পাঠকদের কাছ থেকে প্রশ্ন
খুব শীঘ্রই যিহোবা মানুষের সরকারগুলোর হৃদয়ে কোন “ইচ্ছা” দেবেন?
মহাক্লেশ শুরু হওয়ার বিষয়ে প্রকাশিত বাক্য ১৭:১৬, ১৭ পদ বলে: “তুমি যে-দশটা শিং এবং হিংস্র পশুকে দেখলে, সেগুলো ওই বেশ্যাকে ঘৃণা করবে আর তার সমস্ত কিছু কেড়ে নেবে এবং তাকে উলঙ্গ অবস্থায় ফেলে রাখবে; এরপর এগুলো তার মাংস খেয়ে ফেলবে এবং পরে তাকে আগুনে পুরোপুরিভাবে পুড়িয়ে দেবে। কারণ এই ইচ্ছা ঈশ্বরই এদের হৃদয়ে দিলেন, যেন এরা নিজেদেরই যে-একই উদ্দেশ্য রয়েছে, সেই অনুযায়ী কাজ করে, যেটা আসলে ঈশ্বরেরই উদ্দেশ্য। ঈশ্বর তা করলেন, যাতে এরা . . . এদের শাসন করার ক্ষমতা সেই হিংস্র পশুকে দিয়ে দেয়।” আগে আমাদের প্রকাশনায় বলা হয়েছিল, যিহোবা মানুষের সরকারগুলোর হৃদয়ে মিথ্যা ধর্মকে ধ্বংস করার “ইচ্ছা” দেবেন।
কিন্তু, এই বিষয়ে আমাদের চিন্তাধারায় কিছু রদবদল করার প্রয়োজন রয়েছে। মানুষের সরকারগুলোর হৃদয়ে যিহোবা এই “ইচ্ছা” দেবেন যে, তারা তাদের “শাসন করার ক্ষমতা সেই হিংস্র পশুকে দিয়ে” দেবে। এই ঘটনা কীভাবে ঘটবে, তা বোঝার জন্য আসুন আমরা কয়েকটা প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করি।
এই ভবিষ্যদ্বাণীর প্রধান চরিত্র কারা? (১) “বেশ্যা” অর্থাৎ “মহতী বাবিল” মিথ্যা ধর্মের বিশ্ব সাম্রাজ্যকে চিত্রিত করে। (২) “গাঢ় লাল রঙের এক হিংস্র পশু” জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসংঘকে (ইউনাইটেড নেশন্স) চিত্রিত করে। এই সংঘ ১৯১৯ সালে পুরো পৃথিবীতে শান্তিস্থাপন করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেইসময় এটাকে লিগ অব নেশন্স বলা হত। (প্রকা. ১৭:৩-৫) (৩) “দশটা শিং” মানুষের সরকারগুলোকে চিত্রিত করে, যারা সেই হিংস্র পশুকে সমর্থন করে।
বেশ্যা ও গাঢ় লাল রঙের হিংস্র পশুর মধ্যে কোন সম্পর্ক রয়েছে? এই বেশ্যা হিংস্র পশুর উপর “বসে আছে।” এর মানে হল, বেশ্যা হিংস্র পশুকে সমর্থন করছে এবং তার উপর কর্তৃত্ব করার চেষ্টা করছে।
সেই বেশ্যার প্রতি কী ঘটবে? হিংস্র পশু এবং তার সমর্থনকারী দশটা শিং “ওই বেশ্যাকে ঘৃণা করবে।” এর ফলে, তারা সেই বেশ্যার সমস্ত কিছু লুট করে নেবে এবং সবার সামনে প্রকাশ করে দেবে যে, সেই বেশ্যা কতটা দুষ্ট। আর এভাবে তারা বেশ্যাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেবে, ঠিক যেমনটা যিহোবা তার বিষয়ে বলেছিলেন। (প্রকা. ১৭:১; ১৮:৮) এভাবেই সমস্ত মিথ্যা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের শেষ আসবে। কিন্তু, এই ঘটনা ঘটার আগে যিহোবা মানুষের সরকারগুলোকে দিয়ে এমন কিছু করাবেন, যেটা আগে কখনো ঘটেনি।
যিহোবা মানুষের সরকারগুলোকে দিয়ে কী করাবেন? তিনি দশটা শিং অর্থাৎ সরকারগুলোর হৃদয়ে “এই ইচ্ছা” দেবেন যে, তারা যেন [গাঢ় লাল রঙের] হিংস্র পশু অর্থাৎ জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসংঘকে (ইউনাইটেড নেশন্স) তাদের “ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব দিয়ে দেয়।” (প্রকা. ১৭:১৩) চিন্তা করুন, এর মানে কী? মানুষের সরকারগুলো কি নিজে থেকেই তাদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব হিংস্র পশুকে দিয়ে দেবে? না! ভবিষ্যদ্বাণী দেখায় যে, ঈশ্বর নিজে তাদের এটা করতে প্রভাবিত করবেন। (হিতো. ২১:১; তুলনা করুন, যিশাইয় ৪৪:২৮.) এই ক্ষমতা কি তাদের ধীরে ধীরে দেওয়া হবে? না! এই বিশেষ পরিবর্তনটা হঠাৎ করে আসবে। এবার এই নতুন ক্ষমতা পেয়ে হিংস্র পশু সমস্ত মিথ্যা ধর্মীয় সংগঠনের উপর যিহোবার বিচার নিয়ে আসবে অর্থাৎ চিরকালের জন্য মিথ্যা ধর্মগুলোকে সরিয়ে দেওয়া হবে।
আমরা ভবিষ্যতে কী আশা করতে পারি? আমাদের এমনটা আশা করা উচিত নয় যে, খবরে বলা হবে, সরকার ধীরে ধীরে জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসংঘকে (ইউনাইটেড নেশন্স) আরও সমর্থন করবে। এর পরিবর্তে, আমরা আশা করতে পারি: হঠাৎ করে যিহোবা, সরকারগুলোর হৃদয়ে এই ইচ্ছা দেবেন যেন তারা তাদের ক্ষমতা হিংস্র পশু অর্থাৎ জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসংঘকে (ইউনাইটেড নেশন্স) দিয়ে দেয়। যখন এটা ঘটবে, তখনই আমরা বুঝতে পারব যে, মহাক্লেশ শুরু হতে চলেছে। কিন্তু, যতক্ষণ না এটা শুরু হচ্ছে, আসুন আমরা “জেগে থাকি এবং সচেতন থাকি” কারণ খুব শীঘ্রই হঠাৎ করে অনেক পরিবর্তন ঘটবে।—১ থিষল. ৫:৬.