রাজ্যের বাক্য—তার অর্থ উপলব্ধি করা
১ যীশু তাঁর বীজ-বপকের দৃষ্টান্তে বলেছিলেন, যে বীজ “উত্তম ভূমিতে” পড়ে, তা যে সেই বাক্য শুনিয়া তাহা বুঝে,” তাকে চিত্রিত করে। (মথি ১৩:২৩) রাজ্যের বার্তা শোনার পরে আমরা কি তার “অর্থ বুঝতে পেরেছি?” এটা আমাদের জীবনকে কতটা প্রভাবিত করে? আমরা কি রাজ্যের আগ্রহকে প্রথম স্থানে রেখেছি ও এইভাবে দেখাই যে আমরা সেই বার্তার প্রকৃত অর্থ উপলব্ধি করেছি?
২ রাজ্যের বার্তার সঠিক অর্থ উপলব্ধি করার জন্য প্রয়োজন ব্যক্তিগত অধ্যয়ন। যে আত্মিক খাদ্য পরিবেশন করা হয়, আমাদের প্রয়োজন সময় করে নিয়ে সে বিষয়ে ধ্যান করা। তাড়াহুড়ো করে প্রহরীদুর্গ পাঠ করার অর্থ হল একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাদ্যকে গোগ্রাসে গিলে ফেলা। আত্মিক খাদ্যকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিবেচনা করার জন্য আপনি কি যথেষ্ট সময় দেন? সর্বতোভাবে উপকার লাভ করার জন্য প্রয়োজন উদ্দীপনা এবং স্বাস্থ্যকর আধ্যাত্মিক ক্ষুধা। যদি এই বিষয়গুলির অভাব দেখা যায়, তাহলে অন্যান্য কাজসকল, অর্থাৎ আমাদের ব্যক্তিগত অধ্যয়ন অথবা তার অন্য আমরা যে সময় ব্যয় করি, তার থেকে কমই উপকৃত হতে পারি। একটি উত্তম অধ্যয়ন সূচী অনুযায়ী অধ্যয়ন করে যাওয়া সহজ নয়। যদিও এর জন্য প্রয়োজন যত্ন সহকারে অগ্রাধিকারের বিষয়গুলিতে ভারসাম্য রেখে চলা, কিন্তু তা করলে, তা থেকে অমুল্য আধ্যাত্মিক রত্ন পাওয়া যেতে পারে।—হিতো. ৩:১৩-১৮; কল. ১:২৭.
৩ শাস্ত্র পরীক্ষা করা আমাদের প্রতিদিন রাজ্য সম্পর্কে ইতিবাচক, গঠনমূলক চিন্তাধারা বজায় রাখতে সাহায্য করে। যে সব ব্যক্তি “তাদের আধ্যাত্মিক প্রয়োজনের বিষয়ে সচেতন,” তারা প্রতিদিন অল্প কয়েক মিনিট সময় নিয়ে দৈনিক শাস্ত্রপদ ও তার মন্তব্যগুলি পড়ে। (মথি ৫:৩, NW) অনেক শাস্ত্রপদই রাজ্যের বিবিধ পটভূমিকার বিষয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দেয়। উদাহরণস্বরূপ, নভেম্বর ২২, ১৯৯৪ সালের শাস্ত্রপদটি মথি ১৩:৪ পদের উপর ভিত্তি করে ছিল। মন্তব্যটি ছিল রাজ্যের আশার বিষয়ে ও আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল যে প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে অসঙ্গত মেলামেশার বিপদ সম্পর্কে। পৃথিবীব্যাপী বেথেল গৃহগুলিতে সাপ্তাহিক কাজের দিনগুলিতে প্রতিদিন সকালে ১৫ মিনিট দৈনিক শাস্ত্রপাঠ, একযোগে দৈনিক শাস্ত্রপাঠের গুরুত্ব ও উপকারগুলির উপর জোর দেয়। আপনার পরিবার কি দৈনিক শাস্ত্রপাঠের ক্ষেত্রে অনুরূপ বিবেচনা দেখায়?
৪ রাজ্যের বিষয়ে আপনার উপলব্ধিবোধ যতই বৃদ্ধি পাবে, ততই অপরের সঙ্গে আপনার রাজ্যের বার্তা বন্টন করে নেওয়ার উদ্যোগ বৃদ্ধি পাবে। আমাদের মনকে বিশুদ্ধ ও অত্যাধুনিক তথ্যাদি দিয়ে প্রহরীদুর্গ ও সচেতন থাক! পত্রিকা পূর্ণ করে থাকে, যাকে আমাদের মানসিক শক্তি যোগানোর সঙ্গে তুলনা করা যায়। এগুলি আমাদের সূক্ষ্ম সচেতনতা বোধ দেয়, অর্থাৎ এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের রাজ্যের কতটা প্রয়োজন, সে বিষয়ে আমদের ওয়াকিবহাল হতে সাহায্য করে। এগুলি আধ্যাত্মিক ব্যক্তিতে পরিণত হতে সাহায্য করে, আমাদের যাদের “খ্রীষ্টের মন” আছে। (১ করি. ২:১৫,১৬) আমরা সকলেই আমাদের আশাকে দৃঢ় করতে পারি ও রাজ্যের আশাকে অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে আমাদের উদ্যোগকে বাড়াতে পারি।—১ পিতর ৩:১৫.
৫ এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা যেন ব্যক্তিগতভাবে রাজ্যের বার্তাকে উপলব্ধি করি। রাজ্য হল সেই মাধ্যম, যার সাহায্যে ঈশ্বর তাঁর সার্বভৌমত্বকে তুলে ধরবেন, দুষ্টতার শেষ আনবেন ও এক নতুন জগৎ প্রতিষ্ঠা করবেন—একটি পরমদেশ। যীশু আমাদের আদেশ দিয়েছেন যে জীবনে আমরা যেন এই রাজ্যেকে প্রথম স্থান দিই। সেই রাজ্য শাসনের অধীনে আমরা যেন অবশ্যই জীবন পাবার জন্য মেষতুল্য প্রজা হই। (মথি ৬:১০, ৩৩) তার আশীর্বাদগুলি উপভোগ করার জন্য আপনার উচিত সকল সুযোগ গ্রহণ করা।