ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৩ ৮/১ পৃষ্ঠা ৪-৭
  • বিবাহ-বন্ধন কিভাবে দৃঢ় করা যায়

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • বিবাহ-বন্ধন কিভাবে দৃঢ় করা যায়
  • ১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • মোশির নিয়মের ব্যবস্থা
  • বিবাহ-বিচ্ছেদের একমাত্র আইনসঙ্গত কারণ
  • পারিবারিক সমস্যার সূত্রপাত হয়
  • সমস্যা সম্বন্ধে কথা বলুন
  • বিয়ে সম্বন্ধে ঈশ্বরের ব্যবস্থার প্রতি সম্মান দেখান
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৮
  • পাঠকদের থেকে প্রশ্নসকল
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনার বিবাহকে একটি স্থায়ী বন্ধন করে তুলুন
    ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • বিয়ে​—⁠এর উৎস এবং উদ্দেশ্য
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
আরও দেখুন
১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৩ ৮/১ পৃষ্ঠা ৪-৭

বিবাহ-বন্ধন কিভাবে দৃঢ় করা যায়

“যে সে কারণে কি আপন স্ত্রীকে পরিত্যাগ করা বিধেয়?” যে ফরীশীরা মহান শিক্ষক, যীশু খ্রীষ্টকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছিল, তারা জিজ্ঞাসা করেছিল। প্রথম মানব-বিবাহ সম্বন্ধে উল্লেখ করে এবং এই বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট মান স্থাপন করে, তিনি তাদের উত্তর দিয়েছিলেন: “ঈশ্বর যাহার যোগ করিয়া দিয়াছেন, মনুষ্য তাহার বিয়োগ না করুক।”

ফরীশীরা দাবি জানিয়েছিল যে একটি “ত্যাগপত্র” জারি করা প্রচলিত করে মোশি বিবাহবিচ্ছেদ করার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। যীশু তাদের উত্তর দিয়েছিলেন: “তোমাদের অন্তঃকরণ কঠিন বলিয়া মোশি তোমাদিগকে আপন আপন স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিবার অনুমতি দিয়াছিলেন, কিন্তু আদি হইতে এরূপ হয় নাই। আর আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, ব্যভিচার দোষ ব্যতিরেকে যে কেহ আপন স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিয়া অন্যাকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে।”—মথি ১৯:৩-৯.

প্রথমে, বিবাহ একটি স্থায়ী বন্ধন হওয়ার কথা ছিল। এমনকি মৃত্যুও প্রথম বিবাহিত দম্পতিকে আলাদা করতে পারত না, কারণ অনন্তকাল জীবনের আশা নিয়ে সিদ্ধ মানুষ হিসাবে তাদের সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু, তারা পাপ করেছিল। তাদের পাপ বিবাহ-ব্যবস্থারও ক্ষতি করেছিল। মৃত্যুরূপ শত্রুর মাধ্যমে বিবাহিত দম্পতিরা একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে লাগল। মৃত্যুকে ঈশ্বর বিবাহের শেষ হিসাবে দেখেন, যেমন আমরা বাইবেলে পড়ি: “যত দিন স্বামী জীবিত থাকে, তত দিন স্ত্রী আবদ্ধা থাকে, কিন্তু স্বামী নিদ্রাগত হইলে পর সে স্বাধীনা হয়, যাহাকে ইচ্ছা করে, তাহার সহিত বিবাহিতা হইতে পারে, কিন্তু কেবল প্রভুতেই।” (১ করিন্থীয় ৭:৩৯) এই দৃষ্টিভঙ্গি, সতীদাহ প্রথার মত ধর্মীয় মতামত থেকে খুবই আলাদা, যেখানে মৃত্যুর পরের জীবনেও বিবাহ-বন্ধন অটুট থাকে এই বিশ্বাসের জন্য স্বামীর মৃত্যুর সময়ে, স্ত্রীকে নিজেকে পুড়িয়ে মারতে পরিচালিত অথবা বাধ্য করা হয়।

মোশির নিয়মের ব্যবস্থা

মোশির নিয়ম দেওয়ার সময়ে, বৈবাহিক সম্পর্কে এত অবনতি হয়েছিল যে ইস্রায়েলীয়দের নির্দয় মনোভাবের প্রতি লক্ষ্য রেখে যিহোবা বিবাহ-বিচ্ছেদের ব্যবস্থা করেছিলেন। (দ্বিতীয় বিবরণ ২৪:১) যিহোবার উদ্দেশ্য ছিল না যে ইস্রায়েলীয়েরা এই নিয়মের অপব্যবহার করে যে কোন সাধারণ কারণের জন্য তাদের স্ত্রীদের ত্যাগ করে, কারণ তিনি এই আজ্ঞা দিয়েছিলেন যে তাদের প্রতিবাসীদের নিজেদের মতই ভালবাসতে হবে। (লেবীয়পুস্তক ১৯:১৮) এমনকি ত্যাগপত্র প্রস্তুত করতেই তাদের বাধার সম্মুখীন হতে হত কারণ, যদি কোন স্বামী বিবাহ-বিচ্ছেদ চাইতেন, তাহলে ত্যাগপত্র লেখার সময়ে তাকে বিশেষভাবে নিযুক্ত আধিকারিকদের পরামর্শ নিতে হত, যারা চেষ্টা করতেন যাতে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। না, “যে সে কারণে” নিজের স্ত্রীকে ত্যাগ করার অধিকার জারি করার জন্য ঈশ্বর এই নিয়ম সৃষ্টি করেননি।—মথি ১৯:৩.

কিন্তু, শেষ পর্যন্ত ইস্রায়েলীয়েরা এই আইনের প্রকৃত উদ্দেশ্য উপেক্ষা করে এবং এই ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে তাদের খেয়াল-খুশিমত কারণে বিবাহ-বিচ্ছেদ করতে শুরু করেছিল। সা.শ.পূ. পঞ্চম শতক নাগাদ, তারা তাদের যৌবনকালীন স্ত্রীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করত, যে কোন সামান্য কারণে তাদের ত্যাগ করত। (মালাখি ২:১৪-১৬) এই পরিস্থিতির মধ্যে, যীশু ইস্রায়েলীয়দের বিবাহ-বিচ্ছেদের ধরন সম্বন্ধে সমালোচনা করেছিলেন।

বিবাহ-বিচ্ছেদের একমাত্র আইনসঙ্গত কারণ

যীশু অবশ্য, বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য একটিমাত্র যুক্তিসঙ্গত কারণ সম্বন্ধে বলেছিলেন: ব্যভিচার। (মথি ৫:৩১, ৩২; ১৯:৮, ৯) এখানে যে শব্দটিকে “ব্যভিচার” হিসাবে অনুবাদ করা হয়েছে তা শাস্ত্রীয় বিবাহের বাইরে সব ধরনের অবৈধ যৌন আচরণকে অন্তর্ভুক্ত করে, তা সেই আচরণ একই অথবা বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তি অথবা জন্তুজানোয়ারের প্রতি, যাই হোক না কেন।

তবুও, যীশু অবিশ্বাসী সঙ্গীদের ত্যাগ করতে উপদেশ দিচ্ছিলেন না। নির্দোষ ব্যক্তি পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেখার পর স্থির করবে সে বিবাহ-বিচ্ছেদ করতে চায় কিনা। এই কারণের জন্য যে স্ত্রীরা শাস্ত্রীয় ভিত্তিতে বিবাহ-বিচ্ছেদ সম্বন্ধে চিন্তা করছেন, প্রথম স্ত্রীর পাপের বিচার করার সময়ে ঈশ্বরের বাক্য সম্বন্ধেও তাদের ভেবে দেখা উচিৎ। মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও, ঈশ্বর বিশেষত হবাকে বলেছিলেন: “স্বামীর প্রতি তোমার বাসনা থাকিবে; ও সে তোমার উপরে কর্ত্তৃত্ব করিবে।” (আদিপুস্তক ৩:১৬) কার্ল এফ্‌. কাইল এবং ফ্রাঞ্জ ডেলিট্‌শ্‌-এর লেখা কমেন্টারী অন্‌ দ্যা ওল্ড টেস্টামেন্ট এই “বাসনা”কে “প্রায় ব্যধির মত এক ইচ্ছা” হিসাবে বর্ণনা দেয়। অবশ্য, সমস্ত স্ত্রীদের ক্ষেত্রেই এই বাসনা ততটা প্রবল নয়, কিন্তু যে নির্দোষ স্ত্রী বিবাহ-বিচ্ছেদ করার চিন্তা করছেন, তার উচিৎ হবার কাছ থেকে পাওয়া নারীদের মানসিক চাহিদা সম্বন্ধে বিবেচনা করা। কিন্তু, যেহেতু বিবাহের বাইরে যৌন সম্পর্কের জন্য একজন দোষী ব্যক্তি তার নির্দোষ সঙ্গীকে যৌন রোগের দ্বারা আক্রান্ত করতে পারে, এমনকি এইডস্‌-এর দ্বারাও, সেইজন্য যীশুর কথামত কেউ কেউ বিবাহ-বিচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

পারিবারিক সমস্যার সূত্রপাত হয়

লোকেদের নির্দয়তা শুরু হয়েছিল ঈশ্বরের বিরুদ্ধে প্রথম মানব দম্পতির পাপ থেকে। (রোমীয় ৫:১২) পারিবারিক বিবাদের বীজ বপন করা হয়েছিল যখন সেই প্রথম দম্পতি তাদের স্বর্গীয় পিতার বিরুদ্ধে পাপ করেছিল। কিভাবে? সর্প যখন নিষিদ্ধ গাছের ফল খেতে প্রথম স্ত্রী হবাকে প্রলোভন দেখিয়েছিল, তখন সে ঠিক তাই করেছিল। এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়ার পরে, সে সর্পের কথা তার স্বামীকে বলে। (আদিপুস্তক ৩:৬) হ্যাঁ, তার স্বামীর মতামত না নিয়েই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এখান থেকেই বর্তমানে বহু পরিবারের সমস্যা সম্বন্ধে বোঝা যায়—আন্তরিক মনোভাব বিনিময়ের অভাব।

পরে, তাদের পাপের পরিণামের সম্মুখীন হয়ে, বর্তমানে বহু দম্পতি সমস্যায় পড়লে যে পথ বেছে নেয়, আদম এবং হবা দুজনেই সেই একই কৌশল অবলম্বন করেছিল, অর্থাৎ অন্যদের দোষ দেওয়া। প্রথম মানুষ আদম তার কাজের জন্য, তার স্ত্রী এবং যিহোবা, দুজনকেই দোষ দিয়ে বলেছিল: “তুমি আমার সঙ্গিনী করিয়া যে স্ত্রী দিয়াছ, সে আমাকে ঐ বৃক্ষের ফল দিয়াছিল, তাই খাইয়াছি।” সেই স্ত্রীও বলেছিল: “সর্প আমাকে ভুলাইয়াছিল, তাই খাইয়াছি।”—আদিপুস্তক ৩:১২, ১৩.

আদম এবং হবার প্রতি যিহোবার বিচারাজ্ঞা, যে সমস্যা দেখা দেবে তার আরেকটি দিক সম্বন্ধেও দেখিয়েছিল। স্বামীর সঙ্গে তার সম্পর্ক সম্বন্ধে, যিহোবা হবাকে বলেছিলেন: “সে তোমার উপরে কর্ত্তৃত্ব করিবে।” প্রথম প্রবন্ধে উল্লিখিত ইসাওয়ের মত, বহু স্বামীরা, তাদের স্ত্রীদের অনুভূতি সম্বন্ধে কোন বিবেচনা না করে নির্মমভাবে তাদের উপরে কর্তৃত্ব করে। তবুও, বহু স্ত্রীরা তাদের স্বামীর মনোযোগ পাওয়ার বাসনা রাখে। যখন সেই বাসনা পূর্ণ হয় না, তখন স্ত্রীরা মনোযোগ পাওয়ার জন্য দাবি করে এবং স্বার্থপর আচরণ করে। যেহেতু বহু স্বামীরা কর্তৃত্ব করে এবং বহু স্ত্রীরা অপূর্ণ বাসনা পোষণ করে, সুতরাং স্বার্থপরতাও বেড়ে যাচ্ছে এবং শান্তি লোপ পাচ্ছে। “হাউ টু অ্যানালাইজ্‌ টুডেজ্‌ ডিভোর্সেজ্‌” নামে একটি পত্রিকায় শুন্‌সুকে সেরিজাওয়া বলেছিলেন: “‘নিজের মতামত জাহির করার’ অর্থাৎ নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেওয়ার সমস্যার মূলে যে প্রবৃত্তি রয়েছে, তা যদি আমরা উপেক্ষা করি তাহলে আধুনিক বিবাহ-বিচ্ছেদগুলি বিশ্লেষণ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।”

যাইহোক, যিহোবা তাঁর বাক্যের মাধ্যমে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে বাধ্য বিবাহিত দম্পতিরা এই অসিদ্ধ অবস্থাতেও কিছুটা বৈবাহিক সুখ পেতে পারে। ইসাও ঈশ্বরের নির্দেশ মেনে চলেছিলেন এবং এখন তিনি সুখী পারিবারিক জীবন উপভোগ করেন। বাইবেলের নীতি কিভাবে মানুষের বৈবাহিক বন্ধন দৃঢ় করে, আসুন আমরা তা লক্ষ্য করি।

সমস্যা সম্বন্ধে কথা বলুন

বহু ক্ষেত্রে, ভাববিনিময়ের অভাব, অপরকে দোষ দেওয়ার প্রবৃত্তি এবং স্বার্থপর আচরণ, একে অপরের অনুভূতি বুঝতে, স্বামী এবং স্ত্রীয়ের পক্ষে দুষ্কর করে তোলে। “ঘনিষ্ঠ হওয়ার আগে যেহেতু অনুভূতি প্রকাশ করা আবশ্যক, সেইজন্য সম্পূর্ণ বিশ্বাসের প্রয়োজন। আর বিশ্বাস আজকাল খুব বেশি দেখা যায় না,” বিশেষজ্ঞ ক্যারিল এস্‌. আভেরি বলেছেন। একান্ত আন্তরিক অনুভূতি প্রকাশ করলে, ক্রমে ক্রমে এই বিশ্বাস গড়ে ওঠে। এর জন্য প্রয়োজন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আন্তরিক কথাবার্তা।

আন্তরিক ইচ্ছা প্রকাশ করতে উৎসাহ দেওয়ার জন্য হিতোপদেশ একটি দৃষ্টান্ত ব্যবহার করে বলেছে: “মনুষ্যের হৃদয়ের পরামর্শ গভীর জলের ন্যায়; কিন্তু বুদ্ধিমান তাহা তুলিয়া আনিবে।” (হিতোপদেশ ২০:৫) স্বামী-স্ত্রীদের বিচক্ষণ হতে হবে এবং তাদের সঙ্গীকে তাদের আন্তরিক চিন্তাধারা প্রকাশ করতে প্ররোচিত করতে হবে। মনে করুন যে আপনার সঙ্গীর মেজাজ বিগড়ে গেছে। “আমার দিনটাও ভাল যায়নি,” বলার পরিবর্তে, সমবেদনাসহ জিজ্ঞাসা করুন: “তোমার দিনটা কি খুব ভাল যায়নি? কি হয়েছে?” আপনার সঙ্গীর কথা শোনার জন্য সময় এবং ধৈর্যের প্রয়োজন হতে পারে, কিন্তু তাকে উপেক্ষা করে, পরে উত্তপ্ত মনোভাবের সম্মুখীন হওয়ার চাইতে তা সাধারণত আরও আনন্দদায়ক, পরিতৃপ্তিকর হবে এবং অল্প সময় নেবে।

বিশ্বাস অর্জন করার জন্য, দুজনকেই সৎ হতে হবে এবং নিজেদের অনুভূতি এমনভাবে প্রকাশ করতে হবে যে তার সঙ্গী যেন তা বুঝতে পারে। “সত্য” বল, ঈশ্বরের বাক্য উৎসাহ দেয়, “কারণ আমরা পরস্পর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ।” (ইফিষীয় ৪:২৫) সত্য বলার জন্য বিচক্ষণতার প্রয়োজন হয়। ধরে নিন যে একজন স্ত্রী মনে করেন তার কথা শোনা হয় না। কথা বলার আগে, তার এই উপদেশটি বিবেচনা করা উচিৎ: “যে বাক্য সম্বরণ করে, সে জ্ঞানবান; আর যে শীতলাত্মা, সে বুদ্ধিমান।” (হিতোপদেশ ১৭:২৭) “তুমি কখনও আমার কথা শোন না!” বলে স্বামীকে দোষ দেওয়ার চাইতে, নৈরাশ্য এবং হতাশা গড়ে উঠতে না দিয়ে যদি সে শান্তভাবে তার অনুভূতি প্রকাশ করে তাহলে অনেক ভাল হবে। হয়ত এইরকম কিছু বলে, “আমি জানি যে তুমি ব্যস্ত, কিন্তু তোমার সঙ্গে আর একটু সময় কাটাতে পারলে আমি খুব খুশি হব।”

সত্যিই, “মন্ত্রণার অভাবে সঙ্কল্প সকল ব্যর্থ হয়।” (হিতোপদেশ ১৫:২২) আপনার সঙ্গী আপনাকে ভালবাসে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে সে আপনার মনের কথা জানতে পারে। বিচক্ষণতার সাথে আপনার সঙ্গীকে আপনার মনোভাব সম্বন্ধে জানাতে হবে। এইভাবে, খ্রীষ্টীয় বিবাহিত দম্পতি হিসাবে, আপনারা প্রেমসহকারে কিছু পরিবর্তন করতে পারবেন যাতে “শান্তির যোগবন্ধনে আত্মার ঐক্য রক্ষা” করতে পারেন।—ইফিষীয় ৪:২, ৩.

উদাহরণস্বরূপ, কাজুওর কথা বিবেচনা করুন, যিনি তার স্ত্রীর বশবর্তী ছিলেন এবং যার জুয়া খেলার নেশা ছিল। বহু লক্ষ ডলার ঋণের দায়ে তিনি জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন। টাকা শোধ করার জন্য ধার করে, তার ঋণ আরও বেড়ে যেতে থাকে। তারপর তিনি বাইবেল পড়তে শুরু করেন এবং তার সমস্যা সম্বন্ধে তার স্ত্রীকে জানানোর জন্য যথেষ্ট সাহস সংগ্রহ করেন। তার স্ত্রীর দোষারোপ স্বীকার করে নিতেও তিনি প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু, তিনি খুবই আশ্চর্য হয়েছিলেন যখন তার স্ত্রী, যিনি আরও বেশি-দিন ধরে বাইবেল পড়ছিলেন, শান্তভাবে উত্তর দিয়েছিলেন: “এস, কিভাবে এই ঋণ শোধ করা যায় সেই সম্বন্ধে চিন্তা করা যাক।”

তার পরের দিন থেকে, যাদের কাছে তিনি টাকা ধার করেছিলেন তাদের টাকা তারা ফেরত দিতে শুরু করেন, এমনকি তাদের বাড়িও বিক্রি করে দেন। প্রায় এক বছর লাগে ধার শোধ করতে। তার স্ত্রী, কিমিয়ের কিভাবে এই পরিবর্তন হয়েছিল? তিনি বলেছেন: “ফিলিপীয় ৪ অধ্যায়, ৬ এবং ৭ পদের কথাগুলি বাস্তবিকই সত্যি। ‘কোন বিষয়ে ভাবিত হইও না, কিন্তু সর্ব্ববিষয়ে প্রার্থনা ও বিনতি দ্বারা ধন্যবাদ সহকারে তোমাদের যাচ্ঞা সকল ঈশ্বরকে জ্ঞাত কর। তাহাতে সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি, তাহা তোমাদের হৃদয়ে ও মন খ্রীষ্ট যীশুতে রক্ষা করিবে।’” তিনি আরও বলেছিলেন: “দুঃখকষ্ট সত্ত্বেও আমি কত খুশি ছিলাম, তাই দেখে আশ্চর্য হয়ে আমার একজন বান্ধবী আমার সাথে বাইবেল অধ্যয়ন করতে শুরু করেছিলেন।” তারপরে, কাজুও এবং তার স্ত্রী বাপ্তিস্ম নিয়েছেন এবং এখন তারা সুখী পারিবারিক জীবন উপভোগ করেন।

যে স্বামী-স্ত্রীদের উপরের অভিজ্ঞতাগুলি হয়েছিল, সত্য বলার মাধ্যমে একে অপরকে বিশ্বাস করা ছাড়াও তারা আরও কিছু করেছিলেন যা বৈবাহিক সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে। বিবাহ-ব্যবস্থার উদ্যোক্তা, যিহোবা ঈশ্বরের সাথে তারা যোগাযোগ রেখেছিলেন। বিবাহিত দম্পতিরা যে বিভিন্ন চাপ এবং সমস্যার সম্মুখীন হন, তা থাকা সত্ত্বেও, যদি তারা তাঁর নীতিগুলি প্রয়োগ করার সম্পূর্ণ চেষ্টা করে বাকি সব কিছু তাঁর হাতে ছেড়ে দেন, তাহলে তিনি সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি তা দিয়ে তাদের আশীর্বাদ করবেন। একসঙ্গে প্রার্থনা করা বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঈশ্বরের কাছে নিজেদের ‘মনের কথা খুলে বলতে’ স্বামীর উচিৎ নেতৃত্ব নেওয়া, তিনি এবং তার স্ত্রী যে কোন সমস্যার সম্মুখীন হন না কেন, তার উচিৎ ঈশ্বরের নির্দেশ এবং উপদেশ পাওয়ার চেষ্টা করা। (গীতসংহিতা ৬২:৮) এই ধরনের প্রার্থনা যিহোবা ঈশ্বর অবশ্যই শুনবেন।

হ্যাঁ, বিবাহ-বন্ধন দৃঢ় করে তোলা সবে। এমনকি এখনই, একটি অশান্ত সমাজে আমাদের সমস্ত অসিদ্ধতা নিয়েও, বিবাহিত দম্পতিরা তাদের সম্পর্কের মধ্যে পরিতৃপ্তি পেতে পারেন। ওয়াচটাওয়ার বাইবেল অ্যান্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটি দ্বারা প্রকাশিত মেকিং ইয়োর ফ্যামিলি লাইফ হ্যাপি বইটিতে আপনি আরও বেশি ব্যবহারিক উপদেশ এবং ঐশিক নির্দেশনা পাবেন। উপরন্তু, যে দম্পতিরা একাগ্রভাবে বাইবেলের নীতি প্রয়োগ করার চেষ্টা করেন, তারা ঈশ্বর যে নতুন জগৎ শীঘ্রই নিয়ে আসবেন, তাতে প্রেমে একতাবদ্ধ হওয়ার আশা রাখতে পারেন। (w93 8/15)

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার