ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৩ ৮/১ পৃষ্ঠা ২০-২৫
  • জ্ঞান বাড়িয়ে তুলুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • জ্ঞান বাড়িয়ে তুলুন
  • ১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • শিখুন, পুনর্বিবেচনা করুন, ব্যবহার করুন
  • সক্রিয়ভাবে শেখা
  • জ্ঞান, ফল প্রদর্শন করার একটি সহায়ক
  • মানবজাতির ঈশ্বরবিষয়ক জ্ঞানের প্রয়োজন
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • এখন এবং চিরকাল জ্ঞান নেওয়া
    ২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • জ্ঞান যা জীবনে পরিচালিত করে তা অর্জন করতে অন্যদের সাহায্য করুন
    ১৯৯৬ আমাদের রাজ্যের পরিচর্যা
  • আসুন আমাদের মহামূল্যবান বিশ্বাসকে ধরে রাখি!
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৩ ৮/১ পৃষ্ঠা ২০-২৫

জ্ঞান বাড়িয়ে তুলুন

“আপনাদের বিশ্বাসে . . . জ্ঞান . . . যোগাও।”—২ পিতর ১:৫.

১, ২. (ক) আকাশের দিকে তাকিয়ে আপনি কি শিখতে পারেন? (রোমীয় ১:২০) (খ) মানুষের জ্ঞান কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে?

একটি নির্মেঘ, অন্ধকার রাতে বাইরে গিয়ে, উজ্জ্বল চাঁদ এবং অসংখ্য তারার দিকে তাকিয়ে আপনি কি শিখতে পারেন? যিনি এই সব সৃষ্টি করেছেন তাঁর সম্বন্ধে আপনি কিছু শিখতে পারেন।—গীতসংহিতা ১৯:১-৬; ৬৯:৩৪.

২ আপনি যদি সেই জ্ঞান আরও বাড়াতে চান, তাহলে কি আপনার বাড়ির ছাদের উপরে উঠে সেখান থেকে আপনি দেখবেন? হয়ত না। অ্যালবার্ট আইন্‌স্টাইন একবার এইরকম একটি দৃষ্টান্ত ব্যবহার করে বোঝাতে চেয়েছিলেন যে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিকদের জ্ঞান খুব বেশি বৃদ্ধি পায়নি আর সৃষ্টিকর্তা সম্বন্ধে তো তারা কিছুই জানতে পারেনি।a ডাঃ লুইস্‌ থমাস্‌ লিখেছিলেন: “বৈজ্ঞানিক দিক দিয়ে সবচেয়ে ফলপ্রদ এই শতাব্দীতে বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার হল যে আমরা সম্পূর্ণ অজ্ঞানতায় রয়েছি; প্রকৃতি সম্বন্ধে আমরা খুব অল্পই জানি এবং তার চেয়েও কম বুঝতে পারি।”

৩. কোন্‌ অর্থে জ্ঞানের বৃদ্ধি মনস্তাপ বৃদ্ধি করে?

৩ আপনি যদি সাধারণ আয়ুষ্কালের বাকি বছরগুলি এই জ্ঞান লাভের চেষ্টায় কাটান, তাহলে জীবন যে কত ছোট, এবং অসিদ্ধতা ও এই জগতের ‘নীচতার’ জন্য জ্ঞান ব্যবহার করা কত সীমিত হয়ে পড়ে, সেই সম্বন্ধে জানতে পারবেন। শলোমন এই বিষয়ে লিখেছিলেন: “প্রজ্ঞার বাহুল্যে মনস্তাপের বাহুল্য হয়; এবং যে বিদ্যার বৃদ্ধি করে, সে ব্যথার বৃদ্ধি করে।” (উপদেশক ১:১৫, ১৮) হ্যাঁ, ঈশ্বরের উদ্দেশ্য থেকে বিছিন্ন যে কোন জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা লাভ করা সাধারণত মনস্তাপ এবং ব্যথা নিয়ে আসে।—উপদেশক ১:১৩, ১৪; ১২:১২; ১ তীমথিয় ৬:২০.

৪. কোন্‌ জ্ঞান লাভ করা আমাদের উচিৎ?

৪ বাইবেল কি বলতে চাইছে যে জ্ঞান বৃদ্ধি করতে আমাদের আগ্রহী হওয়া উচিৎ নয়? প্রেরিত পিতর লিখেছিলেন: “কিন্তু আমাদের প্রভু ও ত্রাণকর্ত্তা যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ ও জ্ঞানে বর্দ্ধিষ্ণু হও। এখন ও অনন্তকাল পর্য্যন্ত তাঁহার গৌরব হউক।” (২ পিতর ৩:১৮) আমাদের উচিৎ, জ্ঞান বাড়িয়ে তুলতে এই উপদেশ আমাদের প্রতি প্রযোজ্য বলে মনে করা। কিন্তু কী ধরনের জ্ঞান? কিভাবে আমরা তা বাড়িয়ে তুলতে পারি? আর আমরা কি সত্যিই তাই করছি?

৫, ৬. আমাদের যে জ্ঞান লাভ করা উচিৎ, সেই সম্বন্ধে পিতর কিভাবে জোর দিয়েছিলেন?

৫ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা এবং যীশু সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান বাড়িয়ে তোলা পিতরের দ্বিতীয় চিঠির একটি মুখ্য বক্তব্য ছিল। চিঠির শুরুতে তিনি লিখেছিলেন: “ঈশ্বরের এবং আমাদের প্রভু যীশুর তত্ত্বজ্ঞানে অনুগ্রহ ও শান্তি প্রচুররূপে তোমাদের প্রতি বর্ত্তুক। কারণ যিনি নিজ গৌরবে ও সদ্‌গুণে আমাদিগকে আহ্বান করিয়াছেন, তাঁহার তত্ত্বজ্ঞান দ্বারা তাঁহার ঈশ্বরীয় শক্তি আমাদিগকে জীবন ও ভক্তি সম্বন্ধীয় সমস্ত বিষয় প্রদান করিয়াছে।” (২ পিতর ১:২, ৩) সুতরাং, অনুগ্রহ এবং শান্তি পাওয়ার সঙ্গে তিনি ঈশ্বর ও তাঁর পুত্র সম্বন্ধে জ্ঞান নেওয়ার সম্পর্ক দেখিয়েছেন। এই সম্পর্কটি যুক্তিসঙ্গত কারণ সৃষ্টিকর্তা যিহোবা, সমস্ত প্রকৃত জ্ঞানের উৎস। যে ঈশ্বরকে ভয় করে সে সমস্ত বিষয় সঠিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।—হিতোপদেশ ১:৭.

৬ তারপরে পিতর উৎসাহ দিয়েছিলেন: “আপনাদের বিশ্বাসে সদ্‌গুণ, ও সদ্‌গুণে জ্ঞান, জ্ঞানে জিতেন্দ্রিয়তা, ও জিতেন্দ্রিয়তায় ধৈর্য্য, ও ধৈর্য্যে ভক্তি, ও ভক্তিতে ভ্রাতৃস্নেহ, ও ভ্রাতৃস্নেহে প্রেম যোগাও। কেননা এই সমস্ত যদি তোমাদিগেতে থাকে ও উপচিয়া পড়ে, তবে আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের তত্ত্বজ্ঞান সম্বন্ধে তোমাদিগকে অলস কি ফলহীন থাকিতে দিবে না।” (২ পিতর ১:৫-৮)b পরের অধ্যায়ে লেখা আছে যে জ্ঞান অর্জন করলে লোকে এই জগতের কলুষিত প্রভাবকে এড়িয়ে চলতে পারবে। (২ পিতর ২:২০) এইভাবে পিতর স্পষ্ট বুঝিয়েছিলেন যে যারা খ্রীষ্টান হতে চলেছে তাদের জ্ঞান নিতে হবে, ঠিক যেমন যারা ইতিমধ্যেই যিহোবার সেবা করছে তাদেরও জ্ঞানের প্রয়োজন। আপনি কি এই দুটি শ্রেণীর মধ্যে কোন একটি শ্রেণীতে পড়েন?

শিখুন, পুনর্বিবেচনা করুন, ব্যবহার করুন

৭. কিভাবে অনেকে বাইবেলের মৌলিক সত্য সম্বন্ধে যথার্থ জ্ঞান লাভ করেছে?

৭ আপনি হয়ত যিহোবার সাক্ষীদের সাথে বাইবেল অধ্যয়ন করেন, কারণ আপনি তাদের বার্তায় সত্যের আভাষ খুঁজে পেয়েছেন। সপ্তাহে একবার, হয়ত এক ঘন্টার জন্য আপনি পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্তকাল বেঁচে থাকতে পারেন বইয়ের মত একটি সহায়কের সাহায্যে আপনি বাইবেলের একটি বিষয় সম্বন্ধে আলোচনা করেন। খুব ভাল! যিহোবার সাক্ষীদের সঙ্গে যারা এইভাবে অধ্যয়ন করেছে, তারা যথার্থ জ্ঞান লাভ করেছে। কিন্তু, আপনি যা জানছেন, তার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে ব্যক্তিগতভাবে আপনি কি করতে পারেন? এখানে কিছু উপদেশ দেওয়া হল।c

৮. অধ্যয়নের জন্য প্রস্তুতি করার সময়ে, আরও শেখার জন্য একজন ছাত্র কী করতে পারে?

৮ অধ্যয়নের জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি করার সময়ে, সম্পূর্ণ বিষয়বস্তুটি একবার দেখে নিন। তার অর্থ, অধ্যায়ের শিরোনাম, উপশিরোনামগুলি এবং বিষয়টি বর্ণনা করার জন্য যদি কোন ছবি থাকে তাহলে সেগুলি দেখে নেওয়া। তারপর, একটি অনুচ্ছেদ অথবা বইয়ের একটি অংশ পড়ার সময়ে, মুখ্য বক্তব্য এবং তার সমর্থনে দেওয়া শাস্ত্রগুলি লক্ষ্য করুন, সেগুলির নিচে দাগ দিয়ে নিন। যে বিষয়গুলি প্রতিপন্ন করা হয়েছে, সেগুলি আপনি শিখেছেন কিনা দেখবার জন্য, বিভিন্ন অনুচ্ছেদের প্রশ্নগুলির উত্তর দিতে চেষ্টা করুন। উত্তর দেওয়ার সময়ে, নিজের ভাষায় গুছিয়ে নিন। শেষে, প্রবন্ধটি একবার পুনর্বিবেচনা করুন, মুখ্য বিষয়টি এবং তার সমর্থনে দেওয়া যুক্তিগুলি স্মরণ করতে চেষ্টা করুন।

৯. অধ্যয়ন সম্বন্ধে উপদেশগুলি প্রয়োগ করলে, কিভাবে একজন শিখতে সাহায্য পেতে পারে?

৯ এই উপদেশ প্রয়োগ করলে আপনার জ্ঞান যে বৃদ্ধি পাবে সেই আশা আপনি রাখতে পারেন। কেন? একটি কারণ হল আপনি জানবার গভীর আগ্রহ নিয়ে সেই বিষয়টির প্রতি মনোযোগ দেবেন, বলা যেতে পারে জমি প্রস্তুত করবেন। একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা করে নিয়ে এবং তারপর মুখ্য বিষয় অথবা যুক্তিধারাগুলি লক্ষ্য করে আপনি দেখতে পাবেন যে মূল বিষয় অথবা উপসংহারের সঙ্গে অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলির কী সম্পর্ক আছে। সবশেষে আরেকবার বিষয়টি দেখে নিলে আপনি যা শিখেছেন তা মনে রাখতে আপনি সাহায্য পাবেন। পরে, আপনার বাইবেল অধ্যয়নের সময়ে কী সাহায্য হবে?

১০. (ক) কোন বিষয় অথবা নতুন তথ্য পুনরাবৃত্তি করায় কেন অল্পই লাভবান হওয়া যায়? (খ) “ক্রমান্বয়ে স্মরণ করা”র সাথে কী জড়িত আছে? (গ) পুনরাবৃত্তি করার মাধ্যমে ইস্রায়েলীয়দের সন্তান-সন্ততিরা কী উপকার পেতে পারত?

১০ শিক্ষাজগতে বিশেষজ্ঞরা, উপযুক্ত সময়ে এবং উদ্দেশ্যপূর্ণ পুনরাবৃত্তি করার মূল্য সম্বন্ধে জানেন। এই বিষয়টি শুধুমাত্র পাখির মত কোন কিছু আবৃত্তি করা নয়, যে পদ্ধতি হয়ত স্কুলে কোন নাম, তথ্য অথবা বিষয় মুখস্থ করার সময়ে আপনি ব্যবহার করেছেন। কিন্তু আপনি কি লক্ষ্য করেছিলেন যে শীঘ্রই আপনি যা মুখস্থ করেছিলেন সেই সম্বন্ধে ভুলে গেছেন, আপনার স্মরণে আর তা নেই? কেন? কোন নতুন কথা অথবা বিষয় মুখস্থ করা ক্লান্তিকর হতে পারে এবং তার ফল ক্ষণস্থায়ী হয়। কিভাবে এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করা যায়? আপনার সত্যিই শেখার ইচ্ছা থাকলে সাহায্য পাবেন। আরেকটি সাহায্য হল উদ্দেশ্যপূর্ণ পুনরাবৃত্তি করা। কোন বিষয় শেখার কয়েক মিনিট পরে, সেটি ভুলে যাওয়ার আগে, কি শিখেছেন আপনার মন থেকে তা স্মরণ করার চেষ্টা করুন। এই পদ্ধতিকে বলা হয় “ক্রমান্বয়ে স্মরণ করা।” ভুলে যাওয়ার আগে আরেকবার স্মরণ করে নিলে, আপনি আরও বেশিক্ষণ সেই বিষয়টি মনে রাখতে পারবেন। ইস্রায়েলে, পিতাদের দায়িত্ব ছিল ঈশ্বরের আজ্ঞা সম্বন্ধে তাদের সন্তানদের যত্নপূর্ব্বক শিক্ষা দেওয়া। (দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৬, ৭) “যত্নপূর্ব্বক শিক্ষা”র অর্থ পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে শেখানো। হয়ত, তখনকার বহু পিতা প্রথমে নিয়ম সম্বন্ধে তাদের সন্তানদের জানাতেন; পরে তারা আবার সেই তথ্য পুনরাবৃত্তি করতেন; আর তারপর তারা তাদের সন্তানদের বলতেন যা শিখেছে তা আবার বলতে।

১১. বাইবেল অধ্যয়নের সময়ে জ্ঞান বাড়ানোর জন্য কী করা যেতে পারে?

১১ কোন সাক্ষী যদি আপনার সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করেন, তাহলে আপনাকে শিখতে সাহায্য করার জন্য তিনি অধ্যয়নের মধ্যে, মাঝে মাঝে আগেকার বিষয়ের সারাংশ করতে পারেন। এই পদ্ধতি শুধুমাত্র স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে শেখা সুবিধাজনক হয়, সুতরাং খুশি হয়ে মাঝে মাঝে এই সারাংশ করায় যোগ দিন। তারপর, অধ্যয়নের শেষে, আপনার মন থেকে উত্তর দিয়ে শেষবার একটি পুনরালোচনায় যোগ দিন। অন্যকে শেখানোর সময়ে যেভাবে ব্যাখ্যা করবেন, সেইভাবে নিজের ভাষায় এখন আপনি উত্তর দিতে পারেন। (১ পিতর ৩:১৫) এইভাবে, আপনি যা শিখছেন তা বহুদিন মনে রাখতে পারবেন।—তুলনা করুন গীতসংহিতা ১১৯:১, ২, ১২৫; ২ পিতর ৩:১.

১২. নিজের স্মরণশক্তি বাড়িয়ে তোলার জন্য একজন ছাত্র কী করতে পারে?

১২ দুই-এক দিনের মধ্যে, আপনি যা শিখেছেন তা যদি অন্য কাউকে, হয়ত একজন সহপাঠী, সহকর্মী অথবা প্রতিবাসীকে বলেন, তাহলে মনে রাখতে সাহায্য পাবেন। বিষয়টি উল্লেখ করে আপনি বলতে পারেন যে প্রধান যুক্তিধারাগুলি এবং তার সমর্থনে বাইবেলের শাস্ত্রগুলি আপনার মনে আছে কিনা তা আপনি দেখতে চান। এইভাবে অন্য ব্যক্তিটিও আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে। যদি সে নাও হয়, তাহলেও দুই-একদিন পরে, নতুন শেখা বিষয়টি আরেকবার বললে আপনি তা ভালভাবে মনে রাখতে পারবেন। তখন, যেমন ২ পিতর ৩:১৮ উৎসাহ দেয়, সেই অনুযায়ী আপনি বিষয়টি প্রকৃতরূপেই শিখতে পারবেন।

সক্রিয়ভাবে শেখা

১৩, ১৪. শুধুমাত্র জ্ঞান লাভ করা এবং তা মনে রাখাই আমাদের পক্ষে যথেষ্ট নয় কেন?

১৩ শুধুমাত্র তথ্য জানা অথবা পরে তা স্মরণ করার থেকেও শেখা আরও বেশি কিছু। যীশুর দিনের ধর্মীয় লোকেরা বার বার একই প্রার্থনা করার মাধ্যমে তাই করত। (মথি ৬:৫-৭) কিন্তু সেই তথ্য তাদের কোন্‌ কাজে এসেছিল? ধর্ম সম্বন্ধে তারা কি কোন সুফল দেখিয়েছিল? না, কিছুই দেখায়নি। (মথি ৭:১৫-১৭; লূক ৩:৭, ৮) সমস্যার কিছুটা অংশ ছিল যে সেই বার্তা তাদের হৃদয়ে পৌঁছিয়ে সুফলদায়কভাবে তাদের প্রভাবিত করেনি।

১৪ পিতরের মত অনুযায়ী, তখন এবং এখনকার খ্রীষ্টানদের জন্য এইরকম হওয়া উচিৎ নয়। আমাদের বিশ্বাসের সঙ্গে সেই জ্ঞান যোগ দিতে বলেছেন যা নিষ্ক্রিয় অথবা নিষ্ফল হয়ে পড়া থেকে আমাদের রক্ষা করবে। (২ পিতর ১:৫, ৮) আমাদের ক্ষেত্রে তা হতে হলে, আমাদের উচিৎ জ্ঞান বাড়িয়ে তোলা এবং সেই জ্ঞানকে আমাদের হৃদয়ের গভীরে, আমাদের আন্তরিক ব্যক্তিত্বে প্রভাব ফেলতে দেওয়া। সবসময় তা হয় না।

১৫. কয়েকজন ইব্রীয় খ্রীষ্টানের ক্ষেত্রে কী সমস্যা দেখা দিয়েছিল?

১৫ পৌলের দিনে ইব্রীয় খ্রীষ্টানদের এই বিষয় কিছু সমস্যা ছিল। যিহূদী হওয়ার জন্য শাস্ত্র সম্বন্ধে তাদের কিছুটা জ্ঞান ছিল। যিহোবা সম্বন্ধে এবং তিনি কি আশা করেন সেই সম্বন্ধে তারা জানত। পরে তারা মশীহ সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করে, বিশ্বাস দেখায় এবং খ্রীষ্টান হিসাবে বাপ্তিস্ম নেয়। (প্রেরিত ২:২২, ৩৭-৪১; ৮:২৬-৩৬) দিন যেতে থাকে এবং তারা নিশ্চয়ই খ্রীষ্টীয় সভায় উপস্থিত থেকে, শাস্ত্র পড়ায় এবং উত্তর দেওয়ায় অংশ নিতে থাকে। তবুও, কিছু লোকের জ্ঞান বৃদ্ধি হয় না। পৌল লিখেছিলেন: “বস্তুতঃ এত কালের মধ্যে শিক্ষক হওয়া তোমাদের উচিত ছিল, কিন্তু কেহ যে তোমাদিগকে ঈশ্বরীয় বচনকলাপের আদিম কথার অক্ষরমালা শিক্ষা দেয়, ইহা তোমাদের পক্ষে পুনর্ব্বার আবশ্যক হইয়াছে; এবং তোমরা এমন লোক হইয়া পড়িয়াছ, যাহাদের দুগ্ধে প্রয়োজন, কঠিন খাদ্যে নয়।” (ইব্রীয় ৫:১২) তা কি করে হয়? আমাদের ক্ষেত্রেও কি তাই ঘটতে পারে?

১৬. চিরহিমায়িত অবস্থা কী এবং তার ফলে গাছপালার উপরে কী প্রভাব পড়ে?

১৬ উদাহরণস্বরূপ, সুমেরু এবং অন্যান্য অঞ্চলের চিরহিমায়িত জমির কথা চিন্তা করুন, যেখানে গড় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে থাকে। মাটি, পাথর এবং মাটির নিচের জল জমে গিয়ে কঠিন পদার্থে পরিণত হয়, কখনও কখনও প্রায় ৯০০ মিটার গভীর পর্যন্ত। গ্রীষ্মকালে, উপরের বরফঢাকা মাটি (যাকে সক্রিয় স্তর বলা হয়) কিছুটা গলে যেতে পারে। কিন্তু, গলে যাওয়া মাটির এই পাতলা স্তর কাদা-ভর্তি হয়ে থাকে কারণ নিচের জমে যাওয়া মাটিতে জল ঢুকতে পারে না। উপরের পাতলা স্তরে যে গাছপালা জন্মায় তা ছোট ছোট হয়, পূর্ণ বৃদ্ধি লাভ করে না; সেগুলির শিকড় নিচের হিমায়িত জমি ভেদ করতে পারে না। ‘বাইবেলের জ্ঞানে আমি বৃদ্ধি পাচ্ছি কিনা, তার সঙ্গে হিমায়িত অবস্থার কী সম্পর্ক আছে?’ আপনি ভাবতে পারেন।

১৭, ১৮. কিছু ইব্রীয় খ্রীষ্টানের যা হয়েছিল, তা চিত্রিত করতে চিরহিমায়িত অবস্থা এবং তার সক্রিয় স্তরের উদাহরণ কিভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে?

১৭ যার মানসিক ক্ষমতা যথার্থ জ্ঞান নেওয়া, তা মনে রাখা এবং ব্যবহার করায় সক্রিয়ভাবে জড়িত নয়, তাকে এই হিমায়িত অবস্থা বেশ ভালভাবেই চিত্রিত করে। (মথি ১৩:৫, ২০, ২১ তুলনা করুন।) সেই ব্যক্তির হয়ত বাইবেলের সত্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানবার ক্ষমতা আছে। সে হয়ত “ঈশ্বরীয় বচনকলাপের আদিম কথার অক্ষরমালা” সম্বন্ধে শিক্ষা নিয়েছে এবং বাপ্তিস্ম নেওয়ার যোগ্য হয়েছে, যেমন ইব্রীয় খ্রীষ্টানেরা হয়েছিল। কিন্তু সে “খ্রীষ্ট-বিষয়ক আদিম কথা”র অতিরিক্ত কোন বিষয়ে, “সিদ্ধির চেষ্টায় অগ্রসর” নাও হতে পারে।—ইব্রীয় ৫:১২; ৬:১.

১৮ সভায় উপস্থিত তখনকার দিনের কিছু খ্রীষ্টানদের কথা মনে করুন। তারা উপস্থিত ছিল এবং জেগেও ছিল, কিন্তু তাদের মন কি শেখার প্রতি আগ্রহী ছিল? তারা কি সক্রিয়ভাবে এবং আন্তরিক চেষ্টার সাথে জ্ঞান বাড়িয়ে তুলছিল? হয়ত না। অপরিপক্ক ব্যক্তিদের জন্য সভার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিল সেই পাতলা সক্রিয় স্তরের মত, তাদের অন্তর ছিল কঠিন, জমে যাওয়া মাটির মত। গভীর অর্থপূর্ণ অথবা জটিল কোন সত্যের শিকড় তাদের চিরহিমায়িত মনে প্রবেশ করতে পারত না।—যিশাইয় ৪০:২৪ তুলনা করুন।

১৯. বর্তমানে একজন অভিজ্ঞ খ্রীষ্টান কিভাবে সেই ইব্রীয় খ্রীষ্টানদের মত হয়ে উঠতে পারেন?

১৯ বর্তমানেও কোন খ্রীষ্টানের একই অবস্থা হতে পারে। সভায় উপস্থিত থাকলেও, জ্ঞান বাড়িয়ে তোলার সেই সুযোগ সে গ্রহণ নাও করতে পারে। সভায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া যায় কি? কোন নতুন ব্যক্তি অথবা ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য একটি শাস্ত্র পড়তে অথবা অনুচ্ছেদের ভাষায় কোন মন্তব্য করার জন্য যথেষ্ট প্রচেষ্টার প্রয়োজন হতে পারে, যেখান থেকে তাদের ক্ষমতার উপযুক্ত এবং প্রশংসনীয় প্রয়োগ দেখা যায়। কিন্তু পৌল দেখিয়েছিলেন যে অন্যদের ক্ষেত্রে, যদি তারা জ্ঞান বৃদ্ধি করতে চায় তাহলে যতদিন ধরে তারা খ্রীষ্টান হয়েছেন তা মনে রেখে অংশ নেওয়ার সেই প্রথম ধাপ তাদের অতিক্রম করতে হবে।—ইব্রীয় ৫:১৪.

২০. আমাদের প্রত্যেকের কোন্‌ আত্ম-পরীক্ষা করা উচিৎ?

২০ একজন অভিজ্ঞ খ্রীষ্টান যদি বাইবেলের কোন শাস্ত্র পড়া অথবা অনুচ্ছেদ থেকে সরাসরি কোন মন্তব্য করা ছাড়া আর কোনভাবে উন্নতি না করে, তাহলে তার অংশগ্রহণ হয়ত মনের অগভীর “সক্রিয় স্তর” থেকে আসছে। একটির পর একটি সভায়, তার মানসিক ক্ষমতা চিরহিমায়িত মাটির মত জমে থাকতে পারে। আমাদের প্রত্যেকের নিজেকে জিজ্ঞাসা করা উচিৎ: ‘আমার ক্ষেত্রে কি এই বিষয়টি সত্য? আমি কি মানসিক দিক দিয়ে কোন রকম চিরহিমায়িত অবস্থায় রয়েছি? মানসিকভাবে আমি কতটা সজাগ এবং শিখতে কতটা আগ্রহী?’ প্রকৃত উত্তর দিতে যদি আমরা অস্বস্তিবোধ করি, তাহলেও এখন থেকে আমরা জ্ঞান বৃদ্ধি করবার জন্য পদক্ষেপ নিয়ে পারি।

২১. সভার জন্য প্রস্তুতি করতে অথবা উপস্থিত থাকার জন্য পূর্বে আলোচিত কোন্‌ পদ্ধতিগুলি আপনি প্রয়োগ করতে পারেন?

২১ অনুচ্ছেদ ৮-এ দেওয়া উপদেশ আমরা ব্যক্তিগতভাবে প্রয়োগ করতে পারি। মণ্ডলীর সঙ্গে আমরা যত দিন ধরেই জড়িত থাকি না কেন, আমরা সিদ্ধির চেষ্টায় অগ্রসর হতে এবং জ্ঞান বৃদ্ধি করতে সংকল্প করতে পারি। কিছু লোকের জন্য তার অর্থ হবে সভার জন্য আরও ভালভাবে প্রস্তুতি করা, হয়ত বহু বছর আগে যে অভ্যাস ছিল, কিন্তু আস্তে আস্তে যা বন্ধ করে দেওয়া হয়, তা ফিরিয়ে আনা। প্রস্তুতি করার সময়ে, মুখ্য বিষয়গুলি কি তা নির্ধারণ করতে এবং যুক্তি গড়ে তুলতে যে সমস্ত অচেনা শাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলি বুঝতে চেষ্টা করুন। অধ্যয়নের বিষয়ে কোন নতুন দৃষ্টিকোণ অথবা চিন্তাধারা লক্ষ্য করতে চেষ্টা করুন। একইভাবে, সভার সময়ে আপনার নিজের ক্ষেত্রে, ১০ এবং ১১ অনুচ্ছেদের উপদেশ প্রয়োগ করতে চেষ্টা করুন। মানসিকভাবে সজাগ থাকতে চেষ্টা করুন, যেন আপনার মানসিক তাপমাত্রা হিমাঙ্কের বহু উপরে রাখছেন। তাহলে “চিরহিমায়িত” অবস্থার প্রতি কোন রকম প্রবণতা এড়িয়ে চলতে পারবেন; এই সক্রিয় প্রচেষ্টার মাধ্যমে পূর্বেকার কোন “জমে যাওয়া” অবস্থাকেও আবার উত্তপ্ত করে তুলবে।—হিতোপদেশ ৮:১২; ৩২-৩৪.

জ্ঞান, ফল প্রদর্শন করার একটি সহায়ক

২২. জ্ঞান বৃদ্ধি করার জন্য আমরা যদি প্রচেষ্টা করি তাহলে আমরা কিভাবে উপকৃত হব?

২২ আমাদের প্রভু এবং ত্রাণকর্ত্তা যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ ও জ্ঞানে বর্দ্ধিষ্ণু হওয়ার জন্য আমরা যদি চেষ্টা করি তাহলে ব্যক্তিগতভাবে আমরা কিভাবে উপকৃত হব? আমাদের মানসিক ক্ষমতাকে সজাগ রাখতে সক্রিয় প্রচেষ্টা করার এবং জ্ঞান নিতে প্রস্তুত থাকার মাধ্যমে, বাইবেলের নতুন এবং আরও জটিল সত্যের বীজ আমাদের হৃদয়ের গভীরে স্থাপিত হবে এবং আমাদের বোধশক্তি বৃদ্ধি পাবে ও স্থায়ী হবে। হৃদয় সম্বন্ধে যীশুর আরেকটি উদাহরণের সঙ্গে এই বিষয়টির তুলনা করা যেতে পারে। (লূক ৮:৫-১২) উত্তম ভূমিতে যে বীজ পড়বে, তার শিকড় দৃঢ়ভাবে স্থাপিত হবে এবং সেখানে ভাল ফল উৎপন্ন হবে।—মথি ১৩:৮, ২৩.

২৩. দ্বিতীয় পিতর ৩:১৮ পদ যদি আমরা হৃদয়ে গ্রহণ করি তাহলে কী ফল হতে পারে? (কলসীয় ১:৯-১২)

২৩ যীশুর উদাহরণ কিছুটা আলাদা ছিল, কিন্তু পিতর যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেই একই ভাল ফল পাওয়া যাবে: “ইহারই জন্য তোমরা সম্পূর্ণ যত্ন প্রয়োগ করিয়া আপনাদের বিশ্বাসে সদ্‌গুণ, ও সদ্‌গুণে জ্ঞান, . . . যোগাও। কেননা এই সমস্ত যদি তোমাদিগেতে থাকে ও উপচিয়া পড়ে, তবে আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের তত্ত্বজ্ঞান সম্বন্ধে তোমাদিগকে অলস কি ফলহীন থাকিতে দিবে না।” (২ পিতর ১:৫-৮) হ্যাঁ, আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি পেলে আমরা ভাল ফল পাব। আমরা দেখব যে আরও জ্ঞান নেওয়া আনন্দদায়ক হতে পারে। (হিতোপদেশ ২:২-৫) আপনি যা শিখবেন আরও ভালভাবে তা মনে রাখতে পারবেন এবং শিষ্য হওয়ার জন্য অন্যদের সাহায্য করতে কাজে লাগাতে পারবেন। এইভাবেও, আপনি আরও ভাল ফল দেখাতে পারবেন এবং ঈশ্বর ও তাঁর পুত্রের প্রতি গৌরব নিয়ে আসতে পারবেন। পিতর এইভাবে তার দ্বিতীয় পত্র শেষ করেছিলেন: “আমাদের প্রভু ও ত্রাণকর্ত্তা যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ ও জ্ঞানে বর্ধিষ্ণু হও। এখন ও অনন্তকাল পর্য্যন্ত তাঁহার গৌরব হউক।”—২ পিতর ৩:১৮. (w93 8/15)

[পাদটীকাগুলো]

a “চাঁদ সম্বন্ধে আগ্রহী একজন ব্যক্তি, আরও ভালভাবে সেই জ্যোতিষ্কটিকে দেখবার জন্য যদি তার বাড়ির ছাদে ওঠেন, তাহলে [জ্ঞানের বৃদ্ধির] সঙ্গে তার তুলনা করা যেতে পারে।”

b এই অংশটির প্রথম দুটি গুণ, বিশ্বাস এবং সদ্‌গুণ সম্বন্ধে জুলাই ১৫, ১৯৯৩ সংখ্যায় আলোচনা করা হয়েছিল।

c যারা বহুদিন আগে খ্রীষ্টান হয়েছেন, ব্যক্তিগত বাইবেল অধ্যয়নে এবং সভার জন্য প্রস্তুতি করার সময়ে তারাও এই উপদেশ থেকে উপকৃত হতে পারেন।

আপনার কি স্মরণে আছে?

▫ আপনার জ্ঞান আরও বৃদ্ধি করতে আপনার আগ্রহী হওয়া উচিৎ কেন?

▫ বাইবেলের একজন নতুন ছাত্র তার অধ্যয়ন থেকে কিভাবে আরও লাভবান হতে পারে?

▫ চিরহিমায়িত অবস্থার দ্বারা চিত্রিত কোন্‌ বিপদ আপনার এড়িয়ে চলা উচিৎ?

▫ জ্ঞান বৃদ্ধি করায় আপনার ক্ষমতার উন্নতি করতে আপনার কেন দৃঢ় সংকল্প করা উচিৎ?

[Pictures on page 23]

মানসিক চিরহিমায়িত অবস্থা সম্বন্ধে আমার কি কোন সমস্যা আছে?

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার