মৃন্ময় পাত্রে আমাদের ধন
“এই ধন মৃন্ময় পাত্রে করিয়া আমরা ধারণ করিতেছি, যেন পরাক্রমের উৎকর্ষ ঈশ্বরের হয়, আমাদের হইতে নয়।”—২ করিন্থীয় ৪:৭.
১. যীশুর উদাহরণ আমাদের কিভাবে সাহস যোগায়?
পৃথিবীতে থাকাকালীন যিহোবার দ্বারা গড়ে ওঠার সময়, যীশু সেই দুঃখকষ্টগুলো অনুভব করেছিলেন যা মানুষেরা করে। আনুগত্য রক্ষা করায় তাঁর উদাহরণ আমাদের কতই না সাহস যোগায়! প্রেরিত আমাদের বলেন: “কারণ তোমরা ইহারই নিমিত্ত আহূত হইয়াছ; কেননা খ্রীষ্টও তোমাদের নিমিত্ত দুঃখ ভোগ করিলেন, এ বিষয়ে তোমাদের জন্য এক আদর্শ রাখিয়া গিয়াছেন, যেন তোমরা তাঁহার পদচিহ্নের অনুগমন কর।” (১ পিতর ২:২১) এই গঠনের প্রতি বশ্যতা স্বীকার করে যীশু জগৎকে জয় করেছিলেন। তিনি তাঁর প্রেরিতদেরও জয়ী হওয়ার জন্য সাহস যুগিয়েছিলেন। (প্রেরিত ৪:১৩, ৩১; ৯:২৭, ২৮; ১৪:৩; ১৯:৮) আর তাঁর শেষ উপদেশে তিনি শিষ্যদেরকে কত উৎসাহই না দিয়েছিলেন! তিনি বলেছিলেন: “এই সমস্ত তোমাদিগকে বলিলাম, যেন তোমরা আমাতে শান্তি প্রাপ্ত হও। জগতে তোমরা ক্লেশ পাইতেছ; কিন্তু সাহস কর, আমিই জগৎকে জয় করিয়াছি।”—যোহন ১৬:৩৩.
২. জগতের দ্বারা অন্ধ হওয়ার বিপরীতে আমাদের কোন্ দীপ্তি আছে?
২ একইভাবে, “এই যুগের দেব” যে লোকেদেরকে অন্ধ করে রেখেছে তার সঙ্গে “গৌরবের সুসমাচার-দীপ্তি”-র পার্থক্য দেখানোর পর প্রেরিত পৌল আমাদের মূল্যবান পরিচর্যা সম্বন্ধে বলেছিলেন: “এই ধন মৃন্ময় পাত্রে করিয়া আমরা ধারণ করিতেছি, যেন পরাক্রমের উৎকর্ষ ঈশ্বরের হয়, আমাদের হইতে নয়। আমরা সর্ব্বপ্রকারে ক্লিষ্ট হইতেছি, কিন্তু সঙ্কটাপন্ন হই না; হতবুদ্ধি হইতেছি, কিন্তু নিরাশ হই না; তাড়িত হইতেছি, কিন্তু পরিত্যক্ত হই না; অধঃক্ষিপ্ত হইতেছি, কিন্তু বিনষ্ট হই না।” (২ করিন্থীয় ৪:৪, ৭-৯) যদিও আমরা ভঙ্গুর ‘মৃন্ময় পাত্র,’ তবুও ঈশ্বর আমাদেরকে তাঁর আত্মার মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন যাতে আমরা শয়তানের জগৎকে সম্পূর্ণভাবে জয় করতে পারি।—রোমীয় ৮:৩৫-৩৯; ১ করিন্থীয় ১৫:৫৭.
প্রাচীন ইস্রায়েল জাতিকে গড়ে তোলা
৩. যিশাইয় কিভাবে যিহূদী জাতির গড়ে ওঠার বিষয়ে বর্ণনা করেছিলেন?
৩ যিহোবা শুধু ব্যক্তিদেরই গড়ে তোলেন না কিন্তু তিনি পুরো জাতিকেও গড়ে তুলতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন ইস্রায়েল জাতি যখন যিহোবাকে তাদের গড়ে তোলার জন্য সুযোগ দিয়েছিল, তখন তাদের উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা তাদের হৃদয় কঠিন করেছিল ও অবাধ্য হয়েছিল। ফলে ইস্রায়েলের “নির্ম্মাতা” তাদের উপর “ধিক্ [বিপর্যয়]” এনেছিলেন। (যিশাইয় ৪৫:৯) সা.কা.পূ. অষ্টম শতাব্দীতে যিশাইয় যিহোবাকে ইস্রায়েলের ঘোর পাপ সম্বন্ধে বলেছিলেন: “হে সদাপ্রভু, তুমি আমাদের পিতা; আমরা মৃত্তিকা, আর তুমি আমাদের কুম্ভকার; আমরা সকলে তোমার হস্তকৃত বস্তু. . . আমাদের মনোরম সমস্ত বস্তু উচ্ছিন্ন হইয়াছে।” (যিশাইয় ৬৪:৮-১১) ইস্রায়েল জাতি এমন এক পাত্র হিসাবে গড়ে উঠেছিল যা কেবল ধ্বংসের যোগ্য ছিল।
৪. যিরমিয় কোন্ কাজটা করে দেখিয়েছিলেন?
৪ একশো বছর পর, বিচারের দিন যখন এগিয়ে আসছিল তখন যিহোবা যিরমিয়কে একটা মাটির ঘট ও সেইসঙ্গে যিরূশালেমের কয়েকজন বয়স্ক পুরুষকে হিন্নোম উপত্যকায় নিয়ে যেতে বলেছিলেন এবং তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন: “তুমি আপনার সঙ্গী পুরুষদের সাক্ষাতে সেই ঘট ভাঙ্গিয়া ফেলিবে, এবং তাহাদিগকে বলিবে, বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা কহেন, যেমন কুম্ভকারের কোন পাত্র ভাঙ্গিয়া ফেলিলে আর তাহা যোড়া দিতে পারা যায় না, তেমনি আমি এই জাতি ও এই নগর ভাঙ্গিয়া ফেলিব।”—যিরমিয় ১৯:১০, ১১.
৫. ইস্রায়েলের ওপর যিহোবার বিচার কতটা ব্যাপক ছিল?
৫ সাধারণ কালের পূর্বে ৬০৭ সালে নবূখদ্নিৎসর, যিরূশালেম ও এর মন্দিরকে ধ্বংস করেছিলেন এবং জীবিত যিহূদীদেরকে বন্দি করে বাবিলনে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ৭০ বছর বন্দিত্বে থাকার পর, অনুতপ্ত যিহূদীরা আবার যিরূশালেম ও এর মন্দির নির্মাণ করার জন্য ফিরে এসেছিলেন। (যিরমিয় ২৫:১১) কিন্তু সা.কা. প্রথম শতাব্দীর মধ্যে সেই জাতি আবারও মহান কুম্ভকারকে ছেড়ে শেষ পর্যন্ত এতটা নিচে নেমেছিল যে তারা ঈশ্বরের নিজ পুত্রকে হত্যা করেছিল। সা.কা. ৭০ সালে ঈশ্বর যিহূদী বিধিব্যবস্থাকে একেবারে শেষ করার জন্য এবং যিরূশালেম ও এর মন্দিরকে চিরতরে ধ্বংস করার জন্য রোমীয় বিশ্বশক্তিকে ব্যবহার করেছিলেন। ইস্রায়েল জাতি আর কখনও যিহোবার হাতে ‘পবিত্রতা ও . . . প্রতাপে’ গড়ে উঠতে পারেনি।a
এক আত্মিক জাতি গড়ে তোলা
৬, ৭. (ক) আত্মিক ইস্রায়েলের গড়ে ওঠার বিষয়ে পৌল কিভাবে বর্ণনা করেন? (খ) “দয়াপাত্রদের” পূর্ণ সংখ্যা কত এবং কিভাবে তা গড়ে উঠেছিল?
৬ যে যিহূদীরা যীশুকে মেনে নিয়েছিলেন তারা এক নতুন জাতি অর্থাৎ ‘ঈশ্বরের আত্মিক ইস্রায়েলের’ প্রথম সদস্য হিসাবে গড়ে উঠেছিলেন। (গালাতীয় ৬:১৬) অতএব, পৌলের কথাগুলো কতই না ঠিক: “কিম্বা কাদার উপরে কুম্ভকারের কি এমন অধিকার নাই যে, একই মৃৎপিণ্ড হইতে একটী সমাদরের পাত্র, আর একটা অনাদরের পাত্র গড়িতে পারে? . . . ঈশ্বর আপন ক্রোধ দেখাইবার ও আপন পরাক্রম জানাইবার ইচ্ছা করিয়া, বিনাশার্থে পরিপক্ব ক্রোধপাত্রদের প্রতি বিপুল সহিষ্ণুতায় ধৈর্য্য করিয়া থাকেন, এবং [এই জন্য করিয়া থাকেন,] যেন সেই দয়াপাত্রদের উপরে আপন প্রতাপ-ধন জ্ঞাত করেন, যাহাদিগকে প্রতাপের নিমিত্ত পূর্ব্বে প্রস্তুত করিয়াছেন।”—রোমীয় ৯:২১-২৩.
৭ পুনরুত্থিত যীশু পরে জানিয়েছিলেন যে এই “দয়াপাত্রদের” সংখ্যা হবে ১,৪৪,০০০ জন। (প্রকাশিত বাক্য ৭:৪; ১৪:১) মাংসিক ইস্রায়েলরা যেহেতু এই সংখ্যা পূর্ণ করতে পারেনি, তাই যিহোবা পরজাতীয় লোকেদের ওপর তাঁর করুণা বর্ষণ করেছিলেন। (রোমীয় ১১:২৫, ২৬) বিভিন্ন জায়গায় নতুন নতুন খ্রীষ্টীয় মণ্ডলী গড়ে উঠেছিল। ৩০ বছরের মধ্যে সুসমাচার “আকাশমণ্ডলের অধঃস্থিত সমস্ত সৃষ্টির কাছে প্রচারিত” হয়েছিল। (কলসীয় ১:২৩) ফলে বিভিন্ন জায়গার মণ্ডলীগুলোকে ঠিকভাবে দেখাশুনা করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল।
৮. প্রথমে কাদের নিয়ে পরিচালক গোষ্ঠী গড়ে উঠেছিলে এবং কিভাবে এর কাঠামোতে রদবদল করা হয়েছিল?
৮ যীশু ১২ জন প্রেরিতকে প্রথম পরিচালক গোষ্ঠী হওয়ার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন এবং তাদেরকে ও সেইসঙ্গে অন্যান্যদের প্রচার করাতে শিখিয়েছিলেন। (লূক ৮:১; ৯:১, ২; ১০:১, ২) সা.কা. ৩৩ সালে খ্রীষ্টীয় মণ্ডলী স্থাপিত হয়েছিল এবং যথাসময়ে পরিচালক গোষ্ঠীর মধ্যে ‘যিরূশালেমের প্রেরিতগণ ও প্রাচীনবর্গ’ যুক্ত হয়েছিলেন। এর বেশ কিছু সময় পর, যীশুর সৎভাই যাকোব যদিও তিনি প্রেরিত ছিলেন না, বোঝা যায় যে তিনি সভাপতি হিসাবে কাজ করেছিলেন। (প্রেরিত ১২:১৭; ১৫:২, ৬, ১৩; ২১:১৮) ইতিহাসবেত্তা ইউসেবিয়াসের মতে, বিশেষ করে প্রেরিতদের ওপর তাড়না করা হয়েছিল আর তারা বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিলেন। আর সেইকারণে পরিচালক গোষ্ঠীর কাঠামোতে রদবদল করা হয়েছিল।
৯. কোন্ দুঃখজনক বৃদ্ধির বিষয়ে যীশু আগেই বলেছিলেন?
৯ প্রথম শতাব্দীর শেষের দিকে ‘শত্রু, দিয়াবল স্বর্গরাজ্যের’ গোমতুল্য উত্তরাধিকারীদের মধ্যে ‘শ্যামাঘাসের বীজ’ বুনতে শুরু করে। যীশু আগেই বলেছিলেন যে শ্যামাঘাসের বৃদ্ধি যদিও দুঃখজনক কিন্তু তবুও “যুগান্তে” শস্যছেদনের সময় পর্যন্ত এটাকে চলতে দেওয়া হবে। তারপর আবার “ধার্ম্মিকেরা আপনাদের পিতার রাজ্যে সূর্য্যের ন্যায় দেদীপ্যমান হইবে।” (মথি ১৩:২৪, ২৫, ৩৭-৪৩) সেটা কখন হবে?
আজকে ঈশ্বরের ইস্রায়েলকে গড়ে তোলা
১০, ১১. (ক) ঈশ্বরের আধুনিক দিনের ইস্রায়েলরা কিভাবে গড়ে উঠেছিলেন? (খ) খ্রীষ্টীয়জগৎ ও আন্তরিক বাইবেল ছাত্রদের শিক্ষার মধ্যে কোন্ অমিল পাওয়া গিয়েছিল?
১০ যুক্তরাষ্ট্র, পেনসিলভানিয়ার পিটস্বার্গে ১৮৭০ সালে চার্লস্ টেইজ রাসেল বাইবেল ছাত্রদের একটি দল তৈরি করেছিলেন। ১৮৭৯ সাল থেকে তিনি মাসিকভাবে একটা পত্রিকা প্রকাশ করতে শুরু করেছিলেন যা আজকে প্রহরীদুর্গ নামে পরিচিত। সেইসময়ে বাইবেল ছাত্র নামে পরিচিত এই ব্যক্তিরা শিঘ্রিই বুঝতে পেরেছিলেন যে খ্রীষ্টীয়জগৎ অশাস্ত্রীয় কিছু পৌত্তলিক শিক্ষাকে গ্রহণ করেছিল। যেমন আত্মার অমরত্ব, নরকাগ্নি, পুরগাতরি, ত্রিত্ব ঈশ্বর এবং শিশু বাপ্তিস্ম।
১১ কিন্তু আরও জরুরি বিষয় হল যে, বাইবেল সত্যের প্রেমিকেরা বাইবেলের মূল শিক্ষাগুলোকে পুনরুদ্ধার করেছিলেন, যেমন যীশুর মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানের মাধ্যমে মুক্তি এবং ঈশ্বরের রাজ্যের অধীনে শান্তিপূর্ণ পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্ত জীবনের জন্য পুনরুত্থান। সবচেয়ে বড় বিষয় যে তারা জোরের সঙ্গে জানিয়েছিলেন খুব শিঘ্রিই প্রমাণ হবে যে একমাত্র যিহোবা ঈশ্বরই নিখিলবিশ্বের সার্বভৌম প্রভু আর এই পৃথিবীর ওপর রাজত্ব করার অধিকার কেবল তাঁরই আছে। বাইবেল ছাত্রেরা বিশ্বাস করেছিলেন যে প্রভুর প্রার্থনার উত্তর শিঘ্রিই দেওয়া হবে: “হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ, তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক, তোমার রাজ্য আইসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হউক।” (মথি ৬:৯, ১০) ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার মাধ্যমে তাদের সারা পৃথিবীতে শান্তিপ্রিয় খ্রীষ্টানদের এক সমাজ হিসাবে গড়ে তোলা হচ্ছিল।
১২. বাইবেল ছাত্রেরা কিভাবে একটা গুরুত্বপূর্ণ তারিখকে বুঝতে পেরেছিলেন?
১২ বাইবেল ছাত্ররা দানিয়েল ৪ অধ্যায়ের বিষয়বস্তু ও অন্যান্য ভবিষ্যদ্বাণীগুলো খুব মন দিয়ে অধ্যয়ন করে বুঝতে পেরেছিলেন যে মশীহ রাজা হিসাবে খ্রীষ্টের উপস্থিতি একেবারে দোরগোড়ায় ছিল। তারা বুঝেছিলেন যে ১৯১৪ সালে “জাতিগণের সময়” শেষ হবে। (লূক ২১:২৪; যিহিষ্কেল ২১:২৬, ২৭) বাইবেল ছাত্রেরা তাড়াতাড়ি তাদের কাজকে বাড়িয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সব জায়গায় বাইবেল শিক্ষার ক্লাস (পরে মণ্ডলী বলা হতো) শুরু করা হয়েছিল। এই শতাব্দীর শুরুতে, বাইবেল শিক্ষার কাজ ইউরোপ ও অস্ট্রেলেশিয়ায়ও ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য এক সুশৃঙ্খল সংগঠনের দরকার ছিল।
১৩. বাইবেল ছাত্রেরা কোন্ আইনগত স্বীকৃতি পেয়েছিলেন এবং সোসাইটির প্রথম সভাপতি কোন্ উল্লেখযোগ্য কাজ করেছিলেন?
১৩ বাইবেল ছাত্রদেরকে আইনগত স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য জাইয়নস্ ওয়াচ টাওয়ার ট্র্যাক্ট সোসাইটিকে ১৮৮৪ সালে একটা সংস্থা হিসাবে গঠন করা হয় আর এর প্রধান কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্র পেনসিলভানিয়ার পিটস্বার্গে স্থাপন করা হয়। এর পরিচালকেরা মূল পরিচালক গোষ্ঠী হিসাবে কাজ করেন আর তারা সারা পৃথিবীতে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচারের কাজ দেখাশুনা করেন। সোসাইটির প্রথম সভাপতি চার্লস টেইজ রাসেল শাস্ত্র অধ্যয়ন (ইংরাজি) নামে ছয় খণ্ডের একটা বই লিখেছিলেন এবং প্রচার করার উদ্দেশ্যে অনেক দেশে গিয়েছিলেন। এছাড়াও বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করার আগে তিনি যা জমিয়েছিলেন, সারা পৃথিবীতে প্রচার কাজের জন্য সেই বিরাট অঙ্কের টাকা তিনি দিয়ে দিয়েছিলেন। ১৯১৬ সালে, ইউরোপে যখন বিশ্বযুদ্ধ বেড়ে চলেছিল, তখন প্রচারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার সময়ে অসুস্থ ভাই রাসেল মারা যান। ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করার জন্য তিনি তার জীবনের সবকিছু দিয়ে দিয়েছিলেন।
১৪. জে. এফ. রাদারফোর্ড কিভাবে “উত্তম যুদ্ধে প্রাণপণ” করেছিলেন? (২ তীমথিয় ৪:৭)
১৪ এরপর যোসেফ এফ. রাদারফোর্ড সোসাইটির দ্বিতীয় সভাপতি হয়েছিলেন যিনি মিশৌরির একজন অস্থায়ী বিচারক ছিলেন। বাইবেল সত্যের বিষয়ে তিনি সাহসের সঙ্গে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন আর তার ফলে খ্রীষ্টীয়জগতের পাদ্রি ও রাজনৈতিক নেতারা একসঙ্গে মিলে “বিধান দ্বারা উপদ্রব রচনা” করেছিলেন। ১৯১৮ সালের ২১শে জুন ভাই রাদারফোর্ড এবং বাইবেল ছাত্রদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় অন্য সাতজনকে জেলে পাঠানো হয়েছিল আর নানারকম দোষ দিয়ে তাদেরকে প্রায় ১০ থেকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাইবেল ছাত্ররাও বসে ছিলেন না। (গীতসংহিতা ৯৪:২০; ফিলিপীয় ১:৭) আপিল করার ফলে তারা ১৯১৯ সালের ২৬শে মার্চ জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন আর রাজদ্রোহী বলে তাদের ওপর যে মিথ্যা দোষ চাপানো হয়েছিল তা পুরোপুরি উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিল।b এই অভিজ্ঞতা তাদেরকে সত্যের অদম্য সাক্ষী হিসাবে গড়ে উঠতে সাহায্য করেছিল। আর মহতী বাবিলের চরম বিরোধিতা সত্ত্বেও, যিহোবার সাহায্যে তারা সুসমাচার প্রচার করার আত্মিক যুদ্ধে জয়ী হতে চেষ্টার কোন ত্রুটি রাখেননি। আর সেই যুদ্ধ এখন এই ১৯৯৯ সালেও চলছে।—মথি ২৩ অধ্যায়; যোহন ৮:৩৮-৪৭ পদগুলোর সঙ্গে তুলনা করুন।
১৫. ইতিহাসে ১৯৩১ সাল কেন গুরুত্বপূর্ণ ছিল?
১৫ ঈশ্বরের অভিষিক্ত ইস্রায়েলরা ১৯২০ ও ১৯৩০ এর দশকে মহান কুম্ভকারের নির্দেশনায় গড়ে উঠতে থাকেন। শাস্ত্রের ভবিষ্যদ্বাণীমূলক দীপ্তি প্রকাশ পেতে থাকে যা যিহোবাকে সম্মানিত করে এবং যীশুর মশীহ রাজ্যের ওপর আলো ফেলে। ১৯৩১ সালে বাইবেল ছাত্রেরা খুব আনন্দের সঙ্গে তাদের নতুন নাম, যিহোবার সাক্ষী গ্রহণ করেন।—যিশাইয় ৪৩:১০-১২; মথি ৬:৯, ১০; ২৪:১৪.
১৬ এবং ১৯ পৃষ্ঠার বাক্স. ১,৪৪,০০০ জনের মোট সংখ্যা কখন পূর্ণ হয়েছিল এবং এটা কিভাবে বোঝা গিয়েছিল?
১৬ ১৯৩০ এর দশকে যারা “আহূত ও মনোনীত ও বিশ্বস্ত,” অর্থাৎ ১,৪৪,০০০ জনের সংখ্যা পূর্ণ হয়েছিল। (প্রকাশিত বাক্য ১৭:১৪; ১৯ পৃষ্ঠার বাক্স দেখুন।) আমরা জানি না যে প্রথম শতাব্দীতে কতজন অভিষিক্ত ব্যক্তিকে আর খ্রীষ্টীয়জগতের চরম ধর্মভ্রষ্টতার অন্ধকার যুগে “শ্যামাঘাসের” মধ্যে থেকে কতজনকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৩৫ সালে সারা পৃথিবীতে ৫৬,১৫৩ জন প্রকাশকের মধ্যে মোট ৫২,৪৬৫ জন স্মরণার্থকের প্রতীক রুটি খেয়ে ও দ্রাক্ষারস পান করে তাদের স্বর্গীয় আশার বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। কিন্তু তখনও পর্যন্ত যাদেরকে সংগ্রহ করা হয়নি সেই অসংখ্য লোকেদের কী হবে?
“দেখ, . . . বিস্তর লোক”
১৭. ১৯৩৫ সালে কোন্ ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছিল?
১৭ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডি.সি.-তে ১৯৩৫ সালের ৩০শে মে থেকে ৩রা জুন পর্যন্ত এক সম্মেলন হয় আর সেখানে ভাই রাদারফোর্ড এক উল্লেখযোগ্য বক্তৃতা দিয়েছিলেন যার শিরোনাম ছিল “বিস্তর লোক।”c ১,৪৪,০০০ জন আত্মিক ইস্রায়েলের চূড়ান্ত মুদ্রাঙ্কের শেষের দিকে আরেকটা দল প্রকাশ পেতে শুরু করে যাদের “গণনা করিতে সমর্থ কেহ ছিল না।” তাদেরও ‘মেষশাবক যীশুর রক্তে’ অর্থাৎ মুক্তির মূল্যরূপ ক্ষমতার ওপর বিশ্বাস দেখাতে হবে এবং উপাসনার জন্য যিহোবার মন্দির ব্যবস্থার অধীনে পবিত্রভাবে আরাধনা করতে হবে। পার্থিব পরমদেশ যেখানে “মৃত্যু আর হইবে না” তার অধিকারী হওয়ার জন্য তারা দলগতভাবে জীবিত অবস্থায় ‘মহাক্লেশের মধ্য হইতে আসিবে।’ সেই সম্মেলনের কয়েক বছর আগে এই দলকে যিহোনাদব হিসাবে বলা হয়েছিল।—প্রকাশিত বাক্য ৭:৯-১৭; ২১:৪; যিরমিয় ৩৫:১০.
১৮. কী কী কারণে ১৯৩৮ সাল গুরুত্বপূর্ণ ছিল?
১৮ দুটো শ্রেণীকে পরিষ্কারভাবে চেনা গিয়েছিল ১৯৩৮ সালে। ১৯৩৮ সালের ১৫ই মার্চ এবং ১লা এপ্রিলের প্রহরীদুর্গ (ইংরাজি) “তাঁর পাল” শিরোনামে দুই অংশের এক প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিল এবং সেখানে অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশ এবং তাদের সহযোগী, বিরাট জনতার আলাদা আলাদা স্থানকে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছিল। তারপর ১লা জুন ও ১৫ই জুন সংখ্যার পত্রিকাগুলোতে যিশাইয় ৬০:১৭ পদের ওপর ভিত্তি করে “সংগঠন” নামে অধ্যয়ন প্রবন্ধগুলো ছাপানো হয়েছিল। সারা পৃথিবীর সব মণ্ডলীগুলোকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল যে তারা যেন স্থানীয় দাসদের নিয়োগ করার জন্য পরিচালক গোষ্ঠীকে অনুরোধ করে যাতে সুশৃঙ্খল, ঈশ্বর-নিযুক্ত, ঈশতান্ত্রিক ব্যবস্থা স্থাপিত হয়। মণ্ডলীগুলো ঠিক তাই-ই করেছিল।
১৯ এবং পাদটীকা. কোন্ বিষয়গুলো নিশ্চিত করে যে গত ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ‘অপর মেষের’ সংখ্যা বেড়ে চলেছে?
১৯ ১৯৩৯ যিহোবার সাক্ষীদের বর্ষপুস্তক (ইংরাজি) বলেছিল: “এখন পৃথিবীতে যীশু খ্রীষ্টের অভিষিক্ত অনুগামীদের সংখ্যা খুবই কম এবং আর কখনও তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে না। তাদেরকে শাস্ত্রে ঈশ্বরের সংগঠন অর্থাৎ সিয়োনের বংশধরদের ‘অবশিষ্টাংশ’ বলে উল্লেখ করে। (প্রকা. ১২:১৭) প্রভু এখন তাঁর ‘অপর মেষদের’ এক জায়গায় করছেন যারা ‘বিস্তর লোক’ গঠন করবেন। (যোহন ১০:১৬, NW) যাদেরকে এখন একত্র করা হচ্ছে তারা হলেন অবশিষ্টাংশদের সঙ্গী এবং তারা অবশিষ্টাংশদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করছেন। এই সময়ের পর থেকে ‘অপর মেষের’ সংখ্যা বাড়তে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না তা ‘বিস্তর লোক’ হয়।” বিরাট জনতাকে একত্র করার কাজ দেখাশুনা করার জন্য অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশদেরকে গড়ে তোলা হয়েছিল। এখন বিরাট জনতাকেও গড়ে তোলা হবে।d
২০. ১৯৪২ সাল থেকে কোন্ সাংগঠনিক পরিবর্তনগুলো হয়েছে?
২০ ১৯৪২ সালের জানুয়ারি মাসে, যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চরম রূপ নেয়, ভাই যোসেফ রাদারফোর্ড মারা যান এবং নেথেন নর সভাপতি হন। সোসাইটির তৃতীয় সভাপতির নাম বিশেষভাবে মনে করা হয় কারণ তিনি মণ্ডলীগুলোতে ঐশিক পরিচর্যা বিদ্যালয় এবং মিশনারিদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য গিলিয়েড স্কুল চালু করেছিলেন। ১৯৪৪ সালে সোসাইটির বার্ষিক সভায় তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে সোসাইটির সনদপত্রকে আবার সংশোধন করা হয়েছে ফলে সদস্যপদ আর চাঁদার উপর ভিত্তি করে হবে না বরং আধ্যাত্মিকতার উপর ভিত্তি করে হবে। পরের ৩০ বছরে সারা পৃথিবীতে ক্ষেত্রের কর্মীদের সংখ্যা ১,৫৬,২৯৯ জন থেকে বেড়ে ২১,৭৯,২৫৬ জনে পৌঁছায়। ১৯৭১-৭৫ সালে সাংগঠনিক দিক দিয়ে আরও পরিবর্তন করার দরকার হয়। সভাপতির পক্ষে একা সারা পৃথিবীতে রাজ্যের কাজকে ভাল করে দেখাশুনা করা আর সম্ভব হয়ে উঠছিল না। পরিচালক গোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে ১৮ জন করা হয় যাদের প্রায় অর্ধেকই তাদের পার্থিব জীবন শেষ করেছিলেন। আর তারা পালা পালা করে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
২১. কোন্ বিষয় ক্ষুদ্র মেষপালের সদস্যদের রাজ্যের যোগ্য করে তুলেছে?
২১ ক্ষুদ্র মেষপালের বাকি সদস্যেরা অনেক দশক ধরে পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছেন। তারা সাহসী ছিলেন এবং নির্ভুলভাবে ‘আত্মার সাক্ষ্য’ লাভ করেছেন। যীশু তাদের সম্বন্ধে বলেছেন: “তোমরাই আমার সকল পরীক্ষার মধ্যে আমার সঙ্গে সঙ্গে বরাবর রহিয়াছ; আর আমার পিতা যেমন আমার জন্য নিরূপণ করিয়াছেন, আমিও তেমনি তোমাদের জন্য এক রাজ্য নিরূপণ করিতেছি, যেন তোমরা আমার রাজ্যে আমার মেজে ভোজন পান কর; আর তোমরা সিংহাসনে বসিয়া ইস্রায়েলের দ্বাদশ বংশের বিচার করিবে।”—রোমীয় ৮:১৬, ১৭; লূক ১২:৩২; ২২:২৮-৩০.
২২, ২৩. ক্ষুদ্র মেষপাল ও অপর মেষেরা কিভাবে গড়ে উঠছেন?
২২ পৃথিবীতে অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশদের সংখ্যা যেহেতু কমে যাচ্ছে, তাই পৃথিবীর প্রায় সব মণ্ডলীর আধ্যাত্মিক কাজগুলো দেখাশুনা করার দায়িত্ব বিরাট জনতার পরিপক্ব ভাইদের দেওয়া হয়েছে। আর বয়স্ক অভিষিক্ত সাক্ষীরা যখন তাদের পার্থিব কাজ শেষ করে মারা যাবেন, তখন অপর মেষের শাসনকর্তা তুল্য সেরিম-রা পৃথিবীতে অধ্যক্ষ শ্রেণী হিসাবে সাংগঠনিক দায়িত্বগুলো পালনের জন্য ভালভাবে প্রশিক্ষিত হয়ে উঠবেন।—যিহিষ্কেল ৪৪:৩; যিশাইয় ৩২:১.
২৩ ক্ষুদ্র মেষপাল ও অপর মেষ দু-দলই সমাদরের পাত্র হিসাবে ব্যবহৃত হওয়ার জন্য গড়ে উঠছেন। (যোহন ১০:১৪-১৬) আমাদের আশা “নূতন স্বর্গ” বা “নূতন পৃথিবী” যাই হোক না কেন, আমরা সবাই যেন মনেপ্রাণে যিহোবার এই আমন্ত্রণে সাড়া দিই: “আমি যাহা সৃষ্টি করি, তোমরা তাহাতে চিরকাল আমোদ ও উল্লাস কর; কারণ দেখ, আমি যিরূশালেমকে উল্লাসভূমি ও তাহার প্রজাদিগকে আনন্দ-ভূমি করিয়া সৃষ্টি করি।” (যিশাইয় ৬৫:১৭, ১৮) আমরা মরনশীল মানুষেরা “পরাক্রমের উৎকর্ষ”—ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা দিয়ে গড়ে উঠে যেন সবসময় নম্রভাবে সেবা করে চলি।—২ করিন্থীয় ৪:৭; যোহন ১৬:১৩.
[পাদটীকাগুলো]
a প্রাচীন ইস্রায়েলে যা হয়েছিল তা দেখে বিশ্বাসঘাতক খ্রীষ্টীয়জগৎ যিহোবার কাছ থেকে একইরকম বিচার পাওয়ার বিষয়ে সতর্ক হোক।—১ পিতর ৪:১৭, ১৮.
b রোমান ক্যাথলিক বিচারক ম্যানটন প্রথমে বাইবেল ছাত্রদের জামিনে মুক্তি দিতে অস্বীকার করেছিলেন কিন্তু ঘুঁষ নেওয়ার জন্য পরে তার নিজেরই জেল হয়েছিল।
c ১৯৫০ সালে প্রকাশিত গ্রিক শাস্ত্রাবলির নতুন জগৎ অনুবাদ (ইংরাজি) গ্রিক শব্দের স্পষ্ট অনুবাদের জন্য “বিরাট জনতা” শব্দ ব্যবহার করে।
d ১৯৩৮ সালে সারা পৃথিবীতে স্মরণার্থক সভায় ৭৩,৪২০ জন উপস্থিত হয়েছিলেন আর তাদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ লোক—৩৯,২২৫ জন—স্মরণার্থক সভার প্রতীক নিয়েছিলেন। ১৯৯৮ সালে সেই উপস্থিতির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১,৩৮,৯৬,৩১২ যার মধ্যে মাত্র ৮,৭৫৬ জন স্মরণার্থক সভার প্রতীক গ্রহণ করেছিলেন। আর এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি ১০টা মণ্ডলীতে ১ জনের চেয়েও কম ব্যক্তি প্রতীক গ্রহণ করেছিলেন।
আপনি কি মনে করতে পারেন?
◻ পিতাকে গড়ে তুলতে সুযোগ দিয়ে যীশু কিভাবে আমাদের জন্য এক উদাহরণ হয়েছিলেন?
◻ প্রাচীন ইস্রায়েলে কোন্ গড়ে তোলার কাজ হয়েছিল?
◻ এখন পর্যন্ত “ঈশ্বরের ইস্রায়েল” কিভাবে গড়ে উঠছেন?
◻ “অপর মেষ”-দের কোন্ উদ্দেশ্যে গড়ে তোলা হয়েছে?
[১৮ পৃষ্ঠার বাক্স]
খ্রীষ্টীয়জগৎ আরও গড়ে উঠতে থাকে
গ্রিসের এথেন্স থেকে এক এসোসিয়েটেড প্রেস, গ্রিক অর্থোডক্স গির্জার সম্প্রতি নিযুক্ত এক অধ্যক্ষ সম্বন্ধে বলে: “তার তো শান্তির বার্তাবাহক হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু গ্রিক অর্থোডক্স গির্জার নেতার কথা অনেকটা যুদ্ধের জন্য তৈরি সেনাপতির মতো শোনায়।
“সম্প্রতি উদ্যাপিত কুমারী মরিয়মের স্বর্গারোহণের পবিত্র দিনে যে দিনটাকে গ্রিসের সশস্ত্র দিবস হিসাবে উদ্যাপন করা হয় আর্চ বিশপ ক্রিস্টিডোলাস বলেছিলেন ‘প্রয়োজনে আমরা রক্ত দিতে ও ত্যাগস্বীকার করতে প্রস্তুত। একটা গির্জা হিসাবে আমরা শান্তির জন্য প্রার্থনা করছি . . . কিন্তু সময় যদি দাবি করে আমরা পবিত্র অস্ত্রকেও আশীর্বাদ করব।’”
[১৯ পৃষ্ঠার বাক্স]
“আর কাউকে ডাকা হবে না!”
১৯৭০ সালে গিলিয়েড গ্র্যাজুয়েশনে ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির তখনকার সহকারী সভাপতি, ফ্রেডরিক ফ্রাঞ্জ সম্ভাব্য ছাত্রদেরকে বলেছিলেন যে তারা সবাই পার্থিব আশার অধিকারী অপর মেষের অংশী হলেও, নিজেকে অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশ বলে দাবি করেন এমন কাউকে তারা বাপ্তিস্ম দিতে পারেন। এটা কি সম্ভব? তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন যে যোহন বাপ্তাইজক একজন অপর মেষের সদস্য হয়েও যীশু ও কয়েকজন প্রেরিতকে বাপ্তিস্ম দিয়েছিলেন। তারপর তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে অবশিষ্টাংশ হিসাবে আর কাউকে আহ্বান করা হবে কিনা। তিনিই উত্তর দিয়েছিলেন: “না, আর কাউকে ডাকা হবে না! সেই আহ্বান ১৯৩১-৩৫ সালেই শেষ হয়ে গিয়েছে! আর কেউ যুক্ত হবে না। তাহলে এখন যে অল্পসংখ্যক ব্যক্তিরা স্মরণার্থক সভার প্রতীকে অংশ নেন তারা কারা? তারা যদি অবশিষ্টাংশ হয়ে থাকেন, তাহলে তারা কারও জায়গায় এসেছেন! অভিষিক্তদের পদে তাদেরকে যুক্ত করা হয়নি বরং যারা নিজেদের স্থান থেকে সরে গিয়েছেন তাদের জায়গায় তারা এসেছেন।”
[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র]
আমাদের পরিচর্যার ধনকে আমরা কতই না মূল্যবান মনে করি!
[১৬ পৃষ্ঠার চিত্র]
প্রাচীন ইস্রায়েল কেবল ধ্বংসের যোগ্য এক পাত্র হয়েছিল