তিনি তার বিশ্বাসের জন্য লড়াই করেছিলেন
তিন বছর আগে স্পেনের কাডিজ্-এ কারিদাদ্ বাসান্ লিস্টান্ নামে একজন যিহোবার সাক্ষীর জরুরী এক অপারেশনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। পিত্তে পাথরের জন্য জ্বর হয় এবং তার রক্তপ্রবাহকে বিষাক্ত করে তোলে। যখন তিনি স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হন, তখন তিনি রক্ত গ্রহণ প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে তার বাইবেল-ভিত্তিক স্থানটি ব্যাখ্যা করেন। ডাক্তারেরা রক্ত ছাড়া অপারেশন করতে রাজি হন। কিন্তু, অপারেশন ঘরে তাকে নিয়ে যাওয়ার ঠিক পূর্বে, ডাক্তারেরা তাকে একটি প্রমাণপত্রে সাক্ষর করতে বলেন। এতে লেখা ছিল যে তারা রক্তের ব্যাপারে তার সিদ্ধান্তকে সম্মান দেখাতে ইচ্ছুক কিন্তু যদি জরুরী অবস্থা আসে তাহলে প্রয়োজনীয় যে কোন চিকিৎসা-প্রণালী প্রয়োগ করবেন বলে তারা তার অনুমতি চান।
মণ্ডলীর একজন প্রাচীন যিনি হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন, তিনি এবং কারিদাদের ছেলে যে একজন সাক্ষীও, কারিদাদ্কে ঐ প্রকৃতির প্রমাণপত্রে সাক্ষর করার জটিলতা সম্পর্কে বোঝায়। তার সাক্ষর, ডাক্তারদের জরুরী অবস্থায় তার শরীরে রক্ত দিতে অধিকার দেবে। যখন চিকিৎসা-সংক্রান্ত কর্মচারীরা তাকে অপারেশনের ঘরে নিয়ে যেতে আসে, তিনি স্পষ্ট জানান যে তিনি ঐ কাগজে সই করবেন না। শীঘ্রই তাকে তার ঘরে ফিরিয়ে আনা হয় এবং তার মত পরিবর্তন করার জন্য প্রচণ্ড চাপ দেওয়া হয়।
বহু আলোচনার পর তারা একজন আদালতি বিচারককে ডাকতে স্থির করেন যাতে তিনি তার মত পাল্টাতে পারেন, কিন্তু এটিও ব্যর্থ হয়। কারিদাদ্ বলেন যে তিনি মনে করেন যদি তাদের রক্ত দিতে অনুমতি দেন তাহলে তিনি ঈশ্বরের নিকট দোষী হবেন। তিনি উল্লেখ করেন মোশির নিয়মানুসারে, একজন স্ত্রীলোককে ধর্ষণ করা হলে, সে দোষী হত না যদি সে সাহায্যের জন্য চিৎকার করে প্রতিরোধ করত। (দ্বিতীয় বিবরণ ২২:২৩-২৭) “ডাক্তারেরা আমার ইচ্ছাকে অগ্রাহ্য করছে এবং আমার বিবেকের বিরুদ্ধে যেতে চেষ্টা করছে,” তিনি বলেন, “যেন তারা আমাকে ধর্ষণ করছে এমন ভেবে আমি অবশ্যই প্রতিরোধ করব।”
কয়েক ঘন্টা কেটে যায় এবং শেষ পর্যন্ত ডাক্তারেরা রক্ত ছাড়াই তার অপারেশন করতে রাজি হন। অপরেশনের ঘরে, কারিদাদ্ যিহোবার কাছে প্রার্থনা করার অনুমতি চান। তিনি প্রার্থনা করেন এবং তার অপারেশন সফল হয়।
কিন্তু, পরে কারিদাদের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয় এবং ডাক্তারেরা তার ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে জোর করে তাকে রক্ত দিতে স্থির করেন। তাই একজন ডাক্তার ও নার্স তাকে রক্ত দিতে প্রস্তুত হন। তার শরীর দুর্বল হলেও, কারিদাদ্ তার সমস্ত শক্তি দিয়ে তা প্রতিরোধ করেন। এমনকি তিনি রক্ত দেওয়ার টিউবকে কামড়াতে পর্যন্ত সক্ষম হন। তারা যা করছিল তাতে অবশেষে ডাক্তার লজ্জিত হন ও হাল ছেড়ে দেন। “আমি এই কাজ করতে পারব না। আমি পরাজয় স্বীকার করছি!” তিনি বলেন।
কারিদাদ্ সঙ্কট থেকে রক্ষা পান এবং আর অবস্থা জটিল না হয়েই তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। তার বিশ্বাস ও সাহস ডাক্তারদের ও নার্সদের সকলকেই গভীরভাবে প্রভাবিত করে। এই সমস্ত কিছুই ঘটেছিল কারিদাদের ৯৪ বছর বয়সে। (w93 6/15)