১৯৯৯ সালের “ঈশ্বরের ভবিষ্যদ্বাণীর বাক্য” জেলা সম্মেলনগুলো
১ ইস্রায়েলীয়রা যখন প্রতিজ্ঞাত দেশে ঢোকার মুখে ছিল, মোশি তাদের ঈশ্বরের নির্দেশনাকে উপলব্ধি করতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তিনি তাদের বলেছিলেন: “ইহা তোমাদের পক্ষে নিরর্থক বাক্য নহে, কেননা ইহা তোমাদের জীবন।” (দ্বি.বি. ৩২:৪৫-৪৭) যিহোবার কাছে আমরা কি কৃতজ্ঞ নই যে তিনি আমাদের জীবনকে এতই মূল্যবান বলে মনে করেন যে আজও তিনি তাঁর অমূল্য বাক্যের মাধ্যমে আমাদের সবসময়ে পথ দেখান? তাই, “ঈশ্বরের ভবিষ্যদ্বাণীর বাক্য” তিনদিনের এই সম্মেলনে যিহোবা আমাদের জন্য কী সঞ্চয় করে রেখেছেন তা জানার জন্য আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি।
২ এই বছর সারা ভারতে ২৭টা বিভিন্ন জায়গায় জেলা সম্মেলনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর এই প্রথম বার এখানে মিজো ভাষায় একটা ছোট সম্মেলন হবে।
৩ কোন সন্দেহ নেই যে আপনি সম্মেলনের প্রতিটা দিনে উপস্থিত থাকার জন্য ইতিমধ্যেই সমস্ত ব্যবস্থা করে ফেলেছেন কারণ আপনি বিশ্বাস করেন যে যিহোবা চান আপনি সেখানে উপস্থিত থাকুন। যিহোবা তাঁর সেবকদের প্রত্যেকের চেষ্টা এবং উপস্থিত থাকার জন্য তারা যে ত্যাগস্বীকারগুলো করেন তা দেখেন আর সেগুলোকে মনে রাখেন। (ইব্রীয় ৬:১০) প্রতিদিন শুরুর গান থেকে শেষ প্রার্থনা পর্যন্ত উপস্থিত থেকে আমরা যিহোবাকে দেখাই যে আমরা তাঁর বাক্যকে কতই না মূল্যবান মনে করি। (দ্বি.বি. ৪:১০) এছাড়া আমরা এটাও দেখাই যে সম্মেলন করার জন্য যে ভাইয়েরা কঠোর পরিশ্রম করেছেন তাদেরকেও আমরা উপলব্ধি করি।
৪ প্রত্যেকটা সম্মেলনের জায়গায় আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া ও ভাল বন্দোবস্ত করার দরকার হয় যাতে হাজার হাজার ভাইবোনেরা সেখানে ঠিক মতো জমা হতে পারেন। আমাদের ভাইরা এইরকম পরিশ্রম করেন কারণ তারা আমাদের ভালবাসেন, তাই আমাদেরও তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করা উচিত যাতে করে “সকলই শিষ্ট ও সুনিয়মিতরূপে করা” হয়। (১ করি. ১৪:৪০) এখন এখানে কিছু তথ্য ও দরকারি কিছু বিষয়ের কথা মনে করিয়ে দেওয়া হল যাতে করে আপনি পুরোপুরি তৈরি হয়ে সম্মেলনে এসে আধ্যাত্মিক খাদ্য ও ভাইবোনদের সঙ্গে মেশামেশার করার সুযোগ পান।
সম্মেলনের আগে
৫ আপনার বাইবেল ছাত্র এবং অন্যান্য আগ্রহী ব্যক্তিদের কি সম্মেলনে আসার জন্য কোন সাহায্যের দরকার? সম্মেলনে এসে তারা যা দেখবেন ও শুনবেন তা হয়তো তাদের মধ্যে যিহোবার উপাসনা করার ইচ্ছা জাগিয়ে তুলতে পারে। (১ করি. ১৪:২৫) প্রাচীনদের নজর রাখা দরকার যে কারও, বিশেষ করে মণ্ডলীর বয়স্ক ভাইবোনদের, সম্মেলনে যাওয়া আসা ও থাকার ব্যাপারে সাহায্যের দরকার হলে, তাদের সাহায্য করা।—গালা. ৬:১০.
৬ আপনার থাকার ব্যবস্থা কি পাকাপাকি হয়ে গেছে? যদি আপনি কোন হোটেলে থাকেন, তাহলে হোটেলের যে ঘরে থাকবেন সেটা কি ঠিক মতো বুক করা হয়েছে আর আপনি কি এর জন্য টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন?
৭ সম্মেলনের জায়গার ঠিকানা বা হল সম্বন্ধে যদি আপনি কিছু জানতে চান, তাহলে মণ্ডলীর সচীব আপনাকে সবকিছু জানাবেন। দয়া করে হল কর্তৃপক্ষকে ফোন করবেন না বা চিঠি লিখবেন না।
৮ সম্মেলনে প্রাথমিক চিকিৎসা বিভাগ থাকবে কিন্তু তা কেবল জরুরি অবস্থার জন্য, তাই আমরা চাই যে আপনি যদি প্রয়োজন মনে করেন, তাহলে মাথা ব্যথার ওষুধ, ব্যান্ডেজ, ইনহেইলার, হজমের ওষুধ এবং এইধরনের জিনিসগুলো সঙ্গে নিয়ে সম্মেলনে আসুন। যদি আপনার কিংবা আপনার কোন আত্মীয়ের গুরুতর কোন শারীরিক সমস্যা থাকে যেমন, হার্টের অসুখ, ডাইয়েবিটিস অথবা সিজারস্, তাহলে দয়া করে এর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সঙ্গে করে নিয়ে আসুন যাতে আপনি তার দেখাশোনা করতে পারেন যেমন আপনি বাড়িতে থাকলে অথবা ছুটিতে কোথাও বেড়াতে গেলে তা সঙ্গে রাখেন। সমস্যাটার বিষয়ে ভালভাবে জানেন পরিবারের এমন কোন সদস্য অথবা ঘনিষ্ঠ বন্ধু যদি তার সঙ্গে সবসময় থাকেন, তাহলে সেটা খুব ভাল হবে, কারণ তিনি প্রয়োজনে সবচেয়ে ভালভাবে সাহায্য করতে পারবেন।
৯ সম্ভবত সম্মেলনে যাওয়া আসার পথে ট্রেনে বাসে আপনি লোকেদের কাছে প্রচার করার অনেক সুযোগ পাবেন। তাই অন্যদের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আপনি কি তৈরি থাকবেন? আমরা সবাই এমনকি ছোট বাচ্চরাও, পেট্রল স্টেশনের কর্মচারী, দোকানদার এবং যাতায়াতের পথে যাদের সঙ্গে আমাদের দেখা হয় তাদেরকে ট্র্যাক্ট দিয়ে সাক্ষ্য দিতে পারি। আগ্রহী লোকেদের পত্রিকা, ব্রোশার অথবা অন্যান্য সাহিত্যগুলো দেওয়ার সুযোগও আমাদের আসবে। তাই সুযোগ পেলেই লোকেদেরকে সাক্ষ্য দেওয়ার চেষ্টা করুন কারণ ঘরে ঘরে প্রচারে হয়তো এই লোকেদের আমরা পাব না।
সম্মেলনের সময়
১০ প্রত্যেক দিন সম্মেলন হলের দরজা খোলার পর আপনি আপনার পরিবারের সদস্য অথবা যারা আপনার সঙ্গে এসেছেন তাদের জন্য আসন রাখতে পারেন। সুবিধাজনক আসনগুলো বয়স্ক ভাইবোনদের জন্য রাখা থাকবে আর অক্ষম এবং হুইলচেয়ারে বসেন এমন ব্যক্তিদের জন্য কিছুটা জায়গা আলাদা করে রাখা হবে। যারা আবহাওয়া বদলানোয় অসুস্থ হয়ে পড়েন অথবা যাদের এলার্জি রয়েছে তাদের থাকার জন্য সম্মেলনগুলোতে বিশেষ ঘরের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। প্রত্যেক দিন আসন ছেড়ে যাওয়ার সময়, ভাল করে দেখে নিন যে আপনি কোন জিনিস ফেলে যাচ্ছেন কি না।
১১ যখন আমরা বড় জেলা সম্মেলনগুলোতে একসঙ্গে অনেক লোকেরা জড়ো হই, তখন আমাদের এই বিষয়ে সরকারের আইন মানা দরকার ও অগ্নিকাণ্ড এবং অন্যান্য বিষয়গুলো থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার। তাই, দেখে নিন যে সম্মেলন হলে ঢোকা ও বেরোনোর পথে কোন অসুবিধাজনক বস্তু নেই। হঠাৎ যদি কোন বিপদজনক পরিস্থিতি দেখা দেয়, তাহলে সেই স্থান থেকে তাড়াতাড়ি সরে যাওয়া সুবিধাজনক হবে।
১২ আপনি কি জেলা সম্মেলনে বাপ্তিস্ম নিচ্ছেন? শনিবার সকালে বাপ্তিস্ম প্রার্থীদের জন্য আসন ঠিক করে রাখা হবে এবং পরিচারকেরা আপনাদের সেই জায়গা দেখিয়ে দেবেন। যদি সম্ভব হয়, কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই দয়া করে আসনে বসে পড়ার চেষ্টা করুন। আপনার বাইবেল, গান বই, তোয়ালে এবং মার্জিত স্নানের পোশাক সঙ্গে করে নিয়ে আসুন। স্লোগান লেখা টি-সার্ট এবং এইরকম পোশাক আনা ঠিক নয় যাতে বাপ্তিস্ম অনুষ্ঠানের মর্যাদা হানি হয়। আমাদের পরিচর্যা (ইংরেজি) বইয়ে দেওয়া প্রশ্নগুলো বাপ্তিস্ম প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করার সময় প্রাচীনেরা দেখবেন যে প্রত্যেকে এই সমস্ত বিষয়গুলো ভাল করে বুঝেছেন। যেহেতু বাপ্তিস্ম হল যিহোবার কাছে একজনের উৎসর্গের প্রতীক, তাই বাপ্তিস্ম প্রার্থীদের হাত ধরাধরি করে বাপ্তিস্ম নেওয়া ঠিক নয়।
১৩ সম্মেলনে আপনি ক্যামেরা, ভিডিও-রেকর্ডার এবং অডিও রেকর্ডার ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু, সেগুলোকে এমন জায়গায় রাখা অথবা এমনভাবে ব্যবহার করা উচিত যাতে তা যাওয়া আসার পথে বাধা সৃষ্টি না করে, অন্যদের দৃষ্টিকে আড়াল না করে অথবা শ্রোতাদের মনোযোগ বিঘ্নিত না করে। আর এগুলোকে সম্মেলনের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা অথবা সাউন্ড সিস্টেমের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া ঠিক নয়।
১৪ যেহেতু এখন অনেকেই সেলুলার ফোন ও পেজার ব্যবহার করেন, তাই দয়া করে খেয়াল রাখুন যে এগুলো যেন আপনার মন দিয়ে কার্যক্রম শোনায় বাধা হয়ে না দাঁড়ায় অথবা আপনার আশেপাশে যারা বসে আছেন তাদেরও শোনায় কোন ব্যাঘাত না ঘটায়। যখন আপনি শ্রোতাদের মাঝে বসে অনুষ্ঠান শুনছেন তখন এগুলো যেন জোরে জোরে বেজে না ওঠে। অনুষ্ঠান চলাকালীন যদি আপনার সেলুলার ফোন ব্যবহার করা দরকার হয়ে পড়ে, তাহলে দয়া করে হলের বাইরে গিয়ে সেটা ব্যবহার করুন।
১৫ সোসাইটি আমাদের সম্মেলনের সব কটা দিন আমাদের নিজেদের খাবার নিজেদের আনার পরামর্শ দিয়েছেন কারণ এতে অনেক সময় বাঁচে আর কাজও অনেক কমে যায়। অনেক ভাইবোনেরা খাবার নিয়ে আসেন এবং দুপুরের বিরতির সময় তারা যে খাবার এনেছেন সেটা পরিবারের সকলের সঙ্গে বসে খেতে পারেন। অনেকেই বলেছেন যে এরকম করায় তাদের বিরতির সময়ে একটু আরাম করা এবং ভাইবোনদের সঙ্গে মেলামেশা করার সুযোগ হয়েছে। এইজন্য আগে থেকেই খাবারদাবার কিনে রাখা দরকার আর সেগুলোর একটা ছোট প্যাকেট করা দরকার যাতে করে অনায়াসেই তা আসনের তলায় রাখা যায়। আমরা অনুরোধ করব যে সম্মেলনে যোগদানকারী সকলেই যেন এই পরামর্শ মেনে চলেন। সম্প্রতি, জানা গেছে যে সম্মেলন চলাকালীন অনেকেই হল ছেড়ে সম্মেলন স্থলেই অথবা বাইরে খাবার কেনার জন্য দোকানগুলোতে যান। এটা করে কেবল যে শ্রোতাদেরই অসুবিধা ঘটানো হয় তাই-ই নয় কিন্তু মঞ্চ থেকে যা বলা হচ্ছে তার প্রতিও অসম্মান দেখানো হয়। যদিও এই দোকানগুলো থেকে খাবার কিংবা পানীয় কিনতে বারণ করা হচ্ছে না, তবুও বিরতির সময় এটা করলে ভাল। এছাড়া এই বিষয়টাও মনে রাখা ভাল যে দোকানগুলোর চারদিকে বেশি ভিড় জমালে বাইরের লোকেরা আমাদের সঙ্গে এসে ভিড় করবে আর এদের মধ্যে হয়তো কিছু লোকেরা খারাপ উদ্দেশ্যেও ঘোরাফেরা করতে পারে। সেইজন্য, আমরা আপনাদেরকে বলছি যে সম্মেলনের প্রত্যেকটা দিনে আপনারা প্রত্যেকে নিজের নিজের খাবার ও পানীয় সঙ্গে করে নিয়ে আসার চেষ্টা করুন। যে নতুন ব্যক্তিরা আপনাদের সঙ্গে সম্মেলনে আসবেন তারাও যেন তাদের নিজেদের খাবার সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। সম্মেলন হলে কাঁচের পাত্র এবং মদ আনবেন না।
১৬ প্রত্যেক দিন সম্মেলন হয়ে যাওয়ার পর আপনি কি হল পরিষ্কার করার কাজে সাহায্য করতে পারেন? অথবা আপনি কি সম্মেলনের বিভাগগুলোর কোন একটাতে কাজ করতে পারেন? যদি আপনি সাহায্য করতে চান, তাহলে সম্মেলনের স্বেচ্ছাসেবক পরিচর্যা বিভাগে দেখা করুন। ১৬ বছরের কমবয়সী ছেলেমেয়েরাও তাদের বাবামা অথবা বড়দের সঙ্গে কাজ করে অনেক সাহায্য করতে পারে। অবশ্য, সকলেই আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখলে তা তুলে ঠিক জায়গায় ফেলে দিয়ে হলকে পরিষ্কার রাখায় সাহায্য করতে পারেন।
১৭ সম্মেলনে আমাদের কীরকম পোশাক-পরিচ্ছদ পরা ও সাজগোজ করা দরকার সে বিষয়ে আমরা অনেক পরামর্শ পেয়েছি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়: এই বিষয়ে আমাদের রাজ্যের পরিচর্যা-র ইনসার্টগুলো থেকে, আমাদের সাহিত্যগুলোতে দেওয়া বিভিন্ন উদাহরণ ও ছবি থেকে আর সবচেয়ে বড় কথা বাইবেল থেকে আমরা জানতে পারি যে এই বিষয়ে যিহোবা কী চান। (রোমীয় ১২:২; ১ তীম. ২:৯, ১০) লোকেরা জানে যে আমরা কারা আর কী জন্যই বা আমরা এই শহরে জমা হয়েছি। তাই, আমাদের পোশাক-পরিচ্ছদ ও সাজগোজই আমাদের সম্বন্ধে অনেক কিছু বলতে পারে। আর এই দিকটাতে বেশিরভাগ যিহোবার সাক্ষিরা এক ভাল উদাহরণ। কিন্তু কখনও কখনও, আমরা দেখি যে সম্মেলনে আসা কারও কারও পোশাক ও সাজগোজ জগতের লোকেদের মতো। কিন্তু একজন ব্যক্তির পোশাকের ধরন লোকেদের তার সম্বন্ধে এইরকম ভাবতে দেবে যে এই ব্যক্তি সত্যিই আধ্যাত্মিক বিষয়ে আগ্রহী কি না। মার্জিত, পরিচ্ছন্ন, পরিপাটী পোশাক সবচেয়ে ভাল। তাই, পরিবারের মস্তকদের খেয়াল রাখা দরকার যে তাদের পরিবারের লোকেরা কীধরনের পোশাক পরবে বলে ঠিক করেছে। আমরা যখন সম্মেলন হলের বাইরে থাকি তখনও এই বিষয়ে খেয়াল রাখা দরকার। অনুষ্ঠানের আগে ও পরে ব্যাজ কার্ড পরে থাকলে অন্যেরা আমাদের যিহোবার পরিশুদ্ধ লোক বলে চিনতে পারবে।—মার্ক ৮:৩৮ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।
১৮ জ্ঞানী রাজা শলোমন ঈশ্বরের অনুপ্রেরণায় এই কথাগুলো বলেছিলেন যে “বালকের হৃদয়ে অজ্ঞানতা বাঁধা থাকে” এবং “অশাসিত বালক মাতার লজ্জাজনক।” (হিতো. ২২:১৫; ২৯:১৫) অনুষ্ঠান চলাকালে যদি ছোট বাচ্চাদের ঘুরে বেড়াতে দেওয়া হয়, তাহলে তারা যে ভাইবোনেরা মন দিয়ে অনুষ্ঠান শুনছেন তাদের গিয়ে বিরক্ত করে। গত বছরের কিছু সম্মেলনগুলোতে ছোট বাচ্চাদের ওপর ঠিক মতো নজর রাখা হয়নি ও তাদের এদিকওদিক ছুটোছুটি করতে দেখা গিয়েছিল। আবার কিছু যুবক-যুবতীদেরও হলের বাইরে এবং টয়লেটের চারপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছিল। তাই এতে কোন সন্দেহ নেই যে ওই ছোট বাচ্চারা এবং যুবক-যুবতীরা আধ্যাত্মিক খাবার থেকে একেবারেই উপকৃত হয়নি যেটা তাদের কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছিল। যেহেতু ছেলেমেয়েদের আচারব্যবহারের জন্য বাবামায়েরাই যিহোবার সামনে দায়ী থাকেন, তাই একজন বাবা অথবা মা যখন তাদের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়ে বসেন কেবল তখনই তারা নিশ্চিন্ত হতে পারেন যে তাদের ছেলেমেয়েরা কোন দুষ্টুমি করছে না ও যিহোবার কথা মন দিয়ে শুনছে। কেউ যদি বিরক্ত করে, তাহলে পরিচারকেরা তাদেরকে তা করতে মানা করবেন ও ভালভাবে তাদের বোঝাবেন যে তারা যেন মন দিয়ে অনুষ্ঠান শোনে।
১৯ যেহেতু আমরা বাইরের লোকদের আমাদের সম্মেলনে আসতে বলি, তাই ছেলেমেয়েদের ও আমাদের জিনিসপত্র আগে থেকে সাবধানে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা হল যিহোবার কাছ থেকে পাওয়া এক মূল্যবান উপহার। কিন্তু আমরা জানি যে জগতের লোকেরা শয়তানের মতো অন্যের জিনিস লুঠ করে। তাই, আপনার ছেলেমেয়েদের ওপর সব সময়ে নজর রাখুন। এছাড়া, ক্যামেরা, পয়সার ব্যাগ এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র সব সময়ে আপনার কাছে রাখুন আর সেগুলো আপনার আসনে ছেড়ে যাবেন না। ভাল করে দেখে নিন যে আপনার গাড়ি ঠিক মতো তালা দিয়েছেন কি না আর আপনার নিজস্ব জিনিসপত্র ট্রাংকের মধ্যে রাখুন অথবা সেগুলোকে আপনার সঙ্গে করে নিয়ে আসুন। এতে আপনার গাড়ি ভেঙে জিনিসপত্র চুরি হওয়ার ভয় থাকবে না।
২০ হোটেলে থাকা নিয়ে যদি কোন সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে রুমিং বিভাগ আপনাকে সাহায্য করার জন্য তৈরি আছে। যখন আপনি সম্মেলনে আছেন সেই সময়ে কোন সমস্যায় পড়লে দয়া করে রুমিং বিভাগকে জানান। সমস্যার সমাধান করতে আপনাকে সাহায্য করতে পারলে ভাইয়েরা খুশিই হবেন যাতে করে আপনি সম্মেলনকে উপভোগ করতে পারেন। এছাড়া থাকার ব্যবস্থার ব্যাপারে দয়া করে নিচের বিষয়গুলো মনে রাখুন:
▪ যেহেতু যিহোবার সাক্ষিদের অনেকেই হোটেলে থাকেন, তাই সকলের পক্ষে হয়তো ধূমপান নিষিদ্ধ এমন ঘর পাওয়া মুশকিল, এমনকি ঘর বুক করার সময় যদি আপনি এই বিষয়ে অনুরোধ করেও থাকেন। গত বছর সম্মেলনের সময়, আমরা রিপোর্ট পেয়েছিলাম যে আমাদের কিছু ভাইয়েরা আরও কিছু সুযোগসুবিধা দেওয়ার জন্য হোটেল কর্মীদের সঙ্গে ঝগড়া করেছিলেন।
▪ যে হোটেলে আপনি থাকছেন সেই হোটেলে ঢোকার ও হোটেল ছেড়ে যাওয়ার সময় জেনে নিন। আগে থেকে অনুরোধ করলে হোটেলের কর্তৃপক্ষ হয়তো হোটেলে একটু আগে ঢোকার ও একটু পরে হোটেল ছাড়ার অনুমতি দিতে পারেন।
▪ সঙ্গে টাকাপয়সা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো দিন দিন বিপদজনক হয়ে উঠছে। তাই আপনি যে হোটেলে আছেন সেই হোটেলেই যদি খাওয়াদাওয়া করেন, তাহলে সেই সমস্ত খরচ একবারে হোটেলের ভাড়া মেটানোর সময় দেওয়াই আপনার জন্য ভাল হবে।
▪ হোটেলগুলোতে প্রায়ই টেলিভিশন ও ভিডিও থাকে আর এতে প্রায়ই খারাপ মানের অনুষ্ঠান দেখানো হয়। আপনি যদি অনুরোধ করেন, তাহলে যে সময় আপনি হোটেলে আছেন সেইসময় তারা আপনার রুম থেকে নির্দিষ্ট চ্যানেলগুলো কেটে দেবেন। ঘরের মতো হোটেলেও ছেলেমেয়েদের ওপর নজর রাখুন যে তারা টেলিভিশনে কী দেখছে।
২১ সম্মেলনে ভাইবোনেদেরকে নোট নিতে দেখা খুবই উৎসাহের। সংক্ষিপ্ত নোট বিষয়গুলোতে মন দিতে ও পরে মূল বিষয়গুলোকে মনে করতে আপনাকে সাহায্য করবে। পরিবার অথবা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আপনার নোটটা পরে আরেকবার আলোচনা করা আপনাকে সম্মেলনের মুখ্য বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ দেবে যাতে করে আপনি সেগুলো ভুলে যাবেন না।
২২ যিহোবার লোকেরা ঐশিক কাজের জন্য সবসময়ে মুক্তহস্তে দান করেন। (যাত্রা. ৩৬:৫-৭; ২ বংশা. ৩১:১০; রোমীয় ১৫:২৬, ২৭) জগদ্ব্যাপী কাজের জন্য আপনার স্বেচ্ছাকৃত দান সম্মেলনগুলোর জন্য যে বড় বড় হলগুলো ভাড়া নেওয়া হয় তার খরচা ওঠানোর জন্যও ব্যবহার করা হয়। আপনি যদি চেকের মাধ্যমে দান দিতে চান, তাহলে দয়া করে তা “ওয়াচটাওয়ার সোসাইটি”-র নামে লিখুন। এর সঙ্গে একটা চিঠি জুড়ে দিন আর তাতে ইংরেজিতে লিখে দিন: “Contribution is toward the corpus of the Society.”
২৩ আমোষ ৩:৭ পদে যেমন লেখা রয়েছে, যিহোবা বলেছিলেন যে তিনি “আপনার দাস ভাববাদিগণের নিকটে আপন গূঢ় মন্ত্রণা প্রকাশ না করিয়া কিছুই করেন না।” ‘নিগূঢ় বিষয়ের প্রকাশক’ হিসেবে যিহোবা বাইবেলে শত শত ভবিষ্যদ্বাণী লিখেছিলেন যেগুলো নিখুঁত ও সম্পূর্ণভাবে পূর্ণ হয়েছে। (দানি. ২:২৮, ৪৭) মহান প্রতিজ্ঞাগুলোর কিছু এখনও পূর্ণ হতে বাকি আছে। ১৯৯৯-২০০০ সালের “ঈশ্বরের ভবিষ্যদ্বাণীর বাক্য” জেলা সম্মেলনগুলো ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলোর ওপর আপনার বিশ্বাসকে শক্তিশালী করবে। সম্মেলনে মন দিয়ে শুনুন যে যিহোবা আপনাকে কী বলছেন। এখানে আপনি যা দেখবেন ও শুনবেন তা প্রচারে, মণ্ডলীতে এবং আপনার নিজের জীবনে কাজে লাগান। এই বিরাট আধ্যাত্মিক ভোজে প্রতিটা দিন উপস্থিত থাকার জন্য আপনি যে ব্যবস্থাদি করছেন তার ওপর আমরা যিহোবার অফুরন্ত আশীর্বাদ প্রার্থনা করি!
[৩ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]
শুক্রবার, শনিবার এবং রবিবার সব দিনগুলোতে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করুন!