“আমি যিহোবার চোখে মহামূল্যবান!”
এই “বিষম সময় যার মোকাবিলা করা কঠিন,” যিহোবার অনেক বিশ্বস্ত দাসেদের সর্বদা নিজেকে অযোগ্য বলে মনে করার যে প্রবণতা তার সাথে লড়াই করতে হয়। (২ তীমথিয় ৩:১, NW) এটা আশ্চর্যের বিষয় নয়, কারণ শয়তানের একটি অন্যতম “চাতুরীর” অংশ হল আমাদের মধ্যে এমন মনোভাব জাগিয়ে তোলা যে কেউ আমাদের ভালবাসে না, এমনকি আমাদের সৃষ্টিকর্তাও নয়! (ইফিষীয় ৬:১১, NW পাদটীকা) যথার্থভাবে, ১লা এপ্রিল, ১৯৯৫ সালের প্রহরীদুর্গ সংস্করণে মণ্ডলীর অধ্যয়নের জন্য দুটি প্রবন্ধ ছিল যার নামকরণ ছিল “ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আপনি মহামূল্যবান!” ও “প্রেম ও সৎক্রিয়া সম্বন্ধে উদ্দীপিত করে তোলা—কিভাবে?” এই প্রবন্ধগুলির উদ্দেশ্য ছিল আমাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া যে যিহোবা আমাদের প্রচেষ্টাকে মূল্যবান জ্ঞান করেন। নিম্নে উল্লেখিত কয়েকটি উপলব্ধিমূলক মন্তব্য তুলে ধরা হল:
“এই প্রবন্ধটি যেভাবে আমাকে প্রভাবিত করেছে তা ২৭ বছর ধরে যিহোবার সাক্ষী থাকাকালীন কোন কিছুই আমার উপর এতটা প্রভাব ফেলেনি। আমি চোখের জলকে রোধ করতে পারিনি—এই প্রবন্ধগুলি আমার জন্য এক বিশেষ স্বস্তি এনেছে। আমি এখন উপলব্ধি করি যে যিহোবা আমাকে অত্যন্ত ভালবাসেন। আমার কাঁধ থেকে যেন একটা বিশাল বোঝা নেমে গেছে।—শি. এইচ.
“এই পত্রিকাটি আমি একদিনে চারবার পড়েছি। আমি বিশেষভাবে প্রবন্ধটির এই অংশটি পড়ে আনন্দ পেয়েছি যেখানে এটি বলছে যে যদি আপনি মনে করেন যে আপনার কোন মূল্য নেই তাহলে আপনাকে মিথ্যা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। এই প্রবন্ধটি আমি পালকের কাজ করার ক্ষেত্রে এবং গৃহে গৃহে প্রচারের ক্ষেত্রে ব্যবহার করব।”—এম. পি.
“যারা যিহোবাকে ভালবাসে এমনকি তাদের মধ্যেও শয়তান উত্তমভাবে এই মনোভাব জাগিয়ে তুলেছে যে তারা অযোগ্য ও ভালবাসা পাওয়ার যোগ্যতা তাদের নেই। ‘বিশ্বস্ত দাস’ শ্রেণীর দ্বারা যে আমাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যিহোবা গভীরভাবে আমাদের ভালবাসেন এবং আমরা যত নগণ্য জিনিসই তাঁর জন্য করি না কেন তিনি তা উপলব্ধি করেন, এটাই হল সবচাইতে উৎসাহজনক বিষয় যা আমি এখানে পড়েছি। বহু বছর ধরে আমার মধ্যে এই অনুভূতি ছিল যা আপনারা এই প্রবন্ধগুলির মাধ্যমে বলার চেষ্টা করেছেন। আমি কখনও নিজেকে যিহোবার প্রেম পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করিনি, অতএব আমি আরও বেশি পরিচর্যার কাজে অংশ নিতে চেয়েছিলাম যাতে করে সেই প্রেমকে আমি অর্জন করতে পারি। কিন্তু আমার মধ্যে সর্বদাই অপরাধবোধ ও লজ্জার মনোভাব কাজ করত। সুতরাং পরিচর্যায় আমি যত ঘন্টাই ব্যয় করি না কেন অথবা যত লোককেই আমি সাহায্য করে থাকি না কেন, আমার মনে হত যে এটা যথেষ্ট নয়। আমি কেবল নিজের মধ্যে অভাবই অনুভব করতাম। এখন আমি যখন প্রেম সহকারে যিহোবার পরিচর্যা করি, তখন আমি কল্পনা করি যে তিনি আমার দিকে চেয়ে হাসছেন এবং আমার জন্য গর্ব অনুভব করছেন। এটা তাঁর প্রতি আমার প্রেমকে আরও বাড়িয়ে তোলে আর আমি আরও অধিক কিছু করার উৎসাহ পাই। এখন যিহোবার পরিচর্যা করার মধ্যে আমি প্রচুর আনন্দ লাভ করি।”—আর. এম.
“এই প্রবন্ধগুলি হৃদয়কে স্পর্শ করার ক্ষেত্রে সবচাইতে উত্তম, গঠনমূলক ও অসাধারণ, যা এর আগে আমি কখনও পড়িনি! আমি ৫৫ বছর ধরে প্রহরীদুর্গ পড়ে আসছি এবং এর মধ্যে অনেক উল্লেখযোগ্য সংস্করণগুলি ছিল। কিন্তু এই সংস্করণটি, আমাদের আশঙ্কা, ভ্রান্তিজনক মনোভাব ও ভয়কে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে যার ফলে আমরা হয়ত ভাবতে পারি যে আমরা ‘অযোগ্য’ ও ‘প্রেম ভালবাসা পাওয়ার ক্ষেত্রে অনুপযুক্ত’ এবং আমরা কখনই যিহোবার প্রেম ‘অর্জন’ করার জন্য যথেষ্ট কিছু করতে পারব না। এই প্রহরীদুর্গ সংস্করণের মধ্যে এমন কিছু আধ্যাত্মিক সাহায্য রয়েছে যা ভাইয়েদের একান্ত প্রয়োজন। আমার ইচ্ছা আছে যে পালকের কাজ করার সময় এই প্রবন্ধগুলি আমি বারে বারে ব্যবহার করব।”—এফ. কে.
“আমাদের মধ্যে যারা নিজেদের অযোগ্য বলে মনে করে অথবা নিজেদের প্রতি ঘৃণার মনোভাব পোষণ করে, তাদের পক্ষে সত্যে ক্রমাগতভাবে থাকার জন্য শক্তি সঞ্চয় করা খুবই কঠিন কাজ হতে পারে। এই প্রবন্ধটি এত গভীরভাবে দয়া ও সহানুভূতি প্রকাশ করে যেন হৃদয়ের উপর কোমল ও আরোগ্যময় এক মলম প্রয়োগ করা হয়েছে। প্রহরীদুর্গ পত্রিকার মধ্যে এইধরনের বাক্যগুলি পড়া এবং যিহোবা নিঃসন্দেহে সবকিছু বুঝতে পারেন এটা জানা কতই না সান্ত্বনাদায়ক! আমাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ যে যিহোবা কখনও তাঁর লোকেদের অপরাধবোধ, লজ্জা অথবা ভয়ের মাধ্যমে প্ররোচিত করার চেষ্টা করেন না। যদিও সম্প্রতি আমার পরিবারের মধ্যে অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত সমস্যার জন্য প্রচার কাজে আমার অংশ নেওয়া খুবই সীমিত হয়ে পড়েছে, কিন্তু তবুও আমার সাধ্যমত কিছু করতে পেরে আমি খুবই তৃপ্তি পাচ্ছি। আমি লক্ষ্য করেছি যে যখন প্রেমকে আমার প্ররোচনার এক উৎস করে তুলি তখনই আমি পরিচর্যা করে সবচাইতে বেশি আনন্দ পাই।”—ডি. এম.
“ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আপনি মহামূল্যবান!”’ এই প্রবন্ধটি আমি সবেমাত্র পড়া শেষ করেছি। প্রত্যেকটি অনুচ্ছেদ আমার চোখে জল এনেছে। আমি এমন এক পরিবার থেকে আসি যেখানে খুব কমই প্রেম দেখানো হয়। আমাকে ছোট করা, বিদ্রূপ করা ও উপহাস করা হত। সুতরাং, জীবনের প্রাথমিক অবস্থা থেকেই আমি নিজেকে অযোগ্য বলে মনে করতাম। আমি এখনও সেই অতীতের অনুভূতিগুলি বয়ে নিয়ে বেড়াই যা আমাকে বিপদের মুখে অবমানিত করে তোলে। যখন মণ্ডলীর প্রাচীন হিসাবে আমি কাজ করা বন্ধ করে দিই, তখন সাধারণভাবেই আমি নিজেকে ব্যর্থ বলে মনে করতে থাকি—ঈশ্বরের কাছে, আমার পরিবারের কাছে ও আমার মণ্ডলীর ভাইয়েদের কাছে। এইধরনের মনোভাব একরাতের মধ্যে চলে যায় না, কিন্তু এই সময়োপযোগী প্রবন্ধটি আমাকে সাহায্য করেছে খানিকটা ভারসাম্য ফিরে পেতে। এটি আমার দৃষ্টিভঙ্গিকেও উজ্জ্বল করে তুলেছে।”—ডি. এল.
“‘ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আপনি মহামূল্যবান,’ এই প্রবন্ধটির জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। ছেলেবেলায় আমার প্রতি যৌন অত্যাচারের ফলে, আমাকে এক গভীর আত্ম-ঘৃণা ও অযোগ্যতার এক তীব্র অনুভূতির সাথে মোকাবিলা করতে হয়। এই ভ্রান্তিকর চিন্তাধারা যে স্বয়ং শয়তানের একটি চাতুরীপূর্ণ কাজ এটা উপলব্ধি করা অবশ্য যথাযথ। এমনকি এটা একজনের বেঁচে থাকার ইচ্ছাকে পর্যন্ত নষ্ট করে দিতে পারে। আমি যে ভালবাসা পাওয়ার অযোগ্য এই মিথ্যাকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা আমাকে প্রতিদিন করতেই হবে। আপনি সম্ভবত জানেন না যে এই প্রবন্ধটি আমার কাছে কতখানি অর্থ রাখে।”—কে. এফ.
“আজকে ভাইয়েরা বিশেষকরে সেই চিন্তাধারার প্রতি সাড়া দেন যে বাধ্যতামূলক অথবা চাপে পড়ে কাজ করার চাইতে, প্রেমের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে যে কাজ করা যায় সেটাই যিহোবা উপলব্ধি করেন। যিহোবার উষ্ণ ও সংবেদনশীল ব্যক্তিত্ব, ব্যক্তিগতভাবে তাঁর লোকেদের প্রতি তাঁর আগ্রহ এবং যে ধরনের প্রেমপূর্ণ আচরণের দ্বারা তিনি নিজেকে প্রসারিত করেন, এই বিষয়গুলি বিবেচনা করা খুবই সতেজতামূলক ও প্রেরণাদায়ক। এর পরিপ্রেক্ষিতে, যে মুহূর্তে আমরা ‘ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আপনি মহামূল্যবান!’ নামক প্রবন্ধটি পাই অনেকে এর প্রতি উপলব্ধিবোধ প্রকাশ করতে শুরু করে। এটা মনে হয় যে অনেকের ক্ষেত্রে এটি, যিহোবার সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তোলার এক পথ খুলে দিয়েছে। সাম্প্রতিক প্রহরীদুর্গ পত্রিকাগুলিতে যেভাবে স্বরধ্বনি ও সংবেদনশীলতার প্রকাশ ঘটেছে তার জন্য আমার স্ত্রী ও আমি আপনাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে চাই। মণ্ডলীগুলি পরিদর্শন করতে যাওয়ার সময় আমরা এই বিষয়গুলি প্রয়োগ করার চেষ্টা করছি।”—একজন ভ্রমণ অধ্যক্ষের কাছ থেকে।
“আমি প্রায় ৩০ বছর ধরে এক বিশ্বস্ত পাঠক, কিন্তু এতটা অনুপ্রেরণাদায়ক ও গঠনমূলক প্রবন্ধ আমি কখনও পড়িনি। দৃঢ়ভাবে ও কৌশলতার সাথে প্রয়োগ করা শাস্ত্রীয় পদগুলি, আমার অন্তরে যে মিথ্যা মনোভাবের শিকড় ছিল তা উপড়ে ফেলতে এবং যিহোবার নিকটে আসতে সাহায্য করেছে। বহু বছর ধরে আমি অপরাধবোধের মনোভাব নিয়ে যিহোবাকে সেবা করে এসেছি। মুক্তির মূল্য ও ঈশ্বরের প্রেম সম্বন্ধে আমার কেবল মাত্র বুদ্ধিগত জ্ঞান ছিল। এই অন্তর্দৃষ্টিমূলক ও চিন্তাশীল প্রবন্ধগুলির জন্য আপনাদের বিশেষ ধন্যবাদ। আমি আরও এইধরনের প্রবন্ধগুলি পড়ার আশা রাখি।”—এম. এস.
“২৯ বছর সত্যে থাকাকালীন, আমার মনে পড়ে না যে কবে এইধরনের একটি প্রবন্ধ আমার উপর এক কৃতজ্ঞতামূলক ও গভীর অনুভূতির সৃষ্টি করেছিল। যদিও আমি প্রচুর প্রেম ও চিন্তাশীল পরিবারের দ্বারা পালিত হয়েছি, কিন্তু আমি কখনও নিজেকে বেঁচে থাকার যোগ্য বলে মনে করিনি, যিহোবাকে সেবা করার যোগ্যতার কথা ত ছেড়েই দিন। এই প্রবন্ধটির পর, আমি নতজানু হয়ে খুব অশ্রুপাত করি ও যিহোবাকে ধন্যবাদ দিই। আমি চিরকাল এই প্রবন্ধটিকে উপলব্ধি করে যাবো। এখন আমি নিজেকে এক ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেখবো কারণ এখন আমি জানি যে যিহোবার চোখে আমি মহামূল্যবান।”—ডি. বি.