কেন প্রচার কাজ চালিয়ে যেতে হবে?
১ আপনার এলাকায় রাজ্যের প্রচার কাজ কি অনেক দিন ধরে করে আসা হচ্ছে? (মথি ২৪:১৪) যদি তাই হয়, তাহলে আপনি হয়তো মনে করতে পারেন যে মণ্ডলীর এলাকা পুরোপুরিভাবে শেষ করা হয়েছে। তাই আপনি যখন প্রচার করতে যান, তখন যে লোকেদের সঙ্গে আপনার সাক্ষাৎ হয় তাদের বেশির ভাগই রাজ্যের বার্তা শুনতে চায় না বলে মনে হয়। তবুও, যীশুর সত্য শিষ্যদের সম্বন্ধে যিশাইয়ের ভবিষ্যদ্বাণী ২য় খণ্ড বইয়ের ১৪১ পৃষ্ঠায় কী বলা হয়েছে, তা লক্ষ্য করুন: “তারা যে কাজ ও প্রচেষ্টা করেছিলেন তার তুলনা করলে, কিছু জায়গায় তাদের পরিচর্যার ফল খুবই অল্প বলে মনে হতে পারে। কিন্তু তবুও, তারা ধৈর্য ধরেছিলেন।” কিন্তু কেন প্রচার কাজ চালিয়ে যেতে হবে?
২ যিরমিয়ের কথা স্মরণ করুন: লোকেরা আমাদের কথা শুনুক বা না শুনুক, তার ওপর ভিত্তি করে যেন প্রচার কাজে আমাদের বিশ্বস্তভাবে ধৈর্য ধরা নির্ভর না করে। যিরমিয় একই এলাকায় ৪০ বছর ধরে প্রচার কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন যদিও খুব কম লোক তার কথা শুনেছিল ও অনেকেই তার বার্তার বিরোধিতা করেছিল। যিরমিয় কেন প্রচার কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন? কারণ তিনি এমন একটা কাজ করছিলেন যেটা ঈশ্বর তাকে করতে বলেছিলেন আর ভবিষ্যতে কী ঘটতে চলেছে, সেই বিষয়ে তার জ্ঞান তাকে সাহসের সঙ্গে প্রচার করে যেতে বাধ্য করেছিল।—যির. ১:১৭; ২০:৯.
৩ আমাদের পরিস্থিতিও একইরকম। যীশু “আদেশ করিলেন, যেন আমরা লোকদের কাছে প্রচার করি ও সাক্ষ্য দিই যে, তাঁহাকেই ঈশ্বর জীবিত ও মৃতদিগের বিচারকর্ত্তা নিযুক্ত করিয়াছেন।” (প্রেরিত ১০:৪২) আমরা যে বার্তা নিয়ে যাই সেটা যারা শোনে, তার সঙ্গে তাদের জীবন ও মৃত্যু জড়িত। সুসমাচারের প্রতি লোকেদের সাড়া দেওয়ার ভিত্তিতে তাদেরকে বিচার করা হবে। যদি তাই হয়, তাহলে আমাদের দায়িত্ব হল আমাদেরকে যা করতে আদেশ দেওয়া হয়েছে ঠিক-ঠিকভাবে পালন করা। এমনকি লোকেরা যখন শুনতে চায় না, তখনও এটা আমাদেরকে তাদের প্রতি আমাদের গভীর ভালবাসা এবং আমাদেরকে যা করতে হবে, তা করার ব্যাপারে অটল থাকার দ্বারা যিহোবার প্রতি আমাদের ভক্তি দেখানোর সুযোগ করে দেয়। কিন্তু, আরও কিছু আছে।
৪ আমরা উপকার পাচ্ছি: প্রচারের এলাকায় লোকেরা যে-প্রতিক্রিয়াই দেখাক না কেন, ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করা আমাদেরকে মনের শান্তি, পরিতৃপ্তি এবং সুখ এনে দেয়, যা আর অন্য কোন উপায়ে পাওয়া যায় না। (গীত. ৪০:৮) আমাদের জীবনে প্রকৃত অর্থ ও উদ্দেশ্য থাকে। পরিচর্যায় আমরা যত বেশি অংশ নিই, আমাদের হৃদয় ও মন ততই ঈশ্বরের নতুন জগতে বেঁচে থাকার আশা ও আনন্দের ওপর স্থির থাকে। এই শাস্ত্রীয় প্রতিজ্ঞাগুলো নিয়ে চিন্তা করা আমাদেরকে আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে উন্নতি করতে সাহায্য করে এবং যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে মজবুত করে।
৫ এমনকি যদিও আমরা আমাদের প্রচার কাজের ফল সঙ্গে সঙ্গে দেখতে পাই না কিন্তু তবুও, এমন একজন ব্যক্তির হৃদয়ে হয়তো সত্যের বীজ বপন করা হয়ে গেছে, যা যিহোবার নিরূপিত সময়ে অঙ্কুরিত হবে। (যোহন ৬:৪৪; ১ করি. ৩:৬) স্থানীয়ভাবে হোক অথবা পৃথিবী জুড়ে হোক, যিহোবার লোকেদের প্রচেষ্টার মাধ্যমে এখনও আরও কতজন রাজ্য সম্বন্ধে জানবে, তা আমরা কেউ-ই জানি না।
৬ আগের চেয়ে আরও বেশি তৎপরতার সঙ্গে, আমাদের যীশুর এই পরামর্শের প্রতি মনোযোগ দেওয়া উচিত: “সাবধান, তোমরা জাগিয়া থাকিও ও প্রার্থনা করিও; কেননা সে সময় কবে হইবে, তাহা জান না। আর আমি তোমাদিগকে যাহা বলিতেছি, তাহাই সকলকে বলি, জাগিয়া থাকিও।” (মার্ক ১৩:৩৩, ৩৭) তাই, আসুন আমরা সবাই যেন রাজ্যের সুসমাচার ঘোষণা করে চলি এবং যিহোবার মহান ও পবিত্র নামকে পবিত্র করার কাজে অংশ নিয়ে তাঁর হৃদয়কে আনন্দিত করি।