রাজ্য ঘোষণাকারীরা বিবৃতি দেয়
সুসমাচার ঘোষণা করা থেকে বিরত হবেন না
ইউরোপীয় আবিষ্কারকগণ প্রথমবার যখন ভেনেজুয়েলার উপসাগরীয় অঞ্চল এবং মারাকাইবো হ্রদ এলাকায় এসেছিলেন, তখন সমুদ্রের কূল, অগভীর জলের মধ্যে খুঁটির উপর খড় দিয়ে তৈরি কুঁড়েঘরে ভরতি ছিল। দৃশ্যটি ইতালির ভেনিস শহরের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল, যেখানকার লোকেরা জলাশয়ের ধারে তাদের ঘর তৈরি করতেন। স্প্যানিশ-ভাষী আবিষ্কারকেরা তাই এই এলাকাটিকে ভেনেজুয়েলা নাম দিয়েছিলেন, যেটির অর্থ হল “ছোট্ট ভেনিস।”
আজকে, এই সুন্দর দেশটিতে আরেক ধরনের নির্মাণ কার্য ঘটে চলেছে আর তা হল আধ্যাত্মিক। যিহোবার সাক্ষীরা সেখানে প্রতিটি উপযুক্ত সুযোগে অবিরত রাজ্যের বীজ বপন করার কাজে ব্যস্ত আছেন। আর এর ফলে উৎপন্ন আধ্যাত্মিক ফসল ‘শস্যক্ষেত্রের স্বামী,’ যিহোবা ঈশ্বরের প্রচুর প্রশংসা নিয়ে আসছে।—মথি ৯:৩৭, ৩৮.
একজন ভ্রমণ অধ্যক্ষ যখন উত্তরপশ্চিম ভেনেজুয়েলার জুলিয়া রাষ্ট্রের একটি মণ্ডলী পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন, সেখানকার স্থানীয় সাক্ষীরা, তাকে ও তার স্ত্রীকে পাশের ছোট দ্বীপ টোয়াসে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। সেই দ্বীপে যাওয়ার জন্য ভোরবেলায় খেয়ানৌকার ঘাটে অপেক্ষা করার সময়, ভ্রমণ অধ্যক্ষের স্ত্রী মেরি, তার সঙ্গের পূর্ণ-সময়ের অগ্রগামী বোনকে বলেছিলেন যে আসুন আমরা নৌকার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলি। অগ্রগামী বোনটি রাজি হয়েছিলেন।
একজন কারিগরের কাছে গিয়ে মেরি, জ্ঞান যা অনন্ত জীবনে পরিচালিত করে নামক বইটি দেখানোর সময় তিনি লোকটিকে “ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করে এমন এক পরিবার গড়ে তোলা” নামক অধ্যায়টি দেখিয়েছিলেন। আর লোকটি সেই অধ্যায়টি খুব ভালভাবে বুঝতে পেরেছিলেন। এরপর মেরি ব্যাখ্যা করেছিলেন যে এই প্রকাশনাটি ব্যবহার করে, তিনি তার নিজের ঘরেই বাইবেল অধ্যয়ন করতে পারেন। তিনি বইটি নিয়েছিলেন এবং তার ঘরে গিয়ে পুনর্সাক্ষাৎ করার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
অল্প কিছুদিন পর, সেই এলাকায় একদিনের বিশেষ অধিবেশন হয়েছিল। মেরি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যখন তিনি সেখানে সেই কারিগর সেনর নাভা, সঙ্গে তার স্ত্রী ও অল্পবয়সী দুটি মেয়েকে দেখেন! মেরি তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে তাদের পারিবারিক বাইবেল অধ্যয়ন সম্বন্ধে তিনি কেমন বোধ করেন। তার উত্তরে মেরি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন।
“আমি যিহোবাকে ধন্যবাদ জানাই যে আমরা সত্য জানতে পেরেছি,” তিনি বলেছিলেন। এরপর তিনি বর্ণনা করেছিলেন, “আপনি যখন আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তখন সে সবেমাত্র আরেকজন মহিলার জন্য আমাকে ছেড়ে এসেছিল। আর সে একজন মাতালও ছিল। যখন মাঝে মাঝে সে মাতাল হত তখন অত্যন্ত গালিগালাজ করত আর তার এই আচরণ ওই দ্বীপের কেউই পছন্দ করত না। এছাড়া সে প্রেতচর্চাও করত। কিন্তু অধ্যয়নের ফলে পাওয়া বাইবেলের জ্ঞান তার জীবনে অনেক বড় বড় পরিবর্তন আনতে তাকে সাহায্য করেছিল। সে তার সমস্ত নোংরা অভ্যাস ছেড়ে দিয়েছে। তার ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী বাবামা এই পরিবর্তনে খুবই প্রভাবিত হয়েছেন। আজকাল তাকে একজন দায়িত্ববান স্বামী এবং পিতা হিসাবে দেখে তারা খুবই খুশি।”
সেনর নাভা ১৯৯৬ সালে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন এবং বর্তমানে পূর্ণ-সময়ের পরিচারক হিসাবে সেবা করছেন। তার স্ত্রী, জেনি ১৯৯৭ সালে বাপ্তিস্ম নিয়েছেন। সেই শহরের মেয়র, নৌকার এই কারিগরের পরিবর্তনে এতই প্রভাবিত হয়েছেন যে তিনিও বাইবেল অধ্যয়ন করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। সেই বোনেরা কতই না আনন্দিত যে তারা সেদিন সকালে নৌকার জন্য ঘাটে অপেক্ষা করার সময় সুসমাচার ঘোষণা করা থেকে বিরত হননি!
[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]
নৌকার একজন কারিগরকে সুসমাচার শোনানো উত্তম ফল এনেছিল