ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৪ ৯/১ পৃষ্ঠা ১৩-১৮
  • যিহোবাতে আনন্দ কর!

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যিহোবাতে আনন্দ কর!
  • ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • আনন্দ কর​—⁠কেন এবং কিভাবে?
  • আনন্দ করার বহু কারণ
  • প্রচার​—⁠বোঝা অথবা আনন্দ?
  • আসুন আমরা একত্রে আনন্দ করি!
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • রাজ্যের প্রত্যাশায় আনন্দ করুন!
    ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবার আনন্দ আমাদের সুরক্ষিত আশ্রয়
    ১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবার সেবায় আপনার আনন্দ বজায় রাখুন
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৪ ৯/১ পৃষ্ঠা ১৩-১৮

যিহোবাতে আনন্দ কর!

“তোমরা প্রভুতে সর্ব্বদা আনন্দ কর; পুনরায় বলিব, আনন্দ কর।”​—⁠ফিলিপীয় ৪:⁠৪.

১. পৌল যখন বলেছিলেন যে খ্রীষ্টানদের সর্বদা আনন্দ করা উচিত, তখন তিনি কী বুঝাতে চেয়েছিলেন, সেই বিষয়ে আমাদের চিন্তা করা উচিত কেন?

বর্তমানে আনন্দ করার কারণ হয়ত খুব কম ও বিরল হতে পারে। ধূলার তৈরি মানুষ, এমনকি প্রকৃত খ্রীষ্টানেরাও, এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় যা দুঃখ দিতে পারে​—⁠বেকারত্ব, অসুস্থতা, প্রিয়জনদের মৃত্যু, বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের লোকেদের মধ্যে সমস্যা, অথবা পরিবারের অবিশ্বাসী সদস্য বা পূর্বেকার বন্ধুদের থেকে বিরোধিতা। তাহলে পৌল যে উৎসাহ দিয়েছেন, “সর্ব্বদা আনন্দ কর,” তা আমাদের কিভাবে বুঝতে হবে? আমাদের যে অবাঞ্ছনীয় ও কষ্টকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতেই হয়, তার পরিপ্রেক্ষিতে কি আনন্দ করা সম্ভব? এই কথাগুলির প্রসঙ্গ বিবেচনা করলে বিষয়টি বুঝতে পারা যাবে।

আনন্দ কর​—⁠কেন এবং কিভাবে?

২, ৩. আনন্দের গুরুত্ব কী, যেমন যীশু এবং প্রাচীন ইস্রায়েলীয়দের ক্ষেত্রে চিত্রিত হয়েছে?

২ “তোমরা প্রভুতে সর্ব্বদা আনন্দ কর; পুনরায় বলিব, আনন্দ কর।” এটি হয়ত আমাদের ২৪ শতাব্দী আগে ইস্রায়েলীয়দের উদ্দেশ্যে বলা কিছু কথা মনে করিয়ে দিতে পারে: “সদাপ্রভুতে যে আনন্দ, তাহাই তোমাদের শক্তি।” অথবা মোফাট-এর অনুবাদ অনুযায়ী: “অনন্তকালের উদ্দেশ্যে আনন্দ করা তোমাদের শক্তি।” (নহিমিয় ৮:১০) আনন্দ শক্তি দেয় এবং একটি দুর্গের মত কাজ করে, যেখানে সান্ত্বনা ও সুরক্ষা পাওয়ার জন্য একজন আশ্রয় দিতে পারে। এমনকি আনন্দ, সিদ্ধ পুরুষ যীশুকেও সহ্য করতে সাহায্য করেছিল। “তিনিই আপনার সম্মুখস্থ আনন্দের নিমিত্ত ক্রুশ সহ্য করিলেন, অপমান তুচ্ছ করিলেন, এবং ঈশ্বরের সিংহাসনের দক্ষিণে উপবিষ্ট হইয়াছেন।” (ইব্রীয় ১২:⁠২) স্পষ্টতই, সমস্যার সম্মুখীন হয়েও, আনন্দ বজায় রাখা হল পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৩ প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করবার আগে, ইস্রায়েলীয়দের আদেশ দেওয়া হয়েছিল: “তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে ও তোমার পরিবারকে যে যে মঙ্গল দান করিয়াছেন, সেই সকলেতে তুমি ও লেবীয় ও তোমার মধ্যবর্ত্তী বিদেশী, তোমরা সকলে আনন্দ করিবে।” আনন্দের সাথে যিহোবার পরিচর্যা করতে না পারার ফল মারাত্মক হতে পারে। “এই সমস্ত অভিশাপ তোমার উপরে আসিবে, তোমার অনুধাবন করিয়া তোমার বিনাশ পর্য্যন্ত তোমাকে আশ্রয় করিবে; . . . যেহেতুক সর্ব্বপ্রকার সম্পত্তির বাহুল্যপ্রযুক্ত তুমি আনন্দপূর্ব্বক প্রফুল্লচিত্তে আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর দাসত্ব করিতে না।”—দ্বিতীয় বিবরণ ২৬:১১; ২৮:৪৫-৪৭.

৪. আমরা কেন আনন্দ করতে ব্যর্থ হতে পারি?

৪ বর্তমানে অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশকে এবং তাদের সঙ্গী “অপর মেষকে” আনন্দ বজায় রাখতেই হবে! (যোহন ১০:১৬) যিহোবা আমাদের প্রতি যে সমস্ত ভাল কাজ করেছেন তার জন্য আনন্দ করার গুরুত্বের উপরে জোর দিয়ে পৌল, তার উপদেশ পুনরাবৃত্তি করেছিলেন, “পুনরায় বলিব।” আমরা কি তাই করি? অথবা আমরা দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় এত জড়িয়ে পড়ি যে কখনও কখনও আনন্দ করার কারণগুলি সম্বন্ধে ভুলে যাই? আমাদের সামনে কি সমস্যার এত বড় পাহাড় দেখা দেয় যে আমরা রাজ্য ও তার উপকারগুলি দেখতে পাই না? অন্যান্য বিষয়কে​—⁠ঈশ্বরের নিয়ম লঙ্ঘন করা, ঐশ্বরিক নীতি উপেক্ষা করা, বা খ্রীষ্টীয় দায়িত্ব অবহেলা করাকে​—⁠কি আমরা আমাদের আনন্দ কেড়ে নিতে দিই?

৫. একজন অযৌক্তিক ব্যক্তির পক্ষে আনন্দ করা কেন কঠিন হতে পারে?

৫ “তোমাদের যুক্তিবাদিতা মনুষ্যমাত্রের বিদিত হউক। প্রভু নিকটবর্তী।” (ফিলিপীয় ৪:৫ NW.) একজন অযৌক্তিক ব্যক্তির মধ্যে সামঞ্জস্যের অভাব থাকে। সে হয়ত তার স্বাস্থ্যের উপযুক্ত যত্ন নেয় না, তার শরীরকে অযথা চাপ ও উদ্বেগের মধ্যে পড়তে দেয়। হয়ত সে তার ক্ষমতার সীমাকে গ্রহণ করে নিতে এবং সেই অনুযায়ী চলতে শেখেনি। সে হয়ত অনেক বড় উদ্দেশ্য স্থাপন করে এবং তারপরে যে কোন উপায়েই হোক না কেন, সেইগুলিকে অর্জন করতে চেষ্টা করে। অথবা তার সীমিত ক্ষমতাকে অজুহাত হিসাবে দেখিয়ে সে কাজ কমিয়ে দেয় বা ঝিমিয়ে পড়ে। সামঞ্জস্য ও যুক্তিবাদিতার অভাবের জন্য, আনন্দ বজায় রাখা তার পক্ষে কষ্টকর হয়।

৬. (ক) আমাদের মধ্যে সহখ্রীষ্টানদের কী দেখা উচিত এবং একমাত্র কখন তা সম্ভব হতে পারে? (খ) দ্বিতীয় করিন্থীয় ১:২৪ এবং রোমীয় ১৪:৪ পদে পৌলের কথা কিভাবে আমাদের যুক্তিবাদী হতে সাহায্য করতে পারে?

৬ বিরোধীরা আমাদের গোঁড়া হিসাবে দেখলেও, সহখ্রীষ্টানদের সবসময়ে আমাদের যুক্তিবাদিতা উপলব্ধি করা উচিত। আর তারা তা করবে যদি আমরা সামঞ্জস্য রাখি এবং নিজেদের অথবা অন্যদের কাছ থেকে সিদ্ধতা আশা না করি। এছাড়াও, ঈশ্বরের বাক্য আমাদের কাছে যা চায়, তার থেকে বেশি কোন বোঝা অন্যদের উপরে চাপানো আমাদের পক্ষে উচিত নয়। প্রেরিত পৌল বলেছিলেন: “আমরা যে তোমাদের বিশ্বাসের উপর প্রভুত্ব করি, এমন নয়, বরং তোমাদের আনন্দের সহকারী হই।” (২ করিন্থীয় ১:২৪) একজন প্রাক্তন ফরীশী হিসাবে, পৌল ভালই জানতেন যে কর্তৃপক্ষেরা যদি কঠোর নিয়ম স্থাপন করেন তাহলে তা আনন্দ লাভ করার পথে বাধা সৃষ্টি করে, কিন্তু সহকর্মীদের সাহায্যকারী উপদেশ আনন্দ বৃদ্ধি করে। ‘প্রভু যে নিকটে’ এই জ্ঞান একজন যুক্তিবাদী ব্যক্তিকে মনে করিয়ে দেবে যে ‘অপরের ভৃত্যের বিচার করা উচিত নয়। নিজ প্রভুরই নিকটে হয় সে স্থির থাকে, নয় পতিত হয়।’​—⁠রোমীয় ১৪:⁠৪.

৭, ৮. খ্রীষ্টানেরা কেন সমস্যা আশা করতে পারে, কিন্তু তবুও, কিভাবে তারা আনন্দ বজায় রাখতে পারে?

৭ “কোন বিষয়ে ভাবিত হইও না, কিন্তু সর্ব্ববিষয়ে প্রার্থনা ও বিনতি দ্বারা ধন্যবাদ সহকারে তোমাদের যাচ্ঞা সকল ঈশ্বরকে জ্ঞাত কর।” (ফিলিপীয় ৪:⁠৬) পৌল যে “বিষম সময়” সম্বন্ধে লিখেছিলেন, এখন আমরা তা অভিজ্ঞতা করছি। (২ তীমথিয় ৩:​১-৫) তাই খ্রীষ্টানরা সমস্যা আশা করতে পারে। পৌল যে বলেছিলেন “সর্বদা . . . আনন্দ কর” তার অর্থ নয় যে একজন বিশ্বস্ত খ্রীষ্টান কখনও কখনও হতাশ বা নিরুৎসাহ হতে পারে না। পৌলের নিজের ক্ষেত্রে, তিনি বাস্তবতাকে স্বীকার করে বলেছিলেন: “আমরা সর্ব্বপ্রকারে ক্লিষ্ট হইতেছি, কিন্তু সঙ্কটাপন্ন হই না; হতবুদ্ধি হইতেছি, কিন্তু নিরাশ হই না; তাড়িত হইতেছি, কিন্তু পরিত্যক্ত হই না; অধঃক্ষিপ্ত হইতেছি, কিন্তু বিনষ্ট হই না।” (২ করিন্থীয় ৪:৮, ৯) কিন্তু, একজন খ্রীষ্টানের আনন্দ, সাময়িক উদ্বেগ বা দুঃখকে কমিয়ে ও অবশেষে ভুলিয়ে দেয়। সেই আনন্দ করার জন্য যে বহু কারণ আছে তা কখনও ভুলতে দেয় না।

৮ কিন্তু যখন সমস্যা দেখা দেয়, তার ধরণ যাই হোক না কেন, একজন খ্রীষ্টান যার মনে আনন্দ আছে, সে প্রার্থনার মাধ্যমে নম্রভাবে যিহোবার সাহায্য চায়। প্রবল উদ্বেগের সম্মুখে সে হাল ছেড়ে দেয় না। সমস্যার সমাধান করার জন্য সে নিজে যা কিছু করতে পারে তা করার পরে, সে এই আমন্ত্রণ অনুযায়ী যিহোবার হাতে বিষয়টি ছেড়ে দেয়: “তুমি সদাপ্রভুতে আপনার ভার অর্পণ কর; তিনিই তোমাকে ধরিয়া রাখিবেন।” ইতিমধ্যে, যিহোবার আশীর্বাদগুলির জন্য সেই খ্রীষ্টান তাঁকে ধন্যবাদ দিয়ে যেতে থাকে।—গীতসংহিতা ৫৫:২২; মথি ৬:২৫-৩৪ পদও দেখুন।

৯. সত্যের জ্ঞান কিভাবে মানসিক শান্তি নিয়ে আসতে পারে আর এইজন্য একজন খ্রীষ্টানের উপরে কোন্‌ ভাল প্রভাব পড়তে পারে?

৯ “তাহাতে সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি তাহা তোমাদের হৃদয় ও মন খ্রীষ্ট যীশুতে রক্ষা করিবে।” (ফিলিপীয় ৪:⁠৭) বাইবেলের সত্য সম্বন্ধে জ্ঞান মিথ্যা থেকে একজন খ্রীষ্টানের মনকে মুক্ত করে এবং তাকে স্বাস্থ্যকর চিন্তাধারার পন্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। (২ তীমথিয় ১:১৩) যে ধরনের ভুল অথবা মূর্খ ব্যবহার অন্যদের সঙ্গে তার শান্তিপূর্ণ সম্পর্ককে নষ্ট করতে পারে, তার থেকে দূরে থাকতে সে তাই সাহায্য পায়। অন্যায় ও মন্দতার দ্বারা হতাশ না হয়ে, সে যিহোবার প্রতি বিশ্বাস রাখে রাজ্যের মাধ্যমে মানবজাতির সমস্যাগুলির সমাধান করার জন্য। এইধরনের মানসিক শান্তি তার হৃদয়কে রক্ষা করে, তার উদ্দেশ্যকে সরল রাখে এবং ধার্মিকতার পথে তার চিন্তাধারাকে পরিচালিত করে। সৎ উদ্দেশ্য এবং সঠিক চিন্তাধারা, এই অবিন্যস্ত জগৎ বহু সমস্যা ও চাপ নিয়ে আসা সত্ত্বেও যথাক্রমে তাকে আনন্দ করার জন্য অজস্র কারণ দেয়।

১০. একমাত্র কোন্‌ বিষয়ে বলা বা চিন্তা করার মাধ্যমে প্রকৃত আনন্দ পাওয়া যেতে পারে?

১০ “অবশেষে, হে ভ্রাতৃগণ, যাহা যাহা সত্য, যাহা যাহা আদরণীয়, যাহা যাহা ন্যায্য, যাহা যাহা বিশুদ্ধ, যাহা যাহা প্রীতিজনক, যাহা যাহা সুখ্যাতিযুক্ত, যে কোন সদ্‌গুণ ও যে কোন কীর্ত্তি হউক, সেই সকল আলোচনা কর।” (ফিলিপীয় ৪:⁠৮) মন্দ বিষয় সম্বন্ধে বলা বা চিন্তা করায় একজন খ্রীষ্টান কোন আনন্দ পায় না। এইজন্য জগতের অধিকাংশ আমোদপ্রমোদই বাদ পড়ে যায়। কেউই খ্রীষ্টীয় আনন্দ বজায় রাখতে পারবে না, যদি সে মিথ্যা, মূর্খ ঠাট্টা এবং অধার্মিক, অনৈতিক, সুনীতি ছাড়া, ঘৃণার্হ আর জঘন্য বিষয়গুলি দিয়ে তার মন ও হৃদয় ভরিয়ে তোলে। স্পষ্টভাবে বললে, নোংরা বিষয় দিয়ে নিজেদের মন ও হৃদয় ভরে তুলে কেউ আনন্দ পেতে পারে না। শয়তানের দূষিত জগতের মধ্যে থেকেও, আলোচনা ও চিন্তা করার জন্য যে বহু ভাল বিষয় খ্রীষ্টানদের আছে তা জানা কত উৎসাহজনক!

আনন্দ করার বহু কারণ

১১. (ক) কোন্‌ বিষয়টিকে কখনও সহজভাবে নেওয়া উচিত নয় এবং কেন উচিত নয়? (খ) একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উপস্থিতি, সেই সম্মেলনের একজন সদস্য ও তার স্ত্রীয়ের উপরে কী প্রভাব নিয়ে এসেছিল?

১১ আনন্দ করার কারণ সম্বন্ধে বলার সময়ে, আমা- দের আন্তর্জাতিক ভ্রাতৃত্বের কথা ভুলে যাওয়া উচিত নয়। (১ পিতর ২:১৭) জগতের জাতীয় এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়গুলির মধ্যে প্রবল বিদ্বেষ থাকলেও, ঈশ্বরের লোকেরা প্রেমের দ্বারা পরস্পরের মধ্যে নিকট সম্পর্ক রাখে। বিশেষত আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলিতে তাদের একতা প্রকাশ পায়। কিয়েভ, ইউক্রেনে ১৯৯৩ সালে যে সম্মেলনটি রাখা হয়েছিল, সেই সম্বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের একজন সদস্য বলেছিলেন: “আনন্দাশ্রু, খুশিতে-ভরা মুখ, আন্তরিকভাবে আলিঙ্গন করা এবং মাঠের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত, রঙবেরঙের ছাতা এবং রুমাল নেড়ে অভিবাদন জানানো, সবকিছুই ঐশিক একতার পরিচয় দেয়। বিশ্বব্যাপী ভ্রাতৃত্বের ক্ষেত্রে যিহোবা অলৌকিকভাবে যা সম্পাদন করেছেন তার জন্য আমাদের হৃদয় গর্বে ভরে ওঠে। আমি এবং আমার স্ত্রী খুবই প্রভাবিত হয়েছি এবং আমাদের বিশ্বাসকে নতুন অর্থ দিয়েছিল।”

১২. আমাদের চোখের সামনে কিভাবে যিশাইয় ৬০:২২ পদ পরিপূর্ণ হচ্ছে?

১২ নিজেদের চোখের সামনে বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী পরিপূর্ণ হতে দেখা খ্রীষ্টানদের বিশ্বাস আরও কত বেশি গড়ে তোলে! উদাহরণস্বরূপ, যিশাইয় ৬০:২২ পদের কথাগুলি বিবেচনা করুন: “ছোট, সে সহস্র হইয়া উঠিবে, যে ক্ষুদ্র, সে বলবান্‌ জাতি হইয়া উঠিবে; আমি সদাপ্রভু যথাকালে ইহা সম্পন্ন করিতে সত্বর হইব।” ১৯১৪ সালে রাজ্যের জন্ম হওয়ার সময়ে, মাত্র ৫,১০০ জন​—⁠যে ছোট​—⁠সক্রিয়ভাবে প্রচার কাজ করছিল। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে, গড়ে প্রত্যেক সপ্তাহে বিশ্বব্যাপী ভাতৃত্বের সংখ্যায় ৫,৬২৮ জন নতুন বাপ্তিস্মিত ব্যক্তি যোগ দিয়েছে! উনিশশো তিরানব্বই সালে, ৪,৭০৯,৮৮৯ জন সক্রিয় পরিচারকের শিখরে পৌঁছানো গেছে। কল্পনা করুন! এর অর্থ ১৯১৪ সালের “যে ছোট” আক্ষরিক অর্থে “সে সহস্রে” পৌঁছেছে!

১৩. (ক) ১৯১৪ সাল থেকে কী ঘটছে? (খ) দ্বিতীয় করিন্থীয় ৯:৭ পদে পৌলের কথাগুলির নীতি কিভাবে যিহোবার সাক্ষীরা পালন করে?

১৩ মশীহ রাজা, ১৯১৪ সাল থেকে তাঁর শত্রুদের মাঝে কর্তৃত্ব করতে শুরু করেছেন। ইচ্ছুক মানব অনুগামীরা সময়, শক্তি ও অর্থ ব্যয় করে জগদ্ব্যাপী প্রচার কাজ এবং আন্তর্জাতিক নির্মাণ-কাজের দ্বারা তাঁর রাজত্বকে সমর্থন করেছে। (গীতসংহিতা ১১০:​২, ৩) যিহোবার সাক্ষীরা আনন্দিত যে এই সব কাজের সমাপ্তির জন্য আর্থিক দান দেওয়া হচ্ছে, যদিও তাদের সভাগুলিতে অর্থের কথা খুব কমই উল্লেখ করা হয়।a (তুলনা করুন ১ বংশাবলি ২৯:⁠৯.) দান করবার জন্য সত্য খ্রীষ্টানদের জোর করতে হয় না; তাদের সাধ্যমত তাদের রাজাকে সমর্থন করতে পারাকে তারা মহান সুযোগ হিসাবে দেখে, প্রত্যেকে “আপন আপন হৃদয়ে যেরূপ সঙ্কল্প করিয়াছে, তদনুসারে দান করুক, মনোদঃখপূর্বক কিম্বা আবশ্যক বলিয়া না দিউক।”​—⁠২ করিন্থীয় ৯:⁠৭.

১৪. ১৯১৯ সাল থেকে ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে কোন্‌ পরিস্থিতি দেখতে পাওয়া গেছে, আর এইজন্য তারা আনন্দ করবার কোন্‌ কারণ পেয়েছে?

১৪ ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে সত্য উপাসনা আবার গড়ে তুলবার পূর্বঘোষিত উদ্দেশ্য পূর্ণ হওয়ার সাথে, একটি আধ্যাত্মিক পরমদেশ গড়ে উঠেছে। আর ১৯১৯ সাল থেকে তার সীমানা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। (গীতসংহিতা ১৪:৭; যিশাইয় ৫২:​৯, ১০) এর পরিমাণ? সত্য খ্রীষ্টানেরা “আমোদ ও আনন্দ লাভ করে। (যিশাইয় ৫১:১১) এইজন্য যে সুফল পাওয়া গেছে তা প্রমাণ করে যে অসিদ্ধ মানুষের দ্বারা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা কী সম্পাদন করতে পারে। সমস্ত কৃতিত্ব এবং সম্মান যিহোবার প্রাপ্য, কিন্তু ঈশ্বরের সহকর্মী হওয়ার থেকে মহান সুযোগ আর কী হতে পারে? (১ করিন্থীয় ৩:⁠৯) যিহোবা এতই শক্তিশালী যে প্রয়োজন হলে তিনি পাথরকে দিয়ে সত্যের বার্তা ঘোষণা করাতে পারেন। কিন্তু এই উপায় ব্যবহার না করা তিনি উপযুক্ত মনে করেন, বরং তাঁর ইচ্ছা পালন করার জন্য তিনি ইচ্ছুক ধূলার তৈরি ব্যক্তিদের প্রেরণা দেন।​—⁠লূক ১৯:৪০.

১৫. (ক) আধুনিক কোন্‌ ঘটনাবলী আমরা আগ্রহের সাথে লক্ষ্য করি? (খ) কোন্‌ ঘটনার জন্য আমরা আনন্দের সাথে অপেক্ষা করছি?

১৫ যিহোবার সেবকেরা শ্রদ্ধার সাথে বাইবেলের উল্লেখযোগ্য ভবিষ্যদ্বাণীগুলি সাথে জগতের ঘটনাবলীর সম্বন্ধে লক্ষ্য করে। জাতিগুলি​—⁠বৃথা​—⁠স্থায়ী শান্তি আনবার চেষ্টা করছে। জগতে যেখানে সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সেখানে রাষ্ট্রসংঘের সাহায্য নেওয়ার জন্য তারা বাধ্য হচ্ছে। (প্রকাশিত বাক্য ১৩:​১৫-১৭) ইতিমধ্যে, ঈশ্বরের লোকেরা প্রবল আগ্রহের সাথে সবচেয়ে আনন্দজনক একটি ঘটনার অপেক্ষায় রয়েছে, যে ঘটনাটির সময় ক্রমাগত এগিয়ে আসছে। “আইস, আমরা আনন্দ ও উল্লাস করি, এবং তাঁহাকে গৌরব প্রদান করি, কারণ মেষশাবকের বিবাহ উপস্থিত হইল, এবং তাঁহার ভার্য্যা আপনাকে প্রস্তুত করিল।”—প্রকাশিত বাক্য ১৯:৭.

প্রচার​—⁠বোঝা অথবা আনন্দ?

১৬. একজন খ্রীষ্টান যা শিখেছে তা পালন করতে যদি সে ব্যর্থ হয়, তাহলে কিভাবে সে আনন্দ হারাতে পারে, তা চিত্রিত করুন?

১৬ “তোমরা আমার কাছে যাহা যাহা শিখিয়াছ, গ্রহণ করিয়াছ, শুনিয়াছ ও দেখিয়াছ, সেই সকল কর; তাহাতে শান্তির ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকিবেন।” (ফিলিপীয় ৪:⁠৯) খ্রীষ্টানেরা যা শিখেছে তা পালন করার মাধ্যমে ঈশ্বরের আশীর্বাদ পেতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়গুলি তারা শিখেছে তার মধ্যে একটি হল অন্যদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার প্রয়োজন রয়েছে। বাস্তবিকই, কে মনে শান্তি অথবা আনন্দ পেতে পারে যদি সে সহৃদয় ব্যক্তিদের সঠিক তথ্য না জানায়, যাদের জীবন সেই তথ্য জানবার উপরে নির্ভর করছে?​—⁠যিহিষ্কেল ৩:​১৭-২১; ১ করিন্থীয় ৯:১৬; ১ তীমথিয় ৪:১৬.

১৭. আমাদের প্রচার কাজ কেন সর্বদা আনন্দের উৎস হওয়া উচিত?

১৭ মেষতুল্য ব্যক্তিরা যে যিহোবার সম্বন্ধে জানবার জন্য ইচ্ছুক তা জানতে পারা কত আনন্দের বিষয়! বাস্তবিকই, যারা সঠিক উদ্দেশ্য নিয়ে সেবা করে তারা রাজ্যের পরিচর্যা সর্বদা আনন্দের উৎস হিসাবে দেখবে। কারণ যিহোবার সাক্ষী হওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য হল তাঁর নামের প্রশংসা করা এবং সার্বভৌম শাসক হিসাবে তাঁকে সমর্থন করা। (১ বংশাবলি ১৬:৩১) যে ব্যক্তি এই বিষয়টিকে উপলব্ধি করবে, তার নিয়ে আসা সুসমাচার যদি লোকে অজ্ঞের মত প্রত্যাখ্যান করে, তাহলেও সে আনন্দ করবে। সে জানে যে একদিন অবিশ্বাসীদের কাছে প্রচার করা বন্ধ হবে; কিন্তু যিহোবার নামের প্রশংসা চিরকাল করা হবে।

১৮. যিহোবার ইচ্ছা পালন করতে কী একজন খ্রীষ্টানকে প্রেরণা দেয়?

১৮ যারা সত্য ধর্ম পালন করে, সেই ধর্ম তাদের যিহোবা যা চান তাই করতে প্রেরণা দেয়, তাদের করতেই হবে সেই জন্য নয়, কারণ তারা করতে চায়। (গীতসংহিতা ৪০:৮; যোহন ৪:৩৪) অনেকের এই বিষয়টি বুঝতে অসুবিধা হয়। একজন মহিলা একবার এক সাক্ষী, যে তার কাছে এসেছিল তাকে বলেছিলেন: “তোমাদের প্রশংসা করতেই হবে। তোমাদের মত আমি কখনও আমার ধর্ম সম্বন্ধে ঘরে ঘরে প্রচার করতে যেতে পারব না।” সাক্ষীটি হেসে উত্তর দিয়েছিল: “আমি বুঝতে পারছি আপনার কী মনে হচ্ছে। যিহোবার সাক্ষী হওয়ার আগে, কেউ আমাকে অন্যদের কাছে গিয়ে ধর্ম সম্বন্ধে কথা বলতে বাধ্য করতে পারত না। কিন্তু এখন আমি তা করতে চাই।” মহিলাটি কিছুক্ষণ ভেবে বলেছিলেন: “স্পষ্টতই আপনার ধর্মে এমন কিছু আছে যা আমার ধর্মে নেই। হয়ত আমার খুঁজে দেখা দরকার।”

১৯. সবচেয়ে বেশি আনন্দ করবার জন্য এখনই কেন উপযুক্ত সময়

১৯ আমাদের কিংডম হলে স্পষ্টভাবে ১৯৯৪ সালের যে বাৎসরিক শাস্ত্রপদ লেখা থাকে, তা আমাদের নিয়মিত মনে করিয়ে দেয়: তুমি সমস্ত চিত্তে যিহোবাতে বিশ্বাস কর।” (হিতোপদেশ ৩:​৫, NW.) যিহোবা, আমাদের দুর্গ, আমাদের আশ্রয়ের প্রতি আস্থা রাখার তুলনায় আনন্দ করার জন্য আরও বড় কিছু কারণ থাকতে পারে কি? গীত ৬৪:১০ পদ ব্যাখ্যা করে: “ধার্ম্মিক লোক সদাপ্রভুতে আনন্দ করিবে ও তাঁহার শরণাগত থাকিবে।” সঙ্কোচ করা অথবা হাল ছেড়ে দেওয়ার সময় এটি নয়। হেবলের দিন থেকে যিহোবার সেবকেরা যা দেখবার আশা করে রয়েছে, প্রত্যেকটি মাস যাওয়ার সাথে সাথে আমরা সেই দিনের আরও কাছে এসে পড়ছি। এখনই সম্পূর্ণ হৃদয়ে যিহোবার প্রতি বিশ্বাস করার সময়, কারণ আমরা জানি যে আনন্দ করবার জন্য আগে কখনও এতগুলি কারণ আমাদের ছিল না!

[পাদটীকাগুলো]

a সম্মেলনে এবং মণ্ডলীতে মাসে একবার, কত দান পাওয়া হয়েছে এবং কত খরচ হয়েছে সেই সম্বন্ধে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়। এইধরনের দান কিভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, কখনও কখনও সেই সম্বন্ধে চিঠি পাঠানো হয়। এইভাবে সকলকে যিহোবার সাক্ষীদের বিশ্বব্যাপী কাজের আর্থিক অবস্থা সম্বন্ধে জানিয়ে দেওয়া হয়।

আপনি কিভাবে উত্তর দেবেন?

▫ নহিমিয় ৮:১০ পদ অনুযায়ী, আমাদের কেন আনন্দ করা উচিত?

▫ দ্বিতীয় বিবরণ ২৬:১১ এবং ২৮:​৪৫-৪৭ পদ কিভাবে আনন্দ করার গুরুত্ব দেখায়?

▫ ফিলিপীয় ৪:​৪-৯ পদ সর্বদা আনন্দ করতে আমাদের সাহায্য করে?

▫ ১৯১৪ সালের বৎসরিক শাস্ত্রপাঠ আনন্দ করবার জন্য কী কারণ আমাদের দেয়?

[১৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

আন্তর্জাতিক ভাতৃত্বের অংশ হয়ে, রাশিয়ান এবং জার্মান সাক্ষীরা আনন্দিত

[১৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

অন্যদের সত্য জানানো আনন্দের কারণ হতে পারে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার