ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w12 ৭/১৫ পৃষ্ঠা ২২-২৬
  • “আমি কাহা হইতে ত্রাসযুক্ত হইব?”

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • “আমি কাহা হইতে ত্রাসযুক্ত হইব?”
  • ২০১২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • “সদাপ্রভু আমার জ্যোতি, আমার পরিত্রাণ”
  • প্রতিটা সাফল্যের কথা স্মরণ করুন
  • বিশুদ্ধ উপাসনার প্রতি উপলব্ধি দেখান
  • ঈশ্বরের সাহায্যের ওপর নির্ভর করুন
  • “সদাপ্রভু, তোমার পথ আমাকে শিখাও”
  • বিশ্বাস এবং আশা অপরিহার্য
  • যিহোবার ওপর পূর্ণ নির্ভরতা আস্থা জাগিয়ে তোলে
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবা—বাইবেলের সময়ে “নিস্তারকর্ত্তা”
    ২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “যাহারা সদাপ্রভুর অন্বেষণ করে, তাহাদের কোন মঙ্গলের অভাব হয় না”
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২২
  • বিজ্ঞ হোন—ঈশ্বরকে ভয় করুন!
    ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০১২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w12 ৭/১৫ পৃষ্ঠা ২২-২৬

“আমি কাহা হইতে ত্রাসযুক্ত হইব?”

“যদ্যপি আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ সংঘটিত হয়, তথাপি তখনও আমি সাহস করিব।” —গীত. ২৭:৩.

নীচের শাস্ত্রপদ অনুযায়ী কী আপনাকে সাহস গড়ে তোলার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে?

গীতসংহিতা ২৭:১

গীতসংহিতা ২৭:৪

গীতসংহিতা ২৭:১১

১. গীতসংহিতার ২৭ গীত আমাদেরকে কী বুঝতে সাহায্য করবে?

জ গতের মন্দতর অবস্থা সত্ত্বেও, কেন আমাদের প্রচার কাজ বৃদ্ধি পাচ্ছে? যেখানে অনেকে অর্থনৈতিক মন্দা ভোগ করছে, সেখানে কেন আমরা স্বেচ্ছায় আমাদের সময় ও শক্তি প্রদান করি? অনেকে যখন ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্কিত, তখন কীভাবে আমরা সাহস বজায় রাখতে পারি? রাজা দায়ূদের অনুপ্রাণিত একটা গীত, যা গীতসংহিতা ২৭ গীতে লিপিবদ্ধ আছে, তা আমাদেরকে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করে।

২. ত্রাসের অনুভূতি একজন ব্যক্তির ওপর কোন প্রভাব ফেলতে পারে কিন্তু আমাদের কোন আস্থা রয়েছে?

২ দায়ূদ এই কথাগুলো দিয়ে এই গীত শুরু করেন: “সদাপ্রভু আমার জ্যোতি, আমার পরিত্রাণ, আমি কাহা হইতে ভীত হইব? সদাপ্রভু আমার জীবন-দুর্গ, আমি কাহা হইতে ত্রাসযুক্ত হইব?” (গীত. ২৭:১) যদিও ভয় দুর্বল করে ফেলতে পারে, তবে ত্রাসের অনুভূতি আরও বেশি মারাত্মক। কিন্তু, কোনো ধরনের ত্রাসের কারণেই সেই ব্যক্তির উদ্‌বিগ্ন হওয়া উচিত নয়, যিনি যিহোবাকে ভয় করেন। (১ পিতর ৩:১৪) আমরা যখন যিহোবাকে আমাদের দুর্গ করে তুলি, তখন আমরা ‘নির্ভয়ে বাস করিব, শান্ত থাকিব, অমঙ্গলের আশঙ্কা করিব না।’ (হিতো. ১:৩৩; ৩:২৫) কেন?

“সদাপ্রভু আমার জ্যোতি, আমার পরিত্রাণ”

৩. কোন অর্থে যিহোবা আমাদের জ্যোতি কিন্তু আমাদের অবশ্যই কী করতে হবে?

৩ “সদাপ্রভু আমার জ্যোতি” বাক্যালঙ্কারটি এই বিষয়টার ওপর মনোযোগ আকর্ষণ করায় যে, যিহোবা আমাদেরকে অজ্ঞানতা এবং আধ্যাত্মিক অন্ধকার থেকে মুক্ত করেন। (গীত. ২৭:১) আক্ষরিক আলো হয়তো আমাদের চলার পথে বিদ্যমান কোনো বিপদ অথবা বাধা প্রকাশ করে দেয় কিন্তু তা সরিয়ে দেয় না। আমরা যা দেখি, সেই অনুযায়ী আমাদের অবশ্যই বিজ্ঞতার সঙ্গে কাজ করতে হয়। একইভাবে, যিহোবা আমাদের কাছে জগতের বিভিন্ন ঘটনার মৌলিক অর্থ প্রকাশ করেন। তিনি এই বিধিব্যবস্থার বিপদ সম্বন্ধে আমাদেরকে সতর্ক করে দেন। তিনি আমাদের জন্য বাইবেলের সেই নীতিগুলো জুগিয়ে থাকেন, যেগুলো সবসময়ের জন্য উপযোগী, তবে আমরা যা শিখি, সেটা আমাদের অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে। আমরা যখন তা করি, তখন আমরা আমাদের শত্রু বা শিক্ষক উভয়ের চেয়ে আরও বিজ্ঞতার সঙ্গে কাজ করতে পারি।—গীত. ১১৯:৯৮, ৯৯, ১৩০.

৪. (ক) কেন দায়ূদ দৃঢ়প্রত্যয়ের সঙ্গে বলতে পেরেছিলেন: “সদাপ্রভু আমার . . . পরিত্রাণ”? (খ) বিশেষভাবে কখন যিহোবা আমাদের পরিত্রাণ হবেন?

৪ গীতসংহিতা ২৭:১ পদে লিপিবদ্ধ দায়ূদের কথাগুলো দেখায় যে, তিনি নিশ্চয়ই এর আগে যিহোবা তাকে যেভাবে উদ্ধার অথবা রক্ষা করেছিলেন, তা স্মরণ করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, যিহোবা তাকে “সিংহের থাবা ও ভল্লুকের থাবা হইতে” উদ্ধার করেছিলেন। এ ছাড়া, যিহোবা তাকে দৈত্যাকৃতি গলিয়াৎকে পরাজিত করতে সাহায্য করেছিলেন। পরে, রাজা শৌল দায়ূদকে একটা বর্শা দিয়ে বিদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু প্রতিবারই যিহোবা তাকে উদ্ধার করেছিলেন। (১ শমূ. ১৭:৩৭, ৪৯, ৫০; ১৮:১১, ১২; ১৯:১০) তাই, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, দায়ূদ দৃঢ়প্রত্যয়ের সঙ্গে বলতে পেরেছিলেন: “সদাপ্রভু আমার . . . পরিত্রাণ”! যিহোবা আবারও তাঁর দাসদের ক্ষেত্রে তা-ই হবেন, যেমনটা তিনি দায়ূদের ক্ষেত্রে হয়েছিলেন আর তা হল পরিত্রাণ। কীভাবে? তাঁর উপাসকদেরকে আসন্ন ‘মহাক্লেশ’ থেকে উদ্ধার করার মাধ্যমে।—প্রকা. ৭:১৪; ২ পিতর ২:৯.

প্রতিটা সাফল্যের কথা স্মরণ করুন

৫, ৬. (ক) আমাদের মধ্যে সাহস গড়ে তোলার ব্যাপারে আমাদের স্মৃতিশক্তি কোন ভূমিকা পালন করে? (খ) তাঁর লোকেদের সঙ্গে যিহোবার আচরণের নথি কীভাবে আপনার সাহসকে শক্তিশালী করে?

৫ গীতসংহিতা ২৭:২, ৩ পদে, সাহস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের মনোযোগে আনা হয়েছে। (পড়ুন।) দায়ূদ সেই ঘটনাগুলোর কথা স্মরণ করেন, যে-সময়গুলোতে তিনি যিহোবার সাহায্যে উদ্ধার লাভ করেছিলেন। (১ শমূ. ১৭:৩৪-৩৭) এই স্মৃতিগুলো তাকে এমনকী আরও মন্দ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আস্থাবান করে তুলেছিল। আপনার অভিজ্ঞতাগুলো থেকে আপনিও কি একই উপসংহারে আসতে পারেন? উদাহরণস্বরূপ, আপনি কি কখনো কোনো দুর্দশামূলক সমস্যার জন্য আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করেছেন এবং এরপর কীভাবে যিহোবা আপনাকে সেই পরীক্ষার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য প্রজ্ঞা এবং শক্তি দিয়েছেন, তা লক্ষ করেছেন? কিংবা আপনার আনন্দপূর্ণ পরিচর্যার পথে আসা বাধাগুলোকে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল অথবা আপনার সামনে বৃহৎ ও কার্যসাধক এক দ্বার কীভাবে খুলে দেওয়া হয়েছিল, তা কি আপনি স্মরণ করে দেখতে পারেন? (১ করি. ১৬:৯) এই ধরনের ঘটনাগুলো স্মরণ করা এখন আপনার ওপর কোন প্রভাব ফেলে? এই ধরনের স্মৃতিগুলো কি আপনাকে ক্রমাগত এই বিষয়ে দৃঢ়প্রত্যয়ী করে তোলে না যে, যিহোবা আপনাকে এমনকী আরও গুরুতর বাধা এবং দুর্দশাগুলো কাটিয়ে ওঠার অথবা সেগুলো সহ্য করার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারেন?—রোমীয় ৫:৩-৫.

৬ কোনো ক্ষমতাশালী সরকার যদি যিহোবার সাক্ষিদেরকে একটা সংগঠন হিসেবে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে, তাহলে? আধুনিক দিনের অনেকে ঠিক এই বিষয়টাই করার প্রচেষ্টা করেছে কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। অতীতে যিহোবা কীভাবে তাঁর লোকেদের সাহায্য করেছেন, তা পুনর্বিবেচনা করে দেখা আমাদের মধ্যে সেই আস্থা গড়ে তুলবে, যা ভবিষ্যতের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজন।—দানি. ৩:২৮.

বিশুদ্ধ উপাসনার প্রতি উপলব্ধি দেখান

৭, ৮. (ক) গীতসংহিতা ২৭:৪ পদ অনুযায়ী, দায়ূদ যিহোবার কাছে কী যাচ্ঞা করেছিলেন? (খ) যিহোবার মহান আত্মিক মন্দির কী এবং সেখানে কীভাবে উপাসনা করা হয়?

৭ সাহসী কাজের আরেকটা অপরিহার্য উপাদান হল, বিশুদ্ধ উপাসনার জন্য আমাদের অনুরাগ। (পড়ুন, গীতসংহিতা ২৭:৪.) দায়ূদের দিনে আবাস ছিল ‘সদাপ্রভুর গৃহ।’ দায়ূদই প্রথম বিশাল মন্দিরের নকশার ব্যবস্থাদি করেছিলেন, যা তার পুত্র শলোমন নির্মাণ করেছিলেন। কয়েক শতাব্দী পর, যিশু প্রকাশ করেছিলেন যে, যিহোবাকে গ্রহণযোগ্য উপায়ে উপাসনা করা ঈশ্বরের দ্বারা আশীর্বাদপ্রাপ্ত কোনো বৃহৎ কাঠামোর ওপর আর নির্ভর করবে না। (যোহন ৪:২১-২৩) ইব্রীয় ৮ থেকে ১০ অধ্যায়ে প্রেরিত পৌল ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, ২৯ খ্রিস্টাব্দে যিশু তাঁর বাপ্তিস্মের সময় যখন যিহোবার ইচ্ছা পালন করার জন্য নিজেকে উপস্থাপন করেছিলেন, তখন মহান আত্মিক মন্দির অস্তিত্বে এসেছিল। (ইব্রীয় ১০:১০) এই মহান আত্মিক মন্দির হল যিহোবা প্রদত্ত ব্যবস্থা, যেন আমরা যিশুর মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানের প্রতি আমাদের বিশ্বাসের ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য উপায়ে ঈশ্বরের নিকটবর্তী হতে পারি। কীভাবে আমরা সেখানে উপাসনা করি? “সত্য হৃদয় সহকারে বিশ্বাসের কৃতনিশ্চয়তায়” প্রার্থনা করার মাধ্যমে; অটলভাবে জনসমক্ষে আমাদের আশা সম্বন্ধে ঘোষণা করার মাধ্যমে; আর আমরা যখন মণ্ডলীর সভাগুলোতে ও পারিবারিক উপাসনার জন্য একত্রে মিলিত হই, তখন সহউপাসকদের প্রতি বিবেচনা দেখানোর, তাদেরকে উদ্দীপিত ও উৎসাহিত করে তোলার মাধ্যমে। (ইব্রীয় ১০:২২-২৫) সত্য উপাসনার ব্যবস্থার প্রতি উপলব্ধি আমাদেরকে এই সংকটপূর্ণ শেষকালে শক্তিশালী করে তোলে।

৮ পৃথিবীব্যাপী, যিহোবার বিশ্বস্ত দাসেরা পরিচর্যায় আরও বেশি করে অংশ নিচ্ছে, নতুন নতুন ভাষা শিখছে এবং সেই এলাকাগুলোতে যাচ্ছে, যেখানে রাজ্যের প্রকাশকদের অনেক প্রয়োজন। তাদের কাজগুলো দেখায় যে, গীতরচকের মতো তারাও যিহোবার কাছে একটা বিষয় যাচ্ঞা করে। তারা যিহোবার সৌন্দর্য উপভোগ করতে এবং যা-ই ঘটুক না কেন, পবিত্র সেবায় অংশ নিতে চায়।—পড়ুন, গীতসংহিতা ২৭:৬.

ঈশ্বরের সাহায্যের ওপর নির্ভর করুন

৯, ১০. গীতসংহিতা ২৭:১০ পদে প্রাপ্ত আশ্বাসের অর্থ কী?

৯ দায়ূদ এই কথাগুলো বলার মাধ্যমে যিহোবার সাহায্যের প্রতি তার নির্ভরতা জোরালোভাবে প্রকাশ করেছিলেন: “আমার পিতামাতা আমাকে ত্যাগ করিয়াছেন, কিন্তু সদাপ্রভু আমাকে তুলিয়া লইবেন।” (গীত. ২৭:১০) ১ শমূয়েল ২২ অধ্যায়ে উল্লেখিত ঘটনাগুলো থেকে আমরা হয়তো এই উপসংহারে আসতে পারি যে, দায়ূদের বাবা-মা তাকে ত্যাগ করেনি। কিন্তু, বর্তমানে অনেক ব্যক্তিকে তাদের পরিবারের কাছ থেকে চরমভাবে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার বিষয়টা সহ্য করতে হয়েছে। তবে, এভাবে পরিত্যক্ত অনেকে খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর উষ্ণতার মধ্যে সাহায্য ও সুরক্ষা খুঁজে পেয়েছে।

১০ যেহেতু যিহোবা তাঁর দাসদেরকে সেই সময়ও সমর্থন করার জন্য প্রস্তুত, যখন অন্যেরা তাদেরকে পরিত্যাগ করে, তাই তিনি কি তাদেরকে যেকোনো ধরনের ক্লেশের মধ্যেও টিকিয়ে রাখবেন না? উদাহরণস্বরূপ, আমরা যখন আমাদের পরিবারের বস্তুগত বিষয়গুলো জোগানোর ব্যাপারে উদ্‌বিগ্ন থাকি, তখন আমরা কি এই বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে পারি না যে, যিহোবা আমাদের সাহায্য করবেন? (ইব্রীয় ১৩:৫, ৬) তিনি তাঁর সমস্ত অনুগত দাসের পরিস্থিতি এবং প্রয়োজন বোঝেন।

১১. যিহোবার ওপর আমাদের নির্ভরতা অন্যদের ওপর কোন প্রভাব ফেলতে পারে? উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করুন।

১১ লাইবেরিয়ার একজন বাইবেল ছাত্রী ভিক্টোরিয়ার ঘটনা বিবেচনা করুন। তিনি যখন বাপ্তিস্মের দিকে উন্নতি করতে থাকেন, তখন যে-ব্যক্তির সঙ্গে তিনি বাস করতেন, সেই ব্যক্তি তাকে ও তার তিন ছেলেমেয়েকে ত্যাগ করে চলে যান। গৃহহীন এবং বেকার থাকা সত্ত্বেও, তিনি আধ্যাত্মিক অগ্রগতি করছিলেন। ভিক্টোরিয়ার বাপ্তিস্মের পর, তার ১৩ বছর বয়সি মেয়ে টাকা-ভরতি একটা মানিব্যাগ খুঁজে পায়। প্রলোভন এড়িয়ে চলার জন্য তারা সেই টাকা এমনকী গুণে না দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরিবর্তে, তারা দ্রুত সেই সৈনিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে, যিনি এই মানিব্যাগের মালিক ছিলেন। তিনি তাদেরকে বলেছিলেন যে, সমস্ত লোক যদি যিহোবার সাক্ষিদের মতো সৎ হতো, তাহলে পুরো পৃথিবী আরও সুন্দর এবং আরও শান্তিপূর্ণ হয়ে উঠত। ভিক্টোরিয়া সেই সৈনিককে বাইবেল থেকে এক নতুন জগৎ সম্বন্ধে করা যিহোবার প্রতিজ্ঞাটা দেখান। তার নীতিনিষ্ঠা দেখে অভিভূত হয়ে, সেই সৈনিক ভিক্টোরিয়াকে ফিরে পাওয়া অর্থ থেকে বেশ মোটা অঙ্কের অর্থ দেন। সত্যিই, ভরণপোষণ জোগানোর ব্যাপারে যিহোবার ক্ষমতার ওপর পূর্ণ নির্ভরতা, যিহোবার সাক্ষিদেরকে পূর্ণ সততার এক সুনাম এনে দিয়েছে।

১২. বিভিন্ন ক্ষতি ভোগ করা সত্ত্বেও, আমরা যখন ক্রমাগত যিহোবার সেবা করে যাই, তখন আমরা কী দেখাই? উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করুন।

১২ কিংবা সিয়েরা লিওনের একজন অবাপ্তাইজিত প্রকাশক থমাস কেমন অনুভব করেছিলেন, তা কল্পনা করুন। তিনি মাধ্যমিক স্কুলে একজন শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন কিন্তু তার কাগজপত্র চূড়ান্ত না হওয়ায় তিনি প্রায় এক বছর ধরে কোনো বেতন পাননি। বর্তমান এবং পূর্বের বেতন পাওয়ার আগে থমাসকে শেষ কোন বিষয়টার মুখোমুখি হতে হয়েছিল? স্কুলের প্রশাসকের—একজন যাজকের—সঙ্গে এক সাক্ষাৎকার। সেই যাজক বলেন যে, যিহোবার সাক্ষিদের বিশ্বাস সেই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তিনি থমাসকে তার চাকরি অথবা তার বাইবেলভিত্তিক বিশ্বাসের মধ্যে যেকোনো একটা বিষয় বেছে নেওয়ার জন্য চাপ দেন। সেই চাকরি এবং প্রায় এক বছরের বেতন স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেওয়ার পর থমাস আরেকটা কাজ খুঁজে পান আর তা হল রেডিও ও মোবাইল ফোন মেরামত করার কাজ। এটা এবং এইরকম আরও অসংখ্য উদাহরণ যেমন দেখায় যে, বঞ্চিত হওয়ার ভয় অন্যান্য লোকের জন্য আতঙ্কের বিষয় হতে পারে কিন্তু এটা সমস্তকিছুর সৃষ্টিকর্তা এবং তাঁর লোকেদের রক্ষাকারী যিহোবার ওপর আমাদের সুপ্রতিষ্ঠিত নির্ভরতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

১৩. বস্তুগত বিষয় দুষ্প্রাপ্য এমন দেশগুলোতে রাজ্যের প্রচার কাজ কীভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে?

১৩ জীবনযাত্রা কঠিন এমন বেশ কয়েকটা দেশে, রাজ্যের ঘোষণাকারীরা প্রায়ই লক্ষণীয়ভাবে সক্রিয় থাকে। কেন? একটা শাখা অফিস লেখে: “বাইবেল অধ্যয়নের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে এমন অনেক গৃহকর্তা বেকার আর তাই দিনের বেলায় অধ্যয়ন করার জন্য তাদের হাতে আরও বেশি সময় থাকে। এর ফলে, ভাইবোনেরাও প্রচারের জন্য বেশি সময় ব্যয় করতে পারে। লোকেদেরকে বলতে হয় না যে, আমরা শেষকালে বাস করছি; তারা স্বচক্ষেই তাদের চারপাশের অবস্থা দেখতে পায় আর অবস্থা যতই খারাপ থাকে, তাদের কাছে প্রচার করা ততই সহজ হয়।” একজন মিশনারি, যিনি ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে এমন একটা দেশে সেবা করছেন, যেখানে প্রত্যেক প্রকাশক গড়ে তিনটেরও বেশি বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করে থাকে, তিনি লেখেন: “যেহেতু প্রকাশকদের মধ্যে অনেকে সাধারণ জীবনযাপন করে থাকে আর এর ফলে তাদের বিক্ষিপ্ত হওয়ার সুযোগও কম থাকে, তাই প্রচার এবং বাইবেল অধ্যয়ন করানোর জন্য তাদের হাতে সাধারণত আরও বেশি সময় থাকে।”

১৪. কোন কোন উপায়ে বিস্তর লোক ঐশিক সুরক্ষা উপভোগ করতে পারে?

১৪ যিহোবা তাঁর লোকেদেরকে একটা দল হিসেবে দৈহিক অথবা আধ্যাত্মিকভাবে সাহায্য, সুরক্ষা এবং উদ্ধার করার প্রতিজ্ঞা করেন আর আমরা তাঁর ওপর নির্ভর করি। (গীত. ৩৭:২৮, ৯১:১-৩) যে-লোকেরা “মহাক্লেশের” মধ্যে থেকে রক্ষা পায়, তাদের সংখ্যা সত্যিই বিস্তর বা অনেক বেশি। (প্রকা. ৭:৯, ১৪) তাই, এই লোকদেরকে একটা দল হিসেবে শেষকালের বাকি সময়টাতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করা হবে। পরীক্ষা সহ্য করার এবং যিহোবার সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে রক্ষা করার জন্য যা-কিছু প্রয়োজন, সেই সমস্তকিছুই তাদের জন্য জোগানো হবে। আর মহাক্লেশের চূড়ান্ত পর্যায়ে যিহোবা তাঁর লোকেদের সুরক্ষা করবেন।

“সদাপ্রভু, তোমার পথ আমাকে শিখাও”

১৫, ১৬. আমরা যখন ঐশিক শিক্ষার প্রতি মনোযোগ দিই, তখন আমরা কীভাবে উপকৃত হই? উদাহরণের সাহায্য ব্যাখ্যা করুন।

১৫ সাহস বজায় রাখার জন্য ঈশ্বরের পথ সম্বন্ধে আমাদের ক্রমাগত নির্দেশনার প্রয়োজন। এটা দায়ূদের এই বিনতি থেকে স্পষ্ট দেখা যায়: “সদাপ্রভু, তোমার পথ আমাকে শিখাও, সমান পথে আমাকে গমন করাও, আমার শত্রুগণ প্রযুক্ত ইহা কর।” (গীত. ২৭:১১) এই প্রার্থনার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করার অর্থ হল, যিহোবার সংগঠনের মাধ্যমে প্রাপ্ত বাইবেলভিত্তিক যেকোনো নির্দেশনার প্রতি সতর্কতার সঙ্গে মনোযোগ দেওয়া এবং সেটা সঙ্গেসঙ্গে পালন করা। নিজেদেরকে অযথা ঋণ থেকে মুক্ত করেছে এমন অনেকে এই প্রমাণ দেখতে পেয়েছে যে, জীবনকে সাদাসিধে করার বিষয়ে বিজ্ঞ পরামর্শ কাজে লাগানো তাদেরকে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও উপকৃত করেছে। তারা দেখেছে যে, তারা আর বহন করতে পারবে না এমন বিষয়গুলোর দ্বারা নিজেদেরকে ভারগ্রস্ত করে তোলার পরিবর্তে, তাদের পরিচর্যাকে বাড়ানোর জন্য তারা স্বাধীন। আমাদের প্রত্যেকের নিজেকে জিজ্ঞেস করা উচিত: ‘বাইবেল এবং বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস শ্রেণীর দ্বারা জোগানো প্রকাশনা থেকে আমি যা-কিছু পড়ি, সেগুলোর সমস্তই কি সঙ্গেসঙ্গে কাজে লাগাই আর তা এমনকী সেই সময়েও, যখন আত্মত্যাগ করার প্রয়োজন হয়?’—মথি ২৪:৪৫.

১৬ আমাদেরকে শিক্ষা দেওয়ার এবং সমান বা ন্যায়নিষ্ঠ পথে পরিচালনা দেওয়ার জন্য যিহোবাকে সুযোগ দিলে আমাদের ভয়ের কোনো কারণ থাকবে না। যুক্তরাষ্ট্রের একজন নিয়মিত অগ্রগামী যখন এমন একটা পদের জন্য আবেদন করেন, যা তাকে ও তার পুরো পরিবারকে পূর্ণসময়ের পরিচর্যা চালিয়ে যেতে সাহায্য করবে, তখন তার ম্যানেজার তাকে বলেন যে, কলেজের একটা ডিগ্রি ছাড়া তিনি কখনো সেই পদে কাজ করতে পারবেন না। আপনার বেলায়ও যদি এমনটা হতো, তাহলে উচ্চশিক্ষা বাদ দিয়ে পূর্ণসময়ের পরিচর্যা অনুধাবন করার কারণে আপনি কি অনুশোচনা করতেন? দুই সপ্তাহ পর, সেই ম্যানেজারের চাকরি চলে যায় এবং আরেক জন ম্যানেজার সেই ভাইকে তার লক্ষ্য সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করেন। তিনি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ব্যাখ্যা করেন যে, তিনি ও তার স্ত্রী যিহোবার সাক্ষিদের পূর্ণসময়ের পরিচারক এবং তারা এই কাজ চালিয়ে যেতে চায়। ভাই কোনোকিছু বলার আগেই সেই ম্যানেজার বলেন: “আমি জানতাম যে আপনাদের মধ্যে আলাদা কিছু রয়েছে! আমার বাবা যখন মৃত্যুশয্যায় ছিলেন, তখন আপনাদের দুজন সহবিশ্বাসী এসে প্রতিদিন তার সামনে বাইবেল পাঠ করত। তখন আমি এই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে, কখনো যদি কোনো যিহোবার সাক্ষিকে সাহায্য করার সুযোগ আসে, তাহলে আমি তা করব।” পরের দিন সকালে এই ভাইকে ঠিক সেই চাকরিটাই দেওয়া হয়, যা প্রাক্তন ম্যানেজার তাকে দিতে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। সত্যিই, আমরা যখন আমাদের জীবনে রাজ্যের বিষয়গুলোকে প্রথমে রাখি, তখন যিহোবা তাঁর এই আশ্বাস রাখেন যে, তিনি আমাদের বস্তুগত চাহিদা অপূর্ণ রাখবেন না।—মথি ৬:৩৩.

বিশ্বাস এবং আশা অপরিহার্য

১৭. কী আমাদেরকে আস্থা সহকারে ভবিষ্যতের মুখোমুখি হতে সমর্থ করবে?

১৭ এরপর দায়ূদ এই কথাগুলো বলার মাধ্যমে বিশ্বাস ও আশার প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে তুলে ধরেন: “আমি জীবিতদের দেশে সদাপ্রভুর মঙ্গলভাব দেখিব, এমন বিশ্বাস যদি না করিতাম, তবে আমার কি হইত?” (গীত. ২৭:১৩) সত্যিই, ঈশ্বরদত্ত আশা এবং গীতসংহিতা ২৭ গীতে আলোচিত বিষয়গুলোর প্রতি আমাদের যদি উপলব্ধি না থাকত, তাহলে আমাদের জীবন কেমনই বা হতো! তাই, আরমাগিদোনের দিকে নিয়ে যায় এমন ঘটনাগুলোর মুখোমুখি হওয়ার সময় আমরা যেন শক্তি এবং উদ্ধারের জন্য ক্রমাগত আস্থা সহকারে প্রার্থনা করে চলি।—পড়ুন, গীতসংহিতা ২৭:১৪.

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

দায়ূদ যিহোবার উদ্ধারমূলক কাজের কথা স্মরণ করে শক্তি লাভ করেছিলেন

[২৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

আমরা কি অর্থনৈতিক মন্দাকে আমাদের পরিচর্যা বাড়ানোর একটা সুযোগ হিসেবে দেখি?

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার