আনন্দ সহকারে যিহোবা ও তাঁর পুত্রের সঙ্গে একতাবদ্ধ
বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটা ২৮শে মার্চ উদ্যাপন করা হবে
১ দুহাজার দুই সালের ২৮শে মার্চ সূর্যাস্তের পর প্রভুর সান্ধ্যভোজ উদ্যাপন করে আমরা দেখাই যে, আমরা আনন্দ সহকারে যিহোবা ঈশ্বর ও যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে একতাবদ্ধ। সেই বিশেষ দিনটাতে, অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের অবশিষ্টাংশরা, রাজ্যের অন্যান্য সহ শাসক, পিতা ও পুত্রের সঙ্গে তাদের যে-বিশেষ “সহভাগিতা” রয়েছে, তা উপভোগ করবেন। (১ যোহন ১:৩; ইফি. ১:১১, ১২) ঈশ্বরের কাজ সম্পাদন করার ব্যাপারে যিহোবা ও তাঁর পুত্রের সঙ্গে মনেপ্রাণে এক হয়ে “অপর মেষ” এর লক্ষ লক্ষ লোকেরা একতাবদ্ধ হওয়ার এই অপূর্ব সুযোগটার বিষয়ে চিন্তা করবেন।—যোহন ১০:১৬, NW.
২ এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে থেকে একসঙ্গে কাজ করা: যিহোবা ও যীশু সবসময় আনন্দের সঙ্গে একতাবদ্ধ থেকেছেন। মানুষ সৃষ্টি করার আগে, অগণিত বছর ধরে তাঁরা ঘনিষ্ঠভাবে একসঙ্গে কাটিয়েছিলেন। (মীখা ৫:২) ফলে তাঁদের দুজনের মধ্যে এক গভীর স্নেহের বন্ধন গড়ে উঠেছিল। ব্যক্তিরূপে মূর্ত প্রজ্ঞা, এই প্রথমজাত পুত্র মানুষ হয়ে পৃথিবীতে আসার আগে বলতে পেরেছিলেন: “আমি দিন দিন আনন্দময় ছিলাম, [যিহোবার] সম্মুখে নিত্য আহ্লাদ করিতাম।” (হিতো. ৮:৩০) যিনি ভালবাসার উৎস, তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে অগণিত বছর কাটানোর ফলে, তা ঈশ্বরের পুত্রের ওপর এক গভীর ছাপ ফেলেছিল!—১ যোহন ৪:৮.
৩ মানবজাতির উদ্ধারের প্রয়োজন সে কথা মনে রেখে, মুক্তির মূল্য জোগাতে যিহোবা তাঁর একজাত পুত্রকে বেছে নিয়েছিলেন, মানুষের প্রতি যাঁর এক বিশেষ ভালবাসা ছিল আর সেটাই আমাদেরকে একমাত্র আশা দেয়। (হিতো. ৮:৩১) যিহোবা ও তাঁর পুত্র যেমন একটা উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ করতে একতাবদ্ধ, ঠিক তেমনই আমরা তাঁদের সঙ্গে এবং একে অন্যের সঙ্গে প্রগাঢ় প্রেমের বন্ধনে একতাবদ্ধ থাকি, আনন্দের সঙ্গে ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করি।
৪ অন্তর থেকে আমাদের কৃতজ্ঞতা দেখানো: স্মরণার্থক সভায় উপস্থিত থেকে এবং মনোযোগ সহকারে ও সম্মানের সঙ্গে শুনে, আমাদের প্রতি দেখানো যিহোবার ভালবাসার ও তাঁর পুত্রের বলিদানের জন্য আমরা আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা দেখাতে পারি। এখানে যীশুর প্রেমময় উদাহরণ, মুক্তির মূল্য জোগাতে মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর বিশ্বস্ততা এবং ঈশ্বরের প্রতিষ্ঠিত রাজ্যের রাজা হিসেবে তাঁর শাসনব্যবস্থা ও সেইসঙ্গে রাজ্য মানবজাতির জন্য যে-আশীর্বাদগুলো আনবে, তা আলোচনা করা হবে। এ ছাড়া সবসময় বিশ্বাস দেখিয়ে চলা, “সত্যের সহকারী” হিসেবে যিহোবার ইচ্ছার সঙ্গে মিল রেখে উদ্যোগের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও আমাদেরকে মনে করিয়ে দেওয়া হবে।—৩ যোহন ৮; যাকোব ২:১৭.
৫ আমাদের সঙ্গে অংশ নিতে অন্যদের সাহায্য করা: খ্রীষ্টের মৃত্যুর স্মরণার্থক সভায় উপস্থিত থাকতে এলাকার সমস্ত নিষ্ক্রিয় সাক্ষিদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য প্রাচীন গোষ্ঠী বিশেষ চেষ্টা করবেন। (মথি ১৮:১২, ১৩) যাদেরকে আমন্ত্রণ জানাবেন তাদের একটা তালিকা বানান, যাতে কেউ-ই বাদ না পড়ে আর ব্যক্তিগতভাবে সকলকেই আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে।
৬ আপনি কি এমন ব্যক্তিদের জানেন, যারা হয়তো স্মরণার্থক সভায় আসতে পারেন? এই অনুষ্ঠানের প্রতি তাদের উপলব্ধি গড়ে তুলতে নিজে এগিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলুন। অন্তর থেকে তাদেরকে আমন্ত্রণ এবং সাদর অভ্যর্থনা জানান। বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই দিনটাতে উপস্থিত থাকার জন্য আমাদের সমস্ত বাইবেল ছাত্র এবং অন্যান্য আগ্রহী ব্যক্তিদের ও সেইসঙ্গে আমাদের পরিবারের সদস্য এবং পরিচিতদের আমন্ত্রণ জানাতে আসুন আমরা আমাদের যথাসাধ্য করি। যারা “খ্রীষ্ট যীশুর জ্ঞানের শ্রেষ্ঠতা” সম্বন্ধে শেখেন তাদের সকলের জন্য মুক্তির মূল্যের উপকারগুলো রয়েছে। (ফিলি. ৩:৮) যারা খ্রীষ্টের বলিদানে বিশ্বাস অনুশীলন করেন, তারা অনন্ত জীবনের নিশ্চিত আশা লাভ করতে পারেন।—যোহন ৩:১৬.
৭ সৎহৃদয়ের ব্যক্তিদের ওপর স্মরণার্থক সভা যে-প্রভাব ফেলতে পারে, সেটাকে কখনও হালকাভাবে নেবেন না। দ্বীপপুঞ্জের দেশ পাপুয়া নিউ গিনিতে দুবছর আগে, ১১ জন আগ্রহী ব্যক্তি এই সভায় উপস্থিত থাকার জন্য একটা ছোট্ট নৌকায় করে অশান্ত সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে ১৭ ঘন্টা যাত্রা করেছিলেন। কেন? তারা বলেছিলেন: “যিহোবার সহ উপাসকদের সঙ্গে আমরা খ্রীষ্টের স্মরণার্থক সভা উদ্যাপন করতে চেয়েছিলাম; তাই এই যাত্রা সার্থক হয়েছিল।” সেই আগ্রহী ব্যক্তিরা যে উদ্যোগ দেখিয়েছিলেন তা এবং যিহোবা, তাঁর পুত্র ও খ্রীষ্টীয় ভ্রাতৃবর্গের সঙ্গে আনন্দ সহকারে একতাবদ্ধ হওয়ার জন্য তাদের কৃতজ্ঞতার কথা একটু ভেবে দেখুন!
৮ সমস্ত আগ্রহী ব্যক্তিদেরকে বাইবেল অধ্যয়নের প্রস্তাব দিন। মণ্ডলীর সভাগুলোতে নিয়মিত আসতে এবং তারা যে সত্যগুলো শিখছেন, সেগুলো অন্যদেরকে জানানোর জন্য তাদেরকে উৎসাহ দিন। বাইবেলের নীতিগুলো তাদের জীবনে কাজে লাগিয়ে তাদেরকে ‘জ্যোতিতে চলিতে’ এবং ‘সত্য আচরণ করিতে’ সাহায্য করুন। (১ যোহন ১:৬, ৭) যিহোবার সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে এবং একতাবদ্ধভাবে তাঁর ইচ্ছা পালন করে যাওয়ার সুযোগের জন্য উপলব্ধি বাড়িয়ে যেতে তাদেরকে সাহায্য করুন।
৯ ‘এক আত্মায় . . . এক প্রাণে সুসমাচারের বিশ্বাসের পক্ষে মল্লযুদ্ধ করিতে’ আনন্দ সহকারে একতাবদ্ধ হওয়া কী অপূর্ব এক সুযোগ! (ফিলি. ১:২৭, ২৮) আসুন আমরা ২৮শে মার্চ স্মরণার্থক সভায় আমাদের মনোরম সাহচর্যের অপেক্ষা করে থাকি এবং যিহোবা ও তাঁর পুত্রকে সবসময় ধন্যবাদ জানাই।—লূক ২২:১৯.