ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w19 জুন পৃষ্ঠা ২০-২৫
  • চাপের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য অন্যদের সাহায্য করুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • চাপের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য অন্যদের সাহায্য করুন
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৯
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • ধৈর্য ধরুন
  • সমবেদনাময় হোন
  • সান্ত্বনার বাক্য বলুন
  • চাপগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করতে বিধবাদের সাহায্য করা
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “তুমি যেখানে যাইবে, আমিও তথায় যাইব”
    তাদের বিশ্বাস অনুকরণ করুন
  • রূৎ ও নয়মী
    আমার বাইবেলের গল্পের বই
  • একে অন্যের প্রতি অটল প্রেম দেখিয়ে চলুন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২১
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৯
w19 জুন পৃষ্ঠা ২০-২৫

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ২৬

চাপের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য অন্যদের সাহায্য করুন

“তোমরা সকলে সমমনা, পরদুঃখে দুঃখিত, ভ্রাতৃপ্রেমিক, স্নেহবান্‌ ও নম্রমনা হও।”—১ পিতর ৩:৮.

গান সংখ্যা ৫০ ঈশ্বরীয় প্রেমের উদাহরণ

সারাংশa

১. কীভাবে আমরা আমাদের প্রেমময় পিতা, যিহোবাকে অনুকরণ করতে পারি?

যিহোবা আমাদের গভীরভাবে ভালোবাসেন। (যোহন ৩:১৬) আমরা আমাদের প্রেমময় পিতাকে অনুকরণ করতে চাই। তাই, আমরা সবার প্রতি, বিশেষভাবে যারা আমাদের “বিশ্বাস-বাটীর পরিজন,” তাদের প্রতি ‘ভ্রাতৃপ্রেম’ দেখানোর এবং “পরদুঃখে দুঃখিত, . . . স্নেহবান্‌” হওয়ার চেষ্টা করি। (১ পিতর ৩:৮; গালা. ৬:১০) আমাদের সহউপাসকরা যখন চাপপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর মুখোমুখি হয়, তখন আমরা তাদের সাহায্য করতে চাই।

২. এই প্রবন্ধে আমরা কী নিয়ে আলোচনা করব?

২ যারা যিহোবার উপাসক হতে চায়, তারা সবাই চাপপূর্ণ পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে। (মার্ক ১০:২৯, ৩০) এই বিধিব্যবস্থার শেষ যতবেশি এগিয়ে আসছে, আমাদের সম্ভবত ততবেশি পরীক্ষার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। কীভাবে আমরা একে অপরকে সাহায্য করতে পারি? আসুন আমরা বিবেচনা করে দেখি যে, লোট, ইয়োব ও নয়মী সম্বন্ধে বাইবেলের বিবরণগুলো থেকে আমরা কী শিখতে পারি। এ ছাড়া, আমরা কিছু প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে বিবেচনা করব, যেগুলোর মুখোমুখি বর্তমানে আমাদের ভাই-বোনেরা হচ্ছে এবং দেখব, কীভাবে আমরা তাদের সমস্যাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য সাহায্য করতে পারি।

ধৈর্য ধরুন

৩. দ্বিতীয় পিতর ২:৭, ৮ পদে আমরা যেমন পড়ি, লোট কোন ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং এর পরিণতি কী হয়েছিল?

৩ লোট সেইসময়ে এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যখন তিনি অনৈতিকতায় পরিপূর্ণ সদোমের লোকদের মাঝে বসবাস করা বেছে নিয়েছিলেন। (পড়ুন, ২ পিতর ২:৭, ৮.) সেটা একটা সমৃদ্ধিশালী নগর ছিল কিন্তু লোট যেহেতু সেখানে বাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাই তাকে অনেক সমস্যা ভোগ করতে হয়েছিল। (আদি. ১৩:৮-১৩; ১৪:১২) তার স্ত্রী খুব সম্ভবত সেই নগরের প্রতি অথবা সেখানকার লোকেদের প্রতি এতটাই আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন যে, তিনি যিহোবার অবাধ্য হয়েছিলেন। ঈশ্বর যখন আকাশ থেকে সেই নগরে অগ্নি ও গন্ধক বর্ষণ করেছিলেন, তখন তিনি নিজের জীবন হারিয়েছিলেন। আর লোটের দুই মেয়ের বিষয়ে কী বলা যায়? তারা যে-পুরুষদের বাগদত্তা ছিলেন, তারা সদোমে মারা গিয়েছিলেন। লোট তার বাড়ি ও তার বিষয়সম্পত্তি হারিয়েছিলেন আর সেইসঙ্গে সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক হল, তিনি তার স্ত্রীকে হারিয়েছিলেন। (আদি. ১৯:১২-১৪, ১৭, ২৬) এই চাপপূর্ণ সময়ে যিহোবা কি লোটের প্রতি ধৈর্য ধরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন? না।

স্বর্গদূতেরা লোট ও তার পরিবারকে সদোম থেকে বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন

লোট ও তার পরিবারকে রক্ষা করার জন্য যিহোবা সমবেদনা দেখিয়ে স্বর্গদূতদের পাঠিয়েছিলেন (৪ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৪. কীভাবে যিহোবা লোটের প্রতি ধৈর্য ধরেছিলেন? (প্রচ্ছদে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

৪ লোট যদিও সদোমে বসবাস করা বেছে নিয়েছিলেন কিন্তু যিহোবা সমবেদনা দেখিয়ে তাকে ও তার পরিবারকে রক্ষা করার জন্য স্বর্গদূতদের পাঠিয়েছিলেন। তবে, লোট সঙ্গেসঙ্গে সদোম ছেড়ে চলে যাওয়ার বিষয়ে সেই স্বর্গদূতদের জরুরি আজ্ঞার বাধ্য হওয়ার পরিবর্তে, “ইতস্ততঃ করিতে লাগিলেন।” সেই স্বর্গদূতদের তার হাত শক্ত করে ধরতে হয়েছিল এবং তাকে ও তার পরিবারকে সেই নগর ছেড়ে পালানোর জন্য সাহায্য করতে হয়েছিল। (আদি. ১৯:১৫, ১৬) তারপর, সেই স্বর্গদূতেরা তাকে বলেছিলেন যেন তিনি দৌঁড়ে পর্বতময় এলাকায় পালান। কিন্তু, যিহোবার বাধ্য হওয়ার পরিবর্তে লোট কাছাকাছি একটা নগরে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন। (আদি. ১৯:১৭-২০) যিহোবা ধৈর্য ধরে লোটের কথা শুনেছিলেন এবং তাকে সেই নগরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে, লোট সেখানে থাকতে ভয় পেয়েছিলেন এবং পর্বতময় এলাকায় চলে গিয়েছিলেন, যে-এলাকায় যিহোবা তাকে প্রথমে যেতে বলেছিলেন। (আদি. ১৯:৩০) যিহোবা কতই-না উল্লেখযোগ্য উপায়ে ধৈর্য ধরেছিলেন! কীভাবে আমরা তাঁকে অনুকরণ করতে পারি?

৫-৬. ঈশ্বরকে অনুকরণ করার সময়ে কীভাবে আমরা ১ থিষলনীকীয় ৫:১৪ পদ কাজে লাগাতে পারি?

৫ আমাদের কোনো সহউপাসক হয়তো লোটের মতো ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারেন এবং এর ফলে গুরুতর সমস্যায় পড়তে পারেন। যদি এমনটা হয়, তাহলে আমরা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাব? আমরা হয়তো তাকে এটা বলার জন্য প্রলুব্ধ হতে পারি, আপনি যা বুনেছেন, তা-ই কাটছেন, যেটা হয়তো সত্য। (গালা. ৬:৭) কিন্তু, আমরা ভালো কিছু করতে পারি। যিহোবা যেভাবে লোটকে সাহায্য করেছিলেন, আমরা সেটাকে অনুকরণ করতে পারি। কীভাবে?

৬ যিহোবা শুধুমাত্র লোটকে সতর্ক করার জন্যই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে সদোমের উপর আসা ধ্বংসের হাত থেকে তাকে রক্ষা পেতে সাহায্য করার জন্যও স্বর্গদূতদের পাঠিয়েছিলেন। একইভাবে, আমরা যদি দেখতে পাই যে, আমাদের কোনো ভাই সমস্যায় পড়তে চলেছেন, তা হলে তাকে হয়তো সতর্ক করতে হবে। কিন্তু, আমরা হয়তো তাকে সাহায্যও করতে পারি। এমনকী তিনি যদি অন্যদের কাছ থেকে পাওয়া বাইবেলভিত্তিক পরামর্শ দ্রুত কাজে না লাগান, তারপরও আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। সেই দু-জন স্বর্গদূতের মতো হোন। হাল ছেড়ে দেওয়ার এবং সেই ভাইয়ের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার পরিবর্তে, সেই ভাইকে সাহায্য করার জন্য আমাদের বিভিন্ন ব্যাবহারিক উপায় খোঁজা উচিত। (১ যোহন ৩:১৮) রূপকভাবে বললে, আমাদের হয়তো তার হাত ধরে সাহায্যের প্রস্তাব দিতে হবে এবং তাকে যে-উত্তম পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তা কাজে লাগানোর জন্য তাকে সাহায্য করতে হবে।—পড়ুন, ১ থিষলনীকীয় ৫:১৪.

৭. যিহোবা লোটকে যেভাবে দেখেছিলেন, কীভাবে আমরা সেটাকে অনুকরণ করতে পারি?

৭ যিহোবা লোটের অসিদ্ধতার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে পারতেন। কিন্তু, এমনটা করার পরিবর্তে তিনি পরবর্তী সময়ে প্রেরিত পিতরকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন যেন তিনি লোটকে একজন ধার্মিক ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন। যিহোবা যে আমাদের ভুলগুলো ক্ষমা করেন, সেটা জেনে আমরা কতই-না আনন্দিত হই! (গীত. ১৩০:৩) যিহোবা লোটকে যেভাবে দেখেছিলেন, আমরা কি সেটাকে অনুকরণ করতে পারি? আমরা যদি আমাদের ভাই-বোনদের ভালো গুণগুলোর প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করি, তা হলে আমরা তাদের প্রতি আরও বেশি ধৈর্য ধরতে পারব। এর ফলে তাদের পক্ষে আমাদের কাছ থেকে সাহায্য গ্রহণ করা সহজ হয়ে যাবে।

সমবেদনাময় হোন

৮. সমবেদনা আমাদের কী করার জন্য অনুপ্রাণিত করবে?

৮ লোটের মতো ইয়োব কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নেননি। তারপরও তাকে কষ্ট ভোগ করতে হয়েছিল। তাকে চরম দুর্দশা ভোগ করতে হয়েছিল। তাকে তার বিষয়সম্পত্তি, সামাজিক পদমর্যাদা ও সুস্বাস্থ্য হারাতে হয়েছিল। এর চেয়েও খারাপ বিষয় হল তাকে ও তার স্ত্রীকে তাদের সমস্ত সন্তানকে মৃত্যুতে হারাতে হয়েছিল। এ ছাড়া, ইয়োবকে তার মিথ্যা বন্ধুদের কাছে থেকে অভিযোগের শিকার হতে হয়েছিল। একটা কোন কারণে ইয়োবের তিন জন মিথ্যা সান্ত্বনাকারী বন্ধু তার প্রতি সমবেদনা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন? তারা এটা বোঝার চেষ্টা করেননি যে, ইয়োবের প্রতি প্রকৃতই কী ঘটছে। এর ফলে, তারা ভুল উপসংহারে পৌঁছেছিলেন এবং নিষ্ঠুরভাবে ইয়োবের বিচার করেছিলেন। কীভাবে আমরা একইরকম ভুল করা এড়াতে পারি? আমরা যেন মনে রাখি, একমাত্র যিহোবাই একজন ব্যক্তির পরিস্থিতি সম্বন্ধে সমস্ত তথ্য জানেন। তাই, কষ্টের মধ্যে থাকা একজন ব্যক্তির বলা কথাগুলো মন দিয়ে শুনুন। তার কথাগুলো কেবল শোনার চেয়ে আরও বেশি কিছু করুন, তার যন্ত্রণা অনুভব করার চেষ্টা করুন। একমাত্র তখনই আপনি আপনার ভাই অথবা বোনের প্রতি প্রকৃত সহমর্মিতা দেখাতে পারবেন।

৯. সমবেদনা আমাদের কী করা থেকে বিরত করবে এবং কেন?

৯ অন্যেরা যে-সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে, সমবেদনা আমাদের সেই সম্বন্ধে ক্ষতিকর গুজব ছড়ানো থেকে বিরত করবে। যে-ব্যক্তি গুজব ছড়ান, তিনি মণ্ডলীকে গেঁথে তোলেন না; তিনি এটাকে ভেঙে দেন। (হিতো. ২০:১৯; রোমীয় ১৪:১৯) তিনি একজন সদয় ব্যক্তি নন বরং একজন বিবেচনাহীন ব্যক্তি আর তার কথাগুলো একজন কষ্টে থাকা ব্যক্তির যন্ত্রণাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। (হিতো. ১২:১৮; ইফি. ৪:৩১, ৩২) এর চেয়ে কতই-না ভালো হবে যদি আমরা একজন ব্যক্তির ভালো গুণগুলোর উপর মনোযোগ দিই এবং কীভাবে তাকে তার পরীক্ষার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য সাহায্য করা যায়, সেই বিষয়ে চিন্তা করি!

একজন প্রাচীন অত্যন্ত দুঃখিত একজন ভাইয়ের কথা শুনছেন, যিনি ‘অসংলগ্ন বাক্য’ বলছেন; পরবর্তী সময়ে সেই দু-জন ভাই একসঙ্গে হাঁটতে বেরিয়েছেন

কোনো সহবিশ্বাসী যদি ‘অসংলগ্ন বাক্য’ বলেন, তা হলে ধৈর্য ধরে তা শুনুন এবং সঠিক সময়ে সান্ত্বনাদায়ক বাক্য বলুন (১০-১১ অনুচ্ছেদ দেখুন)c

১০. ইয়োব ৬:২, ৩ পদের বিবরণ আমাদের কী শেখায়?

১০ ইয়োব ৬:২, ৩ পদ পড়ুন। ইয়োব কখনো কখনো ‘অসংলগ্ন বাক্য’ বলে ফেলেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে, তিনি স্বীকার করেছিলেন, তার বলা কিছু কিছু কথা ভুল ছিল। (ইয়োব ৪২:৬) বর্তমানে চাপপূর্ণ সমস্যার মধ্যে থাকা একজন ব্যক্তি হয়তো ইয়োবের মতো অসংলগ্ন কথা বলে ফেলতে পারেন, যেটার জন্য পরবর্তী সময়ে তিনি অনুশোচনা করেন। আমাদের কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত? বিচার করার পরিবর্তে আমাদের সমবেদনা দেখানো উচিত। মনে রাখবেন, যিহোবা চাননি যে, আমাদের মধ্যে কেউই সমস্যা ও চাপ ভোগ করুক, যেগুলোর মুখোমুখি বর্তমানে আমরা হচ্ছি। তাই এটা হতে পারে, যিহোবার একজন বিশ্বস্ত দাস যখন প্রচণ্ড চাপের মধ্যে থাকেন, তখন তিনি বিবেচনাহীনভাবে কিছু বলে ফেলেন। এমনকী তিনি যদি যিহোবা অথবা আমাদের সম্বন্ধে ভুল কিছু বলে ফেলেন, তারপরও তার উপর আমাদের দ্রুত রেগে যাওয়া অথবা তার কথা নিয়ে বিচার করা উচিত নয়।—হিতো. ১৯:১১.

১১. কীভাবে প্রাচীনরা পরামর্শ দেওয়ার সময়ে ইলীহূকে অনুকরণ করতে পারেন?

১১ চাপপূর্ণ সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করার সময়ে কখনো কখনো একজন ব্যক্তির হয়তো কিছু পরামর্শের প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। (গালা. ৬:১) কীভাবে প্রাচীনরা পরামর্শ দিতে পারেন? এক্ষেত্রে তাদের ইলীহূকে অনুকরণ করা উচিত, যিনি গভীর সহমর্মিতা দেখিয়ে ইয়োবের কথা শুনেছিলেন। (ইয়োব ৩৩:৬, ৭) ইলীহূ ইয়োবের চিন্তাভাবনা বোঝার পরই তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। যে-প্রাচীনরা ইলীহূর উদাহরণ অনুসরণ করেন, তারা সেই ব্যক্তির পরিস্থিতির কথা মন দিয়ে শুনবেন এবং তা বোঝার চেষ্টা করবেন। তারপর, তারা যখন পরামর্শ দেবেন, তখন তারা আরও ভালোভাবে তাদের শ্রোতাদের হৃদয় স্পর্শ করতে পারবেন।

সান্ত্বনার বাক্য বলুন

১২. স্বামী ও দুই ছেলের মৃত্যু নয়মীর উপর কোন প্রভাব ফেলেছিল?

১২ নয়মী একজন অনুগত মহিলা ছিলেন, যিনি যিহোবাকে ভালোবাসতেন। কিন্তু, তার স্বামী ও দুই ছেলে মারা যাওয়ার পর তিনি নিজের নয়মী নাম পরিবর্তন করে “মারা” অর্থাৎ “তিক্তা” রাখতে চেয়েছিলেন। (রূৎ ১:৩, ৫, ২০, ২১) নয়মীর পরীক্ষার সময়ে তার বৌমা রূৎ তার সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন। রূৎ কেবল নয়মীকে ব্যাবহারিক সাহায্যই জোগাননি কিন্তু সেইসঙ্গে তাকে সান্ত্বনাও প্রদান করেছিলেন। রূৎ সহজসরল ও আন্তরিক কথা বলার মাধ্যমে নয়মীর প্রতি ভালোবাসা ও সমর্থন প্রকাশ করেছিলেন।—রূৎ ১:১৬, ১৭.

১৩. কেন সেই ব্যক্তিদের আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে, যারা মৃত্যুতে বিবাহসাথিকে হারিয়েছে?

১৩ আমাদের সহউপাসকদের মধ্যে কোনো বিবাহিত ব্যক্তির সাথি যখন মারা যান, তখন তার সাহায্যের প্রয়োজন হয়। একটা বিবাহিত দম্পতিকে পাশাপাশি বেড়ে ওঠা দুটো গাছের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। বছর পেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুটো গাছের শিকড় একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। পরে একটা গাছ যখন শিকড়সমেত উপড়ে পড়ে যায় এবং মারা যায়, তখন অন্য গাছটাও গভীরভাবে প্রভাবিত হয়। একইভাবে কোনো ব্যক্তি যখন মৃত্যুতে তার বিবাহসাথিকে হারান, তখন তিনি হয়তো দীর্ঘ সময় ধরে গভীর আবেগগত কষ্ট ভোগ করেন। বোন প্রিয়া,b যার স্বামী হঠাৎই মারা যান, বলেন: “আমার জীবন একেবারে পালটে যায় আর আমার নিজেকে অসহায় বলে মনে হয়। আমি আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধুকে হারিয়েছি। আমি আমার স্বামীকে সব কিছু জানাতাম। ও আমার আনন্দে আনন্দিত হতো এবং কঠিন সময়েও আমাকে সমর্থন জোগাতো। আমি যখন আমার সমস্যার বিষয়ে ওকে জানাতাম, তখন ও সবসময় আমার কথা শুনত। আমার মনে হয় যেন আমাকে কেটে দু-টুকরো করে দেওয়া হয়েছে।”

এক বিবাহিত দম্পতি যখন একজন বিপত্নীক ভাইকে তার ও তার স্ত্রীর ছবি দেখাচ্ছেন, তখন সেই ভাই সান্ত্বনা লাভ করছেন

যারা মৃত্যুতে বিবাহসাথিকে হারিয়েছে, কীভাবে আমরা তাদের সাহায্য প্রদান করতে পারি? (১৪-১৫ অনুচ্ছেদ দেখুন)d

১৪-১৫. কোনো ব্যক্তির বিবাহসাথি মারা গেলে কীভাবে আমরা তাকে সান্ত্বনা দিতে পারি?

১৪ কোনো ব্যক্তির বিবাহসাথি মারা গেলে কীভাবে আমরা তাকে সান্ত্বনা দিতে পারি? প্রথম পদক্ষেপটা হল তার সঙ্গে গিয়ে কথা বলা, এমনকী যদিও আপনি অস্বস্তি বোধ করেন অথবা কী বলতে হবে, সেই বিষয়ে অনিশ্চিত থাকেন। আগে উল্লেখিত বোন প্রিয়া বলেন: “আমি বুঝি, মৃত্যুর ফলে লোকেরা কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করে। তারা হয়তো এই ভেবে দুশ্চিন্তা করে, আমাদের কথায় শোকার্ত ব্যক্তি আরও দুঃখিত হয়ে যেতে পারেন। কিন্তু লোকেরা যখন কোনো কিছু বলে না, তখন সেটা আরও বেশি বেদনাদায়ক হয়।” একজন শোকার্ত ব্যক্তি হয়তো আমাদের কাছ থেকে জ্ঞানের কথা আশা করেন না। বোন প্রিয়া বলেন: “সেইসময় আমার খুব ভালো লাগে, যখন আমার বন্ধুবান্ধবরা আমাকে শুধুমাত্র বলে, ‘আমার খুব খারাপ লাগছে।’”

১৫ উইলিয়াম, যিনি কয়েক বছর আগে মৃত্যুতে স্ত্রীকে হারিয়েছেন, বলেন: “অন্যেরা যখন আমার স্ত্রীর উত্তম কাজগুলো নিয়ে আমাকে বলে, তখন আমার খুব ভালো লাগে; এটা আমাকে আশ্বস্ত করে যে, লোকেরা তাকে ভালোবাসে এবং সম্মান করে। এই ধরনের সমর্থন আমাকে অনেক সাহায্য করে। তাদের কথাগুলো আমাকে প্রচুর সান্ত্বনা প্রদান করে কারণ আমার স্ত্রী আমার কাছে খুবই মূল্যবান এবং আমার জীবনের একটা বড়ো অংশ ছিল।” ভারতী নামে একজন বিধবা বোন ব্যাখ্যা করে বলেন: “অন্যেরা যখন আমার সঙ্গে প্রার্থনা করে অথবা আমাকে একটা অথবা দুটো শাস্ত্রপদ দেখায়, তখন আমি সান্ত্বনা লাভ করি। তারা যখন আমার স্বামীর বিষয়ে কথা বলে এবং ওর বিষয়ে বলা আমার কথাগুলো মন দিয়ে শোনে, তখন সেটা আমাকে সাহায্য করে।”

১৬. (ক) মৃত্যুতে যিনি কোনো প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাকে কেন ক্রমাগত সাহায্য প্রদান করা উচিত? (খ) যাকোব ১:২৭ পদ অনুযায়ী আমাদের কোন দায়িত্ব রয়েছে?

১৬ ঠিক যেমন রূৎ বিধবা নয়মীর সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন, একইভাবে আমাদেরও সেই ব্যক্তিদের ক্রমাগত সাহায্য প্রদান করতে হবে, যারা মৃত্যুতে কোনো প্রিয়জনকে হারিয়েছে। আগে উল্লেখিত বোন প্রিয়া বলেন: “আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর সাহায্য ও সান্ত্বনা প্রদান করার জন্য অনেকে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে। কিন্তু, কিছু দিন পর তারা আবার নিজেদের দৈনন্দিন কাজের তালিকায় ব্যস্ত হয়ে যায়। তবে, আমার জীবন একেবারে পালটে যায়। অন্যেরা যখন এটা উপলব্ধি করে যে, মৃত্যুতে কাউকে হারানোর ফলে একজন শোকার্ত ব্যক্তির কয়েক মাস, এমনকী কয়েক বছর ধরে সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তখন সেটা সত্যিই অনেক সাহায্যকারী হয়।” অবশ্য, প্রতিটা ব্যক্তিই আলাদা। কোনো কোনো ব্যক্তি হয়তো তুলনামূলকভাবে দ্রুত তাদের নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়। আবার অন্যেরা হয়তো সেইসময়ে তাদের সাথিকে হারানোর তীব্র যন্ত্রণা বোধ করে, যখন তাদের প্রিয় সাথিকে ছাড়া এমন কোনো কাজ করতে হয়, যা একসময়ে তারা একত্রে করত। লোকেরা যেভাবে শোক প্রকাশ করে থাকে, সেটা ব্যক্তি-বিশেষ হিসেবে আলাদা হয়। আমরা যেন মনে রাখি, যিহোবা আমাদের সেই ব্যক্তিদের যত্ন নেওয়ার বিশেষ সুযোগ ও দায়িত্ব দিয়েছেন, যারা মৃত্যুতে বিবাহসাথিকে হারিয়েছে।—পড়ুন, যাকোব ১:২৭.

১৭. কোনো ব্যক্তি যখন তার বিবাহসাথিকে ছেড়ে চলে যান, তখন কেন সেই পরিত্যক্ত সাথিকে সাহায্য করার প্রয়োজন রয়েছে?

১৭ কোনো ব্যক্তি যখন তার বিবাহসাথিকে ছেড়ে চলে যান, তখন সেই পরিত্যক্ত সাথিকে চরম মানসিক যন্ত্রণা ও চাপের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়। বোন জেনি, যার স্বামী তাকে ছেড়ে অন্য একজন মহিলার সঙ্গে চলে যান, বলেন: “বিবাহবিচ্ছেদের যন্ত্রণাকে স্বামী মারা যাওয়ার চেয়েও বেশি বলে মনে হয়। ও যদি কোনো দুর্ঘটনায় অথবা অসুস্থতায় মারা যেত, তা হলে সেটার জন্য ও হয়তো দায়ী হতো না। কিন্তু, আমার স্বামী ইচ্ছে করে আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। আমি যে-কতটা অপমানিত বোধ করেছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।”

১৮. যারা বিবাহসাথিকে হারিয়েছে, তাদের সাহায্য করার জন্য আমরা কী করতে পারি?

১৮ যারা বিবাহসাথিকে হারিয়েছে, তাদের জন্য যখন আমরা সদয় কাজগুলো করি, তখন আমরা দেখাই যে, আমরা সত্যিই তাদের ভালোবাসি। এখন তারা একা হয়ে গিয়েছে আর তাদের ভালো বন্ধুর প্রয়োজন রয়েছে। (হিতো. ১৭:১৭) কীভাবে আপনি নিজেকে তাদের ভালো বন্ধু হিসেবে প্রমাণিত করতে পারেন? আপনি তাদের এক বেলা খাবারের জন্য নিমন্ত্রণ জানাতে পারেন। আর আপনি হয়তো আমোদপ্রমোদের অথবা ক্ষেত্রের পরিচর্যার জন্য তাদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর প্রস্তাব দিতে পারেন। এ ছাড়া, আপনি হয়তো কখনো কখনো তাদেরকে আপনাদের পারিবারিক উপাসনায় যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। আপনি যদি তা করেন, তা হলে আপনি যিহোবাকে আনন্দিত করবেন কারণ তিনি “ভগ্নচিত্তদের নিকটবর্ত্তী” এবং “বিধবাদের বিচারকর্ত্তা [“বিধবাদের পক্ষ গ্রহণকারী,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন]।”—গীত. ৩৪:১৮; ৬৮:৫.

১৯. প্রথম পিতর ৩:৮ পদ আমাদের কী করতে বলে?

১৯ শীঘ্রই, ঈশ্বরের রাজ্য যখন পৃথিবীতে শাসন করতে শুরু করবে, তখন সমস্ত “সঙ্কট লোকে ভুলিয়া যাইবে।” আমরা সেই সময়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি, যখন “পূর্ব্বে যাহা ছিল, তাহা স্মরণে থাকিবে না, আর মনে পড়িবে না।” (যিশা. ৬৫:১৬, ১৭) সেই দিন না আসা পর্যন্ত আমরা যেন একে অপরকে সাহায্য করি এবং আমাদের কথায় ও কাজে প্রমাণ করি, আমরা আমাদের সহউপাসকদের ভালোবাসি।—পড়ুন, ১ পিতর ৩:৮.

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

  • যিহোবা যেভাবে লোট ও ইয়োবকে সাহায্য করেছিলেন, সেখান থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

  • নয়মীর অভিজ্ঞতা আমাদের কী শেখায়?

  • যারা বিবাহসাথিকে হারিয়েছে, কীভাবে আমরা তাদের সাহায্য প্রদান করতে পারি?

গান সংখ্যা ২৮ নতুন গীত

a লোট, ইয়োব ও নয়মী অনুগতভাবে যিহোবার সেবা করেছিলেন কিন্তু তারপরও তাদের চাপপূর্ণ পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়েছিল। এই প্রবন্ধে আলোচনা করা হবে, তাদের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কী শিখতে পারি। এ ছাড়া, এই প্রবন্ধে এও আলোচনা করা হবে, আমাদের ভাই-বোনেরা যখন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয়, তখন তাদের প্রতি ধৈর্য ধরা, সমবেদনা দেখানো এবং সান্ত্বনা প্রদান করা কেন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

b এই প্রবন্ধে নামগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে।

c ছবি সম্বন্ধে: একজন ভাই অত্যন্ত দুঃখের মধ্যে রয়েছেন এবং ‘অসংলগ্ন বাক্য’ বলছেন, যা একজন প্রাচীন ধৈর্য ধরে শুনছেন। পরবর্তী সময়ে, সেই ভাই শান্ত হয়ে যাওয়ার পর প্রাচীন ভাই তাকে সদয়ভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন।

d ছবি সম্বন্ধে: এক বিবাহিত দম্পতি একজন ভাইয়ের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন, যার স্ত্রী সম্প্রতি মারা গিয়েছেন। সেই দম্পতি ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে কাটানো আনন্দের মুহূর্তগুলো তার সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার