ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w13 ১/১৫ পৃষ্ঠা ৭-১১
  • সাহস করুন যিহোবা আপনার সহবর্তী!

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • সাহস করুন যিহোবা আপনার সহবর্তী!
  • ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যিহোবা যিহোশূয়ের সহবর্তী ছিলেন
  • যেভাবে আমরা আমাদের পথকে সফল করতে পারি
  • তারা সাহসের সঙ্গে তাদের অবস্থান গ্রহণ করেছিল
  • অনেকে তাদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছিল!
  • মনে রাখবেন, যিহোবা আমাদের সহবর্তী!
  • “বলবান হও ও অতিশয় সাহস কর”
    ২০১২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • সাহস রাখ!
    ১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • সাহসের সাথে যিহোবার পথে চলুন
    ১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ‘বলবান হও ও সাহস কর!’
    ২০০৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w13 ১/১৫ পৃষ্ঠা ৭-১১

সাহস করুন যিহোবা আপনার সহবর্তী!

‘তুমি বলবান হও ও সাহস কর, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সহবর্ত্তী।’—যিহো. ১:৯.

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

নিজের বিশ্বাস ও সাহস বজায় রাখার জন্য যিহোশূয়কে কী করতে হয়েছিল?

সাহসের কোন উদাহরণগুলো আপনাকে প্রভাবিত করেছে?

কার বিশ্বাস ও সাহসের উদাহরণ আপনাকে প্রচার কাজ করার জন্য সাহায্য করতে পারে?

১, ২. (ক) কোন গুণগুলো আমাদেরকে বিভিন্ন পরীক্ষার সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করতে সাহায্য করবে? (খ) বিশ্বাসকে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করুন।

যিহোবার সেবা আমাদের জন্য আনন্দ নিয়ে আসে। তবে, আমরা মানবজাতির সাধারণ কষ্টগুলোও ভোগ করে থাকি এবং হয়তো ‘ধার্ম্মিকতার নিমিত্ত দুঃখভোগও করি।’ (১ পিতর ৩:১৪; ৫:৮, ৯; ১ করি. ১০:১৩) এই ধরনের পরীক্ষাগুলোর সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের বিশ্বাস ও সাহসের প্রয়োজন।

২ বিশ্বাস কী? প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “বিশ্বাস প্রত্যাশিত বিষয়ের নিশ্চয়জ্ঞান, অদৃশ্য বিষয়ের প্রমাণপ্রাপ্তি।” (ইব্রীয় ১১:১) আরেকটি অনুবাদ এভাবে বলে: “বিশ্বাস হল প্রত্যাশিত বিষয়গুলোর স্বত্তাধিকার-দলিল। বিশ্বাস হল অদৃশ্য বিষয়ের প্রমাণপ্রাপ্তি।” (দ্যা সিম্পল ইংলিশ বাইবেল) আমাদেরকে যদি কোনো সম্পত্তি দলিল করে দেওয়া হয়, তাহলে আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, আমরা সেই সম্পত্তি লাভ করব। যেহেতু আমাদের এই বিশ্বাস রয়েছে যে, ঈশ্বর সবসময় তাঁর কথা রাখেন, তাই এটা এমন যেন আমাদের কাছে মূল্যবান একটা দলিল রয়েছে। আমাদের বিশ্বাস আমাদেরকে এই বিষয়ে নিশ্চিত করে যে, আমরা প্রত্যাশিত বাইবেলভিত্তিক প্রতিজ্ঞাগুলোর পরিপূর্ণতা দেখতে পাব ও সেইসঙ্গে আমরা আধ্যাত্মিক বাস্তবতাগুলো সম্বন্ধেও নিশ্চিত, যদিও আমরা সেগুলো দেখতে পাই না।

৩, ৪. (ক) সাহস কী? (খ) আমাদের বিশ্বাস ও সাহসকে শক্তিশালী করার একটা উপায় কী?

৩ সাহসকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে যেমন, “বিভিন্ন বাধা এবং বিপদের মধ্যে আধ্যাত্মিক, আবেগগত এবং নৈতিক মনোবল সহকারে কথা বলা এবং নির্ভীকভাবে কাজ করা।” (দ্যা নিউ ইন্টারপ্রিটারস্‌ ডিকশনারি অভ্‌ দ্যা বাইবেল) আমাদের যদি সাহস থাকে, তাহলে আমরা দৃঢ়, নির্ভীক, এমনকী কখনো কখনো দুঃসাহসী হই।—মার্ক ৬:৪৯, ৫০; ২ তীম. ১:৭.

৪ বিশ্বাস এবং সাহস হল কাঙ্ক্ষিত গুণ। কিন্তু, ধরুন আমরা বুঝতে পারছি যে, ব্যক্তিগতভাবে আমাদের আরও বিশ্বাস প্রয়োজন ও সেইসঙ্গে আমাদের সাহসের অভাব রয়েছে। বাইবেলের বিবরণে এমন হাজার হাজার ব্যক্তি সম্বন্ধে উল্লেখ আছে, যারা এই গুণগুলো দেখানোর ক্ষেত্রে উদাহরণযোগ্য। তাই, আমাদের বিশ্বাস ও সাহসকে শক্তিশালী করার একটা উপায় হল, এইরকম কিছু ব্যক্তির উদাহরণ বিবেচনা করা।

যিহোবা যিহোশূয়ের সহবর্তী ছিলেন

৫. তার কার্যভারে সফল হওয়ার জন্য যিহোশূয়ের কীসের প্রয়োজন ছিল?

৫ আসুন আমরা প্রায় ৩৫ শতাব্দী পিছনে ফিরে যাই। যিহোবার পরাক্রমী হস্তের অধীনে লক্ষ লক্ষ ইস্রায়েলীয় মিশরীয় দাসত্ব থেকে উদ্ধার লাভ করার পর চল্লিশ বছর কেটে গিয়েছে। ভাববাদী মোশি নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন ১২০ বছর বয়সে তিনি দূর থেকে প্রতিজ্ঞাত দেশ দেখতে পান এবং এরপর নবো পর্বতে মারা যান। তার উত্তরসূরি হলেন যিহোশূয়, যিনি “বিজ্ঞতার আত্মায় পরিপূর্ণ” এক পুরুষ। (দ্বিতীয়. ৩৪:১-৯) ইস্রায়েলীয়রা কনান দেশ অধিকার করতে যাচ্ছিল। তাদের নেতা হিসেবে সফল হওয়ার জন্য যিহোশূয়ের ঈশ্বরদত্ত বিজ্ঞতার প্রয়োজন। এ ছাড়া, তাকে যিহোবার প্রতি বিশ্বাস দেখিয়ে চলতে এবং বলবান ও সাহসী হতে হবে।—দ্বিতীয়. ৩১:২২, ২৩.

৬. (ক) যিহোশূয়ের পুস্তক ২৩:৬ পদ অনুযায়ী কী করার জন্য সাহসের প্রয়োজন? (খ) প্রেরিত ৪:১৮-২০ এবং প্রেরিত ৫:২৯ পদের কথাগুলো থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

৬ দীর্ঘসময় ধরে কনান জয় করার সময় যিহোশূয়ের দ্বারা প্রদর্শিত বিজ্ঞতা, সাহস ও বিশ্বাস নিশ্চয়ই ইস্রায়েলীয়দেরকে শক্তিশালী করেছিল। কিন্তু, যুদ্ধে বীরত্ব দেখানোর পাশাপাশি তাদের সেই বিষয়টা করার জন্য যথেষ্ট সাহসের প্রয়োজন ছিল, যা করার জন্য যিহোশূয় তাদেরকে জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন। তার জীবনের শেষ দিকে, বিদায়ি বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন: “তোমরা মোশির ব্যবস্থাগ্রন্থে লিখিত সমস্ত বাক্য পালন ও রক্ষণ করিবার জন্য সাহস কর; তাহার দক্ষিণে কিম্বা বামে ফিরিও না।” (যিহো. ২৩:৬) সর্বদা যিহোবার বাধ্য হওয়ার জন্য আমাদেরও সাহসের প্রয়োজন। এর অন্তর্ভুক্ত সেই মুহূর্তগুলোও, যখন লোকেরা ঈশ্বরের ইচ্ছার বিপরীতে কাজ করার জন্য আমাদেরকে চাপ দেয়। (পড়ুন, প্রেরিত ৪:১৮-২০; ৫:২৯.) আমরা যদি প্রার্থনাপূর্বক যিহোবার ওপর নির্ভর করি, তাহলে তিনি আমাদেরকে এইরকম সাহসী অবস্থান গ্রহণ করার জন্য সাহায্য করবেন।

যেভাবে আমরা আমাদের পথকে সফল করতে পারি

৭. সাহসের সঙ্গে কাজ করার এবং সফল হওয়ার জন্য যিহোশূয়ের কী করার প্রয়োজন ছিল?

৭ ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার জন্য আমাদের যে-সাহসের প্রয়োজন, তা অর্জন করার জন্য আমাদের অবশ্যই তাঁর বাক্য অধ্যয়ন করতে এবং কাজে লাগাতে হবে। যিহোশূয়কে সেই সময় এটাই করতে বলা হয়েছিল, যখন তিনি মোশির উত্তরসূরি হয়ে উঠেছিলেন: “তুমি . . . বলবান হও ও অতিশয় সাহস কর; আমার দাস মোশি তোমাকে যে ব্যবস্থা আদেশ করিয়াছে, তুমি সেই সমস্ত ব্যবস্থা যত্নপূর্ব্বক পালন কর; . . . তোমার মুখ হইতে এই ব্যবস্থাপুস্তক বিচলিত না হউক; তম্মধ্যে যাহা যাহা লিখিত আছে, যত্নপূর্ব্বক সেই সকলের অনুযায়ী কর্ম্ম করণার্থে তুমি দিবারাত্র তাহা ধ্যান কর; কেননা তাহা করিলে তোমার শুভগতি হইবে ও তুমি বুদ্ধিপূর্ব্বক চলিবে।” (যিহো. ১:৭, ৮) যিহোশূয় সেই পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করেছিলেন এবং ‘তাহার শুভগতি হইয়াছিল’ বা তিনি সফল হয়েছিলেন। আমরাও যদি তা-ই করি, তাহলে আমরা প্রচুর সাহস অর্জন করতে এবং ঈশ্বরের সেবায় সফল হতে পারব।

৮. দু-হাজার তেরো সালের বার্ষিক শাস্ত্রপদ বাইবেলের কোন পদ থেকে নেওয়া হয়েছে আর সেই কথাগুলো যে আপনাকে শক্তিশালী করবে, সেই সম্বন্ধে আপনি কেমন বোধ করেন?

৮ যিহোশূয় সেই সময় নিশ্চয়ই অনেক শক্তিশালী হয়েছিলেন, যখন তিনি যিহোবাকে পরের এই কথাগুলো বলতে শুনেছিলেন: “তুমি বলবান হও ও সাহস কর, মহাভয়ে ভীত কি নিরাশ হইও না; কেননা তুমি যে কোন স্থানে যাও, সেই স্থানে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সহবর্ত্তী।” (যিহো. ১:৯) যিহোবা আমাদেরও সহবর্তী। তাই, আসুন আমরা যে-পরীক্ষার মুখোমুখিই হই না কেন, আমরা যেন “মহাভয়ে ভীত কি নিরাশ” না হই। বিশেষভাবে এই উক্তি উল্লেখযোগ্য: ‘তুমি বলবান হও ও সাহস কর, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সহবর্ত্তী।’ যিহোশূয়ের পুস্তক ১:৯ পদের কথাগুলো ২০১৩ সালের বার্ষিক শাস্ত্রপদ হিসেবে বাছাই করা হয়েছে। এই কথাগুলো ও সেইসঙ্গে বিশ্বাস এবং সাহসের অন্যান্য উদাহরণের কথা এবং কাজগুলো নিশ্চিতভাবেই আগামী মাসগুলোতে আমাদেরকে শক্তিশালী করবে।

তারা সাহসের সঙ্গে তাদের অবস্থান গ্রহণ করেছিল

৯. কোন কোন উপায়ে রাহব বিশ্বাস ও সাহস দেখিয়েছিলেন?

৯ যিহোশূয় যখন কনান দেশে দুজন গুপ্তচরকে পাঠিয়েছিলেন, তখন রাহব বেশ্যা তাদেরকে লুকিয়ে রেখেছিলেন এবং তাদের শত্রুদের ভুল পথে পরিচালিত করেছিলেন। বিশ্বাসের ও সাহসী কাজের জন্য তিনি এবং তার পরিবার সেই সময় রক্ষা পেয়েছিলেন, যখন যিরীহো নগর ইস্রায়েলীয়দের সামনে পতিত হয়েছিল। (ইব্রীয় ১১:৩০, ৩১; যাকোব ২:২৫) নিশ্চিতভাবেই, রাহব যিহোবাকে খুশি করার জন্য তার অনৈতিক জীবনধারা পরিত্যাগ করেছিলেন। খ্রিস্টান হয়ে উঠেছে এমন কিছু ব্যক্তিরও একই ধরনের পরিবর্তনগুলো করার জন্য বিশ্বাস, সাহস ও নৈতিক দৃঢ়তা ছিল, যেন তারা ঈশ্বরকে খুশি করতে পারে।

১০. কোন পরিস্থিতিগুলোতে রূৎ সত্য উপাসনার পক্ষে তার অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন আর তা তার জন্য কোন আশীর্বাদগুলো নিয়ে এসেছিল?

১০ যিহোশূয়ের মৃত্যুর পর, মোয়াবীয় রূৎ সত্য উপাসনার পক্ষে সাহসী অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। একজন ইস্রায়েলীয় ব্যক্তির বিধবা স্ত্রী হিসেবে তিনি হয়তো যিহোবা সম্বন্ধে কিছুটা জানতেন। তার বিধবা শাশুড়ি নয়মী মোয়াবে বাস করতেন কিন্তু তিনি ইস্রায়েলীয় নগর বৈৎলেহমে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পথিমধ্যে নয়মী বার বার রূৎকে তার নিজ লোকেদের কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য বলেছিলেন কিন্তু সেই মোয়াবীয় রূৎ উত্তর দিয়েছিলেন: “তোমাকে ত্যাগ করিয়া যাইতে, তোমার পশ্চাদ্গমন হইতে ফিরিয়া যাইতে, আমাকে অনুরোধ করিও না; . . . তোমার লোকই আমার লোক, তোমার ঈশ্বরই আমার ঈশ্বর।” (রূৎ. ১:১৬) রূৎ যা বলেছিলেন, সেই অনুযায়ীই কাজ করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে, নয়মীর আত্মীয় বোয়স রূৎকে বিয়ে করেছিলেন, যিনি একটা পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন এবং দায়ূদ ও যিশুর পূর্বপুরুষী হয়ে উঠেছিলেন। হ্যাঁ, যিহোবা বিশ্বাসের ও সাহসী কাজের প্রতি আশীর্বাদ করেন। —রূৎ. ২:১২; ৪:১৭-২২; মথি ১:১-৬.

অনেকে তাদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছিল!

১১. যিহোয়াদা এবং যিহোশেবা কীভাবে সাহস দেখিয়েছিলেন এবং এর ফল কী হয়েছিল?

১১ আমাদের সাহস এবং বিশ্বাস সেই সময় শক্তিশালী হয়, যখন আমরা দেখি যে, ঈশ্বর সেই ব্যক্তিদের সহবর্তী, যারা তাঁর বিষয়গুলোকে এবং নিজেদের চেয়ে বরং সহবিশ্বাসীদের মঙ্গলের বিষয়টাকে আগে রাখে। উদাহরণস্বরূপ, মহাযাজক যিহোয়াদা এবং তার স্ত্রী যিহোশেবার কথা বিবেচনা করুন। রাজা অহসিয়ের মৃত্যুর পর, তার মা অথলিয়া যোয়াশকে ছাড়া রাজবংশের সবাইকে হত্যা করে সিংহাসন দখল করেছিলেন। যিহোয়াদা এবং যিহোশেবা অহসিয়ের ছেলে যোয়াশকে রক্ষা করার ঝুঁকি নিয়েছিল এবং তাকে ছয় বছর ধরে লুকিয়ে রেখেছিল। সপ্তম বছরে যিহোয়াদা যোয়াশকে রাজা হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন এবং অথলিয়াকে হত্যা করিয়েছিলেন। (২ রাজা. ১১:১-১৬) পরে, যিহোয়াদা রাজা যোয়াশকে মন্দির পুনর্নির্মাণে সহায়তা করেছিলেন। আর যিহোয়াদা যখন ১৩০ বছর বয়সে মারা গিয়েছিলেন, তখন তাকে রাজাদের সঙ্গে কবর দেওয়া হয়েছিল “কেননা তিনি ইস্রায়েলের মধ্যে, এবং ঈশ্বরের ও তাঁহার গৃহের বিষয়ে সাধুকার্য্য, করিয়াছিলেন।” (২ বংশা. ২৪:১৫, ১৬) অধিকন্তু, যিহোয়াদা এবং তার স্ত্রীর সাহসী কাজ, দায়ূদ থেকে মশীহ পর্যন্ত যে-রাজবংশ ছিল, তা রক্ষা করেছিল।

১২. এবদ-মেলক কোন সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন?

১২ এবদ-মেলক নামে সিদিকিয় রাজার রাজবাটীর একজন নপুংসক যিরমিয়ের জন্য তার জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছিলেন। সিদিকিয় যিরমিয়কে যিহূদার অধ্যক্ষদের হাতে সমর্পণ করেছিলেন, যারা তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছিল এবং তাকে এক কর্দমাক্ত কুয়োর মধ্যে ফেলে দিয়েছিল, যেন তিনি মারা যান। (যির. ৩৮:৪-৬) অনেক লোক যিরমিয়কে ঘৃণা করত বলে, বিপদের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও, এবদ-মেলক ভাববাদীর হয়ে সিদিকিয়ের কাছে আবেদন করেছিলেন। সিদিকিয় ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন এবং যিরমিয়কে উদ্ধার করার জন্য এবদ-মেলকের সঙ্গে ৩০ জন লোক পাঠিয়েছিলেন। ভাববাদীর মাধ্যমে ঈশ্বর এবদ-মেলককে এই আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, বাবিলীয়রা যখন যিরূশালেম আক্রমণ করবে, তখন তিনি হত হবেন না। (যির. ৩৯:১৫-১৮) ঈশ্বরীয় সাহস পুরস্কৃত হয়েছিল।

১৩. তিন জন ইব্রীয় কোন সাহসী অবস্থান গ্রহণ করেছিল আর তাদের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কীভাবে উপকার লাভ করতে পারি?

১৩ খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীতে, যিহোবার তিন জন ইব্রীয় দাসকে স্পষ্ট প্রমাণ দেওয়া হয়েছিল যে, ঈশ্বর বিশ্বাস ও সাহসের প্রতি আশীর্বাদ করেন। রাজা নবূখদ্‌নিৎসর বাবিলের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের একত্রিত করেছিলেন এবং তাদেরকে সোনার তৈরি এক প্রকাণ্ড প্রতিমার উপাসনা করার আদেশ দিয়েছিলেন। আর যারা তা করবে না, তাদেরকে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে মারা যেতে হবে। সেই তিন জন ইব্রীয় সম্মানের সঙ্গে নবূখদ্‌নিৎসরকে বলেছিল: “আমরা যাঁহার সেবা করি, আমাদের সেই ঈশ্বর আমাদিগকে প্রজ্বলিত অগ্নিকুণ্ড হইতে উদ্ধার করিতে সমর্থ আছেন, আর, হে রাজন্‌, তিনি আপনার হস্ত হইতে আমাদিগকে উদ্ধার করিবেন; আর যদি নাও হয়, তবু হে রাজন্‌ আপনি জানিবেন, আমরা আপনার দেবগণের সেবা করিব না, এবং আপনার স্থাপিত স্বর্ণ-প্রতিমাকে প্রণাম করিব না।” (দানি. ৩:১৬-১৮) তিন জন ইব্রীয়ের রোমাঞ্চকর উদ্ধারের ঘটনা দানিয়েল ৩:১৯-৩০ পদের মধ্যে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যদিও আমাদেরকে হয়তো জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে মারা যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয় না, তবে আমরা নীতিনিষ্ঠার পরীক্ষার মুখোমুখি হই আর নিশ্চিত থাকতে পারি যে, ঈশ্বর আমাদের বিশ্বাস ও সাহসের প্রতি আশীর্বাদ করবেন।

১৪. দানিয়েল ৬ অধ্যায় অনুসারে, কীভাবে দানিয়েল সাহসের সঙ্গে কাজ করেছিলেন এবং এর ফল কী হয়েছিল?

১৪ দানিয়েল সেই সময় বিশ্বাস ও সাহস দেখিয়েছিলেন, যখন তার শত্রুরা রাজা দারিয়াবসকে দিয়ে এই আদেশ জারি করাতে সমর্থ হয়েছিল যে, “যদি কেহ ত্রিশ দিন পর্য্যন্ত মহারাজ ব্যতীত কোন দেবতার কিম্বা মানুষের কাছে প্রার্থনা করে, তবে হে রাজন্‌, সে সিংহদের খাতে নিক্ষিপ্ত হইবে।” যখনই দানিয়েল জানতে পেরেছিলেন যে, সেই পত্রে স্বাক্ষর করা হয়েছে, তখন তিনি “আপন গৃহে গেলেন; তাঁহার কুঠরীর বাতায়ন যিরূশালেমের দিকে খোলা ছিল; তিনি দিনের মধ্যে তিনবার জানু পাতিয়া আপন ঈশ্বরের সম্মুখে প্রার্থনা ও স্তবগান করিলেন, যেমন পূর্ব্বে করিতেন।” (দানি. ৬:৬-১০) সাহসী দানিয়েলকে সিংহের গর্তে ফেলে দেওয়া হয়েছিল—কিন্তু যিহোবা তাকে উদ্ধার করেছিলেন।—দানি. ৬:১৬-২৩.

১৫. (ক) আক্বিল্লা ও প্রিষ্কিল্লা বিশ্বাস ও সাহসের কোন উদাহরণ স্থাপন করেছে? (খ) যোহন ১৩:৩৪ পদে লিপিবদ্ধ যিশুর কথাগুলোর দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে আর অনেক খ্রিস্টান কীভাবে এই ধরনের প্রেম দেখিয়েছে?

১৫ বাইবেলে প্রকাশ করা হয়নি এমন পরিস্থিতিতে আক্বিল্লা ও প্রিস্কিল্লা ‘পৌলের প্রাণের নিমিত্তে আপনাদের গ্রীবা পাতিয়া দিয়াছিলেন।’ (প্রেরিত ১৮:২; রোমীয় ১৬:৩, ৪) তারা সাহসের সঙ্গে যিশুর এই কথাগুলোর সঙ্গে মিল রেখে কাজ করেছিল: “এক নূতন আজ্ঞা আমি তোমাদিগকে দিতেছি, তোমরা পরস্পর প্রেম কর; আমি যেমন তোমাদিগকে প্রেম করিয়াছি, তোমরাও তেমনি পরস্পর প্রেম কর।” (যোহন ১৩:৩৪) মোশির আইন অনুযায়ী একজন ব্যক্তিকে সাধারণত নিজ প্রতিবেশীকে নিজের মতো করে ভালোবাসতে হতো। (লেবীয়. ১৯:১৮) কিন্তু, প্রেমের বর্ণনা দিতে গিয়ে যিশু যে-আজ্ঞা দিয়েছিলেন, তা “নূতন” ছিল কারণ এর অর্থ অন্যদের প্রতি আমাদের জীবন দান করা, যেমনটা তিনি দিয়েছিলেন। অনেক খ্রিস্টান, সহবিশ্বাসীদেরকে শত্রুদের নিষ্ঠুর আচরণ অথবা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সাহসের সঙ্গে ‘আপনাদের গ্রীবা পাতিয়া দেওয়ার’ মাধ্যমে প্রেম দেখিয়েছে।—পড়ুন, ১ যোহন ৩:১৬.

১৬, ১৭. খ্রিস্টের প্রাথমিক কিছু অনুসারী বিশ্বাসের কোন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছিল আর তা কীভাবে আমাদের দিনের কিছু খ্রিস্টানের অভিজ্ঞতার সঙ্গে তুলনা করা যায়?

১৬ যিশুর মতো প্রাথমিক খ্রিস্টানরাও সাহসের সঙ্গে কেবল যিহোবারই উপাসনা করেছিল। (মথি ৪:৮-১০) তারা রোমীয় সম্রাটের সম্মানের উদ্দেশে ধূপ জ্বালাতে প্রত্যাখ্যান করেছিল। (ছবি দেখুন।) “অল্পসংখ্যক খ্রিস্টানই বিশ্বাস পরিত্যাগ করেছিল,” ড্যানিয়েল পি. ম্যানিক্স লিখেছিলেন, “যদিও সাধারণত তাদের সুবিধার জন্য বধ্যভূমিতে একটি বেদিতে আগুন জ্বালিয়ে রাখা হতো। একজন কয়েদিকে শুধুমাত্র সেই আগুনে অল্প কিছুটা ধূপ ছড়িয়ে দিতে হতো আর তাকে একটি উৎসর্গের স্বীকৃতিপত্র দিয়ে মুক্ত করে দেওয়া হতো। তাকে ভালোভাবে এও বুঝিয়ে দেওয়া হতো যে, তিনি সম্রাটের উপাসনা করছেন না; রোমীয় সাম্রাজ্যের নেতা হিসেবে শুধুমাত্র তার ঐশিক চরিত্র স্বীকার করে নিচ্ছেন। তবুও, প্রায় কোনো খ্রিস্টানই মুক্ত হওয়ার এই সুযোগ গ্রহণ করেনি।”—মৃত্যুপথযাত্রীরা, ইংরেজি।

১৭ আধুনিক দিনের যে-খ্রিস্টানরা নাতসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে বন্দি ছিল এবং যাদের সামনে সম্ভাব্য মৃত্যু ছিল, তাদেরকে যিহোবাকে অস্বীকার করে একটা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করার মাধ্যমে মুক্তি লাভ করার জন্য বার বার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, অল্পসংখ্যক খ্রিস্টানই সেটাতে স্বাক্ষর করেছিল। সাম্প্রতিক কালে, রুয়ান্ডায় গণহত্যার সময় মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে হুটু ও টুটসি সাক্ষিরা পরস্পরকে রক্ষা করেছিল। এই ধরনের পরীক্ষাগুলোর জন্য সাহস ও বিশ্বাসের প্রয়োজন।

মনে রাখবেন, যিহোবা আমাদের সহবর্তী!

১৮, ১৯. বিশ্বাস ও সাহসের বিষয়ে বাইবেলের কোন উদাহরণগুলো আমাদেরকে প্রচার কাজ চালিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে?

১৮ ঈশ্বরের মানব দাসদেরকে আস্থা সহকারে দেওয়া সর্বকালের মহান কাজে অংশ নেওয়ার বিশেষ সুযোগ আমরা এখন লাভ করেছি আর তা হল রাজ্যের বার্তা প্রচার করা এবং শিষ্য তৈরি করা। (মথি ২৪:১৪; ২৮:১৯, ২০) যিশুর অতুলনীয় উদাহরণের জন্য আমরা কতই না কৃতজ্ঞ! তিনি ‘ঘোষণা করিতে করিতে এবং ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করিতে করিতে নগরে নগরে ও গ্রামে গ্রামে ভ্রমণ করিয়াছিলেন।’ (লূক ৮:১) রাজ্যের বার্তা প্রচার করার জন্য আমাদেরও তাঁর মতো বিশ্বাস ও সাহস প্রয়োজন। ঈশ্বরের সাহায্যে আমরাও “ভক্তিহীনদের জগতে . . . ধার্ম্মিকতার” নির্ভীক “প্রচারক” নোহের মতো হতে পারি, যে-জগৎ বিশ্বব্যাপী জলপ্লাবনে ধ্বংস হতে যাচ্ছিল।—২ পিতর ২:৪, ৫.

১৯ প্রার্থনা আমাদেরকে প্রচার কাজ চালিয়ে যেতে সাহায্য করে। তাড়নার শিকারগ্রস্ত খ্রিস্টের কিছু অনুসারী যখন ‘সাহসপূর্ব্বক ঈশ্বরের বাক্য বলিবার’ জন্য প্রার্থনা করেছিল, তখন সেই অনুরোধের উত্তর দেওয়া হয়েছিল। (পড়ুন, প্রেরিত ৪:২৯-৩১.) আপনিও যদি ঘরে ঘরে প্রচার করার ব্যাপারে কিছুটা ভীত হয়ে থাকেন, তাহলে যিহোবা আপনাকে আরও বিশ্বাস ও সাহস অর্জন করার ব্যাপারে আপনার প্রার্থনার উত্তর দেবেন।—পড়ুন, গীতসংহিতা ৬৬:১৯, ২০.a

২০. যিহোবার দাস হিসেবে আমাদের কোন সমর্থন রয়েছে?

২০ এই মন্দ এবং অশান্ত জগতে আমাদের ওপর আসা বিভিন্ন পরীক্ষার মধ্যে ঈশ্বরীয় পথ অনুধাবন করা অনেক কঠিন। কিন্তু, আমরা একা নই। ঈশ্বর আমাদের সহবর্তী। মণ্ডলীর মস্তক তাঁর পুত্রও আমাদের সহবর্তী। এ ছাড়া, আমাদের সহদাস ৭০,০০,০০০-রও বেশি যিহোবার সাক্ষি আমাদের সঙ্গে রয়েছে। তাদের সঙ্গে আসুন আমরাও বিশ্বাস দেখিয়ে এবং সুসমাচার প্রচার করে চলি ও সেইসঙ্গে ২০১৩ সালের এই বার্ষিক শাস্ত্রপদ মনে রাখি: ‘তুমি বলবান হও ও সাহস কর, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সহবর্ত্তী।’—যিহো. ১:৯.

পাদটীকা

a ২০১২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহরীদুর্গ পত্রিকার “বলবান হও ও অতিশয় সাহস কর” শিরোনামের প্রবন্ধে সাহসের আরও উদাহরণ দেখুন।

[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

[৮ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

২০১৩ সালের জন্য আমাদের বার্ষিক শাস্ত্রপদ হল: ‘তুমি বলবান হও ও সাহস কর, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সহবর্ত্তী।’—যিহোশূয় ১:৯

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

প্রাথমিক খ্রিস্টানরা আপোশ করা বেছে নিত না

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার