ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • es25 পৃষ্ঠা ১২৩-১৩৫
  • অক্টোবর

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • অক্টোবর
  • প্রতিদিন শাস্ত্র পরীক্ষা করা—২০২৫
  • উপশিরোনাম
  • বুধবার, ১ অক্টোবর
  • বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর
  • শুক্রবার, ৩ অক্টোবর
  • শনিবার, ৪ অক্টোবর
  • রবিবার, ৫ অক্টোবর
  • সোমবার, ৬ অক্টোবর
  • মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর
  • বুধবার, ৮ অক্টোবর
  • বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর
  • শুক্রবার, ১০ অক্টোবর
  • শনিবার, ১১ অক্টোবর
  • রবিবার, ১২ অক্টোবর
  • সোমবার, ১৩ অক্টোবর
  • মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর
  • বুধবার, ১৫ অক্টোবর
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর
  • শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর
  • শনিবার, ১৮ অক্টোবর
  • রবিবার, ১৯ অক্টোবর
  • সোমবার, ২০ অক্টোবর
  • মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর
  • বুধবার, ২২ অক্টোবর
  • বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর
  • শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর
  • শনিবার, ২৫ অক্টোবর
  • রবিবার, ২৬ অক্টোবর
  • সোমবার, ২৭ অক্টোবর
  • মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর
  • বুধবার, ২৯ অক্টোবর
  • বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর
  • শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর
প্রতিদিন শাস্ত্র পরীক্ষা করা—২০২৫
es25 পৃষ্ঠা ১২৩-১৩৫

অক্টোবর

বুধবার, ১ অক্টোবর

যে-প্রজ্ঞা স্বর্গ থেকে আসে, তা বাধ্য হতে প্রস্তুত।—যাকোব ৩:১৭.

আপনার কি কখনো এমনটা মনে হয়েছে, ‘অন্যদের বাধ্য হওয়া আমার জন্য কঠিন?’ রাজা দায়ূদেরও এমনটা মনে হয়েছিল। এই কারণে তিনি যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন: “তোমার বাধ্য হওয়ার ইচ্ছুক মন দিয়ে তুমি আমাকে সবল কর।” (গীত. ৫১:১২, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন) দায়ূদ যিহোবাকে অনেক ভালোবাসতেন, কিন্তু তারপরও তাঁর আজ্ঞার বাধ্য হওয়া দায়ূদের জন্য কখনো কখনো কঠিন বলে মনে হত। আজ আমাদেরও হয়তো অনেকসময় যিহোবার আজ্ঞার বাধ্য হওয়া কঠিন বলে মনে হয়। কেন? প্রথমত, জন্ম থেকেই আমাদের মধ্যে অবাধ্য হওয়ার প্রবণতা থাকে। দ্বিতীয়ত, শয়তান সবসময় চেষ্টা করে যেন আমরা যিহোবার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করি, যেমনটা সে করেছিল। (২ করি. ১১:৩) তৃতীয়ত, আমরা এমন এক জগতে বাস করি, যেখানে বেশিরভাগ লোকই বিদ্রোহ করে থাকে। তাদের মধ্যে ‘বাধ্য না হওয়ার মনোভাব’ রয়েছে। (ইফি. ২:২) তাই, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেন আমরা আমাদের মধ্যে থাকা খারাপ কাজ করার প্রবণতার বিরুদ্ধে লড়াই করি এবং শয়তান আর এই জগতের মতো বিদ্রোহ না করি। এর পরিবর্তে, আমরা যেন যিহোবা এবং তিনি যাদের কর্তৃত্ব দিয়েছেন, তাদের আজ্ঞার প্রতি বাধ্যতা দেখানোর প্রচেষ্টা করে চলি। প্রহরীদুর্গ ২৩.১০ ৬ অনু. ১

বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর

তুমি তো দেখছি উত্তম দ্রাক্ষারস এখনও রেখে দিয়েছ।—যোহন ২:১০.

যিশুর এই অলৌকিক কাজ থেকে আমরা কী শিখতে পারি? এটাই যে, আমাদের নম্র হতে হবে। যিশু তাঁর এই অলৌকিক কাজ নিয়ে গর্ব করেননি। আসলে তিনি যা-কিছু করেছিলেন, সেগুলো নিয়ে কখনোই গর্ব করেননি। এর পরিবর্তে, তিনি নম্র ছিলেন। তিনি যা-কিছু করতেন, সেগুলোর সমস্ত কৃতিত্ব এবং মহিমা তাঁর পিতাকে দিতেন। (যোহন ৫:১৯, ৩০; ৮:২৮) আমাদেরও যিশুর মতো নম্র হতে হবে এবং নিজেদের সাফল্যের বিষয়ে বড়াই করা এড়িয়ে চলতে হবে। আমাদের এই বিষয়ে গর্ব করা উচিত যে, আমরা এত মহান ঈশ্বরের সেবা করার এক বিশেষ সুযোগ পেয়েছি। (যির. ৯:২৩, ২৪) তাই, আমরা যেন আমাদের কাজের কৃতিত্ব সবসময় যিহোবাকে দিই কারণ তাঁর সাহায্য ছাড়া আমরা কিছুই করতে পারি না। (১ করি. ১:২৬-৩১) আমরা যখন নম্র হব, তখন আমরা অন্যদের জন্য যে-ভালো কাজ করেছি, সেটার কৃতিত্ব আমরা নিজেরা নেব না। আমরা এটা জেনে খুবই খুশি হব যে, আমরা অন্যদের জন্য যা-কিছু করি, সেগুলো যিহোবা দেখেন এবং তা মূল্যবান হিসেবে গণ্য করেন। (ইব্রীয় ১৩:১৬; তুলনা করুন, মথি ৬:২-৪) সত্যিই, আমরা যখন যিশুর মতো নম্র হই, তখন যিহোবা আনন্দিত হন।—১ পিতর ৫:৬. প্রহরীদুর্গ ২৩.০৪ ৪ অনু. ৯; ৫ অনু. ১১-১২

শুক্রবার, ৩ অক্টোবর

কেবল নিজেদের বিষয়ে চিন্তা কোরো না, কিন্তু অন্যের প্রতিও চিন্তা দেখাও।—ফিলি. ২:৪.

পৌল ফিলিপীতে থাকা খ্রিস্টানদের উৎসাহিত করেছিলেন, তারা যেন অন্যদের বিষয়েও চিন্তা করে। কীভাবে আমরা তার এই পরামর্শ সভাগুলোতে কাজে লাগাতে পারি? আমরা মনে রাখতে পারি, আমাদের মতো অন্য ভাই-বোনেরাও উত্তর দিতে চায়। একটু কল্পনা করুন, আপনি যখন আপনার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেন, তখন আপনি কি শুধু একাই কথা বলে যান? না, আপনি তা করেন না। আপনি তাদেরও কথা বলার সুযোগ দেন। একইভাবে, আমরা চাইব যেন সভাগুলোতে ভাই-বোনেরা আরও বেশি করে উত্তর দেওয়ার সুযোগ পায়। সত্যি বলতে কী, ভাই-বোনদের উৎসাহিত করার একটা ভালো উপায় হল, তাদের বিশ্বাস প্রকাশ করার সুযোগ দেওয়া। (১ করি. ১০:২৪) তাই, আপনার উত্তর যেন সংক্ষিপ্ত হয়। এভাবে আরও ভাই-বোন উত্তর দেওয়ার সুযোগ পাবে। সংক্ষিপ্ত উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি এটা খেয়াল রাখুন, আপনি যেন সমস্ত পয়েন্ট না বলেন। আপনি যদি অনুচ্ছেদে দেওয়া সমস্ত বিষয় বলে দেন, তা হলে অন্যদের উত্তর দেওয়ার মতো কিছুই থাকবে না। প্রহরীদুর্গ ২৩.০৪ ২২-২৩ অনু. ১১-১৩

শনিবার, ৪ অক্টোবর

আমি সমস্ত কিছু সুসমাচারের জন্যই করি, যেন তা অন্যদের কাছে প্রচার করতে পারি।—১ করি. ৯:২৩.

আমাদের পরিস্থিতি যখন পালটে যায়, তখন আমাদের মনে রাখা উচিত, ক্রমাগত অন্যদের সাহায্য করা অনেক জরুরি, বিশেষ করে প্রচার কাজ করার মাধ্যমে। আমাদের প্রচার কাজেও রদবদল করার জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত। আমরা যাদের কাছে প্রচার করি, তারা আলাদা আলাদা পরিবেশে বড়ো হয়েছে, তাদের আচার-আচরণ এবং জীবনযাপন করার ধরনও আলাদা। আর যখন ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস করার বিষয়টা আসে, তখন সবার আলাদা আলাদা মতামত রয়েছে। লোকদের পরিস্থিতির বিষয়ে মাথায় রেখে তাদের সঙ্গে কথা বলার ব্যাপারে পৌল এক উত্তম উদাহরণ রেখেছিলেন। যিশু খ্রিস্ট পৌলকে ‘প্রেরিত হিসেবে ন-যিহুদিদের কাছে পাঠানোর’ জন্য নিযুক্ত করেছিলেন। (রোমীয় ১১:১৩) কিন্তু পৌল যিহুদি, গ্রিক, লেখাপড়া জানা লোক, গ্রামের লোক, বড়ো বড়ো আধিকারিক এবং রাজাদের কাছে প্রচার করেছিলেন। এইরকম আলাদা আলাদা ধরনের লোকের হৃদয়ে সত্যের বীজ বোনার জন্য পৌল ‘সমস্ত কিছু করার চেষ্টা করেছিলেন।’ (১ করি. ৯:১৯-২২) পৌল এই বিষয়ে খেয়াল রাখতেন যে, তিনি যাদের কাছে প্রচার করছেন, তারা কোন সংস্কৃতি থেকে এসেছে, কোন পরিবেশে বড়ো হয়েছে এবং তারা কী বিশ্বাস করে। এরপর, সেই অনুযায়ী তিনি প্রচার করার পদ্ধতিতে রদবদল করতেন। একইভাবে, আমরা যদি চিন্তা করি, আলাদা আলাদা লোকের সঙ্গে আমাদের কীভাবে কথা বলা উচিত আর সেই অনুযায়ী আমাদের প্রচার করার পদ্ধতিতে রদবদল করি, তা হলে আমরা তাদের ভালোভাবে সাক্ষ্য দিতে পারব। প্রহরীদুর্গ ২৩.০৭ ২৩ অনু. ১১-১২

রবিবার, ৫ অক্টোবর

প্রভুর একজন দাসের পক্ষে বিবাদে জড়িত হওয়া উপযুক্ত নয়, বরং তাকে সকলের প্রতি কোমল . . . হতে হবে।—২ তীম. ২:২৪.

একজন মৃদু ব্যক্তি দুর্বল হন না। কারণ সমস্যার মুখে পড়লে আত্মসংযম বজায় রাখার জন্য শক্তির প্রয়োজন। মৃদুতা হল ‘পবিত্র শক্তির ফলের’ একটা দিক। (গালা. ৫:২২, ২৩) বাইবেলে যে-ইব্রীয় শব্দকে “মৃদুতা” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, সেই শব্দকে কখনো কখনো এমন বুনো ঘোড়াকে বোঝানোর জন্যও ব্যবহার করা হয়েছে, যাকে বশে থাকতে শেখানো হয়েছে। চিন্তা করুন, একটা বুনো ঘোড়া এখন শান্ত থাকতে শিখে গিয়েছে। তবে, সে শান্ত থাকে বলে যে তার শক্তি কমে গিয়েছে, এমন নয়। সে এখনও আগের মতো শক্তিশালী। তাহলে, কীভাবে আমরা মৃদুতাকে আমাদের শক্তি করে তুলতে পারি? আমরা নিজেদের ক্ষমতায় তা করতে পারব না। আমাদের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে পবিত্র শক্তি চাইতে হবে, যাতে তিনি আমাদের এই অসাধারণ গুণ গড়ে তুলতে সাহায্য করেন। অনেক ভাই-বোন এমনটা করেছে। লোকেরা যখন তাদের সঙ্গে ঝগড়া করার চেষ্টা করেছে, তখন তারা শান্ত থাকতে পেরেছে আর এটা অন্যদের উপর এক ভালো প্রভাব ফেলেছে।—২ তীম. ২:২৪, ২৫. প্রহরীদুর্গ ২৩.০৯ ১৫ অনু. ৩

সোমবার, ৬ অক্টোবর

আমি . . . প্রার্থনা করেছিলাম। যিহোবা আমার বিনতি শুনে আমার মনের ইচ্ছা পূর্ণ করেছেন।—১ শমূ. ১:২৭.

প্রেরিত যোহন একটা চমৎকার দর্শনে দেখেছিলেন যে, ২৪ জন প্রাচীন স্বর্গে যিহোবার উপাসনা করছেন। তারা যিহোবার প্রশংসা করছিলেন এবং বলছিলেন: তিনি “গৌরব ও সমাদর ও ক্ষমতা পাওয়ার যোগ্য।” (প্রকা. ৪:১০, ১১) এ ছাড়া, যিহোবার বিশ্বস্ত স্বর্গদূতদের কাছেও তাঁর প্রশংসা এবং সমাদর করার অনেক কারণ রয়েছে। তারা স্বর্গে যিহোবার সঙ্গে থাকেন এবং তাঁকে অনেক ভালোভাবে জানেন। যিহোবা যা-কিছু করেন, সেগুলো দেখে তারা বুঝতে পারেন যে, তিনি কেমন ঈশ্বর আর তাঁর মধ্যে কোন কোন গুণ রয়েছে। তাই, তারা তাঁর প্রশংসা না করে থাকতে পারেন না। (ইয়োব ৩৮:৪-৭) আমাদেরও প্রার্থনা করার সময়ে যিহোবার প্রশংসা করা উচিত। তাঁকে বলা উচিত, তাঁর কোন বিষয়গুলো আমাদের ভালো লাগে এবং কেন। তাই, আপনি যখন বাইবেল পড়বেন এবং তা নিয়ে অধ্যয়ন করবেন, তখন চিন্তা করুন, যিহোবার কোন বিষয়গুলো আর তাঁর কোন গুণগুলো আপনার সবচেয়ে ভালো লাগে। (ইয়োব ৩৭:২৩; রোমীয় ১১:৩৩) এরপর আপনি যখন যিহোবার কাছে প্রার্থনা করবেন, তখন সেই বিষয়ে তাঁকে বলুন এবং তাঁর প্রশংসা করুন। এ ছাড়া চিন্তা করুন, যিহোবা আপনার জন্য এবং পুরো পৃথিবীর ভাই-বোনদের জন্য কত কিছু করেন।—১ শমূ. ২:১, ২. প্রহরীদুর্গ ২৩.০৫ ৩-৪ অনু. ৬-৭

মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর

যিহোবা যেভাবে চান, তোমরা . . . সেই অনুযায়ী [চল।]—কল. ১:১০.

উনিশ-শো উনিশ সালে ঈশ্বরের লোকেরা মহতী বাবিল থেকে মুক্ত হয় আর সেই বছরেই ‘বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাসকে’ নিযুক্ত করা হয়। এটা একেবারে সঠিক সময় ছিল। সেই সময়েই “পবিত্রতার পথ” খোলা হয়! এখন এই দাস তার কাজ শুরু করে দেয় এবং এই পবিত্রতার পথে চলার জন্য সৎহৃদয়ের লোকদের স্বাগত জানাতে শুরু করে। (মথি ২৪:৪৫-৪৭, যিশা. ৩৫:৮) অতীতের বিশ্বস্ত লোকেরা “পবিত্রতার পথ” প্রস্তুত করার জন্য যে-পরিশ্রম করেছিল, সেটার কারণে পরবর্তী সময়ে এই পথে যে-নতুন লোকেরা চলত, তারা যিহোবা এবং তাঁর উদ্দেশ্যের বিষয়ে আরও শিখতে পারত। (হিতো. ৪:১৮) তারা যিহোবার মান অনুযায়ী নিজেদের জীবনেও পরিবর্তন করতে পারত। তবে, যিহোবা এমনটা আশা করেননি যে, তাঁর লোকেরা রাতারাতি সমস্ত পরিবর্তন করে ফেলবে। তিনি জানেন, এতে সময় লাগবে, তাই তিনি ধীরে ধীরে তাদের চিন্তাধারা সংশোধন করেন। একটু চিন্তা করুন, সেই সময়টা কত ভালো হবে, যখন আমরা সবাই আমাদের প্রতিটা কাজের মাধ্যমে যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করতে পারব! প্রতিটা রাস্তাকে ক্রমাগত মেরামত করতে হয়। একইভাবে ১৯১৯ সাল থেকে ‘পবিত্রতার পথে’ ক্রমাগত কাজ করা হচ্ছে, যাতে আরও সৎহৃদয়ের ব্যক্তি মহতী বাবিল ছেড়ে এই পথে চলতে পারে। প্রহরীদুর্গ ২৩.০৫ ১৭ অনু. ১৫-১৬

বুধবার, ৮ অক্টোবর

আমি কখনো তোমাকে ছাড়ব না।—ইব্রীয় ১৩:৫.

যে-ভাইয়েরা পরিচালকগোষ্ঠীর বিভিন্ন কমিটিতে সাহায্য করে, তাদের পরিচালকগোষ্ঠীর ভাইয়েরা প্রশিক্ষণ দেয়। এই ভাইয়েরা এখনই সংগঠনে বড়ো বড়ো দায়িত্ব সামলাচ্ছে আর ভবিষ্যতে তারা খ্রিস্টের মেষদের যত্ন নেওয়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। মহাক্লেশের একেবারে শেষের দিকে যখন শেষ অভিষিক্ত খ্রিস্টান স্বর্গে চলে যাবে, তখন পৃথিবীতে বিশুদ্ধ উপাসনা থেমে যাবে না। এটা চলতে থাকবে। যিশু খ্রিস্টের নির্দেশনায় যিহোবার লোকেরা বিশ্বস্তভাবে সেবা করে চলবে। আমরা জানি, সেইসময় মাগোগ দেশীয় গোগ বা জাতির জোট রেগে গিয়ে আমাদের আক্রমণ করবে। (যিহি. ৩৮:১৮-২০) কিন্তু, সেই আক্রমণ শুধু কিছুসময়ের জন্য হবে আর শত্রুরা সফল হতে পারবে না। যিহোবার লোকেরা তাঁর উপাসনা করে চলবে এবং তিনি অবশ্যই তাঁর লোকদের রক্ষা করবেন। প্রেরিত যোহন একটা দর্শনে খ্রিস্টের “আরও মেষের” ‘বিরাট জনতাকে’ দেখেছিলেন। যোহনকে বলা হয়েছিল যে, এই “বিরাট জনতা” “মহাক্লেশ পার হয়ে এসেছে।” (প্রকা. ৭:৯, ১৪) এর থেকে আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, যিহোবা তাঁর লোকদের অবশ্যই রক্ষা করবেন! প্রহরীদুর্গ ২৪.০২ ৬ অনু. ১৩-১৪

বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর

তোমাদের উপর পবিত্র শক্তিকে কাজ করার ক্ষেত্রে বাধা দিয়ো না।—১ থিষল. ৫:১৯.

কীভাবে আমরা পবিত্র শক্তি পেতে পারি? এটার জন্য আমরা প্রার্থনা করতে পারি, ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন করতে পারি এবং পবিত্র শক্তির নির্দেশনায় চলা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারি। এই সমস্ত কিছু করার মাধ্যমে আমরা “পবিত্র শক্তির ফল” অর্থাৎ ঈশ্বরের মতো গুণাবলি গড়ে তুলতে পারব। (গালা. ৫:২২, ২৩) যিহোবা শুধুমাত্র সেই লোকদেরই তাঁর পবিত্র শক্তি দেন, যারা ভালো বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করে এবং নিজেদের আচার-আচরণ শুদ্ধ রাখে। আমরা যদি খারাপ বা নোংরা বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করতে থাকি এবং সেই অনুযায়ী কাজ করি, তা হলে যিহোবা আমাদের তাঁর পবিত্র শক্তি দেওয়া বন্ধ করে দেবেন। (১ থিষল. ৪:৭, ৮) আমরা যদি চাই, যিহোবা আমাদের ক্রমাগত তাঁর পবিত্র শক্তি দিক, তা হলে এটাও গুরুত্বপূর্ণ যেন আমরা “ভবিষ্যদ্‌বাণী তুচ্ছ” না করি। (১ থিষল. ৫:২০) এখানে ‘ভবিষ্যদ্‌বাণীর’ মানে হল সেই কথাগুলো, যেগুলো ঈশ্বর তাঁর পবিত্র শক্তির মাধ্যমে লিখিয়েছিলেন, যেমন তাঁর দিনের বিষয়ে এবং এই বিষয়ে যে, সেই দিন কতটা কাছে। তাই, আমাদের কখনোই চিন্তা করা উচিত নয়, আরমাগিদোন আসতে অনেক দেরি অথবা আমাদের বেঁচে থাকতে থাকতে এটা আসবে না। এর পরিবর্তে, আমাদের চিন্তা করা উচিত, সেটা খুব শীঘ্রই আসছে। এমনটা আমরা তখনই করতে পারব, যখন আমরা আমাদের আচার-আচরণ শুদ্ধ রাখব এবং ‘ঈশ্বরের প্রতি আমাদের যে ভক্তি রয়েছে, তা কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করে’ চলব।—২ পিতর ৩:১১, ১২. প্রহরীদুর্গ ২৩.০৬ ১২ অনু. ১৩-১৪

শুক্রবার, ১০ অক্টোবর

সদাপ্রভুকে ভয় করাই প্রজ্ঞার আরম্ভ।—হিতো. ৯:১০.

আমাদের ফোন বা কম্পিউটারে যদি হঠাৎ করে কোনো নোংরা ছবি চলে আসে, তা হলে খ্রিস্টান হিসেবে আমাদের কী করা উচিত? আমাদের সঙ্গেসঙ্গে সেটা থেকে চোখ সরিয়ে নেওয়া উচিত। সেইসময় আমরা যদি মনে রাখি, যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কতটা মূল্যবান, তা হলে আমরা এই পদক্ষেপ নিতে পারব। হতে পারে, কোনো ছবি ততটাও নোংরা নয়, কিন্তু সেটা দেখলে আমাদের মনে অনৈতিক আকাঙ্ক্ষা চলে আসতে পারে। কেন আমাদের এইরকম ছবিও দেখা উচিত নয়? কারণ আমরা এমন কিছুই করতে চাই না, যেটার কারণে আমাদের মনে মন্দ আকাঙ্ক্ষা চলে আসে কিংবা আমরা মনে মনে ব্যভিচার করে ফেলি। (মথি ৫:২৮, ২৯) থাইল্যান্ডে থাকা ডেভিড নামে একজন প্রাচীন বলেন: “আমি চিন্তা করি, ‘আমি যদি এমন কোনো ছবি দেখতেই থাকি, যেটা ততটাও নোংরা নয়, তা হলে যিহোবা কি আমাকে দেখে খুশি হবেন?’ এভাবে চিন্তা করার মাধ্যমে আমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি।” আমাদের মধ্যে যদি এই বিষয়ে ভয় থাকে যে, কোনো খারাপ কাজ করলে যিহোবা কতটা কষ্ট পাবেন, তা হলে আমরা বিজ্ঞতার সঙ্গে কাজ করতে পারব। আসলে, ঈশ্বরকে ভয় করাই হল “প্রজ্ঞার আরম্ভ।” প্রহরীদুর্গ ২৩.০৬ ২৩ অনু. ১২-১৩

শনিবার, ১১ অক্টোবর

হে আমার জাতি, চল, তোমার অন্তরাগারে প্রবেশ কর।—যিশা. ২৬:২০.

‘অন্তরাগারের’ মানে আমাদের মণ্ডলীগুলো হতে পারে। যিহোবা প্রতিজ্ঞা করেছেন, আমরা যদি ভাই-বোনদের সঙ্গে মিলে তাঁর উপাসনা করে চলি, তা হলে মহাক্লেশ চলাকালীন তিনি আমাদের রক্ষা করবেন। তাই, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেন আজ আমরা আমাদের ভাই-বোনদের শুধু সহ্যই না করি বরং তাদের প্রতি ভালোবাসা দেখাই, যদিও তা দেখানো কঠিন হতে পারে। এর ফলে, পরবর্তী সময়ে আমাদের জীবন রক্ষা পেতে পারে! যখন “সদাপ্রভুর মহাদিন” আসবে, তখন সমস্ত মানুষের জন্য সেটা এক কঠিন সময় হবে। (সফ. ১:১৪, ১৫) যিহোবার লোকদেরও সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু, আমরা যদি এখন থেকেই নিজেদের প্রস্তুত করি, তা হলে আমরা সেইসময়ে শান্ত থাকতে পারব এবং অন্যদের সাহায্য করতে পারব। আমাদের সামনে যা-ই সমস্যা আসুক না কেন, আমরা ধৈর্য ধরতে পারব। আমাদের ভাই-বোনেরা যখন কোনো সমস্যার মধ্য দিয়ে যাবে, তখন আমাদের হৃদয়ে তাদের জন্য সমবেদনা থাকবে এবং তাদের সাহায্য করার জন্য আমাদের পক্ষে যা করা সম্ভব হবে, আমরা তা করব। আজ আমরা যদি ভাই-বোনদের ভালোবাসি, তা হলে সেইসময়েও আমরা তাদের একা ছেড়ে দেব না। এরপর, যিহোবা আমাদের নতুন জগতে অনন্তজীবন দেবেন, যেখানে সমস্ত সমস্যা এবং বিপর্যয় অতীতের বিষয় হয়ে যাবে।—যিশা. ৬৫:১৭. প্রহরীদুর্গ ২৩.০৭ ৭ অনু. ১৬-১৭

রবিবার, ১২ অক্টোবর

[যিহোবা] তোমাদের দৃঢ় করবেন, সবল করবেন এবং শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাবেন।—১ পিতর ৫:১০.

বাইবেল প্রায়ই বলে যে, যিহোবার বিশ্বস্ত দাসেরা শক্তিশালী ছিলেন। কিন্তু, যারা খুব শক্তিশালী ছিলেন, তারাও সবসময় এমনটা মনে করেননি তারা শক্তিশালী। যেমন, রাজা দায়ূদ অনেক বার অনুভব করেছিলেন যে, তিনি পর্বতের মতো শক্তিশালী। কিন্তু, কখনো কখনো তিনি “বিহ্বল” হয়ে পড়তেন বা ভয় পেতেন। (গীত. ৩০:৭) ঈশ্বরের পবিত্র শক্তি যখন শিম্‌শোনের উপর কাজ করত, তখন তিনি অসাধারণ শক্তি লাভ করতেন। কিন্তু তিনি জানতেন, ঈশ্বরের পবিত্র শক্তি ছাড়া তার ‘শক্তি ফুরিয়ে যাবে আর তিনি সাধারণ মানুষের মতোই দুর্বল হয়ে পড়বেন।’ (বিচার. ১৪:৫, ৬; ১৬:১৭) আসলে, যিহোবাই এই বিশ্বস্ত দাসদের শক্তিশালী করেছিলেন। প্রেরিত পৌল জানতেন যে, তারও যিহোবার কাছ থেকে শক্তির প্রয়োজন। (২ করি. ১২:৯, ১০) তার কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যা ছিল। (গালা. ৪:১৩, ১৪) অনেকসময় সঠিক কাজ করাও পৌলের জন্য কঠিন বলে মনে হত। (রোমীয় ৭:১৮, ১৯) আর মাঝে মাঝে তিনি উদ্‌বিগ্ন হয়ে পড়তেন এবং এই ভেবে ভয় পেতেন যে, তার সঙ্গে পরবর্তী সময়ে কী হবে। (২ করি. ১:৮, ৯) তা সত্ত্বেও, তিনি বলেছিলেন, যখনই তিনি দুর্বল তখনই তিনি শক্তিশালী। কেন তিনি এমনটা বলতে পেরেছিলেন? যিহোবা তাকে প্রয়োজনীয় শক্তি দিয়েছিলেন, যাতে তিনি তার সমস্যাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারেন। প্রহরীদুর্গ ২৩.১০ ১২ অনু. ১-২

সোমবার, ১৩ অক্টোবর

যিহোবা হৃদয় দেখেন।—১ শমূ. ১৬:৭.

কখনো কখনো আমাদের মনে হতে পারে, আমরা কোনো কাজের নই। এইরকম পরিস্থিতিতে আমরা মনে রাখতে পারি, কীভাবে যিহোবা নিজে আমাদের তাঁর প্রতি আকর্ষণ করেছেন। (যোহন ৬:৪৪) তিনি আমাদের হৃদয় দেখেন এবং তিনি আমাদের মধ্যে সেই ভালো বিষয়গুলো দেখেন, যেগুলো আমরা নিজেরা দেখতে পাই না। (২ বংশা. ৬:৩০) সেইজন্য যিহোবা যখন আমাদের বলেন যে, তিনি আমাদের মূল্যবান হিসেবে দেখেন, তখন তাঁর উপর আমরা সম্পূর্ণ আস্থা রাখতে পারি। (১ যোহন ৩:১৯, ২০) সত্য শেখার আগে আমাদের মধ্যে অনেকে এমন কাজগুলো করত, যেগুলোর কারণে তারা আজও নিজেদের দোষী বলে মনে করে। (১ পিতর ৪:৩) এমনকী বিশ্বস্ত খ্রিস্টানদেরও তাদের নিজেদের দুর্বলতাগুলোর সঙ্গে লড়াই করতে হয়। আপনাকেও কি এই সমস্ত বিষয়গুলোর সঙ্গে লড়াই করতে হয়? আপনি কি মনে করেন, যিহোবা কখনো আপনাকে ক্ষমা করবেন না? এর উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তা হলে আপনি একা নন। অতীতেও যিহোবার কিছু বিশ্বস্ত উপাসক এইরকম মনে করেছিল। প্রেরিত পৌলের উদাহরণের উপর মনোযোগ দিন। যখন তিনি এই বিষয়ে চিন্তা করতেন যে, তার মধ্যে কত দুর্বলতা রয়েছে, তখন তার অনেক খারাপ লাগত। (রোমীয় ৭:২৪) পৌল আগে যে-পাপগুলো করেছিলেন, সেগুলোর জন্য তিনি অনুতপ্ত হয়েছিলেন এবং বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন। তারপরও তিনি বলেছিলেন, “আমি প্রেরিতদের মধ্যে সবচেয়ে নগণ্য” এবং “পাপীদের মধ্যে আমি সর্বপ্রধান।”—১ করি. ১৫:৯; ১ তীম. ১:১৫. প্রহরীদুর্গ ২৪.০৩ ২৭ অনু. ৫-৬

মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর

লোকেরা . . . ঈশ্বর যিহোবার গৃহ ছেড়ে [দিল।]—২ বংশা. ২৪:১৮.

রাজা যিহোয়াশের সিদ্ধান্ত থেকে আমরা শিখতে পারি, আমাদের সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা উচিত, যারা যিহোবাকে ভালোবাসে এবং তাঁকে খুশি করতে চায়। এই ধরনের বন্ধুরা আমাদের সঠিক কাজ করতে উৎসাহিত করবে। আর এমনটা নয় যে, সবসময় আমাদের সমবয়সি ব্যক্তিদের সঙ্গেই বন্ধুত্ব করতে হবে। আমরা আমাদের চেয়ে ছোটো অথবা বড়ো যে-কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারি। মনে আছে, যিহোয়াশের বন্ধু যিহোয়াদা তার চেয়ে কত বড়ো ছিলেন? যখন বন্ধু বাছাই করার বিষয়টা আসে, তখন চিন্তা কোরো, ‘আমার বন্ধুরা কি আমাকে যিহোবার উপর বিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে? তারা কি আমাকে যিহোবার বাধ্য হতে উৎসাহিত করে? তারা কি যিহোবা এবং বাইবেলের সত্যগুলো সম্বন্ধে কথা বলে? তারা নিজেরা কি যিহোবার মান অনুযায়ী চলে? আমি যখন ভুল কিছু করি, তখন তারা কি আমাকে শোধরানোর চেষ্টা করে, না কি সেটাকে প্রশ্রয় দেয়?’ (হিতো. ২৭:৫, ৬, ১৭) সত্যি বলতে কী, তোমার বন্ধুরা যদি যিহোবাকে ভালো না বাসে, তা হলে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু, তোমার বন্ধুরা যদি যিহোবাকে ভালোবাসে, তা হলে তাদের ছেড়ে দিয়ো না। তারা সবসময় তোমাকে সাহায্য করবে।—হিতো. ১৩:২০. প্রহরীদুর্গ ২৩.০৯ ৯-১০ অনু. ৬-৭

বুধবার, ১৫ অক্টোবর

আমিই আলফা ও ওমেগা।—প্রকা. ১:৮.

আলফা হল গ্রিক বর্ণমালার প্রথম অক্ষর এবং ওমেগা হল শেষ অক্ষর। যিহোবা যখন নিজেকে আলফা ও ওমেগা বলেছিলেন, তখন এক অর্থে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, তিনি যে-কাজটা শুরু করেন, সেটা তিনি অবশ্যই শেষ করেন। আদম ও হবাকে সৃষ্টি করার পর ঈশ্বর কহিলেন, “তোমরা প্রজাবন্ত ও বহুবংশ হও, এবং পৃথিবী পরিপূর্ণ ও বশীভূত কর।” (আদি. ১:২৮) এভাবে, যিহোবা যখন তাঁর উদ্দেশ্য সম্বন্ধে বলেছিলেন, তখন সেটা একটা শুরু ছিল। এটা এমন যেন সেইসময় যিহোবা বলেছিলেন, “আলফা।” ভবিষ্যতে, আদম ও হবার নিখুঁত সন্তানদের মাধ্যমে এই পৃথিবী পূর্ণ হবে, সবাই ঈশ্বরের বাধ্য হবে এবং এই পৃথিবী এক সুন্দর পরমদেশে পরিণত হবে। পরবর্তী সময়ে, যিহোবার উদ্দেশ্য যখন পরিপূর্ণ হবে, তখন তিনি যেন বলবেন, “ওমেগা।” যিহোবা যখন শুরুতে “আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী এবং তদুভয়স্থ সমস্ত বস্তুব্যূহ” সৃষ্টি করার কাজ শেষ করেছিলেন, তখন তিনি একটা গ্যারান্টি দিয়েছিলেন। যিহোবা সপ্তম দিনকে আলাদা রেখেছেন, যাতে তিনি পৃথিবী ও মানুষের জন্য তাঁর উদ্দ্যেশ্য পূরণ করতে পারেন। তাই, যখন তিনি সপ্তম দিনকে পবিত্র বলেছিলেন, তখন তিনি যেন এই গ্যারান্টি দিচ্ছিলেন যে, সপ্তম দিনের শেষে তাঁর উদ্দেশ্য ইতিমধ্যেই পরিপূর্ণ হয়ে যাবে।—আদি ২:১-৩. প্রহরীদুর্গ ২৩.১১ ৫ অনু. ১৩-১৪

বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর

তোমরা প্রান্তরে সদাপ্রভুর পথ প্রস্তুত কর, মরুভূমিতে আমাদের ঈশ্বরের জন্য রাজপথ সরল কর।—যিশা. ৪০:৩.

ব্যাবিলন থেকে ইজরায়েল পর্যন্ত যাত্রা করা অনেক কঠিন ছিল আর এই যাত্রার জন্য তাদের প্রায় চার মাস সময় লাগতে পারত। কিন্তু, যিহোবা যিহুদিদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তিনি পথে আসা যেকোনো বাধা দূর করে দেবেন। যে-যিহুদিরা যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত ছিল, তারা জানত, এই যাত্রা করার জন্য তাদের ত্যাগস্বীকার করতে হবে। কিন্তু, তারা এটাও জানত, এই ত্যাগস্বীকার সেই আশীর্বাদের তুলনায় কিছুই নয়, যেটা তারা ইজরায়েলে ফিরে গিয়ে পাবে। সবচেয়ে বড়ো আশীর্বাদ এটা হবে যে, তারা এখন খুব ভালোভাবে যিহোবার উপাসনা করতে পারবে। ব্যাবিলন নগরে যিহোবার কোনো মন্দির ছিল না আর সেইসঙ্গে কোনো বেদিও ছিল না, যেটার উপর মোশির ব্যবস্থা অনুযায়ী বলি উৎসর্গ করতে হত। আর সেই বলিগুলো উৎসর্গ করার জন্য সেখানে যাজকদেরও কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এ ছাড়া, তারা এমন লোকদের মাঝে ছিল, যারা মিথ্যা দেব-দেবীদের উপাসনা করত এবং যিহোবার মানগুলোকে একটুও পরোয়া করত না। সেই লোকদের সংখ্যা যিহুদিদের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। এই সমস্ত কারণে হাজার হাজার বিশ্বস্ত যিহুদি তাদের দেশে ফিরে আসার জন্য উৎসুক হয়ে ছিল, যেখানে তারা আবারও বিশুদ্ধ উপাসনা শুরু করতে পারত। প্রহরীদুর্গ ২৩.০৫ ১৪-১৫ অনু. ৩-৪

শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর

আলোর সন্তান হিসেবে চলো।—ইফি. ৫:৮.

‘আলোর সন্তান হিসেবে চলার’ জন্য আমাদের পবিত্র শক্তির সাহায্য নিতে হবে। কেন? কারণ এই জগৎ অনৈতিকতায় ভরে গিয়েছে আর এর মধ্যে নিজেদের শুদ্ধ রাখা সহজ নয়। (১ থিষল. ৪:৩-৫, ৭, ৮) কিন্তু, পবিত্র শক্তির সাহায্যে আমরা জগতের সেইসমস্ত চিন্তাভাবনা ও মনোভাবকে নিজেদের উপর প্রভাব ফেলতে দেব না, যেগুলো যিহোবার চিন্তাভাবনার সঙ্গে মেলে না। এ ছাড়া, পবিত্র শক্তির সাহায্যে আমরা ‘ধার্মিক হতে এবং সত্যের সঙ্গে মিল রেখে জীবনযাপন করতে’ পারব। (ইফি. ৫:৯) পবিত্র শক্তি পাওয়ার একটা উপায় হল, এটার জন্য যিহোবার কাছে প্রার্থনা করা। যিশু বলেছিলেন, ‘[যিহোবার] কাছে যারা চায়, তিনি তাদের পবিত্র শক্তি দেবেন।’ (লূক ১১:১৩) এ ছাড়া, আমরা যখন সভায় প্রত্যেকের সঙ্গে যিহোবার উপাসনা করি, তখন আমরা পবিত্র শক্তি পাই। (ইফি. ৫:১৯, ২০) পবিত্র শক্তি যখন আমাদের মধ্যে কাজ করে, তখন আমরা এমনভাবে জীবনযাপন করি, যেটা দেখে যিহোবা খুশি হন। প্রহরীদুর্গ ২৪.০৩ ২৩-২৪ অনু. ১৩-১৫

শনিবার, ১৮ অক্টোবর

চাইতে থাকো, তা হলে তোমাদের দেওয়া হবে; অন্বেষণ করতে থাকো, তা হলে তোমরা খুঁজে পাবে; দরজায় আঘাত করতে থাকো, তা হলে তোমাদের জন্য তা খুলে দেওয়া হবে।—লূক ১১:৯.

আপনার কি আরও ধৈর্যের প্রয়োজন? যদি হয়, তা হলে প্রার্থনা করুন। ধৈর্য পবিত্র শক্তির ফলের একটা দিক। (গালা. ৫:২২, ২৩) তাই, যিহোবার কাছ থেকে পবিত্র শক্তি চান এবং তাঁর কাছে অনুরোধ করুন যেন আপনি ধৈর্য ধরতে পারেন। যদি আপনার সামনে কখনো এমন পরিস্থিতি আসে, যেখানে ধৈর্য ধরা আপনার কঠিন বলে মনে হয়, তা হলে পবিত্র শক্তি ‘চাইতে থাকুন।’ (লূক ১১:১৩) এ ছাড়া, আমরা বিনতি করতে পারি, যেন আমরা পরিস্থিতিকে যিহোবার মতো করে দেখতে পারি। এরপর, আমাদের প্রার্থনা করা উচিত। প্রার্থনা করার পর আমাদের প্রতিদিন ধৈর্য ধরার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করা উচিত। আমরা ধৈর্য ধরার জন্য যত বেশি প্রার্থনা করব এবং তা করার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করব, তত বেশি আমরা ধৈর্য ধরতে পারব। আর এটা আমাদের এক অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে। এটা বাইবেলে দেওয়া উদাহরণগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার জন্য সাহায্য করে। বাইবেলে এমন অনেক ব্যক্তির বিষয়ে বলা হয়েছে, যারা ধৈর্য ধরেছিল। সেই ব্যক্তিদের বিবরণ পড়ে এবং সেগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে আমরা জানতে পারি যে, কীভাবে আমরা আলাদা আলাদা পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরতে পারি। প্রহরীদুর্গ ২৩.০৮ ২২ অনু. ১০-১১

রবিবার, ১৯ অক্টোবর

মাছ ধরার জন্য . . . তোমার জাল ফেলো।—লূক ৫:৪.

যিশু প্রেরিত পিতরকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, যিহোবা তার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জুগিয়ে দেবেন। পুনরুত্থিত হওয়ার পর যিশু আরেক বার একটা অলৌকিক কাজ করেছিলেন, যেটার ফলে পিতর এবং অন্যান্য প্রেরিতেরা অনেক মাছ ধরতে পেরেছিলেন। (যোহন ২১:৪-৬) এই অলৌকিক কাজ দেখে পিতর আরেক বার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন, যিহোবা তার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জুগিয়ে দেবেন। পিতরের হয়তো যিশুর এই কথাগুলো মনে পড়ে গিয়েছিল, যারা ‘ঈশ্বরের রাজ্যকে সবসময় জীবনে প্রথম স্থান’ দেয়, যিহোবা তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জুগিয়ে দেন। (মথি ৬:৩৩) এই কারণে পিতর তার মাছ ধরার ব্যাবসা নয় বরং প্রচার কাজকে নিজের জীবনে প্রথম স্থান দিয়েছিলেন। এরপর, ৩৩ খ্রিস্টাব্দের পঞ্চাশত্তমীর দিনে তিনি সাহসের সঙ্গে যিশুর বিষয়ে লোকদের বলতে পেরেছিলেন আর এই কারণে হাজার হাজার লোক সুসমাচার গ্রহণ করতে পেরেছিল। (প্রেরিত ২:১৪, ৩৭-৪১) এরপর, তিনি শমরীয় ও ন-যিহুদিদেরও খ্রিস্টের শিষ্য হতে সাহায্য করেছিলেন। (প্রেরিত ৮:১৪-১৭; ১০:৪৪-৪৮) যিহোবা কতই-না চমৎকার উপায়ে পিতরকে তাঁর সেবা করার সুযোগ দিয়েছিলেন! পিতরের মাধ্যমে তিনি সমস্ত ধরনের লোককে খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে নিয়ে এসেছিলেন। প্রহরীদুর্গ ২৩.০৯ ২০ অনু. ১; ২৩ অনু. ১১

সোমবার, ২০ অক্টোবর

তোমরা যদি সেই স্বপ্ন ও স্বপ্নের তাৎপর্য্য আমাকে জ্ঞাত না কর, তবে খণ্ডবিখণ্ড হইবে।—দানি. ২:৫.

ব্যাবিলনের হাতে জেরুসালেম ধ্বংস হয়ে প্রায় দু-বছর কেটে যাওয়ার পর ব্যাবিলনের রাজা নবূখদ্‌নিৎসর স্বপ্নে একটা বিশাল মূর্তি দেখেছিলেন, যেটার কারণে তিনি খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলেন। তিনি তার জ্ঞানী ব্যক্তিদের বলেছিলেন, যেন তারা সেই স্বপ্ন এবং সেটার অর্থ তাকে বলে। আর যদি তারা বলতে না পারে, তা হলে তিনি তাদের মেরে ফেলবেন। দানিয়েলের জীবনও ঝুঁকির মুখে ছিল। (দানি. ২:৩-৫) তাকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হত কারণ অনেক লোকের জীবন ঝুঁকির মুখে ছিল। তিনি “রাজার নিকটে গিয়া এই প্রার্থনা করিলেন, আমার জন্য সময় নিরূপণ করিতে আজ্ঞা হউক, যেন আমি মহারাজকে স্বপ্নটীর তাৎপর্য্য জ্ঞাত করিতে পারি।” (দানি. ২:১৬) এখান থেকে বোঝা যায়, দানিয়েল কতটা সাহসী ছিলেন এবং ঈশ্বরের উপর তার কতটা বিশ্বাস ছিল। কেন আমরা তা বলতে পারি? কারণ বাইবেলে এমনটা লেখা নেই যে, দানিয়েল আগে কখনো কারো স্বপ্নের অর্থ বলেছিলেন। দানিয়েল তার বন্ধুদের বলেছিলেন, “যেন তাঁহারা ঐ নিগূঢ় বিষয় সম্বন্ধে স্বর্গের ঈশ্বরের কাছে করুণা প্রার্থনা করেন।” (দানি. ২:১৮) যিহোবা তাদের প্রার্থনা শুনেছিলেন। ঈশ্বরের সাহায্যে দানিয়েল নবূখদ্‌নিৎসরের স্বপ্নের অর্থ বলে দিয়েছিলেন। এর ফলে, দানিয়েল এবং তার বন্ধুদের জীবন রক্ষা পেয়েছিল। প্রহরীদুর্গ ২৩.০৮ ৩ অনু. ৪

মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর

যে-কেউ শেষ পর্যন্ত স্থির থাকবে, সে-ই রক্ষা পাবে।—মথি ২৪:১৩.

চিন্তা করুন, ধৈর্য ধরার ফলে কোন কোন উপকার লাভ করা যায়। আমরা যখন ধৈর্য ধরি, তখন আমরা আরও বেশি আনন্দে থাকি এবং শান্ত থাকতে পারি। এ ছাড়া, আমাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং আমরা অযথা চাপের মধ্যে থাকি না। ধৈর্য ধরার ফলে অন্যদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো থাকে এবং মণ্ডলীতে একতার বন্ধন আরও মজবুত হয়। আর কেউ যদি আমাদের উসকে দেওয়ার চেষ্টা করে, তা হলে আমরা দ্রুত রেগে যাই না। এর ফলে, বিষয়টা আর বাড়তে পারে না। (গীত. ৩৭:৮; হিতো. ১৪:২৯) সবচেয়ে বড়ো বিষয় হল, আমরা আমাদের পিতা যিহোবাকে অনুকরণ করি এবং তাঁর আরও নিকটবর্তী হই। ধৈর্য কতই-না চমৎকার এক গুণ আর এর কত উপকার রয়েছে! ধৈর্য ধরা সবসময় সহজ হয় না ঠিকই, কিন্তু যিহোবার সাহায্যে আমরা আরও ধৈর্য ধরতে পারি। যতদিন পর্যন্ত আমরা ধৈর্য ধরছি এবং নতুন জগতের জন্য “অপেক্ষা” করছি, ততদিন পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, যিহোবা আমাদের সাহায্য করবেন এবং আমাদের সুরক্ষা জোগাবেন। (মীখা ৭:৭) তাই, আমরা যেন সবসময় “ধৈর্যকে কাপড়ের মতো” পরে থাকার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হই! প্রহরীদুর্গ ২৩.০৮ ২২ অনু. ৭; ২৫ অনু. ১৬-১৭

বুধবার, ২২ অক্টোবর

বিশ্বাস যদি কাজের মাধ্যমে দেখানো না হয়, তা হলে সেই বিশ্বাস মৃত।—যাকোব ২:১৭.

যাকোব বলেছিলেন, একজন ব্যক্তি দাবি করতে পারে যে, তার বিশ্বাস রয়েছে, কিন্তু তার কাজের মাধ্যমে তা দেখা যায় না। (যাকোব ২:১-৫, ৯) এ ছাড়া, যাকোব আরেকজন ব্যক্তির কথা বলেছিলেন। সেই ব্যক্তি যখন দেখে, তার “কোনো ভাই অথবা বোনের কাপড়ের অভাব রয়েছে এবং তার কাছে দিনের জন্য পর্যাপ্ত খাবার নেই,” তারপরও, সে তার কোনো সাহায্য করে না। সেই ব্যক্তি যদি বলে, তার বিশ্বাস রয়েছে, কিন্তু কাজের মাধ্যমে তার বিশ্বাস না দেখায়, তা হলে তার বিশ্বাস কোনো কাজের নয়। (যাকোব ২:১৪-১৬) যাকোব রাহবের উদাহরণ দিয়ে বলেছিলেন, আমাদের যদি বিশ্বাস থাকে, তা হলে সেটা কাজের মাধ্যমেও দেখাতে হবে। (যাকোব ২:২৫, ২৬) রাহব শুনেছিলেন, যিহোবা ইজরায়েলীয়দের সাহায্য করছেন এবং তিনিও তাঁর উপর বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন। (যিহো. ২:৯-১১) শুধু তা-ই নয়, তিনি তার বিশ্বাস অনুযায়ী কাজও করেছিলেন। দু-জন ইজরায়েলীয় গুপ্তচরের জীবন যখন ঝুঁকির মুখে ছিল, তখন রাহব তাদের রক্ষা করেছিলেন। তাই, অব্রাহামের মতো তাকেও ধার্মিক বলা হয়েছে, যদিও তিনি নিখুঁত ছিলেন না এবং মোশির ব্যবস্থা পালন করতেন না। রাহবের কাছ থেকে আমরা শিখি, আমাদের মধ্যে শুধু বিশ্বাস থাকাই যথেষ্ট নয়, কিন্তু সেটার সঙ্গে সঙ্গে কাজ করাও গুরুত্বপূর্ণ। প্রহরীদুর্গ ২৩.১২ ৫-৬ অনু. ১২-১৩

বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর

যেন তোমরা দৃঢ় হও এবং বিশ্বাসের ভিত্তির সঙ্গে সংযুক্ত থাক।—ইফি. ৩:১৭.

খ্রিস্টান হিসেবে আমরা কেবল বাইবেল থেকে অল্প বিষয় জেনেই সন্তষ্ট থাকি না। আমরা পবিত্র শক্তির সাহায্যে ‘ঈশ্বরের এমন চিন্তাভাবনা’ সম্বন্ধে জানতে চাই, “যেগুলো অনুসন্ধান করে বের করা যায় না।” (১ করি. ২:৯, ১০) তাই, ব্যক্তিগত অধ্যয়নের সময়ে আপনি এমন বিষয়গুলো নিয়ে অধ্যয়ন করতে পারেন, যেগুলোর মাধ্যমে আপনি যিহোবার আরও নিকটবর্তী হবেন। আপনি চাইলে এই বিষয় নিয়ে অধ্যয়ন করতে পারেন যে, যিহোবা অতীতে তাঁর দাসদের প্রতি কীভাবে প্রেম দেখিয়েছিলেন আর এটা থেকে কীভাবে বোঝা যায়, তিনি আপনাকেও ভালোবাসেন। অথবা আপনি এই বিষয় নিয়েও অধ্যয়ন করতে পারেন, যিহোবা অতীতে ইজরায়েলীয়দের যেভাবে তাঁকে উপাসনা করতে বলেছিলেন আর বর্তমানে তিনি খ্রিস্টানদের যেভাবে উপাসনা করতে বলেছেন, সেটার মধ্যে কোন কোন মিল রয়েছে। এ ছাড়া, আপনি সেই ভবিষ্যদ্‌বাণীগুলো নিয়ে গভীরভাবে অধ্যয়ন করতে পারেন, যেগুলো যিশু পৃথিবীতে থাকাকালীন পরিপূর্ণ করেছিলেন। আপনি এই বিষয়গুলো নিয়ে অধ্যয়ন করার জন্য যিহোবার সাক্ষিদের জন্য গবেষণা নির্দেশিকা ব্যবহার করতে পারেন। এভাবে অধ্যয়ন করলে আপনার অনেক ভালো লাগবে। আপনি যখন বাইবেল নিয়ে গভীরভাবে অধ্যয়ন করবেন, তখন আপনার বিশ্বাস দৃঢ় হবে এবং আপনি “ঈশ্বরবিষয়ক জ্ঞান” লাভ করবেন।—হিতো. ২:৪, ৫. প্রহরীদুর্গ ২৩.১০ ১৮-১৯ অনু. ৩-৫

শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর

বিশেষভাবে, একে অন্যকে গভীরভাবে ভালোবাসো, কারণ ভালোবাসা অসংখ্য পাপ ঢেকে দেয়।—১ পিতর ৪:৮.

এখানে পিতর যে-ধরনের ভালোবাসার কথা বলেছেন, সেটার জন্য যে-গ্রিক শব্দটা ব্যবহার করেছিলেন, সেটার অর্থ হল, “টেনে বড়ো করা।” এই পদের বাকি অংশে বলা হয়েছে, আমরা যদি ভাই-বোনদের প্রতি এইরকম প্রেম দেখাই, তা হলে এর ফলে তাদের পাপ ঢেকে যাবে। এটা এমন যেন আপনি দু-হাতে প্রেমের একটা কাপড় ধরে আছেন, যেটা টেনে বড়ো করা যায়। আপনি এই কাপড়কে এত টানেন যে, এটা অন্যদের একটা দুটো নয় বরং “অসংখ্য পাপ ঢেকে দেয়।” পিতর যখন পাপ ঢাকার বিষয়ে বলছিলেন, তখন তিনি আসলে একে অন্যকে ক্ষমা করার বিষয়ে বলছিলেন। যেমন, একটা কাপড় বিছিয়ে দিলে কোনো দাগ ঢেকে যায়, একইভাবে প্রেম দেখালে অন্যদের দুর্বলতাগুলো আমরা ঢেকে দিতে পারি। আমাদের ভাই-বোনদের এতটাই ভালোবাসতে হবে যে, আমরা তাদের ভুলগুলো ক্ষমা করব, এমনকী সেইসময়ও, যখন তা করা কঠিন বলে মনে হয়। (কল. ৩:১৩) আমরা যখন ভাই-বোনদের ক্ষমা করব, তখন এটা থেকে বোঝা যাবে যে, আমরা তাদের অনেক ভালোবাসি এবং আমরা যিহোবাকেও খুশি করতে চাই। প্রহরীদুর্গ ২৩.১১ ১১-১২ অনু. ১৩-১৫

শনিবার, ২৫ অক্টোবর

শাফন রাজাকে সেই পুস্তকটা পড়ে শোনাতে লাগলেন।—২ বংশা. ৩৪:১৮.

যোশিয় যখন বড়ো হয়েছিলেন, তখন তিনি মন্দির মেরামতের কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন। সেই সময়ে “মোশির মাধ্যমে দেওয়া যিহোবার ব্যবস্থার পুস্তক” খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। তাকে যখন সেই ব্যবস্থার পুস্তক পড়ে শোনানো হয়েছিল, তখন সেটার কথাগুলো তার হৃদয় স্পর্শ করেছিল আর তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। (২ বংশা. ৩৪:১৪, ১৯-২১) তুমি কি প্রতিদিন বাইবেল পড়তে চাও? তুমি যদি প্রতিদিন বাইবেল পড়ে থাক, তা হলে তোমার কেমন লাগছে? তুমি কি সেই পদগুলো লিখে রাখ, যেগুলো তোমাকে সাহায্য করতে পারে? যোশিয়ের যখন ৩৯ বছর বয়স ছিল, তখন তিনি একটা বড়ো ভুল করেছিলেন। যোশিয় যিহোবার কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার পরিবর্তে নিজের উপর নির্ভর করেছিলেন। (২ বংশা. ৩৫:২০-২৫) এর পরিণতি কী হয়েছিল? তাকে নিজের জীবন হারাতে হয়েছিল। এখান থেকে আমরা একটা শিক্ষা লাভ করতে পারি। আমরা যত বড়োই হয়ে যাই না কেন কিংবা যত দীর্ঘসময় ধরেই বাইবেল অধ্যয়ন করে থাকি না কেন, আমাদের সবসময় যিহোবার চিন্তাধারা জানার চেষ্টা করে চলতে হবে। আমাদের যিহোবার কাছে প্রার্থনা করা উচিত, যাতে তিনি আমাদের সঠিক পথ দেখান। এ ছাড়া, আমাদের তাঁর বাক্য বাইবেল নিয়ে অধ্যয়ন করা উচিত এবং অভিজ্ঞ খ্রিস্টানদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া উচিত। আমরা যখন এমনটা করব, তখন আমরা হয়তো কোনো বড়ো ভুল করব না এবং আমরা আনন্দে থাকব।—যাকোব ১:২৫. প্রহরীদুর্গ ২৩.০৯ ১২ অনু. ১৫-১৬

রবিবার, ২৬ অক্টোবর

ঈশ্বর উদ্ধত লোকদের প্রতিরোধ করেন, কিন্তু তিনি নম্র লোকদের প্রতি মহাদয়া দেখান।—যাকোব ৪:৬.

বাইবেলে এমন অনেক মহিলার বিষয়ে বলা হয়েছে, যারা যিহোবাকে খুব ভালোবাসতেন এবং মনপ্রাণ দিয়ে তাঁর সেবা করতেন। সেই মহিলারা ‘নিজেদের দমন করতেন এবং সমস্ত বিষয়ে বিশ্বস্ত’ ছিলেন। (১তীম ৩:১১) অল্পবয়সি বোনেরা, তোমরা সেই মহিলাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পার। এ ছাড়া, তোমাদের মণ্ডলীতে এমন অনেক বোন রয়েছে, যাদের কাছ থেকেও তোমরা অনেক কিছু শিখতে পার। এমন কিছু পরিপক্ব বোনের বিষয়ে চিন্তা করো, যাদের মতো তুমি হতে চাও। প্রথমে লক্ষ করো, তাদের মধ্যে কোন কোন গুণ রয়েছে। এরপর চিন্তা করো, তোমরা কীভাবে তাদের মতো হতে পার। একজন পরিপক্ব বোন হওয়ার জন্য নম্র হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন নম্র বোন যিহোবা এবং অন্যদের সঙ্গে এক ভালো সম্পর্ক বজায় রাখেন। যেমন, একজন বোন যদি নম্র হন এবং যিহোবাকে ভালোবাসেন, তা হলে তিনি ১ করিন্থীয় ১১:৩ পদে দেওয়া নীতি মেনে চলবেন এবং মণ্ডলীতে অথবা পরিবারে যাদের কিছুটা অধিকার রয়েছে, তাদের অধীনে থাকবেন। প্রহরীদুর্গ ২৩.১২ ১৮-১৯ অনু. ৩-৫

সোমবার, ২৭ অক্টোবর

স্বামীদেরও তাদের স্ত্রীদের নিজেদের দেহের মতো ভালোবাসা উচিত।—ইফি. ৫:২৮.

যিহোবা চান যেন একজন স্বামী তার স্ত্রীকে ভালোবাসে, তার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর খেয়াল রাখে, তার ভালো বন্ধু হয় এবং যিহোবার সঙ্গে তার সম্পর্ককে মজবুত করার জন্য তাকে সাহায্য করে। তোমরা যদি এখন থেকেই চিন্তাভাবনা করে কাজ করার ক্ষমতা বাড়াও, মহিলাদের সম্মান করতে শেখ এবং নির্ভরযোগ্য হও, তা হলে পরে তোমরা একজন ভালো জীবনসাথি হতে পারবে। বিয়ে করার পর তোমাদের হয়তো সন্তান হতে পারে। কীভাবে তোমরা ভালো বাবা হতে পার? (ইফি. ৬:৪) যিহোবা হৃদয় থেকে তাঁর পুত্র যিশুকে বলেছিলেন যে, তিনি তাঁকে ভালোবাসেন এবং তাঁর উপর সন্তুষ্ট। (মথি ৩:১৭) তাই, পরে তোমরা যদি বাবা হও, তা হলে তোমরাও যিহোবার মতো হওয়ার চেষ্টা কোরো। তোমাদের সন্তানেরা যেন এটা বোঝে যে, তোমরা তাদের ভালোবাসো। তারা যখন কোনো ভালো কাজ করবে, তখন হৃদয় থেকে তাদের প্রশংসা কোরো। তোমরা যখন এভাবে তোমাদের সন্তানদের সঙ্গে আচরণ করবে, তখন তারাও একজন পরিপক্ব খ্রিস্টান হয়ে উঠবে। তাই, এখন থেকেই তোমরা তোমাদের পরিবারের সদস্য এবং মণ্ডলীর ভাই-বোনদের প্রতি চিন্তা দেখাও। তাদের বলো যে, তোমরা তাদের কতটা ভালোবাসো এবং তারা তোমাদের কাছে কতটা মূল্যবান।—যোহন ১৫:৯. প্রহরীদুর্গ ২৩.১২ ২৮-২৯ অনু. ১৭-১৮

মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর

হে যিহোবা, তোমার অটল প্রেম আমাকে ধরে রাখল।—গীত. ৯৪:১৮.

আশেপাশের লোকদের মতো যিহোবার বিশ্বস্ত সেবকদের উপরও সমস্যা আসে। এ ছাড়া, যেহেতু তারা যিহোবার সেবা করে, তাই লোকেরা তাদের বিরোধিতা করে অথবা তাদের উপর তাড়না নিয়ে আসে। যিহোবা হয়তো আমাদের এই ধরনের সমস্যাগুলো থেকে বাঁচাবেন না, কিন্তু তিনি কথা দিয়েছেন, এগুলো সহ্য করার জন্য তিনি আমাদের অবশ্যই সাহায্য করবেন। (যিশা. ৪১:১০) তাঁর সাহায্যে আমরা যেকোনো সমস্যার সময়েও আনন্দে থাকতে পারি, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি এবং তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে পারি। যিহোবা প্রতিজ্ঞা করেছেন যে, তিনি আমাদের সেই শান্তি দেবেন, যেটাকে বাইবেলে ‘ঈশ্বরের শান্তি’ বলা হয়েছে। (ফিলি. ৪:৬, ৭) এটা এমন এক স্বস্তি, যেটা শুধুমাত্র তখনই আমরা পেতে পারি, যখন যিহোবার সঙ্গে আমাদের এক দৃঢ় ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকে। এই শান্তির কথা মানুষ চিন্তাও করতে পারে না। এটা এমন এক অনুভূতি, যেটা শব্দে বোঝানো যায় না। কখনো কি এমনটা হয়েছে, আপনি হৃদয় উজাড় করে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছেন এবং সঙ্গেসঙ্গে আপনার মন শান্ত হয়ে গিয়েছে? এটাই হল “ঈশ্বরের সেই শান্তি।” প্রহরীদুর্গ ২৪.০১ ২০ অনু. ২; ২১ অনু. ৪

বুধবার, ২৯ অক্টোবর

আমার মন যেন যিহোবার প্রশংসা করে, আমার মধ্যে থাকা সমস্ত কিছু যেন তাঁর পবিত্র নামের প্রশংসা করে।—গীত. ১০৩:১.

যিহোবার বিশ্বস্ত সেবকেরা তাঁকে অনেক ভালোবাসে। তাই, তারা মনপ্রাণ দিয়ে তাঁর নামের প্রশংসা করে। রাজা দায়ূদ জানতেন, যিহোবার নামের প্রশংসা করার মানে হল তাঁর প্রশংসা করা। কারণ যিহোবার নাম শুনলে আমাদের মনে এমন একজন ব্যক্তির ছবি ভেসে ওঠে, যাঁর অনেক অপূর্ব গুণ রয়েছে এবং যিনি অসাধারণ কাজ করেছেন। এই কারণে দায়ূদ তার পিতার নামকে পবিত্র করতে এবং মনপ্রাণ দিয়ে তাঁর প্রশংসা করতে চেয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন, তার “অন্তরস্থ সকল” যেন যিহোবার প্রশংসা করে। দায়ূদের মতো লেবীয়েরাও উদ্যোগের সঙ্গে যিহোবার প্রশংসা করেছিল। তারা নম্র হয়ে এটা স্বীকার করেছিল, যিহোবার পবিত্র নামের যতই প্রশংসা করা হোক না কেন, তা কম। (নহি. ৯:৫) এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, লেবীয়েরা যখন মন থেকে যিহোবার প্রশংসা করেছিল, তখন তিনি খুশি হয়েছিলেন। প্রহরীদুর্গ ২৪.০২ ৯ অনু. ৬

বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর

আমরা যতটা উন্নতি করেছি, এসো, আমরা ক্রমাগত সেই একই ধারায় চলি।—ফিলি. ৩:১৬.

আপনি যে-লক্ষ্য স্থাপন করেছিলেন, সেটা যদি আপনার সাধ্যের বাইরে থাকে, তা হলে যিহোবা এমনটা চিন্তা করবেন না যে, আপনি ব্যর্থ হয়ে গিয়েছেন। (২ করি. ৮:১২) যখন কোনো বাধা আসে, তখন তা থেকে শিখুন। এখনও পর্যন্ত আপনি যা-কিছু করেছেন, সেগুলো মনে রাখুন। বাইবেলে লেখা রয়েছে: ‘ঈশ্বর অন্যায়কারী নন; তিনি তোমাদের কাজ ভুলে যাবেন না।’ (ইব্রীয় ৬:১০) আপনারও আপনার কাজগুলো ভুলে যাওয়া উচিত নয়। চিন্তা করুন, এখনও পর্যন্ত আপনি কী কী অর্জন করেছেন। যেমন, আপনি যিহোবার সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে পেরেছেন, আপনি তাঁর বিষয়ে অন্যদের বলেন অথবা আপনি বাপ্তিস্ম নিয়েছেন। আপনি এখনও পর্যন্ত যেভাবে উন্নতি করেছেন এবং লক্ষ্যগুলো অর্জন করেছেন, একইভাবে পরবর্তী সময়েও আপনি উন্নতি করে চলতে পারেন এবং আপনার লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন। আপনি যিহোবার সাহায্যে আপনার লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন। আপনি যখন আপনার লক্ষ্য অর্জন করার জন্য পরিশ্রম করেন, তখন এই বিষয়টা মনে রাখুন, যিহোবা কীভাবে আপনাকে সাহায্য করছেন এবং আশীর্বাদ করছেন। আর এটা চিন্তা করে আনন্দিত হোন। (২ করি. ৪:৭) আপনি যদি হাল ছেড়ে না দেন, তা হলে আপনি আরও আশীর্বাদ লাভ করবেন!—গালা. ৬:৯. প্রহরীদুর্গ ২৩.০৫ ৩১ অনু. ১৬-১৮

শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর

পিতা নিজে তোমাদের ভালোবাসেন, কারণ তোমরা আমাকে ভালোবাস এবং তোমরা বিশ্বাস করেছ যে, আমি ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে এসেছি।—যোহন ১৬:২৭.

যিহোবা যাদের ভালোবাসেন, তাদের বলেন যে, তিনি তাদের উপর খুশি। বাইবেল থেকে আমরা জানতে পারি, যিহোবা যিশুকে দু-বার বলেছিলেন, তিনি হলেন তাঁর প্রিয় পুত্র এবং তিনি তাঁর উপর খুব সন্তুষ্ট। (মথি ৩:১৭; ১৭:৫) আপনিও কি যিহোবার কাছ থেকে এটা শুনতে চান যে, তিনি আপনার উপর খুশি? তিনি স্বর্গ থেকে আমাদের সঙ্গে কথা বলেন না, কিন্তু তিনি তাঁর বাক্য বাইবেলের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। আমরা যখন সুসমাচারের বইগুলোতে যিশুর কথাগুলো পড়ি, তখন আমরা যেন যিহোবার কথা শুনছি। কেন? কারণ যিশু একেবারে তাঁর পিতার মতো। তাই আমরা যখন পড়ি যে, কীভাবে যিশু তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন এবং তাদের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়েছিলেন, তখন আমরা কল্পনা করতে পারি, যিহোবা নিজে আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন। (যোহন ১৫:৯, ১৫) তবে, কোনো সমস্যা আসার মানে এই নয় যে, যিহোবা আমাদের উপর খুশি নন। এর পরিবর্তে, আমরা তখন এটা দেখানোর সুযোগ পাই যে, আমরা তাঁকে কতটা ভালোবাসি এবং তাঁর উপর কতটা নির্ভর করি।—যাকোব ১:১২. প্রহরীদুর্গ ২৪.০৩ ২৮ অনু. ১০-১১

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার