ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • g০৫ ৪/৮ পৃষ্ঠা ১৬-১৯
  • “সমুদ্র-নগরী” ভেনিস

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • “সমুদ্র-নগরী” ভেনিস
  • ২০০৫ সচেতন থাক!
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • এক অনাকর্ষণীয় স্থান
  • এক প্রজাতন্ত্রের উত্থান ও বিকাশ
  • “ভূমধ্যসাগরের কর্ত্রী”
  • এক স্বপ্নের শহর
  • এখনও টিকে থাকার সংগ্রাম করে চলেছে
  • সুসমাচার ঘোষণা করা থেকে বিরত হবেন না
    ১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
২০০৫ সচেতন থাক!
g০৫ ৪/৮ পৃষ্ঠা ১৬-১৯

“সমুদ্র-নগরী” ভেনিস

ইতালির সচেতন থাক! লেখক কর্তৃক

“এক গৌরবময় সমুদ্র-নগরী রয়েছে। উঁচু-নিচু ঢেউয়ের সঙ্গে সমুদ্রটা চওড়া ও সরু রাস্তায় বয়ে যায়; আর লবণাক্ত সমুদ্র-শৈবাল প্রাসাদগুলোর মর্মরপ্রস্তরে লেপটে থাকে।”—স্যামুয়েল রজার্স, ইংরেজ কবি, ১৮২২.

‘গৌরবময় শহরটা’ হচ্ছে ভেনিস। এক সময়ের এক বিশাল প্রজাতন্ত্রের রাজধানী ভেনিস, শত শত বছর ধরে বিরাট জায়গা জুড়ে রাজত্ব করার ও সমুদ্রের সাম্রাজ্য পাওয়ার গর্বে গর্বিত হতে পারে। কীভাবে ও কেন এই নগরীকে “সমুদ্রের মাঝামাঝিতে” নির্মাণ করা হয়েছিল? এর গৌরবের ভিত্তি কী ছিল? এর সাম্রাজ্য কীভাবে পতিত হয়েছিল এবং আজকে ভেনিসের কোন চমৎকারিত্ব অস্তিত্বে রয়েছে?

এক অনাকর্ষণীয় স্থান

আড্রিয়াটিক সাগরের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে একটা উপহ্রদের মাঝখানে অবস্থিত ভেনিস ১১৮টা দ্বীপ নিয়ে গঠিত। কাছাকাছি সাগরের দিকে প্রবাহিত নদীগুলো উপকূলে অগভীর জলে প্রচুর পরিমাণ পলিমাটি ভাসিয়ে নিয়ে আসে। ঢেউ ও জলস্রোতের ফলে এখানে এক শান্ত উপহ্রদকে ঘিরে পর পর কয়েকটা বালুকাতট গঠিত হয়েছিল, যে-উপহ্রদটি প্রায় ৫১ কিলোমিটার লম্বা ও ১৪ কিলোমিটার প্রশস্ত। সাগরের দিকে তিনটে সরু পথ থাকার ফলে এক মিটার উঁচু ঢেউ বয়ে যেতে এবং নৌকাগুলো আসা-যাওয়া করতে পারে। একটি বই বলে যে, ‘শত শত বছর ধরে, উপহ্রদটা ব্যস্ত বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর বন্দর হয়ে এসেছে, যেগুলো আড্রিয়াটিক সাগর থেকে ওপরের দিকে যাত্রা করে অথবা মধ্য বা উত্তর ইউরোপ থেকে নদীগুলোর কিংবা মরুযাত্রীদের পথের পাশ দিয়ে নীচের দিকে যাত্রা করে।’

পণ্ডিত ব্যক্তিরা সা.কা. পঞ্চম থেকে সপ্তম শতাব্দীর মধ্যে সেই শহরের উৎপত্তি হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে, যে-সময়গুলোতে উত্তরাঞ্চল থেকে একের পর এক বর্বরদের আক্রমণের ঢেউ বয়ে গিয়েছিল, যারা মূল ভূখণ্ডে বসবাসকারী সমাজগুলোকে জ্বালিয়ে ফেলেছিল ও লুঠপাট করেছিল। লুঠকারীদের ভয়ে লোকেরা পালিয়ে গিয়েছিল আর অনেকে উপহ্রদের দ্বীপগুলোতে আশ্রয় নিয়েছিল যেগুলো অসুবিধাজনক হলেও নিরাপদ ছিল।

প্রাচীন নথিপত্র ইঙ্গিত দেয় যে, এখানে নির্মিত প্রথম বাড়িগুলোর ভিত্তি কাদামাটিতে বসানো বিভিন্ন খুঁটি, যেগুলো সরু ডালপালা বা নলখাগড়া দিয়ে বাঁধা, সেগুলোর ওপর গড়ে উঠেছিল। পরবর্তী সময়ে ভেনিসের অধিবাসীরা পাথরের বাড়ি বানিয়েছিল, যেগুলোর ভিত্তি গড়ে উঠেছিল কাঠের তৈরি হাজার হাজার স্তম্ভের ওপর। এর মধ্যে রিয়ালটো উপহ্রদের দ্বীপগুলো, যা পরবর্তী সময়ে শহরের কেন্দ্র হয়ে ওঠে, তা প্রায়ই জলে নিমজ্জিত থাকত আর তাই বিরাট সংখ্যক উপনিবেশকারীদের বাস করার জন্য যথেষ্ট মজবুত কিংবা বড় জায়গা কোনোটাই ছিল না। ভূমি পুনর্বাসনের প্রাথমিক ব্যবস্থা দ্বারা দ্বীপগুলো থেকে জল নিষ্কাশন করে জায়গা বড় করতে হয়েছিল। ফলে, অধিবাসীরা তাদের নৌকাগুলোর জন্য জলপথ খনন করেছিল এবং বাড়িঘর নির্মাণের জন্য আরও ভালভাবে দ্বীপকে দৃঢ়ীভূত করেছিল। খালগুলোর ওপর তৈরি বিভিন্ন সেতু তাদের রাস্তা হয়ে উঠেছিল, যেগুলো এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে হেঁটে যাওয়ার জন্য পথিকদের সুবিধা করে দিয়েছিল।

এক প্রজাতন্ত্রের উত্থান ও বিকাশ

পশ্চিমাঞ্চলে রোমীয় সাম্রাজ্যের পতনের পর, উপহ্রদ দ্বীপগুলো বিজেনটিন সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল, যেটার রাজধানী ছিল কনস্টানটিনোপল, যা বর্তমানে ইস্তানবুল। কিন্তু উপহ্রদের সমাজগুলো বিদ্রোহ করে তাদের স্বাধীনতা দাবি করেছিল। ফলে, ভেনিসের অবস্থা এমন হয়েছিল, যেটাকে ‘ডিউক শাসিত [এক] ক্ষুদ্র স্বাধীন অঞ্চলের অস্বাভাবিক’ অবস্থান হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা ফ্রাঙ্ক ও বিজেনটিন এই ‘দুটো বড় সাম্রাজ্যের কোনোটারই অঞ্চল ছিল না।’ এই অদ্বিতীয় পরিস্থিতি সেই শহরটাকে এক বড় ‘ব্যাবসার দালালের’ মতো গড়ে উঠতে ও সমৃদ্ধি পেতে সমর্থ করেছিল।

পরের শতাব্দীগুলোতে ভেনিস বেশ কয়েকটা সামরিক শক্তির সঙ্গে লড়াই করেছিল, যেগুলোর অন্তর্ভুক্ত ভূমধ্যসাগরের সীমানায় অবস্থিত সারাসান, নরমান, বিজেনটিন। অবশেষে, ভেনিস এই শক্তিগুলোর চেয়ে বেশি প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিল কিন্তু এটা একমাত্র তখনই ঘটেছিল, যখন ১২০৪ সালে তারা ভেনিসের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিদ্বন্দ্বী কনস্টানটিনোপলকে পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করার জন্য চতুর্থ ক্রুসেডের মোড় ঘুরিয়ে ফেলেছিল। ভেনিস অনেক জায়গায় ব্যাবসা-বাণিজ্যের স্থান গড়ে তুলেছিল—কৃষ্ণ সাগর এবং ঈজিয়ান সাগরের উপকূলে ও সেইসঙ্গে গ্রিস, কনস্টানটিনোপল, সিরিয়া, প্যালেস্টাইন, সাইপ্রাস ও ক্রীটে। এই সময়ে ভেনিস সেগুলোর কয়েকটাকে নিজের কর্তৃত্বাধীন অঞ্চলে পরিণত করতে বিজেনটিন সাম্রাজ্যের পতনের সুবিধা নিয়েছিল।

“ভূমধ্যসাগরের কর্ত্রী”

দ্বাদশ শতাব্দীর শুরুতে ভেনিসের বিশাল জাহাজ নির্মাণস্থান প্রতি কয়েক ঘন্টার মধ্যে একটা করে পুরোপুরিভাবে সজ্জিত পাল-তোলা জাহাজ তৈরি করত। স্থানীয় শিল্প কারখানা কাচ ও সুন্দর, দামি কাপড় উৎপাদন করত যেমন লেস, জরি, দামেস্ক চেলি এবং মখমল। ভেনিস ও বিদেশি বণিকরা পশ্চিমা দেশগুলো থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, ঘোড়া, অম্বর, পশুর লোম, কাঠ, পশম, মধু, মোম ও ক্রীতদাসদের নিয়ে এসেছিল। অন্যদিকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় মুসলিম দেশগুলো থেকে সোনা, রুপো, রেশম, মশলা, সূতা, রং, হাতির দাঁত, সুগন্ধি এবং আরও অন্যান্য সামগ্রী আমদানি করা হয়েছিল। শহরের আধিকারিকরা নিশ্চিত করত যে, যে-সমস্ত সামগ্রী এখানকার বাজারে আসত ও এখান থেকে যেত, সেই সমস্ত সামগ্রীর জন্য কর আদায় করা হয়েছে।

বিখ্যাত স্থপতি ও শিল্পী—যেমন পালাডিও, টেশেন এবং টিনটোরেটোর—দ্বারা সৌন্দর্যমণ্ডিত হওয়ায় ভেনিসকে লা সেরেনিসিমা বলে বর্ণনা করা হয়েছিল, যেটার অর্থ হচ্ছে “সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ” বা “সুন্দর।” তাই উপযুক্তভাবেই, এই শহরকে “ভূমধ্যসাগরের কর্ত্রী, . . . সভ্য জগতের সবচেয়ে ধনী ও সবচেয়ে উন্নতিশীল বাণিজ্যিক কেন্দ্র” বলা যেতে পারে। বহু শতাব্দী ধরে, এটা এমনই ছিল কিন্তু এর ক্ষমতা কেবল ষোড়শ শতাব্দীর সময়কালে হ্রাস পেতে শুরু করেছিল, যখন প্রধান বাণিজ্যিক পথগুলো পরিবর্তিত হয়ে আটলান্টিক এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দিকে চলে গিয়েছিল।

ভূমধ্যসাগরের সীমানায় অবস্থিত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ভেনিসের অঞ্চলগুলো কখনও ভৌগোলিক দিক দিয়ে পাশাপাশি অবস্থানে আসতে পারেনি, কখনও এক সরকারের অধীনে একতাবদ্ধ হতে পারেনি কিংবা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কোনো কাজ করতে পারেনি। তাই অঞ্চলগুলোর পরাজয় নিশ্চিত ছিল। প্রতিবেশী রাজ্যগুলো ভেনিস থেকে এক এক করে সমস্ত সম্পদ লুট করেছিল আর পরিশেষে ১৭৯৭ সালে নেপোলিয়ান ১ম উপহ্রদ শহরটাকে জয় করেছিলেন এবং অস্ট্রিয়ার হাতে এটাকে হস্তান্তরিত করেছিলেন। ১৮৬৬ সালে, ভেনিস ইতালির অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।

এক স্বপ্নের শহর

অনেকের জন্য ভেনিস নগরী পরিদর্শন করা হল দুশো বা তিনশো বছর আগের সময়ে চলে যাওয়ার মতো। এই শহরের এক অদ্বিতীয় পরিবেশ রয়েছে।

শান্ত পরিবেশ হচ্ছে এর এক লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য। হাঁটার অধিকাংশ সরু পথগুলো জলপথগুলো থেকে দূরেই অবস্থিত কিন্তু কিছু জায়গায় হাঁটার পথগুলো জলপথগুলোর লাগোয়া অথবা পাথরের তৈরি ধনুকাকৃতি সেতুগুলোর ওপর দিয়ে হাঁটার পথ রয়েছে। মোটরচালিত একমাত্র যান হচ্ছে নৌকা, কারণ রাস্তাগুলো জল দ্বারা “বাঁধাই” করা। শহরটা ছবির মতো সুন্দর সুন্দর দৃশ্যে পূর্ণ। ব্যাসিলিকা বা গির্জাঘর ও ঘন্টাঘর থাকায় এবং জলের ধারে অবস্থিত বলে সবুজ উপহ্রদের ওপর সূর্যের আলোকচ্ছটা বিকীর্ণ হওয়ায়, সেন্ট মার্ক স্কয়ারটি শিল্পীদের কাছে অনুপ্রেরণাদায়ক।

সেন্ট মার্ক স্কয়ারে লোকে গিজগিজ করতে থাকা খোলা রেস্তরাঁগুলো পর্যটক ও অধিবাসী উভয়কেই সমানভাবে আকৃষ্ট করে। এখানে আপনি ছোটখাটো শাস্ত্রীয় অর্কেস্ট্রাগুলোর সংগীত শোনার সঙ্গে সঙ্গে কোনো পানীয় অথবা জিলাটো আইসক্রিম খাওয়া উপভোগ করতে পারেন। চারপাশে গাড়িঘোড়া নেই এমন পরিবেশে আপনি যখন বসে বসে পথিকদের চলাফেরা দেখেন ও আপনার চারপাশে ঘিরে থাকা চমৎকার স্থাপত্যশিল্প দেখে মুগ্ধ হয়ে তার প্রশংসা করেন, তখন আপনার কাছে এমন মনে হতে পারে যেন আপনি সত্যিই অতীতে ফিরে গিয়েছেন।

যারা শৈল্পিক সম্পদের খোঁজ করে, তাদের জন্য এই নগরী এক বিশেষ আকর্ষণের বিষয়। শহরের অসংখ্য প্রাসাদ, জাদুঘর ও গির্জাগুলোতে অনেক বিখ্যাত শিল্পীদের চিত্রাঙ্কন রয়েছে। কিন্তু কিছু পর্যটক শুধুমাত্র সরু পথগুলো দিয়ে ঘুরে-বেড়াতে এবং তাদের চারিদিকে যে-অপরিচিত দৃশ্যগুলো রয়েছে, সেগুলোর দিকে তাকিয়েই সন্তুষ্ট থাকে। নানা প্রকারের দোকানগুলোতে পর্যটকদের জন্য সেই সমস্ত জিনিস পাওয়া যায়, যেজন্য শহরটা বিখ্যাত—বুরানো উপহ্রদ দ্বীপের তৈরি লেস ও এমব্রয়ডারি কাজ এবং মুরানোর তৈরি জমকালো ক্রিস্টাল ও কাচের জিনিস। ভেপোরেটো বা মোটর চালিত নৌকাতে চড়ে অল্পক্ষণের ভ্রমণ হল এক অদ্বিতীয় অভিজ্ঞতা, যেটায় চড়ে আপনি এই দ্বীপগুলোর কোনো একটাতে যেতে পারেন, যেখানে আপনি দেখতে পারেন যে, কীভাবে তাদের জিনিসগুলো তৈরি করা হয়।

সরু ধনুকাকৃতি জানালাবিশিষ্ট বিশাল প্রাসাদগুলো অতীতে প্রাচ্যের প্রভাবের সাক্ষ্য দেয়। নগরীর প্রধান সড়ক গ্র্যান্ড ক্যানালের ওপর তৈরি বিখ্যাত রিয়ালটো সেতু এবং এর নিচ দিয়ে ধীর গতিতে প্রবাহিত চকচকে কালো গন্ডলা বা নৌকাগুলো পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।

এখনও টিকে থাকার সংগ্রাম করে চলেছে

“সুন্দর প্রজাতন্ত্র” এর পতনের দুই শতাব্দী পরও ভেনিস এখনও টিকে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু এক ভিন্ন যুদ্ধের মধ্যে থেকে। জমির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার, চাকরির অভাবে এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সীমিত থাকার ফলে ঐতিহাসিক কেন্দ্রে ১৯৫১ সালে অধিবাসীদের সংখ্যা ১,৭৫,০০০ থেকে কমে ২০০৩ সালে মাত্র ৬৪,০০০ জনে নেমে এসেছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক জটিল সমস্যাগুলোর সমাধান হওয়া প্রয়োজন যেমন, ধ্বংস হতে থাকা এই শহরটাকে কীভাবে পুনরায় নতুন করা উচিত বা আদৌ উচিত কি না।

১৯২০-র দশকে, মূল ভূখণ্ডে এই আশায় এক নতুন শিল্প অঞ্চল গড়ে তোলা হয়েছিল যে, এটা স্থানীয় অর্থনীতিকে উন্নত করবে আর উপহ্রদের আড়াআড়িতে এক গভীর খাল খনন করা হয়েছিল, যাতে তেলবাহী জাহাজগুলো বিশোধনাগারে পৌঁছাতে পারে। এই শিল্প কারখানা কাজের সুযোগ করে দিয়েছিল কিন্তু এটাকে দূষণের এবং আ্যকুয়া আলটা (প্রবল ঢেউ) নামে ধ্বংসাত্মক জোয়ারের জন্য দায়ী করা হয়েছে, যা প্রায়ই ক্ষণে ক্ষণে ঐতিহাসিক কেন্দ্রের অধিকাংশকে প্লাবিত করে।

উপহ্রদের পরিবেশ ও এর হাইড্রলিক চাপ এক সূক্ষ্ম প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে, যা শহরটির টিকে থাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর তা নতুন কিছু নয়। ১৩২৪ সালের প্রথম দিকে, ভেনিসের অধিবাসীরা যে-নদীগুলো উপহ্রদকে পলিমাটি দিয়ে ভরে ফেলায় ঝুঁকি সৃষ্টি করেছিল, সেগুলোকে ভিন্নমুখী করার জন্য বিশাল প্রকৌশলী কাজ হাতে নিয়েছিল। আড্রিয়াটিক সাগরের জল যাতে ধ্বংসাত্মকভাবে প্রবলবেগে উপহ্রদে এসে না পড়ে সেইজন্য অষ্টাদশ শতাব্দীতে তারা সমুদ্রতট বরাবর দেয়াল নির্মাণ করেছিল।

এখন পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরও বেশি সংকটপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে মনে হয়। আশা করা হচ্ছে যে, শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত ভূগর্ভস্থ জলবাহী স্তরের অবক্ষয়ের ফলে ভূমি ভিতরের দিকে ঢুকে যাওয়ার সমস্যাটাকে নিশ্চয়ই থামানো গেছে কিন্তু বিশ্বব্যাপী সমুদ্রতল ক্রমান্বয়ে উঠে আসছে। এ ছাড়া, ভূমি পুনর্বাসনের দ্বারা উপহ্রদ এলাকাকে কমিয়ে আনা হয়েছে এবং জল ও স্থলের মধ্যে ভারসাম্য রাখা হয়েছে। বহুকাল ধরেই প্রবল ঢেউ এক হুমকিস্বরূপ হয়ে এসেছে কিন্তু এখনকার চেয়ে বেশি আর কখনো হয়নি। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে, সেন্ট মার্ক স্কয়ারটি বছরে পাঁচ থেকে সাত বার প্লাবিত হয়েছে। একশো বছর পর শুধুমাত্র এক বছরেই এটি ৮০ বার প্লাবিত হয়েছে।

ভেনিসের অদ্বিতীয় ঐতিহাসিক ও শিল্পসুলভ ঐতিহ্য আর সেইসঙ্গে এটা যে-সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে, সেগুলো আন্তর্জাতিকভাবে চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে। বন্দরের কার্যকলাপ বা এর জনগণের দৈনন্দিন জীবনে কোনোরকম ক্ষতি না করেই এই নগরীকে প্রবল ঢেউয়ের হাত থেকে রক্ষা করার ও পরিবেশের প্রতি সম্মান দেখানোর লক্ষ্যে বিশেষ আইন পাশ করানো হয়েছে। সেটা করার সর্বোত্তম উপায়টা কী, তা এখনও এক অসমাধানকৃত প্রশ্ন হয়ে রয়েছে।

খালের আলকে উঁচু করা, বাঁধানো জায়গাগুলোকে এমন জায়গা করে তোলা যাতে জোয়ার ভাটার সময় মাটির নীচ থেকে আসা জল ওপরের দিকে বেরিয়ে না আসে এবং আ্যকুয়া আলটা পরিস্থিতিতে নোংরা জল যেন ঘরের ভিতরে না ঢুকে পড়ে সেই জন্য কাজ করা হচ্ছে। সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয় হচ্ছে, উপহ্রদের প্রবেশপথগুলোতে চলমান প্রাচীরব্যবস্থা নির্মাণের পরিকল্পনা, যেগুলো তখনই প্রবেশপথগুলোতে রাখা হবে, যখন প্রবল ঢেউ আসার ঝুঁকি থাকে।

পরিকল্পনাটা খুবই কঠিন। “গৌরবময় সমুদ্র-নগরী” এক আকর্ষণীয় অতীতের সাক্ষ্য বহন করে কিন্তু বিভিন্ন লেখকরা যেমন মন্তব্য করেছে যে, “স্থানীয় জনগনকে উপেক্ষা করে কিংবা তাদের তাড়িয়ে বের করে বহিরাগতরা এটাকে একটা জাদুঘর” বানিয়ে ফেলতে পারে, এমন ঝুঁকি রয়েছে। দীর্ঘসময় ধরে ভেনিসকে প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে কিন্তু এখন “কেবল ভৌগলিকভাবে সুরক্ষা জোগানো ব্যর্থ প্রমাণিত হবে, যদি না এই সুরক্ষা সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পুনরুজ্জীবিত, অধিবাসীপূর্ণ, প্রাণচাঞ্চল্যপূর্ণ এবং জীবন্ত নগরীর প্রতি জোগানো হয়।”

[১৬ পৃষ্ঠার মানচিত্র]

(পুরোপুরি ফরম্যাট করা টেক্সটের জন্য এই প্রকাশনা দেখুন)

ভেনিস

[১৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

গ্র্যান্ড ক্যানালের ওপর রিয়ালটো সেতু

[১৬, ১৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

সান জর্জো মাজোরে

[১৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

সান্টা মারিয়া ডেলা সালিটে

[১৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

গ্র্যান্ড ক্যানালের তীরে রেস্তরাঁ

[১৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

সেন্ট মার্ক স্কয়ারটি প্লাবিত

[সৌজন্যে]

Lepetit Christophe/GAMMA

[১৬ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

মানচিত্র: Mountain High Maps® Copyright © ১৯৯৭ Digital Wisdom, Inc.; background photo: © Medioimages

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার