ওয়াচটাওয়ার শিক্ষা কেন্দ্রের উৎসর্গ—যিহোবার উদ্দেশে এক উৎসব
প্রাচীনকালে ইস্রায়েলে অনেক উৎসব পালন করা হতো আর এই উৎসবগুলো সত্য উপাসনার অংশ ছিল। এই উৎসবগুলোর কয়েকটা বেশ কিছুদিন ধরে চলত আর সেখানে হাজার হাজার যিহোবার উপাসক জমা হতেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, শলোমনের মন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠান সাতদিন ধরে চলেছিল আর এরপরে সাতদিন ধরে কুটির উৎসব পালন করা হয়েছিল। এই সময়ে ইস্রায়েলীয়রা সেই সব আশ্চর্য কাজের বিষয়ে ধ্যান করে যা যিহোবা তাদের জন্য করেছিলেন। তারা “সদাপ্রভু . . . যে সকল মঙ্গল করিয়াছিলেন, সেই সকলের জন্য আনন্দিত ও হৃষ্টচিত্ত হইয়া” ঘরে ফিরে এসেছিল।—১ রাজাবলি ৮:৬৬.
১৯৯৯ সালের ১৭-২২শে মে পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক, প্যাটারসনে ওয়াচটাওয়ার শিক্ষা কেন্দ্রে যে অনুষ্ঠান হয়েছিল তা অতিথিদেরকে সেই প্রাচীনকালের উৎসবগুলোর কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল। এই পুরো সপ্তাহটা ছিল বিশেষ সপ্তাহ আর সবচেয়ে বিশেষ ছিল ২৮টা ঘর সংলগ্ন বৃহৎ অট্টালিকার উৎসর্গ। সারা পৃথিবীতে বাইবেলের শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই নতুন অট্টালিকাকে ব্যবহার করা হবে। এই সপ্তাহে ব্রুকলিন, ওয়ালকিল ও প্যাটারসন শাখার ৫,৪০০ জন ভাইবোনদের এই নতুন শিক্ষা কেন্দ্র ভালভাবে ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছিল। এছাড়া বাইরে থেকে প্রায় ৮,১০০ জন ভাইবোনেরা এসেছিলেন যাদের মধ্যে ৫০০জনেরও বেশি সেই ভাইবোনেরা ছিলেন যারা এই শিক্ষা কেন্দ্র তৈরির সময় কাজ করেছিলেন। এছাড়া ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির ২৩টা শাখা থেকে ও সেইসঙ্গে কাছাকাছি বিভিন্ন মণ্ডলীগুলো থেকে অনেক ভাইবোনেরা এসেছিলেন।
ঘুরে ঘুরে দেখা প্রদর্শনগুলো এক শিক্ষা দেয়
ভাইবোনদেরকে শিক্ষা কেন্দ্রের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য বিশেষ প্রদর্শন ও ভিডিও দেখানো হয়। এছাড়াও এমন ব্যবস্থা করা হয় যাতে অতিথিরা নিজে নিজে ঘুরে ফিরে এটা দেখতে পারেন। প্রধান লবিতে ঢুকতেই একটা মডেলের দিকে অতিথিদের নজর যায়। যীশুর পার্থিব পরিচর্যার সময়ে যিরূশালেম মন্দির যেমন ছিল তার মডেল বানানো হয়েছিল। অন্যান্য যে বিষয়গুলো দেখা গিয়েছিল সেগুলো ছিল ওয়াচটাওয়ার বাইবেল স্কুল অফ গিলিয়েড এর প্রাথমিক ইতিহাস, বিভিন্ন ঐতিহাসিক সম্মেলন, মণ্ডলীর সভা, গৃহ বাইবেল অধ্যয়নে কীভাবে উন্নতি হয়েছে যার ফলে আজকে লাখ লাখ ব্যক্তি প্রতি সপ্তাহে সেগুলো পরিচালনা করছেন আর ছিল আইনসংক্রান্ত বিভাগের কাজকর্ম। যীশু যে আজ্ঞা দিয়েছিলেন তা সম্পূর্ণ করতে যে বাধাগুলো আসে এই বিভাগ তার মোকাবিলা করে।—মথি ২৮:১৯, ২০.
সংলগ্ন অডিটরিয়ামে, অনায়াসে ১,৭০০ জন লোকের বসার ব্যবস্থা আছে আর যে ভাইবোনেরা উৎসর্গ উৎসবে এসেছিলেন তাদেরকে ৩৩ মিনিটের একটা ভিডিও দেখানো হয়েছিল যার নাম ছিল “বল দ্বারা নয় কিন্তু আমার আত্মা দ্বারা!” এই ভিডিও দেখিয়েছিল যে কীভাবে ওয়াচটাওয়ার শিক্ষা কেন্দ্রটা এই পর্যায়ে এসেছে। সাক্ষাৎকারগুলোতে বলা হয়েছিল যে ১৫ বছরের মধ্যে এই কাজ সুন্দরভাবে শেষ করার জন্য যিহোবা নির্দেশনা দিয়েছিলেন ও আশীর্বাদ করেছিলেন। হাজার হাজার ভাইবোনেরা এই নির্মাণ কাজে সাহায্য করেছিলেন। ১৯৯৪ সালে ৫২৬ জন এখানে কাজ করেছিলেন, তাদের মধ্যে ৩৫০ জন পুরোপুরি এই কাজের জন্যেই এসেছিলেন, ১১৩ জন অস্থায়ী কর্মী ছিলেন আর সেইসঙ্গে অন্য আরও ৬৩ জন ছিলেন যারা প্রতিদিন এসে এসে কিছু কাজ করে দিতেন। আরও অনেকে মুক্তহস্তে দান করে সাহায্য করেছিলেন। তাদের সকলেই উপলব্ধি করেছিলেন যে যিহোবার আত্মা ছাড়া কোনভাবেই এই কাজ করা সম্ভব হতো না।—সখরিয় ৪:৬.
যারা ঘুরে দেখেছিলেন তারা ভালভাবে বুঝতে পেরেছিলেন যে এই শিক্ষা কেন্দ্রে যে কাজ করা হচ্ছে তার উদ্দেশ্য হল লোকেদের সত্য ঈশ্বরের বিষয়ে শেখানো। স্কুল বিল্ডিং এর এক তলায় গিলিয়েড স্কুল দেখা যায় আর সেখানে ঢুকেই যে ছবিগুলো দেখা যায় তার থেকে স্কুলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্বন্ধে জানা যায়। গিলিয়েড স্কুল থেকে এ যাবৎ ৭,০০০ জনের বেশি ছাত্র মিশনারি কাজের জন্য প্রশিক্ষণ পেয়েছেন যার প্রথম ক্লাসটা ১৯৪৩ সালে নিউ ইয়র্ক সাউথ ল্যান্সিং-এ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর স্কুল বিল্ডিং এর দুই তলায় শাখা কমিটির সদস্যদের জন্য বিদ্যালয় ও ভ্রমণ অধ্যক্ষদের বিদ্যালয়ের ছবি রাখা হয়েছিল, দুটো বিদ্যালয়ের ক্লাসই এই জায়গাতেই হয়। ১৯৯৫ সালের নভেম্বর মাসে এটা যখন শুরু হয় তখন থেকে ১০৬টা দেশের ৩৬০ জন শাখা কমিটির সদেস্যদের শিক্ষা ও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অতিথিরা খুব তাড়াতাড়ি বুঝে ফেলেছিলেন যে ছবি দেখা ছাড়া এর থেকে তাদের অনেক কিছু শেখারও আছে। তারা বিভিন্ন বিভাগে যেতে পেরেছিলেন, অফিসগুলোতে গিয়েছিলেন আর সেখানে কী কী কাজ হচ্ছে তা দেখেছিলেন। আডিও/ভিডিও সার্ভিসেস বিল্ডিং ছিল একটা বিশেষ আকর্ষণ। কী যে চমৎকার সুযোগ-সুবিধা যেগুলো বাইবেল শিক্ষা বিস্তার করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে! তারা আরও ব্যাপক গবেষণা সম্বন্ধে জেনেছিলেন যেখানে মঞ্চের সাজ-সরঞ্জাম ও পোশাকের প্রস্তুতির বিষয়গুলো রয়েছে। তারা ছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী যে কত অল্প খরচে কিন্তু অদ্ভুত সুন্দরভাবে সব কিছু দিয়ে কীভাবে মঞ্চকে সাজানো হয়েছে। তারা আরও দেখেছেন যে কীভাবে সংগীত এত জীবন্ত করে তোলা হয়েছে যাতে লোকেদের মনে হয় যেন তারাই ওই দৃশ্যগুলোর মধ্যে নিজেদের দেখতে পাচ্ছেন। ১৯৯০ সাল থেকে সোসাইটি দশটা ভিডিও ৪১টা ভাষায় প্রকাশ করেছে, বাইবেলের বিভিন্ন বিষয়বস্তুকে তুলে ধরা হয়েছে এছাড়াও তাদের অন্যান্য ভিডিও রয়েছে যারা আমেরিকার সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করেন।
অনেকে ছিলেন যারা ফটো ল্যাব, আর্ট বিভাগ, তথ্য বিভাগ যেখানে কমপিউটার প্রশিক্ষণ দেওয়া ও সহযোগিতা করা হয়, পরিচর্যা বিভাগ যেখানে ১১,২৪২টা মণ্ডলী ও ৫৭২ জন ভ্রমণ অধ্যক্ষের কাজের দেখাশোনা করা হয় আর আছে লিখিত যোগাযোগ ব্যবস্থা যেখানে প্রতি বছর প্রায় প্রায় ১৪,০০০ প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা হয় সেইসব বিষয় ঘুরে ঘুরে দেখেছিলেন। পাঠানো চিঠিগুলোর উত্তর দেওয়ার জন্য যে কত পরিশ্রম ও গবেষণা করা হয় ও তাদের সমস্যাগুলো দূর করার জন্য যেভাবে অন্তর থেকে চেষ্টা করা হয় তা দেখে তারা অবাক হয়ে গিয়েছিলেন।
এক নাগাড়ে স্রোতের মতো পর্যটকেরা অনুবাদ বিভাগ ঘুরে ফিরে দেখেছিলেন। গত পাঁচ বছরের মধ্যে আরও ১০২টা ভাষা আগের সংখ্যাগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে যেসব ভাষায় সোসাইটি বাইবেল সাহিত্যাদি দিয়ে থাকে সেই সম্বন্ধে জেনে তারা বিস্মিত হয়েছিলেন। সারা বিশ্বে যিহোবার সাক্ষিদের প্রায় ৮০ শতাংশ লোক ইংরেজি নয় কিন্তু অন্যান্য ভাষায় সোসাইটির প্রকাশনাগুলো আরও বেশি পড়ে। আর তাই তাদের ওই চাহিদা পূরণ করতে ১,৭০০ জনের বেশি স্বেচ্ছাসেবী ১০০টা দেশে অনুবাদের জন্য কাজ করছেন। প্রদর্শনগুলো আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার অধিবাসীদের বিভিন্ন ভাষায় প্রহরীদুর্গ দেখিয়েছিল। অতিথিরা এমন ৩১টা ভাষায় প্রকাশিত বাইবেলের নতুন জগৎ অনুবাদ (ইংরেজি) দেখতে পেয়েছিলেন। তারা জেনেছিলেন যে ওয়াচ টাওয়ার প্রকাশনাগুলো এখন ৩৩২টা ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে আর এগুলোর মধ্যে ঈশ্বর আমাদের কাছ থেকে কী চান নামক ব্রোশারটা ২১৯টা ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে।
আইনসংক্রান্ত বিভাগ অতিথিদেরকে ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন কার্যসূচি যা বিশ্বব্যাপী প্রয়োজনীয় আইনসংক্রান্ত কাজের বিষয় সম্বন্ধে দেখিয়েছিল। একটা ভিডিওতে তারা দেখেছিলেন যে সত্যি সত্যি একটা কোর্টে মকদ্দমার শুনানি হচ্ছে যেখানে রক্ত দেওয়া-নেওয়া বিজড়িত একটা মামলায় একজন সাক্ষি এটর্নি যুক্তি খাড়া করছিলেন। এছাড়াও তারা জেনেছিলেন যে জনসাধারণ্যে সুসমাচার প্রচার করার জন্য পথ খোলা রাখতে কী কী করা হচ্ছে। (ফিলিপীয় ১:৭) যিহোবার সাক্ষিদের মধ্যে যারা তাদের এলাকায় ঘরে ঘরে সাবলীলভাবে প্রচার কাজ করতে চান তাদের জন্য আগে যে অনুমতি ও ব্যাজ লাগত তা যেন নতুন আইনের মাধ্যমে তুলে নেওয়া হয় এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইন পরিবর্তন করার জন্য এই বছর মার্চ মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, নিউ জার্সির অরাডেলের নগর পৌরসভার পরিচালনায় এক যুগ্ম জেলা আদালতের নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল।
এটা সব অতিথিরাই যে দেখেছিলেন তা অবশ্য ঠিক নয়। তারা নির্মাণের উপকরণের দোকানে সাজানো নির্মাণ কাজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন এবং নোংরা জল ঠিক মতো বের হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাদি, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, জল বিশুদ্ধকরণ ব্যবস্থা আর অন্যান্য ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে অসংখ্য রক্ষণাবেক্ষণের দোকান যা তারা ঘুরে ঘুরে দেখেছিলেন। এটা ছিল জীবনের এক বড় পাওয়া।
উৎসর্গ অনুষ্ঠান ঐশিক শিক্ষার ওপর জোর দেয়
উৎসর্গের মূল অনুষ্ঠান ১৯শে মে বুধবার বিকাল চারটেয় শুরু হয়েছিল। সেখানে ৬,৯২৯ জন আনন্দিত জনতার মধ্যে প্রধান কার্যালয়ের সদস্যরা ও সোসাইটির অতিথিবৃন্দ ছিলেন। কানাডা শাখার ৩৭২ জন ভাইবোনের জন্য এটা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছিল।
ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মিলটন. জি. হেনসেলের সাদর সম্ভাষণে শ্রোতারা সত্যিই খুব খুশি হয়েছিলেন। এরপর অনুষ্ঠানের সভাপতি, পরিচালক গোষ্ঠীর সদস্য থিওডোর জারাস, উইলিয়াম মেলেনফ্যান্টকে ডাকেন। তিনি “নির্মাণ কার্যক্রমের মূল বিষয়বস্তুগুলো” সম্বন্ধে বলার সময় তিনি তিনজন ভাইয়ের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন যারা শিক্ষা কেন্দ্রের উন্নয়নমূলক, পরিকল্পনা ও নির্মাণ কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। ওই সাক্ষাৎকারগুলোর মধ্যে বলা হয়েছিল যে নির্মাণ কাজের মূল কাজটা যে বছরগুলোতে করা হয়েছিল সেই সময় ৮,৭০০ জনের বেশি অস্থায়ী কর্মী তাদের নিজ নিজ খরচে এই প্রকল্পে কাজ করার জন্য সেখানে এসেছিলেন। একতা ও উদারতার কী যে সুন্দর সাক্ষ্য যা ঐশিক শিক্ষাই সাধন করেছে!
এরপর “বিশ্ব জুড়ে ঐশিক শিক্ষা” নামক একটা সিম্পোজিয়াম হয়েছিল। পরিচালক গোষ্ঠীর চারজন সদস্য সিম্পোজিয়ামের বক্তৃতাগুলো দিয়েছিলেন। জন ই. বার জোর দিয়ে বলেছিলেন যে ঐশিক শিক্ষার ভিত্তি পাওয়া যায় ঈশ্বরের বাক্য বাইবেলে যেটা খ্রীষ্টানদেরকে ‘সমস্ত সৎকর্ম্মে ফলবান্ ও ঈশ্বরের তত্ত্বজ্ঞানে বর্দ্ধিষ্ণু হওয়ার’ জন্য উৎসাহিত করে। (কলসীয় ১:১০) ড্যানিয়েল সিডলিক আলোচনা করেছিল যে খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীর মস্তক যীশু খ্রীষ্ট থেকে শুরু করে বিশ্বব্যাপী ভ্রাতৃসমাজের প্রত্যেক সদস্য কীভাবে ঐশিক শিক্ষা ঈশ্বরীয় বিধিমতে সংগঠিত করেছে। (১ করিন্থীয় ১২:১২-২৭) সিম্পোজিয়ামের শেষ বক্তৃতা দুটো গেরিট লোস ও ক্যারি বারবার দিয়েছিলেন আর সেখানে দেখানো হয়েছিল, ঐশিক শিক্ষা কীভাবে পরিচারকদেরকে সব জায়গার লোকেদের কাছে পৌঁছানোর এবং তাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য যোগ্য করে যাতে এই লোকেরাও ঈশ্বরের পথে চলতে পারেন।—যিশাইয় ২:১-৪; ২ করিন্থীয় ৩:৫.
বিভিন্ন বিদ্যালয় যা এই শিক্ষা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় সেগুলোর সঙ্গে শ্রোতাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক নির্দেশক ও সেইসঙ্গে অন্যান্যেরা যারা এই কাজে জড়িত ছিলেন তাদের নিয়ে বিভিন্ন সাক্ষাৎকার ও আলোচনা হয়েছিল। বিশ্ব জুড়ে এই ঐশিক শিক্ষা কার্যক্রম পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটা বিদ্যালয়ের মুখ্য কাজটা দেখানো হয়েছিল। এই বিষয়টা তুলে ধরা হয়েছিল যে বাইবেলের প্রতিটা বইয়ের অধ্যয়নের ওপর, যিহোবার লোকেদের বর্তমান ইতিহাসের ওপর এবং মিশনারি কাজের প্রস্তুতির ওপর গিলিয়েড স্কুল মূলত দৃষ্টি দেয়। অসংখ্য ক্ষেত্রের কার্যসূচির ব্যাপক অধ্যয়নই হল শাখা স্কুল যেটার সঙ্গে শাখা কমিটির সদস্যবৃন্দ জড়িত আছেন। ভ্রমণ অধ্যক্ষদের জন্য যে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেটা শুধু ভ্রমণ অধ্যক্ষ ভাইদেরই চাহিদা পূরণ করার জন্য নয় বরং সেই সঙ্গে বিশেষভাবে মণ্ডলীর উপকারে আসবে এমন সব আধ্যাত্মিক সাহায্য দেওয়ার জন্য তাদেরকে সুসজ্জিত করা হয়।
এই সুন্দর অনুষ্ঠান শেষ করার জন্য পরিচালক গোষ্ঠীর সদস্য লয়েড ব্যারি “আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে নির্মাণ কাজ করা” নামক বিষয়টার ওপর উৎসর্গের বক্তৃতা দিয়েছিলেন। তিনি তুলে ধরেছিলেন যে আমাদের সৃষ্টিকর্তা যিহোবা তাঁর সমস্ত সৃষ্টিতে আনন্দ উপভোগ করে থাকেন আর আমাদেরকেও তাঁর সঙ্গে আনন্দ করার জন্য আমন্ত্রণ জানান। (যিশাইয় ৬৫:১৮) কারণ “যিনি সকলই সংস্থাপন করিয়াছেন, তিনি ঈশ্বর” আর স্বাভাবিকভাবে এই সমস্ত নির্মাণ কাজের সমগ্র কৃতিত্ব যিহোবারই প্রাপ্য। (ইব্রীয় ৩:৪) এইধরনের অভিব্যক্তি করতে গিয়ে বক্তা অন্তর দিয়ে প্রার্থনা করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে এই ওয়াচটাওয়ার শিক্ষা কেন্দ্র আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তা যিহোবার কাছে উৎসর্গ করছি।a
এতে কোন সন্দেহ নেই যে পুরো সপ্তাহের উৎসবগুলো তাদের সবার অনেকদিন মনে থাকবে যারা সেখানে যোগ দিয়েছিলেন। এই ওয়াচটাওয়ার শিক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করার জন্য ব্যবস্থা করুন না কেন? আমরা নিশ্চিত যে এটা হবে আমাদের প্রেমময় সৃষ্টিকর্তা ও যারা তাঁর ধার্মিক মান অনুসারে চলেন তাদের সম্বন্ধে আরও বেশি করে আপনার জানার প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে এক উৎসাহের বিষয়।
[পাদটীকাগুলো]
a ১৯৯৯ সালের ২রা জুলাই ভাই ব্যারি বিশ্বস্ততার সঙ্গে তার পার্থিব জীবন শেষ করেছেন। ১৯৯৯ সালের ১লা অক্টোবর প্রহরীদুর্গ এর ১৬ পৃষ্ঠা দেখুন।
[Pictures on page 10]
ভাইবোনে ভর্তি অডিটরিয়াম ও খাবার ঘর
[Pictures on page 10]
সবকিছু ঘুরে দেখা সত্যিই খুব আনন্দের ছিল