জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
জুলাই ৪-১০
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ শমূয়েল ১৮-১৯
“বর্সিল্লয়ের মতো হোন, বিনয়ী মনোভাব দেখান”
বর্সিল্লয় নিজের সীমাবদ্ধতা সম্বন্ধে অবগত একজন ব্যক্তি
নিঃসন্দেহে, দায়ূদ বর্সিল্লয়ের সাহায্যের জন্য অনেক কৃতজ্ঞ ছিলেন। এটা মনে হয় না যে, রাজা কেবল বস্তুগত চাহিদাগুলো জোগানোর মাধ্যমে তার অনুগ্রহের প্রতিদান দিতে চেয়েছিলেন। ধনী বর্সিল্লয়ের সেই ধরনের কোনো সাহায্যের প্রয়োজন ছিল না। দায়ূদ হয়তো সেই বয়স্ক ব্যক্তির প্রশংসনীয় গুণাবলির কারণে তাকে রাজদরবারে পেতে চেয়েছিলেন। সেখানে এক স্থায়ী আসন লাভ করা সম্মানের ব্যাপার হবে, বর্সিল্লয়কে রাজার বন্ধুত্ব উপভোগ করার বিশেষ সুযোগগুলো এনে দেবে।
বর্সিল্লয় নিজের সীমাবদ্ধতা সম্বন্ধে অবগত একজন ব্যক্তি
বর্সিল্লয়ের সিদ্ধান্তের একটা কারণ হতে পারে তার বার্ধক্য এবং এর সঙ্গে আসা সীমাবদ্ধতাগুলো। বর্সিল্লয় হয়তো মনে করেছিলেন যে, তিনি আর বেশি দিন বাঁচবেন না। (গীতসংহিতা ৯০:১০) দায়ূদকে সমর্থন করার জন্য তিনি তার যথাসাধ্য করেছিলেন কিন্তু সেইসঙ্গে বার্ধক্য তার সামনে যে-সীমাবদ্ধতাগুলো রেখেছিল, সেগুলো সম্বন্ধেও তিনি অবগত ছিলেন। বর্সিল্লয় মর্যাদা ও বিশিষ্টতা লাভের চিন্তাকে, বাস্তবসম্মতভাবে তার সামর্থ্যকে মূল্যায়ন করা থেকে তাকে বিরত করার সুযোগ দেননি। উচ্চাকাঙ্ক্ষী অবশালোমের বিপরীতে, বর্সিল্লয় বিজ্ঞতার সঙ্গে নম্রতা বা বিনয় প্রদর্শন করেছিলেন।—হিতোপদেশ ১১:২.
প্রহরীদুর্গ ০৭ ৭/১৫ ১৫ অনু. ১-২
বর্সিল্লয় নিজের সীমাবদ্ধতা সম্বন্ধে অবগত একজন ব্যক্তি
বর্সিল্লয়ের বিবরণ ভারসাম্য বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে তুলে ধরে। একদিকে, আমাদের পরিচর্যার বিশেষ সুযোগকে প্রত্যাখ্যান করা বা এগুলোর জন্য আকাঙ্ক্ষা করা এড়িয়ে চলা উচিত নয় এই কারণে যে, আমরা এক নির্ঝঞ্ঝাট জীবন চাই অথবা দায়িত্ব নিতে নিজেদের অযোগ্য বলে মনে করি। ঈশ্বর আমাদের ঘাটতি পূরণ করে দিতে পারেন, যদি আমরা শক্তি ও প্রজ্ঞার জন্য তাঁর ওপর নির্ভর করি।—ফিলিপীয় ৪:১৩; যাকোব ৪:১৭; ১ পিতর ৪:১১.
অন্যদিকে, আমাদের নিজেদের সীমাবদ্ধতাগুলো বুঝতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, একজন খ্রিস্টান হয়তো আধ্যাত্মিক কাজে ইতিমধ্যেই অনেক ব্যস্ত রয়েছেন। তিনি উপলব্ধি করেন যে, আরও কার্যভার গ্রহণ করার দ্বারা তিনি তার পরিবারের আধ্যাত্মিক ও বস্তুগত চাহিদাগুলোকে জোগানোর শাস্ত্রীয় দায়িত্বকে ঝুঁকির মুখে ফেলবেন। এইরকম এক পরিস্থিতিতে, তার জন্য ঠিক এখনই আরও অতিরিক্ত কার্যভার গ্রহণের সুযোগকে প্রত্যাখ্যান করা কি বিনয় ও যুক্তিবাদিতার এক চিহ্ন হবে না?—ফিলিপীয় ৪:৫, NW; ১ তীমথিয় ৫:৮.
অমূল্য রত্ন
‘নিরুপিত পথের শেষ পর্যন্ত দৌড়ান’
১৯ আপনি যদি কোনো কঠিন সমস্যাগুলোর সঙ্গে লড়াই করছেন অথবা আপনার যদি এটা মনে হয় যে, কেউ আপনার কষ্ট বোঝে না, তা হলে মফীবোশতের উদাহরণ নিয়ে ধ্যান করা আপনাকে উৎসাহিত করবে। (২ শমূ. ৪:৪) প্রতিবন্ধী ছিলেন বলে তাকে বিভিন্ন সমস্যা ভোগ করতে হয়েছিল। এ ছাড়া, রাজা দায়ূদ তাকে ভুল বুঝেছিলেন। যদিও মফীবোশতের কোনো দোষ ছিল না, তবুও তাকে এই সমস্যাগুলোর সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল। তা সত্ত্বেও, তার প্রতি যা খারাপ হয়েছিল, সেটার প্রতি মনোযোগ না দিয়ে বরং তার সাথে যা ভালো হয়েছিল, তিনি সেটার প্রতি মনোযোগ দিয়েছিলেন। তিনি রাজা দায়ূদের প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলেন কারণ অতীতে দায়ূদ তার প্রতি দয়া দেখিয়েছিলেন। (২ শমূ. ৯:৬-১০) তাই, যখন দায়ূদ তাকে ভুল বুঝেছিলেন, তখন তিনি পুরো বিষয়টাকে ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি দায়ূদের ভুলের কারণে অসন্তোষ পুষে রাখেননি এবং দায়ূদের এই কাজের জন্য তিনি যিহোবাকে দোষ দেননি। তিনি শুধুমাত্র এই বিষয়টার উপর মনোযোগ দিয়েছিলেন যে, যিহোবা দায়ূদকে রাজা হিসেবে নিযুক্ত করেছেন এবং কীভাবে তিনি দায়ূদকে সমর্থন করতে পারেন। (২ শমূ. ১৬:১-৪; ১৯:২৪-৩০) যিহোবা মফীবোশতের এই চমৎকার উদাহরণটা তাঁর বাক্য বাইবেলে লিপিবদ্ধ করেছেন যেন আমরা তা থেকে উপকৃত হতে পারি।—রোমীয় ১৫:৪.
জুলাই ১১-১৭
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ শমূয়েল ২০-২১
“যিহোবা সবসময় ন্যায়বিচার করেন”
প্রহরীদুর্গ ২২.০৩ ১৩ অনু. ৪, ৭
পাঠকদের কাছ থেকে প্রশ্ন
সেই চুক্তি রাজা শৌলের দিনেও কার্যকর ছিল। কিন্তু, শৌল সেই চুক্তির বিরুদ্ধে গিয়ে অনেক গিবিয়োনীয়কে হত্যা করেছিলেন। তাই, ‘শৌল ও তাহার কুল রক্তপাতের দোষী’ হয়েছিলেন। (২ শমূ. ২১:১) পরবর্তী সময়ে, যখন দায়ূদ রাজা হয়েছিলেন, তখন বেঁচে থাকা গিবিয়োনীয়েরা দায়ূদকে বলেছিল যে, শৌল কত বড়ো পাপ করেছেন! দায়ূদ তাদের জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, এই পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য তিনি কী করতে পারেন, যাতে ইজরায়েলের উপর যিহোবার আশীর্বাদ বজায় থাকে। তার কাছ থেকে সোনা-রুপো চাওয়ার পরিবর্তে গিবিয়োনীয়েরা দায়ূদকে বলেছিলেন, তিনি যেন শৌলের বংশধরদের মধ্য থেকে সাত জন পুরুষকে তাদের হাতে তুলে দেন কারণ শৌল গিবিয়োনীয়দের “বিনষ্ট” করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। দায়ূদ তাদের অনুরোধ মেনে নিয়েছিলেন।—২ শমূ. ২১:২-৬; গণনা. ৩৫:৩০, ৩১.
এই ঘটনা থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। ঈশ্বরের ব্যবস্থায় লেখা রয়েছে: “বাবার পাপের জন্য যেন সন্তানকে মেরে ফেলা না হয়।” (দ্বিতীয়. ২৪:১৬, NW) শৌলের পাপের জন্য তার ছেলে ও নাতিদের হত্যা করা হয়নি। এমনটা জানা যায় যে, গিবিয়োনীয়দের ধ্বংস করার ক্ষেত্রে এই সাত জন শৌলকে সমর্থন করেছিল। এই কারণে, দায়ূদ তাদের শাস্তি দিয়েছিলেন। ব্যবস্থায় এও লেখা ছিল: “যে পাপ করবে, তাকেই যেন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।” সেই সাত জন যদি নির্দোষ হত, তা হলে যিহোবা নিশ্চয়ই কোনো-না-কোনোভাবে এটা প্রকাশ করতেন যে, তাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে।
অমূল্য রত্ন
প্রহরীদুর্গ ১৩ ১/১৫ ৩১ অনু. ১৪
খ্রিস্টান প্রাচীনরা ‘আমাদের আনন্দের সহকারী’
১৪ শয়তান এবং তার প্রতিনিধিরা আমাদের পথে বিভিন্ন বাধা নিয়ে আসা সত্ত্বেও, পৃথিবীব্যাপী যিহোবার লোক হিসেবে আমরা আমাদের পরিচর্যা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ বড়ো বড়ো প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয়েছি কিন্তু যিহোবার ওপর পূর্ণ নির্ভরতা বজায় রেখে আমরা সেই ‘গলিয়াৎতুল্য’ প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর সঙ্গে লড়াই করেছি এবং সেগুলোকে জয় করেছি। কিন্তু, মাঝে মাঝে এই জগতের চাপের সঙ্গে ক্রমাগত লড়াই করার ফলে আমরা ক্লান্ত এবং নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ি। সেই দুর্বল অবস্থায় আমরা অরক্ষিত থাকি আর এমন চাপগুলোর দ্বারা ‘আঘাতপ্রাপ্ত’ হওয়ার বিপদের মুখে থাকি, যেগুলো অন্য সময়ে হলে আমরা হয়তো সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারতাম। এই ধরনের মুহূর্তগুলোতে, একজন প্রাচীনের দেওয়া সময়োপযোগী সমর্থন আমাদের আনন্দ এবং শক্তি ফিরে পেতে সাহায্য করতে পারে, যেমনটা অনেকের বেলায় হয়েছে। ৬০-এর কোঠার মাঝামাঝি একজন অগ্রগামী বোন বলেছিলেন: “কিছুদিন আগে, আমার শরীর তেমন ভালো ছিল না এবং ক্ষেত্রের পরিচর্যায় যেতে আমার ক্লান্ত লাগত। একজন প্রাচীন আমার দুর্বল অবস্থা লক্ষ করেছিলেন এবং আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। বাইবেলের একটা ঘটনার ওপর ভিত্তি করে আমাদের মধ্যে এক উৎসাহজনক কথাবার্তা হয়েছিল। তিনি আমাকে যে-পরামর্শ দিয়েছিলেন, আমি তা কাজে লাগিয়েছিলাম এবং উপকার লাভ করেছিলাম।” তিনি আরও বলেছিলেন: “এটা কতই না প্রেমময় যে, সেই প্রাচীন আমার দুর্বল অবস্থা লক্ষ করেছিলেন এবং আমাকে সাহায্য করেছিলেন!” হ্যাঁ, এটা জানা উৎসাহজনক যে, আমাদের জন্য এমন প্রাচীনরা রয়েছে, যারা আমাদের ওপর এক প্রেমপূর্ণ দৃষ্টি রাখে এবং প্রাচীনকালের অবীশয়ের মতো ‘আমাদিগকে সাহায্য করিবার’ জন্য প্রস্তুত থাকে।
জুলাই ১৮-২৪
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ শমূয়েল ২২
“সাহায্যের জন্য যিহোবার উপর নির্ভর করুন”
যিহোবার নিকটবর্তী হোন ১৯ অনু. ১১
আপনি কি সত্যিই ‘ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হইতে’ পারেন?
১১ ঈশ্বরের “শক্তির প্রাবল্য” আছে, তা পড়া এক কথা। (যিশাইয় ৪০:২৬) আর তিনি যেভাবে ইস্রায়েলকে লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে উদ্ধার করেছিলেন ও তারপর সেই জাতিকে ৪০ বছর প্রান্তরে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন, সেই সম্বন্ধে পড়া সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা। আপনি মনের চোখ দিয়ে দেখতে পারেন যে, তরঙ্গায়িত জল ভাগ হয়ে যাচ্ছে। আপনি কল্পনা করতে পারেন যে, সেই জাতি—সব মিলিয়ে সম্ভবত ৩০,০০,০০০—শুকনো সমুদ্রতল দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে, ঘনীভূত হয়ে যাওয়া জল দুদিকে বিশাল দেওয়ালের মতো দাঁড়িয়ে আছে। (যাত্রাপুস্তক ১৪:২১; ১৫:৮) আপনি প্রান্তরে ঈশ্বরের প্রতিরক্ষামূলক যত্নের প্রমাণ দেখতে পারেন। পাথরের মধ্য থেকে জলের ধারা বয়ে গিয়েছিল। সাদা বীজের মতো খাবার ভূমিতে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। (যাত্রাপুস্তক ১৬:৩১; গণনাপুস্তক ২০:১১) যিহোবা এখানে শুধু প্রকাশ করেননি যে তাঁর শক্তি আছে কিন্তু সেইসঙ্গে দেখিয়েছিলেন যে তিনি তাঁর লোকদের জন্য তা ব্যবহার করেন। এটা জানা কি আবারও আশ্বাস দেয় না যে আমাদের প্রার্থনা একজন শক্তিশালী ঈশ্বরের কাছে যায়, যিনি “আমাদের পক্ষে আশ্রয় ও বল। . . . সঙ্কটকালে অতি সুপ্রাপ্য সহায়”?—গীতসংহিতা ৪৬:১.
প্রহরীদুর্গ ১৩ ৬/১৫ ১৭ অনু. ৩-৪
যিহোবার আনুগত্য এবং ক্ষমাশীল মনোভাবকে উপলব্ধি করুন
৩ আনুগত্য হল এক হৃদয়গ্রাহী গুণ, যেটার অন্তর্ভুক্ত হল ভক্তি, বিশ্বস্ততা এবং অটল বশ্যতা। একজন অনুগত ব্যক্তি পরিবর্তনশীল নন। এর পরিবর্তে, তিনি প্রেমের সঙ্গে কারো (অথবা কিছুর) প্রতি আসক্ত থাকেন, এমনকী কঠিন পরিস্থিতিতেও সেই ব্যক্তি (বা বস্তুর) প্রতি নিবিড়ভাবে সংযুক্ত থাকেন। হ্যাঁ, যিহোবা হলেন সবচেয়ে “সাধু [“অনুগত,” NW]।”—প্রকা. ১৬:৫.
৪ যিহোবা কীভাবে আনুগত্য প্রকাশ করেন? তিনি কখনো তাঁর বিশ্বস্ত উপাসকদের পরিত্যাগ করেন না। এইরকম একজন উপাসক, রাজা দায়ূদ যিহোবার “সদয় [‘আনুগত্যপূর্ণ,’ NW]” মনোভাব সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। (পড়ুন, ২ শমূয়েল ২২:২৬.) দায়ূদের পরীক্ষার সময় যিহোবা অনুগতভাবে তাকে পরিচালনা দিয়েছিলেন, সুরক্ষা জুগিয়েছিলেন এবং উদ্ধার করেছিলেন। (২ শমূ. ২২:১) দায়ূদ জানতেন যে, যিহোবার আনুগত্যের সঙ্গে কেবল কথার চেয়ে আরও বেশি কিছু জড়িত। কেন যিহোবা দায়ূদের প্রতি আনুগত্যের সঙ্গে কাজ করেছিলেন? কারণ দায়ূদ নিজে ‘দয়াবান [“অনুগত,” NW]’ ব্যক্তি ছিলেন। যিহোবা তাঁর ‘সাধু [“অনুগত,” NW]’ উপাসকদের আনুগত্যকে মূল্যবান বলে গণ্য করেন এবং প্রতিদানে তিনি তাদের প্রতি আনুগত্যের সঙ্গে ব্যবহার করেন।—হিতো. ২:৬-৮.
অমূল্য রত্ন
প্রহরীদুর্গ ১২ ১১/১৫ ১৭ অনু. ৭
সর্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র ব্যক্তির মতো মনোভাব গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করুন
৭ ঈশ্বরের নম্রতার উদাহরণ গীতরচক দায়ূদের ওপর এক অসাধারণ প্রভাব ফেলেছিল। তিনি যিহোবার উদ্দেশ্যে গেয়েছিলেন: “তুমি আমাকে নিজ পরিত্রাণ-ঢাল দিয়াছ, তব কোমলতা আমাকে মহান করিয়াছে।” (২ শমূ. ২২:৩৬) ইস্রায়েলে দায়ূদের যেসমস্ত মহিমা ছিল, সেগুলোর কৃতিত্ব তিনি যিহোবার কোমলতা বা নম্রতার—ঈশ্বরের অবনত হওয়ার অথবা নিজেকে নম্র করার, তার প্রতি মনোযোগ প্রদান করার—ওপর আরোপ করেছিলেন। (গীত. ১১৩:৫-৭) আমাদের ক্ষেত্রেও কি একই বিষয় সত্য নয়? আমাদের প্রত্যেকের এমন কোন গুণ, সামর্থ্য এবং বিশেষ সুযোগ রয়েছে, যেগুলো আমরা যিহোবার কাছ থেকে ‘পাই নাই’? (১ করি. ৪:৭) সর্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র ব্যক্তির মতো আচরণ করেন এমন একজন ব্যক্তি এই অর্থে “মহান্” যে, তিনি যিহোবার একজন দাস হিসেবে আরও মূল্যবান হয়ে ওঠেন। (লূক ৯:৪৮) আসুন আমরা গভীরভাবে বিবেচনা করে দেখি যে, কীভাবে।
জুলাই ২৫-৩১
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ শমূয়েল ২৩-২৪
“আপনার বলিদান কি আসলেই এক বলিদান?”
অন্তর্দৃষ্টি-১ ১৪৬, ইংরেজি
অরৌণা
অরৌণা কোনো মূল্য ছাড়াই তার জায়গা আর সেইসঙ্গে বলিদানের জন্য ষাঁড় ও কাঠ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, দায়ূদ সেগুলো দাম না দিয়ে নিতে চাননি। ২ শমূয়েল ২৪:২৪ পদ দেখায়, দায়ূদ ৫০ শেকল রুপো দিয়ে শস্য মাড়াই করার জায়গা ও ষাঁড় কিনে নিয়েছিলেন। কিন্তু, ১ বংশাবলি ২১:২৫ পদে বলা আছে, দায়ূদ সেই জায়গার জন্য ৬০০ শেকল সোনা দিয়েছিলেন। কেন এই পার্থক্য? ২ শমূয়েল বইয়ে বলা হয়েছে, দায়ূদ কেবল পশু, কাঠ এবং বেদি তৈরি করার জন্য ছোটো একটা জায়গা কেনার মূল্য দিয়েছিলেন। কিন্তু, ১ বংশাবলি বইয়ে বলা হয়েছে, অনেক পরে সেই একই জায়গায় মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল। (১বংশা ২২:১-৬; ২বংশা ৩:১) যেখানে পুরো মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল, সেই জায়গা যেহেতু অনেক বড়ো ছিল, তাই দায়ূদ সেই বড়ো জায়গা কেনার জন্য ৬০০ শেকল সোনা দিয়েছিলেন। আগে তিনি বেদি তৈরি করার জন্য ছোটো যে-জায়গা কিনেছিলেন, সেটার জন্য দেননি।
“সত্যের অবয়ব” থেকে শিখুন
৮ একজন ইস্রায়েলীয়ের বলিদান যদি যিহোবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতার এক স্বেচ্ছাকৃত প্রকাশ হতো অথবা হোমবলি উৎসর্গের মতো তাঁর অনুমোদনের এক অনুরোধ হতো, তাহলে উপযুক্ত পশু বাছাই করা সম্ভবত কোনো কঠিন বিষয় ছিল না। সেই উপাসক যিহোবাকে তার সবচেয়ে উত্তমটা দিতে পেরে আনন্দিত হতো। বর্তমানে, খ্রিস্টানরা মোশির ব্যবস্থা অনুযায়ী আক্ষরিক বলিদান করে না, তবে তারা এই অর্থে বলিদান করে যে, যিহোবাকে সেবা করার জন্য তারা তাদের সময়, শক্তি এবং সম্পদ ব্যবহার করে। প্রেরিত পৌল খ্রিস্টীয় আশা সম্বন্ধে ‘স্বীকার’ করাকে এবং ‘উপকার ও সহভাগিতার কার্য্যকে’ এমন বলি হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন, যা ঈশ্বরকে খুশি করে। (ইব্রীয় ১৩:১৫, ১৬) যে-মনোভাব নিয়ে যিহোবার লোকেরা এই ধরনের কাজগুলো করে থাকে, তা দেখায় যে, ঈশ্বর তাদেরকে যা-কিছু প্রদান করেছেন, সেগুলোর জন্য তারা কতটা কৃতজ্ঞ। তাই, বর্তমানে যারা খ্রিস্টীয় সেবায় রত হয় এবং প্রাচীনকালে যারা স্বেচ্ছাকৃতভাবে বলিদান করত, তাদের মনোভাব ও উদ্দেশ্যের মধ্যে এক সাদৃশ্য রয়েছে।
অমূল্য রত্ন
দ্বিতীয় শমূয়েল বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
২৩:১৫-১৭. জীবন ও রক্তের বিষয়ে ঈশ্বরের আইনের প্রতি দায়ূদের এত গভীর শ্রদ্ধা ছিল যে, এই পরিস্থিতিতে তিনি এমনকি সেই কাজ করা থেকে বিরত হয়েছিলেন, যা এমনকি আইন লঙ্ঘন করার সমরূপ বলে মনে হয়েছিল। ঈশ্বরের সমস্ত আদেশের প্রতি আমাদেরও এই ধরনের মনোভাব গড়ে তুলতে হবে।
আগস্ট ১-৭
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ১ রাজাবলি ১-২
“আপনি কি আপনার ভুলগুলো থেকে শেখেন?”
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৯৮৭ অনু. ৪, ইংরেজি
শলোমন
আদোনিয় এবং তার সঙ্গে যে-চক্রান্তকারীরা ছিল, তারা যখন লোকদের চিৎকার করে এই কথা বলতে শুনেছিল: “রাজা শলোমন দীর্ঘজীবী হোন!” তখন তারা ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। শলোমনের রাজত্বের সময় শান্তি ছিল। আর প্রতিশোধ না নিয়ে শাসন শুরু করার মাধ্যমে তিনি সেটার প্রমাণ দিয়েছিলেন। আদোনিয় পালিয়ে গিয়ে পবিত্র স্থানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। শলোমন তাকে বলেছিলেন, আদোনিয় যদি “ভালো মানুষ হয়ে থাকে,” তা হলেই শলোমন তাকে হত্যা করবেন না।—১রাজা ১:৪১-৫৩, NW.
প্রথম রাজাবলি বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
১:৪৯-৫৩; ২:১৩-২৫—আদোনিয়কে ক্ষমা করে দেওয়ার পরেও কেন শলোমন তাকে বধ করিয়েছিলেন? অবীশগকে স্ত্রী হিসেবে তাকে দেওয়ার জন্য বৎশেবাকে দিয়ে রাজার কাছে বলানোর বিষয়ে আদোনিয়ের অনুরোধের পিছনে প্রকৃত অভিপ্রায় কী ছিল, তা যদিও বৎশেবা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিলেন কিন্তু শলোমন তা বুঝতে পেরেছিলেন। যদিও দায়ূদ অবীশগের সঙ্গে যৌনসম্পর্ক করেননি কিন্তু সুন্দরী অবীশগকে দায়ূদের উপপত্নী হিসেবে গণ্য করা হতো। সেই সময়কার রীতি অনুযায়ী তিনি কেবলমাত্র দায়ূদের বৈধ উত্তরাধিকারী হতে পারতেন। আদোনিয় হয়তো মনে করেছিলেন যে, অবীশগকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করার মাধ্যমে তিনি আবারও সিংহাসন দখল করতে পারবেন। আদোনিয়ের অনুরোধ রাজপদ পাওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে স্পষ্ট করেছিল বলে শলোমন সেই ক্ষমা বাতিল করেছিলেন।
অমূল্য রত্ন
প্রথম রাজাবলি বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
২:৩৭, ৪১-৪৬. একজন ব্যক্তি সীমা অতিক্রম করেও অদণ্ডিত থাকবে, এটা চিন্তা করা কত বিপদজনক! যারা ‘জীবনে যাইবার সঙ্কীর্ণ দ্বার’ অনুসরণ করা থেকে স্বেচ্ছায় পথভ্রষ্ট হয়, তারা সেই মূর্খতাপূর্ণ সিদ্ধান্তের পরিণতি ভোগ করবে।—মথি ৭:১৪.
আগস্ট ৮-১৪
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ১ রাজাবলি ৩-৪
“প্রজ্ঞা খুবই মূল্যবান”
প্রহরীদুর্গ ১১ ১২/১৫ ৮-৯ অনু. ৪-৬
তিনি কি আপনার জন্য এক উত্তম উদাহরণ, নাকি এক সাবধানবাণীমূলক উদাহরণ?
৪ শলোমনের রাজত্বের শুরুতে, ঈশ্বর তাকে স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন এবং একটা যাচ্ঞা করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তার অভিজ্ঞতা যে কম, সেই সম্বন্ধে অবগত থাকায় শলোমন প্রজ্ঞা চেয়েছিলেন। (পড়ুন, ১ রাজাবলি ৩:৫-৯.) রাজা ধনসম্পদ এবং গৌরব না চেয়ে বরং প্রজ্ঞা চেয়েছিলেন বলে ঈশ্বর খুশি হয়ে শলোমনকে “জ্ঞানশালী ও বুঝিবার চিত্ত”—ও সেইসঙ্গে সমৃদ্ধি—দান করেছিলেন। (১ রাজা. ৩:১০-১৪) যিশুর কথা অনুযায়ী, শলোমনের প্রজ্ঞা এতটাই উল্লেখযোগ্য ছিল যে, শিবার রানি সেই সম্বন্ধে শুনতে পেয়েছিলেন এবং নিজে সেই সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা লাভ করার জন্য দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে এসেছিলেন।—১ রাজা. ১০:১, ৪-৯.
৫ ব্যক্তিগতভাবে আমরা অলৌকিক উপায়ে প্রজ্ঞা লাভ করার আশা করি না। শলোমন বলেছিলেন, “সদাপ্রভুই প্রজ্ঞা দান করেন” কিন্তু তিনি লিখেছিলেন যে, ঈশ্বরীয় গুণাবলি অর্জন করার জন্য আমাদের কঠোর প্রচেষ্টা করা উচিত: “প্রজ্ঞার দিকে কর্ণপাত কর, . . . বুদ্ধিতে মনোনিবেশ কর।” সেই সম্বন্ধে বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি এই অভিব্যক্তিগুলো ব্যবহার করেছিলেন যেমন, প্রজ্ঞার জন্য “আহ্বান কর,” “অন্বেষণ কর” এবং “অনুসন্ধান কর।” (হিতো. ২:১-৬) স্পষ্টতই, আমরা প্রজ্ঞা অর্জন করতে পারি।
৬ এটা জিজ্ঞেস করা ভালো যে, ‘ঐশিক প্রজ্ঞাকে মূল্যবান বলে গণ্য করার ক্ষেত্রে আমি কি শলোমনের উদাহরণে মনোযোগ দিচ্ছি?’ অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে অনেকে তাদের চাকরি এবং আর্থিক বিষয়ের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছে অথবা কোন ধরনের ও কতটা শিক্ষা লাভ করবে এমন সিদ্ধান্তগুলোর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। আপনার নিজের ও আপনার পরিবার সম্বন্ধে কী বলা যায়? আপনার বাছাইগুলো কি ইঙ্গিত দেয় যে, আপনি ঐশিক প্রজ্ঞাকে মূল্যবান বলে গণ্য করেন এবং এর অন্বেষণ করেন? আপনার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু অথবা লক্ষ্যগুলো রদবদল করা কি আপনাকে আরও বেশি প্রজ্ঞা অর্জন করার সুযোগ দেবে? সত্যিই, প্রজ্ঞা অর্জন এবং তা কাজে লাগানো আপনার স্থায়ী মঙ্গল নিয়ে আসে। শলোমন লিখেছিলেন: “অতএব তুমি ধার্ম্মিকতা ও বিচার বুঝিবে, ন্যায় ও সমস্ত উত্তম পথ বুঝিবে।”—হিতো. ২:৯.
অমূল্য রত্ন
যিহোবা একজন চুক্তির ঈশ্বর
১৫ অব্রাহামের বংশধরদের ব্যবস্থার অধীনে একটি জাতি হিসাবে সংগঠিত করার মাধ্যমে, যিহোবা কূলপতির সাথে কৃত তাঁর প্রতিজ্ঞানুসারে তাদের আশীর্বাদ করেছিলেন। সা.কা.পূ. ১৪৭৩ সালে, মোশির উত্তরাধিকারী, যিহোশূয় ইস্রায়েলকে কনানে নিয়ে গিয়েছিলেন। গোষ্ঠীগুলির মধ্যে দেশের উত্তরকালীন বিভাজন, অব্রাহামের বংশকে দেশ দেওয়া সম্বন্ধীয় যিহোবার প্রতিজ্ঞাকে পরিপূর্ণ করেছিল। ইস্রায়েল যখন বিশ্বস্ত ছিল, তখন যিহোবা তাদের শত্রুদের উপর তাদের জয়ী করা সম্বন্ধীয় তাঁর প্রতিজ্ঞাটি পরিপূর্ণ করেছিলেন। এটি বিশেষভাবে রাজা দায়ূদের রাজত্বকালে সত্য হয়েছিল। দায়ূদের পুত্র শলোমনের সময়ের মধ্যে, অব্রাহামের সাথে কৃত চুক্তির তৃতীয় দিকটি পরিপূর্ণ হয়েছিল। “যিহূদা ও ইস্রায়েল সমুদ্রতীরস্থ বালুকার ন্যায় বহুসংখ্যক ছিল, তাহারা ভোজন পান ও আমোদ করিত।”—১ রাজাবলি ৪:২০.
আগস্ট ১৫-২১
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ১ রাজাবলি ৫-৬
“তারা তাদের শক্তি ও হৃদয় দিয়ে মন্দির নির্মাণ করেছিল”
‘লিবানোনের এরস বৃক্ষের মতো বিশাল’
এরস গাছের আকার বিরাট হওয়ায় এবং এর কাঠ টেকসই বলে বাড়িঘর, জাহাজ এবং আসবাবপত্র তৈরির জন্য এটা দীর্ঘকাল ধরে বিখ্যাত। এরস গাছের সুবাস ও এর কাঠের লাল রঙ খুবই আকর্ষণীয় আর এতে রজনের মাত্রা বেশি থাকে বলে এটা অনেক দিন টেকে এবং পোকায়ও কাটে না।
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৪২৪, ইংরেজি
দেবদারু গাছ
মন্দির নির্মাণ কাজের জন্য প্রচুর দেবদারু গাছের কাঠের প্রয়োজন ছিল। আর এই কারণে হাজার হাজার কর্মীর দরকার ছিল। তাদের গাছগুলো কেটে সেগুলো সোর অথবা সীদোন নগরে পাঠাতে হত, কারণ সেই নগরগুলো ভূমধ্যসাগরের কাছে অবস্থিত ছিল। সেখানে কাঠগুলো দিয়ে তাদের ভেলা তৈরি করে সেগুলো উপকূল এলাকা দিয়ে সম্ভবত যাফোতে নিয়ে যেতে হত। সেখান থেকে এই ভারি কাঠগুলোকে জেরুসালেমে পাঠাতে হত।—১রাজা ৫:৬-১৮; ২বংশা ২:৩-১০.
অন্তর্দৃষ্টি-২ ১০৭৭ অনু. ১, ইংরেজি
মন্দির
শলোমন ইজরায়েলের মধ্য থেকে ৩০,০০০ জন মজুরকে নিযুক্ত করেছিলেন। তিনি তাদের মধ্য থেকে প্রতি মাসে ১০,০০০ জনকে পালাক্রমে লেবাননে পাঠাতেন। তারা এক মাস লেবাননে কাজ করত আর দু-মাস নিজেদের বাড়িতে থাকত। (১রাজা ৫:১৩, ১৪) সেই দেশের বিদেশিদের মধ্য থেকে তিনি ৭০,০০০ জনকে সাধারণ মজুর হিসেবে এবং পর্বতে পাথর কাটে এমন ৮০,০০০ জন মজুরকে নিযুক্ত করেন। (১রাজা ৫:১৫; ৯:২০, ২১; ২বংশা ২:২) এ ছাড়া, মজুরদের কাজের দেখাশোনা করার জন্য শলোমন ৫৫০ জন কর্মকর্তা এবং তাদের সহযোগী হিসেবে ৩,৩০০ জন পুরুষকে নিযুক্ত করেন। (১রাজা ৫:১৬; ৯:২২, ২৩) এদের মধ্যে ২৫০ জন ছিল ইজরায়েলীয় এবং ৩,৬০০ জন ছিল বিদেশি, যারা ইজরায়েলে বাস করত।—২বংশা ২:১৭, ১৮.
অমূল্য রত্ন
সচেতন থাক! ৫/১২ ১৭, বাক্স, ইংরেজি
বাইবেল—সঠিক ভবিষ্যদ্বাণীর এক বই, ভাগ ১
একেবারে সঠিক বিবরণ
বাইবেলে নির্দিষ্ট ঘটনাগুলো কোন বছরে ঘটেছিল, সেটার একেবারে সঠিক বিবরণ রয়েছে। এই বিবরণগুলো যে কতটা মূল্যবান, তা ১ রাজাবলি ৬:১ (NW) পদের উদাহরণ থেকে দেখা যেতে পারে। এখানে সেই সময়ের কথা বলা আছে, যখন রাজা শলোমন জেরুসালেমে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন। এই পদে বলা আছে: “শলোমন ইজরায়েলের উপর রাজা হওয়ার চতুর্থ বছরের সিব মাসে অর্থাৎ দ্বিতীয় মাসে যিহোবার জন্য গৃহ নির্মাণ করতে শুরু করলেন। এটা ছিল ইজরায়েলীয়দের মিশর থেকে বের হয়ে আসার ৪৮০তম বছর।”
বাইবেল অনুযায়ী শলোমনের রাজত্বের চতুর্থ বছর ছিল খ্রিস্টপূর্ব ১০৩৪ সাল। ৪৮০তম বছর থেকে পিছন দিকে গণনা করলে ৪৭৯ বছর পর খ্রিস্টপূর্ব ১৫১৩ সাল আসে, ঠিক যে-বছর ইজরায়েল মিশর থেকে বের হয়ে এসেছিল।
আগস্ট ২২-২৮
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ১ রাজাবলি ৭
“দুটো স্তম্ভ থেকে আমরা কী শিখতে পারি?”
প্রহরীদুর্গ ১৩ ১২/১ ১৩ অনু. ৩, ইংরেজি
“পর্বত খুঁড়ে তুমি তামা বের করবে”
রাজা শলোমন জেরুসালেমে মন্দির নির্মাণের জন্য প্রচুর পরিমাণে তামা ব্যবহার করেছিলেন। এগুলোর বেশিরভাগই দায়ূদ সিরিয়াকে পরাজিত করে লাভ করেছিলেন। (১ বংশাবলি ১৮:৬-৮) তামার তৈরি ‘ছাঁচে ঢালা সাগর’ হল এক বিশাল জলের পাত্র, যা যাজকেরা হাত-পা ধোয়ার জন্য ব্যবহার করত। সেটাতে ৬৬,০০০ লিটার জল ধরত আর সেটার ওজন ছিল প্রায় ৩০ টন। (১রাজা ৭:২৩-২৬, ৪৪-৪৬) আর মন্দিরের প্রবেশদ্বারে তামার তৈরি দুটো বিশাল স্তম্ভ ছিল। প্রতিটা স্তম্ভের উচ্চতা ছিল ২৬ ফুট, ব্যাস ৫.৬ ফুট, দেওয়ালের পুরু ৩ ইঞ্চি আর সেটা ফাঁপা ছিল। দুটো তামার স্তম্ভের উপরে একটা করে চূড়া ছিল, যেগুলো প্রায় ৭.৩ ফুট উঁচু ছিল। (১ রাজাবলি ৭:১৫, ১৬; ২ বংশাবলি ৪:১৭) এই সমস্ত কিছু তৈরির করার জন্য সত্যিই প্রচুর পরিমাণে তামার প্রয়োজন ছিল।
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৩৪৮, ইংরেজি
বোয়স, ২
উত্তর দিকের বড়ো যে-তামার স্তম্ভ ছিল, সেটার নাম হল বোয়স, সম্ভবত এর অর্থ হল, “শক্তির সঙ্গে।” আর দক্ষিণ দিকে যে-স্তম্ভ ছিল, সেটার নাম হল যাখীন, যেটার অর্থ “তিনি [অর্থাৎ যিহোবা] যেন দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করেন।” তাই, একজন ব্যক্তি যখন মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে দুটো স্তম্ভের নাম একসঙ্গে ডান দিক থেকে বাম দিকে পড়তেন, তখন তিনি বুঝতে পারতেন, এর অর্থ হল ‘[যিহোবা] যেন [মন্দিরকে] দৃঢ়ভাবে ও শক্তির সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেন।‘—১রাজা ৭:১৫-২১.
অমূল্য রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ২৬৩, ইংরেজি
স্নান
যিহোবা চান যেন তাঁর লোকেরা শারীরিকভাবে শুচি থাকে। মন্দিরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে যে-ব্যবস্থাগুলো করা হয়েছিল, তা থেকে এটা বোঝা যায়। মন্দিরের মধ্যে তামার তৈরি এক বিশাল পাত্র ছিল আর সেখানে রাখা জল দিয়ে যাজকদের হাত-পা ধুতে হত। (২বংশা ৪:২-৬) মহাযাজককে বলা হয়েছিল, যেন তিনি প্রায়শ্চিত্তের দিনে দু-বার স্নান করেন। (লেবীয় ১৬:৪, ২৩, ২৪) যে-যাজকেরা ত্যাগের জন্য ছাগল ছেড়ে আসত, তাদের পুনরায় শিবিরে প্রবেশ করার আগে স্নান করতে হতো এবং তাদের কাপড় ধুতে হত। এই আইন সেই লোকদেরও মানতে হত, যারা বলিদানকৃত পশুর অবশিষ্ট অংশ এবং লাল রঙের গরুকে শিবিরের বাইরে নিয়ে যেত।—লেবীয় ১৬:২৬-২৮; গণনা ১৯:২-১০.
আগস্ট ২৯–সেপ্টেম্বর ৪
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ১ রাজাবলি ৮
“শলোমন সকলের সামনে নম্রভাবে এবং হৃদয় থেকে প্রার্থনা করেছিলেন”
প্রহরীদুর্গ ০৯ ১১/১৫ ৯ অনু. ৯-১০
বাইবেল অধ্যয়নের মাধ্যমে আপনার প্রার্থনার মানকে উন্নত করুন
৯ আমরা যদি চাই যে, ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনা শুনুন, তাহলে আমাদের হৃদয় থেকে প্রার্থনা করতে হবে। সা.কা.পূ. ১০২৬ সালে যিহোবার মন্দির উদ্বোধনের জন্য যিরূশালেমে একত্রিত দলের সামনে শলোমন এক আন্তরিক প্রার্থনা করেছিলেন, যা ১ রাজাবলি ৮ অধ্যায়ে লিপিবদ্ধ রয়েছে। নিয়ম-সিন্দুককে অতি পবিত্র স্থানে রাখার এবং যিহোবার মেঘ মন্দিরকে পূর্ণ করার পর, শলোমন যিহোবার প্রশংসা করেছিলেন।
১০ শলোমনের প্রার্থনাটা অধ্যয়ন করুন এবং সেটাতে অন্তঃকরণ বা হৃদয় সম্বন্ধে যে-উল্লেখগুলো রয়েছে, সেগুলো লক্ষ করুন। শলোমন স্বীকার করেছিলেন যে, একমাত্র যিহোবাই একজন ব্যক্তির হৃদয় জানেন। (১ রাজা. ৮:৩৮, ৩৯) সেই একই প্রার্থনা দেখায় যে, যে-পাপী ‘তাহার সমস্ত অন্তঃকরণের সহিত ঈশ্বরের কাছে ফিরিয়া আইসে,’ তার জন্য আশা রয়েছে। যদি কোনো শত্রু ঈশ্বরের লোকেদের বন্দি করত, তাহলে সেই লোকেদের অনুরোধগুলো তখনই শোনা হতো, যখন তাদের হৃদয় যিহোবার প্রতি একাগ্র থাকত। (১ রাজা. ৮:৪৮, ৫৮, ৬১) তাই নিশ্চিতভাবেই, আপনার প্রার্থনাগুলো হৃদয় থেকে হওয়া উচিত।
প্রহরীদুর্গ ৯৯ ১/১৫ ১৭ অনু. ৭-৮
শুচি হাত তুলে প্রার্থনা করুন
৭ আমরা সকলের সামনে কিংবা ব্যক্তিগতভাবে যেভাবেই প্রার্থনা করি না কেন, যে গুরুত্বপূর্ণ শাস্ত্রীয় নীতিটি আমাদের মনে রাখতে হবে তা হল আমাদের প্রার্থনায় অবশ্যই নম্র মনোভাব দেখাতে হবে। (২ বংশাবলি ৭:১৩, ১৪) যিরূশালেমে যিহোবার মন্দির উৎসর্গকালে সকলের সামনে প্রার্থনা করার সময় রাজা শলোমন নম্র মনোভাব দেখিয়েছিলেন। পৃথিবীতে সর্বকালের সবচেয়ে সেরা যে অট্টালিকাগুলো নির্মিত হয়েছিল তার মধ্যে একটা অট্টালিকার নির্মাণ কাজ শলোমন সবেমাত্র শেষ করেছিলেন। কিন্তু তারপরও তিনি নম্রভাবে প্রার্থনা করেছিলেন: “ঈশ্বর কি সত্য সত্যই পৃথিবীতে বাস করিবেন? দেখ, স্বর্গ ও স্বর্গের স্বর্গ তোমাকে ধারণ করিতে পারে না, তবে আমার নির্ম্মিত এই গৃহ কি পারিবে?”—১ রাজাবলি ৮:২৭.
৮ শলোমনের মতো আমাদেরও সকলের সামনে প্রার্থনা করার সময় নম্র হওয়া উচিত। যদিও আমাদের নিজেদেরকে অতি ধার্মিক দেখানো উচিত নয় তবুও গলার স্বরের মাধ্যমেও নম্রতা দেখানো যেতে পারে। নম্র প্রার্থনার অর্থ এই নয় যে আমাদের প্রার্থনায় খুব সুন্দর সুন্দর শব্দ বা নাটকীয় ভাষা ব্যবহার করতে হবে। এইরকম প্রার্থনায় যিনি প্রার্থনা করছেন তাকে নয় বরং যার কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে তাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। (মথি ৬:৫) প্রার্থনায় আমরা কী বলি তার মাধ্যমেও নম্রতা দেখানো যেতে পারে। আমরা যদি নম্রভাবে প্রার্থনা করি, তবে আমরা এমনভাবে করব না যাতে মনে হয় যে আমরা চাই ঈশ্বর যেন কিছু বিষয় আমাদের ইচ্ছামতো করেন। পরিবর্তে, আমরা যিহোবাকে এমনভাবে কাজ করার জন্য অনুরোধ করব যেন তা তাঁর পবিত্র ইচ্ছার সঙ্গে মিল রেখে হয়। গীতরচক সঠিক মনোভাব দেখিয়েছিলেন যখন তিনি অনুরোধ করেছিলেন: “আহা! সদাপ্রভু, বিনয় করি, পরিত্রাণ কর; আহা! সদাপ্রভু, বিনয় করি, সৌভাগ্য [সাফল্য] দেও।”—গীতসংহিতা ১১৮:২৫; লূক ১৮:৯-১৪.
অমূল্য রত্ন
যিহোবার গৃহের জন্য উদ্যোগী হোন!
৪ প্রাচীন ইস্রায়েলে, যিরূশালেমে অবস্থিত মন্দিরই ছিল ঈশ্বরের গৃহ। অবশ্য, যিহোবা আক্ষরিকভাবে সেখানে বাস করতেন না। তিনি ঘোষণা করেছিলেন: “স্বর্গ আমার সিংহাসন, পৃথিবী আমার পাদপীঠ; তোমরা আমার জন্য কিরূপ গৃহ নির্ম্মাণ করিবে? আমার বিশ্রাম স্থান কোন্ স্থান?” (যিশা. ৬৬:১) তা সত্ত্বেও, শলোমনের রাজত্বের সময় নির্মিত মন্দির যিহোবার উপাসনার কেন্দ্রস্থল হিসেবে কাজ করেছিল, যেখানে প্রার্থনা করা হতো।—১ রাজা. ৮:২৭-৩০.