ধর্মের প্রতি কেন আগ্রহী হওয়া উচিত?
পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশে ধর্মের প্রতি আগ্রহ আছে। অপরপক্ষে, অন্যান্য অনেকে আছে যারা খোলাখুলিভাবে বলে যে তাদের ধর্মের প্রতি কোন আগ্রহ নেই। কিন্তু তাদের মনোভাব কি প্রথম থেকেই এইরকম ছিল?
মানুষের প্রবৃত্তি এমন যে কোন ব্যক্তি শুধুমাত্র বিষয়সম্পত্তি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে না। মানুষের আধ্যাত্মিকতা প্রয়োজন। শুধুমাত্র দৈহিক চাহিদা মেটানোর জন্য দৈনন্দিন জীবন-যাপন এবং মাঝেমধ্যে আমোদপ্রমোদ করলেই মানুষের একান্ত প্রয়োজনগুলি মিটে যায় না। জীবজন্তুর বিপরীতে, মানুষ জানতে চায় ‘জীবনের উদ্দেশ্য কী?’ ‘এই ক্ষণিকের জীবন, যেখানে অনেক কিছু সুন্দর বিষয় আছে, আবার অনেক কিছু খারাপও আছে, এটিই কী সব?’ আপনিও কি এই ধরনের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননা?
কিন্তু, বর্তমানে লক্ষ লক্ষ লোক এমন পরিবেশে বড় হয়ে উঠেছে, যেখানে ধর্মের প্রতি কোন উদ্দেশ্যপূর্ণ আগ্রহ গড়ে ওঠাকে নিরুৎসাহিত করা হয় এই প্রভাব তাদের পিতামাতা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, বন্ধুবান্ধব, এমনকি সরকারের কাছ থেকেও আসতে পারে।
আলবানিয়ার একজন যুবক, স্কালাব্রিনো ব্যাখ্যা করে যে সাম্যবাদী শাসনের অধীনে লোকেদের শিক্ষা দেওয়া হত যে ঈশ্বর নেই। এছাড়া, ধর্ম সম্বন্ধে কথা বলা বিপজ্জনক ছিল; এর জন্য কারাদণ্ড হতে পারত। কিন্তু, ১৯৯১ সালে একজন উদ্বাস্তু হিসাবে সুইজারল্যান্ডে থাকার সময়ে, তাকে বাইবেল অধ্যয়ন করার সুযোগ দেওয়া হয়। সে সেই সুযোগ গ্রহণ করে। কেন?
আলবানিয়াতে সে শুনেছিল যে বাইবেল বলে একটি বই আছে, কিন্তু সেই সম্বন্ধে সে কিছুই জানত না। তাই প্রথমে বাইবেলকে বুঝবার ইচ্ছা হয়ত তাকে প্রেরণা দেয়নি। যদিও তাকে বলা হয়েছিল সে মানবজাতি এবং পৃথিবীর জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে অধ্যয়ন করবে, কিন্তু সে স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করায় উন্নতি করার সুযোগ হিসাবে বিষয়টিকে নিয়েছিল। কিন্তু শীঘ্রই সে বুঝতে পারে যে সে যা শিখছিল, তা তার অন্তরের একটি গভীর আধ্যাত্মিক চাহিদা পূরণ করছিল। একটি নতুন জগৎ যেখানে শান্তি থাকবে, যেখানে লোকে অনন্তকাল বেঁচে থাকবে এবং জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যাবে, এই সম্বন্ধে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা তাকে অত্যন্ত আনন্দিত করেছিল। আর আগ্রহ আরও বেড়ে উঠেছিল যখন সে জানতে পারে যে সে ও তার পরিবারকে ফোন করে এই বিষয়টি জানাবার জন্য।
বাইবেলের যথার্থ জ্ঞান লোকেদের জীবনে যে প্রভাব ফেলতে পারে তা দেখে অ্যালিক্সে, যে রাশিয়াতে থাকে, সেও আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল। বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে এবং জীবনের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে কোন সন্তুষ্টিজনক উত্তর না পেয়ে, সে আত্মহত্যা করার কথা চিন্তা করে। কিন্তু প্রথমে সে একজন বন্ধুর সাথে দেখা করার জন্য ফিনল্যান্ডে গিয়েছিল। ট্রেনে করে যাওয়ার সময়ে, তার সমস্যা সম্বন্ধে সে তার সহযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছিল। তাদের মধ্যে একজন যিহোবার সাক্ষী ছিল, যে তাকে বাইবেল অধ্যয়ন করতে বলে কারণ সেখানে এই ধরনের সমস্যার সমাধান দেওয়া আছে। অ্যালিক্সে খুব একটা আশাবাদী মনোভাব দেখায়নি। ফেরার পথে, তার একই রকম অভিজ্ঞতা হয়েছিল। এইবার, আরেকজন সাক্ষী তাকে জানিয়েছিল যে তারও একই রকম সমস্যা ছিল, কিন্তু সেগুলি অতিক্রম করতে বাইবেল তাকে সাহায্য করেছে। সেও তাকে বাইবেল অধ্যয়ন করতে উৎসাহ দিয়েছিল। বাড়ি ফিরে আসার পর, ফোন বেজে উঠেছিল। তার আরেকজন বন্ধু ফোন করেছিল, যে সাক্ষীদের সঙ্গে অধ্যয়ন করছিল এবং খুবই খুশি ছিল। অ্যালিক্সে উপলব্ধি করতে শুরু করে যে তার যা প্রয়োজন হয়ত বাইবেল তাকে তা দিতে পারবে, কিন্তু সে জানত যে সাহায্য ছাড়া সে কিছু বুঝতে পারবে না। যিহোবার সাক্ষীদের সঙ্গে নিয়মিত গৃহ বাইবেল অধ্যয়ন করতে সে সম্মতি জানায় এবং তাদের সভাগুলিতে উপস্থিত থাকতে শুরু করে। সব মানুষের সামনে যে সাধারণ সমস্যাগুলি আছে সেগুলি তাদের সামনে থাকলেও, যারা বাইবেলের শিক্ষাকে কেন্দ্র করে তাদের জীবন গড়ে তোলে, তারা কেন এত সুখী, তা বুঝে উঠতে তার খুব বেশি দেরি হয়নি।
মানব প্রবৃত্তি সম্বন্ধে জ্ঞান থাকার জন্য, যীশু খ্রীষ্ট বলেছিলেন: “মানুষ শুধুমাত্র রুটীর দ্বারাই বাঁচতে পারে না।” (মথি ৪:৪, দ্যা নিউ ইংলিশ বাইবেল) তিনি আরও বলেছিলেন: “যারা নিজেদের আধ্যাত্মিক চাহিদা সম্বন্ধে সচেতন, তারা সুখী।” (মথি ৫:৩, NW) তারা সুখী কারণ তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে তারা ভালভাবে জানে, সেই প্রয়োজন মিটানোর জন্য তারা উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয় এবং ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভ করে। অবশ্য, শুধুমাত্র কোন গির্জায় যোগ দিয়ে অথবা ধর্মীয় সভায় উপস্থিত থেকেই আমাদের আধ্যাত্মিক চাহিদার সন্তুষ্টি হয় না। যে ধর্মগুলির ভিত্তি প্রধানত রীতিনীতির উপরে, সেগুলিতে আবেগজনিত আকর্ষণ থাকলেও, সেগুলি কি জীবনের সমস্যাগুলির বাস্তবধর্মী সমাধান দেয়? কোন ধর্মের প্রধান নিয়মাবলী যুক্তিসঙ্গত হলেও, জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে যদি তা অসফল হয়, তাহলে তা কি আপনার আধ্যাত্মিক চাহিদা পূরণ করবে? আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সেই ধর্ম পালন করলে ঈশ্বরের সঙ্গে কি আপনার ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠবে? তা না হলে, প্রকৃত সন্তুষ্টি পাওয়া যায় না।
এই বিষয়ে, বহু লোকে এখনও এমন কিছুর অন্বেষণ করছে যা তারা এখনও পায়নি।
[Pictures on page 3]
কোন গির্জায় যোগদান করে কি আপনার আধ্যাত্মিক চাহিদা সত্যিই পূর্ণ হবে?
[Pictures on page 4]
অনেকে দেখেছেন যে যখন তারা বাইবেল বুঝতে পারে, তখন জীবন নতুন করে অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে