ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w24 অক্টোবর পৃষ্ঠা ১২-১৭
  • স্বর্গে যাওয়ার আগেও যিশু আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছিলেন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • স্বর্গে যাওয়ার আগেও যিশু আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছিলেন
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৪
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • অন্যদের সাহস বৃদ্ধি করুন
  • শাস্ত্র বোঝার জন্য অন্যদের সাহায্য করুন
  • ভাইদের প্রশিক্ষণ দিন, যাতে তারা “মানুষদের মধ্যে . . . দান” হতে পারে
  • যিশুর মতো উদ্যোগের সঙ্গে প্রচার করুন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৫
  • “আপনি ঈশ্বরের কাছে খুবই মূল্যবান!”
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৫
  • অন্যদের দেওয়ার মাধ্যমে প্রচুর আনন্দ পাওয়া যায়
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৪
  • ভাইয়েরা, আপনারা কি প্রাচীন হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলছেন?
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৪
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৪
w24 অক্টোবর পৃষ্ঠা ১২-১৭

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৪১

গান ১৩ খ্রিস্ট, আমাদের আদর্শ

স্বর্গে যাওয়ার আগেও যিশু আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছিলেন

“তিনি ৪০ দিন ধরে তাদের দেখা দিয়েছিলেন এবং তাদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে কথা বলেছিলেন।”—প্রেরিত ১:৩.

আমরা কী শিখব?

আমরা জানব যে, পৃথিবীতে যিশুর শেষ ৪০ দিনে তিনি যা-কিছু করেছিলেন, সেখান থেকে আমরা কী শিখতে পারি।

১-২. যিশুর দু-জন শিষ্য যখন ইম্মায়ূতে যাচ্ছিল, তখন কী ঘটেছিল?

সময়টা ছিল ৩৩ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই নিশান। যিশুর দু-জন শিষ্য জেরুসালেম থেকে ইম্মায়ূর দিকে যাচ্ছিল, যেটা জেরুসালেম থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে ছিল। এই শিষ্যেরাও যিশুর অন্য শিষ্যদের মতো দুঃখে ভেঙে পড়েছিল এবং ভয়ে জর্জরিত ছিল। কিন্তু কেন? কারণ কিছুসময় আগে তাদের প্রভুকে মেরে ফেলা হয়েছে। তারা আশা করেছিল, তাদের মশীহ তাদের জন্য অনেক কিছু করবেন। কিন্তু তাদের এই আশা, নিরাশায় পরিণত হয়েছিল। তবে এখন এমন কিছু হতে যাচ্ছিল, যেটার কারণে এই শিষ্যেরা তাদের দুঃখ ভুলে যেত।

২ রাস্তায় একজন অচেনা ব্যক্তি তাদের সঙ্গে সঙ্গে হাঁটতে শুরু করেন। সেই ব্যক্তিকে তারা বলে যে, তারা খুবই দুঃখিত কারণ তাদের প্রভুর প্রতি খুবই খারাপ হয়েছে। তাদের কথা শোনার পর সেই ব্যক্তি তাদের এমন কিছু বলেন, যার ফলে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায়। তিনি “মোশির ব্যবস্থা এবং সমস্ত ভাববাদীদের গ্রন্থ থেকে” তাদের বোঝান যে, কেন মশীহকে কষ্টভোগ করতে হত এবং মারা যেতে হত। ইম্মায়ূতে পৌছানোর পর এই দু-জন শিষ্য বুঝতে পারে, সেই অচেনা ব্যক্তি আর কেউ নন, তাদের প্রভু যিশু, যাঁকে ঈশ্বর মৃতদের মধ্য থেকে উঠিয়েছেন। একটু কল্পনা করুন, এটা জেনে তারা কতই-না আনন্দিত হয়েছিল যে, মশীহ জীবিত হয়েছেন!—লূক ২৪:১৩-৩৫.

৩-৪. (ক) যিশু যখন তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন, তখন সেটা তাদের উপর কোন প্রভাব ফেলেছিল? (প্রেরিত ১:৩) (খ) এই প্রবন্ধে আমরা কী শিখতে পারব?

৩ পৃথিবীতে শেষ ৪০ দিনে যিশু বিভিন্ন সময়ে তাঁর শিষ্যদের দেখা দিয়েছিলেন। (পড়ুন, প্রেরিত ১:৩.) তাঁর শিষ্যেরা অনেক নিরুৎসাহিত ও উদ্‌বিগ্ন ছিল। তাই, তিনি তাদের উৎসাহিত করেছিলেন। এর ফলে, তারা অনেক সাহস লাভ করেছিল এবং উদ্যোগের সঙ্গে প্রচার ও শিক্ষাদানের কাজ করতে শুরু করেছিল।a

৪ এই ৪০ দিনে যিশু যা-কিছু করেছিলেন, সেগুলোর প্রতি মনোযোগ দিলে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। এই প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করব, পৃথিবীতে তাঁর শেষ দিনগুলোতে যিশু কীভাবে (১) তাঁর শিষ্যদের সাহস বৃদ্ধি করেছিলেন, (২) শাস্ত্রের গভীর বিষয়গুলো বুঝতে তাদের সাহায্য করেছিলেন এবং (৩) তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন, যাতে তারা আরও দায়িত্ব পালন করতে পারে। আমরা এও জানব যে, কীভাবে আমার যিশুর উদাহরণ অনুকরণ করতে পারি।

অন্যদের সাহস বৃদ্ধি করুন

৫. যিশুর শিষ্যদের কেন সাহসের প্রয়োজন ছিল?

৫ যিশুর শিষ্যদের সাহসের প্রয়োজন ছিল। কেন? কারণ তাদের মধ্যে কিছু শিষ্য তাদের ঘর, ব্যাবসা, সমস্ত কিছু ছেড়ে যিশুকে অনুসরণ করতে শুরু করেছিল। (মথি ১৯:২৭) আর তাদের মধ্যে কিছু জনকে লোকেরা নীচু চোখে দেখত, কারণ তারা যিশুর শিষ্য হয়েছিল। (যোহন ৯:২২) তারা এই সমস্ত কিছু সহ্য করতে পেরেছিল, কারণ তারা নিশ্চিত ছিল, যিশুই হলেন প্রতিজ্ঞাত মশীহ। (মথি ১৬:১৬) কিন্তু, যিশু যখন মারা গিয়েছিলেন, তখন তাদের আশা ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল এবং তারা অনেক নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছিল।

৬. পুনরুত্থিত হওয়ার পর যিশু কী করেছিলেন?

৬ যিশু জানতেন যে, তাঁর শিষ্যেরা বিশ্বাসের অভাবের জন্য নয় বরং তাদের প্রভুকে হারানোর কারণে দুঃখিত ছিল। তাই, যে-দিন তাঁকে পুনরুত্থিত করা হয়েছিল, সেই দিনই তিনি তাঁর বন্ধুদের সাহস বৃদ্ধি করেছিলেন। যেমন, মগ্দলীনী মরিয়ম যখন কবরের বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন, তখন যিশু তাকে দেখা দিয়েছিলেন। (যোহন ২০:১১, ১৬) তিনি সেই দু-জন শিষ্যকেও দেখা দিয়েছিলেন, যাদের বিষয়ে আমরা প্রবন্ধের শুরুতে দেখেছিলাম। এ ছাড়া, তিনি প্রেরিত পিতরকেও দেখা দিয়েছিলেন। (লূক ২৪:৩৪) আসুন, প্রথমে আমরা দেখি, যিশু যখন মগ্দলীনী মরিয়মকে দেখা দিয়েছিলেন, তখন কী ঘটেছিল আর সেখান থেকে আমরা কী শিখতে পারি।

৭. যিশু মরিয়মের কোন বিষয়টা লক্ষ করেন এবং তার জন্য কী করেন? (যোহন ২০:১১-১৬) (ছবিও দেখুন।)

৭ যোহন ২০:১১-১৬ পদ পড়ুন। ১৬ই নিশান ভোর বেলা কিছু বিশ্বস্ত মহিলা যিশুর কবরের সামনে আসে। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন মগ্দলীনী মরিয়ম। (লূক ২৪:১, ১০) আসুন, আমরা তার উপর মনোযোগ দিই। মরিয়ম যখন কবরের সামনে আসেন, তখন তিনি দেখেন কবরটা খালি। এটা দেখার পর তিনি দৌড়ে পিতর ও যোহনের কাছে যান আর তাদেরও এই বিষয়টা বলেন। এটা শুনে তারা দৌড়ে কবরের কাছে আসে এবং মরিয়মও তাদের পিছন পিছন আসেন। তারা যখন দেখে কবরটা সত্যিই খালি, তখন তারা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু, মরিয়ম সেখানেই দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকেন। তবে, তিনি এটা জানতেন না যে, যিশু সমস্ত কিছু দেখছেন। মরিয়মের দুঃখ ও কান্না দেখে যিশু থাকতে পারেননি, তাই তিনি তাকে দেখা দেন। তিনি প্রেম সহকারে তার সঙ্গে কথা বলেন এবং তার সাহস বৃদ্ধি করেন। এরপর যিশু তাকে এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ দেন। তিনি বলেন, মরিয়ম যেন অন্য শিষ্যদের গিয়ে জানান যে, তাঁকে পুনরুত্থিত করা হয়েছে।—যোহন ২০:১৭, ১৮.

পুনরুত্থিত হওয়ার পর যিশু মগ্দলীনী মরিয়মের সঙ্গে কথা বলছেন। তারা দু-জনে একটা খালি কবরের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন।

যিশুর মতো অন্যদের পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করুন, সহানুভূতি দেখান এবং প্রেম সহকারে তাদের সঙ্গে কথা বলুন (৭ অনুচ্ছেদ দেখুন)


৮. কীভাবে আমরা যিশুকে অনুকরণ করতে পারি?

৮ কীভাবে আমরা যিশুকে অনুকরণ করতে পারি? আমরা ভাই-বোনদের উৎসাহিত করতে পারি, যাতে তারা যিহোবার সেবা করে চলতে পারে। কীভাবে আমরা তা করতে পারি? যিশুর মতো আমাদেরও এটা বোঝার চেষ্টা করতে হবে যে, ভাই-বোনেরা কোন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং তারা কেমন অনুভব করছে। এরপর আমাদের কথার মাধ্যমে তাদের সান্ত্বনা দিতে হবে। বোন জোসলিনের উদাহরণের উপর মনোযোগ দিন। একটা দুর্ঘটনায় তার বোন মারা যান। তিনি বলেন, “আমি কয়েক মাস ধরে অনেক দুঃখের মধ্যে ছিলাম। প্রায়ই তার কথা মনে করে আমি কষ্ট পেতাম।” এরপর এক ভাই ও তার স্ত্রী, জোসলিনকে তাদের ঘরে আমন্ত্রণ জানান। তারা মন দিয়ে তার কথা শোনেন এবং তাকে আশ্বাস দেন যে, যিহোবা তাকে অনেক ভালোবাসেন। জোসলিন বলেন, “প্রথম প্রথম আমার মনে হয়েছিল, আমি যেন সমুদ্রের ঢেউয়ের মধ্যে তলিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু, পরে যিহোবা সঠিক সময়ে আমার জন্য একটা নৌকা পাঠান আর আমাকে উদ্ধার করেন। সেই ভাই ও বোনের সঙ্গে কথা বলার পর আমি আবারও যিহোবার সেবা করার জন্য উৎসাহিত হই।” আমরাও একইভাবে ভাই-বোনদের সাহায্য করতে পারি। তারা যখন তাদের মনের কথা আমাদের কাছে খুলে বলে, তখন আমরা মন দিয়ে তা শুনতে পারি, তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে পারি এবং প্রেম সহকারে তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারি। এভাবে আমরা তাদের সাহস বৃদ্ধি করতে পারব আর এর ফলে তারা যিহোবার সেবা চালিয়ে যেতে পারবে।—রোমীয় ১২:১৫.

শাস্ত্র বোঝার জন্য অন্যদের সাহায্য করুন

৯. যিশুর শিষ্যেরা কোন দ্বিধার মধ্যে ছিল আর তিনি কীভাবে তাদের সাহায্য করেছিলেন?

৯ যিশুর শিষ্যেরা ঈশ্বরের বাক্যকে বিশ্বাস করত এবং সেই অনুযায়ী চলার জন্য পুরোপুরি প্রচেষ্টা করত। (যোহন ১৭:৬) কিন্তু, যিশুকে যখন অপরাধীর মতো দণ্ডে বিদ্ধ করে মারা হয়েছিল, তখন তারা বুঝতে পারছিল না যে, কেন এমনটা হয়েছে এবং তাদের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন আসছিল। তবে, যিশু বুঝতে পেরেছিলেন, তাঁর শিষ্যদের বিশ্বাসের অভাব নেই বরং তারা শাস্ত্রের কথাগুলো সঠিকভাবে বুঝতে পারেনি বলে দ্বিধার মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। (লূক ৯:৪৪, ৪৫; যোহন ২০:৯) তাই, যিশু শাস্ত্রের কথাগুলো বুঝতে তাদের সাহায্য করেছিলেন। আসুন, আমরা সেই ঘটনাটার উপর মনোযোগ দিই, যখন যিশু তাঁর সেই দু-জন শিষ্যের সঙ্গে কথা বলছিলেন, যারা ইম্মায়ূতে যাচ্ছিল।

১০. যিশু কীভাবে তাঁর শিষ্যদের বুঝতে সাহায্য করেছিলেন যে, তিনিই ছিলেন মশীহ? (লূক ২৪:১৮-২৭)

১০ লূক ২৪:১৮-২৭ পদ পড়ুন। লক্ষ করুন, যিশু দ্রুত তাঁর সেই দু-জন শিষ্যকে এটা বলেননি যে, তিনি কে। এর পরিবর্তে, তিনি তাদের কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিলেন। তিনি হয়তো চেয়েছিলেন, তাদের মনে যা চলছে, সেটা যেন তারা তাঁকে খুলে বলে। শিষ্যেরা তাঁকে বলেছিল যে, তারা ভেবেছিল যিশু রোমীয় শাসনের হাত থেকে তাদের মুক্ত করবেন। তাদের কথা মন দিয়ে শোনার পর যিশু শাস্ত্র থেকে তাদের ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, মশীহের সঙ্গে এই সমস্ত কিছু ঘটেছিল, কারণ ভবিষ্যদ্‌বাণী পূর্ণ হতে হত।b এরপর সেই সন্ধ্যায় যিশু তাঁর অন্যান্য শিষ্যের সঙ্গেও দেখা করেন এবং তাদেরও এই বিষয়টা বুঝতে সাহায্য করেন। (লূক ২৪:৩৩-৪৮) এই ঘটনা থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

১১-১২. (ক) যিশু যেভাবে লোকদের শাস্ত্র থেকে শিখিয়েছিলেন, সেখান থেকে আমরা কী শিখতে পারি? (ছবিগুলোও দেখুন।) (খ) নরটের বাইবেল শিক্ষক কীভাবে তাকে সাহায্য করেছিলেন?

১১ কীভাবে আমরা যিশুকে অনুকরণ করতে পারি? আপনার বাইবেল ছাত্রকে শেখানোর সময় ভেবে-চিন্তে এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করুন, যাতে সে তার মনের কথা খুলে বলতে পারে। (হিতো. ২০:৫) এরপর, সেই শাস্ত্রপদগুলো খুঁজে পেতে তাকে সাহায্য করুন, যেগুলো তার কাজে লাগবে। কিন্তু, তাকে এটা বলবেন না যে, তার কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়। এর পরিবর্তে, সেই শাস্ত্রপদগুলোর উপর ভিত্তি করে তাকে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করুন। তাকে এটা বুঝতে সাহায্য করুন যে, শাস্ত্রপদে লেখা কথাগুলো সে কীভাবে কাজে লাগাতে পারে। আসুন, আমরা ঘানায় বসবাসকারী ভাই নরটের উদাহরণ লক্ষ করি।

১২ ষোলো বছর বয়সে নরটে বাইবেল অধ্যয়ন করতে শুরু করেন। এরপর, তার পরিবারের লোকেরা তার বিরোধিতা করতে শুরু করে। কিন্তু, তিনি অধ্যয়ন বন্ধ করেননি। কোন বিষয়টা তাকে হাল ছেড়ে না দিতে সাহায্য করেছিল? যে-ভাই তার সঙ্গে অধ্যয়ন করতেন, তিনি মথি ১০ অধ্যায় নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করেন এবং তাকে বুঝতে সাহায্য করেন, যখন একজন ব্যক্তি যিশুকে অনুসরণ করতে শুরু করেন, তখন লোকেরা তার বিরোধিতা করে। নরটে বলেন, “তাই যখন আমার বিরোধিতা করা হয়, তখন আমি বুঝতে পারি, আমি সত্য খুঁজে পেয়েছি।” সেই ভাই, নরটের সঙ্গে মথি ১০:১৬ পদ নিয়েও আলোচনা করেন। এটা থেকে নরটে বুঝতে পারেন, যখন তিনি পরিবারের সঙ্গে ধর্মের বিষয় নিয়ে কথা বলবেন, তখন তাকে অনেক ভেবে-চিন্তে এবং সম্মানের সঙ্গে কথা বলতে হবে। বাপ্তিস্ম নেওয়ার পর নরটে অগ্রগামী হিসেবে সেবা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, তার বাবা চেয়েছিলেন, তিনি যেন স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। নরটে এই বিষয়টা নিয়ে সেই ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন, যিনি তাকে বাইবেল অধ্যয়ন করাতেন। সেই ভাই তাকে এটা বলেননি যে, তাকে কী করতে হবে। এর পরিবর্তে, তিনি নরটেকে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিলেন আর তাকে বাইবেলের কিছু নীতি নিয়ে চিন্তা করতে সাহায্য করেছিলেন। এর ফলাফল কী হয়েছিল? নরটে পূর্ণসময়ের সেবা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর এই কারণে, তার বাবা তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু, নরটে তার সিদ্ধান্তের জন্য কোনো আপশোস করেননি। তিনি বলেন, “আমি পুরোপুরি নিশ্চিত যে, আমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।” আমরাও বাইবেলের পদগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার জন্য অন্যদের সাহায্য করতে পারি। এর ফলে, তাদের বিশ্বাস দৃঢ় হবে এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও তারা যিহোবার সেবা করে চলবে।—ইফি. ৩:১৬-১৯.

কোলাজ: ১. একজন ভাই একজন ব্যক্তিকে বাইবেল অধ্যয়ন করাচ্ছেন এবং একটা পদ বুঝতে সাহায্য করছেন। ২. সেই ব্যক্তি বড়োদিনে সাজানোর জিনিসপত্র ডাস্টবিনে ফেলে দিচ্ছেন।

যিশুর মতো অন্যদের শাস্ত্র বুঝতে সাহায্য করুন (১১ অনুচ্ছেদ দেখুন)e


ভাইদের প্রশিক্ষণ দিন, যাতে তারা “মানুষদের মধ্যে . . . দান” হতে পারে

১৩. যিশু কী করেছিলেন, যাতে তিনি স্বর্গে যাওয়ার পরও প্রচার কাজ চলতে থাকে? (ইফিষীয় ৪:৮)

১৩ যিহোবা পৃথিবীতে যিশুকে যে-কাজ দিয়েছিলেন, তা তিনি খুব ভালোভাবে সম্পন্ন করেছিলেন। (যোহন ১৭:৪) কিন্তু, যিশু কখনো এভাবে চিন্তা করেননি যে, কোনো কাজ যদি সঠিক উপায়ে করতে হয়, তা হলে তাঁকে নিজেকেই তা করতে হবে। এর পরিবর্তে, তাঁর শিষ্যদের উপর তাঁর আস্থা ছিল। তাই, সাড়ে তিন বছর সেবা করার সময় তিনি তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, পৃথিবীতে তাঁর শেষ ৪০ দিনে তিনি তাঁর শিষ্যদের শিখিয়েছিলেন আর তাদের দায়িত্ব দিয়েছিলেন, যাতে তারা যিহোবার মূল্যবান মেষদের দেখাশোনা করে এবং প্রচার ও শিক্ষাদানের কাজে নেতৃত্ব নেয়। (পড়ুন, ইফিষীয় ৪:৮.) যিশু যখন তাদের এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তখন কিছু শিষ্যের বয়স হয়তো ৩০-এরও কম ছিল। তারা অনেক পরিশ্রমী ছিল এবং যিশুর প্রতি বিশ্বস্ত ছিল। যিশু তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন, যাতে তারা “মানুষদের মধ্যে . . . দান” হতে পারে। যিশু এটা কীভাবে করেছিলেন?

১৪. পৃথিবীতে শেষ ৪০ দিনে যিশু কীভাবে তাঁর শিষ্যদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন? (ছবিও দেখুন।)

১৪ যিশু প্রেমের সঙ্গে কিন্তু সরাসরি তাঁর শিষ্যদের পরামর্শ দিয়েছিলেন। উদাহরণ স্বরূপ, তিনি যখন দেখেছিলেন তাঁর কিছু শিষ্য এটা বিশ্বাস করছে না যে, তাঁকে মৃতদের মধ্য থেকে ওঠানো হয়েছে, তখন তিনি তাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং তাদের চিন্তাভাবনা সংশোধন করেছিলেন। (লূক ২৪:২৫-২৭; যোহন ২০:২৭) যিশু তাদের ব্যাবসা অথবা অর্থ উপার্জনের উপর নয় বরং যিহোবার মেষদের যত্ন নেওয়ার উপর বেশি মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। (যোহন ২১:১৫) যিশু তাদের এটাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, তারা যেন এই বিষয়টা নিয়ে বেশি চিন্তা না করে যে, অন্যেরা যিহোবার সেবায় কোন দায়িত্বগুলো পাচ্ছে। (যোহন ২১:২০-২২) এ ছাড়া, তিনি ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে তাদের ভুল ধারণাগুলো সংশোধন করেছিলেন এবং তাদের উৎসাহিত করেছিলেন, যেন তারা সুসমাচার জানানোর উপর মনোযোগ দেয়। (প্রেরিত ১:৬-৮) প্রাচীনেরা যিশুর কাছ থেকে কী শিখতে পারে?

যিশু সমুদ্রের তীরে বসে তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে কথা বলছেন। পাশেই আগুনে মাছ পোড়ানো হচ্ছে।

যিশুর মতো ভাইদের প্রশিক্ষণ দিন, যাতে তারা আরও দায়িত্ব পালন করার জন্য যোগ্য হয়ে উঠতে পারে (১৪ অনুচ্ছেদ দেখুন)


১৫-১৬. (ক) ব্যাখ্যা করুন যে, প্রাচীনেরা কীভাবে যিশুকে অনুকরণ করতে পারে। (খ) প্যাট্রিককে যখন পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, তখন তিনি কীভাবে উপকৃত হয়েছিলেন?

১৫ প্রাচীনেরা কীভাবে যিশুকে অনুকরণ করতে পারে? প্রাচীনদের মণ্ডলীতে থাকা কমবয়সি ভাইদেরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে, যাতে তারা আরও দায়িত্ব নেওয়ার জন্য যোগ্য হতে পারে।c প্রাচীনদের এইরকম আশা করা ঠিক হবে না যে, ভাইয়েরা একবারেই সব কিছু শিখে যাবে এবং তারা কোনো ভুল করবে না। কিন্তু, প্রয়োজনে তাদের অল্পবয়সি ভাইদের প্রেমময় পরামর্শও দিতে হবে, যাতে তারা নম্র, নির্ভরযোগ্য এবং অন্যদের সেবা করার জন্য ইচ্ছুক হতে পারে।—১ তীম. ৩:১; ২ তীম. ২:২; ১ পিতর ৫:৫.

১৬ লক্ষ করুন, যখন ভাই প্যাট্রিককে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, তখন তিনি কীভাবে উপকৃত হয়েছিলেন। তিনি অন্যদের সঙ্গে রূঢ়ভাবে কথা বলতেন এবং ভালোভাবে আচরণ করতেন না, এমনকী বোনদের সঙ্গেও নয়। একজন প্রাচীন প্যাট্রিকের এই দুর্বলতা লক্ষ করেছিলেন এবং তিনি প্রেমের সঙ্গে কিন্তু সরাসরি তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। প্যাট্রিক বলেন, “আমি খুবই আনন্দিত যে, সেই ভাই আমাকে সংশোধন করতে বলেছিলেন। আমি মণ্ডলীতে বিভিন্ন দায়িত্ব পেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, যখন আমি দেখতাম, সেই একই দায়িত্ব অন্যদের দেওয়া হচ্ছে, তখন আমার খুব খারাপ লাগত। সেই প্রাচীনের পরামর্শ কাজে লাগিয়ে আমি অনেক উপকৃত হয়েছিলাম। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, মণ্ডলীতে কোনো দায়িত্বের পিছনে ছোটার পরিবর্তে, আমাকে নম্র হয়ে ভাই-বোনদের জন্য কাজ করতে হবে এবং তাদের সঙ্গে প্রেমময় উপায়ে আচরণ করতে হবে।” ফলস্বরূপ, প্যাট্রিককে মাত্র ২৩ বছর বয়সে প্রাচীন হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল।—হিতো. ২৭:৯.

১৭. যিশু কীভাবে দেখিয়েছিলেন যে, শিষ্যদের উপর তাঁর আস্থা ছিল?

১৭ যিশু তাঁর শিষ্যদের শুধুমাত্র প্রচার করতেই বলেননি, এর পাশাপাশি তাদের শিক্ষা দেওয়ারও দায়িত্ব দিয়েছিলেন। (মথি ২৮:২০) শিষ্যেরা হয়তো মনে করেছিল, তারা এটা করতে পারবে না। কিন্তু তাঁর শিষ্যদের উপর যিশুর পুরোপুরি আস্থা ছিল যে, তারা এই দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করতে পারবে। তাই, যিশু তাদের বলেছিলেন: “পিতা যেমন আমাকে পাঠিয়েছেন, তেমনই আমিও তোমাদের পাঠাচ্ছি।”—যোহন ২০:২১.

১৮. প্রাচীনেরা কীভাবে যিশুকে অনুকরণ করতে পারে?

১৮ প্রাচীনেরা কীভাবে যিশুকে অনুকরণ করতে পারে? অভিজ্ঞ প্রাচীনেরা অন্যদের দায়িত্ব দেয়। (ফিলি. ২:১৯-২২) যেমন, তারা অল্পবয়সি ভাইদের সঙ্গে কিংডম হল পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে থাকে। প্রাচীনেরা যখন তাদের কোনো দায়িত্ব দেয়, তখন তারা তাদের প্রশিক্ষণ দেয় এবং এই আশ্বাস দেয় যে, তারা অবশ্যই এই দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করতে পারবে। ভাই ম্যাথিউর উদাহরণ লক্ষ করুন, যাকে কিছু সময় আগেই প্রাচীন হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, তিনি সেই অভিজ্ঞ প্রাচীনদের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে, তারা তাকে দায়িত্ব দেওয়ার পাশাপাশি প্রশিক্ষণও দিয়েছিল এবং তার উপর আস্থা রেখেছিল যে, তিনি এই দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করতে পারবেন। ভাই ম্যাথিউ বলেন, “আমার দ্বারা ভুল তো হয়েছে, কিন্তু তারপরও প্রাচীনেরা আমাকে সাহায্য করেছে। এর ফলে, আমি আমার ভুল থেকে শিখতে পেরেছি এবং আমার দায়িত্ব আরও ভালোভাবে পালন করতে পেরেছি।”d

১৯. আমাদের কোন বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে হবে?

১৯ পৃথিবীতে শেষ ৪০ দিনে যিশু তাঁর শিষ্যদের সাহস বৃদ্ধি করেছিলেন, তাদের শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। আসুন, আমরাও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হই যেন যিশুকে অনুকরণ করতে পারি এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তাঁর পদচিহ্ন অনুসরণ করতে পারি। (১ পিতর ২:২১) আর তা করার জন্য তিনি আমাদের অবশ্যই সাহায্য করবেন। কারণ তিনি এই প্রতিজ্ঞা করেছেন: “এই বিধিব্যবস্থার শেষ সময় পর্যন্ত আমি সবসময় তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।”—মথি ২৮:২০.

পৃথিবীতে তাঁর শেষ ৪০ দিনে যিশু কীভাবে তাঁর শিষ্যদের . . .

  • সাহস বৃদ্ধি করেছিলেন?

  • শাস্ত্র ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করেছিলেন?

  • আরও দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন?

গান ১৫ গাও প্রশংসা পুত্রের!

a সুসমাচারের বইগুলোতে এবং বাইবেলের অন্যান্য বইতে বলা হয়েছে যে, পুনরুত্থিত হওয়ার পর যিশু কাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। যিশু যাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন, তারা হল: মগ্দলীনী মরিয়ম (যোহন ২০:১১-১৮); অন্যান্য মহিলা (মথি ২৮:৮-১০; লূক ২৪:৮-১১); দু-জন শিষ্য (লূক ২৪:১৩-১৫); পিতর (লূক ২৪:৩৪); প্রেরিতেরা, যখন থোমা সেখানে ছিলেন না (যোহন ২০:১৯-২৪); প্রেরিতেরা, যখন থোমা সেখানে ছিলেন (যোহন ২০:২৬); সাত জন শিষ্য (যোহন ২১:১, ২); ৫০০ জনেরও বেশি শিষ্য (মথি ২৮:১৬; ১ করি. ১৫:৬); যিশুর ভাই যাকোব (১ করি. ১৫: ৭); সমস্ত প্রেরিত (প্রেরিত ১:৪); এবং বৈথনিয়ার কাছে প্রেরিতেরা। (লূক ২৪:৫০-৫২) হতে পারে, যিশু আরও অনেককে দেখা দিয়েছিলেন, যেগুলোর বিষয়ে বাইবেলে লেখা নেই।—যোহন ২১:২৫.

b মশীহের বিষয়ে করা ভবিষ্যদ্‌বাণীগুলো জানার জন্য jw.org ওয়েবসাইটে “মশীহ সম্বন্ধে করা ভবিষ্যদ্‌বাণীগুলো কি প্রমাণ দেয় যে, যিশুই হলেন সেই মশীহ?” প্রবন্ধটা পড়ুন।

c যোগ্য ভাইদের ২৫-৩০ বছর বয়সেই সীমা অধ্যক্ষ হিসেবে সেবা করার জন্য নিযুক্ত করা যেতে পারে। কিন্তু, এর আগে সেই ভাইদের প্রাচীন হিসেবে সেবা করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

d কীভাবে আমরা অল্পবয়সি ভাইদের সাহায্য করতে পারি, যাতে তারা আরও দায়িত্ব পালন করার জন্য যোগ্য হয়ে উঠতে পারে? এই বিষয়ে জানার জন্য ২০১৮ সালের আগস্ট মাসের প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ১১-১২ পৃষ্ঠার ১৫-১৭ অনুচ্ছেদ এবং ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ৩-১৩ পৃষ্ঠা দেখুন।

e ছবি সম্বন্ধে বর্ণনা: একজন বাইবেল শিক্ষক তার ছাত্রকে শাস্ত্রের বিষয়গুলো বুঝতে সাহায্য করেছেন। এখন সেই ছাত্র বড়োদিনের জিনিসগুলো ফেলে দিচ্ছেন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার