আপনার যা আছে তাতে সন্তুষ্ট থাকুন
১ শাস্ত্র আমাদেরকে পরিবারের বস্তুগত চাহিদাগুলো মেটাতে পরামর্শ দেয় কিন্তু সেটা আমাদের জীবনে প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়। আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো অবশ্যই প্রথমে আসবে। (মথি ৬:৩৩; ১ তীম. ৫:৮) এই ‘বিষম সময়ে’ সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখা এক কঠিন বিষয়। (২ তীম. ৩:১) কী আমাদের তা করতে সাহায্য করবে?
২ বাইবেলের দৃষ্টিভঙ্গিকে মেনে নিন: ঈশ্বরের বাক্য আমাদের সাবধান করে যে, ধনের পিছনে ছোটা আধ্যাত্মিক ধ্বংসের কারণ হতে পারে। (উপ. ৫:১০; মথি ১৩:২২; ১ তীম. ৬:৯, ১০) এই বিষম সময়ে, চাকরি অথবা আর্থিক চিন্তাগুলো নিয়ে খুব বেশি ডুবে থেকে আমাদের আধ্যাত্মিক কাজগুলোকে—সভাগুলো, অধ্যয়ন এবং প্রচারকে আমাদের জীবনে দ্বিতীয় স্থানে সরিয়ে রাখা আমাদের যে-কারও জন্য মারাত্মক হবে। (লূক ২১:৩৪-৩৬) এর বিপরীতে, বাইবেল পরামর্শ দেয়: “গ্রাসাচ্ছাদন পাইলে আমরা তাহাতেই সন্তুষ্ট থাকিব।”—১ তীম. ৬:৭, ৮.
৩ এর মানে এই নয় যে, খ্রীষ্টানদেরকে নিজেদের তৈরি দারিদ্রের মধ্যে জীবনযাপন করতে হবে। কিন্তু এটা আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে, বস্তুগত যে-জিনিসগুলো আমাদের সত্যিই দরকার—অন্ন, বস্ত্র এবং বাসস্থান, আমরা যেখানে থাকি সেখানে এগুলো যথেষ্ট। জীবনের দরকারি জিনিসগুলো যদি আমাদের থাকে, তা হলে সবসময় এক উচ্চ মানের জীবনযাপন করার পিছনে ছোটা আমাদের উচিত নয়। কোন কিছু কেনা অথবা বাড়তি কাজ গ্রহণ করা সম্বন্ধে চিন্তা করার সময় আমাদের নিজেদের জিজ্ঞেস করা দরকার, ‘এটা কি সত্যিই দরকার?’ সেটা করা আমাদেরকে অনুপ্রাণিত এই পরামর্শে মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে: “তোমাদের আচার ব্যবহার ধনাসক্তিবিহীন হউক; তোমাদের যাহা আছে, তাহাতে সন্তুষ্ট থাক।”—ইব্রীয় ১৩:৫.
৪ আমরা যদি যিহোবাতে বিশ্বাস রাখি, তা হলে তিনি আমাদের সাহায্য করবেন। (হিতো. ৩:৫, ৬) যদিও আমাদের দৈনন্দিন চাহিদাগুলো মেটানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয় কিন্তু এই বিষয়গুলোকে আমরা আমাদের জীবনের মুখ্য বিষয় করে তুলি না। আমাদের চাহিদাগুলো অল্প বা বেশি যাই হোক না কেন, তা মেটাতে আমরা যিহোবার ওপর নির্ভর করি। (ফিলি. ৪:১১-১৩) ফলে, অন্যান্য আশীর্বাদগুলোর সঙ্গে আমরা ঈশ্বরীয় সন্তুষ্টি উপভোগ করি।
৫ অন্যদের বিশ্বাসকে অনুকরণ করুন: একজন একক মা যিনি তার মেয়েকে সত্যের পথে মানুষ করে তুলছিলেন, তিনি ধীরে ধীরে তার জীবনকে সাদাসিধে করেছিলেন। যদিও তিনি তার বাড়ির আরাম-আয়েশ উপভোগ করেছিলেন কিন্তু তিনি একটা ছোট্ট বাড়িতে এবং পরে একটা অ্যাপার্টমেন্টে চলে আসেন। এটা তাকে চাকরির জন্য বেশি সময় না দিতে সাহায্য করেছিল, যাতে তিনি পরিচর্যায় বেশি সময় দিতে পারেন। তার মেয়ে যখন বড় হয় ও তার বিয়ে হয়ে যায়, তখন এই মা নির্ধারিত সময়ের আগেই অবসর নেন, এমনকি যদিও এর মানে ছিল তার আয় কমে যাওয়া। আমাদের এই বোন এখন সাত বছর ধরে একজন নিয়মিত অগ্রগামী হিসেবে কাজ করছেন আর তার জীবনে রাজ্যের বিষয়কে প্রথম স্থান দেওয়ার জন্য তিনি যে-বস্তুগত ত্যাগস্বীকার করেছেন সে বিষয়ে তার কোনরকম আপশোস নেই।
৬ একজন প্রাচীন এবং তার স্ত্রী তাদের তিন ছেলেমেয়েকে মানুষ করে তোলার সঙ্গে সঙ্গে অনেক বছর ধরে অগ্রগামীর কাজও করেছিলেন। পরিবারগতভাবে, তারা তাদের আকাঙ্ক্ষাগুলোর চেয়ে তাদের চাহিদাগুলো মেটানোর বিষয়ে সন্তুষ্ট হতে শিখেছিলেন। সেই ভাই মন্তব্য করেন: “আমাদের আরও সাদাসিধে জীবনযাপন করতে হয়েছে। যদিও আমাদের কিছু খারাপ সময় গেছে কিন্তু যিহোবা সবসময় আমাদের চাহিদাগুলোকে জুগিয়েছেন। . . . যখন আমি আমার পরিবারকে রাজ্যের বিষয়কে প্রথম স্থান দিতে দেখি, আমার মনে হয় যে, সবকিছুই ঠিক আছে আর আমি যেন কিছু করতে পেরেছি।” তার স্ত্রী আরও বলেন: “যখন আমি [আমার স্বামীকে] আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখি, তখন আমি ভিতর থেকে এক গভীর সন্তুষ্টি বোধ করি।” বাবামাদের যিহোবাকে পূর্ণ-সময় সেবা করতে দেখে ছেলেমেয়েরাও আনন্দিত হয়।
৭ বস্তুগত জিনিসগুলোর পিছনে না ছুটে যারা এইধরনের ঈশ্বরীয় ভক্তির পথ বেছে নিয়েছেন তাদের জন্য এখন ও ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য বাইবেল অপরিমেয় আশীর্বাদের প্রতিজ্ঞা করে।—১ তীম. ৪:৮.