ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০১ ১১/১৫ পৃষ্ঠা ২৮-৩১
  • নোহের বিশ্বাস জগৎকে দোষী করে

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • নোহের বিশ্বাস জগৎকে দোষী করে
  • ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • নোহের দিনের জগৎ
  • “তাৎকালিক লোকদের মধ্যে . . . সিদ্ধ লোক”
  • “ধার্ম্মিকতার প্রচারক”
  • জলপ্লাবনের মধ্যে দিয়ে রক্ষা পাওয়া
  • “নোহের সময়ে যেরূপ হইয়াছিল”
  • তিনি “ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন করিতেন”
    তাদের বিশ্বাস অনুকরণ করুন
  • তিনি ‘আর সাত জনের সহিত রক্ষা’ পেয়েছিলেন
    ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • অপনি কি আপনার বিশ্বাস দ্বারা জগতকে দোষী সাব্যস্ত করেন?
    ১৯৯১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • সকলেই নোহ—তিনি ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করতেন থেকে শিক্ষা লাভ করতে পারেন
    ২০০২ আমাদের রাজ্যের পরিচর্যা
আরও দেখুন
২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০১ ১১/১৫ পৃষ্ঠা ২৮-৩১

নোহের বিশ্বাস জগৎকে দোষী করে

আপনি কি নোহের কথা শুনেছেন, যিনি ঈশ্বরকে ভয় করতেন এবং সারা পৃথিবীতে জলপ্লাবনের সময় জীবনরক্ষাকারী একটা জাহাজ বানিয়েছিলেন? প্রাচীন কালের ঘটনা হলেও, লক্ষ লক্ষ লোকেরা এই গল্পটা জানে। কিন্তু অনেকেই যে বিষয়টা উপলব্ধি করে না, তা হল নোহের জীবন আমাদের সকলের জন্য এক বিরাট অর্থ রাখে।

কিন্তু হাজার হাজার বছরের পুরনো একটা ঘটনার প্রতি আমরা কেন আগ্রহী হব? নোহের ও আমাদের পরিস্থিতির মধ্যে কি কোন মিল রয়েছে? যদি থাকে, তাহলে কীভাবে আমরা তার উদাহরণ থেকে উপকার পেতে পারি?

নোহের দিনের জগৎ

বাইবেলের কালনিরূপণবিদ্যা দেখায় যে আদমের মৃত্যুর ১২৬ বছর পর সা.কা.পূ. ২৯৭০ সালে নোহের জন্ম হয়েছিল। নোহের দিনে জগৎ দৌরাত্ম্যে পূর্ণ ছিল আর আদমের বংশধরদের বেশির ভাগ লোকই তাদের পূর্বপুরুষের বিপথগামী পথকে বেছে নিয়েছিল। তাই, “সদাপ্রভু দেখিলেন, পৃথিবীতে মনুষ্যের দুষ্টতা বড়, এবং তাহার অন্তঃকরণের চিন্তার সমস্ত কল্পনা নিরন্তর কেবল মন্দ।”—আদিপুস্তক ৬:৫, ১১, ১২.

কিন্তু যিহোবা কেবল মানুষের বিদ্রোহের কারণেই অসন্তুষ্ট হননি। আদিপুস্তকের বিবরণ জানায়: “ঈশ্বরের পুত্ত্রেরা মনুষ্যদের কন্যাগণকে সুন্দরী দেখিয়া, যাহার যাহাকে ইচ্ছা, সে তাহাকে বিবাহ করিতে লাগিল। . . . তৎকালে পৃথিবীতে মহাবীরগণ [“নেফিলিম,” NW] ছিল, এবং তৎপরেও ঈশ্বরের পুত্ত্রেরা মনুষ্যদের কন্যাদের কাছে গমন করিলে তাহাদের গর্ব্ভে সন্তান জন্মিল, তাহারাই সেকালের প্রসিদ্ধ বীর।” (আদিপুস্তক ৬:২-৪) প্রেরিত পিতর যা লিখেছেন তার সঙ্গে এই পদগুলোর তুলনা করলে দেখা যায় যে, “ঈশ্বরের পুত্ত্রেরা” ছিল অবাধ্য দূতেরা। আর মনুষ্য কন্যা ও মনুষ্যদেহ ধারণকারী দলত্যাগী দূতেদের মধ্যে অবৈধ যৌন সম্পর্কের ফলে যে সন্তানরা জন্মেছিল, তারা ছিল সেই নেফিলিম।—১ পিতর ৩:১৯, ২০.

“নেফিলিম” মানে “পতনকারী,” যা সেই ব্যক্তিদেরকে নির্দেশ করে যারা অন্যদের পতনের কারণ হয়েছিল। তারা ছিল নিষ্ঠুর উৎপীড়ক আর তাদের কামলালসাপূর্ণ পিতাদের পাপকে সদোম ও ঘমোরার বিপথগামিতার সঙ্গে তুলনা করা হয়। (যিহূদা ৬, ৭) তারা একসঙ্গে জগতে চরম দুষ্টতাকে উসকে দিয়েছিল।

“তাৎকালিক লোকদের মধ্যে . . . সিদ্ধ লোক”

দুষ্টতা এত বেশি ছেয়ে গিয়েছিল যে ঈশ্বর মানবজাতিকে ধ্বংস করবেন বলে স্থির করেছিলেন। কিন্তু অনুপ্রাণিত বিবরণ জানায়: “নোহ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হইলেন। . . . নোহ তাৎকালিক লোকদের মধ্যে ধার্ম্মিক ও সিদ্ধ লোক ছিলেন, নোহ ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন করিতেন।” (আদিপুস্তক ৬:৮, ৯) ধ্বংসের যোগ্য অধার্মিক এক জগতে ‘ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন করা’ কীভাবে সম্ভব হয়েছিল?

কোন সন্দেহ নেই যে, নোহ তার বাবা লেমকের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছিলেন, যিনি একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তি ও আদমের সমসাময়িক ছিলেন। লেমক তার ছেলের নাম নোহ (যার মানে মনে করা হয় “বিশ্রাম” অথবা “সান্ত্বনা”) রাখার সময় ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন: “সদাপ্রভু কর্ত্তৃক অভিশপ্ত ভূমি হইতে আমাদের যে শ্রম ও হস্তের ক্লেশ হয়, তদ্বিষয়ে এ আমাদিগকে সান্ত্বনা করিবে।” সেই ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ হয়েছিল যখন ভূমির ওপর ঈশ্বরের যে অভিশাপ ছিল সেটাকে তিনি সরিয়ে নিয়েছিলেন।—আদিপুস্তক ৫:২৯; ৮:২১.

ঈশ্বর-ভয়শীল বাবামা হলেই যে ছেলেমেয়েরা আধ্যাত্মিক ব্যক্তি হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই, কারণ প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে যিহোবার সঙ্গে কাছের সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। ঈশ্বরের অনুমোদন আছে এমন একটা পথে চলে নোহ ‘ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন করিয়াছিলেন।’ ঈশ্বর সম্বন্ধে নোহ যা শিখেছিলেন সেটাই তাকে ঈশ্বরকে সেবা করতে পরিচালিত করেছিল। ‘সকলকে বিনষ্ট করণার্থে জলপ্লাবন আনিবার’ বিষয়ে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যের কথা নোহকে যখন জানানো হয়েছিল, তখন তার বিশ্বাস একটু টলেনি।—আদিপুস্তক ৬:১৩, ১৭.

এই নজীরবিহীন দুর্যোগ ঘটবেই ঘটবে এ ব্যাপারে দৃঢ়নিশ্চিত হয়ে, যিহোবার এই আদেশ নোহ মেনে চলেছিলেন: “তুমি গোফর কাষ্ঠ দ্বারা এক জাহাজ নির্ম্মাণ কর; সেই জাহাজের মধ্যে কুঠরী নির্ম্মাণ করিবে, ও তাহার ভিতরে ও বাহিরে ধূনা দিয়া লেপন করিবে।” (আদিপুস্তক ৬:১৪) জাহাজ তৈরির জন্য ঈশ্বর যে বিশদ বিবরণ দিয়েছিলেন সেই মতো কাজ করা সহজ ছিল না। কিন্তু তবুও, “নোহ . . . ঈশ্বরের আজ্ঞানুসারেই সকল কর্ম্ম করিলেন।” বস্তুতপক্ষে, “নোহ সেইরূপ করিলেন।” (আদিপুস্তক ৬:২২) নোহ তার স্ত্রী, তাদের ছেলে শেম, হাম ও যেফৎ এবং ছেলের বউদের সাহায্যে তা করেছিলেন। যিহোবা এইরকম বিশ্বাসকে আশীর্বাদ করেছিলেন। আজকে, পরিবারগুলোর জন্য কী চমৎকার এক উদাহরণ!

জাহাজ বানানোর কাজে কী জড়িত ছিল? নোহকে যিহোবা তিনতলা বিশিষ্ট জলরোধী, কাঠের বিরাট একটা বাক্স বানাতে বলেছিলেন যেটা প্রায় ১৩৩ মিটার লম্বা, ২২ মিটার চওড়া এবং ১৩ মিটার উঁচু ছিল। (আদিপুস্তক ৬:১৫, ১৬) আজকের দিনের বিভিন্ন মালবাহী জাহাজ যতটা ভার বহন করতে পারে এই জাহাজেরও নিশ্চয় ততটাই বহন করার ক্ষমতা ছিল।

কী বিরাট কাজই না ছিল! খুব সম্ভবত, এর জন্য হাজার হাজার গাছ কেটে সেগুলোকে জাহাজ বানানোর জায়গায় নিয়ে আসতে ও সেগুলোকে কেটে মোটা তক্তা বা পাটাতন বানাতে হয়েছিল। এর জন্য কাঠের ভারা বানাতে, পেরেক তৈরি করতে, জাহাজে যাতে জল না ঢোকে তার জন্য আলকাতরা তৈরি করতে, নানাধরনের পাত্র ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করতে হয়েছিল। এই কাজের জন্য হয়তো দোকানদারদের সঙ্গে দর কষাকষি করতে এবং জিনিসপত্রের ও কাজের মূল্য পরিশোধ করতে হয়েছিল। স্পষ্টতই ছুতোর মিস্ত্রির এই কাজে দক্ষতার দরকার হয়েছিল, যাতে মোটা তক্তাগুলোকে একেবারে ঠিকভাবে বসানো হয় এবং খুব ভাল শক্ত একটা কাঠামো বানানো যায়। আর চিন্তা করে দেখুন যে জাহাজ বানানোর এই কাজ প্রায় ৫০ অথবা ৬০ বছর ধরে চলেছিল!

এরপর নোহকে পর্যাপ্ত খাদ্য ও পশুপাখিদের জন্য খাবার সংগ্রহের কাজে মনোযোগ দিতে হয়েছিল। (আদিপুস্তক ৬:২১) জাহাজের মধ্যে পশুপাখিদেরকে জড়ো করতে ও সেগুলোকে সামলাতে হয়েছিল। ঈশ্বর নোহকে যা যা বলেছিলেন সেই সমস্ত কিছু করে তিনি কাজ শেষ করেছিলেন। (আদিপুস্তক ৬:২২) যিহোবার আশীর্বাদ ছিল বলেই কাজটা সম্পূর্ণভাবে সফল হয়েছিল।

“ধার্ম্মিকতার প্রচারক”

জাহাজ বানানো ছাড়াও, নোহ সাবধানবাণী ঘোষণা করেছিলেন এবং “ধার্ম্মিকতার প্রচারক” হিসেবে বিশ্বস্তভাবে ঈশ্বরের সেবা করেছিলেন। কিন্তু লোকেরা “বুঝিতে পারিল না, যাবৎ না বন্যা আসিয়া সকলকে ভাসাইয়া লইয়া গেল।”—২ পিতর ২:৫; মথি ২৪:৩৮, ৩৯.

সেই সময়ের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক অধঃপতনের কথা বিবেচনা করলে এটা সহজেই বোঝা যায় যে, নোহের পরিবার নিশ্চয়ই সন্দেহবাদী প্রতিবেশীদের ঠাট্টা, গালিগালাজ ও উপহাসের পাত্র হয়েছিলেন। লোকেরা নিশ্চয় তাদেরকে পাগল বলে মনে করেছিল। কিন্তু নোহ তার পরিবারকে আধ্যাত্মিকভাবে উৎসাহ দিতে ও সাহায্য করতে সফল হয়েছিলেন, কারণ তারা কখনও তাদের অধার্মিক সমসাময়িক বক্তিদের হিংস্র, অনৈতিক ও বিদ্রোহের পথে চলেননি। তার কথা ও কাজ তার বিশ্বাসকে প্রকাশ করেছিল আর এর মাধ্যমে নোহ সেই সময়ের জগৎকে দোষী করেছিলেন।—ইব্রীয় ১১:৭.

জলপ্লাবনের মধ্যে দিয়ে রক্ষা পাওয়া

বৃষ্টি আরম্ভ হওয়ার অল্প দিন আগে, ঈশ্বর নোহকে তৈরি হয়ে যাওয়া জাহাজে প্রবেশ করতে বলেছিলেন। যখন নোহের পরিবার ও পশুপাখিগুলো ভিতরে ঢুকে গিয়েছিল, তখন “সদাপ্রভু . . . দ্বার বদ্ধ করিলেন,” যাতে কোন উপহাসকারী আর ঢুকতে না পারে। যখন বন্যা এসেছিল, তখন সেই অবাধ্য দূতেরা তাদের রূপ বদলে ধ্বংস থেকে রক্ষা পেয়েছিল। কিন্তু অন্যদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? হ্যাঁ, জাহাজের বাইরে নেফিলিমরা সহ শুষ্ক ভূমির সমস্ত জীবিত প্রাণী ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল! কেবল নোহ ও তার পরিবার রক্ষা পেয়েছিলেন।—আদিপুস্তক ৭:১-২৩.

নোহ ও তার পরিবার জাহাজের মধ্যে এক চান্দ্রিক বছর ও দশ দিন কাটিয়েছিলেন। তারা পশুপাখিদেরকে খাওয়ানো-ধোয়ানো, তাদের মলমূত্র পরিষ্কার করার কাজে ব্যস্ত ছিলেন এবং সময়ের দিকে খেয়াল রেখেছিলেন। জাহাজের বেগমাপক যন্ত্রের মতো, আদিপুস্তক সঠিকভাবে জলপ্লাবনের বিস্তারিত বিবরণ দেয়, যেটা এই বিবরণের সত্যতাকে প্রমাণ করে।—আদিপুস্তক ৭:১১, ১৭, ২৪; ৮:৩-১৪.

কোন সন্দেহ নেই যে, জাহাজে থাকাকালীন নোহ তার পরিবারের সঙ্গে আধ্যাত্মিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিলেন এবং ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। স্পষ্টতই, নোহ ও তার পরিবার জলপ্লাবনের পূর্ব ইতিহাস সংরক্ষণ করেছিলেন। তাদের কাছে যে নির্ভরযোগ্য মৌখিক পরম্পরাগত বিধি অথবা লিখিত ঐতিহাসিক বিবরণগুলো ছিল, সেগুলো জলপ্লাবনের সময়ে আলোচনা করে উপকার পাওয়ার জন্য অনেক ভাল বিষয়বস্তু ছিল।

নোহ ও তার পরিবার যখন আবার শুষ্ক ভূমিতে পা রেখেছিলেন, তখন তারা কত আনন্দিতই না হয়েছিলেন! প্রথমেই যে কাজটা তিনি করেছিলেন তা হল, তিনি একটা বেদি তৈরি করেছিলেন আর যিনি তাদেরকে রক্ষা করেছেন তাঁর উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করে তার পরিবারের হয়ে তিনি যাজকের কাজ করেছিলেন।—আদিপুস্তক ৮:১৮-২০.

“নোহের সময়ে যেরূপ হইয়াছিল”

যীশু খ্রীষ্ট বলেছিলেন: “নোহের সময়ে যেরূপ হইয়াছিল, মনুষ্যপুত্ত্রের আগমনও তদ্রূপ হইবে।” (মথি ২৪:৩৭) একইভাবে আজকেও খ্রীষ্টানরা ধার্মিকতার প্রচারক, লোকেদেরকে অনুতাপ করার জন্য তারা আবেদন জানাচ্ছেন। (২ পিতর ৩:৫-৯) সেই দিনের সঙ্গে তুলনা করলে আমরা হয়তো ভাবতে পারি যে, জলপ্লাবনের পূর্বে নোহের মনের অবস্থা কেমন ছিল। তিনি কি কখনও মনে করেছিলেন যে তার প্রচার ব্যর্থ হয়েছিল? তিনি কি কখনও কখনও ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন? বাইবেল এই বিষয়ে কিছু জানায় না। আমাদেরকে কেবল বলা হয়েছে যে নোহ ঈশ্বরের বাধ্য হয়েছিলেন।

আপনি কি নোহের পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের পরিস্থিতির কোন ব্যবহারিক মিল দেখতে পান? বিরোধিতা ও কষ্ট সত্ত্বেও তিনি যিহোবার বাধ্য হয়েছিলেন। সেইজন্য যিহোবা তাকে ধার্মিক বলেছিলেন। নোহের পরিবার জানতেন না যে ঠিক কখন ঈশ্বর জলপ্লাবন নিয়ে আসবেন কিন্তু তারা জানতেন যে তা নিশ্চয়ই হবে। ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি বিশ্বাস নোহকে পরিশ্রমের বছরগুলোতে বাঁচিয়ে রেখেছিল ও যেটাকে ফলহীন প্রচার বলে মনে হয়েছিল তা করে চলতে শক্তি দিয়েছিল। সত্যিই, আমাদেরকে বলা হয়েছে: “বিশ্বাসে নোহ, যাহা যাহা তখন দেখা যাইতেছিল না, এমন বিষয়ে আদেশ পাইয়া ভক্তিযুক্ত ভয়ে আবিষ্ট হইয়া আপন পরিবারের ত্রাণার্থে এক জাহাজ নির্ম্মাণ করিলেন, এবং তদ্দ্বারা জগৎকে দোষী করিলেন ও আপনি বিশ্বাসানুরূপ ধার্ম্মিকতার অধিকারী হইলেন।”—ইব্রীয় ১১:৭.

কীভাবে নোহ এইরকম বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন? যিহোবার সম্বন্ধে যা কিছুই জানতেন, নিশ্চয়ই সেগুলো নিয়ে তিনি চিন্তা করেছিলেন আর সেই জ্ঞান অনুযায়ী নিজেকে পরিচালিত হতে দিয়েছিলেন। কোন সন্দেহ নেই যে, নোহ প্রার্থনার মাধ্যমে ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলতেন। আসলে, তিনি যিহোবাকে এত ঘনিষ্ঠভাবে জেনেছিলেন যে তিনি “ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন করিতেন।” পরিবারের মস্তক হিসেবে, নোহ আনন্দের সঙ্গে তার পরিবারের জন্য সময় দিয়েছিলেন ও প্রেমময় যত্ন দেখিয়েছিলেন। এর অন্তর্ভুক্ত ছিল তার স্ত্রী, তিন ছেলে ও তিন ছেলের বউয়ের আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোর যত্ন নেওয়া।

নোহের মতো, আজকে সত্য খ্রীষ্টানেরা জানেন যে যিহোবা খুব শীঘ্রিই এই ভক্তিহীন বিধিব্যবস্থাকে ধ্বংস করবেন। যদিও আমরা ধ্বংসের সেই দিন বা ঘন্টা সম্বন্ধে জানি না কিন্তু আমরা উপলব্ধি করি যে, ‘ধার্ম্মিকতার প্রচারকের’ এই বিশ্বাস ও বাধ্যতাকে অনুকরণ করলে ‘প্রাণ রক্ষা’ হবে।—ইব্রীয় ১০:৩৬-৩৯.

[২৯ পৃষ্ঠার বাক্স]

এটা কি সত্যিই ঘটেছিল?

নৃবিজ্ঞানীরা প্রায় সমস্ত উপজাতি ও জাতির কাছ থেকে ২৭০টার মতো পৌরাণিক কাহিনী সংগ্রহ করেছেন। পণ্ডিত ক্লুস ওয়েসটারম্যান বলেন, ‘পৃথিবীর সর্বত্র জলপ্লাবনের কাহিনী শোনা যায়। সৃষ্টির বিবরণের মতো, এটা আমাদের মূল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। এটা সত্যিই আশ্চর্যের: পৃথিবীর সব জায়গায় এক বিরাট প্রাচীন জলপ্লাবনের বিবরণ শোনা যায়।’ এর কারণ কী? বর্ণনাকারী এনরিকো গালবিয়াতি বলেন: “আলাদা আলাদা জায়গার ও বিভিন্ন সময়ের লোকেদের মধ্যে জলপ্লাবনের পরম্পরাগত কাহিনীর বিবরণ থাকা হল এক প্রমাণ যে, এইধরনের পরম্পরাগত কাহিনীগুলো নিয়ে গড়ে ওঠা কোন ঐতিহাসিক ঘটনা নিশ্চয়ই ঘটেছিল।” কিন্তু পণ্ডিতদের মন্তব্যগুলোর চাইতে খ্রীষ্টানদের কাছে যে বিষয়টা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হল, যীশু নিজে মানবজাতির ইতিহাসে একটা সত্যিকারের ঘটনা হিসেবে জলপ্লাবনের ঘটনা সম্বন্ধে বলেছিলেন।—লূক ১৭:২৬, ২৭.

[৩০ পৃষ্ঠার বাক্স]

পৌরাণিক কাহিনীতে নেফিলিমের উল্লেখ?

দেবতা ও মানুষের মধ্যে অবৈধ যৌন মিলন আর এদের মিলনের ফলে উৎপন্ন “বীরদের” অথবা “উপদেবতাদের” সম্বন্ধে যে গল্পগুলো রয়েছে তা গ্রিক, মিশরীয়, উগারিটিক, হুরিয়ান ও মেসোপটামিয় থিওলজিতে খুবই পরিচিত ছিল। গ্রিক পৌরাণিক কাহিনীর দেবতাদের মানুষের মতো রূপ ছিল ও সুন্দর ছিল। তারা খাওয়া-দাওয়া করত, পান করত, ঘুমাত, যৌন সম্পর্ক করত, ঝগড়া করত, যুদ্ধ করত, প্রলোভন দেখাত এবং ধর্ষণ করত। যদিও পবিত্রতার ভান করত কিন্তু আসলে তারা প্রতারণা করায় ও অপরাধমূলক কাজে দক্ষ ছিল। আ্যকিলেসদের মতো বীরদের বিষয়ে বলা হয়েছিল যে তারা দেবতা ও মানুষ উভয়েরই বংশধর আর যদিও তাদেরকে মানুষের চাইতে অনেক বেশি শক্তি দেওয়া হয়েছিল কিন্তু অমরত্বের শক্তি তারা পায়নি। তাই, নেফিলিম সম্বন্ধে আদিপুস্তক যা বলে তার থেকে বোঝা যে, এইরকম পৌরাণিক কাহিনীগুলো সম্ভবত এখান থেকেই এসেছে বা এরাই এর উৎস।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার