আপনাদের সন্তানদের শিক্ষাদিন
সে সাহায্য করতে চেয়েছিল
তুমি কি কখনো এমন কাউকে চিনতে, যিনি খুবই অসুস্থ ছিলেন?— তুমি কি তাকে সাহায্য করার জন্য কিছু করতে চেয়েছিলে?— তিনি যদি অন্য কোনো দেশের অথবা ভিন্ন কোনো ধর্মের হয়ে থাকেন, তাহলে কী? তবুও কি তুমি তাকে সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য সাহায্য করতে চাইবে?— একটা ছোট্ট মেয়ে যে প্রায় ৩,০০০ বছর আগে ইস্রায়েল দেশে বাস করত, সে তা করেছিল। সেই সময়ে কী ঘটেছিল, এসো আমরা তা আলোচনা করি।
মেয়েটি যেখানে বাস করত সেই প্রাচীন ইস্রায়েলের ও কাছাকাছি দেশ অরামের মধ্যে যুদ্ধ লেগেই থাকত। (১ রাজাবলি ২২:১) একদিন অরামীয়রা ইস্রায়েলে আসে ও এই ছোট্ট মেয়েটিকে বন্দি করে নিয়ে যায়। তাকে অরামে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে সে অরামীয় সেনাপতি নামানের স্ত্রীর পরিচারিকা হয়। কুষ্ঠ নামে নামানের এক খারাপ রোগ হয়, যে-রোগের কারণে একজন ব্যক্তির শরীরের মাংস খসে পড়তে পারে।
পরিচারিকা মেয়েটি নামানের স্ত্রীকে বলে যে, কীভাবে তার স্বামী সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। সে বলে: ‘নামান যদি শমরিয়ায় থাকিতেন, তাহা হইলে সদাপ্রভুর ভাববাদী ইলীশায় তাহার কুষ্ঠরোগকে দূর করিতেন।’ পরিচারিকা মেয়েটি ইলীশায় সম্বন্ধে এমনভাবে কথা বলে যে, নামান বিশ্বাস করতে বাধ্য হন যে, ভাববাদী সত্যই হয়তো তাকে সুস্থ করতে পারবেন। তাই, অরামীয় রাজা বিন্হদদের অনুমতি নিয়ে, ইলীশায়কে খোঁজার জন্য নামান ও কিছু পরিচারক প্রায় ১৫০ কিলোমিটারের দীর্ঘ পথ যাত্রা করে।
প্রথমে, তারা ইস্রায়েলের রাজা যিহোরামের কাছে যায়। তারা তাকে রাজা বিন্হদদের চিঠিটি দেখায়, যেটিতে নামানকে সাহায্য করার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু, যিহোরামের যিহোবা অথবা ভাববাদী ইলীশায়ের ওপর বিশ্বাস নেই। যিহোরাম মনে করেন যে, বিন্হদদ তার সঙ্গে যুদ্ধ করার সূত্র খুঁজছেন। ইলীশায় যখন একথা শোনেন, তখন তিনি রাজা যিহোরামকে বলেন: “সে ব্যক্তি আমার কাছে আইসুক।” ইলীশায় নামানকে তার খারাপ রোগ থেকে সুস্থ করে ঈশ্বরের শক্তি দেখাতে চান।—২ রাজাবলি ৫:১-৮.
নামান যখন ঘোড়া ও রথসহ ইলীশায়ের বাড়িতে পৌঁছান, ইলীশায় তার কাছে এই কথা বলার জন্য একজন দূত পাঠান: ‘আপনি গিয়া সাত বার যর্দ্দন নদীতে স্নান করুন আর আপনি সুস্থ হইবেন।’ এতে নামান রেগে যান। তিনি আশা করেন যে, ইলীশায় বের হয়ে আসবেন ও কুষ্ঠরোগের ওপর তার হাত বুলিয়ে তা দূর করবেন। পরিবর্তে, তিনি কেবল এই দূতকে দেখতে পান! তাই নামান অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হন এবং বাড়ির দিকে রওনা হন।—২ রাজাবলি ৫:৯-১২.
তুমি যদি নামানের পরিচারকদের মধ্যে একজন হতে, তাহলে তুমি কী করতে?— পরিচারকেরা তাকে জিজ্ঞেস করে: ‘ইলীশায় যদি আপনাকে কোনো কঠিন কিছু করিতে বলিতেন, আপনি কি তাহা করিতেন না? তাহা হইলে এই সহজ কাজটি করুন না কেন—শুধুমাত্র স্নান করিয়া শুচি হউন।’ নামান তাদের কথা শোনেন। তিনি “নামিয়া গিয়া সাত বার যর্দ্দনে ডুব দিলেন, তাহাতে ক্ষুদ্র বালকের ন্যায় তাঁহার নূতন মাংস হইল।”
নামান ইলীশায়ের কাছে ফিরে আসেন ও বলেন: “দেখুন, আমি এখন জানিতে পারিলাম, সমস্ত পৃথিবীতে আর কোথাও ঈশ্বর নাই, কেবল ইস্রায়েলের মধ্যে আছেন।” তিনি ইলীশায়ের কাছে প্রতিজ্ঞা করেন যে, তিনি আর কখনো “সদাপ্রভু [“যিহোবা,” NW] ব্যতিরেকে অন্য দেবতার উদ্দেশে হোম কিম্বা বলিদান” করবেন না।—২ রাজাবলি ৫:১৩-১৭.
সেই ছোট্ট মেয়েটির মতো তুমি কি কাউকে যিহোবার ও তিনি যা করতে পারেন সেই সম্বন্ধে জানতে সাহায্য করতে চাও?— যিশু পৃথিবীতে থাকাকালীন, কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত একজন ব্যক্তি যিশুর ওপর বিশ্বাস করে বলেছিলেন: ‘যদি আপনার সত্যই আমাকে সাহায্য করিতে ইচ্ছা হয়, আমাকে করিতে পারেন।’ তুমি কি জানো যিশু কী উত্তর দিয়েছিলেন: “আমার ইচ্ছা।” আর যিশু তাকে সুস্থ করেছিলেন, ঠিক যেমন যিহোবা নামানকে সুস্থ করেছিলেন।—মথি ৮:২, ৩.
যিহোবা যে-নতুন জগৎ সৃষ্টি করবেন সেই সম্বন্ধে তুমি কি জানো, যেখানে সমস্ত লোক স্বাস্থ্যবান হবে ও চিরকাল বাস করতে পারবে?— (২ পিতর ৩:১৩; প্রকাশিত বাক্য ২১:৩, ৪) তাহলে নিশ্চিতভাবেই, তুমি এই অপূর্ব বিষয়গুলো সম্বন্ধে অন্যদেরকে বলতে চাইবে! (w০৮ ৬/১)
প্রশ্নাবলি:
❍ কীভাবে একটা ছোট্ট মেয়ে নামানকে সাহায্য করেছিল, যার লোকেরা তাকে বন্দি করে নিয়ে গিয়েছিল?
❍ কেন নামান প্রথমে ইলীশায়ের বাধ্য হতে অনিচ্ছুক ছিলেন কিন্তু কোন বিষয়টা তার মনকে পরিবর্তন করেছিল?
❍ সেই ছোট্ট মেয়েটিকে অনুকরণ করার জন্য প্রকৃতপক্ষে তোমাকে অবশ্যই কী করতে হবে?
❍ যিশু কী করতে চেয়েছিলেন আর কেন ঈশ্বরের নতুন জগতে জীবন অপূর্ব হবে?