কেমন মনোহর যে, ভ্রাতারা একসঙ্গে ঐক্যে বাস করে!” (গীত. ১৩৩:১) আমরা যখন আমাদের ভাই-বোনদের ভালোবাসি, তখন আমরা যিহোবার কাছে এটা প্রমাণ করি যে, আমরা তাঁকে ভালোবাসি। (১ যোহন ৪:২০) আমরা এমন এক পরিবারের সদস্য হতে পেরে কতই-না আনন্দিত, যেখানে ভাই-বোনেরা ‘পরস্পরের’ প্রতি ‘মধুরভাব [‘দয়া,’ বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন] ও করুণা’ দেখিয়ে আচরণ করে!—ইফি. ৪:৩২.
বাধ্য হওয়ার মাধ্যমে আপনার ভালোবাসা প্রকাশ করুন
৮ অনুচ্ছেদ দেখুন
৮. প্রথম যোহন ৫:৩ পদ অনুযায়ী যিহোবার প্রতি বাধ্যতা দেখানোর প্রধান কারণ কী?
৮ যিহোবা সন্তানদের কাছ থেকে আশা করেন যেন তারা তাদের বাবা-মায়ের বাধ্য হয় এবং তিনি আমাদের কাছ থেকে আশা করেন যেন আমরা তাঁর বাধ্য হই। (ইফি. ৬:১) এটা যিহোবার প্রাপ্য কারণ তিনি হলেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা, আমাদের জীবনের রক্ষাকর্তা এবং সমস্ত বাবা-মায়ের চেয়ে বিজ্ঞ। তবে, যিহোবার প্রতি বাধ্যতা দেখানোর প্রধান কারণ হল আমরা তাঁকে ভালোবাসি। (পড়ুন, ১ যোহন ৫:৩.) যদিও যিহোবার প্রতি বাধ্যতা দেখানোর পিছনে আমাদের কাছে অনেক কারণ রয়েছে কিন্তু তারপরও যিহোবা আমাদের বাধ্যতা দেখানোর জন্য জোর করেন না। যিহোবা উপহার হিসেবে আমাদের স্বাধীন ইচ্ছা দিয়েছেন আর আমরা যখন তাঁর প্রতি ভালোবাসার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বাধ্যতা দেখানো বেছে নিই, তখন তিনি খুশি হন।
৯-১০. ঈশ্বরের মান সম্বন্ধে জানা এবং সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
৯ বাবা-মায়েরা চান যেন তাদের সন্তানরা নিরাপদে থাকে। তাই তারা বিভিন্ন নিয়ম তৈরি করেন, যেগুলো তাদের সন্তানদের সুরক্ষিত রাখে। সন্তানরা সেই নিয়মগুলো মেনে চলার মাধ্যমে তাদের বাবা-মায়ের প্রতি আস্থা ও সম্মান দেখিয়ে থাকে। তাই, আমাদের স্বর্গীয় পিতার মান সম্বন্ধে জানা এবং সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করা কতই-না গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন এমনটা করি, তখন আমরা যিহোবার প্রতি প্রেম ও সম্মান দেখাই আর সেইসঙ্গে আমরা নিজেরা উপকৃত হই। (যিশা. ৪৮:১৭, ১৮) এর বিপরীতে, যারা যিহোবা ও তাঁর মানগুলোকে প্রত্যাখ্যান করে, তারা শেষপর্যন্ত নিজেদেরই ক্ষতি করে।—গালা. ৬:৭, ৮.
১০ আমরা যখন এমনভাবে জীবনযাপন করি, যেটা যিহোবাকে খুশি করে, তখন আমরা নিজেদের শারীরিক, আবেগগত ও আধ্যাত্মিক ক্ষতির হাত থেকে সুরক্ষিত রাখি। আমাদের জন্য সর্বোত্তমটা কী, তা যিহোবা জানেন। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বোন আরোরা বলেন, “আমি জানি, যিহোবার বাধ্য হওয়ার মাধ্যমে আমরা যথাসম্ভব সর্বোত্তম জীবন লাভ করতে পারি।” এটা সবসময়ই সত্য। যিহোবার প্রেমময় নির্দেশনার বাধ্য হওয়ার মাধ্যমে আপনি কীভাবে উপকৃত হয়েছেন?
১১. প্রার্থনা আমাদের কী করতে সাহায্য করে?
১১ প্রার্থনা আমাদের বাধ্যতা দেখাতে সাহায্য করে আর তা এমনকী সেইসময়েও, যখন তা দেখানো কঠিন হয়। আমরা পাপী হওয়ার কারণে আমাদের পক্ষে কখনো কখনো যিহোবার প্রতি বাধ্যতা দেখানো কঠিন হয় কিন্তু তাঁর অবাধ্য না হওয়ার জন্য আমাদের অবশ্যই সবসময় কঠোর প্রচেষ্টা করতে হবে। একজন গীতরচক ঈশ্বরের কাছে এই মিনতি করেছিলেন: “আমাকে বিবেচনা দেও, আমি তোমার ব্যবস্থা মানিব, সর্ব্বান্তঃকরণে তাহা পালন করিব।” (গীত. ১১৯:৩৪) ডানিস নামে একজন অগ্রগামী বোন বলেন, “আমি যখন যিহোবার কোনো আজ্ঞা পালন করাকে কঠিন বলে মনে করি, তখন আমি যা সঠিক, তা করার জন্য শক্তি চেয়ে প্রার্থনা করি।” আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, যিহোবা সবসময় এই ধরনের প্রার্থনার উত্তর দেবেন।—লূক ১১:৯-১৩.
অন্যদের সাহায্য করুন যেন তারা আমাদের পিতাকে ভালোবাসে
১২. ইফিষীয় ৫:১ পদ অনুযায়ী আমাদের কী করা উচিত?
১২ ইফিষীয় ৫:১ পদ পড়ুন। যিহোবার ‘প্রিয় বৎস’ হিসেবে আমরা তাঁকে অনুকরণ করার জন্য আমাদের সর্বোত্তমটা করি। আমরা যখন অন্যদের সঙ্গে আচরণ করার সময় প্রেম, দয়া ও ক্ষমার মতো গুণগুলো দেখাই, তখন আমরা তাঁর গুণাবলি অনুকরণ করি। ঈশ্বরকে জানে না, এমন ব্যক্তিরা যখন আমাদের ভালো গুণগুলো দেখে, তখন তারা হয়তো তাঁর সম্বন্ধে আরও বেশি জানার জন্য অনুপ্রাণিত হতে পারে। (১ পিতর ২:১২) যিহোবা যেভাবে আমাদের সঙ্গে আচরণ করেন, সেভাবে খ্রিস্টান বাবা-মায়েদেরও তাদের সন্তানদের সঙ্গে আচরণ করা উচিত। তারা যখন তা করেন, তখন তাদের সন্তানরাও হয়তো আমাদের প্রেমময় পিতার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে আগ্রহী হতে পারে।
১৩ অনুচ্ছেদ দেখুন
১৩. আমাদের কোন বিষয়গুলোর উপর মনোযোগ দিতে হবে?
১৩ অল্পবয়সি সন্তানরা সাধারণত তাদের বাবার বিষয়ে গর্ব বোধ করে এবং আনন্দের সঙ্গে তার সম্বন্ধে কথা বলে। একইভাবে, আমরা আমাদের স্বর্গীয় পিতা যিহোবার বিষয়ে গর্ব বোধ করি এবং চাই যেন অন্যেরা তাঁর সম্বন্ধে জানে। আমরা সবাই রাজা দায়ূদের মতোই অনুভব করি, যিনি লিখেছিলেন: “আমার প্রাণ সদাপ্রভুরই শ্লাঘা” বা গর্ব “করিবে।” (গীত. ৩৪:২) কিন্তু, আমরা হয়তো লাজুক স্বভাবের কারণে যিহোবা সম্বন্ধে কথা বলাকে অনেক কঠিন বলে মনে করি। কীভাবে আমরা সাহসী হতে পারি? আমরা যখন এই বিষয়গুলোর উপর মনোযোগ দিই যে, আমরা যিহোবাকে কতটা খুশি করতে পারি এবং অন্যেরা যিহোবা সম্বন্ধে জানার মাধ্যমে কতটা উপকৃত হবে, তখন আমরা আরও বেশি সাহসী হয়ে উঠতে পারি। যিহোবা আমাদের প্রয়োজনীয় সাহস প্রদান করবেন। তিনি প্রথম শতাব্দীর ভাইদের সাহসী হয়ে উঠতে সাহায্য করেছিলেন আর তিনি আমাদেরও সাহায্য করবেন।—১ থিষল. ২:২.
১৪. কেন শিষ্য তৈরি করার কাজে অংশ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ?
১৪ যিহোবা “মুখাপেক্ষা [“পক্ষপাতিত্ব,” ইজি-টু-রিড ভারশন]” করেন না এবং তিনি যখন দেখেন যে, আমরা অন্যদের প্রতি ভালোবাসা দেখাচ্ছি, তা তাদের পটভূমি যা-ই হোক না কেন, তখন তিনি আনন্দিত হন। (প্রেরিত ১০:৩৪, ৩৫) অন্যদের প্রতি ভালোবাসা দেখানোর একটা সর্বোত্তম উপায় হল তাদের কাছে সুসমাচার জানানো। (মথি ২৮:১৯, ২০) এর ফল কী হতে পারে? যারা আমাদের কথা শোনে, তারা এখনই তাদের জীবনে উন্নতি করতে পারে এবং পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্তজীবন উপভোগ করার প্রত্যাশা লাভ করতে পারে।—১ তীম. ৪:১৬.
আমাদের পিতাকে ভালোবাসুন এবং আনন্দে থাকুন
১৫-১৬. আনন্দে থাকার জন্য আমাদের কাছে কোন কোন কারণ রয়েছে?
১৫ যিহোবা হলেন একজন প্রেমময় পিতা আর তাই তিনি চান যেন তাঁর পরিবারের লোকেরা আনন্দে থাকে। (যিশা. ৬৫:১৪) বর্তমানে, এমনকী কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও আমরা যে আনন্দে থাকতে পারি, সেটার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, আমরা একেবারে নিশ্চিত যে, আমাদের স্বর্গীয় পিতা আমাদের খুবই ভালোবাসেন। আমাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য বাইবেলের সঠিক জ্ঞান রয়েছে। (যির. ১৫:১৬) আর আমরা এক অদ্বিতীয় পরিবারের সদস্য, যে-পরিবারের লোকেরা যিহোবাকে ভালোবাসে, তাঁর নৈতিক মানগুলোকে ভালোবাসে এবং একে অপরকে ভালোবাসে।—গীত. ১০৬:৪, ৫.
১৬ আমরা সবসময় আনন্দে থাকতে পারি কারণ আমরা এই বিষয়ে একেবারে নিশ্চিত যে, ভবিষ্যতে জীবন আরও ভালো হবে। আমরা জানি, শীঘ্রই যিহোবা সমস্ত দুষ্টতা দূর করে দেবেন এবং তাঁর রাজ্যের অধীনে পুরো পৃথিবী পরমদেশে পরিণত হবে। এ ছাড়া, আমাদের এক চমৎকার আশা রয়েছে আর সেটা হল মৃত ব্যক্তিদের পুনরুত্থিত করা হবে এবং আমরা আমাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হওয়ার সুযোগ পাব। (যোহন ৫:২৮, ২৯) সেটা কতই-না আনন্দের এক সময় হবে! আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা হল আমরা এই বিষয়ে নিশ্চিত যে, শীঘ্রই স্বর্গ ও পৃথিবীর সবাই আমাদের প্রেমময় পিতাকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান, প্রশংসা ও ভক্তি প্রদান করবে।
গান সংখ্যা ২ ধন্যবাদ, যিহোবা
a আমরা জানি, আমাদের পিতা যিহোবা ঈশ্বর আমাদের খুব ভালোবাসেন এবং তিনি আমাদের তাঁর উপাসকদের নিয়ে গঠিত পরিবারের সদস্য করে তুলেছেন। আর এর ফলে, আমরাও তাঁকে ভালোবাসতে অনুপ্রাণিত হই। কীভাবে আমরা আমাদের যত্নশীল পিতার প্রতি ভালোবাসা দেখাতে পারি? এই প্রবন্ধে নির্দিষ্ট কিছু বিষয় নিয়ে বিবেচনা করা হবে, যেগুলো আমরা করতে পারি।