ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৭ ৭/১৫ পৃষ্ঠা ২১-২৫
  • আপনি কি ‘আত্মার বশে চলিবেন’?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আপনি কি ‘আত্মার বশে চলিবেন’?
  • ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • ঈশ্বর ও খ্রিস্টের নিকটে থাকুন
  • ‘পরস্পর প্রেম কর’
  • “সদাপ্রভুতে যে আনন্দ, তাহাই তোমাদের শক্তি”
  • শান্তিপ্রবণ ও দীর্ঘসহিষ্ণু হোন
  • দয়া ও মঙ্গলভাব দেখান
  • “অকল্পিত বিশ্বাস”
  • মৃদুতা ও ইন্দ্রিয়দমন দেখান
  • আত্মার বশে চলুন
  • আপনি কি নিজেকে ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা পরিচালিত হতে দিচ্ছেন?
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আত্মার বশে ও আপনার উৎসর্গীকরণের যোগ্যরূপে চলুন
    ২০১০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবার আত্মা তাঁর লোকদের পরিচালিত করে
    ১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • পাঠকদের কাছ থেকে প্রশ্ন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২০
আরও দেখুন
২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৭ ৭/১৫ পৃষ্ঠা ২১-২৫

আপনি কি ‘আত্মার বশে চলিবেন’?

“তোমরা আত্মার বশে চল, তাহা হইলে মাংসের অভিলাষ পূর্ণ করিবে না।”—গালাতীয় ৫:১৬.

১. কীভাবে আত্মার বিরুদ্ধে পাপ করার উদ্বিগ্নতা দূর করা যেতে পারে?

যিহোবার পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে পাপ করার উদ্বিগ্নতা দূর করার একটা উপায় রয়েছে। সেই উপায়টা হল প্রেরিত পৌল যা বলেছিলেন, তা করা: “তোমরা আত্মার বশে চল, তাহা হইলে মাংসের অভিলাষ পূর্ণ করিবে না।” (গালাতীয় ৫:১৬) আমরা যদি ঈশ্বরের আত্মাকে আমাদের পরিচালনা দিতে দিই, তা হলে আমরা অনুপযুক্ত মাংসিক অভিলাষের দ্বারা পরাস্ত হব না।—রোমীয় ৮:২-১০.

২, ৩. আমরা যদি আত্মার বশে চলি, তা হলে আমরা কীভাবে প্রভাবিত হব?

২ আমরা যদি ‘আত্মার বশে চলি,’ তা হলে ঈশ্বরের সক্রিয় শক্তি আমাদেরকে যিহোবার বাধ্য হতে অনুপ্রাণিত করবে। আমরা আমাদের পরিচর্যায়, মণ্ডলীতে, বাড়িতে এবং অন্যান্য জায়গায় ঈশ্বরীয় গুণাবলি প্রদর্শন করব। আত্মার ফল আমাদের বিবাহ সাথি, সন্তান, সহবিশ্বাসী এবং অন্যদের সঙ্গে আমাদের আচরণে প্রকাশ পাবে।

৩ “ঈশ্বরের অনুরূপে আত্মায়” জীবনযাপন করা আমাদেরকে পাপ থেকে বিরত থাকতে সমর্থ করে। (১ পিতর ৪:১-৬) আমরা যদি আত্মার প্রভাবাধীনে থাকি, তা হলে নিশ্চিতভাবেই আমরা ক্ষমার অযোগ্য কোনো পাপ করব না। কিন্তু, অন্য আর কোন কোন উত্তম উপায়ে আমরা প্রভাবিত হব, যদি আমরা ক্রমাগত আত্মার বশে চলি?

ঈশ্বর ও খ্রিস্টের নিকটে থাকুন

৪, ৫. কীভাবে আত্মার বশে চলা যিশুর প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর প্রভাব ফেলে?

৪ যেহেতু আমরা পবিত্র আত্মার বশে চলি, তাই আমরা ঈশ্বর ও তাঁর পুত্রের সঙ্গে এক নিকট সম্পর্ক বজায় রাখতে সমর্থ হই। বিভিন্ন আত্মিক দান সম্বন্ধে লিখতে গিয়ে পৌল করিন্থের সহবিশ্বাসীদের বলেছিলেন: “আমি তোমাদিগকে [প্রাক্তন প্রতিমাপূজকদের] জানাইতেছি যে, ঈশ্বরের আত্মায় কথা কহিলে, কেহ বলে না, ‘যীশু শাপগ্রস্ত,’ এবং পবিত্র আত্মার আবেশ ব্যতিরেকে কেহ বলিতে পারে না, ‘যীশু প্রভু’।” (১ করিন্থীয় ১২:১-৩) যে-প্রবণতাই যিশুকে অভিশাপ দেওয়ার জন্য লোকেদের পরিচালিত করুক না কেন, তার উৎস অবশ্যই শয়তান দিয়াবল। কিন্তু, খ্রিস্টান হিসেবে পবিত্র আত্মার বশে চলি বলে আমরা এই বিষয়ে দৃঢ়প্রত্যয়ী যে, যিহোবা যিশুকে মৃত্যু থেকে উত্থিত করেছিলেন এবং অন্যান্য সৃষ্টি থেকে তাঁকে উচ্চীকৃত করেছিলেন। (ফিলিপীয় ২:৫-১১) খ্রিস্টের মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানের ওপর আমাদের বিশ্বাস রয়েছে এবং আমরা যিশুকে প্রভু বলে গ্রহণ করি, যাঁকে ঈশ্বর আমাদের ওপর নিযুক্ত করেছেন।

৫ সাধারণ কাল প্রথম শতাব্দীর নামধারী কিছু খ্রিস্টান এই বিষয়টা অস্বীকার করেছিল যে, যিশু মাংসে আগমন করেছিলেন। (২ যোহন ৭-১১) সেই মিথ্যা দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করার কারণে কেউ কেউ মশীহ যিশু সম্বন্ধে সত্য শিক্ষাগুলোকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। (মার্ক ১:৯-১১; যোহন ১:১, ১৪) পবিত্র আত্মার বশে চলা আমাদেরকে এই ধরনের ধর্মভ্রষ্টতার কাছে নতি স্বীকার করতে বাধা দেয়। কিন্তু, একমাত্র আধ্যাত্মিকভাবে সতর্ক থাকার মাধ্যমেই আমরা ক্রমাগত যিহোবার অযাচিত দয়া উপভোগ করতে এবং ‘সত্যে চলিতে’ পারি। (৩ যোহন ৩, ৪) তাই, আসুন আমরা সমস্ত ধরনের ধর্মভ্রষ্টতা প্রত্যাখ্যান করতে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হই, যাতে আমরা আমাদের স্বর্গীয় পিতার সঙ্গে এক দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখতে পারি।

৬. যারা আত্মার বশে চলে, তাদের মধ্যে ঈশ্বরের আত্মা কোন গুণাবলি উৎপন্ন করে?

৬ পৌল ধর্মভ্রষ্ট প্রতিমাপূজা ও দলভেদকে বেশ্যাগমন ও স্বৈরিতার মতো ‘মাংসের কার্য্য সকলের’ মধ্যে তালিকাভুক্ত করেছেন। কিন্তু, তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন: “যাহারা খ্রীষ্ট যীশুর, তাহারা মাংসকে তাহার মতি ও অভিলাষ শুদ্ধ ক্রুশে দিয়াছে। আমরা যদি আত্মার বশে জীবন ধারণ করি, তবে আইস আমরা আত্মার বশে চলি।” (গালাতীয় ৫:১৯-২১, ২৪, ২৫) ঈশ্বরের সক্রিয় শক্তি সেই ব্যক্তিদের মধ্যে কোন গুণাবলি উৎপন্ন করে, যারা আত্মার বশে জীবনযাপন করে এবং চলে? “আত্মার ফল,” পৌল লিখেছিলেন, “প্রেম, আনন্দ, শান্তি, দীর্ঘসহিষ্ণুতা, মাধুর্য্য,a মঙ্গলভাব, বিশ্বস্ততা, মৃদুতা, ইন্দ্রিয়দমন।” (গালাতীয় ৫:২২, ২৩) আসুন আমরা আত্মার ফলের এই বৈশিষ্ট্যগুলো বিবেচনা করি।

‘পরস্পর প্রেম কর’

৭. প্রেম কী আর এর কিছু বৈশিষ্ট্য কী?

৭ প্রেমের—আত্মার ফলের একটি বৈশিষ্ট্যের—সঙ্গে প্রায়ই অন্যদের প্রতি উষ্ণ অনুরাগসহ গভীর স্নেহ এবং নিঃস্বার্থ চিন্তা জড়িত। শাস্ত্র বলে যে, “ঈশ্বর প্রেম” কারণ তিনিই সেই গুণের মূর্ত প্রতীক। মানবজাতির জন্য ঈশ্বর ও তাঁর পুত্রের মহৎ প্রেম, যিশু খ্রিস্টের মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। (১ যোহন ৪:৮; যোহন ৩:১৬; ১৫:১৩; রোমীয় ৫:৮) যিশুর অনুসারী হিসেবে আমাদেরকে সেই প্রেম দ্বারা শনাক্ত করা হয়, যা আমাদের পরস্পরের মধ্যে রয়েছে। (যোহন ১৩:৩৪, ৩৫) বস্তুতপক্ষে, আমাদের আদেশ দেওয়া হয়েছে, যেন আমরা “পরস্পর প্রেম করি।” (১ যোহন ৩:২৩) আর পৌল বলেছেন যে, প্রেম চিরসহিষ্ণু এবং সদয়। প্রেম ঈর্ষা করে না, আত্মশ্লাঘা করে না, অশিষ্টাচারণ করে না অথবা স্বার্থ চেষ্টা করে না। প্রেম রেগে ওঠে না বা অপকার গণনা করে না। প্রেম সত্যের সঙ্গে আনন্দ করে, অধার্মিকতায় আনন্দ করে না। প্রেম সকলই বহন করে, বিশ্বাস করে, প্রত্যাশা করে এবং ধৈর্যপূর্বক সহ্য করে। সর্বোপরি, প্রেম কখনো শেষ হয় না।—১ করিন্থীয় ১৩:৪-৮.

৮. কেন যিহোবার সহউপাসকদের প্রতি আমাদের প্রেম দেখানো উচিত?

৮ আমরা যদি ঈশ্বরের আত্মাকে আমাদের মধ্যে প্রেম উৎপন্ন করতে দিই, তা হলে সেই গুণ ঈশ্বর ও প্রতিবেশীর সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে বিদ্যমান থাকবে। (মথি ২২:৩৭-৩৯) “যে কেহ প্রেম না করে, সে মৃত্যু মধ্যে থাকে,” প্রেরিত যোহন লিখেছিলেন। “যে কেহ আপন ভ্রাতাকে ঘৃণা করে, সে নরঘাতক; এবং তোমরা জান, অনন্ত জীবন কোন নরঘাতকের অন্তরে অবস্থিতি করে না।” (১ যোহন ৩:১৪, ১৫) একজন নরঘাতক কেবলমাত্র তখনই ইস্রায়েলের একটা আশ্রয়-নগরে নিরাপত্তা লাভ করতে পারতেন, যদি তিনি যে-ব্যক্তি হত হয়েছেন, তাকে ঘৃণা না করতেন। (দ্বিতীয় বিবরণ ১৯:৪, ১১-১৩) আমরা যদি পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত হই, তা হলে আমরা ঈশ্বর, সহউপাসক এবং অন্যদের প্রতি প্রেম দেখাব।

“সদাপ্রভুতে যে আনন্দ, তাহাই তোমাদের শক্তি”

৯, ১০. আনন্দ কী আর আনন্দিত হওয়ার কিছু কারণ কী?

৯ আনন্দ হল মহাসুখের এক অবস্থা। যিহোবা হলেন, ‘পরম ধন্য [“সুখী,” NW] ঈশ্বর।’ (১ তীমথিয় ১:১১; গীতসংহিতা ১০৪:৩১) পুত্র তাঁর পিতার ইচ্ছা পালন করে প্রীত বা আনন্দিত। (গীতসংহিতা ৪০:৮; ইব্রীয় ১০:৭-৯) আর “সদাপ্রভুতে যে আনন্দ, তাহাই [আমাদের] শক্তি।”—নহিমিয় ৮:১০.

১০ ঈশ্বরদত্ত আনন্দ আমাদের জন্য গভীর পরিতৃপ্তি নিয়ে আসে, যখন আমরা এমনকি কষ্ট, দুঃখ অথবা তাড়নার সময়েও ঐশিক ইচ্ছা পালন করি। “ঈশ্বরবিষয়ক জ্ঞান” আমাদের জন্য কত সুখই না নিয়ে আসে! (হিতোপদেশ ২:১-৫) ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের আনন্দপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি হচ্ছে সঠিক জ্ঞান এবং তাঁর ওপর ও সেইসঙ্গে যিশুর মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানের ওপর বিশ্বাস। (১ যোহন ২:১, ২) একমাত্র প্রকৃত আন্তর্জাতিক ভ্রাতৃসমাজের অংশ হওয়াও আনন্দের আরেকটা উৎস। (সফনিয় ৩:৯; হগয় ২:৭) আমাদের রাজ্যের আশা এবং সুসমাচার ঘোষণা করার মহান সুযোগ আমাদের আনন্দিত করে। (মথি ৬:৯, ১০; ২৪:১৪) একইভাবে, অনন্তজীবনের প্রত্যাশাও আমাদের আনন্দিত করে। (যোহন ১৭:৩) যেহেতু আমাদের এই মহান আশা রয়েছে, তাই আমাদের “সম্পূর্ণরূপে আনন্দিত” হওয়া উচিত।—দ্বিতীয় বিবরণ ১৬:১৫.

শান্তিপ্রবণ ও দীর্ঘসহিষ্ণু হোন

১১, ১২. (ক) শান্তিকে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? (খ) ঈশ্বরীয় শান্তির কোন প্রভাব আমাদের ওপর রয়েছে?

১১ শান্তি—আত্মার ফলের আরেকটি বৈশিষ্ট্য—হল প্রশান্তিজনক এবং উদ্বিগ্নতামুক্ত এক অবস্থা। আমাদের স্বর্গীয় পিতা হলেন শান্তির ঈশ্বর আর আমাদের এই আশ্বাস দেওয়া হয়েছে: “সদাপ্রভু আপন প্রজাদিগকে শান্তি দিয়া আশীর্ব্বাদ করিবেন।” (গীতসংহিতা ২৯:১১; ১ করিন্থীয় ১৪:৩৩) যিশু তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন: “শান্তি আমি তোমাদের কাছে রাখিয়া যাইতেছি, আমারই শান্তি তোমাদিগকে দান করিতেছি।” (যোহন ১৪:২৭) এটা কীভাবে তাঁর অনুসারীদের সাহায্য করবে?

১২ যিশু তাঁর শিষ্যদের যে-শান্তি দিয়েছিলেন, তা তাদের হৃদয় ও মনকে শান্ত করেছিল এবং তাদের ভয়কে দূর করে দিয়েছিল। বিশেষভাবে সেই সময় তাদের মধ্যে শান্তি ছিল, যখন তারা প্রতিজ্ঞাত পবিত্র আত্মা লাভ করেছিল। (যোহন ১৪:২৬) আজকে আত্মার প্রভাবে এবং আমাদের প্রার্থনার উত্তরে, আমরা “ঈশ্বরের” অতুলনীয় “শান্তি” উপভোগ করি, যা আমাদের হৃদয় ও মনকে শান্ত করে। (ফিলিপীয় ৪:৬, ৭) অধিকন্তু, যিহোবার আত্মা আমাদেরকে সহবিশ্বাসী ও অন্যদের সঙ্গে শান্ত থাকতে ও শান্তিপ্রবণ হতে সাহায্য করে।—রোমীয় ১২:১৮.

১৩, ১৪. দীর্ঘসহিষ্ণুতা কী এবং কেন আমাদের তা দেখানো উচিত?

১৩ দীর্ঘসহিষ্ণুতা শান্তিপ্রবণ হওয়ার সঙ্গে যুক্ত কারণ এটা হল আমাদের এই আশা নিয়ে রাগ বা অন্যায়ের মধ্যেও ধৈর্য বজায় রাখা যে, পরিস্থিতির উন্নতি হবে। ঈশ্বর হলেন দীর্ঘসহিষ্ণু। (রোমীয় ৯:২২-২৪) যিশুও এই গুণ দেখিয়েছিলেন। আমরা এর দ্বারা উপকৃত হতে পারি কারণ পৌল লিখেছিলেন: “এই জন্য দয়া পাইয়াছি, যেন যীশু খ্রীষ্ট এই অগ্রগণ্য আমাতে সম্পূর্ণ দীর্ঘসহিষ্ণুতা প্রদর্শন করেন, যাহাতে আমি তাহাদের আদর্শ হইতে পারি, যাহারা অনন্ত জীবনের নিমিত্ত তাঁহাতে বিশ্বাস করিবে।”—১ তীমথিয় ১:১৬.

১৪ দীর্ঘসহিষ্ণুতা গুণটি আমাদের সেই সময়ে ধৈর্য ধরতে সাহায্য করে, যখন অন্যেরা নিষ্ঠুর অথবা অবিবেচনাপূর্ণ কথা বলে থাকে বা কাজ করে থাকে। পৌল সহবিশ্বাসীদের জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন: “সকলের প্রতি দীর্ঘসহিষ্ণু হও।” (১ থিষলনীকীয় ৫:১৪) যেহেতু আমরা সকলে অসিদ্ধ এবং ভুল করে থাকি, তাই নিশ্চিতভাবেই আমরা চাই যে লোকেরা আমাদের প্রতি ধৈর্যশীল হোক, তাদের সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রে আমরা যখন ভুল করি, তখন দীর্ঘসহিষ্ণু হোক। অতএব, আসুন আমরা ‘আনন্দের সহিত সহিষ্ণু’ হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করি।—কলসীয় ১:৯-১২.

দয়া ও মঙ্গলভাব দেখান

১৫. দয়া সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করুন এবং এর বিভিন্ন উদাহরণ দিন।

১৫ বন্ধুত্বপূর্ণ ও উপকারজনক কথাবার্তা এবং কাজের মাধ্যমে আমরা যখন অন্যদের প্রতি আগ্রহ দেখাই, তখন দয়া দেখানো হয়। যিহোবা হলেন দয়াময় আর তাঁর পুত্রও ঠিক তা-ই। (রোমীয় ২:৪; ২ করিন্থীয় ১০:১) আশা করা হয় যে, ঈশ্বর ও খ্রিস্টের দাসেরা দয়া দেখাবে। (মীখা ৬:৮; কলসীয় ৩:১২) এমনকি ঈশ্বরের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই এমন কিছু ব্যক্তিও “অসাধারণ সৌজন্য” দেখিয়েছিল। (প্রেরিত ২৭:৩; ২৮:২) তা হলে, নিশ্চিতভাবেই আমরা দয়া দেখাতে পারি, যদি আমরা ‘আত্মার বশে চলি।’

১৬. কিছু পরিস্থিতি কী, যেগুলোর কারণে আমাদের দয়া দেখাতে পরিচালিত হওয়া উচিত?

১৬ কারো বেদনাদায়ক কথাবার্তা অথবা অবিবেচনাপূর্ণ কাজগুলোর জন্য আমরা যদি উপযুক্ত কারণে রেগেও যাই, তবুও দয়া দেখানো যেতে পারে। “ক্রুদ্ধ হইলে পাপ করিও না,” পৌল বলেছিলেন। “সূর্য্য অস্ত না যাইতে যাইতে তোমাদের কোপাবেশ শান্ত হউক; আর দিয়াবলকে স্থান দিও না। তোমরা পরস্পর মধুরস্বভাব ও করুণচিত্ত হও, পরস্পর ক্ষমা কর, যেমন ঈশ্বরও খ্রীষ্টে তোমাদিগকে ক্ষমা করিয়াছেন।” (ইফিষীয় ৪:২৬, ২৭, ৩২) সেই ব্যক্তিদের প্রতি দয়া দেখানো বিশেষভাবে উপযুক্ত, যারা পরীক্ষা ভোগ করছে। অবশ্য, একজন খ্রিস্টান প্রাচীন যদি কেবলমাত্র কোনো ব্যক্তির অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া এড়ানোর জন্য সেই ব্যক্তিকে শাস্ত্রীয় পরামর্শ দিতে ব্যর্থ হন, যিনি স্পষ্টতই ‘মঙ্গলভাব, ধার্ম্মিকতা ও সত্য’ পথ ত্যাগ করার বিপদের মুখে রয়েছেন, তা হলে সেটা সেই প্রাচীনের পক্ষে দয়া দেখানো হবে না।—ইফিষীয় ৫:৯.

১৭, ১৮. মঙ্গলভাবকে কীভাবে ব্যাখ্যা করা যায় আর আমাদের জীবনে এই গুণের কোন ভূমিকা পালন করা উচিত?

১৭ মঙ্গলভাব হল সদ্‌গুণ, নৈতিক উৎকর্ষতা অথবা উত্তম হওয়ার গুণ বা অবস্থা। ঈশ্বর সম্পূর্ণরূপে মঙ্গলময়। (গীতসংহিতা ২৫:৮; সখরিয় ৯:১৭) যিশু হলেন সদ্‌গুণসম্পন্ন এবং তাঁর নৈতিক উৎকর্ষতার গুণটি রয়েছে। তা সত্ত্বেও, ‘সৎ’ শব্দটিকে তিনি একটি উপাধি হিসেবে গ্রহণ করেননি, যখন তাঁকে “সদ্‌গুরু” বলা হয়েছিল। (মার্ক ১০:১৭, ১৮) স্পষ্টতই এর কারণ হল, তিনি ঈশ্বরকে মঙ্গলভাবের চূড়ামণি হিসেবে স্বীকার করেছিলেন।

১৮ উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া পাপের কারণে আমাদের মঙ্গল করার ক্ষমতা বাধাপ্রাপ্ত হয়। (রোমীয় ৫:১২) তা সত্ত্বেও, আমরা এই গুণ দেখাতে পারি, যদি আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি যে, তিনি যেন আমাদেরকে মঙ্গলভাব সম্বন্ধে শিক্ষা দেন। রোমের সহবিশ্বাসীদের পৌল বলেছিলেন: “হে আমার ভ্রাতৃগণ, আমি আপনিও তোমাদের বিষয়ে নিশ্চয় বুঝিতেছি যে, তোমরা আপনারা মঙ্গলভাবে পূর্ণ, সমুদয় জ্ঞানে পরিপূর্ণ।” (রোমীয় ১৫:১৪) একজন খ্রিস্টান অধ্যক্ষকে অবশ্যই “সৎপ্রেমিক” হতে হবে বা মঙ্গলভাবকে ভালবাসতে হবে। (তীত ১:৭, ৮) আমরা যদি ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকি, তা হলে আমরা মঙ্গলভাবের জন্য সুপরিচিত হব আর যিহোবা ‘মঙ্গলের নিমিত্ত আমাদের পক্ষে তাহা স্মরণ’ করবেন।—নহিমিয় ৫:১৯; ১৩:৩১.

“অকল্পিত বিশ্বাস”

১৯. ইব্রীয় ১১:১ পদের সঙ্গে মিল রেখে বিশ্বাসকে ব্যাখ্যা করুন।

১৯ বিশ্বস্ততা বা বিশ্বাস—এটিও আত্মার ফলের অংশ—“প্রত্যাশিত বিষয়ের নিশ্চয়জ্ঞান, অদৃশ্য বিষয়ের প্রমাণপ্রাপ্তি।” (ইব্রীয় ১১:১) আমাদের যদি বিশ্বাস থাকে, তা হলে আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, যিহোবা যাকিছু প্রতিজ্ঞা করেছেন, সেগুলো পরিপূর্ণ হবেই। অদৃশ্য বিষয়গুলোর দৃঢ়প্রত্যয়ী প্রমাণ এত জোরালো যে, বিশ্বাসকে সেই প্রমাণপ্রাপ্তির সমরূপ বলা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, সৃষ্ট বিষয়গুলোর অস্তিত্ব আমাদেরকে এই বিষয়ে প্রত্যয়ী করে যে, একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন। আর এইরকম বিশ্বাসই আমরা দেখাতে পারব, যদি আমরা আত্মার বশে চলি।

২০. “সহজ বাধাজনক পাপ” কী আর কীভাবে আমরা সেই পাপ ও মাংসের কার্যসকল এড়িয়ে চলতে পারি?

২০ বিশ্বাসের অভাব হল, “সহজ বাধাজনক পাপ।” (ইব্রীয় ১২:১) মাংসের কার্যসকল, বস্তুবাদিতা এবং আমাদের বিশ্বাসকে নষ্ট করে দেয়, এমন মিথ্যা গল্পগুলো এড়িয়ে চলার জন্য আমাদের ঈশ্বরের আত্মার ওপর নির্ভর করতে হবে। (কলসীয় ২:৮; ১ তীমথিয় ৬:৯, ১০; ২ তীমথিয় ৪:৩-৫) ঈশ্বরের আত্মা যিহোবার বর্তমান দিনের দাসদের মধ্যে সেই বিশ্বাস উৎপন্ন করে, যা প্রাক্‌খ্রিস্টীয় সাক্ষিদের ও বাইবেলে বর্ণিত অন্যান্য ব্যক্তির ছিল। (ইব্রীয় ১১:২-৪০) আর আমাদের নিজেদের নিষ্কপট বা “অকল্পিত বিশ্বাস” হয়তো অন্যদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে পারে।—১ তীমথিয় ১:৫; ইব্রীয় ১৩:৭.

মৃদুতা ও ইন্দ্রিয়দমন দেখান

২১, ২২. মৃদুতাকে কীভাবে ব্যাখ্যা করা যায় এবং কেন আমাদের এটি দেখানো উচিত?

২১ মৃদুতা হল স্বভাবে ও আচরণে শান্তভাব। ঈশ্বরের একটি গুণ হল মৃদুতা। আমরা তা জানি কারণ যিশু, যিনি মৃদুশীল ছিলেন, তিনি যিহোবার ব্যক্তিত্বকে নিখুঁতভাবে প্রতিফলিত করেছিলেন। (মথি ১১:২৮-৩০; যোহন ১:১৮; ৫:১৯) তা হলে, ঈশ্বরের দাস হিসেবে আমাদের কাছ থেকে কী চাওয়া হয়?

২২ খ্রিস্টান হিসেবে আমাদের কাছে প্রত্যাশা করা হয় যেন আমরা ‘সকল মনুষ্যের কাছে মৃদুতা’ দেখাই। (তীত ৩:২) আমরা আমাদের পরিচর্যায় মৃদুতা দেখাই। আত্মিক বা আধ্যাত্মিক যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যেন তারা ভুল করেছে এমন খ্রিস্টানদের “মৃদুতার আত্মায়” সুস্থ বা পুনঃসমন্বয় করে। (গালাতীয় ৬:১) আমরা প্রত্যেকে “নম্রতা ও মৃদুতা” দেখানোর মাধ্যমে খ্রিস্টীয় একতায় ও শান্তিতে অবদান রাখতে পারি। (ইফিষীয় ৪:১-৩) আমরা মৃদুতা দেখাতে পারি, যদি আমরা ক্রমাগত আত্মার বশে চলি এবং ইন্দ্রিয়দমন দেখিয়ে চলি।

২৩, ২৪. ইন্দ্রিয়দমন কী আর এটি কীভাবে আমাদের সাহায্য করে?

২৩ ইন্দ্রিয়দমন আমাদেরকে আমাদের চিন্তাভাবনা, কথাবার্তা ও কাজগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সমর্থ করে। যিরূশালেমকে ধ্বংস করার জন্য যে-বাবিলীয়রা এসেছিল, তাদের সঙ্গে আচরণ করার ক্ষেত্রে যিহোবা ‘ক্ষান্ত রহিয়াছিলেন’ বা ইন্দ্রিয়দমন দেখিয়েছিলেন। (যিশাইয় ৪২:১৪) তাঁর পুত্র কষ্টভোগের সময় ইন্দ্রিয়দমন দেখানোর মাধ্যমে ‘আমাদের জন্য এক আদর্শ রাখিয়া গিয়াছেন।’ আর প্রেরিত পিতর সহখ্রিস্টানদেরকে ‘তাহাদের জ্ঞানে জিতেন্দ্রিয়তা যোগাইবার’ পরামর্শ দিয়েছিলেন।—১ পিতর ২:২১-২৩; ২ পিতর ১:৫-৮.

২৪ খ্রিস্টান প্রাচীনদের কাছে প্রত্যাশা করা হয় যেন তারা ইন্দ্রিয়দমন দেখায়। (তীত ১:৭, ৮) আসলে, পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত হয় এমন সকলে ইন্দ্রিয়দমন দেখাতে পারে আর এভাবে অনৈতিকতা, অশ্লীল কথাবার্তা অথবা এমন যেকোনোকিছু এড়িয়ে চলতে পারে, যা যিহোবার অনুমোদন হারানোর দিকে পরিচালিত করে। আমরা যদি ঈশ্বরের আত্মাকে আমাদের মধ্যে ইন্দ্রিয়দমন উৎপন্ন করতে দিই, তা হলে সেটা আমাদের ঈশ্বরীয় কথাবার্তা ও আচরণের মাধ্যমে অন্যদের কাছে স্পষ্ট প্রতীয়মান হবে।

আত্মার বশে চলুন

২৫, ২৬. কীভাবে আত্মার বশে চলা আমাদের বর্তমান সম্পর্ক ও ভবিষ্যৎ প্রত্যাশাগুলোর ওপর প্রভাব ফেলবে?

২৫ আমরা যদি আত্মার বশে চলি, তা হলে আমরা উদ্যোগী রাজ্য ঘোষণাকারী হব। (প্রেরিত ১৮:২৪-২৬) আমরা চমৎকার সঙ্গী হব এবং বিশেষভাবে যে-লোকেরা ঈশ্বরীয় ভক্তি দেখিয়ে থাকে, তারা আমাদের সাহচর্য উপভোগ করবে। যারা পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত হয়, তাদের মতো আমরাও যিহোবার সহউপাসকদের কাছে আধ্যাত্মিক আশ্বাস বা উৎসাহের উৎস হব। (ফিলিপীয় ২:১-৪) সমস্ত খ্রিস্টান কি তা-ই হতে চায় না?

২৬ শয়তানের নিয়ন্ত্রণাধীন এই জগতে আত্মার বশে চলা সহজ নয়। (১ যোহন ৫:১৯) তা সত্ত্বেও, আজকে লক্ষ লক্ষ লোক তা-ই করে চলছে। আমরা যদি আমাদের সমস্ত হৃদয় দিয়ে যিহোবার ওপর বিশ্বাস রাখি বা নির্ভর করি, তা হলে আমরা এখনই জীবন উপভোগ করতে পারব এবং পবিত্র আত্মার প্রেমময় প্রতিপালকের ধার্মিক পথে চিরকাল চলতে পারব।—গীতসংহিতা ১২৮:১; হিতোপদেশ ৩:৫, ৬.

[পাদটীকা]

a বাংলা বাইবেলে মূলভাষার যে-শব্দটি দয়া হিসেবে অনূদিত হয়েছে, সেটিকে মধুর ভাব, মধুর স্বভাব, মাধুর্য, মধুর, সৌজন্য ইত্যাদি হিসেবেও অনুবাদ করা হয়েছে।

আপনার উত্তর কী?

• কীভাবে ‘আত্মার বশে চলা’ ঈশ্বর ও তাঁর পুত্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলে?

• পবিত্র আত্মার ফলের মধ্যে কোন কোন গুণ রয়েছে?

• ঈশ্বরের আত্মার ফল দেখানোর কিছু উপায় কী?

• কীভাবে আত্মার বশে চলা আমাদের বর্তমান জীবন ও ভবিষ্যৎ প্রত্যাশাগুলোকে প্রভাবিত করে?

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিহোবার পবিত্র আত্মা আমাদের সহবিশ্বাসীদের প্রতি প্রেম বৃদ্ধি করে

[২৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

উপকারজনক কথাবার্তা ও কাজের মাধ্যমে দয়া দেখান

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার