উপযুক্ত সময়ে আধ্যাত্মিক খাদ্য
১ “আমি . . . গোধূম [“শস্য,” NW] আহ্বান করিয়া প্রচুর করিয়া দিব, তোমাদের উপরে দুর্ভিক্ষভার অর্পণ করিব না,” এই কথাগুলো সার্বভৌম প্রভু যিহোবা বলেন। (যিহি. ৩৬:২৯) এই ভবিষ্যদ্বাণীমূলক কথাগুলো আজকে ঈশ্বরের লোকেদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। রূপক অর্থে, যিহোবা তাঁর লোকেদের জন্য প্রচুররূপে জীবনরক্ষাকারী শস্য অঙ্কুরিত করেছেন। আমাদের জেলা সম্মেলনগুলোর মাধ্যমে জোগানো সময়োপযোগী আধ্যাত্মিক খাদ্য এই বিষয়টাকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।
২ কলম্বাসের ওহাইওতে ১৯৩১ সালে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যিহোবা তাঁর উপাসকদের একটা নতুন নাম—যিহোবার সাক্ষি—গ্রহণ করতে নির্দেশনা জুগিয়েছিলেন। (যিশা. ৪৩:১০-১২) ১৯৩৫ সালে, প্রকাশিত বাক্য ৭:৯-১৭ পদের বিস্তর লোককে সঠিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছিল। ১৯৪২ সালে, ভাই নর “শান্তি—এটা কি স্থায়ী হতে পারে?” নামক বক্তৃতা দিয়েছিলেন। সেই বক্তৃতাটি পৃথিবীব্যাপী প্রচার কাজে প্রেরণা দান করেছিল এবং ওয়াচটাওয়ার বাইবেল স্কুল অফ গিলিয়েড গঠন করতে পরিচালিত করেছিল। যদিও কিছু কিছু সম্মেলন বিশেষভাবে স্মরণীয় কিন্তু প্রত্যেকটাই সঠিক সময়ে পরিবেশিত পুষ্টিকর আধ্যাত্মিক খাদ্যের এক প্রাচুর্যপূর্ণ মেজ বলে প্রমাণিত হয়েছে।—গীত. ২৩:৫; মথি ২৪:৪৫.
৩ আপনি কতটা ভালভাবে খাচ্ছেন? চারপাশ খাদ্য দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকা সত্ত্বেও পুষ্টিহীন থাকা সম্ভব, যদি আমরা খাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা না করি। (হিতো. ২৬:১৫) আধ্যাত্মিক অর্থেও এই একই বিষয় সত্য। কিছু কিছু সম্মেলনে, অনেককেই অযথা চারিদিকে হাঁটাচলা করতে অথবা কার্যক্রম চলাকালীন অন্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে দেখা গেছে। যদিও গঠনমূলক মেলামেশা হল সম্মেলনের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক কিন্তু তা করার সময় হচ্ছে প্রত্যেকটা অধিবেশনের আগে ও পরে। (উপ. ৩:১, ৭) আমরা যদি আমাদের আসনগুলোতে বসে মন দিয়ে না শুনি, তা হলে আমরা হয়তো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় থেকে বঞ্চিত হতে পারি। ভ্রমণ করা এবং গরম আবহাওয়ার কারণে কেউ কেউ তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়তে পারে। কিন্তু রাত্রে পর্যাপ্ত ঘুম আমাদেরকে পরের দিন সজাগ থাকতে এবং কার্যক্রমের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে সাহায্য করবে। সম্মেলন বিভাগের অধ্যক্ষদের এবং কার্যভারপ্রাপ্ত ভাইদের হয়তো মাঝে মাঝে অধিবেশন চলাকালে সম্মেলনের বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করার প্রয়োজন হতে পারে। তা না হলে, কার্যক্রমের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার দ্বারা তাদের উদাহরণ স্থাপন করা উচিত। প্রতিদিন শেষ প্রার্থনা পর্যন্ত সকলের থাকা উচিত। আমাদের কারোরই জোগানো আধ্যাত্মিক খাদ্যের কোনোকিছুই বাদ দেওয়া উচিত নয়।—১ করি. ১০:১২; ফিলি. ২:১২.
৪ খ্রিস্টীয়জগতের অপুষ্টিকর মিথ্যা মতবাদগুলোর বৈসাদৃশ্যে, যিহোবা যে-প্রচুর আধ্যাত্মিক সত্যগুলো জোগান, তাতে আমরা কতই না আনন্দিত! (যিশা. ৬৫:১৩, ১৪) আমাদের ‘কৃতজ্ঞ হইবার’ একটা উপায় হল, সম্মেলনটিকে যিহোবার কাছ থেকে শিক্ষা পাওয়ার জন্য এক সুযোগ হিসেবে দেখা। (কল. ৩:১৫) বক্তার প্রতি নয় কিন্তু বক্তৃতার প্রতি মনোযোগ দিন আর বার্তাটি আমাদের ‘সর্বমহান শিক্ষকের’ কাছ থেকে আসছে বলে মনে করুন। (যিশা. ৩০:২০, NW, ২১; ৫৪:১৩) পূর্ণ মনোযোগ দিন। মুখ্য বিষয়গুলোর সংক্ষিপ্ত নোট নেওয়ার গুরুত্বের কথা মনে রাখুন, যেটা আপনাকে কেবল প্রতিদিন সন্ধ্যায় কার্যক্রমের প্রধান বিষয়গুলোকে পুনরালোচনা করতেই সাহায্য করবে না কিন্তু সেইসঙ্গে পরে বছরের পরিচর্যা সভায় যে-মৌখিক পুনরালোচনা তালিকাবদ্ধ করা হবে, তাতে অংশ গ্রহণ করতে সাহায্য করবে। আপনি যা শিখেছেন সেটা কাজে লাগান।
৫ হর্মাগিদনের আগে প্রত্যেকটা সম্মেলনই, তা সেটা কোনো শরণার্থী শিবিরে, যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো দেশে কিংবা বড় আকারে আরও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে, যেখানেই অনুষ্ঠিত হোক না কেন, সেটা হল শয়তানের ওপর এক বিজয়! একতাবদ্ধ ভ্রাতৃসমাজ হিসেবে, জেলা সম্মেলনগুলোতে একত্রিত হওয়ার বিষয়ে আমাদের সুযোগগুলোকে আমরা উপলব্ধি করি। (যিহি. ৩৬:৩৮) আমরা আস্থা রাখতে পারি যে, আবারও একবার যিহোবা প্রেমের সঙ্গে ‘উপযুক্ত সময়ে খাদ্য’ জোগাবেন।—লূক ১২:৪২.
[অধ্যয়ন প্রশ্নাবলি]
১. আজকে কীভাবে যিহিষ্কেল ৩৬:২৯ পদ পরিপূর্ণতা লাভ করছে?
২. উপযুক্ত সময়ে আধ্যাত্মিক খাদ্য বন্টন করার জন্য যিহোবা কীভাবে জেলা সম্মেলনগুলোকে ব্যবহার করেছেন?
৩. আমাদের জেলা সম্মেলনে আধ্যাত্মিক ভোজ থেকে উপকৃত হতে আমাদেরকে অবশ্যই কী করতে হবে?
৪. যিহোবা যে-পর্যাপ্ত আধ্যাত্মিক খাদ্য জোগান, তার জন্য আমরা কীভাবে কৃতজ্ঞ হতে পারি?
৫. জেলা সম্মেলনগুলো আমাদেরকে আনন্দ করার কোন কারণগুলো প্রদান করে?
[৪ পৃষ্ঠার বাক্স]
যিহোবার মেজের প্রতি উপলব্ধি দেখান
▪ গভীর মনোযোগ দিন
▪ মুখ্য বিষয়গুলো লিখে রাখুন
▪ প্রতিদিন সন্ধ্যায় কার্যক্রমের প্রধান বিষয়গুলোকে পুনরালোচনা করুন
▪ আপনি যা শিখেছেন সেটা কাজে লাগান