ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w18 অক্টোবর পৃষ্ঠা ২৭-৩১
  • পরিস্থিতির পরিবর্তন সত্ত্বেও মনের শান্তি বজায় রাখুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • পরিস্থিতির পরিবর্তন সত্ত্বেও মনের শান্তি বজায় রাখুন
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৮
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যেভাবে “ঈশ্বরের শান্তি” আমাদের সাহায্য করে
  • পুনরায় শান্তি লাভ করার জন্য যিহোবার কাছে সাহায্য চান
  • যিহোবাকে আশীর্বাদ করার সুযোগ দিন
  • আপনার পরিচর্যার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখুন
  • যিহোবার উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখুন
  • যিহোবা আপনাকে সফল হতে সাহায্য করছেন!
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৩
  • তিনি সুরক্ষা করেছিলেন, তিনি ভরণ-পোষণ জুগিয়েছিলেন, তিনি দায়িত্ব পালন করেছিলেন
    তাদের বিশ্বাস অনুকরণ করুন
  • আপনার পরিস্থিতিগুলো কি আপনার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে?
    ২০০৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “আমি কি ঈশ্বরের প্রতিনিধি?”
    ২০১৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৮
w18 অক্টোবর পৃষ্ঠা ২৭-৩১
ভাইয়েরা এক দপতির সগ মিলিত হয়ে তাদের জানাচ্ছন যে, তাদের বেথেলের কার্যভার ছড়ে ক্ষেত্রর পরিচর্যায় সেবা করতে হবে

পরিস্থিতির পরিবর্তন সত্ত্বেও মনের শান্তি বজায় রাখুন

“আমি আপন প্রাণকে শান্ত দান্ত করিয়াছি।”—গীত. ১৩১:২.

গান সংখ্যা: ২৪, ৫১

আপনার কি মনে আছে?

  • আমাদের জীবন যদি অপ্রত্যাশিত উপায়ে পরিবর্তিত হয়, তা হলে কীভাবে “ঈশ্বরের শান্তি” আমাদের সাহায্য করতে পারে?

  • আমাদের পরিস্থিতি যখন আকস্মিকভাবে পরিবর্তিত হয়, তখন কীভাবে আমরা যোষেফকে অনুকরণ করতে পারি?

  • সুসমাচার প্রচারক ফিলিপের কাছ থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

১, ২. (ক) কীভাবে আমাদের জীবনে ঘটা আকস্মিক পরিবর্তনগুলো আমাদের প্রভাবিত করতে পারে? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।) (খ) গীতসংহিতা ১৩১ গীত অনুযায়ী কী আমাদের মনের শান্তি বজায় রাখার জন্য সাহায্য করতে পারে?

ভাই লয়েড ও তার স্ত্রী আ্যলিগ্‌জ্যান্ড্রা ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বেথেলে সেবা করার পর তাদের অগ্রগামী হিসেবে সেবা করার কার্যভার দেওয়া হয়। প্রথমে, তারা দুঃখিত হন। ভাই লয়েড বলেন: “বেথেল ও আমার কার্যভারকে আমি এতটাই ভালোবাসতাম যে, আমি এটা ছাড়া অন্য কিছু করার কথা কল্পনাই করতে পারতাম না। আমি মানসিকভাবে এই পরিবর্তনের কারণগুলো উপলব্ধি করেছিলাম ঠিকই কিন্তু এরপর কয়েক সপ্তাহ ও মাস ধরে আমার প্রায়ই মনে হয়েছিল যেন আমাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।” বিষয়টা এমন ছিল যেন এক মুহূর্তে তিনি এই পরিবর্তনের বিষয়ে ইতিবাচক চিন্তা করতেন কিন্তু পরবর্তী মুহূর্তেই বিষণ্ণতা অনুভব করতেন।

২ কখনো কখনো জীবনে অপ্রত্যাশিতভাবে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটবে আর সেগুলোর কারণে আমরা হয়তো প্রচুর মনোব্যথা বা উদ্‌বিগ্নতা ও চাপ অনুভব করতে পারি। (হিতো. ১২:২৫) আমাদের পক্ষে যখন পরিবর্তনগুলো মেনে নেওয়া ও সেগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন হয়, তখন আমরা শান্ত থাকার জন্য কী করতে পারি? (পড়ুন, গীতসংহিতা ১৩১:১-৩.) এখন আসুন আমরা দেখি যে, কীভাবে অতীতে ও বর্তমানে যিহোবার কয়েক জন দাস তাদের জীবনে এমনকী আকস্মিক পরিবর্তন ঘটা সত্ত্বেও, মনের শান্তি বজায় রাখতে পেরেছিল।

যেভাবে “ঈশ্বরের শান্তি” আমাদের সাহায্য করে

৩. কীভাবে যোষেফের জীবন আকস্মিকভাবে পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল?

৩ উদাহরণ স্বরূপ, যোষেফের বিষয়ে চিন্তা করুন। যাকোব তার সমস্ত ছেলের মধ্যে যোষেফকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন। এটা যোষেফের ভাইদের অত্যন্ত ঈর্ষান্বিত করে তুলেছিল। তার বয়স যখন ১৭ বছর, তখন তার ভাইয়েরা তাকে দাস হিসেবে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। (আদি. ৩৭:২-৪, ২৩-২৮) প্রায় ১৩ বছর ধরে তিনি মিশরে কষ্ট ভোগ করেছিলেন, প্রথমে একজন দাস হিসেবে এবং পরে একজন বন্দি হিসেবে। যোষেফ তার বাবার কাছ থেকে অনেক দূরে ছিলেন, যাকে তিনি খুবই ভালোবাসতেন। তার পরিস্থিতির কারণে তিনি আশাহীন ও রাগান্বিত হয়ে যেতে পারতেন কিন্তু তিনি এমনটা করেননি। কী তাকে সাহায্য করেছিল?

৪. (ক) কারাগারে থাকার সময়ে যোষেফ কী করেছিলেন? (খ) কীভাবে যিহোবা যোষেফের প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন?

৪ যোষেফ যখন কারাগারে কষ্ট ভোগ করছিলেন, তখন তিনি নিশ্চয়ই এই বিষয়টার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছিলেন যে, কীভাবে যিহোবা তাকে সাহায্য করছিলেন। (আদি. ৩৯:২১; গীত. ১০৫:১৭-১৯) এ ছাড়া, তিনি হয়তো অল্পবয়সে দেখা ভবিষ্যদ্‌বাণীমূলক স্বপ্নগুলোর বিষয়ে চিন্তা করেছিলেন এবং আশ্বস্ত হয়েছিলেন যে, যিহোবা তার সঙ্গে রয়েছেন। (আদি. ৩৭:৫-১১) তিনি সম্ভবত প্রায়ই প্রার্থনা করতেন এবং হৃদয় উজাড় করে যিহোবাকে সমস্ত কিছু বলতেন। (গীত. ১৪৫:১৮) আর যিহোবা যোষেফকে এই আস্থা প্রদান করার মাধ্যমে তার প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন যে, যা-ই ঘটুক না কেন, তিনি “তাঁহার সঙ্গে সঙ্গে” থাকবেন।—প্রেরিত ৭:৯, ১০.a

৫. কীভাবে “ঈশ্বরের শান্তি” আমাদের যিহোবার সেবা করার জন্য আরও বেশি দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ করতে পারে?

৫ আমাদের পরিস্থিতি যত কঠিনই হোক না কেন, আমরা “ঈশ্বরের শান্তি” লাভ করতে পারি, যা আমাদের ‘মনকে’ সুরক্ষিত রাখে এবং আমাদের শান্ত থাকতে সাহায্য করে। (পড়ুন, ফিলিপীয় ৪:৬, ৭.) আমরা যখন উদ্‌বিগ্নতা ও চাপের মধ্যে থাকি, তখন “ঈশ্বরের শান্তি” আমাদের যিহোবার সেবা চালিয়ে যাওয়ার এবং হাল ছেড়ে না দেওয়ার জন্য শক্তিশালী করতে পারে। এখন আসুন, আমরা বর্তমান সময়ের কয়েক জন ভাই-বোনের উদাহরণ বিবেচনা করি, যাদের এই অভিজ্ঞতা হয়েছে।

পুনরায় শান্তি লাভ করার জন্য যিহোবার কাছে সাহায্য চান

৬, ৭. কীভাবে আমাদের প্রার্থনাগুলো আমাদের পুনরায় মনের শান্তি লাভ করার জন্য সাহায্য করতে পারে? একটা উদাহরণ দিন।

৬ ভাই রায়ান ও তার স্ত্রী জুলিয়েট যখন জানতে পেরেছিলেন যে, অস্থায়ী বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে তাদের কার্যভার শেষ হয়ে গিয়েছে, তখন তারা নিরুৎসাহিত হয়ে গিয়েছিলেন। ভাই রায়ান বলেন: “আমরা সঙ্গেসঙ্গে এই বিষয়টা নিয়ে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম। আমরা জানতাম যে, এটা হল তাঁর প্রতি আমাদের আস্থা দেখানোর এক বিশেষ সুযোগ। আমাদের মণ্ডলীর অনেকেই সত্যে নতুন ছিল, তাই আমরা যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম যেন তিনি আমাদের বিশ্বাসের ক্ষেত্রে এক চমৎকার উদাহরণ স্থাপন করতে সাহায্য করেন।”

৭ কীভাবে যিহোবা তাদের প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন? ভাই রায়ান বলেন: “প্রথমে আমাদের মনে যে-নেতিবাচক অনুভূতি ও দুশ্চিন্তাগুলো এসেছিল, সেগুলো প্রার্থনা করার পর সঙ্গেসঙ্গে দূর হয়ে গিয়েছিল। ঈশ্বরের শান্তি আমাদের হৃদয় ও মনকে রক্ষা করছিল। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে, আমরা যদি সঠিক মনোভাব বজায় রাখি, তা হলে আমরা ক্রমাগত যিহোবার দ্বারা ব্যবহৃত হতে পারব।”

৮-১০. (ক) কীভাবে ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা উদ্‌বিগ্নতার সময়ে আমাদের সাহায্য করতে পারে? (খ) আমরা যখন যিহোবার সেবা করার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখি, তখন কীভাবে তিনি আমাদের সাহায্য করতে পারেন?

৮ ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা আমাদের শান্ত থাকার জন্য সাহায্য করতে পারে এবং এটা আমাদের বাইবেলের সেই পদগুলোর দিকেও নির্দেশিত করতে পারে, যেগুলো আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে যে, জীবনে কোন বিষয়গুলো প্রকৃতই গুরুত্বপূর্ণ। (পড়ুন, যোহন ১৪:২৬, ২৭.) বিবেচনা করুন, ভাই ফিলিপ ও তার স্ত্রী মেরির প্রতি কী ঘটেছিল, যারা প্রায় ২৫ বছর ধরে বেথেলে সেবা করেছিলেন। বেথেল থেকে চলে আসার চার মাসের মধ্যে তাদের দু-জনেরই মা ও সেইসঙ্গে একজন আত্মীয় মারা যান। এ ছাড়া, দু-জনকেই বোন মেরির বাবার যত্ন নিতে হয়, যার এক ধরনের মানসিক রোগ রয়েছে।

৯ ভাই ফিলিপ বলেন: “আমি ভেবেছিলাম, একটা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত আমি ভালোভাবেই সমস্যাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করছি কিন্তু কিছু-একটার অভাব ছিল। আমি প্রহরীদুর্গ পত্রিকার একটা অধ্যয়ন প্রবন্ধে কলসীয় ১:১১ পদ সম্বন্ধে পড়ি। আমি সহ্য করছিলাম ঠিকই কিন্তু সম্পূর্ণভাবে নয়। আমার ‘আনন্দের সহিত সম্পূর্ণ ধৈর্য্য’ সহকারে ‘সহিষ্ণুতা’ দেখানোর অর্থাৎ সহ্য করার প্রয়োজন ছিল। এই পদ আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছিল, জীবনে আমার আনন্দ আমার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে না বরং ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা আমার জীবনে যে-প্রভাব ফেলে, সেটার উপর নির্ভর করে।”

১০ যেহেতু ভাই ফিলিপ ও বোন মেরি যিহোবার সেবা করার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রেখেছিলেন, তাই তিনি অনেক উপায়ে তাদের আশীর্বাদ করেছিলেন। বেথেল থেকে চলে আসার অল্পসময় পরই তারা দু-জনে এমন বাইবেল ছাত্রদের খুঁজে পেয়েছিলেন, যারা ভালো উন্নতি করেছিল এবং সপ্তাহে একাধিক বার অধ্যয়ন করতে চেয়েছিল। বোন মেরি বলেন: “তাদের মাধ্যমেই আমরা আনন্দ পেয়েছিলাম আর এভাবেই যিহোবা আমাদের জানিয়েছিলেন যে, সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।”

যিহোবাকে আশীর্বাদ করার সুযোগ দিন

যোষেফ ও তার যধীনে থাকা দু-জন পুরুষ কারাগারে রয়েছন

কীভাবে আমরা যোষেফকে অনুকরণ করতে পারি, তা আমাদের জীবনে যা-ই ঘটুক না কেন? (১১-১৩ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১১, ১২. (ক) কীভাবে যোষেফ এমন কিছু করেছিলেন, যেটার উপর যিহোবা আশীর্বাদ করতে পারতেন? (খ) কীভাবে যিহোবা যোষেফকে পুরস্কৃত করেছিলেন?

১১ আমাদের জীবন যখন আকস্মিকভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায়, তখন আমরা এতটাই উদ্‌বিগ্ন হয়ে যেতে পারি যে, আমরা কেবল নিজেদের সমস্যা নিয়েই চিন্তা করতে পারি। যোষেফের ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারত। এর পরিবর্তে, তিনি তার পরিস্থিতিতে যথাসম্ভব সর্বোত্তমটা করা বেছে নিয়েছিলেন। ঠিক যেমন তিনি পোটীফরের অধীনে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন, তেমনই তিনি কারাগারে কারারক্ষকের দেওয়া যেকোনো কার্যভারে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন।—আদি. ৩৯:২১-২৩.

১২ একদিন, যোষেফকে দু-জন বন্দির যত্ন নেওয়ার কার্যভার দেওয়া হয়েছিল, যারা ফরৌণের রাজসভায় কাজ করতেন। যোষেফ তাদের প্রতি সদয় আচরণ করেছিলেন এবং তারা এতটা স্বচ্ছন্দ বোধ করেছিলেন যে, তারা তাকে তাদের চিন্তা ও আগের রাতে দেখা উদ্‌বিগ্ন করার মতো স্বপ্নগুলো সম্বন্ধে বলেছিলেন। (আদি. ৪০:৫-৮) যোষেফ সেইসময়ে এটা জানতেন না যে, সেই কথোপকথন পরিশেষে তাকে মুক্তি পেতে সাহায্য করবে। দু-বছর পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন এবং মিশরে একজন ক্ষমতাশালী শাসক হয়ে উঠেছিলেন। একমাত্র ফরৌণই ক্ষমতায় তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ ছিলেন!—আদি. ৪১:১, ১৪-১৬, ৩৯-৪১.

১৩. আমাদের পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, কীভাবে আমরা এমন উপায়ে কাজ করতে পারি, যেটার উপর যিহোবা আশীর্বাদ করবেন?

১৩ যোষেফের মতোই আমরা হয়তো এমন পরিস্থিতিতে পড়তে পারি, যেটার উপর বলতে গেলে আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণই নেই। কিন্তু, আমরা যদি ধৈর্য ধরি এবং যথাসম্ভব সর্বোত্তমটা করি, তা হলে যিহোবা আমাদের আশীর্বাদ করবেন। (গীত. ৩৭:৫) এমনকী আমরা যখন বিভ্রান্ত ও উদ্‌বিগ্ন হয়ে যাই, তখনও আমরা “নিরাশ” হব না। (২ করি. ৪:৮) যিহোবা আমাদের সঙ্গে থাকবেন, বিশেষভাবে যদি আমরা পরিচর্যার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখি।

আপনার পরিচর্যার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখুন

১৪-১৬. কীভাবে সুসমাচার প্রচারক ফিলিপ তার জীবনে আসা যেকোনো পরিবর্তন সত্ত্বেও তার পরিচর্যার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রেখেছিলেন?

১৪ সুসমাচার প্রচারক ফিলিপ তার জীবনে আসা যেকোনো পরিবর্তন সত্ত্বেও তার পরিচর্যার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখার মাধ্যমে এক চমৎকার উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন। একসময়ে তিনি যিরূশালেমে এক নতুন কার্যভার উপভোগ করছিলেন। (প্রেরিত ৬:১-৬) তারপর, সব কিছু পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল। স্তিফানকে হত্যা করার পর খ্রিস্টানদের প্রচণ্ড তাড়না করা হয়েছিল এবং তারা যিরূশালেম থেকে পালিয়ে গিয়েছিল।b যেহেতু ফিলিপ যিহোবার সেবায় ব্যস্ত থাকতে চেয়েছিলেন, তাই তিনি শমরিয়া নগরে চলে গিয়েছিলেন, যেখানে লোকেদের সুসমাচার শোনার প্রয়োজন ছিল।—মথি ১০:৫, ৬; প্রেরিত ৭:৬০খ; ৮:১, ৫.

১৫ ফিলিপ ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার নির্দেশনা অনুযায়ী যেকোনো জায়গায় যাওয়ার জন্য ইচ্ছুক ছিলেন। তাই, যিহোবা তাকে এমন জায়গাগুলোতে প্রচার করার জন্য ব্যবহার করেছিলেন, যেখানে লোকেরা তখনও সুসমাচার শোনেনি। অনেক যিহুদি শমরীয়দের নীচু চোখে দেখত এবং তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করত। কিন্তু, ফিলিপের মনে কোনোরকম ভেদাভেদের মনোভাব ছিল না এবং তিনি উৎসুকভাবে তাদের কাছে সুসমাচার জানিয়েছিলেন। তাই, এতে অবাক হওয়ার মতো কিছু নেই যে, ‘লোকসমূহ একচিত্তে’ তার কথায় “অবধান করিল।”—প্রেরিত ৮:৬-৮.

১৬ এরপর, ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা ফিলিপকে অস্‌দোদ ও কৈসরিয়া নগরে প্রচার করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিল, যেখানে অনেক পরজাতীয় লোক বাস করত। (প্রেরিত ৮:৩৮, ৩৯) এরপর, ফিলিপের জীবন আবারও পরিবর্তিত হয়েছিল। তিনি স্থায়ীভাবে বাস করতে শুরু করেছিলেন এবং পরিবার গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু, ফিলিপের জীবন যেভাবেই পরিবর্তিত হোক না কেন, তিনি তার পরিচর্যায় ব্যস্ত ছিলেন এবং যিহোবা তাকে ও তার পরিবারকে আশীর্বাদ করে গিয়েছিলেন।—প্রেরিত ২১:৮, ৯.

১৭, ১৮. আমাদের জীবন যখন কোনো উপায়ে পরিবর্তিত হয়, তখন পরিচর্যার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখা কীভাবে আমাদের সাহায্য করতে পারে?

১৭ পূর্ণসময়ের সেবা করছে, এমন অনেকে বলে যে, তাদের পরিচর্যার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখা তাদের সুখ ও ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে আর তা এমনকী তখনও, যখন তাদের পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়। উদাহরণ স্বরূপ, আজবর্ন্‌ ও পালাইট নামে দক্ষিণ আফ্রিকার এক দম্পতি যখন বেথেল থেকে চলে এসেছিলেন, তখন তারা ভেবেছিলেন যে, তারা সহজেই পার্ট-টাইম চাকরি ও থাকার জায়গা খুঁজে পাবেন। কিন্তু ভাই আজবর্ন্‌ বলেন: “দুঃখের বিষয় যে, আমরা যতটা দ্রুত চাকরি খুঁজে পাব বলে আশা করেছিলাম, তেমনটা হয়নি।” বোন পালাইট বলেন: “তিন মাস ধরে আমাদের কোনো চাকরি ছিল না এবং আমাদের কাছে কোনো জমানো টাকাও ছিল না। এটা সত্যিই এক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল।”

১৮ কী ভাই আজবর্ন্‌ ও বোন পালাইটকে এই চাপপূর্ণ পরিস্থিতিতে সাহায্য করেছিল? ভাই আজবর্ন্‌ বলেন: “মণ্ডলীর সঙ্গে প্রচার করা আমাদের মনকে কেন্দ্রীভূত রাখার এবং ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখার জন্য প্রচুররূপে সাহায্য করেছিল।” ঘরে বসে কেবল চিন্তা করার পরিবর্তে তারা পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এমনটা করা তাদের প্রচুররূপে আনন্দিত করেছিল! আর ভাই আজবর্ন্‌ আরও বলেন: “আমরা সব জায়গায় চাকরির খোঁজ করেছিলাম এবং পরিশেষে কাজ খুঁজে পেয়েছিলাম।”

যিহোবার উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখুন

১৯-২১. (ক) কী আমাদের মনের শান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করবে? (খ) আমরা যখন কোনো অপ্রত্যাশিত পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিই, তখন কীভাবে আমরা উপকৃত হতে পারি?

১৯ আমরা যেমন দেখলাম, আমরা যদি আমাদের পরিস্থিতিতে সর্বোত্তমটা করি এবং যিহোবার উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখি, তা হলে আমরা আমাদের মনের শান্তি বজায় রাখতে পারব, তা যা-ই ঘটুক না কেন। (পড়ুন, মীখা ৭:৭.) সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা হয়তো বুঝতে পারব, কোনো পরিবর্তনের সঙ্গে আমরা যেভাবে মানিয়ে নিয়েছিলাম, সেটা আসলে যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে শক্তিশালী করেছে। বোন পালাইট ব্যাখ্যা করে বলেন যে, বেথেলের কার্যভার ছেড়ে অন্য কার্যভার গ্রহণ করা তাকে শিখিয়েছে, এমনকী অনেক কঠিন পরিস্থিতিতেও যিহোবার উপর নির্ভর করার প্রকৃত অর্থ কী। তিনি বলেন: “তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে।”

২০ আগে উল্লেখিত বোন মেরি এখনও তার বয়স্ক বাবার যত্ন নিচ্ছেন এবং অগ্রগামী সেবা করছেন। তিনি বলেন: “আমি শিখেছি, আমি যখন উদ্‌বিগ্ন হই, তখন আমাকে থেমে প্রার্থনা করতে এবং শান্ত হতে হবে। আমি সম্ভবত সবচেয়ে বড়ো যে-শিক্ষা লাভ করেছি, তা হল বিভিন্ন বিষয়কে যিহোবার হাতে ছেড়ে দেওয়া এবং ভবিষ্যতেও সবসময় এটা করা খুবই প্রয়োজনীয় হবে।”

২১ ভাই লয়েড ও বোন আ্যলিগ্‌জ্যান্ড্রা এটা স্বীকার করেন যে, তাদের জীবনে ঘটা পরিবর্তনগুলো তাদের বিশ্বাসকে একেবারে অপ্রত্যাশিত উপায়ে পরীক্ষিত করেছিল। কিন্তু, এখন তারা এটা বুঝতে পারেন যে, কীভাবে সেই পরীক্ষাগুলো আসলে তাদের সাহায্য করেছিল। এখন তারা জানেন যে, তাদের বিশ্বাস তাদের সমস্যার সময়ে সান্ত্বনা প্রদান করার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী এবং তারা মনে করেন যে, তারা আরও ভালো মানুষ হয়ে উঠেছেন।

এক দপতি বেথেল ছড়ে চলে যাচ্ছন, লি ব্যবহার করে সাক্ষ্যদান করছন, রাজ্যের পচারকদের জন্য স্কুলে যোগ দিচ্ছন, বিদেশে সেবা করার কার্যভার পেয়ে সেখানে যাচ্ছন এবং তাদের নতুন কার্যভারে বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করছন

অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন অপ্রত্যাশিত আশীর্বাদের দিকে পরিচালিত করতে পারে! (১৯-২১ অনুচ্ছেদ দেখুন)

২২. আমরা যদি আমাদের পরিস্থিতিতে যথাসম্ভব সর্বোত্তমটা করি, তা হলে আমরা কোন বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে পারি?

২২ এই বিধিব্যবস্থায় আমাদের জীবন আকস্মিকভাবে পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। আমরা হয়তো যিহোবার সেবায় ভিন্ন কার্যভার লাভ করতে পারি, আমাদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিতে পারে অথবা আমাদের হয়তো এক নতুন উপায়ে পরিবারের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। কিন্তু যা-ই ঘটুক না কেন, এই আস্থা রাখুন যে, যিহোবা আপনার জন্য চিন্তা করেন এবং তিনি সঠিক সময়ে আপনাকে সাহায্য করবেন। (ইব্রীয় ৪:১৬; ১ পিতর ৫:৬, ৭) আর তাই এখন আপনার পরিস্থিতিতে যথাসম্ভব সর্বোত্তমটা করুন। আপনার পিতা যিহোবার কাছে প্রার্থনা করুন এবং তাঁর উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করতে শিখুন। এভাবে আপনি সবসময় যিহোবার কাছ থেকে পাওয়া মনের শান্তি বজায় রাখতে পারবেন, তা আপনার পরিস্থিতি যেভাবেই পরিবর্তিত হোক না কেন।

a বেশ কিছু বছর পর যোষেফের যখন প্রথম পুত্রসন্তান হয়েছিল, তখন তিনি তার নাম মনঃশি রেখেছিলেন কারণ তিনি বলেছিলেন: “ঈশ্বর আমার সমস্ত ক্লেশের . . . বিস্মৃতি জন্মাইয়াছেন” বা ভুলে যেতে সাহায্য করেছেন। তিনি এটা বুঝেছিলেন যে, তার পুত্র হল এক উপহার, যা যিহোবা তাকে সান্ত্বনা প্রদান করার জন্য দিয়েছেন।—আদি. ৪১:৫১.

b এই সংখ্যার “আপনি কি জানতেন?” প্রবন্ধটা দেখুন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার