ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৪ ১২/১ পৃষ্ঠা ২-৫
  • নাস্তিকতার শিকড়গুলি

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • নাস্তিকতার শিকড়গুলি
  • ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • শিকড়গুলিকে উপলব্ধি করা
  • বীজগুলি বপন করা হয়
  • সংশয়বাদ গজিয়ে ওঠে
  • নাস্তিকতা তার চরম শিখরে পৌঁছায়
  • ঈশ্বর অস্বীকারকারী বিংশ শতাব্দী
    ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৪ ১২/১ পৃষ্ঠা ২-৫

নাস্তিকতার শিকড়গুলি

আমরা একটি সংকটপূর্ণ পৃথিবীতে বাস করছি; প্রতিদিন সংবাদপত্রের মুখ্য বিষয়গুলির দিকে এক ঝলক চোখ বোলালেই এর প্রমাণ পাওয়া যায়। আমাদের এই পৃথিবীর হতাশাগ্রস্ত পরিস্থিতি, অনেককেই ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করেছে। কিছুলোক নিজেদেরকে নাস্তিক বলে দাবি করে, এমনকি তাঁর অস্তিত্ব পর্যন্ত অস্বীকার করে। আপনার ক্ষেত্রেও কি তাই?

ঈশ্বরে বিশ্বাস বা অবিশ্বাস, ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আপনার চিন্তাধারাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। ঈশ্বর ব্যতিরেকে, মানবজাতির পরিত্রাণ সম্পূর্ণভাবে মানুষের নিয়ন্ত্রণের ওপর নির্ভরশীল​—⁠একটি নিরস চিন্তাধারা, বিশেষ করে মানুষের ধ্বংস করার যে প্রচুর ক্ষমতা আছে তার পরিপ্রেক্ষিতে। আপনি যদি বিশ্বাস করেন যে ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে, তাহলে সম্ভবত এটাও স্বীকার করেন যে এই গ্রহে যে জীবন আছে তারও নিশ্চয়ই একটা উদ্দেশ্য রয়েছে​—⁠এমন একটা উদ্দেশ্য যা পরিশেষে বাস্তবায়িত হবে।

যদিও ইতিহাসের সর্বাংশে ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে অস্বীকার বিক্ষিপ্তভাবে প্রকাশ পেয়েছিল, আসলে কেবল মাত্র সাম্প্রতিক শতাব্দীগুলিতেই নাস্তিকতা সম্বন্ধীয় জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে। আপনি কি জানেন কেন?

শিকড়গুলিকে উপলব্ধি করা

একটি বিশাল গাছের দর্শন অবশ্যই মনে একটা ছাপ ফেলতে পারে। তবুও, চোখ শুধুমাত্র পাতা, শাখাপ্রশাখা আর কাণ্ডই দেখতে পায়। শিকড়​—⁠যা সেই গাছের জীবনের উৎস​—⁠তা মাটির গভীরে লুকিয়ে থাকে।

ঠিক একই জিনিস নাস্তিকতার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যে, ঠিক একটি বিশাল গাছের মতো, ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে অস্বীকারের ব্যাপারটা বিরাট একটি প্রভাবসৃষ্টিকারী আকার ধারণ করে। অতিপ্রাকৃত প্রথম উৎস ছাড়া জীবন ও মহাবিশ্বের কি কোন অস্তিত্ব হতে পারে? সেই স্রষ্টার উপাসনা করা কি সময়ের অপচয়? সেই সময়কার প্রধান দার্শনিকদের কাছে থেকে পাওয়া উত্তরগুলি ছিল জোরালো ও স্পষ্ট। “ঠিক যেমন আমাদের আর নৈতিক নিয়মের প্রয়োজন হয় না, ঠিক তেমনি আমাদের কাছে ধর্মেরও কোন প্রয়োজন নেই,” ফ্রেডরিক নিটসে ঘোষণা করেন। “ধর্ম হল মানুষের মনের একটা স্বপ্ন,” লুডভিক ফয়ারব্যাক বলেন। আর কার্ল মার্কস, যার লেখা পরবর্তী দশকগুলির ওপর এক গভীর প্রভাব ফেলার চেষ্টা করতে যাচ্ছিল, তিনিও সাহসের সাথে বলেন: “আমি ধর্মের বন্ধন থেকে মনের স্বাধীনতাকে বৃদ্ধি করতে চাই।”

বহু সংখ্যক লোক প্রভাবিত হয়েছিল। কিন্তু তারা যা দেখেছিল তা হল কেবল নাস্তিকতার পাতা, শাখাপ্রশাখা আর কাণ্ড। এর শিকড়গুলি ইতিমধ্যেই ছিল ও এদের উদগম উনবিংশ শতাব্দী শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই আরম্ভ হয়। আশ্চর্যের বিষয় হল যে খ্রীষ্টজগতের ধর্মগুলিই নাস্তিকতার আধুনিক বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে! কিভাবে? এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের কলুষতার দরুন নানা ধরনের বিভ্রান্তি ও প্রতিবাদের সূচনা ঘটায়।

বীজগুলি বপন করা হয়

মধ্যযুগ চলাকালীন, তাদের সদস্যদের ওপর ক্যাথলিক গির্জার একটা কঠোর প্রভাব ছিল। “লোকেদের আধ্যাত্মিক চাহিদা মেটানোর জন্য সম্ভবত পুরোহিত শ্রেণীর কাছে যথেষ্ট পরিমাণ প্রয়োজনীয় বস্তু ছিল না,” দি এনসাইক্লোপিডিয়া আমেরিকানা মন্তব্য করে। “উচ্চ পদস্থ পাদরী, বিশেষ করে বিশপদেরকে অভিজাত সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে বহাল করা হত এবং তারা তাদের এই পদকে কেবলমাত্র সম্মান ও ক্ষমতার উৎস হিসাবে জ্ঞান করত।”

কিছু ব্যক্তি, যেমন জন ক্যালভিন এবং মার্টিন লুথার গির্জার সংস্কার সাধনের চেষ্টা করেছিলেন। তাদের এই পদ্ধতি কিন্তু সবসময় খ্রীষ্টতুল্য ছিল না; অসহনীয়তা ও রক্তপাতে ভরা ছিল এই সংস্কার সাধন। (তুলনা করুন মথি ২৬:৫২.) তাদের কয়েকটি আক্রমণ এতোই জঘন্য ছিল যে তিন শতাব্দী পর থমাস জেফরসন, যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় রাষ্ট্রপতি লেখেন: “ক্যালভিনের নৃশংসতার দ্বারা তাঁর নিন্দা করার চাইতে, ঈশ্বরকে একেবারে না মানা অনেক বেশি ক্ষমার যোগ্য হবে।”a

স্পষ্টতই, এই সংস্কার সাধন সত্য উপাসনাকে পুনর্স্থাপন করেনি। তথাপি, এটি ক্যাথলিক গির্জার ক্ষমতাকে হ্রাস করে। ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর ভ্যাটিকেনের আর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বজায় রইল না। অনেকে নবগঠিত প্রটেস্টান্ট সম্প্রদায়গুলিতে যোগ দেয়। বাদবাকিরা, ধর্মের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ে মানুষের মনকে উপাসনার বস্তু হিসাবে গ্রহণ করে। এর ফলে স্বাধীনচেতা মনোভাবের সূচনা হয় যা ঈশ্বর সম্বন্ধীয় নানাধরনের অভিমতের সুযোগ দেয়।

সংশয়বাদ গজিয়ে ওঠে

অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যে, জগৎ সমস্যার সর্বোপরি সমাধান হিসাবে, যুক্তিসংক্রান্ত চিন্তাধারা সাধারণভাবে উচ্চপ্রশংসিত হয়। জার্মান দার্শনিক ইম্মানুয়েল কান্ট বলেন যে পরিচালনা পাওয়ার জন্য রাজনীতি আর ধর্মের ওপর নির্ভরশীলতার দরুনই মানুষের প্রগতি বিঘ্নিত হয়েছে। “জানার জন্য দুঃসাহসী হোন!” তিনি উৎসাহ দেন। “নিজের বুদ্ধিকে ব্যবহার করার সাহস রাখুন!”

এই মনোভাব এক নবজাগরণের সূচনা করে, যা যুক্তিবাদিতার যুগ হিসাবেও পরিচিত হয়। সমগ্র অষ্টাদশ শতাব্দী ধরে এর স্থায়িত্ব থাকে এবং এই সময়-কালটি বিশেষ করে জ্ঞানের প্রতি অদম্য স্পৃহার দ্বারা চিহ্নিত হয়। “সংশয়বাদের পরিবর্তে অন্ধ বিশ্বাস,” মাইলস্টোন অফ হিস্ট্রি নামক বইটি জানায়। “সমস্ত প্রাচীন প্রথাগুলি সম্বন্ধে প্রশ্ন ওঠে।”

একটি ‘প্রাচীন প্রথা’ যা সূক্ষ্ণ বিচারের অধীনে আসে তা হল ধর্ম। “লোকেরা ধর্ম সম্বন্ধে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করেছে,” দি ইউনিভার্সাল হিস্ট্রি অফ দি ওয়ার্ল্ড নামক বইটি জানায়। “তারা আর স্বর্গে পুরস্কার পাওয়ার প্রতিশ্রুতিতে সন্তুষ্ট থাকে না; তারা পৃথিবীতে উন্নত জীবনের দাবি জানায়। তারা অতিপ্রাকৃত বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস হারাতে শুরু করে।” অবশ্যই, অধিকাংশ জ্ঞানালোকপ্রাপ্ত দার্শনিকেরা ধর্মকে অবজ্ঞার চোখে দেখতো। বিশেষ করে, তারা ক্ষমতা-লিপ্সু, ক্যাথলিক গির্জার নেতাদেরকে দায়ী করে লোকেদেরকে অজ্ঞানতায় রাখার জন্য।

ধর্মের প্রতি অসন্তোষের ফলে, এই দার্শনিকদের মধ্যে অনেকেই ঈশ্বরবাদী হয়ে পড়ে; এরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করত কিন্তু এটা ধরে নিয়েছিল যে মানুষের প্রতি ঈশ্বরের কোন আগ্রহ নেই।b কয়েক জন স্পষ্টভাষীত নাস্তিক হয়ে পড়ে, যেমন পল হেনরি টেরে অলবাক, যিনি দাবি করেন যে ধর্মই হল “বিভেদ, চরম অন্যায় ও অপরাধের উৎস।” যতই বছরগুলি পেরিয়ে যেতে থাকে, আরও অনেকে খ্রীষ্টজগতের প্রতি পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে এবং তারা অলবাকের মতবাদকে গ্রহণ করে।

এটা কতই না বিদ্রূপাত্মক যে খ্রীষ্টজগৎই এই নাস্তিকতার বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করেছে! “গির্জাগুলিই হচ্ছে নাস্তিকতার কেন্দ্রস্থল,” ঈশ্বরতত্ত্বের অধ্যাপক মাইকেল জে. বাকলে লেখেন। “পাশ্চাত্য মূল্য বোধের অতিশয় সুনাম হানি হয় এবং তারা সাংগঠনিক একমতালম্বী ধর্মগুলির প্রতি নিদারুণ বিরক্তি প্রকাশ করে। গির্জা ও সম্প্রদায়গুলি ইউরোপকে বিধ্বস্ত করেছে, ব্যাপক হত্যার পরিকল্পনা করেছে, ধর্মীয় প্রতিবাদ বা বিপ্লবের দাবি জানিয়েছে, শাসকদের বহিষ্কার বা স্থানচ্যুত করার চেষ্টা চালিয়েছে।”

নাস্তিকতা তার চরম শিখরে পৌঁছায়

উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যে, ঈশ্বরকে অস্বীকার করার বিষয়টি খোলাখুলি হয়ে পড়ে এবং সাফল্যলাভ করতে থাকে। দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিকেরা সাহসের সাথে তাদের মতবাদ প্রকাশ করতে আর অস্বস্তিবোধ করেন না। “ঈশ্বর আমাদের শত্রু,” একজন স্পষ্টবাদী নাস্তিক ঘোষণা করেন। “ঈশ্বরকে ঘৃণা প্রজ্ঞার আরম্ভ। যদি মানবজাতিকে প্রকৃত উন্নতি করতে হয়, তাহলে তা অবশ্যই নাস্তিকতার ভিত্তির উপরে করতে হবে।”

যাইহোক না কেন, বিংশ শতাব্দীতে একটা সূক্ষ্ণ পরিবর্তন ঘটে। ঈশ্বরকে অস্বীকারের ব্যাপারটা অপেক্ষাকৃত ভাবে একটু কম সংগ্রামশীল হয়ে পড়ে; এবং আর একটি ভিন্ন ধরনের নাস্তিকতার প্রসার শুরু হয়, যা এমনকি তাদেরকেও প্রভাবিত করে যারা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করার দাবি জানায়।

[পাদটীকাগুলো]

a সংস্কার সাধনের ফলে যে সমস্ত প্রটেস্টান্ট সম্প্রদায়গুলির উদ্ভব হয়, সেগুলি অনেক অশাস্ত্রীয় মতবাদগুলিকে ধরে রাখে। সচেতন থাক! (ইংরাজি) ২২শে আগস্ট ১৯৮৯ এর পৃষ্ঠা ১৬-২০, এবং ৮ই সেপ্টেম্বর, ১৯৮৯, পৃষ্ঠা ২৩-৭, সংখ্যাগুলি দেখুন।

b ঈশ্বরবাদীরা দাবি করে যে, ঈশ্বর অনেকটা, একজন ঘড়ি নির্মাতার মতো তাঁর সৃষ্টিকে গতিশীল রেখেছেন এবং সম্পূর্ণরূপে নিজেকে তাদের কাছ থেকে সরিয়ে রাখার দ্বারা, তাঁর উদাসিনতা প্রকাশ করেছেন। আধুনিক উত্তরাধিকার (ইংরাজি) নামক বইটির মন্তব্য অনুসারে, ঈশ্বরবাদীরা “বিশ্বাস করে যে হতাশার ফলে, নাস্তিকতার এই ভ্রমের জন্ম কিন্তু ক্যাথলিক গির্জার কর্তৃত্বব্যাঞ্জক কাঠামো এবং তাদের কঠোর ও অসহনীয় মতবাদগুলি আরও অনেক বেশি বেদনাদায়ক।”

[৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

কার্ল মার্কস

[৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

লুডভিগ ফয়ারব্যাক

[৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

ফ্রেডরিক নিটসে

[২ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

COVER: Earth: By permission of the British Library; Nietzsche: Copyright British Museum (see also page 3); Calvin: Musée Historique de la Réformation, Geneve (Photo F. Martin); Marx: U.S. National Archives photo (see also page 3); Planets, instruments, crusaders, locomotive: The Complete Encyclopedia of Illustration/J. G. Heck; Feuerbach: The Bettmann Archive (see also page 3)

(w94 12/1)

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার