ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • lv অধ্যায় ৩ পৃষ্ঠা ২৮-৪০
  • সেই ব্যক্তিদের ভালোবাসুন, যাদেরকে ঈশ্বর ভালোবাসেন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • সেই ব্যক্তিদের ভালোবাসুন, যাদেরকে ঈশ্বর ভালোবাসেন
  • “ঈশ্বরের প্রেমে আপনাদিগকে রক্ষা কর”
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যাদেরকে ঈশ্বর ভালোবাসেন
  • বাইবেলের একটা উদাহরণ থেকে শেখা
  • আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব বাছাই করা
  • যখন সমস্যা দেখা দেয়
  • যখন মেলামেশা বন্ধ করতে হবে
  • কীভাবে আমরা ভালো বন্ধুবান্ধব বেছে নিতে পারি?
    ২০১২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যো না থ ন ‘উনি ঈশ্বরের সহিত কার্য্য করিয়াছেন’
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবার প্রতি আপনার আনুগত্যের প্রমাণ দিন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
  • যোনাথন একজন সাহসী ও অনুগত ব্যক্তি ছিলেন
    বাইবেল থেকে তুমি যা শিখতে পার
আরও দেখুন
“ঈশ্বরের প্রেমে আপনাদিগকে রক্ষা কর”
lv অধ্যায় ৩ পৃষ্ঠা ২৮-৪০
কিছু আধ্যাত্মিকমনা বধু একসগ পিকনিকে আনন্দ করছন

অধ্যায় ৩

সেই ব্যক্তিদের ভালোবাসুন, যাদেরকে ঈশ্বর ভালোবাসেন

“জ্ঞানীদের সহচর হও, জ্ঞানী হইবে।” —হিতোপদেশ ১৩:২০.

১-৩. (ক) বাইবেল কোন অনস্বীকার্য সত্য সম্বন্ধে প্রকাশ করে? (খ) কীভাবে আমরা এমন বন্ধুবান্ধব বাছাই করতে পারি, যারা আমাদের উপর ভালো প্রভাব ফেলবে?

এক অর্থে, লোকেরা ঠিক স্পঞ্জের মতো; তারা সাধারণত তাদের চারপাশে যা-কিছুই থাকুক না কেন, তা গ্রহণ করে, ঠিক যেমন একটা স্পঞ্জ এর চারপাশের জল গ্রহণ করে বা শুষে নেয়। খুব সহজেই—এমনকী অজান্তেই—আমরা সেই ব্যক্তিদের মনোভাব, মানদণ্ড এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো গ্রহণ করে থাকি, যাদের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ মেলামেশা রয়েছে।

২ বাইবেল এক অনস্বীকার্য সত্য সম্বন্ধে প্রকাশ করে, যখন এটি বলে: “জ্ঞানীদের সহচর হও, জ্ঞানী হইবে; কিন্তু যে হীনবুদ্ধিদের বন্ধু, সে ভগ্ন হইবে।” (হিতোপদেশ ১৩:২০) এই প্রবাদ মাঝেমধ্যে সাক্ষাৎ করার চেয়ে আরও বেশি কিছু সম্বন্ধে বলে। “সহচর” বা কারো সঙ্গে চলাফেরা করা অভিব্যক্তিটা ক্রমাগত মেলামেশাকে ইঙ্গিত করে। এই পদ সম্বন্ধে মন্তব্য করতে গিয়ে বাইবেলের একটা তথ্যগ্রন্থ বলে: “একজন ব্যক্তির সঙ্গে চলাফেরা করা প্রেম ও আসক্তির ইঙ্গিত বহন করে।” আপনি কি একমত নন যে, যাদেরকে আমরা ভালোবাসি, তাদেরকে আমরা সাধারণত অনুকরণ করতে চাই? বস্তুতপক্ষে, যাদেরকে আমরা ভালোবাসি, তাদের প্রতি আমরা আবেগগতভাবে আসক্ত বলে, তারা আমাদের উপর এক জোরালো প্রভাব ফেলতে পারে—হয় তা ভালো নতুবা মন্দ।

৩ ঈশ্বরের প্রেমে অবস্থিতি করার জন্য আমাদের এমন বন্ধুবান্ধব খোঁজা অতীব গুরুত্বপূর্ণ, যারা আমাদের উপর ভালো প্রভাব ফেলবে। কীভাবে আমরা তা করতে পারি? সহজভাবে বললে, যাদেরকে ঈশ্বর ভালোবাসেন, তাদেরকে ভালোবাসার এবং তাঁর বন্ধুদেরকে আমাদের বন্ধু করার মাধ্যমে আমরা তা করতে পারি। এই বিষয়টা একটু চিন্তা করুন। যিহোবা তাঁর বন্ধুদের মধ্যে যে-গুণাবলি আশা করেন, সেই গুণাবলি যাদের মধ্যে রয়েছে, তাদের ছাড়া আর কাদেরকেই-বা আমরা ভালো বন্ধু হিসেবে বাছাই করতে পারি? তাহলে, আসুন আমরা পরীক্ষা করে দেখি যে, কোন ধরনের লোকেদেরকে ঈশ্বর ভালোবাসেন। যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্টভাবে মনে রাখার মাধ্যমে আমরা এমন বন্ধুবান্ধব বাছাই করার জন্য আরও সুসজ্জিত হতে পারব, যারা আমাদের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

যাদেরকে ঈশ্বর ভালোবাসেন

৪. কে তাঁর বন্ধু হওয়ার যোগ্য, তা বাছাই করার অধিকার কেন যিহোবার রয়েছে আর কেন যিহোবা অব্রাহামকে “আমার বন্ধু” বলে উল্লেখ করেছিলেন?

৪ বন্ধু বাছাই করার ব্যাপারে যিহোবা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নির্বাচন করে থাকেন। তা করার অধিকার কি তাঁর নেই? তিনি হলেন নিখিলবিশ্বের সার্বভৌম প্রভু এবং তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব মানে হল সবচেয়ে বড়ো সম্মানের এক বিষয়। তাহলে, কাদেরকে তিনি তাঁর বন্ধু হিসেবে বাছাই করেন? যিহোবা সেই ব্যক্তিদের নিকটবর্তী হন, যারা তাঁর উপর নির্ভর করে এবং তাঁর উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখে। উদাহরণ স্বরূপ, কুলপতি অব্রাহামের কথা বিবেচনা করুন, যিনি তার অসাধারণ বিশ্বাসের জন্য পরিচিত ছিলেন। একজন মানব পিতাকে তার নিজের পুত্রকে বলি হিসেবে উৎসর্গ করতে বলার চেয়ে বিশ্বাসের বড়ো পরীক্ষা আর কিছু হতে পারে না।a তা সত্ত্বেও, অব্রাহাম এই পূর্ণ বিশ্বাস রেখে “ইস্‌হাককে উৎসর্গ করিয়াছিলেন” যে, “ঈশ্বর মৃতগণের মধ্য হইতেও উত্থাপন করিতে সমর্থ।” (ইব্রীয় ১১:১৭-১৯) অব্রাহাম এইরকম বিশ্বাস ও বাধ্যতা প্রদর্শন করার কারণে যিহোবা প্রেমের সঙ্গে তাকে “আমার বন্ধু” বলে উল্লেখ করেছিলেন।—যিশাইয় ৪১:৮; যাকোব ২:২১-২৩.

৫. যিহোবা সেই ব্যক্তিদেরকে কোন দৃষ্টিতে দেখেন, যারা অনুগতভাবে তাঁর বাধ্য হয়?

৫ অনুগত বাধ্যতাকে যিহোবা উচ্চমূল্য দিয়ে থাকেন। তিনি সেই ব্যক্তিদেরকে ভালোবাসেন, যারা সমস্তকিছুর ঊর্ধ্বে তাঁর প্রতি অনুগত থাকতে ইচ্ছুক। এই প্রকাশনার ১ অধ্যায়ে আমরা যেমন দেখেছি যে, যিহোবা সেই ব্যক্তিদের ব্যাপারে সন্তুষ্ট, যারা প্রেমের বশবর্তী হয়ে তাঁর বাধ্য হওয়া বেছে নেয়। “ন্যায়বানদের তিনি তাঁর অন্তরঙ্গতায় গ্রহণ করেন,” হিতোপদেশ [প্রবচনমালা] ৩:৩২ পদ বলে (জুবিলী বাইবেল)। ঈশ্বর যে-বিষয়গুলো চান, সেগুলো যারা অনুগতভাবে পূরণ করে, তারা যিহোবার কাছ থেকে এক সদয় আমন্ত্রণ লাভ করে: তারা তাঁর ‘তাম্বুর’ অতিথি হতে পারে—তাঁকে উপাসনা করার জন্য আমন্ত্রিত এবং যেকোনো সময় তাঁর কাছে প্রার্থনা করতে পারে।—গীতসংহিতা ১৫:১-৫.

৬. কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে, আমরা যিশুকে ভালোবাসি আর যিহোবা সেই ব্যক্তিদের সম্বন্ধে কেমন বোধ করেন, যারা তাঁর পুত্রকে ভালোবাসে?

৬ যিহোবা সেই ব্যক্তিদের ভালোবাসেন, যারা তাঁর একজাত পুত্র যিশুকে ভালোবাসে। যিশু বলেছিলেন: “কেহ যদি আমাকে প্রেম করে, তবে সে আমার বাক্য পালন করিবে; আর আমার পিতা তাহাকে প্রেম করিবেন, এবং আমরা তাহার নিকটে আসিব ও তাহার সহিত বাস করিব।” (যোহন ১৪:২৩) কীভাবে আমরা যিশুর প্রতি আমাদের ভালোবাসা দেখাতে পারি? নিশ্চিতভাবেই, তাঁর আজ্ঞা সকল পালন করে, যেগুলোর মধ্যে সুসমাচার প্রচার ও শিষ্য তৈরি করার আজ্ঞাও রয়েছে। (মথি ২৮:১৯, ২০; যোহন ১৪:১৫, ২১) এ ছাড়া, আমরা যখন ‘তাঁহার পদচিহ্নের অনুগমন করি’ এবং অসিদ্ধ মানুষ হিসেবে আমাদের পক্ষে যতটা সম্ভব কথায় ও কাজে তাঁকে অনুকরণ করি, তখনও আমরা যিশুর প্রতি আমাদের প্রেম প্রদর্শন করি। (১ পিতর ২:২১) তাঁর পুত্রের প্রতি ভালোবাসা যে-ব্যক্তিদেরকে এক খ্রিস্টতুল্য জীবনধারা অনুধাবন করতে পরিচালিত করে, তাদের প্রচেষ্টায় যিহোবার হৃদয় আনন্দিত হয়।

৭. কেন সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা বিজ্ঞতার কাজ, যারা যিহোবার বন্ধু?

৭ বিশ্বাস, আনুগত্য, বাধ্যতা এবং যিশুর ও তাঁর মানগুলোর প্রতি ভালোবাসা—এগুলো হল সেই গুণাবলি, যেগুলো যিহোবা তাঁর বন্ধুদের মধ্যে থাকুক বলে আশা করেন। আমাদের প্রত্যেকের নিজেদেরকে জিজ্ঞেস করা উচিত: ‘আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধবের মধ্যে কি এই গুণাবলি ও মানগুলো দেখা যায়? আমি কি যিহোবার বন্ধুদেরকে আমার বন্ধু করেছি?’ তা করা বিজ্ঞতার কাজ। যে-ব্যক্তি বিশেষরা ঈশ্বরীয় গুণাবলি গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করে এবং উদ্যোগ সহকারে রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করে, তারা আমাদের উপর এক ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে এবং ঈশ্বরকে খুশি করার বিষয়ে আমাদের দৃঢ়সংকল্প অনুযায়ী জীবনযাপন করার জন্য আমাদেরকে প্রভাবিত করতে পারে।—“একজন উত্তম বন্ধু বলতে কী বোঝায়?” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।

একজন উত্তম বন্ধু বলতে কী বোঝায়?

দু-জন ভালো বধু একে অন্যের সগ কথা বলছন

নীতি: “বন্ধু সব সময়েই ভালবাসে, আর ভাই থাকে দুর্দশার সময়ে সাহায্য করবার জন্য।”—হিতোপদেশ ১৭:১৭, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন।

নিজেকে জিজ্ঞেস করার মতো কিছু প্রশ্ন

  • আমার বন্ধুবান্ধব কি যিহোবা ও যিশুরও বন্ধু?—যোহন ১৫:১৪, ১৬; যাকোব ২:২৩.

  • আমার বন্ধুবান্ধব কি আমাকে উত্তম অভ্যাসগুলো গড়ে তুলতে সাহায্য করে?—১ করিন্থীয় ১৫:৩৩.

  • আমার বন্ধুবান্ধব কি আমাকে এতটাই ভালোবাসে যে প্রয়োজনের সময় আমাকে সংশোধন করে?—গীতসংহিতা ১৪১:৫; হিতোপদেশ ২৭:৬.

  • আমি অন্যদের কেমন বন্ধু, সেই সম্বন্ধে আমার কথাবার্তা ও কাজ কী প্রকাশ করে?—হিতোপদেশ ১২:১৮; ১ যোহন ৩:১৬-১৮.

বাইবেলের একটা উদাহরণ থেকে শেখা

৮. এই ব্যক্তিদের সম্পর্ক সম্বন্ধে কোন বিষয়টা আপনাকে প্রভাবিত করে যেমন, (ক) নয়মী ও রূৎ? (খ) তিন ইব্রীয় যুবক? (গ) পৌল ও তীমথিয়?

৮ বাইবেলে এমন অনেক ব্যক্তির উদাহরণ রয়েছে, যারা ভালো বন্ধুবান্ধব বাছাই করার ফলে উপকৃত হয়েছে। আপনি নয়মী ও তার পুত্রবধূ রূৎ, তিন ইব্রীয় যুবক যারা বাবিলে থাকাকালীন একসঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছিলেন এবং পৌল ও তীমথিয়ের মধ্যে যে-সম্পর্ক ছিল, তা পড়তে পারেন। (রূতের বিবরণ ১:১৬; দানিয়েল ৩:১৭, ১৮; ১ করিন্থীয় ৪:১৭; ফিলিপীয় ২:২০-২২) তবে, আসুন আমরা আরেকটা উল্লেখযোগ্য উদাহরণের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করি, যেটা হল: দায়ূদ ও যোনাথনের মধ্যে বন্ধুত্ব।

৯, ১০. দায়ূদ ও যোনাথনের মধ্যে যে-বন্ধুত্ব ছিল, তার ভিত্তি কী ছিল?

৯ বাইবেল বলে যে, দায়ূদ গলিয়াৎকে হত্যা করার পর “যোনাথনের প্রাণ দায়ূদের প্রাণে সংসক্ত হইল, এবং যোনাথন আপন প্রাণের মত তাঁহাকে ভালবাসিতে লাগিলেন।” (১ শমূয়েল ১৮:১) বয়সের যথেষ্ট ব্যবধান সত্ত্বেও, এভাবে এক চিরস্থায়ী বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল, যা যুদ্ধক্ষেত্রে যোনাথনের মৃত্যুর আগে পর্যন্ত বজায় ছিল।b (২ শমূয়েল ১:২৬) এই দুই বন্ধুর মধ্যে যে-দৃঢ়বন্ধন ছিল, তার ভিত্তি কী ছিল?

১০ দায়ূদ ও যোনাথনের একে অন্যের প্রতি এক নিকট সম্পর্ক থাকার কারণ ছিল, ঈশ্বরের প্রতি তাদের ভালোবাসা ও তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত থাকার বিষয়ে তাদের প্রবল আকাঙ্ক্ষা। এই দু-জনেরই একই আধ্যাত্মিক বন্ধন ছিল। প্রত্যেকেই এমন গুণাবলি প্রদর্শন করেছিলেন, যেগুলো উভয়কে পরস্পরের কাছে প্রিয় করে তুলেছিল। নিঃসন্দেহে, যোনাথন সেই যুবকের সাহস ও উদ্যোগ দেখে প্রভাবিত হয়েছিলেন, যিনি নির্ভীকভাবে যিহোবার নামের পক্ষসমর্থন করেছিলেন। আর কোনো সন্দেহ নেই যে, দায়ূদ সেই বয়স্ক ব্যক্তিকে সম্মান করতেন, যিনি অনুগতভাবে যিহোবার ব্যবস্থাকে সমর্থন করেছিলেন এবং নিঃস্বার্থভাবে দায়ূদের আগ্রহের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। উদাহরণ স্বরূপ, দায়ূদ যখন অত্যন্ত বিষণ্ণ ছিলেন এবং যোনাথনের বাবা, দুষ্ট রাজা শৌলের ক্রোধ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য প্রান্তরে একজন পলাতক হিসেবে বাস করছিলেন, তখন কী ঘটেছিল, তা বিবেচনা করুন। আনুগত্যের এক উল্লেখযোগ্য প্রমাণ দেখিয়ে যোনাথন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন এবং “দায়ূদের নিকটে গিয়া ঈশ্বরেতে তাঁহার হস্ত সবল করিলেন।” (১ শমূয়েল ২৩:১৬) তার প্রিয় বন্ধু এসে যখন তাকে সমর্থন করেছিলেন ও উৎসাহ জুগিয়েছিলেন, তখন দায়ূদের কেমন লেগেছিল, তা একটু কল্পনা করুন!c

১১. যোনাথন ও দায়ূদের উদাহরণ থেকে বন্ধুত্ব সম্বন্ধে আপনি কী শিখেছেন?

১১ যোনাথন ও দায়ূদের উদাহরণ থেকে আমরা কী শিখতে পারি? সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যে-শিক্ষা লাভ করতে পারি, তা হল আমরা দেখেছি যে, বন্ধুদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল একই আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ থাকা। আমরা যখন সেই ব্যক্তিদের নিকটবর্তী হই, যাদের আমাদের মতো একই বিশ্বাস, একই নৈতিক মূল্যবোধ এবং ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার ব্যাপারে একই আকাঙ্ক্ষা রয়েছে, তখন চিন্তাভাবনা, অনুভূতি ও অভিজ্ঞতাগুলোর আদানপ্রদান হতে পারে, যেগুলো আমাদেরকে আশ্বাস বা উৎসাহ দেয় ও গেঁথে তোলে। (পড়ুন, রোমীয় ১:১১, ১২.) এইরকম আধ্যাত্মিকমনা বন্ধুবান্ধব আমরা সহউপাসকদের মধ্যে খুঁজে পেতে পারি। তবে, এর অর্থ কি এই যে, যারা কিংডম হলের সভাগুলোতে আসে, তারা প্রত্যেকেই উত্তম বন্ধু? না, আসলে তা নয়।

আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব বাছাই করা

১২, ১৩. (ক) এমনকী সহখ্রিস্টানদের মধ্যে থেকেও কেন আমাদের গুরুত্বের সঙ্গে বন্ধুবান্ধব নির্বাচন করতে হবে? (খ) প্রথম শতাব্দীর মণ্ডলীগুলো কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয়েছিল আর তা পৌলকে কোন জোরালো সাবধানবাণী দিতে পরিচালিত করেছিল?

১২ আমরা যদি চাই যে, আমাদের বন্ধুবান্ধব আধ্যাত্মিকভাবে আমাদের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলুক, তাহলে এমনকী মণ্ডলীর মধ্যেও আমাদের গুরুত্বের সঙ্গে বন্ধুবান্ধব নির্বাচন করতে হবে। এতে কি আমাদের অবাক হওয়া উচিত? অবশ্যই না। মণ্ডলীতে কিছু খ্রিস্টানের হয়তো আধ্যাত্মিক পরিপক্বতার দিকে পৌঁছানোর জন্য কিছুটা বেশি সময় লাগতে পারে, ঠিক যেমন একটা গাছের কিছু ফল পাকার জন্য বেশি সময় লাগতে পারে। তাই, প্রতিটা মণ্ডলীতে আমরা এমন খ্রিস্টানদের দেখতে পাই, যারা আধ্যাত্মিক বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। (ইব্রীয় ৫:১২–৬:৩) অবশ্য, আমরা নতুন বা দুর্বল ব্যক্তিদের প্রতি ধৈর্য এবং প্রেম দেখিয়ে থাকি, কারণ আমরা তাদেরকে আধ্যাত্মিকভাবে বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করতে চাই।—রোমীয় ১৪:১; ১৫:১.

১৩ মাঝে মাঝে, মণ্ডলীতে এমন কোনো পরিস্থিতি থাকতে পারে, যার জন্য আমাদের মেলামেশার বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। কিছু ব্যক্তি-বিশেষ হয়তো অনুপযুক্ত আচরণে রত থাকতে পারে। অন্যেরা হয়তো এক তিক্ত বা অভিযোগ করার মনোভাব গড়ে তুলতে পারে। প্রথম শতাব্দীর মণ্ডলীগুলো একই প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয়েছিল। যদিও অধিকাংশ সদস্য বিশ্বস্ত ছিল কিন্তু কিছু ব্যক্তি সঠিক আচরণ করেনি। করিন্থ মণ্ডলীর কেউ কেউ কিছু খ্রিস্টীয় শিক্ষাকে সমর্থন করেনি বলে প্রেরিত পৌল সেই মণ্ডলীকে সাবধান করে দিয়েছিলেন: “ভ্রান্ত হইও না, কুসংসর্গ শিষ্টাচার নষ্ট করে।” (১ করিন্থীয় ১৫:১২, ৩৩) পৌল তীমথিয়কে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, এমনকী সহখ্রিস্টানদের মধ্যেও এমন কেউ কেউ থাকতে পারে, যারা সম্মানজনকভাবে আচরণ করে না। তীমথিয়কে বলা হয়েছিল যেন তিনি এই ধরনের ব্যক্তিদের কাছ থেকে দূরে থাকেন, তাদেরকে যেন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু করে না তোলেন।—পড়ুন, ২ তীমথিয় ২:২০-২২.

১৪. মেলামেশা সম্বন্ধে পৌলের সাবধানবাণীর পিছনে যে-নীতিটা রয়েছে, তা আমরা কীভাবে কাজে লাগাতে পারি?

১৪ পৌলের সাবধানবাণীর পিছনে যে-নীতিটা রয়েছে, তা আমরা কীভাবে কাজে লাগাতে পারি? এমন যেকারো সঙ্গে—হোক মণ্ডলীর ভিতরে অথবা বাইরে—ঘনিষ্ঠ মেলামেশা এড়িয়ে চলার মাধ্যমে, যে কিনা কলুষিত প্রভাব ফেলতে পারে। (২ থিষলনীকীয় ৩:৬, ৭, ১৪) আমাদের অবশ্যই নিজেদের আধ্যাত্মিকতাকে রক্ষা করতে হবে। মনে রাখবেন যে, একটা স্পঞ্জের মতো আমরা আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধবের মনোভাব ও মানগুলোকে গ্রহণ করে থাকি। আমরা যেমন একটা স্পঞ্জকে সিরকার মধ্যে ডুবিয়ে আশা করতে পারি না যে, সেটা জল শুষে নেবে, ঠিক তেমনই যারা নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে, তাদের সঙ্গে মেলামেশা করে আমরা আশা করতে পারি না যে, আমরা ইতিবাচক কোনোকিছু গ্রহণ করতে পারব।—১ করিন্থীয় ৫:৬.

সহউপাসকদের মধ্যে থেকে আপনি ভালো বন্ধুবান্ধব খুঁজে পেতে পারেন

১৫. মণ্ডলীতে আধ্যাত্মিকমনা বন্ধুবান্ধব খুঁজে পাওয়ার জন্য আপনি কী করতে পারেন?

১৫ আনন্দের বিষয় যে, সহউপাসকদের মধ্যে থেকে ভালো বন্ধুবান্ধব খুঁজে পাওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। (গীতসংহিতা ১৩৩:১) কীভাবে আপনি মণ্ডলীতে আধ্যাত্মিকমনা বন্ধুবান্ধব খুঁজে পেতে পারেন? আপনি যখন ঈশ্বরীয় গুণাবলি ও মানগুলো গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করেন, তখন নিঃসন্দেহে একই মনের অন্য ব্যক্তিরা আপনার প্রতি আকৃষ্ট হবে। একইসঙ্গে, আপনাকে হয়তো নতুন বন্ধুবান্ধব তৈরি করার জন্য নিজে থেকে কিছু ব্যাবহারিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ( “যেভাবে আমরা ভালো বন্ধুবান্ধব পেয়েছি” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।) সেই ব্যক্তিদের খুঁজে বের করুন, যারা এমন গুণাবলি প্রদর্শন করে, যেগুলো আপনি প্রতিফলিত করতে চান। ‘প্রশস্ত হইবার’ বিষয়ে বাইবেলের পরামর্শে মনোযোগ দিন এবং বর্ণ, জাতীয়তা অথবা সংস্কৃতি নির্বিশেষে সমস্ত সহবিশ্বাসীর সঙ্গে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করুন। (২ করিন্থীয় ৬:১৩; পড়ুন, ১ পিতর ২:১৭.) কেবল সমবয়সিদের মধ্যেই মেলামেশা সীমাবদ্ধ রাখবেন না। মনে রাখবেন যে, যোনাথন দায়ূদের চেয়ে যথেষ্ট বড়ো ছিলেন। অনেক বয়স্ক ব্যক্তি তাদের অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে বন্ধুত্বকে আরও উন্নত করতে পারে।

যেভাবে আমরা ভালো বন্ধুবান্ধব পেয়েছি

“প্রথম প্রথম, মণ্ডলীতে কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব করা আমার জন্য কঠিন ছিল। কিন্তু আমি আবিষ্কার করি যে, পরিচর্যায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া আমাকে এই ধরনের গুণ গড়ে তুলতে সাহায্য করে যেমন, সহিষ্ণুতা, ধৈর্য এবং আত্মত্যাগমূলক প্রেম। আমি এই ধরনের গুণাবলি গড়ে তোলার সময় লক্ষ করি যে, একই গুণাবলিসম্পন্ন ব্যক্তিরা আমার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে আর তাই এখন আমার কিছু উত্তম বন্ধু রয়েছে।”—শিভানি।

“আমি প্রার্থনা করেছিলাম যেন মণ্ডলীর মধ্যেই আমি বন্ধুবান্ধব খুঁজে পেতে পারি। কিন্তু, দীর্ঘ সময় ধরে আমার মনে হয়েছিল যেন আমার প্রার্থনার উত্তর পাচ্ছি না। অবশেষে আমি বুঝতে পারি যে, বন্ধুত্ব করার জন্য আমি আসলে কোনো প্রচেষ্টাই করছিলাম না। আমি কোনো পদক্ষেপই নিইনি। কিন্তু, যখন থেকে আমি আমার প্রার্থনার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করা শুরু করি, তখন থেকে আমি নিশ্চিতভাবেই এইরকম বোধ করি যে, যিহোবা আমার প্রার্থনার উত্তর দিয়েছেন।”—রাইয়েন।

যখন সমস্যা দেখা দেয়

১৬, ১৭. একজন সহউপাসক যদি কোনোভাবে আমাদের আঘাত দেন, তাহলে কেন আমাদের মণ্ডলী থেকে দূরে সরে যাওয়া উচিত নয়?

১৬ মণ্ডলীতে বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব ও পটভূমির লোকেরা থাকার ফলে সময়ে সময়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে। একজন সহবিশ্বাসী হয়তো এমন কিছু বলতে বা করতে পারেন, যা আমাদের অনুভূতিতে আঘাত দিতে পারে। (হিতোপদেশ ১২:১৮) মাঝে মাঝে ব্যক্তিত্বের সংঘাত, ভুলবোঝাবুঝি অথবা মতপার্থক্যের কারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমরা কি এই ধরনের সমস্যার কারণে বিঘ্ন পাব এবং মণ্ডলী থেকে দূরে সরে যাব? না, এমনটা হবে না, যদি কিনা যিহোবার প্রতি ও যাদেরকে তিনি ভালোবাসেন, তাদের প্রতি আমাদের অকৃত্রিম প্রেম থাকে।

১৭ আমাদের সৃষ্টিকর্তা ও জীবনরক্ষাকারী হিসেবে, যিহোবা আমাদের প্রেম এবং পূর্ণ ভক্তি পাওয়ার যোগ্য। (প্রকাশিত বাক্য ৪:১১) অধিকন্তু, যে-মণ্ডলীকে তিনি আনন্দের সঙ্গে ব্যবহার করছেন, সেই মণ্ডলীও আমাদের অনুগত সমর্থন পাওয়ার যোগ্য। (ইব্রীয় ১৩:১৭) তাই, একজন সহউপাসক যদি কোনোভাবে আমাদের আঘাত দেন অথবা হতাশ করেন, তাহলে আমরা কতটা অসন্তুষ্ট হয়েছি, তা দেখানোর জন্য মণ্ডলী থেকে দূরে সরে যাব না। কীভাবেই-বা আমরা তা করতে পারি? যিহোবা তো আর আমাদের অসন্তুষ্ট করেননি। যিহোবার প্রতি ভালোবাসা থাকলে আমরা কখনো তাঁকে ও তাঁর লোকেদেরকে প্রত্যাখ্যান করতে পারব না!—পড়ুন, গীতসংহিতা ১১৯:১৬৫.

১৮. (ক) মণ্ডলীতে শান্তি বৃদ্ধি করার জন্য আমরা কী করতে পারি? (খ) ক্ষমা করার উপযুক্ত কারণ থাকলে, তা করা কোন কোন আশীর্বাদ নিয়ে আসে?

১৮ সহউপাসকদের প্রতি ভালোবাসা আমাদেরকে মণ্ডলীতে শান্তি বৃদ্ধি করতে পরিচালিত করে। যাদেরকে যিহোবা ভালোবাসেন, তাদের কাছ থেকে তিনি সিদ্ধতা আশা করেন না আর আমাদেরও তা করা উচিত নয়। প্রেম আমাদেরকে ছোটোখাটো ভুলগুলো উপেক্ষা করতে সমর্থ করে আর সেইসঙ্গে এটা মনে রাখতে সমর্থ করে যে, আমরা সকলেই অসিদ্ধ এবং ভুল করে থাকি। (হিতোপদেশ ১৭:৯; ১ পিতর ৪:৮) প্রেম আমাদেরকে ক্রমাগত ‘পরস্পর ক্ষমা করিতে’ সাহায্য করে। (কলসীয় ৩:১৩) এই পরামর্শ কাজে লাগানো সবসময় সহজ নয়। আমরা যদি নেতিবাচক আবেগের কাছে নতিস্বীকার করি, তাহলে আমরা হয়তো এইরকম মনে করে বিরক্তি পুষে রাখতে পারি যে, আমাদের এই রাগ সেই ব্যক্তিকে কোনো-না-কোনোভাবে শাস্তি দেবে, যিনি অসন্তুষ্ট করেছেন। কিন্তু, বাস্তবিকপক্ষে বিরক্তি পুষে রাখা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। ক্ষমা করার উপযুক্ত কারণ থাকলে তা করা প্রচুর আশীর্বাদ নিয়ে আসে। (লূক ১৭:৩, ৪) এটা আমাদের মন ও হৃদয়ের শান্তি প্রদান করে, মণ্ডলীতে শান্তি বজায় রাখে আর সর্বোপরি যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে অক্ষুণ্ণ রাখে।—মথি ৬:১৪, ১৫; রোমীয় ১৪:১৯.

যখন মেলামেশা বন্ধ করতে হবে

১৯. এমন কোন পরিস্থিতিগুলো দেখা দিতে পারে, যার জন্য আমাদের কারো সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করা আবশ্যক হতে পারে?

১৯ কখনো কখনো আমাদের এমন কারো সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করতে বলা হয়, যিনি মণ্ডলীর একজন সদস্য ছিলেন। এই পরিস্থিতি তখনই দেখা দেয়, যখন একজন ব্যক্তি অনুতাপহীনভাবে ঈশ্বরের আইন লঙ্ঘন করেন বলে তাকে সমাজচ্যুত করা হয় অথবা যখন একজন ব্যক্তি মিথ্যা মতবাদ শিক্ষা দেওয়ার বা মণ্ডলীর সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করার মাধ্যমে বিশ্বাসকে ত্যাগ করেন। ঈশ্বরের বাক্য স্পষ্টভাবে আমাদের বলে যে, এই ধরনের ব্যক্তির “সংসর্গে থাকিতে নাই।”d (পড়ুন, ১ করিন্থীয় ৫:১১-১৩; ২ যোহন ৯-১১) এমন কাউকে এড়িয়ে চলা খুবই কঠিন হতে পারে, যিনি হয়তো একজন বন্ধু ছিলেন অথবা যিনি আমাদের আত্মীয়। আমরা কি এক্ষেত্রে দৃঢ়পদক্ষেপ গ্রহণ করব আর এভাবে দেখাব যে, সমস্তকিছুর ঊর্ধ্বে আমরা যিহোবা ও তাঁর ধার্মিক আইনগুলোর প্রতি আনুগত্য বজায় রাখছি? মনে রাখবেন, যিহোবা আনুগত্য ও বাধ্যতাকে উচ্চমূল্য দিয়ে থাকেন।

২০, ২১. (ক) কেন সমাজচ্যুত করার ব্যবস্থা এক প্রেমময় ব্যবস্থা? (খ) কেন বিজ্ঞতার সঙ্গে আমাদের বন্ধুবান্ধব বাছাই করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ?

২০ সমাজচ্যুত করার ব্যবস্থা সত্যিই যিহোবার কাছ থেকে এক প্রেমময় ব্যবস্থা। কীভাবে? একজন অনুতাপহীন পাপীকে বের করে দেওয়ার মাধ্যমে যিহোবার পবিত্র নাম ও তাঁর মানগুলো এবং স্বয়ং যিহোবার প্রতি প্রেম প্রদর্শন করা হয়। (১ পিতর ১:১৫, ১৬) সমাজচ্যুত করা মণ্ডলীকে নিরাপদ রাখে। বিশ্বস্ত সদস্যরা স্বেচ্ছাকৃত পাপীদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষিত থাকে এবং এটা জেনে তাদের উপাসনা চালিয়ে যেতে পারে যে, এই দুষ্ট জগতে মণ্ডলী হল এক নিরাপদ আশ্রয়স্থল। (১ করিন্থীয় ৫:৭; ইব্রীয় ১২:১৫, ১৬) কড়া শাসন অন্যায়কারীর প্রতি প্রেম প্রকাশ করে। এটা হয়তো ঠিক সেই আকস্মিক ঝাঁকুনির মতো, যা তার চেতনা লাভ করার ও যিহোবার কাছে ফিরে আসার জন্য অপরিহার্য পদক্ষেপ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে প্রয়োজন।—ইব্রীয় ১২:১১.

২১ আমরা এই বাস্তবতাকে উপেক্ষা করতে পারি না যে, আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব আমাদের উপর এক দৃঢ় ও জোরালো প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, বিজ্ঞতার সঙ্গে বন্ধুবান্ধব বাছাই করা আমাদের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। যিহোবার বন্ধুদেরকে আমাদের বন্ধু করলে এবং যাদেরকে ঈশ্বর ভালোবাসেন, তাদেরকে ভালোবাসলে আমাদের চারপাশে যথাসম্ভব সর্বোত্তম বন্ধুবান্ধব থাকবে। তাদের কাছ থেকে আমরা যা গ্রহণ করব, তা যিহোবাকে খুশি করার বিষয়ে আমাদের দৃঢ়সংকল্প অনুযায়ী জীবনযাপন করতে আমাদেরকে সাহায্য করবে।

a অব্রাহামকে এই অনুরোধ করার মাধ্যমে যিহোবা সেই বলিদান সম্বন্ধে এক আভাস দিয়েছিলেন, যা তিনি তাঁর একজাত পুত্রকে দান করার মাধ্যমে করবেন। (যোহন ৩:১৬) অব্রাহামের ক্ষেত্রে যিহোবা হস্তক্ষেপ করেছিলেন এবং ইস্‌হাকের পরিবর্তে একটা মেষ জুগিয়ে দিয়েছিলেন।—আদিপুস্তক ২২:১, ২, ৯-১৩.

b দায়ূদ যখন গলিয়াৎকে হত্যা করেছিলেন, তখন তিনি একজন অল্পবয়সি—“বালক”—ছিলেন এবং যোনাথনের মৃত্যুর সময় দায়ূদের বয়স ছিল প্রায় ৩০ বছর। (১ শমূয়েল ১৭:৩৩; ৩১:২; ২ শমূয়েল ৫:৪) স্পষ্টতই যোনাথন, মৃত্যুর সময় যার বয়স ছিল প্রায় ৬০ বছর, তিনি দায়ূদের চেয়ে প্রায় ৩০ বছরের বড়ো ছিলেন।

c ১ শমূয়েল ২৩:১৭ পদে লিপিবদ্ধ বর্ণনা অনুযায়ী, দায়ূদকে উৎসাহিত করার জন্য যোনাথন এই পাঁচটা বিষয় বলেছিলেন: (১) তিনি দায়ূদকে ভয় না পাওয়ার জন্য জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন। (২) তিনি দায়ূদকে এই আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, শৌলের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। (৩) তিনি দায়ূদকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে, ঈশ্বর যেমন প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তেমনই তিনি রাজপদ লাভ করবেন। (৪) তিনি দায়ূদের কাছে তার আনুগত্যের অঙ্গীকার করেছিলেন। (৫) তিনি দায়ূদকে বলেছিলেন যে, এমনকী শৌলও দায়ূদের প্রতি যোনাথনের আনুগত্য সম্বন্ধে অবগত আছেন।

d সমাজচ্যুত অথবা মণ্ডলীর সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে দিয়েছে এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করতে হয়, সেই সম্বন্ধে আরও তথ্যের জন্য পরিশিষ্টের “একজন সমাজচ্যুত ব্যক্তির সঙ্গে যেভাবে আচরণ করা উচিত” শিরোনামের প্রবন্ধটা দেখুন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার