ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w13 ৬/১৫ পৃষ্ঠা ১৭-২১
  • যিহোবার আনুগত্য এবং ক্ষমাশীল মনোভাবকে উপলব্ধি করুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যিহোবার আনুগত্য এবং ক্ষমাশীল মনোভাবকে উপলব্ধি করুন
  • ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যিহোবা অনুগত
  • যিহোবার আনুগত্যকে অনুকরণ করুন
  • যিহোবা ক্ষমাশীল
  • যিহোবার ক্ষমাশীল মনোভাবকে অনুকরণ করুন
  • যিহোবার গুণাবলি পূর্ণরূপে উপলব্ধি করে চলুন
  • “একমাত্র তুমিই অনুগত”
    যিহোবার নিকটবর্তী হোন
  • এক নিষ্ঠাবান্‌ ব্যক্তিকে দেখুন!
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • নিষ্ঠার চ্যালেঞ্জের সাথে মোকাবিলা করা
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • একজন ঈশ্বর যিনি “ক্ষমা করার জন্য তৈরি”
    যিহোবার নিকটবর্তী হোন
আরও দেখুন
২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w13 ৬/১৫ পৃষ্ঠা ১৭-২১

যিহোবার আনুগত্য এবং ক্ষমাশীল মনোভাবকে উপলব্ধি করুন

“হে প্রভু, তুমি মঙ্গলময় ও ক্ষমাবান্‌, এবং যাহারা তোমাকে ডাকে, তুমি সেই সকলের পক্ষে দয়াতে মহান্‌।”—গীত. ৮৬:৫.

আপনি কি ব্যাখ্যা করতে পারেন?

  • কোন কোন উপায়ে আমরা যিহোবার আনুগত্যকে অনুকরণ করতে পারি?

  • কীভাবে আমরা যিহোবার ক্ষমাশীল মনোভাবকে অনুকরণ করতে পারি?

  • কেন আপনি যিহোবার গুণাবলির প্রতি আপনার উপলব্ধি গভীর করে চলতে চান?

১, ২. (ক) কেন আমরা এমন বন্ধুদের প্রতি উপলব্ধি দেখাই, যারা অনুগত এবং ক্ষমাশীল? (খ) আমরা কোন প্রশ্নগুলো বিবেচনা করব?

একজন প্রকৃত বন্ধুকে আপনি কীভাবে বর্ণনা করবেন? “আমার কাছে একজন প্রকৃত বন্ধু হল এমন কেউ, যিনি সবসময় আপনার জন্য প্রস্তুত এবং যিনি সেই সময় আপনাকে ক্ষমা করেন, যখন আপনি ভুল করেন,” অ্যাশলি নামে একজন খ্রিস্টান বোন বলেন। আমরা সকলেই সেই বন্ধুদের প্রতি উপলব্ধি দেখাই, যারা অনুগত এবং ক্ষমাশীল। তারা আমাদের সুরক্ষিত বোধ করতে এবং প্রেম অনুভব করতে সাহায্য করে।—হিতো. ১৭:১৭.

২ যিহোবা হলেন আমাদের সবচেয়ে অনুগত এবং ক্ষমাশীল বন্ধু। গীতরচক বিষয়টাকে এভাবে বর্ণনা করেছেন: “হে প্রভু, তুমি মঙ্গলময় ও ক্ষমাবান্‌, এবং যাহারা তোমাকে ডাকে, তুমি সেই সকলের পক্ষে দয়াতে [বা অনুগত প্রেমে] মহান্‌।” (গীত. ৮৬:৫) অনুগত এবং ক্ষমাশীল হওয়ার অর্থ কী? যিহোবা কীভাবে এই চমৎকার গুণাবলি প্রদর্শন করেন? আর আমরা কীভাবে তাঁর উদাহরণ অনুকরণ করতে পারি? এর উত্তরগুলো আমাদের সর্বোত্তম বন্ধু যিহোবার প্রতি আমাদের ভালোবাসা গভীর করতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া, এগুলো পরস্পরের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বকেও শক্তিশালী করার জন্য আমাদের সাহায্য করবে।—১ যোহন ৪:৭, ৮.

যিহোবা অনুগত

৩. অনুগত হওয়ার অর্থ কী?

৩ আনুগত্য হল এক হৃদয়গ্রাহী গুণ, যেটার অন্তর্ভুক্ত হল ভক্তি, বিশ্বস্ততা এবং অটল বশ্যতা। একজন অনুগত ব্যক্তি পরিবর্তনশীল নন। এর পরিবর্তে, তিনি প্রেমের সঙ্গে কারো (অথবা কিছুর) প্রতি আসক্ত থাকেন, এমনকী কঠিন পরিস্থিতিতেও সেই ব্যক্তি (বা বস্তুর) প্রতি নিবিড়ভাবে সংযুক্ত থাকেন। হ্যাঁ, যিহোবা হলেন সবচেয়ে “সাধু [“অনুগত,” NW]।”—প্রকা. ১৬:৫.

৪, ৫. (ক) কীভাবে যিহোবা আনুগত্য প্রকাশ করেন? (খ) যিহোবার আনুগত্যের কাজ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার মাধ্যমে আমরা কীভাবে শক্তি লাভ করতে পারি?

৪ যিহোবা কীভাবে আনুগত্য প্রকাশ করেন? তিনি কখনো তাঁর বিশ্বস্ত উপাসকদের পরিত্যাগ করেন না। এইরকম একজন উপাসক, রাজা দায়ূদ যিহোবার “সদয় [‘আনুগত্যপূর্ণ,’ NW]” মনোভাব সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। (পড়ুন, ২ শমূয়েল ২২:২৬.) দায়ূদের পরীক্ষার সময় যিহোবা অনুগতভাবে তাকে পরিচালনা দিয়েছিলেন, সুরক্ষা জুগিয়েছিলেন এবং উদ্ধার করেছিলেন। (২ শমূ. ২২:১) দায়ূদ জানতেন যে, যিহোবার আনুগত্যের সঙ্গে কেবল কথার চেয়ে আরও বেশি কিছু জড়িত। কেন যিহোবা দায়ূদের প্রতি আনুগত্যের সঙ্গে কাজ করেছিলেন? কারণ দায়ূদ নিজে ‘দয়াবান [“অনুগত,” NW]’ ব্যক্তি ছিলেন। যিহোবা তাঁর ‘সাধু [“অনুগত,” NW]’ উপাসকদের আনুগত্যকে মূল্যবান বলে গণ্য করেন এবং প্রতিদানে তিনি তাদের প্রতি আনুগত্যের সঙ্গে ব্যবহার করেন।—হিতো. ২:৬-৮.

৫ যিহোবার আনুগত্যের কাজ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার মাধ্যমে আমরা শক্তি লাভ করতে পারি। “দায়ূদের দুর্দশার সময় যিহোবা কীভাবে তার সঙ্গে আচরণ করেছেন, সেই সম্বন্ধে আমি যখন পাঠ করি, তখন তা সত্যিই আমাকে সাহায্য করে,” রিড নামে একজন বিশ্বস্ত ভাই বলেন। “এমনকী দায়ূদ যখন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন, তাকে গুহার ভিতরে এবং বাইরে জীবন কাটাতে হচ্ছিল, তখন যিহোবা সর্বদা তাকে সুরক্ষা করেছিলেন। এই বিষয়টা আমার কাছে অনেক উৎসাহজনক বলে মনে হয়! এটা আমাকে মনে করিয়ে দেয় যে, পারিপার্শ্বকি অবস্থা যেমনই হোক না কেন, পরিস্থিতি যত খারাপ বলেই মনে হোক না কেন, যতদিন পর্যন্ত আমি তাঁর প্রতি অনুগত থাকি, যিহোবা আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন।” কোনো সন্দেহ নেই যে, আপনিও একইরকম অনুভব করেন।—রোমীয় ৮:৩৮, ৩৯.

৬. আর কোন কোন উপায়ে যিহোবা আনুগত্য প্রকাশ করেন এবং তা তাঁর উপাসকদের জন্য কোন উপকার নিয়ে আসে?

৬ আর কোন কোন উপায়ে যিহোবা আনুগত্য প্রকাশ করেন? তিনি তাঁর মানগুলোর প্রতি অটল থাকেন। “তোমাদের বৃদ্ধ বয়স পর্য্যন্ত আমি যে সেই থাকিব,” তিনি আমাদের আশ্বাস দেন। (যিশা. ৪৬:৪) তিনি সবসময় ন্যায় ও অন্যায় সম্বন্ধে তাঁর অপরিবর্তনীয় মানের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেন। (মালাখি ৩:৬) অধিকন্তু, যিহোবা তাঁর প্রতিজ্ঞার প্রতি বিশ্বস্ত থাকার মাধ্যমে আনুগত্য প্রকাশ করেন। (যিশা. ৫৫:১১) তাই, যিহোবার আনুগত্য তাঁর সমস্ত বিশ্বস্ত উপাসকদের উপকৃত করে। কীভাবে? আমরা যখন যিহোবার মান অনুযায়ী চলার জন্য যথাসাধ্য করি, তখন আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, তিনি আমাদের আশীর্বাদ করার বিষয়ে তাঁর প্রতিজ্ঞা রাখবেন।—যিশা. ৪৮:১৭, ১৮.

যিহোবার আনুগত্যকে অনুকরণ করুন

৭. একটা কোন উপায়ে আমরা ঈশ্বরের আনুগত্যকে অনুকরণ করতে পারি?

৭ কীভাবে আমরা যিহোবার আনুগত্যকে অনুকরণ করতে পারি? একটা উপায় হল, সেই ব্যক্তিদের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে, যারা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। (হিতো. ৩:২৭) উদাহরণস্বরূপ, আপনি কি এমন কোনো সহবিশ্বাসীকে চেনেন, যিনি হতে পারে স্বাস্থ্যগত সমস্যা, পারিবারিক বিরোধিতা অথবা ব্যক্তিগত ভুলত্রুটির কারণে হতাশাগ্রস্ত? সেই ব্যক্তিকে কিছু “মঙ্গলকথা, . . . সান্ত্বনাদায়ক কথা” বলার জন্য পদক্ষেপ নিন না কেন? (সখ. ১:১৩)a তা করার মাধ্যমে আপনি নিজেকে এমন একজন অনুগত ও প্রকৃত বন্ধু হিসেবে প্রমাণ করছেন, যিনি “ভ্রাতা অপেক্ষাও অধিক প্রেমাসক্ত।”—হিতো. ১৮:২৪.

৮. কীভাবে আমরা যিহোবার আনুগত্যকে অনুকরণ করতে পারি, উদাহরণস্বরূপ, বিবাহের ক্ষেত্রে?

৮ এ ছাড়া, সেই ব্যক্তিদের প্রতি অনুগত থাকার মাধ্যমেও আমরা যিহোবার আনুগত্যকে অনুকরণ করতে পারি, যাদেরকে আমরা ভালোবাসি। উদাহরণস্বরূপ, আমরা যদি বিবাহিত হয়ে থাকি, তাহলে আমরা জানি যে, আমাদের বিবাহসাথির প্রতি আমাদের অবশ্যই বিশ্বস্ত থাকতে হবে। (হিতো. ৫:১৫-১৮) তাই, আমরা এমন কোনো কিছুই করতে চাই না, যা কিনা পারদারিকতার দিকে পরিচালিত করতে পারে। (মথি ৫:২৮) অধিকন্তু, ক্ষতিকর গুজব অথবা অপবাদ পরিহার করার, এই ধরনের নেতিবাচক কথা ছড়ানো বা এমনকী তা শোনা প্রত্যাখ্যান করার মাধ্যমে আমরা আমাদের সহবিশ্বাসীদের প্রতি আনুগত্য দেখাই।—হিতো. ১২:১৮.

৯, ১০. (ক) বিশেষভাবে কার প্রতি আমরা অনুগত থাকতে চাই? (খ) কেন যিহোবার আজ্ঞাগুলোর বাধ্য হওয়া সবসময় সহজ হবে না?

৯ সর্বোপরি, আমরা যিহোবার প্রতি অনুগত থাকতে চাই। কীভাবে আমরা তা করতে পারি? বিভিন্ন বিষয়কে তিনি যেভাবে দেখেন, সেভাবে দেখার জন্য প্রচেষ্টা করার—তিনি যেটাকে ভালোবাসেন, সেটাকে ভালোবাসার এবং যেটাকে ঘৃণা করেন, সেটাকে ঘৃণা করার—এবং এরপর সেই অনুযায়ী কাজ করার মাধ্যমে। (পড়ুন, গীতসংহিতা ৯৭:১০.) আমাদের চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতিকে আমরা যত বেশি যিহোবার চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখার চেষ্টা করব, তত বেশি আমরা তাঁর আজ্ঞাগুলোর প্রতি বাধ্য থাকতে অনুপ্রাণিত হব।—গীত. ১১৯:১০৪.

১০ এটা ঠিক যে, যিহোবার আজ্ঞাগুলোর বাধ্য হওয়া সবসময় সহজ হবে না। আমাদেরকে হয়তো অনুগত থাকার জন্য লড়াই করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু অবিবাহিত খ্রিস্টান বিয়ে করতে চায় কিন্তু তারা এখনও যিহোবার উপাসকদের মধ্যে একজন উপযুক্ত সাথি খুঁজে পাচ্ছে না। (১ করি. ৭:৩৯) একজন অবিবাহিত বোন হয়তো দেখেন যে, তার অবিশ্বাসী সহকর্মীরা সবসময় তাকে সম্ভাব্য কোনো সাথির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। সেই বোন হয়তো একাকিত্বের সঙ্গে লড়াই করছেন। তার পরও, তিনি যিহোবার প্রতি তার আনুগত্য বজায় রাখার জন্য যথাসাধ্য প্রচেষ্টা করেন। আমরা কি আনুগত্যের এইরকম চমৎকার উদাহরণের প্রতি উপলব্ধি দেখাব না? নিশ্চিতভাবেই যিহোবা সেইসমস্ত ব্যক্তিকে পুরস্কার প্রদান করবেন, যারা কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত থাকে।—ইব্রীয় ১১:৬.

যিহোবা ক্ষমাশীল

১১. ক্ষমাশীল হওয়ার অর্থ কী?

১১ যিহোবার একটা খুবই আকর্ষণীয় গুণ হল ক্ষমা করার ব্যাপারে তাঁর ইচ্ছুক মনোভাব। ক্ষমাশীল হওয়ার অর্থ কী? মূলত, এর সঙ্গে একজন অন্যায়কারীকে সেই সময় ক্ষমা করা জড়িত, যখন তা করার কোনো উপযুক্ত কারণ থাকে। কিন্তু, এর অর্থ এই নয় যে, একজন ক্ষমাশীল ব্যক্তি অন্যায় কাজকে প্রশ্রয় দেন বা উপেক্ষা করেন। এর পরিবর্তে, তিনি বিরক্তি পুষে রাখেন না। শাস্ত্র শিক্ষা দেয় যে, যিহোবা সেই ব্যক্তিদের প্রতি “ক্ষমাবান্‌,” যারা অকৃত্রিম অনুতাপ প্রকাশ করে।—গীত. ৮৬:৫.

১২. (ক) কীভাবে যিহোবা ক্ষমাশীল মনোভাব প্রকাশ করেন? (খ) একজন ব্যক্তির পাপ ‘মুছিয়া ফেলিবার’ অর্থ কী?

১২ কীভাবে যিহোবা ক্ষমাশীল মনোভাব প্রকাশ করেন? যিহোবা যখন ক্ষমা করেন, তখন তিনি তা “প্রচুররূপে” করেন; তিনি পুরোপুরিভাবে এবং স্থায়ীভাবে ক্ষমা করেন। (যিশা. ৫৫:৭) কীভাবে আমরা জানি যে, যিহোবা পুরোপুরিভাবে ক্ষমা করেন? এই আশ্বাসের কথা বিবেচনা করে দেখুন, যা প্রেরিত ৩:১৯ পদে পাওয়া যায়। (পড়ুন।) প্রেরিত পিতর তার শ্রোতাদের এই জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন, “মন ফিরাও” বা অনুতপ্ত হও “ও ফির।” একজন পাপী যখন অকৃত্রিমভাবে অনুতপ্ত হন, তখন তিনি তার অন্যায় কাজের জন্য গভীরভাবে অনুশোচনা করেন। এ ছাড়া, তিনি পুনরায় সেই পাপ না করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হন। (২ করি. ৭:১০, ১১) অধিকন্তু, প্রকৃত অনুতাপ একজন পাপীকে ‘ফিরিতে’ অর্থাৎ তার অন্যায় কাজ পরিত্যাগ করতে এবং ঈশ্বরকে খুশি করে এমন পথ অনুধাবন করতে পরিচালিত করে। পিতরের শ্রোতারা যদি এইরকম অকৃত্রিম অনুতাপ প্রকাশ করে, তাহলে ফল কী হবে? পিতর বলেছিলেন যে, তারা তাদের পাপ ‘মুছিয়া ফেলিতে’ পারে। এই অভিব্যক্তি এমন একটি গ্রিক শব্দ থেকে এসেছে, যেটির অর্থ “নিশ্চিহ্ন করা, ঘষে একেবারে তুলে ফেলা।” তাই, যিহোবা যখন ক্ষমা করে দেন, তখন তিনি স্লেট মুছে পরিষ্কার করেন। তিনি পুরোপুরিভাবে ক্ষমা করেন।—ইব্রীয় ১০:২২; ১ যোহন ১:৭.

১৩. “আমি . . . তাহাদের পাপ আর স্মরণে আনিব না,” এই কথাগুলো আমাদের কোন নিশ্চয়তা দেয়?

১৩ কীভাবে আমরা জানি যে, যিহোবার ক্ষমাশীল মনোভাব স্থায়ী? অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের সঙ্গে যে-নতুন চুক্তি করা হয়েছিল, সেই সম্বন্ধে যিরমিয়ের ভবিষ্যদ্‌বাণী বিবেচনা করুন, যে-চুক্তি সেই ব্যক্তিদের জন্য ক্ষমা লাভ করার বিষয়টাকে সম্ভবপর করে তোলে, যারা মুক্তির মূল্যে বিশ্বাস দেখায়। (পড়ুন, যিরমিয় ৩১:৩৪.) যিহোবা বলেন: “আমি তাহাদের অপরাধ ক্ষমা করিব, এবং তাহাদের পাপ আর স্মরণে আনিব না।” তাই, যিহোবা আমাদের নিশ্চয়তা দেন যে, একবার যখন তিনি ক্ষমা করে দেন, তখন ভবিষ্যতে তিনি সেই পাপের কারণে আর কখনো আমাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবেন না। আমাদের দোষারোপ করার অথবা আমাদেরকে বার বার শাস্তি দেওয়ার জন্য তিনি আমাদের পাপগুলোকে স্মরণ করেন না। এর পরিবর্তে, যিহোবা সেই পাপগুলোকে ক্ষমা করেন এবং সেগুলোকে তাঁর পিছনে—স্থায়ীভাবে—ফেলে দেন।—রোমীয় ৪:৭, ৮.

১৪. যিহোবার ক্ষমাশীল মনোভাব নিয়ে ধ্যান করার মাধ্যমে কীভাবে আমরা সান্ত্বনা লাভ করতে পারি? একটা উদাহরণ দিন।

১৪ যিহোবার ক্ষমাশীল মনোভাব নিয়ে ধ্যান করার মাধ্যমে আমরা সান্ত্বনা লাভ করতে পারি। একটা উদাহরণ বিবেচনা করুন। অনেক বছর আগে, একজন বোনকে সমাজচ্যুত করা হয়েছিল, যাকে আমরা ইলেন বলে ডাকব। কয়েক বছর পরে, তাকে পুনর্বহাল করা হয়েছিল। “যদিও আমি নিজেকে এবং অন্যদেরকে বলতাম যে, আমি মনে করি, যিহোবা আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন,” ইলেন স্বীকার করেন, “কিন্তু সবসময় আমার মনে হতো, তিনি আমার কাছ থেকে দূরে রয়েছেন অথবা অন্যেরা তাঁর আরও নিকটবর্তী এবং তিনি তাদের কাছে আরও বেশি বাস্তব।” যাই হোক, ইলেন এমন কিছু শব্দচিত্র পাঠ করার ও সেগুলো নিয়ে ধ্যান করার মাধ্যমে সান্ত্বনা লাভ করেছিলেন, যেগুলো যিহোবার ক্ষমা সম্বন্ধে বর্ণনা করার জন্য বাইবেলে ব্যবহার করা হয়েছে। “আমার প্রতি যিহোবার প্রেম এবং কোমলতাকে আমি এমনভাবে অনুভব করতে পেরেছিলাম, যেভাবে আগে কখনো করিনি,” ইলেন যুক্ত করেন। তিনি বিশেষভাবে এই বিষয়টার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন: “যিহোবা যখন আমাদের পাপ ক্ষমা করেন, তখন আমাদের এইরকম মনে করার প্রয়োজন নেই যে, বাকি জীবনে আমাদের এই পাপের কলঙ্ক বহন করে চলতে হবে।”b ইলেন বলেন, “আমি বুঝতে পেরেছিলাম, আমি বিশ্বাস করতে পারতাম না যে, যিহোবা পূর্ণরূপে ক্ষমা করে দিতে পারেন আর আমি ভেবেছিলাম, জীবনভর আমাকে এই ভার বহন করতে হবে। আমি জানি, এর জন্য সময় লাগবে কিন্তু আমি এইরকমটা অনুভব করতে শুরু করেছি যে, আমি প্রকৃতই যিহোবার নিকটবর্তী হতে পারি এবং বুঝতে পারছি, আমার ওপর থেকে একটা ভার সরিয়ে ফেলা হয়েছে।” আমরা কতই না প্রেমময় ও ক্ষমাশীল ঈশ্বরকে সেবা করি!—গীত. ১০৩:৯.

যিহোবার ক্ষমাশীল মনোভাবকে অনুকরণ করুন

১৫. কীভাবে আমরা যিহোবার ক্ষমাশীল মনোভাবকে অনুকরণ করতে পারি?

১৫ যদি উপযুক্ত কারণ থাকে, তাহলে পরস্পরের প্রতি ক্ষমাশীল হওয়া বেছে নেওয়ার মাধ্যমে আমরা যিহোবার ক্ষমাশীল মনোভাবকে অনুকরণ করতে পারি। (পড়ুন, লূক ১৭:৩, ৪.) মনে করে দেখুন, যিহোবা যখন আমাদের ক্ষমা করেন, তখন তিনি এই অর্থে আমাদের পাপ সকল ভুলে যান যে, সেগুলোকে তিনি পরে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য আর ধরে রাখেন না। আমরা যখন অন্যদের ক্ষমা করি, তখন আমরাও বিষয়টা পিছনে ফেলে দেওয়ার এবং ভবিষ্যতে আর কখনো তা না তোলার মাধ্যমে সেটা ভুলে যেতে পারি।

১৬. (ক) ক্ষমাশীল হওয়ার অর্থ কি এই যে, আমরা অন্যায় কাজকে প্রশ্রয় দেব অথবা অন্যদেরকে আমাদের কাছ থেকে সুবিধা ভোগ করতে দেব? ব্যাখ্যা করুন। (খ) ঈশ্বরের কাছ থেকে ক্ষমা লাভ করতে চাইলে আমাদের অবশ্যই কী করতে হবে?

১৬ ক্ষমাশীল হওয়ার অর্থ এই নয় যে, আমরা অন্যায় কাজকে প্রশ্রয় দিই অথবা অন্যদেরকে আমাদের কাছ থেকে অন্যায্য সুবিধা ভোগ করতে দিই। না। মূলত, এর অর্থ হচ্ছে যে, আমরা বিরক্তি পুষে রাখি না। কিন্তু, এটা লক্ষণীয় যে, ঈশ্বরের কাছ থেকে ক্ষমা লাভ করতে চাইলে অন্যদের সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই যিহোবার ক্ষমাশীল মনোভাবকে অনুকরণ করতে হবে। (মথি ৬:১৪, ১৫) সর্বোপরি, সহমর্মিতা যিহোবাকে এটা মনে রাখতে অনুপ্রাণিত করে যে, ‘আমরা ধূলিমাত্র।’ (গীত. ১০৩:১৪) তাহলে, প্রকৃতপক্ষে আমাদেরও কি সহমর্মিতার দ্বারা অন্যদের ভুলক্রটি বিবেচনা করার, তাদেরকে হৃদয় থেকে ক্ষমা করার জন্য অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত নয়?—ইফি. ৪:৩২.

১৭. আমরা যদি কোনো সহবিশ্বাসীর কাছ থেকে আঘাত পাই, তাহলে কী আমাদের সাহায্য করতে পারে?

১৭ অবশ্য, ক্ষমা করা সবসময় সহজ নয়। এমনকী প্রথম শতাব্দীর কিছু অভিষিক্ত খ্রিস্টানের কাছেও তাদের মতপার্থক্য মীমাংসা করাকে স্পষ্টতই কঠিন বলে মনে হয়েছিল। (ফিলি. ৪:২) আমরা যদি কোনো সহবিশ্বাসীর কাছ থেকে আঘাত পাই, তাহলে কী আমাদের সাহায্য করতে পারে? ইয়োবের কথা বিবেচনা করুন। তার “বন্ধুরা”—ইলীফস, বিল্‌দদ এবং সোফর—যখন তাকে ভিত্তিহীনভাবে অনুযোগ করেছিল, তখন তিনি অত্যন্ত আঘাত পেয়েছিলেন। (ইয়োব ১০:১; ১৯:২) পরিশেষে, যিহোবা সেই মিথ্যা অনুযোগকারীদের তিরস্কার করেছিলেন। ঈশ্বর তাদেরকে ইয়োবের কাছে যেতে এবং তাদের পাপের জন্য বলি উৎসর্গ করতে বলেছিলেন। (ইয়োব ৪২:৭-৯) কিন্তু, যিহোবা ইয়োবকেও কিছু করতে বলেছিলেন। সেটা কী? যিহোবা ইয়োবকে তার প্রাক্তন অনুযোগকারীদের জন্য প্রার্থনা করতে বলেছিলেন। ইয়োব যিহোবার কথা অনুযায়ী কাজ করেছিলেন এবং যিহোবা তার ক্ষমাশীল মনোভাবের জন্য তাকে আশীর্বাদ করেছিলেন। (পড়ুন, ইয়োব ৪২:১০, ১২, ১৬, ১৭.) আমাদের জন্য শিক্ষাটা কী? আমাদেরকে অসন্তুষ্ট করেছে এমন কারো জন্য এক আন্তরিক প্রার্থনা আমাদেরকে বিরক্তি পুষে না রাখার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।

যিহোবার গুণাবলি পূর্ণরূপে উপলব্ধি করে চলুন

১৮, ১৯. কীভাবে আমরা যিহোবার চমৎকার ব্যক্তিত্বের প্রতি আমাদের উপলব্ধি গভীর করে চলতে পারি?

১৮ যিহোবার প্রেমময় ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করা আমাদের জন্য সত্যিই সতেজতাদায়ক হয়েছে। আমরা দেখেছি যে, তিনি বন্ধুত্বপরায়ণ, পক্ষপাতহীন, উদার, যুক্তিবাদী, অনুগত এবং ক্ষমাশীল। অবশ্য, আমরা কেবল সামান্যই আলোচনা করেছি। আমরা এই আনন্দ রাখতে পারি যে, আমরা অনন্তকাল ধরে যিহোবা সম্বন্ধে আরও জানতে পারব। (উপ. ৩:১১) আমরা প্রেরিত পৌলের সঙ্গে একমত, যিনি লিখেছিলেন: “আহা! ঈশ্বরের ধনাঢ্যতা ও প্রজ্ঞা ও জ্ঞান কেমন অগাধ”—প্রেম এবং সেই ছয়টি গুণের কথা না হয় আর উল্লেখ না-ই করা হল, যেগুলো আমরা বিবেচনা করেছি।—রোমীয় ১১:৩৩.

১৯ আমরা সকলে যেন যিহোবার চমৎকার ব্যক্তিত্বের প্রতি আমাদের উপলব্ধি গভীর করে চলি। তাঁর গুণাবলির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার, সেগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার এবং এরপর নিজেদের জীবনে সেগুলো অনুকরণ করার মাধ্যমে আমরা তা করতে পারি। (ইফি. ৫:১) আমরা যদি তা করি, তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা গীতরচকের সঙ্গে আরও বেশি একমত হতে পারব, যিনি গেয়েছিলেন: “ঈশ্বরের নিকটে থাকা আমারই পক্ষে মঙ্গল।”—গীত. ৭৩:২৮.

a এই ক্ষেত্রে উপকারী পরামর্শ লাভ করার জন্য ১৯৯৫ সালের ১৫ জানুয়ারি প্রহরীদুর্গ পত্রিকার “আপনি কি সম্প্রতি কাউকে উৎসাহিত করেছেন?” নামক প্রবন্ধ এবং ১৯৯৫ সালের ১ এপ্রিল প্রহরীদুর্গ পত্রিকার “প্রেম ও সৎক্রিয়া সম্বন্ধে উদ্দীপিত করে তোলা—কিভাবে?” নামক প্রবন্ধ দেখুন।

b যিহোবার নিকটবর্তী হোন নামক বইয়ের ২৬ অধ্যায়ের ১০ অনুচ্ছেদ দেখুন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার