এখনই প্রচার করার সময়!
১ “ঈশ্বরকে ভয় কর ও তাঁহাকে গৌরব প্রদান কর।” দূতের নির্দেশনায় এই বার্তা ‘প্রত্যেক জাতি ও বংশ ও ভাষা ও প্রজাবৃন্দের’ কাছে ঘোষিত হচ্ছে। কেন? “কেননা [ঈশ্বরের] বিচার-সময় উপস্থিত।” আজকে আমরা সেই ‘বিচার-সময়ে’ বাস করছি, যা বর্তমান বিধিব্যবস্থার ধ্বংসের মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাবে। তাই, লোকেদের এমন একজনের “ভজনা” বা উপাসনা করা অতি গুরুত্বপূর্ণ, “যিনি স্বর্গ, পৃথিবী, সমুদ্র ও জলের উনুই সকল উৎপন্ন করিয়াছেন।” আজকে সম্পাদিত হচ্ছে এমন আর কোনো কাজকেই গুরুত্ব বা তৎপরতার দিক দিয়ে “অনন্তকালীন সুসমাচার” ঘোষণার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে না। হ্যাঁ, এখনই প্রচার করার সময়!—প্রকা. ১৪:৬, ৭.
২ গত দশ বছরে, যিহোবার দাসেরা রাজ্য-প্রচার এবং শিষ্য-তৈরির কাজে প্রায় ১,২০০ কোটি ঘন্টা ব্যয় করেছে। অনেকে আধ্যাত্মিক শস্যক্ষেত্রে আরও পূর্ণরূপে অংশগ্রহণ করার জন্য তাদের জীবনে রদবদল করেছে। (মথি ৯:৩৭, ৩৮) উদাহরণস্বরূপ, গত বছর প্রতি মাসে গড়ে ৮,৫০,০০০রেরও বেশি প্রকাশক অগ্রগামী হিসেবে কাজ করেছে। এর জন্য নিয়মিত অগ্রগামীদের প্রতি মাসে প্রচার কাজে গড়ে ৭০ ঘন্টা ব্যয় করতে হয়। আর সহায়ক অগ্রগামীদের করতে হয় ৫০ ঘন্টা।
৩ যেভাবে অগ্রগামীর কাজ করা যায়: “সময় সঙ্কুচিত,” এই বিষয়টা বুঝতে পেরে অগ্রগামীরা তাদের জীবনকে সাধাসিধে রাখার প্রচেষ্টা করে। (১ করি. ৭:২৯, ৩১) তারা খরচ কমানোর উপায়গুলো বের করার চেষ্টা করে, যাতে তারা জাগতিক কাজে কম সময় ব্যয় করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কেউ কেউ বড় বাড়ি পরিবর্তন করে অপেক্ষাকৃত ছোট বাড়িতে চলে গিয়েছে। অন্যেরা অপ্রয়োজনীয় বস্তুগত সম্পদগুলো পরিত্যাগ করেছে। (মথি ৬:১৯-২১) এ ছাড়া, প্রায়ই তাদেরকে ব্যক্তিগত বিষয়গুলোর পিছনে ছোটা কমিয়ে দিতে হয়েছে। এই সমস্তকিছুই পরিচর্যায় আরও বেশি সময় এবং মনোযোগ দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে করা হয়। (ইফি. ৫:১৫, ১৬) অধ্যবসায়ের সঙ্গে, এক আত্মত্যাগমূলক মনোভাব নিয়ে এবং প্রার্থনা সহকারে যিহোবার ওপর নির্ভর করে অনেক প্রকাশক এক ব্যবহারিক তালিকা তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে, যা তাদেরকে অগ্রগামীর কাজ করতে সাহায্য করে।
৪ আপনি কি অগ্রগামীর কাজ করতে পারেন? সফল অগ্রগামীরা কীভাবে তা করতে সমর্থ হয়েছে, তা তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন না কেন? ক্ষেত্রের পরিচর্যায় তাদের সঙ্গে কাজ করুন এবং তাদের আনন্দের ভাগী হোন। অগ্রগামীর কাজ সম্বন্ধে সেই প্রবন্ধগুলো পড়ুন, যেগুলো আমাদের প্রকাশনাগুলোতে এসেছে। ব্যবহারিক লক্ষ্যগুলো স্থাপন করুন, যেগুলো অগ্রগামীর কাজ করার উপায় হিসেবে সাহায্য করতে পারে। কিছু প্রতিবন্ধকতা যদি বর্তমানে আপনাকে একজন অগ্রগামী হিসেবে সেবা করতে বাধা দেয়, তা হলে প্রার্থনায় যিহোবাকে সেগুলো জানান এবং সেগুলো সমাধান করতে আপনাকে সাহায্য করার জন্য তাঁকে বলুন।—হিতো. ১৬:৩.
৫ আশীর্বাদ এবং আনন্দগুলো: অগ্রগামীর কাজ ঈশ্বরের বাক্য ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আমাদের দক্ষতাকে উন্নত করে, ফলে আরও বেশি আনন্দ লাভ করা যায়। “ঈশ্বরের সত্যের বাক্য যথার্থরূপে ব্যবহার করতে সমর্থ হওয়া এক প্রকৃত আশীর্বাদ,” একজন যুবতী অগ্রগামী বোন মন্তব্য করেন। “আপনি যখন অগ্রগামীর কাজ করেন, তখন আপনি বেশি করে বাইবেল ব্যবহার করেন। আমি যখন ঘরে ঘরে যাই, তখন আমি সেই শাস্ত্রপদগুলোর কথা মনে করতে পারি, যেগুলো প্রত্যেক গৃহকর্তার জন্য উপযুক্ত।”—২ তীম. ২:১৫.
৬ অগ্রগামীর কাজ অনেক মূল্যবান দক্ষতা শেখায়, যেগুলো আমাদের জীবনকে উন্নত করতে পারে। এটা যুবক-যুবতীদের শিখতে সাহায্য করতে পারে যে, কীভাবে বিজ্ঞতার সঙ্গে সময় ব্যয় ও টাকাপয়সা ব্যবহার করা যায় এবং লোকেদের সঙ্গে মানিয়ে চলা যায়। অগ্রগামীর কাজ করার ফলে অনেকে জীবন সম্বন্ধে আরও বেশি আধ্যাত্মিক এক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলেছে। (ইফি. ৪:১৩) অধিকন্তু, অগ্রগামীদের প্রায়ই এটা দেখার বিশেষ সুযোগ রয়েছে যে, যিহোবার হাত তাদের সহবর্তী।—প্রেরিত ১১:২১; ফিলি. ৪:১১-১৩.
৭ অগ্রগামীর কাজ করার সর্বমহান আশীর্বাদগুলোর মধ্যে একটা হতে পারে, এটা আমাদের যিহোবার নিকটবর্তী হতে সাহায্য করে। এটা আমাদের পরীক্ষার মধ্যে টিকিয়ে রাখতে পারে। একজন বোন, যিনি একটার পর একটা চরম সমস্যা ভোগ করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন: “অগ্রগামীর কাজ করার মাধ্যমে যিহোবার সঙ্গে আমি যে-নিকট সম্পর্ক গড়ে তুলেছি, তা আমাকে এই সমস্তকিছুর মধ্যে ধৈর্য ধরতে সাহায্য করেছে।” তিনি আরও বলেছিলেন: “আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় আমি আমার জীবন পূর্ণসময় যিহোবার সেবায় অতিবাহিত করেছি। এটা আমাকে এমন উপায়গুলোতে নিজেকে বিলিয়ে দিতে সমর্থ করেছে, যেগুলো নিয়ে আমি কোনোদিন চিন্তাও করিনি।” (প্রেরিত ২০:৩৫, NW) অনুরূপভাবে আমরাও যেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রচার কাজ করার সময় আমাদের যথাসাধ্য করে প্রচুর আশীর্বাদ লাভ করি।—হিতো. ১০:২২.
[অধ্যয়ন প্রশ্নাবলি]
১. কেন এখনই প্রচার করার সময়?
২. কীভাবে যিহোবার দাসেরা দেখাচ্ছে যে, তারা সময়ের গুরুত্ব বোঝে?
৩. অগ্রগামীর কাজ করার জন্য প্রকাশকদের প্রায়ই কোন রদবদলগুলো করার প্রয়োজন হয়ে থাকে?
৪. ব্যবহারিক কোন পদক্ষেপগুলো আপনাকে অগ্রগামীর কাজ করার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে?
৫. অগ্রগামীর কাজ কীভাবে পরিচর্যায় আমাদের দক্ষতাকে উন্নত করতে সাহায্য করে?
৬. অগ্রগামীর কাজ কোন প্রশিক্ষণ জোগায়?
৭. কীভাবে অগ্রগামীর কাজ আমাদেরকে যিহোবার নিকটবর্তী হতে সাহায্য করে?